#খোঁজ ১৫তম_পর্ব
লেখক মোঃ কামরুল হাসান
এতোগুলা প্রশ্ন করে লিটু অধীর আগ্রহের সাথে লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকে, তার প্রশ্নের জবাব পাওয়ার আশায়। লোকটাও ঠিক লিটুর মতোই তাকিয়ে থাকে লিটুর দিকে। কিন্তু দুজনের চোখের দৃষ্টি দুরকম। লিটুর চোখে কৌতুহল ও জিজ্ঞাসু দৃষ্টি। আর লোকটার চোখে অসহায়ের দৃষ্টি।
লিটুর কথার কি জবাব দিবে সে? তাই যেনো সে অনেক চেষ্টা করেও ভেবে পাচ্ছে না! তাঁকে চুপ করে থাকতে দেখে লিটু জিজ্ঞেস করে, বলুন! লোকটা আমতাআমতা করে বলে, কি বলবো স্যার? লিটু অবাক হয়ে বলে, যা জিজ্ঞেস করেছি তাই বলবেন!
লোকটা চোখে মুখে ভয় নিয়ে নিচু স্বরে বলে, কিন্তু স্যার আমি কি বলবো? আমি তো তাদের সমন্ধে কিছু জানি না! তাদের কাউকে আমি কখনো দেখিনি। তারা কেউ কোন সময় আমার সামনে আসেনি স্যার। এবার লিটু আর তার মেজাজ ধরে রাখতে পারলো না। জিজ্ঞেস করে আচ্ছা, তোর কি মনে হয় আমি কচি শিশু! কিছু বুঝি না আমি? তুই আমাকে যা বলবি তাই আমাকে মেনে নিতে হবে? লোকটা লিটুর কথা শুনে ভয়ে একেবারে গুটিশুটি মেরে থাকে।
লিটু বলে, তুই তাদের কথা শুনে সবকিছু করে গেলি। অথচ বলছিস তাদের কাউকে তুই দেখিস নি? তারা কি তবে তোর সামনে অদৃশ্য হয়ে এসে ছিলো? লোকটা মরিয়া হয়ে জবাব দেয়, দয়া করে বিশ্বাস করেন স্যর! আমি যা বলছি, সত্যি বলছি স্যার! তারা শুধু আমার সাথে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ কর গেছে। কখনো সামনে আসেনি! আমার কথা বিশ্বাস করুন স্যার! আমি এতোটাই আতঙ্কিত হয়ে ছিলাম যে তাদের ফোনে বলা কথাগুলোও আমার অবশ্য পালনীয় মনে হয়েছে। নয়তো ওরা আমার স্ত্রী সন্তানের উপর কি না কি করে বসে?
পুলিশের চোখ আপাতদৃষ্টিতে অনেক সময় মানুষের চোখ দেখেই বুঝতে পারে সত্যি বলছে না-কি মিথ্যা বলছে? লোকটার কথা বলার ধরণ দেখে লিটু বুঝতে পারে।
একে পিটিয়েও কোন লাভ নেই। হয়তো সে যা বলছে, তার সবই সত্যি? আপাতত লিটুর তাই মনে হচ্ছে। এই আসলাম লোকটা অনেক দূর্ত ও চালাক প্রকৃতির মানুষ। এখন পর্যন্ত এমন কোন প্রমাণ সে রেখে যায়নি, যা ধরে তার পর্যন্ত পৌঁছানো যায়।
লিটু ভেবেছিলো কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলবে। নকল আসলামের সাহায্যে আসল আসলাম কে খুঁজে বের করবে। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছে সামনে শুধু অন্ধকার! তাই নকল আসলামের বউ বাচ্চা কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। রেজাল্ট সেই একই!
তাদের দুজনকেই চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকি তারা তাদের চেহেরা দেখার সুযোগও পায়নি। পিছন থেকে অতর্কিত ভাবে তাদের চোখ বেঁধে ফেলে কয়েকজন।
পুলিশ দুই জায়গায় ভালো করে তল্লাশি চালালো। যেখান থেকে মা আর ছেলে কে তুলে নিয়ে ছিলো ওরা সেখানে, এবং যে জায়গায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল সেখানেও।
কোন জায়গাতেই কোন রকম সূত্র পাওয়া গেল না, যা দিয়ে অপহরণকারীর ধারেকাছে পৌঁছানো যায়? এমন খবর শুনতে শুনতে আমি ত্যাক্তবিরক্ত হয়ে গেলাম। এটা কোন কথা হলো! একজন একটা অপরাধ করে চলে গেল। অথচ পিছনে কোন প্রমাণই রইলো না? শুনেছি অপরাধী নিজের অজান্তেই কোন না কোন ক্লু ফেলে যায়! কিন্তু এই অপরাধী এতো নির্ভুল ভাবে কেমন করে অপরাধ করে গেলো?
