#সন্ধি_হৃদয়ে_হৃদয়ে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব____১১
আয়ুশী ফ্যালফ্যাল নয়নে চেয়ে আছে বিছানার উপর বসে থাকা শ্রেয়ার দিক। মনে হচ্ছে সে কোনো ভূত দেখছে। মস্তিষ্ক ফাঁকা। বুদ্ধি লোপ পেয়েছে। আকস্মিক পরিচিত মুখ দেখে হতবিহ্বল সে। টালমাটাল পায়ে শ্রেয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বললো,
‘ তুমি তো শ্রেয়া ভাবি তাই না?’
‘ হুম।’- নিঃসংকোচ উত্তর শ্রেয়ার।
‘ কোথায় ছিলে এত বছর?বিয়ের পরের দিন সকালে চলে গেলে কেন ভাবি?’
শ্রেয়া আঁড়চোখে প্রিয়ুর মুখের দিকে তাকাল। কোনো হেলদোল নেই তার। যেন এমন কান্ড,কথা বার্তা শুনে সে মোটেও অবাক হচ্ছে না। উল্টো চমকাচ্ছে শ্রেয়া স্বয়ং। প্রিয়ু কি সব জানে?নয়ত এত আয়েশি ভঙ্গিতে মেয়েটা গালে হাত দিয়ে ওদের কথা শুনছে কেন?আয়ুশী শ্রেয়ার সামনে বসল। বললো,
‘ তুমি ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলে ভাবি?ভাইয়া সেদিন মে’রেছিল বলে?জানো এখন ভাইয়া সুস্থ হয়ে গিয়েছে কয়েক মাস হবে। কিন্তু! ‘
মন খারাপ করে কথা বলা থামিয়ে দেয় আয়ুশী। প্রিয়ু ওর নিশ্চুপ মুখ দেখে গলা উঁচিয়ে প্রশ্ন করে,
‘ কিন্তু কি আয়ুশী?’
আয়ুশী মলিন মুখে এক পলক চাইল। নিষ্প্রভ স্বরে বললো,
‘ ভাইয়ার পা’গল হওয়ার পরের কোনো মুহুর্ত মনে নেই। ভাইয়া তো এটাও জানে না সে বিবাহিত। চাচি চায় না ভাবির সম্পর্কে, বিয়ের সম্পর্কে ভাইয়া জানুক। কারণ ভাবি ভাইয়াকে পা’গল দেখে পালিয়ে গিয়েছে। এতে বেশ কষ্ট পেয়েছে চাচি। সবার তিক্ত কথায় কেঁদেছে অনেক। আমাদের বুঝ হওয়ার পর চাচিকে কখনও এত কাঁদতে দেখি নি। এমনকি বড় ভাইয়া বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় টাতেও না। একমাত্র সবাই যখন তূর্য ভাইয়াকে পাগল বলে নানান কটুক্তি করছিল চাচি সহ্য করতে পারে নি। তুমি কি সত্যিই ভাইয়ার পাগল রূপ দেখে পালিয়েছ ভাবি?’
শ্রেয়া বলার জন্য কিছু খুঁজে পাচ্ছে না। সবাই ঘুরেফিরে তাকে কেন এই একটা-ই প্রশ্ন করে?লজ্জা লাগে ওর। ভীষণ পা/ষাণ মনে হয় নিজেকে। কি করে পারল সেদিন চৌধুরী বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে?না আসলে আজকের গল্পটা হয়ত সুন্দর হতো,ভিন্ন হতো। প্রিয়ু পরিস্থিতি সামলাতে বলে উঠল,
‘ তোহাশ ভাইয়ের কি খবর?কথা হয় তোমাদের সাথে?’
‘ ভাইয়ার সাথে হয়। আমি কথা বলেছিলাম দু’একবার। ভাইয়ার একটা মেয়ে হয়েছে। আয়ুশ ভাইয়া বলে নি তোমাকে?’
‘ না। পাঁচ টা বছর কেটে গেল। বাংলাদেশ আসবেন না আর?’
