ঘৃণার মেরিন সিজন ৪(পর্ব ১০+১১)

0
607

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 10
writer : Mohona

.

মেরিন : মামনি…
নীলিমা : আমার সোনামনি … আফসোস.. তোদের ২জনকে একসাথে বরন করতে পারলামনা। ও এই আফসোস? শোনো কেবল খুব জোরে ১টা চিল্লানি মারবে।
নীলিমা : ওকে। বাট কেন?
জবাবে মেরিন বাকা হাসি দিলো।

হঠাৎ করে নীলিমার চিৎকারে নিহাল আর নীড় হয় পেয়ে ছুটে এলো । এসে দেখে মেরিন নীলিমার গলায় ছুরি ধরে রেখেছে।
নীড় : মামনি …. এখন তো সব তোমার ইচ্ছামতোই হয়েছে। তাহলে এখন কেন আমার মামনির জানের পিছে পরেছো ?

মেরিন : একটুখানি ইচ্ছা বাকি আছে। আপনি আবার একটু কষ্ট করে বাহিরে আসুন । মামনি… আমাদের ২জনক একসাথে বরন করবে। আর শশুড়বাবা হেসে হেসে তালি বাজাবে।
নীড় : জাস্ট এতোটুকুর জন্য তুমি এমনটা করলে?
মেরিন : হ্যা। করলাম। যদি ভালোমতো বলতাম আপনি কি রাজি হতেন? হতেন না?
নিহাল : কাকে বরন করার জন্য দারিয়ে ছিলে দেখো। যে এতোটুকু বিষয় নিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে খেলে।
মেরিন : থ্যাংকস ফর দ্যা কমপ্লিমেন্ট। নীড় … কাম প্লিজ।
নীড় এসে মেরিনের পাশে দারালো। নীলিমা ২জনকে বরন করে নিলো।
২জন একসাথে ভেতরে ঢুকলো।

নীড় : আরো কিছু?
মেরিন : এবার আমরা ২জন মিলে বাবা-মামনিকে সালাম করবো। তারা আমাদের দোয়া করবেন।

তাই হলো।

নীড় : এখন?
মেরিন : এবার আপনি সসম্মানে যেতে পারেন।
নিহাল : আর আমি?
মেরিন : আপনিও … 😃
নীড়-নিহাল চলে গেলো।

নীলিমা : এখন থেকে বউ-শাশুড়ি মিলে বড় বড় ধামাকা করবো।
মেরিন : তুমি না হলে হয়তো সবটা এতো সহজে হতোনা।
নীলিমা : আমি আগেই বলেছি যে আমার ছেলে আমার দুর্বলতা । আমার ছেলের ভালোর জন্য আমি সব করতে পারি। তবে শোন … চৌধুরীদের মাথার তার ছিরা। তাই বাবা-ছেলেও বড় বড় বোম্ব ফাটাতে পারে…
মেরিন : তারাও ২জন আর আমরাও … যখন আমি তুমি একসাথে তখন … 😏

.

নীড় : কি থেকে কি হয়ে গেলো? ওই অতৃপ্ত আত্মাটা আমার বউ? আই জাস্ট কান্ট ইমেজিন । ওহ গড। আমার বনপাখি… ছোটথেকে যাকে ভালোবেসে এলাম আজকে তাকে পেলামনা। আমার বউ অন্যকেউ? আল্লাহ তুমি নাকি যা করো তা নাকি মঙ্গলের জন্যই করো। কিন্তু মেরিন বন্যাকে দিয়েকি আদৌ কারো মঙ্গল কিছু হওয়া সম্ভব ? নাহ আজকে আর ভাবা সম্ভবনা। আই নিড রেস্ট । কিন্তু রুম তো নিশ্তয়ই অতৃপ্ত আত্মাটা দখল করেছে। এদিকে আমার রুম আমার বেড আমার পিলো ছারা আমার ঘুমও আসবেনা? হুয়াট টু ডু? অতপ্ত আত্মাটা তো জীবনেও ঘুমায়নি? আজকে আর কিছু নিতে পারছিনা। কি করি? আইডিয়া। ক্লোরোফর্ম। ক্লোরোফর্ম দিয়ে ওটারে অজ্ঞান করে রুমে ঢুকে ঘুম দিবো।

নীড় ক্লোরোফর্ম দরজার নিচ দিয়ে রুমে স্প্রে করে দিলো।

নীড় : ২-৩মিনিট পর রুমে ঢুকবো। ভীষন ঘুম পাচ্ছে। ঘুম পেলে আমার মাথা কেন যে কাজ করেনা?

নীড় রুমে ঢুকলো। রুমের লাইট নেভানো। প্রায় অন্ধকার। মোমবাতির মৃদু আলোতে চারদিকের ফুলগুলো দেখা যাচ্ছে।

নীড় : আমার রুম কে সাজালো?

