#তুমি_আমি_দুজনে
#লেখিকা_হুমাইরা_হাসান
পর্ব- ৬
টানা চার ঘন্টা ক্লাস করে বেরিয়েছে তুরা,সাথে ফারিহা আর সাদমান। এক ভাবে এতক্ষণ ক্লাস করা হয়নি অনেকদিন,বেশ ক্লান্তই লাগছে। পুরো ক্লাস তুরা নিচের দিকে তাকিয়ে করেছে, জ’ল্লাদ লোকটা সামনে ছিলো কি না! দুবার চোখ তুলতেই চোখাচোখি হয়েছিলো আহানের সাথে, তুরা ভাবে লোকটা ভারি ব’জ্জাত, ওভাবে জ’ল্লাদের মতো ভ্রু কুচকে তাকানোর কি আছে আজব,,সারা ক্লাসের মেয়েরা যে চোখ দিয়ে গি’লে খাচ্ছে তাতে কিছুই নাহ,আর সে তাকালেই মুখটা কুম্ভকর্ণের মতো করছে,যত্তসব।
-ইয়ার মাজা টা ব্যথা হয়ে গেছে, এতক্ষণ ধরে বসে ক্লাস করেছিলাম শেষ কবে মনেই নেই
-হ্যাঁ তা ঠিক, তবে ভালো ছিলো ক্লাস গুলো, আহান স্যার খুব ভালো ক্লাস নেন
সাদমানের কথার তোয়াক্কা না করে ফারিহা নিজের ধ্যানেই বললো
-উনি নিজেও একটু বেশিই ভালো। স্যার হয়ে এত ভালো হওয়া উনার উচিত হয়নি
ফারিহার কথায় তুরার কপালে ভাজ পরে,ওই জ’ল্লাদ কি না ভালো? তবে সেটা ভেতরে রেখেই ফারিহা কে জিজ্ঞাসা করে
-উনি এত ভালো তোমাকে কে বললো
-আরে বলতে ক্যান হবে,চেহারা দেখস না চেহারা,,পুরাই চকলেট ইয়ার! আমিতো পারিনি চোখ দিয়ে খেয়ে ফেলতে
ফারিহার এমন বেহায়া কথা বার্তা শুনে তুরা হা করে চেয়ে আছে, এই মেয়ে বলে কি! টিচার কে নিয়েও এসব কেও বলে। তুরা নিজের বিস্ময় দমিয়ে রাখলেও সাদমান বেশ অবাক হয়ে বলে
-এমা ছি ছি। নিজের টিচারকে নিয়েও কেও এসব বলে
ফারিহা চোখে মুখে বিশাল বিরক্তি নিয়ে মুখ দিয়ে চ জাতীয় শব্দ করে বলে
-আববে থাম,ব্রেক লাগা তোরা ভাই। আহান স্যারের মতো চার্ম কিং রে দেখলে যে কারো মনে ঘন্টা বেজে যাবে, কি স্টাইলে বুকে হাত গুজে দাঁড়ায়, এক হাতে চুলে যখন ব্রাশ করে, যেই সোয়াগ এ কথা বলে,আহা!
ফারিহার এমন ফিল্মি স্টাইলে বিবরণ শুনে,সাদমান কিছুক্ষণ হা করে চেয়ে থেকে তুরার কাছে এসে বলে
-তোমারও কি বেজে গেছে বোন?
সাদমানের কথার আগামাথা না বুঝে তুরা বোকা বোকা মুখ করে বলে
-এ্যাঁ? কি বাজবে?
-ঘন্টা?
সাদমানের এমন অযৌক্তিক প্রশ্ন শুনে তুরার কাশি উঠে গেলো, শেষে কি না ওই জ’ল্লাদ লোকটাকে দেখে তার মনে ঘন্টা বাজবে,তার তো সাইরেন বাজে,বিপদের সাইরেন। লোকটার সামনে পরলেও হাঁটু কাঁপে আর তাকে দেখে কি নাহ সে গলবে,, তওবা তওবা।
-আম,বলছি অনেক তো বেলা হয়ে গেছে। এবার তাহলে যাই হ্যাঁ?
তুরার কথায় সাদমান বললো
-হ্যাঁ হ্যাঁ, এটা ঠিক বলেছো আমারও টিউশন আছে যেতে হবে, তুমি যাবে নাহ
সাদমানের কথা শুনে ফারিহা ফোন থেকে মুখ তুলে বললো
-হ্যাঁ যাবো তোহ। তুমি মাল কোনদিকে যাবে?
