খোঁজ পর্ব ১৪

0
385

#খোঁজ
১৪তম_পর্ব
লেখক মোঃ কামরুল হাসান

লিটু বলে উঠে তাইতো! অদিতির মেয়ে মিতুল তো আসলামের কাছেই থাকার কথা? কিন্তু মিতুল কে তো আমি কোথাও দেখতে পাইনি!

সত্যি এতোবড় ভুল আমার কেমন করে হলো? আমি তো মিতুলের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে আসলাম আর অদিতির খোঁজ করেছি! তখন মাথায় শুধু ওদের দুজনের কথাই কাজ করেছে। মিতুল তো তাদের সাথেই থাকার কথা। কিন্তু মিতুল তবে কোথায় গেলো? এই আসলাম নিশ্চয়ই জানে মিতুল কোথায় আছে? ব্যাটাকে ভালো করে এবার টাইট দিতে হবে। তাহলেই ওর মুখ থেকে সবকিছু হরহর করে বেরিয়ে আসবে!

আসলাম কে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়ে আসা হলো। আসলামে কে প্রথমে ভালো ভাবে জিজ্ঞেস করা হলো, অদিতি ও তার মেয়ে মিতুলের সাথে সে কি করেছে? এবং তারা দুজন এখন কোথায় আছে? আসলাম বরাবরের মতোই সোজাসাপ্টা জবাব দেয় কতোবার করে বলেছি স্যার! অদিতি কে আমি নিজের হাতে খুন করেছি! আর কতোবার বললে আপনারা বিশ্বাস করবেন যে অদিতি আর বেঁচে নেই? আমি সত্যি করে বলছি স্যার! আমার কথা বিশ্বাস করুন।

লিটু এবার অধৈর্য হয়ে আসলামের চুলের মুঠি ধরে শক্ত করে টান দিয়ে বলে, আরও হাজার বার বললেও আমরা তোর কথা বিশ্বাস করবো না! বুঝতে পারছিস আমার কথাটা? কারণ অদিতি মরেনি! সেই প্রমাণও আমাদের হাতে আছে। অদিতি ও তার মেয়ে কে কোথায় রেখেছিস তাই বল? নিজের ভালো চাইলে তারাতাড়ি ওরা মা মেয়ে কোথায় আছে সেটা বলে দে! নয়তো তোর এমন হাল করবো যে, নিজের পায়ে দাঁড়ানো তো দূরের কথা। কারও কাঁধে ভর দিয়েও সোজা হয়ে হাঁটতে পারবি না!

লিটুর চোখে আসলাম কি দেখতে পেয়েছে বলতে পারি না। কিন্তু লিটুর চোখ থেকে সে তার চোখ নামিয়ে নিলো। তারপর খুব অনুনয়ের সাথে বলে, স্যার আমার কথাটা একবার বিশ্বাস করুন। সত্যিই আমিই অদিতির খুনি! যা শাস্তি দেবার আমাকে দিয়ে দেন। শুধু শুধু কেন সময় নষ্ট করছেন স্যার?

লিটু আসলামের কথা শুনে বলে, যা তোর কথাই মেনে নিলাম। ধর তুই অদিতি কে খুন করেছিস! তাই তো? হ্যা স্যার! তবে এখন আমাকে তুই বল, অদিতির মেয়ে মিতুল কোথায় আছে?

আসলাম জবাব দেয়, মিতুল কোথায় আছে সেটা আমি সত্যিই জানি না! লিটু এবার প্রচন্ড জোরে এক ধমক মেরে বলে, সত্যিটা তুই এমনি এমনি বলবি না বুঝতে পেরেছি আমি! এক কনস্টেবল কে ডেকে লিটু বলে, ওঁকে একটু ভালো করে আদরযত্ন কর। যাতে বুঝতে পারে পুলিশের খাতিরদারি কেমন হয়? যখন মুখ খুলবে তখনই কেবল আদরযত্ন বাদ দিবে। লিটুর সাথে বেরিয়ে আসতে আসতে আমি শুনতে পেলাম আসলামের চিৎকার চেঁচামেচি। এতো আঘাত তার শরীর হয়তো নিতে পারছে না? তার চিৎকার শুনে আমার অন্তত তাই মনে হলো।

অদিতির খুনটা যে আকরাম খান করেনি তা পুলিশ নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে। তাই তাঁকে আপাতত ছেড়ে দেওয়া হলো। আর বলে দেওয়া হলো পুলিশের অনুমতি ছাড়া যেনো কোথাও না যায়। আর যদি যেতেই হয় তবে পুলিশের অনুমতি নিয়েই যেনো যায়। নয়তো এর পরিণাম ভালো হবে না!

