তুমিনহাতটা শুধু ধরো শেষ পর্ব

0
1868

#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্বঃ৪৫ (অন্তিম পর্ব)
#Jhorna_Islam

পুরো বাড়ি রং বেরং এর মরিচা বাতির আলোতে মুখরিত।মানুষের হইচই লেগে আছে। নানান ধরনের গল্পে মজে আছে সবাই।

সোহা কখন থেকে কিছু একটা খুঁজে চলেছে। না পেয়ে কপাল কুঁচকে ফেলছে। নাহ এইদিকে নেই।তাই নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়। যেতে যেতেই হা’ক ছাড়ে,,,,, “দায়ু আয়ু তোমরা কই?”

রুমের ভিতর পা বাড়িয়ে আবার বলতে নেয় দা- আর বলা হয় না। মুখ বন্ধ হয়ে যায়। আর বলা হয় না।কারণ দুই বাপ বেটা মিলে রা’গী চোখে তাকিয়ে আছে।

সোহা তুমি কি বললা আবার? তোমাকেনা কতোবার বলেছি এইসব উৎ’ভ’ট নামে ডাকবানা।ছিঃ কেমন বা’জে শোনায়।হোয়াট ইজ দায়ু-আয়ু? আমাদের নাম আছে ওকে? হয়তো পুরো নামে ডাকবা নয়তো ডাকার দরকার নেই।

দিন দিন তুমি কি ছোটো হচ্ছ? এসব শুনলে মানুষ হাসবে না বলো,?

আম্মু আব্বুর নাম দায়ান দায়ু না।আর আমার নাম আয়ান আয়ু না।বলেই ঠোঁট উল্টায় ।

আমিতো ভালোবেসেই ডেকেছিলাম। চুপ থাক তুই আবার বাপের সাথে মিলে লেকচার দিবিনা আমায়।আমার ভালোবাসার তো কোনো দামই নেই লোকের কাছে হুহ।

দায়ান কোল থেকে আয়ান কে নামিয়ে বলে,,,,, বাবা তুমি যাও খেলা করো গিয়ে।দেখো বাহিরে সবাই আছে নানু-খালামনিরা যাও।

ঠিক আছে আব্বু বলেই আয়ান দায়ানের কপালে চুমু খেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে যায়। দায়ান ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে উঠে দাঁড়ায়।

সোহার কাছে এগিয়ে এসে হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।কানের পিছনে চুল গুজে দিয়ে বলে উঠে,, কি ব্যাপার মিসেস দিন দিন সুন্দর হয়ে চলেছেন?

ধ্যাত আপনার শুধু আজে বাজে কথা।বাহিরে আসুন সবাই আপনাকে খুঁজছে। বলেই সোহা দায়ানকে ছাড়িয়ে বেরিয়ে যায়। দায়ান সোহার দিকে তাকিয়ে হাসে।তার দুইটা জা’ন। এদের ছাড়া এক মুহূর্ত ও চলে না।

———————————-

সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে পাঁচটা বছর চলে গেছে। কোন দিক দিয়ে যে সময় বয়ে যায় খেয়ালই থাকে না।মনে হয় এইতো সেইদিন।কিন্তু না কতোগুলো বছর পার হয়ে গেছে। দেখতে দেখতে পাঁচ বছর শেষ।

ঐদিন সোহাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।অপারেশন থিয়েটারে যখন নেওয়া হয় দায়ান তখন চুপটি মেরে বসেছিলো।মুখে একটা টু শব্দ ও করেনি।সবাই করিডোরে পায়চারি করতেছিলো দায়ান তখন একটা বেঞ্চে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো।একটা শব্দ ও করেনি। নোহার বাবা রুশকে ও খবর দিয়েছিলো।রুশ ও কম সময়ের মাঝে এসেই পৌঁছায়। দায়ানকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে পাশে গিয়ে বসে কাঁধে হাত রাখে।দায়ান মাথা তুলে একবার রুশের দিকে তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে ফেলে।

কিছুসময় পরই যখন বাচ্চার কান্নার আওয়াজ আসে,,,দায়ান তখন পাশে বসে থাকা রুশের হাত খামচে ধরে।