ফারিহার এমন লাগামছাড়া কথা শুনে সাদমান কিছুক্ষণ হা করে থাকলো,মাল? আজ অবদি কোনো মেয়ে তাকে মাল বলেছে বলে তার ধারণাও নেই।
-কি হলো মুখের সাটার বন্ধ করে আছো ক্যান আজব?
-আম মানে কলেজ রোডের দিকে
সাদমানের কথা শুনে ওর হাত ধরে ফারিহা বললো
-ওয়াও,আমিও ওইদিকেই যাবো চলো যাওয়া যাক।
এভাবে হুট করে হাত ধরায় বেশ থতমত খেয়ে গেলো সাদমান। ছেলে হলেও বেশ লাজুক স্বভাবের সে, মেয়েদের সাথে মেলামেশা কখনও খুব একটা ছিলোনাহ, ভার্সিটিতে এসে তুরা আর ফারিহার সাথেই প্রথম কথা।
-ডিয়ার তুমি কি একাই যাবে?
-না বাবা আসবে
-ওকে তাইলে তুমি থাকো হ্যাঁ? আমরা আসি, চলো
বলেই সাদমানকে টানতে টানতে নিয়ে গেলো ফারিহা, অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই মেয়েটা বেশ বান্ধবী সুলভ হয়ে গেছে, চটপটে স্বভাবের হলেও বেশ ভালো মনের মেয়েটা, ফারিহার যাওয়ার পানে চেয়ে আনমনেই হাসে কিছুক্ষণ তুরা।
কিন্তু পরক্ষনেই কপালে ভাজ পরে যায়,ওদের তো বলে দিলো এখন সে ফিরবে কি করে, এদিক ওদিক দেখতে দেখতে গেইটের বাইরে আসতেই কেও আচানক তুরার হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে ধপ করে দরজা লাগিয়ে দিলো, দরজা লাগানোর শব্দে হকচকিয়ে উঠলো তুরা,কি হলো?
সে গাড়ির মধ্যে এলো কি করে। পাশেও কেও নেই গাড়ির দরজা খুলে বেরোবে ভেবে দরজাতে হাত দিতে নিলেই পাশ থেকে শুনতে পেলো
-এক মিনিট স্থির থাকা যায় না? সব জাগায় বাঁদরামি শুরু করা লাগে
পুরুষালি গলা কর্ণকুহর হতেই ড্রাইভিং সাইডে তাকাতেই দেখলো শুভ্র শার্ট পরিহিত লোকটা এসে বসলো, তুরার দিকে একবার তীক্ষ্ণ নজরে চেয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। তুরা এখনো হা করে চেয়ে আছে, এই লোক কখন এলো আর এমন ধপ করে গাড়িতে বসালো! পাগল হয়ে যাবে সে এই জল্লা’দ টার পাল্লায় পরে।
-ভার্সিটিতে প্রথম দিন আসতে না আসতেই পার্টনার জুটিয়ে ফেলেছো,বাহ!
-মানে?
আহানের কথায় বিব্রত হয়ে প্রশ্ন করলো তুরা
-মানে বুঝো নাহ, প্রথম দিন এসেই জুটিয়ে নিয়েছো নিজের মতো কয়েকটা বাঁদর সারা ক্লাস ছটফট করে
-হ্যাঁ তা নয়তো কি মূর্তি হয়ে বসে থাকবে আজব
তুরার কথা শুনে ভ্রুকুটি করে তাকালো আহান, বাহ তাইলে কথাও জানে!
তারপর কোনো উত্তর না করেই গাড়ি চালানোতে মনযোগ দিলো,এই মেয়ের সাথে আজাইরা কথা খরচ করার কোনো ইচ্ছাই নেই তার,, সে তো তার বাবা তাকে ফোন করে বারবার বলে দিয়েছে তুরাকে নিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিতে নাহ তো আবার কোন সিন ক্রিয়েট হবে জানা নেই।
বাকিটা পথ নিঃশব্দে পাড় করে বাড়ির সামনে এসে গাড়িটা থামাতেই তুরা দরজা খুলে এক ছুটে বাড়ির ভেতর চলে গেলো।
তুরার যাওয়ার পানে চেয়ে ফোস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল আহান
-স্টুপিট
বলেই গাড়িটা স্টার্ট করেই মুহুর্তেই ধুলো উড়িয়ে দৃষ্টির সীমানার বাহিরে চলে গেলো
-কি ব্যাপার তুরা রাণী, খুব খুশি দেখাচ্ছে যে!
ড্রয়িং রুমে ঢুকতেই রাইমার কথা শুনে তুরা এক গাল হেসে এগিয়ে গেলো রাইমার দিকে,
-ভার্সিটি কেমন লাগলো, ফার্স্ট ক্লাস কেমন ছিলো?