লিটু আবার আসলামের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে, কি আদর যত্ন ভালো লাগছে তো? সবাইকে আশ্চর্য করে দিয়ে আসলাম পুলিশ অফিসারের পায়ে পড়ে গিয়ে বলে স্যার! এভাবে মারার চাইতে যা শাস্তি দেবার তা একবারে দিয়ে দেন। আমি আর সহ্য করতে পারছি না! প্লিজ স্যার! আমার উপর দয়া করুন! আমি সবদোষ স্বীকার করে নিচ্ছি।

লিটু তাঁকে কলার ধরে দাঁড় করিয়ে বলে, সত্যি কথাটা আমাদের ভালোয় ভালোয় বলে দে! তবেই তুই আপাতত আমাদের হাত থেকে রেহাই পাবি। কিরে! যা বলছি তা তোর কানে গেছে তো?

লিটুর কথা শুনে আসলাম কাঁদো কাঁদো গলায় বলে, স্যার! আমি সব দোষ মাথা পেতে নিচ্ছি। তবুও আমাকে আর মারবেন না! আপনারা আমার কথা বিশ্বাস করুন আর নাই বা করুন? অদিতি আর বেঁচে নেই! আমিই তাঁকে নিজের হাতে খুন করেছি স্যার!

লিটু বুঝতে পারে এই আসলাম এতো সহজে মুখ খুলবে না। সে মরতে রাজি আছে। কিন্তু মুখ খুলতে নয়! মনে হচ্ছে কেউ ওকে মাথার দিব্যি দিয়েছে! হঠাৎ এই কথাটা মনে হওয়াতে আসলাম সমন্ধে লিটুর আরেকটা কথা মনে পড়ে গেল। যতদূর সম্ভব আসলাম সমন্ধে সে জানতে পেরেছে। আসলাম ভাঙবে কিন্তু মচকাবে না। এমনই কঠিন টাইপের লোক ছিলো আসলাম! সে কখনো পুলিশ অথবা অন্য কোন পাওয়ার ফুল মানুষের সামনে কখনো মাথা নত করেনি। আর সেই আসলামের একি আচরণ? আজ যে আসলাম একেবারে লিটুর পা ধরে কাঁদতে লাগলো?

হঠাৎই লিটুর মনে হলো নিশ্চিত কোথাও একটা গন্ডগোল আছে। কোথাও একটা ভুল হয়ে যাচ্ছে তাদের। কিন্তু সেই ভুলটা কি? অনেক চেষ্টা করেও ধরতে পারছে না সে! তবে এইটুকু বুঝতে পারছে। অদিতি কে এখনো সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চাইছে সে। কিন্তু কেন এমনটা করছে সে?

আমি লিটুর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, এখন কি করবি তোরা? আসলাম কে ধরেও তো কোন লাভ হলো না! সে বলছে অদিতির খুন সে নিজের হাতে করেছে! কিন্তু আমি তো নিশ্চিত অদিতি কে খুন করা হয়নি। সে এখনো বেঁচে আছে। তাহলে আসলাম নামের ঐ লোকটা এতো যন্ত্রণা সহ্য করেও মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে কেন? আমি বললাম নিশ্চয়ই এটা একটা নাটক! আর এই মিথ্যা কথা বলার পিছনে তার নিশ্চয়ই অন্য কোন কারণ আছে? তারপর সে অদিতির মেয়ে মিতুলের কথাও কিছুই বলতে পারছে না। মনে হচ্ছে সে মিতুল সমন্ধে সত্যি কিছু জানেই না?

লিটু চিন্তিত হয়ে বলে, আমারও মনে হচ্ছে এখানে কেমন যেনো একটা প্যাচ আছে? এতো বছর ধরে কোথাও কোন খবর পাওয়া যায় নি যে আসলামের। কিন্তু হঠাৎ করেই একজন ফোন করে বললো, সে আসলামের খবর জানে! ব্যাপারটা যেমন সন্দেহ জনক তেমনি রহস্যজনকও বটে! বারবার এই শুভাকাঙ্ক্ষী কোথা থেকে এসে হাজির হয়? এই শুভাকাঙ্ক্ষী কে খুঁজে বের করতে পারলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

