প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
সিজন : ২
পার্ট :৬
চারু তার শ্বশুড় বাড়ীর দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে ৷তার পাশেই আয়ান দাড়িয়ে আছে ৷ বেচারা আয়ান লজ্জায় মাথাই তুলতে পারছে না ৷সে চারুকে বিয়ে করেছে ৷এই খুশিতে তার নাচতে ইচ্ছে করছে ৷ কিন্তু এত এত লোকদের সামনে তা পারছে না ৷চারু তার বউ কথাটা ভাবতেই তার মুখে হাসি ফুটলো ৷আয়ান রুমাল দিয়ে নিজের ঠোটঁ ঢেকে রেখেছে ৷তাই তার হাসি খুব একটা দেখা যাচ্ছে না ৷
চারুর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দুটো মেয়ে এলো ৷একটা মেয়ে থালায় দুধ আলতা চারুর পায়ের কাছে রাখলো ৷অন্য আরেকটা মেয়ে একটা সাদা সুতির কাপড় চারুর সামনে বিছিয়ে দিল ৷তারপর চারুর শ্বাশুড়ী বলল
এই দুধ আলতায় পা রাখবে ৷ তারপর কাপড়ের উপর হেটে ঘরে প্রবেশ করো মা ৷
চারু শ্বাশুড়ীর কথায় মাথা দুলিয়ে হ্যা বুঝালো ৷তারপর ভালো মেয়ের মতো দুধ আলতায় পা রেখে ঘরে ঢুকলো ৷
চারু একটা নকশা করা খাটের উপর বসে আছে ৷একটু পর পর একেক জন আসছে আর তাকে দেখে যাচ্ছে ৷সবাই চারুকে দেখে শুধু একটা কথাই বলল মাশাআল্লাহ ৷তবে সবাই আয়ান আর চারুর বয়স নিয়ে একটু কানাঘুষা করছে ৷যেটা স্বাভাবিক ব্যাপার ৷কারন আমরা এমন একটা জায়গায় থাকি ৷যেখানে ছেলের বয়স যদি মেয়ের থেকে দুইগুন হয় তাতে সমস্যা নেই ৷কিন্তু মেয়ের বয়স আর ছেলের বয়স সমান হতে পারবে না ৷আর যদি মেয়ে বড় হয় তাহলে তো কথাই নেই ৷আয়ানের মা বুঝেও ঐ সব কথায় কান দিল না ৷
চারু অনেকক্ষন ধরে খেয়াল করছে কেউ দরজার সামনে দাড়ানো ৷বারবার তার দিকে উকি দিচ্ছে ৷কিন্তু সে তাকাতেই ব্যক্তিটা আবার সরে যাচ্ছে ৷চারুর শ্বাশুড়ী দেখলো চারু দরজার দিকে তাকিয়ে আছে ৷ মমতা বেগম চারুর কাধেঁ হাত রেখে বলল
কি হয়েছে মা ৷ওভাবে দরজার দিকে তাকিয়ে আছিস কেন ৷
চারু আস্তে করে বলল মা দরজায় কেউ আছে ৷বারবার উকিঁ দিয়ে যাচ্ছে ৷আমি তাকাতেই আবার সরে যাচ্ছে ৷
দাড়া আমি দেখছি কে ওখানে ৷
চারুর শ্বাশুড়ী দরজার কাছে যেয়ে মুচকি হেসে বলল
আমার বোকা ছেলেটা এখানে কি করছে হ্যা ৷
ওপাশের আওয়াজটা চারুর কানে এলো না ৷
চারুর শ্বাশুড়ী বলল ভাবিকে দেখবি এখানে লজ্জার কি আছে আয় ৷বোকা ছেলে একটা ৷
চারু আড় চোখে দরজার দিকে তাকালো ৷চারু দেখলো তার শ্বাশুড়ীর হাত ধরে একটা দশ এগারো বছরের ছেলে ভেতরে ঢুকছে ৷ছেলেটাকে সে আগে কখনো দেখে নি ৷মাথায় তেল দিয়ে লেপ্টে চুল আচড়ানো ৷একটা ফুল হাতার শার্ট পড়া ৷শার্টের বোতাম একদম গলা পর্যন্ত লাগানো ৷ চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা৷ছেলেটা মাথা নিচু করে আছে ৷চারুর দিকে তাকায় না ৷ ছেলেটা বড্ড লাজুক মনে হচ্ছে চারুর কাছে৷ মমতা বেগম ছেলেটাকে চারুর পাশে বসিয়ে বলল
