ডার্ক সাইট অফ এ বিউটিফুল লেডি part 2

0
770

#ডার্ক_সাইড_অফ_এ_বিউটিফুল_লেডি
#পর্ব_2
#দোলনা_বড়ুয়া_তৃষা

ভীষণ নিস্পৃহ গলায় বলল,
– না, আমি তখনো মাত্র চৌদ্দ বছরের কিশোরী ছিলাম।

তাও ওর দিকে সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছি দেখে ও বলল,
– প্রথম থেকে আমাকে খুনী ভাবলে আপনি আমার গল্প শুনতে পারবেন না।

– আচ্ছা ভাবছি না। তারপর?

– বাবা মারা যাওয়ার পর আমি দাদু দিদিমার সাথে মামার বাড়ি গিয়ে থাকতে শুরু করলাম। মায়ের সুন্দরী হওয়ার কারণ ছিলো দিদাও সুন্দরী ছিলেন। দিদার বয়স তখন ষাট তবে দাদুর সন্দেহ তখনো শেষ হয় নি। সারাক্ষন চোখে চোখে রাখতেন। সবাই ভাবতো কত ভালোবাসা এখনো। তবে আমি বুঝতাম দিদার ভাগ্য মায়ের চেয়ে খুব একটা ভালো না।

আমি নিজের মতো পড়ালেখা করতাম, রুমে একা থাকতাম। প্রায় দিদা থাকতো আমার সাথে। মামীই জোর করে পাঠাতো, হয়ত নিজের ছেলের প্রতি উনার বিশ্বাস ছিলো না।

আমি মাঝেমধ্যে বারান্দা থেকে আমার ব্রা খুঁজে পেতাম না। আমার মামাতো বোনের কাছে জিজ্ঞেস করতেই ও তেড়ে আসে।
-তোর কি ধারণা আমি তোর ব্রা পরি লুকিয়ে?
– তা না৷ খুঁজে পাচ্ছি না তাই।

মামী বিরক্ত মুখে খুঁজে এনে দেয়, পরতে মানা করে। আগে ধুয়ে নিতে বলে, প্রথমে বুঝতে না পারলে বুঝতে সময় লাগলো মামী ওটা উনার ছেলে বিত্তের ঘর থেকে আনতো।
তখনো আমি ছেলেদের মাস্টারবেশন সর্ম্পকে জানতাম না। তবে আচ করতাম।

তো সতের বছর বয়েসে আমি প্রথম রেপড হই ছাব্বিশ বছর বয়েসী বিত্তের হাতে। সেদিন পিরিয়ড হওয়ায় কলেজ থেকে দ্রুত ফিরলাম। জানতাম না সবাই দাওয়াতে গিয়েছে। বিত্ত দরজা খুলে এক গাল হেসে। আমি দ্রুত রুমে গিয়ে প্যাড নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যাই।
ফিরে এসে দেখি বিত্ত বিছানায় বসে আছে, রুমের দরজা লক।

আমার হাত পা কাঁপছে। এই ব্যাপার গুলো অনেকের কাছেই শুনি প্রতিবারেই কেঁপে উঠি। তাও শুকনো গলায় বললাম,
-তারপর?

বড় স্বাভাবিক গলায় বলল,
– আর কি, সে আমাকে রেপ করল সে অবস্থায়। মানা করলাম শুনল না। বললাম পিরিয়ড শেষ হলে নিজে আসবো। তাও সে এই সুযোগ কোন মতেই হাত ছাড়া করতে চায় না।

আমি পেন্সিল টা কাগজে বুলাতে বুলাতে বললাম,
– সে কি এখনো বেঁচে আছে?

ও খুব বিরক্ত হলো উঠে যেতে যেতে বলল, আপনাকে আগেই বলেছি, আগে থেকে আমাকে খুনী ভাবলে আমার গল্প শোনাবো না।

-আচ্ছা ঠিক আছে। সরি। বসো তুমি।

শাড়ির পার টা হাতের উপর তুলে দিয়ে আবার বসল। ওর হাল্কা চর্বি জমা সুন্দর পেট টা দেখা যাচ্ছে।

কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, হ্যাঁ ও বেঁচে আছে। তবে অসুস্থ। শেষের দিকে ওর সাথে আমি স্বেচ্চায় করতাম। বেশ মজা পেতে শুরু করেছিলাম।
মামী কীভাবে যেন এক দিন আমাদের হাসির শব্দ শুনে ফেলে, আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়, আমি এক হোস্টেলে উঠি। ওখানে কয়েক জন বান্ধবী মিলে ভালোই কাটছিল সময়, তবে একদিন ওরা সবাই মিলে আমাকে মদ খাওয়ালো। এরপর আমার কিছু মনে নেই। মনে হলো কয়েক জনে আবছা কিছু ছায়া দেখেছিলাম। আর ছুয়ে যাচ্ছে আমার শরীর।
যখন বুঝতে পারলাম কি হচ্ছে, তার আগেই ওরা সবাই রুমে ছেড়ে পালিয়ে গেল।