ভাবলাম পুলিশ হয়তো ইচ্ছে করেই এই কেসটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। নয়তো তাদের দক্ষতার অভাব? একটা জলজ্যান্ত মানুষ উধাও হয়ে গেছে! তাঁকে খুঁজে বের করতে পুলিশের লোক রীতিমতো নাকানিচুবানি খাচ্ছে। অথচ তাদের সামনে কোন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না!
পুলিশ আবার নতুন করে কেসটা শুরু করে। ঠিক যেখানে মৃত দেহ পাওয়া গিয়েছিলো, সেখান থেকে। পুলিশ এতোদিন ধরে ঐ বাসার কাজের মহিলার খোঁজ করছিলো। কিন্তু কোথাও তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। লিটু ও আমার ধারণা জন্মে মেঝেতে পড়ে থাকা মৃত দেহটা তবে তারই। তাই তো তাঁকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? যেহেতু প্রমাণ হয়েই গেছে অদিতি বেঁচে আছে। তাহলে সেদিনের পড়ে থাকা মৃত দেহেটা সেই বাড়ির কাজের মহিলারই।
এবং সেই কাজের মহিলার শরীরের গঠন ও উচ্চতা সবকিছুই প্রায় অদিতির সাথে অনেক অংশে মিলে যায়! এলাকার প্রায় সবাই সেই কাজের মহিলা কে এটা সেটা কিনে আনার সময়, বা কিনতে যাওয়ার সময় দেখেছে। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী পুলিশ প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় যে মৃত দেহটা কাজের মহিলারই। তাই আর দেরি না করে কাজের মহিলার বৃদ্ধা মায়ের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কাজের মহিলার মায়ের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল অনেক আগেই। শহরের মোটামুটি কাছেই একটা বস্তিতে তিনি বাস করেন। পুলিশ এবার তার কাছে গিয়ে সবকিছু খুলে বলে। নিজের মেয়ের এমন করুণ পরিনতির কথা শুনে বৃদ্ধা মা আহাজারি শুরু করে। মেয়ে কে খুঁজে পাওয়ার আশায় এই বৃদ্ধা এতোদিন পথ চেয়ে ছিলো। কিন্তু যখন শুনতে পেলেন আর ফিরে আসবে না তার মেয়ে! তখন স্বাভাবিক ভাবেই তিনি ভাঙা শরীরে আরও ভেঙে যান। পুলিশের লোকজন তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে ডিএনএ টেস্টের কথা বলে। অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে তাঁকে রাজি করানো হলো।
পুলিশের হাতে কয়েক দিন পরে ডিএনএ টেস্টের রেজাল্ট আসে। রেজাল্ট দেখে পুলিশ একেবারে হতভম্ব হয়ে যায়! বৃদ্ধার সাথে কাজের মহিলার ডিএনএ টেস্টের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় নি! তাই দেখে পুলিশ অফিসার আশ্চর্য হয়ে বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করে, ঐ বাড়িতে যে কাজ করতো সে কি সত্যি আপনার মেয়ে! নাকি অন্য কেউ ছিলো?
বৃদ্ধাও ততোধিক আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করে, স্যার! এই বুড়ী মায়ের সাথে এটা কেমন রসিকতা করছেন আপনারা? আমার একমাত্র মেয়ে কে আপনারা আমার নিজের মেয়ে নয় বলে সন্দেহ করছেন! আরে স্যার! ঐ বাড়িতে আমার মেয়েই কাজ করতো। অন্য কোন কাজের মহিলা সেখানে ছিলো না। নিজের মেয়ে কে ফিরে পাওয়ার আশায় বৃদ্ধা মা অনেক আকুতি মিনতি ভরা কন্ঠে বলে।
স্যার তাহলে আমার মেয়েটা বেঁচে আছে! তাকে দয়া করে খুঁজে এনে দেন। পুলিশ অফিসার বৃদ্ধাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, হ্যা আমারা অবশ্যই চেষ্টা করবো। এই বলে পুলিশের লোক বস্তি থেকে বেরিয়ে আসে।
তারা এখন ঘোরের মধ্যে পড়ে গেছে! মৃত দেহটা যদি কাজের মহিলার না হয়, তবে কার? অনেক খোঁজ করেও অন্য আর কোন মহিলার সন্ধান পাওয়া গেলো না!