আমিও লিটুর কথার সাথে সুর মিলিয়ে বললাম, ঠিক এই কথাটা আমারও মনে এসেছে। এতো সহজেই আসলাম ধরা পড়ে গেলো! এটা একটা আশ্চর্য ঘটনা নয় কি? লিটু ঠোঁট কামড়ে বলে, কেউ ইচ্ছে করে আমাদের কে ভুল পথে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। যাকে আমরা আসলাম বলে ধরে এনেছি। সে সত্যি আসলাম কি না? তা আমাদের যাচাই করে দেখতে হবে।

আমি বললাম, আরও একটা কথা আমার মনের মধ্যে দাগ কাটছে। লিটু আগ্রহের সাথে জিজ্ঞেস করে কি কথা? এই আসলাম বারবার করে নিজের কাঁধে অদিতির খুনের দায় নিতে চাচ্ছে। অথচ আমরা জানি অদিতির খুন হয়নি। খুন করা হয়েছে অন্য কাউকে। কিন্তু তবুও কেন সে অদিতির খুনের ভার মাথায় নিতে চাচ্ছে?

এখানে আসলাম যদি অদিতি কে পরে-ও খুন করতো তবে দুটি খুনের কথাই স্বীকার করে নিতো। কারণ শাস্তি তো তার হবেই। অদিতি কে খুন করলেও যে শাস্তি, আর অন্য কাউকে করলেও তো একই শাস্তি?

সে নিশ্চয়ই কাউকে বাঁচাতে চাইছে! এমনও হতে পারে এই আসলাম লোকটা অন্য কেউ? লিটু একটু ভেবে দেখে বলে, তোর কথায় যুক্তি আছে। এখন আমাদের খুঁজে বের করতে হবে অদিতির বদলে কাকে সেদিন খুন করা হয়েছিলো? আর এই আসলামটা আসলে কে?

আসলাম কে সনাক্ত করা খুব কঠিন কাজ নয়! আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন করে? লিটু আমার দিকে ফিরে একটুখানি হেসে বলে, ওর পরিচিত কাউকে ওর সামনে নিয়ে এলেই তো সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি ওর কথা শুনে বললাম, কিন্তু আসলামের তো কোন আত্মীয় স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায় না। পুলিশ অনেক খোঁজেও দেখেছে। হুম তা দেখেছে।

ওর আত্মীয় স্বজন কেউ না হলেও চলবে। জিজ্ঞেস করলাম তবে কে? আকরাম খান! সে নিশ্চয়ই আসলাম কে খুব ভালো করে চিনে? আমি অবাক হয়ে ভাবলাম তাইতো! এতো সহজ কথাটা এতোক্ষণ কেন আমার মাথায় আসেনি?

পরের দিন আকরাম খান কে পুলিশ আবার থানায় ডেকে আনে। আকরাম খান প্রথমে ভয় পেয়ে গেলেও, পরে লিটুর কথায় স্বস্তি ফিরে পায়। আসলামের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলো। কথিত আসলাম যখন পুলিশের ডাকে তাদের দিকে ফিরে তাকায়। তখন আকরাম খান কে জিজ্ঞেস করা হয়, ভালো করে দেখুন তো! তাঁকে চিনতে পারেন কি-না?

আকরাম খান লোকটাকে ভালো করে দেখে বলে, আমার মনে হয় না, এই লোকটাকে আমি এর আগে কখনো দেখেছি? আকরাম খান লিটুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, কে এই লোকটা? লিটু বলে দাঁড়ান বলছি। লিটু কথিত আসলাম কে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করে, তোমার সাথে ইনি দেখা করতে এসেছে! দেখো তো তাঁকে দেখে চিনতে পারো কি-না?

আসলাম অনেকক্ষন ধরে আকরাম খান কে দেখে নিয়ে বলে, না স্যার! আমি তাঁকে চিনতে পারছি না। কে তিনি? লিটু তাদের দুজনের কথা শুনে হাততালি দিয়ে বলে উঠে, বাহ্ বেশ!বেশ!

দুই চিরশত্রু কেউ কাউকে চিনতে পারছে না। কি চমৎকার ব্যাপার তাই না?এই কথায় তারা দুজনেই লিটুর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। লিটু আকরাম খানের দিকে তাকিয়ে বলে, এই লোকটা নিজেকে আসলাম বলে পরিচয় দিচ্ছে! দেখুন তো কোন দিক দিয়ে তাঁকে আপনার এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী আসলামের মতো দেখা যায় কি-না?