মেরিন : আমি…

মেরিনের কন্ঠ শুনে নীড় চমকে উঠলো।
নীড় : এই অতৃপ্ত আত্মাটা কি ক্লোরোফর্মেও অজ্ঞান হয়না?

মেরিন : মানে?

নীড় পাশ ফিরলো। দেখলো মেরিন ব্যালকনিতে দারিয়ে আছে ।
মেরিন : আপনার ব্যালকনিটা খুব সুন্দর।

নীড় : কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি?

মেরিন এসে নীড়ের সামনে এসে দারালো।

মেরিন : কপাল খারাপ হলে ব্যালকনি সুন্দর হয় বুঝি?

নীড় মনে মনে : যখন স্প্রে করেছিলাম তখন অতৃপ্ত আত্মাটা ব্যালকনিতে ছিলো।

মেরিন : কি ভাবছেন?
নীড় : এটাই যে অভিশাপ আমার সাথে জুরে গিয়েছে।
মেরিন : আর এই অভিশাপটাই আপনার সারাজীবনের সঙ্গী।

নীড় : না গো অভিশাপকে সারাজীবন সাথে বয়ে নিয়ে বেরানোর মতো বোকা আমি নই। ছুরে ফেলে দিবো।
মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : মেরিনের লাইফে কি হয় সেটা মেরিন ডিসাইড করে। তাই ছুরে ফেলা তো দূরের কথা … এই কথা আর কখনো মাথাতেও আনবেননা। ভুলে যান। কেবল এটা মনে রাখবেন আমি আপনার বউ… নীড়ের মেরিন।

নীড় : #ঘৃণার_মেরিন … আমি কোনোদিনও ভুলবোনা তোমাকে। তোমার অস্তিত্বকে। আজকে কথা দিলাম… সারাজীবন ঘৃণা করবো।

মেরিন : থ্যাংক ইউ। কারো ভালোবাসার মানুষ হওয়ার থেকে ঘৃণার মানুষ হওয়া ভালো। কারন একমাত্র ঘৃণাই আমার জন্য সত্য। ঘৃণাই শেষ পর্যন্ত সাথে থাকে । তবে হ্যা … ভালো আপনি আমাকে বাসবেন।

নীড় : কখনো না… কোনোদিনও না ।

মেরিন : সেটা দেখা যাবে। আমি আপনার ঘৃণার থেকে ভালোবাসার মেরিন হবো। ততোদিন আপনি মন দিয়ে আমাকে ঘৃণা করুন। আর আমি মন দিয়ে আপনাকে ভালোবাসবো। আমার ভালোবাসায় আপনি হয়তো আমাকে ঘৃণা করতে ভুলে যাবেন।

বলেই মেরিন নীড়কে সালাম করলো।

মেরিন : এখন আমার মাথায় হাত রেখে দোয়া করুন। যতোক্ষন দোয়া না করবেন তখন আমি এভাবেই এখানে বসে থাকবো।

অনেকক্ষন হয়ে গেলো। মেরিন একই ভাবে জেদ ধরে বসে রইল।। আর নীড় একইভাবে দারিয়ে রইলো। মেরিন মাথা তুলল।

মেরিন : কি ব্যাপার আর ক… নীড়…

দেখলো নীড়ের হাত থেকে রকতো পরছে। মেরিন তারাতারি লাইট জ্বালিয়ে দিলো।

দেখলো নীড়ের হাত কাটা। লেখা ‘ঘৃণার মেরিন’ ।

মেরিন : নীড় …. আপনার হাত…

নীড় : যতোদিন আমার হাতে এই ঘৃণার মেরিন থাকবে ততোদিন আমার মনে তোমার জন্য ঘৃণা থাকবে। যখন এই নিশান মিটে যাবার অবস্থা হবে আমি আবার নতুন করে নিশান বানাবো। সারাজীবন তোমাকে ঘৃণা করবো।

মেরিনের চোখের কোনে পানি চলে এলো। নীড়ের কথায় না। নীড়ের হাতের রক্ত দেখে।

.

মেরিন নীড়কে বসিয়ে দিলো। এরপর ওয়াশ করে ব্যান্ডেজ করতে বসলো। চোখ দিয়ে পানি পরছে।

মেরিন : আপনি আমাকে যতোখুশি ঘৃণা করেন। স্বাদরে গ্রহন করবো। কিন্তু আজকের পর থেকে ভুলেও কোনোদিন নিজেকে আঘাত করার কথা মাথাতেও আনবেননা। ভুলেও নিজের ১ফোটা রক্ত ঝরাবেননা। যদি এমনটা করেন তবে এর মাশুল আপনার প্রিয়দের দিতে হবে। কারন আপনার জীবন এখন আপনার না। আমার। আপনিই আমার ।

মেরিন জনকে ফোন করলো।

মেরিন : হ্যালো জন… আমি তোমাকে কতোগুলো মেডিসিনের নাম এসএমএস করছি। আধাঘন্টার মধ্যে আমি ওগুলো হাতে চাই।
জন : ওকে ম্যাম।

মেরিন রেখে দিলো।

নীড় : এতোরাতে অর্ডার তো দিলা ছেলেটাকে। ও পাবে কোথায়?