তুরা গিয়ে সোফাতে রাইমার এক পাশে বসে ব্যাগটা কাধ থেকে নামিয়ে কোলের উপর রেখে হাস্যজ্বল চেহারায় বললো
-ভার্সিটি খুবব ভালো ছিলো আপু, ক্লাস ডিপার্টমেন্ট সব ভালো লেগেছে
-বাহ,তাই নাকি। মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে কিন্তু
-অবশ্যই করবো
হাসি হাসি মুখ করে বললো তুরা, পরক্ষনেই রাইমার আরও কাছে সরে এসে কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বললো
-সব তো বেশি ভালো ছিলো,কিন্তু তোমার ভাই একটু বেশিই জ’ল্লাদ
তুরার কথা শুনে রাইমা ফিক করে হেসে দিয়ে ওর মতোই ফিসফিসিয়ে বললো
-কেনো আমার জ’ল্লাদ ভাইটা আবার কি করলো
-কি আবার করবে, বাবা রে বাবা উনার ক্লাস আমিতো জানতাম ই নাহ আপু, কেমন দস্যির মতো চোখ করে চেয়ে থাকে জানো,আশেপাশে তাকাতেও ভয় করে এই বুঝি এসে স্কুলের পেট মোটা প্রিন্সিপাল স্যারের মতো ধ’মক দিবে
তুরার বাচ্চাদের মতো বলা কথা শুনে রাইমা হাহা করে হেসে দিলো,, এই মেয়েটা আচ্ছা দুষ্টু তো!
-কি নিয়ে এত হাসাহাসি হচ্ছে ননদিনী আর ভাবির মধ্যে, আমাদের ও বলো
পৌঢ় কণ্ঠে পাশ ফিরে তাকায় রাইমা আর তুরা, অদুরেই আমেনা খাতুনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তুরা উঠে গিয়ে হাত ধরে এগিয়ে আনে, ইদানিং তার হাঁটুর ব্যাথার জন্য ঘর থেকে একটু কম ই বেরোনো হয়। তুরা এক হাতে ধরে সোফাতে বসিয়ে দিলো আমেনা খাতুনকে।
-ও কিছুনা, আমাদের ননদ ভাবির সিক্রেট তোমার শুনতে হবে নাহ
-বাবা দুজনের ভালো জমেছে দেখছি
রাইমার কথায় আমেনা খাতুন বলে, তখনই রান্নাঘর থেকে রুবি খাতুন বেরিয়ে আসে, তুরাকে দেখেই পানির গ্লাস টা শাশুড়ির সামনে রেখে বললো
-তুমি এসে গেছো? তাইলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো, রাইমা তোমার অপেক্ষা করে বসে আছে, দুজনকে একসাথেই খেতে দেবো
-হ্যাঁ একদম। খিদেই আমার পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে তুরা, ফটাফট ফ্রেশ হয়ে আই তো
-তুমি এক্ষুনি বসো, আমি পাঁচ মিনিটে আসছি
বলেই ব্যাগটা হাতে নিয়ে সিড়ি বেয়ে ছুট দিলো তুরা।
-আরে আস্তে পরে যাবে তো! দেখলে মেয়েটার পাগলামি
খানিক হেসে বললো রুবি খাতুন। আমেনা বেগম চোখ থেকে মোটা ফ্রেমের চশমা টা খুলে রেখে বললো
-অল্প বয়সে মা বাবা হারিয়েছে মেয়েটা,তার উপর চাচীর সংসারেও কম দাপট পোহায়নি, প্রতিকূল পরিবেশে থেকে নিজের চঞ্চলতাকেই হারয়েছিলো। একটু স্নেহ পেয়ে আবার উতলে উঠেছে,, ভীষণ লক্ষীমন্ত মেয়ে রুবি। ওকে কখনো রাইমার চেয়ে কম দেখো নাহ।
-জানি, আমিওতো মা। ওকে বুঝতে আমার খুব অসুবিধা হয়না। শুধু আমার ছেলেটা বুঝলেই হয়।
বলেই শাড়ির আঁচলে কপালের ঘামটা মুছে নিলো সংগোপনে, ছেলে কি তার আদও মানবে এ সংসার? আবার দুদিনের চেনা এ মেয়েটার প্রতিও তো তার অসম মমতা কাজ করে, ফোস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল রুবি খাতুন,, আল্লাহর কাছে তার একটাই দোয়া ছেলেটা মেনে নিক এ সম্পর্ক ।
♠