পুলিশ তাই আবারও সেই বাড়ি ওয়ালার সাথে দেখা করে। জিজ্ঞেস করে, বাড়িটা ভাড়া নেওয়ার সময় কাজের মহিলার সাথে কোন পুরুষ মানুষ কে সে দেখেছে কি না? বাড়ি ওয়ালা সেই আগের মতোই জবাব দেয়, না স্যার! আমি কাজের মহিলার সাথে কোন পুরুষ মানুষ কে দেখতে পাইনি।
কাজের মহিলাটি আমার পরিচিত ছিলো বলে, আমি আর অন্য কোন প্রশ্ন করিনি তাকে। কারণ সে একসময় বহুদিন আমার এখানে কাজ করেছিলো। তার উপর আমার অনেক বিশ্বাস ছিলো বলে এক কথায় বাড়িটা ভাড়া দিয়ে দেই।
কিন্তু স্যার! এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে সেটা মোটেও আশা করিনি আমি! পুলিশ অফিসার বাড়িওয়ালার দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন, যা আশা করেন নি তাই তো ঘটে গেল? আমরাও চাইছি যা আশা করিনি তা যেনো না ঘটে!
এই কথায় ভদ্রলোক কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, আপনারা কোন কারণে আমাকে সন্দেহ করছেন, না তো? পুলিশ অফিসার কৌতুক ভরা কন্ঠে বলে, কেসের যা হাল হয়েছে! তাতে করে আমি তো নিজেকেও সন্দেহের বাইরে রাখতে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গেছি!
কথাটা শুনে ভদ্রলোকের মুখটা একেবারে চুপসে গেলো। অফিসার তা খেয়াল করতে ভুললেন না। এদিকে আশেপাশের সকল থানায় যতো নিখোঁজ কেস আছে তা খতিয়ে দেখা শুরু হলো। সেই সাথে পুলিশ বাড়িওয়ালার চৌদ্দ গুষ্টির খোঁজ নিতে শুরু করলো। তাদের ধারণা এখানেই কোন না কোন কিছু লুকিয়ে আছে। যা এতোদিন ধরে তারা অবহেলা করে এসেছে!
ঠিক এমনি সময় কাছাকাছি থানায় একটা মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার কেস এলো। মেয়েটির বৃদ্ধ বাবা কিছুদিন ধরেই তার মেয়ের খোঁজ পাওয়ার আশায় থানায় আসা-যাওয়া করছিলো। কিন্তু একে তো গরীব মানুষ! তার উপর পিছনে কোন লোক নেই। তাই সে কারও কাছে পাত্তা পাচ্ছিলো না।
কিন্তু এবার পুলিশ সেই বৃদ্ধের প্রতি সদয় হলো। তার মেয়ের ছবি নিয়ে সে অফিসারের সাথে দেখা করতে পারলো। অফিসার কেসটা গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নিলেন। যে মেয়েটি নিখোঁজ হয়েছে। সে-ও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বাসায় কাজ করে নিজের ও তার বাবার পেট চালাতো।
পুলিশ হারিয়ে যাওয়া কাজের মেয়ের খোঁজ করতে শুরু করে। মেয়েটি কোথায় কোথায় কাজ করেছে? কার কার সাথে তার যোগাযোগ ছিলো? অবশেষে হঠাৎ করেই একদিন পুলিশের এক সোর্স থেকে খবর এলো। এই মেয়েটি বছর পাঁচেক আগে সেই বাড়ি ওয়ালার বাড়িতে কাজ করতো। যে বাড়িওয়ালার বাড়িতে অদিতির মৃত দেহ পাওয়া গিয়েছিলো।
পুলিশ অফিসার খবরটা শুনে যারপরনাই খুব খুশি হলো।যদিও সরাসরি কোন প্রমাণ তাদের হাতে এখনো আসেনি। কিন্তু তবুও যেনো তারা একটা আশার আলো খুঁজে পেলো। আবার তারা দ্রুত বাড়িওয়ালার কাছে এলো।
বাড়িওয়ালা এবার তাদের দেখে খুব একটা খুশি হয়েছে বলে মনে হলো না। তিনি অফিসার কে জিজ্ঞেস করে, আপনারা আবার এসেছেন? অফিসার হেসে বলে, কি করবো বলুন! ঘটনাটা ঘুরে ফিরে বারবার শুধু আপনার কাছেই নিয়ে আসছে। আমরা ইচ্ছে করে আপনার মতো মানুষ কে বিরক্ত করতে চাই না। কিন্তু বাধ্য হয়ে আসতে হলো।
ভদ্রলোক অফিসারের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, এবার কি জিজ্ঞেস করতে এসেছেন? অফিসার কাজের মেয়ের ছবিটা দেখিয়ে জিজ্ঞেস করে, দেখুন তো একে চিনেন কি-না?