মেরিন : ও জন। আমি যখন বলেছি দরকার হলে ও দোকান লুট করাবে। কতোটা কষ্ট হচ্ছে আপনার… যতোফোটা রক্ত আপনি নিজের ঝরিয়েছেন তার দিগুন আমি নিরার ঝরাবো। আই প্রমিস।

নীড় : তুমি কি মানুষ? আমি রক্ত ঝরিয়েছি এর শাস্তি নিরাকে কেন দিবে? যদি আমাকে ভালোবেসে থাকো তবে আমার যতোটুকু রক্ত ঝরেছে ততোটুকু নিজের রক্ত ঝরাও। স্বার্থপর কোথাকার।

বলেই নীড় ওয়াশরুমে চলে গেলো।

.

নীড় ওয়াশরুম থেকে বের হতেই মেরিন ওকে ইনজেক্ট করে দিলো।

নীড় : আহ… হুয়াট ওয়াস দ্যাট…
মেরিন : আপনার ব্যাথা কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে যাবে। এক বিন্দুও থাকবেনা।

নীড় : এই ব্যাথা নাইবা থাকলো। বাট মেরিন বন্যা নামক ব্যাথাটা তো আর সহজে দূর হবেনা।

বলেই নীড় শুয়ে পরলো।
মেরিন : থ্যাংক ইউ নীড়… নিজের মন-মস্তিষ্কে আমাকে জায়গা দেয়ার জন্য। ঘৃণার ছলেই হোক…
দিওয়ানা আশিকদের মতো আমার নাম নিজের হাতে নিজেই খোদাই তো করলেন …
নীড় : জাস্ট কিপ ইউর মাউথ শাট ।

ইনজেকশনের প্রভাবে নীড় ঘুমি়য়েও পরলো। মেরিন ১টা চেয়ার টেনে নীড়ের সামনে বসলো। এরপর ১টা হাসি দিলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ নীড়। আমার জন্য আপনি নিজের রক্ত ঝরিয়েছেন। খুব খারাপ লেগেছে আমার। আপনি ঘৃণা করে ১হাতে আমার নাম লিখেছেন। আর আমি ভালোবেসে ২হাতেই লিখবো। আম্মু আমাকে বনপাখি ডাকতো। এখনো ডাকে। হ্যা আমাকে চেনেনা। তবুও এই নাম তার মনে … মুখে। আর আমার আম্মুর বনপাখি আপনাতে আটকে গিয়েছে। আপনি #বনপাখির_নীড়…

মেরিন নিজের ২হাতেই। লিখলো। মেরিন ২হাতই সমানভাবে ব্যাবহার করতে পারে।

বেশ কিছুক্ষন পর মেরিন নীড়ের ওপর শুয়ে ওরই বুকের ওপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরলো।

.

সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। দেখলো মেরিন কফি নিয়ে দারিয়ে আছে।
মেরিন : গুড মর্নিং জান।
নীড় : হুয়াট সো গুড ইন দিস মর্নিং?
বলেই নীড় ব্ল্যাংকেট মুরি দিয়ে আবার শুয়ে পরলো।
মেরিন : কফি রেখে গেলাম খেয়ে নিয়েন।
নীড় : আমি ঘুম…
মেরিন : ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিয়েন…
নীড় : তোমার হাতেরটা খাবোনা।
মেরিন : এখন থেকে রোজ আমার হাতেরটাই খেতে হবে।
বলেই মেরিন নিচে গেলো। নিহাল জগিং করে এসে বসলো।

নিহাল : নীলা জু…
মেরিন : এই নাও জুস ।
নিহাল : একি তুমি?
মেরিন : তা নয়তো কি খান বাড়ি থেকে এসে নিরা দিবে ?
নিহাল : নীলা …. নীলা … এই নীলা।
নীলিমা ছুটে এলো।
নীলিমা : কি হয়েছে?
নিহাল : তুমি জানো যে জগিং থেকে ফেরার পর জুস খাই। তো এই মেয়েটা কেন জুস নিয়ে দারিয়ে আছে?
মেরিন : এই যে বাবা … আমার নাম এই মেয়ে না। আমার নাম মেরিন। যদি নাম না নিতে পারো তবে বউমা বলে ডাকো।
নিহাল : মোটেও না। আর তুমি খবরদার আমাকে বাবা ডাকবেনা।
মেরিন : ডাকলে কি করবে শুনি?
নিহাল : সারা দিবোনা।
মেরিন : দেখো … আমি জ্ঞান হবার পর থেকে কবির ফয়সাল খানকে কখনো বাবা বলে ডাকিনি। তোমাকে ডেকেছি। আর ১বার যখন ডেকেছি তখন ডেকেছি। এই ডাক কেরে নেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। বুঝেছো? আর শোনো… তোমাকেও আমার মতে মতে চলতে হবে। কারন চৌধুরী এম্পায়ারের ৮০% মালকিন আমি।
নিহাল : হুয়াট ?
মেরিন : হামম। মামনির ৬০%ও আমার নামে। আর নীড়ের ২০%ও আমার নামে। তো আমার সাথে ত্যারামি করলে বুম … চেঞ্জ করে এসে ব্রেকফাস্ট করলে খুশি হবো।

