অদ্ভুত_অনুভূতি পার্ট_৩
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
মায়া দৌড়ে গিয়ে নিবিড়ের হাত থেকে পেপার নিয়ে নেয়। সবাই অবাক হয়ে আছে মায়া আসলো কি করছে
মায়া পেপার নিয়ে সবার দিকে তাকিয়ে আছে
“‘ এসব কি নির্ঝর ড্রাগ অ্যাডিক্টেড ছিল ?(অবাক হয়ে)
সবাই মাথায় নিচু করে নেয়
“‘ মায়ু শান্ত হো দেখ তোমার এখন সেই অবস্থা নেই আমি তোমাকে পরে সব বলবো
মায়া কারোর কোনো কথা না শুনে দৌড়ে নিজের ঘরে যায় পিছনে থেকে সবাই ডাক দে কিন্ত মায়া শুনে না
মায়া নিজের ঘরে গিয়ে নির্ঝরের সব কিছু বের করতে লাগে একটা সময় নির্ঝরের একটা ব্যাগ বের হয় যেটা নির্ঝর নিজে গুছিয়ে রাখতো কখনো মায়া কে হাত দিতে দিত না
মায়া ব্যাগ টা বের করে খুলে দেখে ওতে ড্রাগ। মায়া স্তব্ধ হয়ে গেছে এ কাকে দেখছে নির্ঝর তো এমন না । নির্ঝর কে তো কখনো এসব খেতে দেখেনি । নির্ঝর মাঝে মাঝে সিগারেট খেত সেটা মায়া জানে কিন্ত ড্রাগ
মায়া মাটিতে বসে আছে তখনই নিবিড় আসে।নিবিড় ধির পায়ে মায়ার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে মায়ার কাধে হাত রাখতেই মায়া নিবিড় কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়
‘”নিবিড় আমার মধে কি কমতি ছিল যে নির্ঝর এভাবে আমাকে ধোঁকা দিলো বলো না কি কমতি ছিল (কাদতে কাদতে)
“‘ মায়া তোমার মধে কমতি নেই আসলে যে ধোঁকা দেবে সে যেকোনো মূল্যে ধোঁকা দিবে এটাই স্বাভাবিক
মায়া সোজা হয়ে বসে পড়ে নিবিড় অবাক হয়ে দেখছে মায়া কি করতে চাইছে
‘”আমি একা থাকতে চাই
‘”কিন্ত
‘”প্লিজ আমাকে একটু একা থাকতে দাও প্লীজ
নিবিড় আর কোনো কথা বললো না এই প্রথম মায়া নিবিড় এর থেকে দূরে থাকতে চাইছে । নিবিড় ঘর থেকে বের হতেই মায়া দরজা আটকে দরজার সামনে বসে পড়ে ।
এদিকে নিবিড় ও মায়ার দরজার সামনে বসে পড়ে । নিবিড়ের ভিতর যে পুড়ে যাচ্ছে নিজের সব থাকে কাছের ফ্রেন্ড কে এভাবে দেখতে । নিবিড়ের দুনিয়া বলতে এখন শুধু মায়া । সেই মায়া কে যদি হারিয়ে ফেলে তাহলে নিবিড়ের এত কষ্ট সব ফাউ ভাবতেই নিবিড়ের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে
দুটি মানুষ এই পার ওই পার বসে চোখের পানি বিসজ্জন দিচ্ছে কেউ জানে না কর ভাগ্যে কি আছে ।
এভাবে দুইটা দিন কেটে গেল মায়া এখন ও দরজার ওইপারে । সবাই হাজার চেষ্টা করে ও মায়া কে বের করতে পারে নি এমন কি নিবিড় ও না ।
নির্ঝরের আব্বু সব কিছুর জন্য নিজেকে দোষ দিচ্ছে তার কথা সে নির্ঝর কে মানুষ করতে পারেনি যার জন্য আর সবার এই দিন দেখতে হচ্ছে ।
মায়ার আব্বু ও খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে কোনো বাপ কি তার মেয়ে কে এভাবে দেখে শান্তিতে থাকতে পারে । সবাই অঙ্ক চেষ্টা করে মায়া কে বের করতে পারে নি শেষে নিবিড় না পেরে দরজা ভাঙার কথা ভাবে