ভদ্রলোক ভালো করে ছবিটা দেখে বলে, হ্যা! খুব সম্ভবত বছর পাঁচেক আগে সে আমার বাড়িতে কিছুদিন কাজ করেছে। ভদ্রলোক মনে করার চেষ্টা করে মেয়েটার নামটা যেনো কি? অফিসার হেসে বলে, যাক তবে চিনতে পেরেছেন! মেয়েটার নাম মায়া!
ভদ্রলোক পুলিশের কথায় সায় দেয়, হ্যা মায়া! তিনি অফিসারে দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তা কি হয়েছে মায়ার? অফিসার গম্ভীর কন্ঠে জবাব দেয়, নিখোঁজ হয়ে গেছে!
একথা শুনে তিনি অবাক হয়ে বলেন, কি বলেন! কোথায় গেলো মেয়েটা? অফিসার কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আবার আপনার কাছে কাজ চাইতে আসেনি তো?
অফিসারের মুখে এমন কথা শুনে তিনি হঠাৎই মনে হলো একটু কেঁপে উঠলেন। বললেন, আরে না! আমি তো ওর কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। আজ আপনাদের হাতে মেয়েটার ছবি দেখে ওর কথা মনে পড়লো।
অফিসার এবার রাখঢাক না করেই জিজ্ঞেস করে, সোজা করে বলুন। সে আপনার কাছে এসেছিলো, নাকি আসেনি? ভদ্রলোক পুলিশের মনের কথা বুঝতে দেরি করলেন না। তাই তিনিও স্পষ্ট করে বললেন, না! সে আমার কাছে আসেনি।
আচ্ছা তবে এখন উঠি! তবে আপনার সাথে যদি মেয়ে টার কোনরকম যোগাযোগ থেকে থাকে, তা কিন্তু আমাদের কাছে লুকিয়ে রাখতে চাইলে ভুল করবেন। কথাটা ভালো করে ভেবে দেখবেন?
পুলিশ অফিসার নির্দেশ দিলেন কাজের মেয়ের বৃদ্ধ পিতার সাথে মৃত দেহের ডিএনএ মিলিয়ে দেখতে। যদিও এটা একটা আন্দাজে ঢিল ছুঁড়ে দেওয়ার মতো হচ্ছে। কিন্তু তবুও চেষ্টা করে দেখতে ক্ষতি কি?
পুলিশের ধারণা অদিতির খোঁজ পাওয়ার ব্যাপারে এই টেস্টের রেজাল্ট অনেক ফলপ্রসু হবে। মৃত দেহটা যদি এই কাজের মেয়ের হয়, তবে আগে বাড়তে খুব একটা সময় লাগবে না।
ঠিক এমনি যখন পরিস্থিতি। ঠিক তখনই কেউ আমার উপর আক্রমণ করে বসে।
আমি অন্ধকারে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। আর তখনই কেউ হঠাৎই পিছন থেকে আমার মাথায় আঘাত করে বসে। আমি সরে গিয়েও মাথাটা সম্পূর্ণ অক্ষত রাখতে পারলাম না। মাথায় কিছুটা আঘাত পাওয়ায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করতে থাকি। পড়ে গিয়ে আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম লোকটা ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে পালিয়ে যাচ্ছে! বুঝতে পারলাম না, কে আমাকে মারার চেষ্টা করছে?
চলবে,,,,,