রাতের প্রায় এগারোটা,,বই হাতে টেবিলে বসে আছে তুরা, নতুন বই গুলোর ঘ্রাণ নিতে বেশ ভালো লাগছে, যেনো ছেলেবেলায় ফিরে গেছে, রাইমা ঘুমিয়েছে খানিক আগেই।
দুপুরে এক সাথে খেয়ে অনেকক্ষণ গল্প করেছিলো দুজন, সারা বিকেল ভর গল্প করে সন্ধ্যায় আবার মায়ের সাথে রান্নায় ও সাহায্য করেছে,
বেশ ভালো লাগে তুরার, এই যে না চাইতেই এত সুন্দর একটা পরিবার বাবা মায়ের আদর, দিদুনের শাসন, রাইমার স্নেহ যেনো তার ভেতর টা ভরে দেয় আর কিচ্ছু চাইনা তার এর চেয়ে বেশি! রাইমার মাথা টা ধরেছিলো বলেই একটু আগেই ঘুমিয়ে গেছে, তুরার ঘুম একটু দেরিতেই আসে। বই নিয়ে এপাশ ওপাশ করে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে চোখ গেলো জানালার বাহিরে,
সূর্যমুখী ফুলগুলো রাস্তার সোডিয়াম আলোয় আর বাতাসের মৃদু কম্পনে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে,
কিছুক্ষণ আনমনেই চেয়ে থেকে হুট করেই তুরার মনে হলো সূর্যমুখীর তেল নাকি অনেক উপকারী তার বাবা বলেছিলো।
আচ্ছা? এই গাছগুলো তো শুধু শুধু এমন ধ্যা করে দাঁড়িয়ে আছে,ওই জ’ল্লাদ লোকটা তো আর মালা বানিয়ে গলায় নিবে না, কেননা একটু তেল বানানো যাক?
যা ভাবা তাই কাজ, তুরা কোনো কিছু না ভেবেই চোরের মতো হাতে ছোট্ট একটা টর্চ নিয়ে সিড়ি বেয়ে নেমে দরজা খুলে বাগানে ঢুকে গেলো। কয়েকটা সূর্যমুখীর ফুল ছিড়ে বাগানের মধ্যেই গোল হয়ে বসে পরল
-উফ ফুলগুলো তো ছিড়লাম এখন তেল কিভাবে বানাবো? কুচি কুচি করবো? আচ্ছা তাই করি
বলেই দুটো ফুল ছিড়ে কুচিকুচি করলো তুরা, কিন্তু এবার কি করবে? এদিক ওদিক করেও কোনো বুদ্ধি না পেয়ে বসা থেকে উঠে আবারও দুটো ফুল ছিড়লো, তেল সে বানাবেই আজ, এবার ফুলগুলো হাতের তালুতে নিয়ে ঘষতে শুরু করলো তুরা
ল্যাপটপ টার সাটার নামিয়ে পাশে রেখে দিলো, দীর্ঘক্ষণ একভাবে স্ক্রিনে তাকিয়ে থেকে চোখের ভেতর ও টিপটিপ করছে আহানের, এক কাপ কফি হলে ভালো হয়। খাট থেকে উঠে জানালার সাইডে রাখা কফি মেকারে কফি বানাতে দিয়ে কাপটা হাতে নিতেই চোখ যায় বাগানের দিকে।
ভ্রু কুচকে আসে আহানের,
টর্চের আলো টা নড়াচড়া করছে,আর আবছা ভাবে ছোট খাটো একটা মানুষের অবয়ব দেখা যাচ্ছে,এত রাতে কে হতে পারে?!
প্রচন্ড কৌতূহল নিয়ে হাত থেকে কাপটা রেখেই নিচে নেমে এলো আহান, সদর দরজা খোলার জন্য হাত দিতেই দেখলো দরজা টা আগে থেকেই খোলা,তার মানে কেও ভেতর থেকে বাহিরে গেছে, দরজা টা ভিড়িয়ে বাগানের ভেতরটাই আসতেই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কপালে তিনটা ভাজ পরে গেলো, সে অবাক হবে নাহ রাগ করবে বুঝতে পারছে নাহ
-তুমি?!!
আহানের সামনেই মাটিতে গোল হয়ে বসে, হাতের তালুতে কয়েকটা ফুল নিয়ে ঘষছে তুরা, ছোট টর্চটা মুখ দিয়ে ধরে রেখেছে,, আশেপাশে ছোট ছোট অনেক গুলো পাপড়ি ছিটিয়ে রেখেছে, সারা গায়ে ধুলো মেখে গেছে।
আহানকে দেখেই মুখ থেকে থপ করে টর্চটা পরে গেলো তুরার, আহানের এমন আচানক আগমন সে একটুও প্রত্যাশিত করেনি!
.
.
.
চলবে ইনশাআল্লাহ