বলেই মেরিন চলে গেলো।

নিহাল : কি বলে গেলো? তোমাদের শেয়ার ওর নামে কিভাবে হলো?
নীলিমা : নীড়েরটা জানিনা। আমারটা আমিই দিয়েছি।
নিহাল : মানে…
নীলিমা : মানেটা বলবো। তবে এখননা। তবে ১টা কথা বলবো … মেরিন অতোটা খারাপ নয় যতোটা খারাপ আমরা মনে করি…

নিহাল : দারাও নীলা …
নীলিমা দারালো।
নিহাল : কাজটা ঠিক করোনি। চৌধুরী এম্পায়ার ওর হাতে তুলে দিয়ে ঠিক করোনি। তুমি চিনোনা ওকে। ওর কাছে পাওয়ারই সব।
নীলিমা : হয়তো ওকে আমি তোমাদের মতো করে চিনিনা। নিজের মতো করেই চিনি…

.

একটুপর…
নীড় নিচে নামলো । দেখলো নিহাল-নীলিমা খাচ্ছে আর মেরিন সার্ভ করছে।
মেরিন : আসুন খেয়ে নিন।
নীড় : জাস্ট শাট আপ।
বলেই নীড় বেরিয়ে যেতে নিলো।
মেরিন : এখন যদি না খেয়ে বাসার বাহিরে পা রাখা হয় ফলটা কিন্তু খুব খারাপ হবে।
নীড় : আমার সাথে যা খারাপ হবার তা তো হয়েই গিয়েছে। এর চেয়ে বেশি আর কি খারাপ হবে?
মেরিন : এই লোকটা কেন যে আমার কথা একবারে শোনেনা। খামোখা আমাকে বাধ্য করে কিছুনা কিছু করতে।
নিহাল : তুমি আমার ছেলেকে চিনোনা মেরিন বন্যা। আমি চিনি । জোর করে ওর বউতো হয়েছো … এখন তোমার সাথে কি কি হতে পারে সেটা এখন ১জানে আল্লাহ আর জানে আমার ছেলে।
মেরিন : আপনার ছেলেকে আপনি চিনেন। বাট আমাকে তো আমি নিজেও চিনিনা। আমি কখন কি করি তা নিজেও জানিনা , বুঝিনা। করার দরকার তাই করি ।
ওদের খাওয়া শেষ হবার পর মেরিন বের হলো।

.

নীড় ড্রাইভ করছে। আর মেরিনের ১৪গুষ্ঠি উদ্ধার করছে।
নীড় : ছারবোনা তোমাকে মেরিন আমি। কিছুতেই ছারবোনা। তুমি আমার কাছ থেকে আমার ভালোবাসা কেরে নিয়েছো। তুমি নিজেই আমাকে ছেরে দিবে। আমার নাম নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। তুমি এখনও আমার রং রূপ দেখোনি। আই উইল শো ইউ…
তখন ওর সামনে ১টা গাড়ি এসে থামলো। অ্যাক্সিডেন্ট ঠেকানোর জন্য নীড় খুব জোরে ব্রেক চাপলো। রেগে গিয়ে গাড়িটার সামনে দারালো।
নীড় : আর ইউ কমপ্লিটলি স্টুপিড…

কাচ নামলো। দেখলো মেরিন।
মেরিন : হামম হয়তো।

.

চলবে…

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 11
writer : Mohona

.

মেরিন : হামম হয়তো।
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা …
মেরিন : তাছারা আর কার ক্ষমতা আছে যে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের পথ আটকায় হামমম ?
নীড় : অসহ্যকর। গাড়ি সরাও । যেতে দাও আমাকে।
মেরিন : যাবো যাবো। ব্রেকফাস্ট এনেছি। খেয়ে নিন। এরপর আমি নিজেই সরে যাবো।
নীড় : তোমাকে সরতে হবেনা। আমিই গাড়ি ঘুরিয়ে নিচ্ছি ।
মেরিন : দেখেন ঘুরাতে পারেন কিনা…