নিজের শরীরের প্রতি আমার ঘৃণা আসতে শুরু করে। নিজেকেই নিজের শত্রু মনে হতো।

-তারপর?
– তারপর আর কি, এইভাবে প্রতি পদে পদে এইভাবে আমার শরীর নির্যাতিত হত।কলেজের অধ্যাপক কিংবা হোস্টেলের দারোয়ান কেউ যেন একটা সুযোগ মিস করতে চায় না। সব সময় আমি উপভোগ করতে পারতাম না। রাতে ঠিকঠাক ঘুম হত না। ঘুমালেই মনে হত এই বুঝি আবার কেউ এসে চেপে ধরলো। একসময় গিয়ে আমি সারাদিন রাত মিলে এক ফোটাও ঘুমাতাম না। অনেকটা মেডিটেশন করার মতো শুয়ে থাকতাম।

মামীর বোনের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তুহিনের সাথে আমার বিয়ে হয়। সেও আমার রূপেই মুগ্ধ ছিলো। আমার আশেপাশে আর কিছু ওর কিছু যায় আসে না। আমাকে নিয়ে ওর মনে প্রশ্ন আসলেও সে আমাকে প্রশ্ন করে নি আগে কি কি হয়েছে আমার সাথে?

কিংবা সেও ভেবে নিয়েছিলো সুন্দরী মেয়েরা এমনিই।
কখনো সখনো বলার চেষ্টা করতাম ওকে, তবে হু হু করলে ও মগ্ন থাকে আমার শরীরে প্রতিটা ভাজে। উত্তাল হতো, ভূপিকম্প তুলতো আমি তাল মেলালেও আমার বিরক্ত কোনদিন ওর চোখে পড়ে নি। তবে ওর বুকে নিশ্চয়তা পেয়েছিলাম । আবার রাতে ঘুমানো শুরু করি।

– ও কি তোমাকে অত্যাচার করতো ?
– না।
– তাহলে কেন ওকে মিস কর না। আর এইভাবে ওর মৃত্যুতে সবাই কেন তোমাকে দায়ী করছে।

– ওরা কেউ আসল সত্য টা জানাতে চায় না তাই এইটা ছড়িয়েছে। আমি ওদের কে খুন করেছি।
– কিন্তু কেন করছে ওরা?

তুহিনের সাথে বছর খানিক সংসার করেও ও আমাকে বুঝতে পারতো না। আমিও পারতাম না মাঝেমধ্যে অচেনা লাগতো ওর স্পর্শ ঘুমের মধ্যে, ওর গায়ের গন্ধ।

– আলাদা অলাদা লাগতো কি সব গন্ধ?

ও কিছুটা চমকে উঠে, চোখের দৃষ্টি আবারো ফাঁকা, রুমের এক দিকে তাকিয়ে আছে। যেন কাউকে দেখছে ও।
আমি আবার বললাম,
– তুমি বুদ্ধিমতি মেয়ে, তুমি নিশ্চয় ধরতে পেরেছিলে তোমার সাথে শুধু তুহিন থাকতো না। আরো কেউ আসতো যখন তুমি গভীর ঘুমে। তাই তো?

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ও,
– হ্যাঁ আমি ধরতে পেরেছিলাম, ওরা তুহিনের বাকি দুই ভাই ছিলো। মাঝেমধ্যে ওর কোন বন্ধু ও হয়ত-

আমি ছোট খাটো ধাক্কা খেলাম এইবার। মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আমি কুকড়ে উঠছিলাম। সে না কীভাবে সহ্য করে এসেছে?

ও আবার সহজ গলায় বলে,
– এইভাবে কখন কীভাবে আমি এইচ আই ভি পজেটিভ হয়ে গেলাম জানতেও পারলাম না। আর যারা যারা আমার সাথে -,
একটু থামলো ও,
-এইসব করতো, ওরা নিজেরাই বুঝতে পারে নি, ওরা এই রোগের মধ্যে যাচ্ছে।

আমি নিজেও জানতাম না। তবে সবাই যখন একে একে অসুস্থ হতে শুরু করল তখন ওরা বুঝতে পারে। তবে আমার দোষ ও দিতে পারে না। কারণ তখন সবাই জিজ্ঞেস করবে আমার এইডস থাকে ওদের কীভাবে হলো? ওরা নোংরা চেহেরাটা সামনে আসতো। তাই ওরা এইসব চেপে গেল। ঠিকঠাক চিকিৎসা ও করায় নি। তাই একে একে সবাই মারা গেল। আর ওরা আমাকে আসামী বানিয়ে দিলো। এই হচ্ছে ঘটনা।

আমি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম। কাগজে আরো কিছু শব্দ টুকে নিয়ে বললাম,
– তোমার বাচ্চার কথা আনলে না কেন তুমি তোমার এই গল্পে? যাকে তুমি নিজের হাতে খুন করেছিলে।

ও চমকে উঠলো, কারণ ও ভাবছিলো আমিও সব ডাক্তারের মতো ওর বানানো গল্প বিশ্বাস করছিলাম।

-চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here