অপারেশন থিয়েটার থেকে যখন সদ্য জন্মানো বাচ্চাটাকে এনে দায়ানের সামনে ধরে বলা হয়,, আপনার ছেলে হয়েছে।আহ্ তখন যে কি সুখ সুখ লেগেছিলো।কাঁপা কাঁপা হাতে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে জানতে চায় সোহা কেমন আছে।ডাক্তার তখন হাসি মুখে বলেছিলো ভালো আছে কোনো সমস্যা নেই। কিছুক্ষন পরই ক্যাবিনে দেওয়া হবে। আর বাচ্চা ন’রমাল ভাবেই হয়েছে।

দায়ান যেনো শরীরে প্রান ফিরে পেয়েছিলো স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে ছেলের কানে আজান দিয়েছিলো। তারপর সোহার মার কাছে দিয়েছিলো ছেলেকে। সোহাকে ক্যাবিনে শিফট করা হলে,,, দায়ান প্রথমে সোহার কাছে যায়।

সোহা চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিলো।দায়ান গিয়ে আলগোছে জড়িয়ে ধরে। গলায় মুখ ডুবিয়ে নিঃশব্দে কাঁদতে থাকে। সোহা ঐ দিন নিয়ে দুই বার দায়ানকে চোখের পানি ফেলতা দেখেছে।

তারপর বাচ্চাকে এনে সোহার পাশে শোয়ায়।সোহা ও ছেলের কপালে চুমু খেয়ে দায়ান বলে,,আমার পরিবার।আমার আয়ান।সোহা আমাদের ছেলে না পুরাই আমার বাবার চেহারা পেয়েছে।দেখো নাক মুখ সব।ঐদিন দায়ানের হাসি মাখা মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো শুধু সোহা।
“তার আর দায়ানের ছেলে আয়ান।” তাদের জা’ন।

———————-
সময়ের সাথে সব পাল্টে যায়।সবার জীবন ধারা বদলে যায়। এই পাঁচ বছরে পাল্টে গেছে অনেক কিছু।

ওমি জে’ল থেকে ছাড়া পেয়েছে।নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে যে কি অন্যায় করেছে।মায়ের কথা বিশ্বাস করে দিনের পর দিন একজন নিষ্পাপ মেয়েকে আ’ঘাত করেছে কষ্ট দিয়েছে। এখন নোহাকে খুব মনে পরে।তমার মোহে পড়ে কতই না অত্যা’চার করেছে মেয়েটার উপর।মাথাটা মা ই অবশ্য বি’গ’ড়েছে নিজের ভাতিজি কে ছেলের বউ করতে। এখন হাড়ে হাড়ে টের পায় কি নিজের হেলায় হাড়িয়েছে। কথায় আছে না “দাঁত থাকতে মানুষ দাঁতের মর্ম বোঝেনা। ওমিও বোঝে না তাইতো পস্তাচ্ছে। এখন নিজের কপাল চাপড়ানো ছাড়া কিছুই করার নেই। এখন আর কোথাও বের হয় না ওমি।সারাক্ষণ নিজেকে চার দেয়ালের ভিতর বন্দি করে রাখে।
অবশ্য নোহার সব খোঁজ নিয়েছিলো।খুশি আছে মেয়েটা।নিজে কখনো সুখ দিতে পারেনি। আফসোস হলেও মন থেকে এখন ওমি দোয়া করে যেনো নোহা সুখে থাকে।জীবনে আর কাউকে জরাবে না ওমি।বাকি জীবন নোহার স্মৃতি নিয়ে কাটিয়ে দিবে।

ওমির মার করুণ পরিনতি। হাঁটা চলা করতে পারে না।পা অ’চল হয়ে বিছানায় পরে আছে।কেউ খোঁজ খবর ও নেয় না।কাজের লোক রেখে দিয়েছে।সে দেখাশোনা করে।এখন দুইটা কথা বলার মতো কেউ নেই।স্বামী পরে আছে তার রাজনীতি নিয়ে। ছেলে তার দিকে ঘুরেও দেখেনা।কবে দুইটা কথা বলেছিলো ওমি মনে পরে না।এখন বসে বসে চোখের পানি ঝড়ানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।চোখ বন্ধ করলেই নিজের অন্যায় গুলো চোখে ভাসে। এগুলো হয়তো পাপের শাস্তি পাচ্ছে। বড্ড ইচ্ছে করে নোহার কাছে ক্ষমা চাইতে।কোন মুখে চাইবে? আর নোহার দেখা পেলে তবে না চাইবে।মনে মনে হাজার বার নোহার কাছে মাফ চায়।