নীড় লুরিং মিররে দেখলো বড় বড় ২টা ট্রাক পেছনের দিকটা ব্লক করে রেখেছে।
নীড় : ওহ গড। আবার ঝামেলা।
মেরিন : আমি কিন্তু সকাল সকাল ঝামেলা করতে চাইনি । আবারও আপনিই বাধ্য করলেন। আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই।
নীড় : তোমার তো কোনো দোষই নেই। দোষ তো আমার। কোন কুক্ষনে যে তোমার গাড়ির সামনে এসেছিলাম।

মেরিন গাড়ি থেকে নেমে এসে নীড়ের গাড়িতে বসলো। হাতে ১টা ঝুড়ি।
নীড় : একি তুমি আমার গাড়িতে আসলে কেন?
মেরিন : আপনাকে ব্রেকফাস্ট করিয়ে মেডিসিন খাওয়াতে।
নীড় : মেডিসিন? কিসের মেডিসিন?
মেরিন : কালকে যে ঢং দেখিয়ে হাত কেটে আমার নামটা যে লিখে ক্ষত করলেন… সেটা ঠিক করতে হবেনা? দেখি মুখ খুলুন…
নীড় : আম…
মেরিন মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিলো।
নীড় : তুমি আজকে ফুল স্লিভের ড্রেস পরেছো?
মেরিন : খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই। নিন আবারও মুখ খুলুন।
নীড় : তুমি এমন কেন?
মেরিন : কেমন?
নীড় : নাথিং…

মেরিন নীড়কে খাইয়ে মেডিসিনও খাইয়ে দিলো।
মেরিন : নিন… এখন মনের সুখে ঘুরুন। ঠিক ৩টা বাজলে প্লিজ আবাক কিছু খেয়ে মেডিসিন গুলো খেয়ে নিবেন। তা না হলে ৩টা বেজে ১৫মিনিটে আমি আবার প্রকট হবো। এই আপনি এই শরীর নিয়ে ড্রাইভ করতে পারবেন তো?
নীড় : প্লিজ লিভ।
মেরিন : নিজের খেয়াল রাখবেন।
বলেই মেরিন নেমে গেলো । নীড়ের পথও ছেরে দিলো।

.

সেতু : কি লাভ হলো ৩টা বছর ধরে বনপাখির অভিনয় করে?
নিরা : লাভ ১টাই। নীড় মেরিনকে ঘৃনা করে। এরথেকে ভালো আর কি হতে পারে মাম্মি?
সেতু : তুমি এখনও এই কথা বলবে? মেরিন নীড়ের বউ। আজ হোক কাল হোক নীড় জেনেই যাবে যে মেরিনই ওর বনপাখি। আর ১বার যদি এই বিষয়টা নীড়-মেরিনের সামনে উন্মোচন হয়ে যায় তবে তোমাকে নীড়-মেরিনের হাত থেকে কেউ বাচাতে পারবেনা। কেউনা । আগেই বলেছিলাম যে এমন খেলা খেলোনা খেলোনা খেলোনা ।
নিরা : আহ মাম্মি… তখন কি জানতাম নাকি যে ওই মেরিন নীড়ে আটকে যাবে? আমি তো জাস্ট ওর ভাগের ভালোবাসাটাও কেরে নিতে চেয়েছি। দ্যাটস ইট।
সেতু : কিন্তু ভেবে দেখেছো ওদের সামনে সত্যটা আসলে কি হবে?
নিরা : আসবেনা মাম্মি। আমি নীড়ের কাছে মেরিনকে আরো বিষিয়ে দিবো।
সেতু : তুমি বোধ হয় ভুলে যাচ্ছো ও মেরিন বন্যা। আর মেরিন নীড়কে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। মেরিন যদি জানে যে তুমি ওর নীড়ের নামটাও নিয়েছো … ও কিন্তু যা তা করবে…

.

নীড় : কোথায় ফেসে গেলাম? না জানি নিরার কি অবস্থা? নিশ্চয়ই কান্নাকাটি করে অবস্থা খারাপ। ওদের বাসাতেই যাই…

নীড় খান বাড়িতে গেলো। দেখলো মেরিনের গাড়ি।
নীড় : নাও হয়ে গেলো। এখানেও এসে হাজির । এখন যদি আমাকে ভেতরে দেখে না জানি আমার বনপাখিটার সাথে কি করে? আমার সাথে যা না হয় তা করতো তাতে কিছুই হতোনা। বাট আমার পরিবার নিয়ে টানাটানি ভালো লাগেনা। বাসায় চলে যাই।
মেরিন : কেন বাসায় যাবেন কেন শুনি? বিয়ের পরদিন যে শশুড়বাড়ি আসতে হয় … সেটা বুঝি জানেন না? কখন থেকে আপনার জন্য ওয়েট করছি…
নীড় : ওয়েট করছো মানে?
মেরিন : ওয়েট করছি মানে ওয়েট করছি… আমি জানতাম আপনি আপনার সো কলড ভালোবাসার সাথে দেখা করতে আসবেন। আর তাই আমি বসে বসে ওয়েট করছি। ভেতরেও ঢুকিনি। একসাথে ঢুকবো বলে।
নীড় : ১মিনিট ১মিনিট … সো কলড ভালোবাসা মানে?
মেরিন : সো কলড মানে সো কলড। এখন চলুন ভেতরে।
বলেই মেরিন নীড়ের হাত ধরে টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে গেলো।

