#মন_প্রাঙ্গনে_এলে_যখন
#লেখনীতেঃ #আলফি_শাহরিন_অর্পা
#পর্ব_৯
একটা বদ্ধ ঘরে গিটার হাতে বসে আছে জয়। রুম ঘুটঘুটে অন্ধকার, কোথা থেকে আলো বাতাস আসার কোনো সম্ভাবনা নেই কেননা জানালার সামনে বড় বড় পর্দা টাঙানো। জয় গিটার বাজানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। তার গিটারের সুর যেনো হারিয়ে গেছে সেই ঘটনার পর, সে চাইলেও আগের মত গিটার বাজাতে পারে না। সে যদি সব কিছু আগে জানার চেষ্টা করতো তাহলে জীবনে এত কিছু হারাতে হত না এটা ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তখনই দরজায় টোকা পড়লো।
–কে?
–ছোট সাহেব! আমি জুই।
–আয়! ভিতরে আয়। কেনো ডেকেছে আমাকে।
–বড় ম্যাডাম আপনেরে খাইতে ডাকসে।
–তুই যা। আমি আসছি।
_______________
–এই মেয়ে!তুমি শুনতে পাওনি আমি কী বলেছি? ধমকে কথাগুলো বললো রুদ্ধ। রুদ্ধের ধমকে কেঁপে উঠলো স্নিগ্ধা। এগিয়ে গেলো আহত ব্যক্তিটির উদ্দেশ্য। লোকটি ফ্লোরে পরে কাতরাচ্ছে, এক চোখে র*ড ঢু*কানো আর সে চোখ দিয়ে আবার রক্ত ঝড়ছে, এই দৃশ্যটি যে কতটা বিভৎস তা সে বলে বুঝাতে পারবে না। তার গা গুলিয়ে আসছে, সে আর পারছে না তাও কাঁপা কাঁপা হাতে র*ডটি ধরলো আর এক নিঃশ্বাসে টান দিলো। র*ডটি তার হাতের মুঠোয় আর চারপাশে হাসির ঝংকার। হাসিটা রুদ্ধের। রুদ্ধের এই ভয়ংকর হাসি স্নিগ্ধার অন্তর পর্যন্ত কাঁপাতে যথেষ্ট।
–মেয়ে! আমি তোমাকে চালাক মনে করেছিলাম কিন্তু তুমি এখন আমার কাছে দুনিয়ার বড় বোকাদের মধ্যে একজন।
–মা..মানে আপনি কী বলছেন? স্নিগ্ধার তুতলামো কথা শুনে রুদ্ধ হাসি থামলো।
–মানে হলো যে লোকটার তুমি এই মাত্র সাহায্য করলে সে আদোও এর মূল্য দিতে পারবে। যে লোক পাঁচ পাঁচটা বছর আমার সাথে কাজ করার পর, আমার নুন খাওয়ার পর আমার সাথেই বেইমানী করেছে। এখন এসব বিষয় বাদ দেই চলো তোমায় নিয়ে কথা বলি, মেয়ে। তুমি যে এত কষ্ট করে নরক থেকে মুক্ত করলে স্বাধীন ভাবে বাঁচার আশায় সেই তোহ গাধামি করে এই কীটের জন্য তা নিজের হাতে শেষ করল।
–মানে।
–গাধা মেয়ে! এখনো বুঝতে পারোনি? টুকটুক করে গেলে যে লোকটির কষ্ট নিরাময় করতে র*ডটি ধরার আগে গ্লাভস তো পরা উচিত ছিলো তোমার। এখন যদি আমি বলি এর চোখে রড তুমি মেরেছ তা তুমি কোনো ভাবেই প্রমাণ করতে পারবে না এটা তুমি করোনি। এখানে দাড়ানো প্রত্যেকটি ব্যক্তি তোমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে আর এই লিস্টে কিন্তু এই জা*নো*য়া*রটাও আছে। রুদ্ধের এসব কথা শুনে স্নিগ্ধার হাতের থেকে রডটা পড়ে গেলো। সে ভয়ে কাঁপতে লাগলো। অতঃপর রুদ্ধ তার দিকে এগিয়ে আসলো আর ওর কানের কাছে মুখ এনে বললো-
— সাবধান মেয়ে! আমি লোক কিন্তু মোটেও সুবিধার না। এই বলে একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো রুদ্ধ আর স্নিগ্ধা ভয়ে ফ্রিজ।
_________________
রাগে আহনাফের মাথা ফেটে যাচ্ছে। তার এত শখের গাড়িতে কেউ মাটি লেপটে দিয়ে গেছে। আহনাফ মনে মনে পণ করেছে সে যদি জানতে পারে কে করছে তার হাল বেহাল করে ছাড়বে।
আহনাফ স্কুলের কম্পিউটার রুমে এখন দাড়িয়ে আছে। সেই ব্যক্তিকে খুজতে যেয়ে সে জানতে পারলো স্কুলের এই সাইডে একটা সিসিটিভি ক্যামেরা আছে যার ব্যাপারে টিচাররা ছাড়া কেউ জানত না। আহনাফ এই ব্যাপারটা জানার পর খুশি হয়ে গেল মেয়েটিকে শাস্তি দিতে পারবে বলে।
–স্যার! আপনি ফুটেজ পেয়ে গেছি।
–প্লে করো। অতঃপর আহনাফ ভালো করে ফুটেজটা দেখতে লাগলো। ফুটেজটা দেখে আহনাফ মুখে এক রহস্যময় হাসি ফুটে উঠলো।
অতঃপর বাহিরে সেখান থেকে চলে যাওয়ার আগে গার্ডকে উদ্দেশ্য করে বললো-
–এই ফুটেজের ব্যাপারে যেনো কেউ না জানে। [আর তোমাকে আমার হাত থেকে কে বাঁচাবে এখন মিস উড়ান চণ্ডী আমিও তাই দেখবো।] বিরবির করে কথাগুলো আওড়াল আহনাফ।
চলবে….