ওমির জেলে যাওয়ার ছয় মাস পরই তমার বিয়ে হয়ে গেছে। ওমির জন্য অপেক্ষা করেনি।চার বছরের জেল। এতোদিনের জেল শুনে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। অন্য জায়গায় বিয়ে করে নিয়েছে। প্রথম কয়েকদিন ভালো করে সংসার করলেও পরে ঝামেলা শুরু হয়। শ্বশুর শ্বাশুড়ি ননদ সবাই মিলে নানান ধরনের অত্যা’চার মারধর করে। বাচ্চা হয়না বলে দুই বছরের ভিতর ই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এখন বাড়িতে বসে ভাই আর ভাইয়ের বউদের লা’থি উ’ষ’টা খায়। কথায় আছে না পা’প বাপকেও ছাড়ে না।নোহার সন্তান টাকে পৃথিবীতে আসতে দেয়নি ওরা তাই শাস্তি পাচ্ছে।

—————————–
নোহার অতীত জীবনটা যতোটা কষ্টের ছিলো।বর্তমান জীবনটা ততোটাই আনন্দের খুশির।জীবনে এতো সুখ পাবে কখনো ভাবেনি নোহা।এই যে মায়ের মতো শ্বাশুড়ি, বাবার মতো শ্বশুর পেয়েছে।এরা কখনো বুঝতেই দেয়নি নোহা ওদের কেউ না।সব সময় নিজের মেয়ের মতো ভালোবেসেছে।

শ্বশুর বউমা বলতে পা’গল। বাইরে কোথাও হাটতে গেলেও হাতে করে নোহার প্রিয় কিছু না কিছু নিয়ে আসবে। মুখ ফোটে কিছু চাওয়ার আগেই পেয়ে যায়।

আর শ্বাশুড়ি সে তো আরেক ধাপ এগিয়ে। কিছু করতে দেয় না।তার এক কথা আমি না থাকলে বা অসুস্থ হয়ে গেলে সব তো তোমায়ই করতে হবে। এখন বিশ্রাম নেও।রান্না ঘরের ধারে কাছে ও নোহাকে ঘেষতে দেয় না। বলে দিয়েছে তোমার এখন সংসার সামলাতে হবে না মা।তুমি বরং এখন রুশ আর তোমার দিকে নজর দাও।নিজেরা সময় কাটাও।

রুশ আর নোহার একটা মেয়ে হয়েছে তিন বছর।নাম রশনি।মেয়েকে নিয়ে এখন তাদের সুখের সংসার।

রুশের ভালোবাসার কাছে নোহাকে পরাজিত হতে হয়েছে।পারেনি মুখ ফিরিয়ে রাখতে বেশি দিন।পা’গল প্রেমিক তার পা’গলামী দিয়ে ঠিক মন জয় করে নিয়েছে।এতো ভালোবাসা কেয়ারের পর নোহা পারেনি রুশকে ফিরিয়ে দিতে।আস্তে আস্তে দূর্বল হয়ে পরেছিলো। নোহার সকল না পাওয়া গুলো রুশ পূর্ণ করে দিয়েছে।আগের জীবনের কষ্ট গুলো ভুলিয়ে দিয়েছে।

———————————–
আজ দায়ান একটা পার্টি রেখেছে বাড়িতে।সকলেকেই প্রায় দাওয়াত করেছে। সোহার বাবা মা। দায়ানের চাচা-চাচি।রুশের পরিবার সকলেই এসেছে। দায়ান তার অফিসের লোকদের সাথে কথা বলছে।সোহা তার বাবা মা আর নোহার সাথে গল্প করছে।

নোহার মেয়ে রশনি সোফায় বসে খেলছিলো।আয়ান গিয়ে মাথায় টোকা মারে।ব্যাস শুরু হয়ে গেলো রেকর্ড। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিল্লিয়ে কান্না করে চলেছে। রশনির কান্না শুনে সকলে দৌড়ে আসে। সোহা এসে কোলে তুলে নেয়। জানতে চায় কি হয়েছে আম্মু? কান্না করে কেনো আমার আম্মু কে মেরেছে? রশনি আঙুল তাক করে আয়ান কে দেখিয়ে দেয়।

সোহা চোখ গরম করে আয়ানের দিকে তাকায়। আয়ান তুমি রশনি কে মেরেছো?