মেরিন : দাদুভাই…
দাদুভাই : দিদিভাই….
মেরিন দাদুভাইকে জরিয়ে ধরলো ।
মেরিন : ভালো আছো তুমি ?।
দাদুভাই : হামমম । নীড় দাদু… কেমন আছো?
নীড় : ভালো দাদুভাই।

নিরা : বেবি…
নিরা নীড়ের দিকে দৌড়ে আসতে নিলো। মেরিন ওর পা বরাবর গুলি করলো।
নিরা : আহ…

নীড় : নিরা…
নীড় নিরার কাছে যেতে নিলে মেরিন নীড়ের হাত ধরে ফেলল ।
মেরিন : জান… গুলি জাস্ট টাচ করে চলে গিয়েছে। ওকে মারার উদ্দেশ্য আপাদত আমার নেই। বাট যদি … আপনি এখন ওর কাছে যান… ওকে টাচ করেন… তাহলে ওর শরীরের যেই যেই জায়গায় টাচ করবেন সেই সেই জায়গা ওর শরীর থেকে আলাদা করে দিবো।

সেতু : হ্যালো কবির…. এখনই বাসায় আসো। ওই ডাকাতটা আমার মেয়েটাকে এসেই গুলি করে দিয়েছে।

কবির : কি বলছো কি? আমি এখনই আসছি।

সেতু : তুমি হসপিটালে পৌছাও। আমি বেবিকে নিয়ে ওখানেই যাচ্ছি।

কবির : হামমন।

সেতু নিরাকে নিয়ে হসপিটালে গেলো।

.

নীড় : দেখেছো দাদুভাই।। দেখেছো তুমি ওকে? মানুষের রক্ত ঝরানো ওর কাছে কোনো ব্যাপারই না। ওর মধ্যে মানবিকতার ছিটেফোটাও নেই । তুমি তবুও চুপ থাকবে?
দাদুভাই : ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন … আজকে তোমার সামনে যে মেরিন বন্যা দারিয়ে আছে সে আমার গড়া। ও যেমন ছিলো তেমন নেই । ওকে ভেঙেচুরে এমনভাবে নতুন করে গরেছি । এখন কেন গরেছি? এর পেছনে কি কারন সেটা জানার অধিকার তোমার আছে । কিন্তু এখন এই মুহুর্তে আমি তোমাকে কারন জানাবোনা। কারন এখন তুমি সবটা জানতে ইন্টারেস্ট মাত্র। জাস্ট কৌতুহলের জন্য । তুমি ভালোবেসে জানতে চাইছোনা। যেদিন তুমি ভালোবেসে সবটা জানতে চাইবে সেদিন মেরিন না বললেও আমি তোমাকে সব বলবো। এখন বসো খাওয়া দাওয়া করো। প্লিজ না কোরোনা।

৩জন বসে খাওয়া দাওয়া করলো।

.

রাতে…
নীড় বেডের মাঝে বালিশগুলো রাখছে।
মেরিন : আমি কি জানতে পারি আপনি কি করছেন?
নীড় : দেয়াল বানাচ্ছি। ওপাশে তুমি এপাশে আমি…
মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : ওহ রিয়েলি?
নীড় : হামম।
মেরিন আবার ১টা বাকা হাসি দিয়ে নীড়ের ওপরই শুয়ে পরলো। এরপর নীড়ের বুকের ওপর মাথা রাখলো।
মেরিন : আইডিয়াটা ভালোই ছিলো?
নীড় : হুয়াট ওয়াস দ্যাট? নামো নামো বলছি।
মেরিন : নামবোনা।
নীড় মেরিনকে ঘুরিয়ে বেডে ফেলল। এরপর দারিয়ে গেলো।
নীড় : আমি গেস্টরুমে গিয়ে ঘুমাবো।
মেরিন : আমি কি ওখানে যেতে পারবোনা?
নীড় : এই দেখো আমি তোমাকে বউ হিসেবে মানিনা।
মেরিন : এটা অনেক পুরানো ডায়লগ জান। অনেক বোরিং হয়ে গিয়েছে। কেউ শুনতে চায়না।
নীড় : আমি সিরিয়াস। আমার থেকে দূরে থাকবে। আমার বুকে মাথা রাখার অধিকার শুধু আমার ব… নি…
মেরিন সামনে থাকা চেয়ারটাতে লাথি মারলো।