এটা তোর ভাবি ৷আয়ানের বউ ও বুঝেছিস ৷ ছেলেটা মাথা নিচু করে রইলো ৷ চারু মা ও আমার ছোট ছেলে দ্বীপ ৷ তোমার ছোট দেবর ৷ছোট বলে আবার বেশি আদর করো না ৷শেষে জ্বালিয়ে মারবে ৷ চারু শ্বাশুড়ীর কথায় হাসলো ৷
দ্বীপ চারুর দিকে এক নজর তাকিয়ে বলল আপনার কষ্ট হচ্ছে না ভাবিমা এত কিছু পড়ে বসে থাকতে ৷অনেকক্ষন ধরে দেখছিলাম আপনি কেমন যেন করছেন গরমে ৷যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আমি কি পাখা দিয়ে আপনাকে বাতাস করবো ৷
চারু বলল না ভাই লাগবে না ৷
দ্বীপ শুনলো না ৷টেবিলের পাশে পাখাটা খুজতে লাগলো ৷কিন্তু পেল না ৷
দ্বীপ ঘর থেকে বের হতে হতে বলল আমি আমার মায়ের কষ্ট একদম সহ্য করতে পারি না ৷লোকে বলে বাবা না থাকলে বড় ভাই নাকি বাবার মতো আগলে রাখে ৷আর মা না থাকলে বড় ভাবী আগলে রাখে ৷তাহলে আপনিও তো আমার কাছে মায়ের মতোই ভাবিমা ৷আপনি বসুন আমি পাখা নিয়ে আসছি ৷
চারু ছোট ছেলেটার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ৷দ্বীপ চলে যেতেই চারুর শ্বাশুড়ী বলল
আমার এই ছেলেটা অনেক বোকা মা ৷কিন্তু অনেক ভালো আমার ছেলেটা ৷এতক্ষন আসতে তার কি লজ্জা ৷আর একবার আসতেই দেখলে তোমার কি দরকার তা আনতে ছুটে গেল ৷আয়ানকে ছাড়া কিছু বোঝে না ৷ তোমার কিন্তু আরো একটা দেবর আছে ৷ওর নাম মিহান ৷হয়তো নিজের ঘরে আছে এখন ৷খুব একটা কথা বলে না মিহান ৷
দ্বীপ একটা পাখা হাতে দৌড়ে এসে বলল মা তুমি এবার যাও ৷খাওয়ার ব্যবস্থা করো আমাদের জন্য ৷ আমি ভাবিমার কাছে আছি ৷যাও তুমি ৷
মমতা বেগম চলে গেল ৷দ্বীপ মাথা নিচু করে চারুর পাশে বসে রইলো ৷চারু বারবার আড় চোখে দ্বীপকে দেখছে ৷ছেলেটা অনেক সহজ সরল ৷দ্বীপ নিরবতা ভেঙ্গে চারুকে বলল
আপনার জন্য একটা জিনিস এনেছিলাম ৷যদি গ্রহন করতেন খুব খুশি হতাম ৷
চারু আস্তে করে বলল কি জিনিস ভাই ৷
কাল সকালে দেব আপনাকে ভাবিমা ৷
চারু হাসল শুধু ৷এতটুকু ছেলে তার জন্য উপহার এনেছে ভাবা যায় ৷
রাত এগারোটা ছুই ছুই ৷চারুকে আয়ানের ঘরে বসানো হয়েছে ৷ঘরটা সাজানো হয়েছে বেশ ভালো করেই ৷রঙিন কাগজ দিয়ে ঘরটা সাজানো ৷কাগজের বানানো ফুলও আছে ৷তবে বিছানা লাল গোলাপ দিয়ে সাজানো ৷আয়ানের ঘরটা সাধারন ভাবে সাজানো ৷বড় ঘরটার এক কোনো একটা বড় আলমারি ৷তার পাশেই একটা বড় টেবিল ৷ঘরটার দক্ষিন দিকে একটা ছোট খাট ৷একজন ঘুমাতেই কষ্ট ৷কিন্তু ঐখানে কেউ ঘুমায় না ৷কারন ছোট খাটটার এক পাশে তবলা আর হারমোনিয়াম ৷হয়তো আয়ান গান গায় ৷তার একটু পাশেই একটা বড় আয়না ৷হয়তো সাজসজ্জার জন্য রাখা ৷চারুর চিন্তার মাঝেই দরজা খুলে কেউ ভেতরে ঢুকলো ৷ চারু জানে মানুষটা কে ৷চারু তার শ্যাম পুরুষকে অনুভব করতে পারে ৷চারুর পাশে আয়ান ধপ করে শুয়ে পড়লো ৷তারপর বলল