আয়ান মায়ের দিকে তাকিয়ে ডানে বামে ঘাড় ঘুরায় সে মারেনি।সেতো একটা টোকা দিয়েছে শুধু। তাই বলে এভাবে কাঁদতে হবে? এখন টোকার কথা ও বলা যাবে না।তাহলে মা মারবে।

সোহা চোখ গরম করে ছেলের দিকে তাকায়। সোহাকে পাত্তা না দিয়ে নোহা আয়ানকে কোলে তুলে নেয়। তারপর বলে,,একদম আমার বাবাইকে চোখ রাঙাবিনা।তোর ভাগ্নি শুধু শুধুই ভ্যা ভ্যা করতে পারে।

সোহা নোহাকে বলে আপু তুমি ওরে একদম লা’ই দিবানা।দিন দিন পাঁজি হয়ে যাচ্ছে। আমার কতো ইচ্ছে আমার রশনি মাকে ছেলের বউ করবো।আর এই ছেলে কিনা সব ইচ্ছেতে পানি ঢেলে দিচ্ছে। বলি এমন ভাবে মেয়েটাকে মারলে রুশ ভাই কি মেয়ে দিবে? বলেই ঠোঁট উল্টায়।

নোহা বোনের কথা শুনে হেঁসে দেয়।তার বোনটার যতো পাগলামি। এখনো বাচ্চা রয়ে গেছে।বাচ্চার মা হয়েও ঠিক হলো না।আয়ান ততক্ষণে নোহার কোল থেকে দায়ানের কাছে চলে গেছে।

পিছন থেকে রুশ সোহার কথা শুনে বলে,,কে বলেছে তোমার ছেলের কাছে মেয়ে দিবো না।আমিতো আমার বোন+ শালীর ছেলের কাছে মেয়ে দিতে এক পায়ে রাজী।

সোহা খুশিতে গদ গদ হয়ে বলে এই না হলে আমার ভাই।শুনো ভাইয়া আমি তোমাকে আগেই বলে দিচ্ছি আমার একটা মিশন আছে বুঝলা? তুমি কিন্তু আমার ছেলেকে ভুল বুঝতে পারবানা আগেই জানিয়ে রাখছি।

কি মিশন? পিছন থেকে দায়ান জানতে চায়।

সোহা আস্তে করে বলে,,,,, তিশার মেয়ে আছে না? ঐ যে আপনার এক্স যে। ওর মেয়ের সাথে প্রেম করে বড় মাপের একটা ছে’কা দিতে বলবো।

সবাই এটা শোনার পর হাসিতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা।

সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর দিকে রা’গী চোখে তাকিয়ে আছে। তাই বলে সত্যি প্রেম নাতো মিথ্যা মিথ্যা। এখনো দায়ানকে একই ভাবে তাকিয়ে বলে,, আমিতো মজা করছিলাম।আপনি কি সত্যি ভেবেছিলেন নাকি।একদম না মজার করতে বলেছি।

——————————-
রাতের খাবার খেয়ে সকলেই বাড়ি চলে যায়। শুধু দায়ানের চাচা-চাচি আর সোহার বাবা মা থেকে যায়।

সব ঝামেলা শেষ করে দায়ান রুমে আসে।সোহা আয়ানকে নিয়ে সেই কখনই এসে পরেছে।সোহার বুকে আয়ান চুপটি করে ঘুমুচেছ। সোহা এখনও ঘুমায়নি ছেলের মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছে। দরজায় আওয়াজ হওয়াতে দরজার দিকে তাকায়। দায়ান এসেছে।

দায়ান সোহা আর ছেলের দিকে তাকিয়ে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে পরে ফ্রেশ হওয়ার জন্য। প্রায় পনেরো মিনিট পর বেরিয়ে আসে। টাওয়াল দিয়ে হাত মুখ মুছে বারান্দায় গিয়ে মেলে দিয়ে আসে।