নিবিড় আর মায়ার আব্বু দরজার ভাঙছে ।
দরজা ভেঙে তো সবার চোখ কপালে মায়া ফ্লোরে শুয়ে আছে নিবিড় মায়ার কাছে গিয়ে দেখে মায়ার সেন্স নেই । এই দুইদিন এক ফুটা ও পানি মুখে দেয়নি ।
নিবিড় মায়া কে কোলে তুলে বেড়ে শুয়ে দিয়ে ডক্টর ডাকে । সবাই খুব চিন্তিত । নির্ঝরের আব্বু নিজেকে বার বার দোষ দিচ্ছে
“‘ পেসেন্ট অনেক ডিপ্রেসন এ থেকে সেন্স হারিয়েছে আর এভাবে চলতে থাকলে তো মা এবং বাচ্চা দুইজনের ক্ষতি
ডক্টরের কথা শুনে সবাই অবাক। নিবিড় প্রশ্ন করে
‘”মা আর বাচ্চা মানে
‘” হা পেসেন্ট প্রেগেন্ট কেনো আপনারা জানেন না তিনি তো দুই মাসের প্রেগন্যান্ট
‘” আসলে ডক্টর মায়ার স্বামী তো মারা গেছে তিন দিন হলো আমরা সেই ভাবে বুঝতে পারিনি
‘” হুম বুজলাম কিন্ত এখন থেকে মা আর বাচ্চার দুইজনের খেয়াল রাখতে হবে নাহলে কিন্ত অনেক বড়ো ক্ষতি হয়ে যাবে
‘” জী আমরা দেখবো
নিবিড় ডক্টর কে এগিয়ে দিয়ে আসে । মায়ার আব্বু বলে
‘” নির্ঝর মারা গেছে এর মধ্যে মায়ার শরীরে অন্য প্রাণ বাড়ছে কি করবো আমি
নিবিড় একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে
‘” মায়া আমাকে একটা গুড নিউজ দিতে চাইছিল বলেছিল আগে নির্ঝর কে বলবে তারপর সবাইকে কিন্ত তার আগে সব শেষ
‘” নিবিড় বাবা তুমি মায়া কে নিয়ে এখান থেকে দূরে চলে যাও ওকে একটু বাঁচতে শিখাও তুমি ছাড়া ও কারোর কথা শুনবে না কারোর না
‘” কোনো আংকেল মায়া তো এখন কোনো কথা শুনতে চাইছে না আগে ওকে সাভাবিক করতে হবে
নির্ঝরের আব্বু নিবিড়ের হাত ধরে বলে
‘” বাবা তুমি প্রমাণ করে দিলে যে শুধু রক্তের সম্পর্ক আপন হয় না মাঝে মাঝে রক্তের থেকে ও বেশি আপন অন্য কেউ হয় । মায়া কে তুমি স্বাভাবিক করে দাও আমার দাদু ভাই কে বাঁচাও । মায়ার মধে যে নির্ঝরের অংশ বাড়ছে
‘” আমি চেষ্টা করবো মায়ার কোনো ক্ষতি আমি হতে দেবো না কিছুতেই না
নিবিড় গিয়ে মায়ার পাশে বসে মায়ার হাত ধরে বলে
‘”” আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না আমি কিছু হতে দেবো না
সত্যি মাঝে মাঝে কিছু মানুষ রক্তের থেকে বেশি আপন হয়
(সরি guys আমি কিন্ত জানিনা কই মাসে বুঝা যায় সে প্রেগন্যান্ট কোনো এক্সপেরিন্স নেই তাই কেউ আবার উল্টা পাল্টা বলো না )
ঘন্টা খানেক পর মায়ার সেন্স ফিরে।
মায়া চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে ওর এক হাতে ক্যানাল লাগানো অন্য হাত ধরে নিবিড় ঘুমিয়ে আছে ।
মায়া নিবিড়ের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে হটাৎ নিবিড়ের ঘুম ভেংগে যায় মায়া অন্য দিকে চোখ ফিরিয়ে নেয়
নিবিড় কাতর কন্ঠে বলে