আমার ঘরে আপনি কি করছেন চারুলতা ৷
চারুর কেন যেন ভয় করছে ৷তার জানা মতে বিয়ের পর স্বামী স্ত্রী তো এক ঘরেই থাকে ৷
আয়ান আবারো বলল আপনি কে হন আমার চারু তা জানেন ৷
চারু বলল এসব কি বলছেন আয়ান ৷আমি আপনার স্ত্রী হই ৷
আয়ান উঠে বসলো ৷তারপর চারুকে অবাক করে দিয়ে আয়ান চারুর ঘোমটার ভেতর মাথা ঢুকিয়ে দিল ৷চারু আয়ানের কাজে ভড়কে গেল ৷আয়ান ঘোমটার ভেতরেই চারুর গাল আলতো হাতে ধরলো ৷তারপর চারুর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল
আপনি আমার অর্ধাঙ্গিনী চারু ৷আপনি আমার আত্মার শান্তি ৷আপনি আমার আধার রাতে চাদেঁর আলো ৷আপনি সে যাকে আমি নিজের থেকে হাজার গুন ভালোবাসি ৷যাকে ভালোবেসে আমি মরতে চাই না ৷ যাকে ভালোবেসে আমি বাচঁতে চাই ৷ যার নাম আমার প্রতিটি শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে মিশে আছে ৷যাকে ছাড়া এই আয়ানের কোনো অস্তিত্ব নেই ৷ভালোবাসি আপনাকে চারু ৷বড্ড ভালোবাসি ৷
চলবে….
প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
সিজন :২
পার্ট :৭
আয়ান চারুর দিকে তাকিয়ে আছে ৷আর চারু নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ৷আয়ানের চোখের দিকে সে তাকাতে পারবে না ৷সেই সাহস তার নেই ৷চারুর মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেছে ৷কেন যেন আজ আয়ানকে তার ভয় লাগছে ৷আয়ান চারুর দিকে তাকিয়ে আবারো বলল
চারু আপনি যখন আমার কাছে থাকেন ৷তখন আমার শরীরের কম্পন বেড়ে যায় ৷আমার শ্বাস আটকে যায় ৷আমার তখন নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য চারু নামক অক্সিজেন বেশি প্রয়োজন হয় ৷আয়ান নিজের কপালের সাথে চারুর কপাল মিশিয়ে দিল ৷চারুর গলা বেয়ে গড়িয়ে পড়া ঘাম আয়ান দেখছে ৷ আয়ান ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে সেই ঘাম স্পর্শ করতেই চার রু তার ধরে ফেললো ৷আয়ান চারুর কান্ড দেখে বাকাঁ হাসলো ৷তার নজর চারুর লজ্জামাখা মুখটার দিকে ৷ আয়ান চারুর নাকফুলে একটা চুমু দিয়ে বলল
নাকফুলে আপনাকে এত সুন্দর লাগবে ৷এটা যদি আগে জানতাম ৷তাহলে আরো আগেই এটা আপনাকে পড়িয়ে দিতাম বেগম সাহেবা ৷
বেগম সাহেবা কথাটা শুনেই চারু আয়ানের দিকে তাকালো ৷আয়ানের মুখে এখনো সেই হাসি ৷ আয়ান চারুর দিকে তাকিয়ে বলল
সারারাত কি এভাবে থাকবেন হুমম ৷ এই সব খুলুন এখন ৷আমার খুব ঘুম আসছে চারু ৷আয়ান চারুর ঘোমটা খুলে দিল ৷তারপর একটা একটা গয়না খুলতে খুলতে বলল
উফফ চারু আপনারা মেয়েরা এত সাজেন কিভাবে ৷এত গয়না পরে আছেন কিভাবে ৷আমি হলে তো এতক্ষনে অজ্ঞান হয়েই যেতাম ৷তার মধ্যে এত ভারী শাড়ি পরে আছেন ৷ আপনি আর এসব পড়বেন না ৷আমার অতি সাধারন চারুলতাই পছন্দ ৷আয়ান চারুর সব গয়না খুলে দিল ৷তারপর আলমারির কাছে যেয়ে বলল
