কেন আমি ডাকি তারে -৮
অফিস থেকে বের হয়ে সায়রার ফ্ল্যাটে গেল রেহান। সায়রাকে থাকতে বলে দিয়েছিল আগেই।
রেহান বাসায় ঢোকার সাথে সাথেই সায়রা কোল্ড ড্রিংক ধরিয়ে দিয়ে বলল, তুমি একটু রিলাক্স করো, আমি আসছি।
কোথায় যাবে?
আমার দু’ইটা ফ্রেন্ড আসবে, একটু চা খেয়ে আসি।
আজ যেতেই হবে? কতদিন পরে তোমাকে একটু ফাঁকা পাওয়া গেল!
এই তো, আমার তো সময়ই হয় না। সামনের মাসে একটা অফিস জয়েন করব। ওখানে একটা মিটিং আছে কাল।
আজ বাদ দাও না প্লিজ।
তুমি একটু বসো, আমি আসছি।
সায়রা বের হয়ে গেল। রেহান টিভি ছেড়ে বসল হাত পা ছড়িয়ে৷ হঠাৎ চোখ চলে গেল টিভির নিচে, একটা বেশ এক্সপেন্সিভ রিসোর্টের ক্যাশমেমো। প্রায় লাখ টাকার উপরে বিল দেওয়া হয়েছে, সইটা অচেনা রেহানের। একটা সুইট বুক করা ছিল! দুইজনের! সায়রা গিয়েছিল! কার সাথে, কাপল সুইটে!
সায়রা ফিরল প্রায় এক ঘন্টা বাদে।
রেহানের বিরক্ত লাগল। সায়রা ফিরেই গায়ে ঢলে পড়ল। রেহানকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে গেলে রেহান সরিয়ে দিলো।
সায়রা বলল, কি হলো! বললে না আজ কিছুক্ষণ থাকবে?
হুম, এখন ভালো লাগছে না।
একটু অপেক্ষা করো, আমি শাওয়ার নিয়ে আসছি, ভালো লাগবে।
রেহান বেডরুমে ঢুকে বসল। সায়রা বের হলো টাওয়েল জড়িয়ে। রেহানের কাছে এসে বলল, মাথা টিপে দিব?
দাও!
মাথায় হাত দিতে দিতে সায়রা বলল, আর ভালো লাগছে না, তোমার এই মিথ্যে বিয়ের নাটক কতদিন চলবে?
বছরখানেক।
দেখি একটু চুমু খাই তো! রেহানের বুকে ঝুকে এলো সায়রা। মোহময়ী লাগছে কিন্তু রেহান নরমাল হতে পারছে না।
সায়রা তুমি ইন্দু পারিজাতে গিয়েছিলে?
সায়রা হঠাৎ অপ্রস্তুত হয়ে বলল, না তো! আমি কিভাবে যাব!
তোমার ড্রয়িংরুমে ক্যাশ মেমো দেখলাম!
ওহ, নীগার গিয়েছিল, বয়ফ্রেন্ডের সাথে, আমি যাব কিভাবে, আমাকে তুমি নিয়ে যাও নি!
আচ্ছা।
রেহান একটু হালকা হলো। এতক্ষণ কতকিছু ভেবেছে। সায়রাকে সরিয়ে ওর উপর ঝুঁকে চুমু খেতে গেল রেহান। সায়রা বলল, শোনো, আমাকে ত্রিশ হাজার টাকা দিতে পারবে?
রেহান বলল, হ্যা, কেন লাগবে?
সেমিস্টার ফি দিতে হবে, গতবার কিছুটা ডিসকাউন্ট পেয়েছিলাম বলে বাবা সেইম এমাউন্টই দিয়েছে, এখন চাইতে ইচ্ছে করতেছে না।
আচ্ছা নিও।
সামনের সপ্তাহে লাগবে।
ওকে৷
সায়রা রেহানকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করার চেষ্টা করল। রেহানের একটা সমস্যা হচ্ছে। ভালো লাগছে না। সে উঠে দাঁড়াল৷
কি হলো জান?
কিছু না৷ রাত হয়েছে, বের হবো!
সায়রা নিজের টাওয়েল খুলে রেহানের সামনে দাঁড়াল।
খুবই আকর্ষণীয় শরীর সায়রার। বুকের উপর ট্যাটু করিয়েছে।
কাপড় পরে নাও সায়রা। আমি বের হবো।
সায়রা একটা কাপ্তান গায়ে ঢুকিয়ে বাঁধতে বাঁধতে বলল,
তোমার কিছু একটা হয়েছে, আমাকে তুমি ইগনোর করছ!
না, আসলে কয়েকদিন পরে বিয়ে করব তোমাকে, তার আগে, এসব থাক!
আগেও তো করেছ? তখন মনে হয় নি!
রেহান বলল, আমি বের হচ্ছি সায়রা। নেক্সট উইকে টাকা পেয়ে যাবে।
একরকম তাড়াহুড়ো করেই রেহান বের হয়ে এলো।
নিতু এরকম উন্মুক্ত হয়ে আসে নি। তবুও ওর প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করছে রেহান।
সায়রা সব সময়ই লাস্যময়ী হয়ে সব ভুলিয়ে দিতে চেষ্টা করে। আজ কেন পারল না!
রেহান কি সত্যি বদলে যাচ্ছে!
চলবে
শানজানা আলম