‘”কেনো করছো এমন তুমি জানো না তোমার কষ্ট আমার সহ্য হয় না তারপর ও কেনো এমন করছো
” সব কেনোর উত্তর কি সবাই দিতে পারে
‘”হা পারে তুমি চাইলে পারবে প্লিজ এমন করো না তোমার একটু কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না তাহলে কেনো নিজেকে আমার পরিবারের সবাইকে কষ্ট দিচ্ছ । আমাদের কথা না ভাবল নিজের বাচ্চার কথা তো ভাবো ওর কি দোষ
নিবিড়ের কথায় মায়া নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে নিজের হাত নিবিড়ের থেকে ছাড়িয়ে পেতে দেয়
‘” ওর দোষ একটাই যে ওর রক্ত খারাপ
‘” মায়া পাগলামি করো না ওর আব্বু কি করছে তার জন্য কি ও শাস্তি পাবে
‘” ওর কোনো বাবা নেই ওর বাবা আমি আর মা ও আমি । কোনো খারাপ রক্তের পরিচয়ে আমি ওকে বড়ো করবো না
নিবিড় অবাক হয়ে মায়া কে দেখছে মায়া সেসব তুয়াক্কা না করে বলে
‘” আমার খুদা লাগছে
নিবিড় এক মুহুর্ত দেরি না করে খাবার আনে আর সবাই কে বলে দেয় মায়ার সেন্স ফিরছে । মায়া খাবার খেয়ে কারোর সাথে কোনো কথা না বলে শুয়ে পরে।
এভাবে দেখতে দেখতে আরো এক সপ্তাহ চলে গেলো মায়া এখন আর কারোর সাথে কথা বলে না শুধু নিজে নিজে কথা বলে। নিবিড় অনেক চেষ্টা করে মায়ার সাথে কথা বলতে পারেনি ।
মাঝ রাতে হঠাৎ মায়ার ঘুম ভেংগে যায় বাইরে খুব বাতাস হচ্ছে । জানালা বার বার ধাক্কা খাচ্ছে
মায়া উঠে জানালার কাছে যায় এক শীতল বাতাস মায়ার শরীর কাপিয়ে দিচ্ছে ।মায়া জানালা বন্ধ করতে গেলে তখনই কেউ মায়ার হাত ধরে
মায়া ভয় পেয়ে হাত ছাড়াতে চায় তখনই একটা কণ্ঠ ভেসে আসে
‘” চড়ুই পাখি আমাকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে
চড়ুই পাখি কথাটা শুনে মায়ার বুক ধুক করে উঠে । মায়া হাত না ছাড়িয়ে সামনে দেখার চেষ্টা করে কিন্ত এত বাতাসে জানলার পর্দা উড়ছে
মায়া আর একটু এগিয়ে যেতেই হটাৎ ওর সামনে কেউ চলে আসে
মায়া ভয়ে কিছুটা পিছিয়ে যায় আবার সেই শীতল কণ্ঠে ভেসে আসে
‘” চড়ুই পাখি
মায়া লোকটাকে দেখে ভয়ে চিৎকার দেয়। কিন্ত এত ভয় পেয়েছে যে মায়ার চিৎকার জোরে হচ্ছে না গলা দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না
লোকটা ধির পায়ে মায়ার দিকে আসতে থাকে মায়ার পা যেনো অবস হয়ে আছে নড়ছে না । মায়া আর কিছু দেখতে না পেয়ে সেন্স হারায়
যখন সেন্স ফিরে তখন নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করে । মায়া লাফ মেরে উঠে দেখে ওর চারিপাশে ওর আব্বু নির্ঝরের আব্বু সার্বমন্ট নিবিড় দাড়িয়ে আছে
‘” আমি এখানে কি করে আসলাম ?
তখন নিবিড় যা বললো তাতে মায়া অবাক এর উপর অবাক হচ্ছে
“‘ এটা কি করে সম্ভব
চলবে
(গল্পটা তেমন রেসপন্স পাচ্ছি না বলে দাও তাহলে বাদ দিতে পারি )