রুমে এসে বিছানায় উঠে পরে।ছেলের মুখের দিকে কিছুসময় তাকিয়ে থাকে।তারপর মুখটা এগিয়ে কপালে একটা চুমু খায়। সোহার দিকে তাকিয়ে দেখে সোহা তার দিকেই তাকিয়ে আছে। দায়ান আরেকটু এগিয়ে গিয়ে সোহার কপালেও চুমু খায়। সোহা আবেশে চোখ বন্ধ করে রাখে।এই লোকটা তাকে পা’গলের মতো ভালোবাসে।

দায়ান আস্তে করে ছেলেকে সোহার থেকে ছাড়িয়ে বিছানার এক পাশে শুয়ায়।তারপর শরীরে কাঁথা জড়িয়ে দেয়।

নিজে গিয়ে সোহার পাশে শুয়ে সোহাকে নিজের বুকে টেনে নেয়। জড়িয়ে ধরে রাখে কিছুসময়। তারপর সোহার মুখটা উঁচু করে ধরে সোহার দিকে তাকিয়ে রয়।সোহা লজ্জা পায় দায়ানের এমন তাকানো দেখে। দায়ানের বুকে মুখ লোকায়।দায়ান সোহার কান্ডে নিঃশব্দে হাসে।কিছুসময় পর সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,, আপনার জন্য একটি সারপ্রাইজ আছে।

দায়ান জানতে চায় কি?

সোহা দায়ানের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,, আপনার পরিবার আরো বড় হতে চলেছে।

দায়ান প্রথমে বুঝতে না পেরে সোহার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়। সোহা দায়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে,, আপনি আবার বাবা হতে চলেছেন।

দায়ান কথাটা শুনে খুশি হয়ে যায়। তুমি সত্যি বলছো?

হুম।

এবার আমার পরিবার পুরোপুরি পূরণ হবে সোহা।এই বার দেইখো আমার একটা আম্মু হবে।

সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,, আপনার ইচ্ছে যেনো পুরণ হয়।

দায়ান খুশিতে সোহাকে কিছুসময় জড়িয়ে ধরে রাখে।তারপর পাঁজা কোলে তুলে নেয়। এগিয়ে যায় বারান্দার দিকে। বারান্দায় একটা দুলনা রাখা আছে ঐখানে গিয়ে সোহাকে কোলে নিয়ে বসে পরে।

তুমি আমায় পূর্ণ করেছো সোহা।আমার অন্ধকার জীবন কে আলোকিত করেছো।আমাকে দুঃখ থেকে হাত ধরে পাশে থেকে সুখের সাগরে নিয়ে এসেছো।আজ আমারও পরিবার আছে।ভালোবাসার মানুষ আছে।বলেই সোহার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রয়।

তারপর একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কতোটা সময় চলে যায় তারা নিজেও জানেনা। নীরবতা ভেঙে দায়ান বলে,, একটা গান ধরোতো সোহা,,,তোমার গলার মিষ্টি স্বর শুনতে ইচ্ছে করছে। সোহা মুচকি হেসে গান ধরে,,,,,,,,,,,

“তোমার ইচ্ছে গুলো ইচ্ছে হলে আমায় দিতে পারো।”
আমার ভালো লাগা ভালোবাসা তোমায় দিবো আরো।
#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো আমি হবো না আর কারো।

এভাবেই তাদের ভালোবাসাময় সুখের সংসার চলতে থাকুক।একে অপরের পাশে হাতে হাত রেখে জীবন পার করুক।

#সমাপ্ত।

বিঃদ্রঃ প্রথমেই কালকে লেবা’র পেইনের জায়গায় লি’ভা’র পেইন লিখে ফেলার জন্য স’রি আসলে কালকের পর্বটা চেক করা হয় নি।

অবশেষে গল্পের সমাপ্তি ঘটলো।এটা আমার প্রথম গল্প। আপনাদের কাছ থেকে অনেক অনেক ভালোবাসা পেয়েছি।গল্পের মাঝে হয়তো অনেক ভুল করেছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। আপনাদের মন্তব্য আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়।তাই আশা করবো আমার সাইলেন্ট পাঠক পাঠিকারা এবং যারা নাইস নেক্সট মন্তব্য করেন আজ অন্তত গল্পের বিষয়ে কিছু লিখবেন।কেমন হয়েছে জানাবেন। আর খুব শিঘ্রই নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের কাছে হা’জির হবো।আশা করি এই গল্পের মতো পাশে থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here