লিটুর কথা শুনে আকরাম খান আবারও ভালো করে তাকিয়ে দেখে লোকটা কে। তারপর বলে না স্যার! এই লোক আসলাম নয়!

এবার লিটু কথিত আসলামের দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করে, তাঁকে তো তুমি চিনতে পারলে না! অবশ্য তুমি যদি আসলাম হতে তবে নিশ্চয়ই তুমি তাঁকে চিনতে পারতে! তাই না আসলাম?

কথিত আসলামের মুখে কোন কথা যোগালো না। কি বলবে সে মনে হচ্ছে বুঝতে পারছে না। তাই শিকের ভিতর থেকেই সে লিটুর পা ধরে বলে, স্যার! আমি বড়োই নিরুপায় হয়ে এমন কাজ করতে বাধ্য হয়েছি!

লিটু তার দিকে তাকিয়ে বলে, আচ্ছা ঠিক আছে তোমার পরিচয়টা এবার চটপট বলে দাও তো দেখি! তোমার সবকিছু খুলে বল আমাকে। এবং কি কারণে অদিতির খুনের ভার নিতে চাইছো? সেটাও সবিস্তারে বলে ফেলো।

লোকটা লিটুর পায়ের কাছে বসে পড়ে বলে, স্যার! আমার একটা ফুটফুটে ছেলে আছে। স্থানীয় স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। একদিন হঠাৎ করেই তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমরা স্বামী স্ত্রী মিলে খুঁজে যখন হতাশ হয়ে পড়েছি। ভাবছি পুলিশের কাছে যাবো। তখন দেখতে পেলাম আমার ছেলেটা কাঁধের স্কুল ব্যাগ ছাড়াই আমাদের দিকে ছুটে আসছে।

তখন রাত হয়ে গেছে। ছেলেটা আমার বুকে ফিরে এলেই একটা ফোন এলো আমার ফোনে। ফোন রিসিভ করতেই একজন বলে উঠলো, আজ ছেলে কে ফিরে পেয়েছো কিন্তু ভবিষ্যতের কথা বলা যায় না। তবে হ্যা! যদি আমাদের কথা মতো চল তবে তোমার বৌ বাচ্চা দুজনের সাথে তুমিও নিরাপদে থাকবে।

আমি প্রথমে তাদের কথা কে খুব একটা গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু যেদিন আমার বউকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন আমার মনে হয় এটা তাদেরই কাজ। গভীর রাতে চিন্তিত হয়ে বউয়ের অপেক্ষায় দরজার সামনে বসে আছি। ঠিক সেদিনের মতোই বউকে ছেঁড়া কাপড়ে দৌড়ে আসতে দেখলাম। তখনই তাঁকে দেখে আমার অন্তরআত্মা কেঁপে ওঠে।

বউকে বুকের মাঝখানে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে তোর? কোথায় ছিলি এতোক্ষণ? বউটা যেনো আমার তখন বোবা হয়ে গেছিলো। মুখ থেকে তার কান্না ছাড়া কোন শব্দ বের হলো না।

ঠিক তখনই সেই নাম্বার থেকে আবারও কল আসে। কেউ একজন বলে উঠে, আজ বউকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেয়েছো। তাই বলে ভেবো না সবসময় এমনটা হবে? আমাদের কথা মেনে নাও! নয়তো তোমার বউ-বাচ্চা তো বি*পদে পড়বেই। তুমিও কিন্তু মনে হচ্ছে বাদ পড়বে না! কথাটা ভালো করে ভেবে দেখো! আবার না তোমাদের কারও কোন ক্ষতি হয়ে যায়?

আমি আর কিছু ভাবতে গেলাম না স্যার! আমার কিছু হয়ে গেলেও তো! আমার বউ-বাচ্চা বেঁচে থাকবে? তাই তাদের কথায় রাজি হয়ে গেলাম। তারা ফোনের মাধ্যমেই আমাকে সবকিছু বুঝিয়ে দিলো। আমার নাম হলো আসলাম। আমি নিজের হাতেই অদিতি নামের কাউকে খুন করেছি। আমিও তাই মুখস্থ করে নিলাম। আর তাদের কথা মতোই সেখানে গিয়ে শুয়ে রইলাম। যেখান থেকে আপনারা আমাকে গ্রেফতার করে এনেছেন।

লিটু লোকটার মুখের দিকে তাকিয়ে অধীর আগ্রহের সাথে জিজ্ঞেস করে, তাদের নাম গুলো কি? তারা কোথায় থাকে? তারা দেখতে কেমন?

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here