মেরিন : কাইন্ডলি নামটা কমপ্লিট করে আমার মেজাজ আরো গরম করবেননা । না হলে আপনার আহত নিরা নিহত নিরা হয়ে যাবে।
নীড় : দেখো আমি তোমাকে লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি। প্লিজ আমার নিরার থেকে দূরে থাকবে।
মেরিন : এই যে আপনি ‘আমার নিরা’ বললেন… এটার শাস্তিও নিরাকে পেতে হবে। আর সেটা এখনই।
নীড় : তুমি কি?
মেরিন : আমি মেরিন। যে আপনার জন্য সবকিছু করতে পারে।
বলেই মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ অ্যা লট।
নীড় মেরিনকে সরিয়ে দিলো।
নীড় : আই হেইট ইউ অ্যা লট। আমার থেকে দূরত্ব রেখে চলবে। বুঝেছো… ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু টাচ মি। আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর অধিকার আমার ভালোবাসার আছে। আর কারো না।
মেরিন : একটু দারান নীড়…. নীড়…. মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে অধিকার দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। আপনারও নেই। তেমনি স্ত্রী হিসেবে আপনি আমাকে অধিকার দিলেন কি দিলেন না সেটা নিয়েও আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বাট আমি যখন বলেছি যে আমি আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো তখন ঘুমাবো। রোজ রাতেই ঘুমাবো। যদি ভালোভাবে রাজী না হন তবে আবার আমাকে কিছু করতে হবে?
নীড় : কি করবে তুমি? আবার আমার মা-বাবার জীবন নিয়ে খেলবে?
মেরিন : না। আপনাদের ওয়ার্কারস দের লাইফ নিয়ে খেলবো।
নীড় : মানে?
মেরিন : নীড় … আপনাদের সবগুলো ফ্যাক্টরিতে সর্বমোট কতোজন শ্রমিক রাতে থাকে? আপনার কোনো হিসাব আছে? নেই। আমি জানি। বাট আমার আছে। আপনাদের ৯টা ফ্যাক্টরিতে রাতে যে শ্রমিকগুলো রাত কাটায় তাদের সংখ্যা প্রায় সব মিলিয়ে আড়াইশ। এই আড়াইশ মানুষই এখন পরম সুখে ঘুম যাচ্ছে। ফ্যাক্টরির সাথে ওই নিরীহ মানুষগুলোকেও পুরিয়ে মারতে আমার নিজেরও অনেক কষ্ট হবে।
নীড় : মেরিন… তুমি এতো খারাপ? ওই সাধারন মানুষদের কেন টানছো? ওদের কি দোষ?
মেরিন : ওদের দোষ নেই। ওদের পরমভাগ্য যে ওরা চৌধুরীদের সাথে যুক্ত।
নীড় : আরও বেশি ঘৃণা হচ্ছে তোমায়।
মেরিন : থ্যাংক ইউ। এখন বলুন আমার আবদার রাখবেন কি রাখবেন না? সেই বুঝে আমার জনকে ফোন করতে হবে।
নীড় : …
মেরিন : ওকে। আমার মোবাইলটা কোথায় যেন র…
নীড় মেরিনের মোবাইলটা নিয়ে আছার মারলো।
নীড় : এখন তোমার সময় মেরিন। তাই মাথা নত করতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু সময় কিন্তু পাল্টাবেই । এন্ড কাইন্ডলি কোনো নিরীহ মানুষের জীবন নিয়ে খেলোনা।
মেরিন নীড় গাল ২টা টেনে দিলো।
মেরিন : গুড ছেলে। তবে মাঝে মধ্যে অবাধ্য ছেলেদের মতো বায়না কেন করেন সেটাই বুঝিনা… ভীষন ঘুম পাচ্ছে । লেটস স্লিপ ।

মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পরলো। ঘুমানোর আগে গুড নাইট কিস করতে ভুললো না। আবার সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে গুড মর্নিং কিস করতে ভুললো না। পরদিন থেকে নীড় আবার কনিকার ট্রিটমেন্ট শুরু করলো।

.

২দিনপর…
সবাই বসে রাতের খাবার খাচ্ছে তখন নিলয় হনহন করে ভেতরে ঢুকলো। মেরিন সাথে সাথে গানটা হাতে নিলো।
মেরিন : তু…
নিলয় মেরিনকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মেরিনের মুখের সামনে ক্লোরোফর্ম স্প্রে করলো। মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো।
নিলয় : তুই শুধু আমার …
বলেই নিলয় মেরিনকে কাধে তুলে নিলো।
নীলিমা : এই ছেলে তুমি মেরিনকে কাধে তুললে কেন?
নিহাল : নামাও ওকে। তোমার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি। তুমি মেরিন বন্যাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছো? চৌধুরী বাড়ির বউকে তুলে নিয়ে যাচ্ছো।

নীড় চুপচাপ খাচ্ছে আর দেখছে।

নীড় মনে মনে : এর তো সাহস আছে। পুরো মেরিনের মুখোমুখি হয়ে স্প্রে করে দিলো? এরমতো সাহস আমার কেন হলোনা। ছিঃ …. আমি কি তবে ভীতু?