এটার অর্ধেক এখন থেকে আপনার ৷পুরোটা দিতে পারবো না ৷কারন আপনি আমার অর্ধাঙ্গিনী ৷তাই সব জিনিসে অর্ধেক অর্ধেক বলে দিলাম ৷এখানে পাতলা কাপড় আছে পড়ে আসুন ৷ওযু করে আসবেন নামাজ পড়বো ৷চারু আর কিছু বলতে চাইলো না আয়ানকে ৷ছেলেটা বয়সে ছোট হলে কি হবে ৷এই ছেলে যে বেশ পাজি তা চারু বুঝে গেছে ৷
সকালের হালকা সোনালী আলো চোখে পড়তেই চারুর ঘুম ভেঙ্গে গেল ৷চারু আয়ানের দিকে তাকালো ৷মানুষটা কত আরামে ঘুমাচ্ছে ৷কাল আয়ানের বাম হাতের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়েছে সে ৷ যেহেতু ডান হাতে আয়ানের ব্যাথা তাই বাম হাতেই ঘুমিয়েছে ৷কাল রাতের কথা মনে পড়তেই চারু হাসলো ৷নামাজ শেষ করার পর যখন চারু ঘুমাবে ৷ঠিক তখন আয়ান ঘটালো ঝামেলা ৷বিছানায় থাকা দুইটা বালিশের মধ্যে একটা ফ্লোরে ফেলে দিল ৷আর বাকি বালিশটায় আয়ান শুয়ে পড়লো ৷ আর চারু আয়ানের দিকে তাকিয়ে রইলো অসহায়ের মতো ৷আয়ান চারুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল
আমার কাছে আসুন চারু ৷
চারু আয়ানের পাশে বসতেই ৷আয়ান নিজের বাম হাতটা মেলে বলল এখানে মাথা রেখে শুয়ে পড়ুন ৷আজ থেকে এটাই আপনার বালিশ আমি থাকাকালীন ৷ তারপর চারুকে নিয়ে ঘুমিয়ে গেল সে ৷কিন্তু চারুর ঘুম হয় নি ৷এত সুখ সে কোথায় রাখবে ৷আয়ানকে সে হারাতে চায় না৷ আর আয়ানকে সে হারাতে দেবেও না ৷চারু নিজের নরম হাতটা আয়ানের বুকে রাখলো ৷তারপর নিজেও ঘুমিয়ে গেল ৷
রাতের কথা ভেবে চারু মুচকি হাসলো ৷তারপর বিছানা থেকে উঠে গেল ৷চারু ফ্রেশ হয়ে ঘরে এসে দেখলো আয়ান বসে আছে ৷চারুকে দেখে মুচকি হেসে সেও ফ্রেশ হতে চলে গেল ৷চারু বিছানা ঘুছিয়ে নিল ৷ তারপর নিজের চুল আচড়াতে লাগলো চিরুনী দিয়ে ৷ চুলগুলো বেশ বড় হওয়ায় আচড়াতে সময় লাগবে তার ৷ হঠাৎ করেই দরজায় হালকা টোকা পড়লো ৷ চারু চিরুনী রেখে দরজার কাছে গেল ৷ দরজা খুলেই চারু তার দেবর দ্বীপকে দেখতে পেল ৷ দ্বীপ মাথা নিচু করে চারুকে সালাম দিল ৷চারু সালামে জবাব দিল ৷তারপর দ্বীপ বলল
ভাবিমা যদি কিছু মনে না করেন ৷তবে আমি কি কিছু সময়ের জন্য ঘরে আসবো ৷
হ্যা ভাই এসো না ৷
দ্বীপ মুচকি হাসলো তারপর দরজার পাশে রাখা চারটা সাদা গোলাপ গাছের একটা হাতে তুলে নিল ৷চারু এতক্ষন খেয়াল না করলেও এখন খেয়াল করেছে ৷ টবে লাগানো চারটে গাছ ৷অনেক ফুল ফুটেছে গাছে ৷চারুর মনটা হঠাৎ ভালো হয়ে গেল ৷দ্বীপ গাছ গুলো বারান্দায় রাখতে রাখতে বলল
আপনার সাদা গোলাপ পছন্দ তাই না ৷আমাকে ভাইয়া বলেছে ৷কয়েক মাস আগে গাছ গুলো তাই কিনে ছিলাম আপনার জন্য ৷বাবার দেওয়া টিফিনের টাকা থেকে কিনেছি ৷এটা আমার তরফ থেকে উপহার ৷ দ্বীপ কথা গুলো বলে নিজের শার্টের কোনায় হাতের ধুলা মুছে নিল ৷আর চারু সে দ্বীপকে দেখছে ৷ কেন যেন দ্বীপকে দেবর মানতে চায় না তার মন ৷ দ্বীপের মাঝে সে তার নিজের ভাইকে দেখতে পায় ৷ ছেলেটা কত সহজে তাকে আপন করে নিয়েছে ৷দ্বীপ নিজের চশমা ঠিক করে বলল
তাহলে আমি এবার যাই ভাবিমা ৷
সে কি চলে যাবে কেন৷ একটু বসো না গল্প করি ৷দ্বীপ মাথা নেড়ে সম্মতি দিল ৷তারপর খাটের এক কোনায় বসলো ৷চারু নিজের চুল আচড়াতে আচড়াতে বলল
তা সব সময় চশমা পরে থাকো কেন ৷কি হয়েছে তোমার চোখে ভাই ৷
আমি আসলে চশমা ছাড়া দেখি না ৷চশমা ছাড়া সব ঝাপসা দেখি আমি ৷তাই ডাক্তার চশমা দিয়েছে ৷দ্বীপ কথা গুলো বলতে বলতে চারুর দিকে তাকালো ৷দেখলো চারু চুলের গিট ছাড়াতে না পেরে ছিড়ে ফেলছে ৷ দ্বীপ চারুর কাছে যেয়ে বলল
আমার হাতে চিরুনীটা দিন ভাবিমা ৷
চারু দ্বীপের হাতে চিরুনীটা দিল ৷দ্বীপ চারুর পেছনে যেয়ে বলল
আমার মা একদম আপনার মতো ৷চুল আচড়াতে গেলে ছিড়ে ফেলে ৷তাই রোজ দুইবার আমি মায়ের চুল আচড়ে দেই ৷ এভাবে নিজের চুল ছিড়তে নেই ভাবিমা ৷ আমার হলো যত জ্বালা এখন থেকে আরো একজন বেড়ে গেল ৷দ্বীপ চারুর চুল আচড়ে দিতে লাগলো ৷
আয়ান ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে দ্বীপকে দেখে হাসলো ৷তারপর দ্বীপের কাছে এসে বলল
ভালোই হয়েছে তুই আছিস ৷এখন থেকে মা আর ভাবির চুলের দ্বায়িত্ব তোর ৷
দ্বীপ হাসলো ৷তারপর চিরুনীটা চারুর কাছে দিয়ে বলল
চুল আচড়ানো শেষ ৷এবার আমার যাওয়া উচিত ভাবিমা ৷
দ্বীপ চলে গেল ৷তারপর আয়ান চারুর কাছে এসে বলল
আমার ভাইটা অনেক ভালো চারু ৷ কিছু দিন আগে যখন আমার জ্বর হয়ে ছিল ৷তখন সে সারা রাত আমার কাছে থেকেছে ৷কিন্তু একটাই সমস্যা ওর ৷ও সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করে ৷আর বড্ড বোকা আমার ভাইটা ৷ওকে একটু ভালোবাসলে দেখবে নিজের জীবনটাও দিতে পারবে ৷
দ্বীপ নিজের ঘরে গেল ৷ভেতরে যেয়ে দেখলো মিহান বসে আছে ৷মিহানকে সে অনেক ভয় পায় ৷দ্বীপকে দেখেই মিহান তেড়ে এলো ৷দ্বীপের গলা চেপে ধরে বলল
তুই ঐ আয়ানের ঘরে কেন গিয়ে ছিলি হ্যা ৷একদম যাবি না ওখানে ৷
আমি কি করেছি ভাই ৷
তোকে বলেছি না আয়ানের কাছে না যেতে ৷কেন যাবি তুই ৷আবার গেলে তোকে মেরে ফেলবো আমি ৷
তুই এমন কেন করিস ভাই আমার সাথে ৷তোকে আমার অনেক ভয় লাগে ৷দ্বীপ কাদঁতে কাদঁতে কথা গুলো বলল ৷
ঐ আয়ান আমাদের ভাই নয় ৷ও আমাদের শত্রু বুঝেছিস ৷আর তুই যদি ওর কাছে বেশি যাস তাহলে আমি কি করবো তা হয়তো জানিস ৷মিহানের চোখে শয়তানী ৷আর দ্বীপের চোখে ভয় ৷সে ভয়ে কাপঁছে ৷মিহানকে সে বেশ ভয় পায় ৷কারন মিহান যে কি করতে পারে তা সে ভালো করেই জানে ৷
চলবে