নীলিমা : এই নীড়… তোমার বউকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তুমি কিছু বলছোনা কেন? কিছু করছোনা কেন?
নীড় : কি বলবো কি করবো…
নিহাল : ও তোমার বউ …
নীড় : আমি ওকে বউ বলে মানিনা।
নিহাল : তাই বলে ১টা মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে আর তুমি দেখবে?
নীড় : দেখছি কোথায় খাচ্ছি তো। তোমরা বললে চোখ বন্ধ করেও থাকতে পারি। ১কাজ করি। আমি রুমে গিয়ে খাওয়া শেষ করি।
নীড় নিজের খাবারের প্লেট নিয়ে ওপরে যাচ্ছে। তখন নিহাল-নীলিমা নিলয়কে বাধা দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করলো। তখন নিলয় ওদের পায়ের দিকে ফাকা গুলি করলো।

নীড় : এ আমার মামনি-বাবার পায়ের নিচে ফাকা গুলি করলো? আসলেই তো এর অনেক সাহস। মামনি-বাবা ভয় পেয়েছে মনে হচ্ছে। বেশ হয়েছে।এই বয়সে অতৃপ্ত আত্মাটাকে বাচাতে যাচ্ছিলো কেন? আমি রুমে যাই।
নীড় রুমে চলে গেলো। নিলয় মেরিনকে নিয়ে চলে গেলো।

নীলিমা : এখন কি হবে? তুমি কিছু করোনা।
নিহাল : কি করবো আমি? জন। হ্যা জন। তোমার কাছে জনের নাম্বার আছে?
নীলিমা : না।
নিহাল : তাহলে তুমি কেমন তরো সাপোর্ট করছো ওকে?
নীলিমা : …
নিহাল : ওর মোবাইলটা মনে হয় টেবিলেই পরে আছে । জনের নাম্বার পাওয়া যাবে।
নিহাল মেরিনের মোবাইলটা নিলো । তবে ওয়ালপেপারটা দেখে অবাক হয়ে গেলো। কারন ওয়ালপেপারে দাদুভাই-নিহাল-নীলিমা-নীড়-মেরিনের ছবি। যেটা বিয়ের দিন মেরিন জোর করে তুলেছিলো।

নিহাল আর কিছু না ভেবে জনকে ফোন করলো।

.

নিলয় মেরিনকে ওর বাড়িতে নিয়ে এলো। ওর বেডরুমে নিয়ে গেলো। মেরিনকে ওর বেডে শুইয়ে দিলো।
নিলয় : তুই অন্যকারোনা মেরিন। তুই শুধু আমার। গত ৭-৮বছর ধরে তোর আশায় বসে আছি। আজকে সেই তুই অন্য কারো বউ। তোকে অন্যকেউ টাচ করবে। না। তুই শুধুই আমার । যদি তুই আমাকে মেরেও ফেলিস কাল সকালে তবুও আমার কোনো দুঃখ থাকবেনা।
নিলয় নিজের শার্টটা ছুরে ফেলে দিলো। মেরিনের শাড়ির আচলে হাত দিতে নিলো কেউ ওর হাতটা ধরে ফেলল। নিলয় পাশ ফিরে দেখে নীড়…

১হাত দিয়ে আপেল খাচ্ছে। আর অন্যহাত দিয়ে ওর হাতটা ধরে রেখেছে।

নীড় : হাই… হুয়াটস আপ?
নিলয় : তুমি? এখানে?
নীড় : হামমম আমি। অবাক হলে আমাকে দেখে? আমি নিজেও অবাক হয়েছি। নিজেকেও অতৃপ্ত আত্মা লাগছে। কিভাবে এখানে পৌছালাম বলো। ওয়াও ।
নিলয় : তুমি এখানে কেন?
নীড় : দুর্ভাগ্যবশত ও আমার বংশের সম্পত্তি এখন। ‘চৌধুরী’ টাইটেলটা ওর নামের সাথে জুরে গিয়েছে। ওর কিছু হলে সবাই বলবে যে দেখো ‘মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী’ এর কি হলো? এখন আমি মানি না মানি যে ও আমার বউ… পাবলিক তো মানে। তাই আমার এখানে আসা। আমার না তোর ওপরে ভীষন রাগ হচ্ছে। আরে ভাই… তোর যখন এতোই সাহস তুই বিয়ের আগে সাহসটা দেখাতি। আমার চোখের আড়ালে হতো। বিয়ের ৩দিনপর সাহস দেখাতে কে বলেছে তোকে? এতো মজার ডিনারটা অর্ধেক রেখে আসতে হলো। আমার খাওয়া আর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটালে না আমার জাস্ট সহ্য হয়না। এখন ফল ভোগ করো…
বলেই নীড় নিলয়কে ১টা ঘুষি মারলো।

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here