‘ উঁহু! যতদিন না চাচি আরিয়ানা ভাবির প্রাপ্য সম্মান টুকু দিয়ে না আনেন ভাইয়াও চৌধুরী বাড়িতে পা রাখতে নারাজ। ‘
ওদের কথোপকথনের মাধ্যমে শ্রেয়া ঢের বুঝতে পারল তূর্যর বড় ভাই আছে। হয়ত কিছু মনোমালিন্যের দরুন বাড়ি থেকে দূরে থাকেন আলাদা বউ সন্তান নিয়ে।
শ্রেয়া ভেবেছিল আজ রাতেই ও চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাবে। কারণ রাত নাগাদ ডিভোর্স পেপার রেডি হয়ে যাবে বলে জানায় মেহরিমা। সে ডিভোর্স দিতে চায় না,কোনোক্রমেই নয়। তাই এখানে থেকে মেহরিমার চক্ষুশূল হওয়ার চেয়ে চলে যাওয়াই উত্তম মনে হলো। রুমে এসে প্রিয়ুকে অতীতের সমস্ত অধ্যায় খুলে বলার চেষ্টা করে। তখনই আচমকা আগমন ঘটে আয়ুশীর। ভয় হচ্ছে শ্রেয়ার প্রচন্ড। যদি এক এক করে কথার মাধ্যমে তূর্যর কর্ণকুহরে পৌঁছায় ও তূর্যর বউ তাহলে লোকটা সবকিছু শুনে নিশ্চিত ওকে ঘৃ*ণা করবে। বলবে নিজের স্বার্থ বুঝে পালিয়েছে। চাইলেও অতীত টেনে নিজের ভয়গুলো স্পষ্ট প্রকাশ করার সুযোগ টা মিলবে না। সত্যি বলতে ও স্বার্থপরের মতোই কাজ করেছে। পারবে না ও স্বামীর ঘৃ*ণা সহ্য করতে। বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। প্রিয়ু যেহেতু শুরু থেকেই সব জানে আর চট্টগ্রামে ওর সাথে দেখা,আশ্রয় কোনোকিছুই কাকতালীয় নয়, তাই শ্রেয়া আর বর্ণনা কিংবা বিশ্লেষণ করার কিছু পেল না। এ মুহুর্তে ওর এই ইট পাথরের শহর ছাড়তে হবে। নিজের জীবন শুভ্র বলে অন্যের টা কি রঙিন হওয়া দোষের? একদমই না। তূর্য স্যারের জীবনে রংধনু আসুক,শুভ্র শ্রেয়সী বিনা।
শ্রেয়া আলমারি খুলে সঙ্গে আনা দু সেট জামা গোছাতে শুরু করল। আয়ুশী, প্রিয়ু স্তব্ধ হয়ে গেল ক্ষণিকের জন্য। পরক্ষণেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে প্রিয়ু উঠে আসে। কন্ঠে প্রবল অস্থিরতা,
‘ কি করছিস তুই শ্রেয়া?’
শ্রেয়া সূক্ষ্ম নিঃশ্বাস ছাড়ল। চোখে জল টলমল করছে ওর। আঁখি বুঁজলেই বুঝি গড়িয়ে পড়বে অশ্রু কণারা। বাহ্যিকভাবে শক্ত থাকলেও স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা ওর হৃদয় ক্ষত/বিক্ষত করে দিচ্ছে। রক্তক্ষরণ হচ্ছে অবলীলায়। অভ্যন্তর যদি এই মেদিনীর নি*র্দয়,কঠোর মানুষগুলো দেখতে পেত তাহলে চক্ষে বিঁধত কতটা পুড়ছে হৃদপিণ্ড। কত হাহাকার ধ্বনি তোলছে প্রিয় মানুষকে পাওয়ার আশায়,মিলনের তৃষ্ণায়।
ওষ্ঠদ্বয় চেপে শ্রেয়া কান্না সংবরণ করে নিল। কাঠ কাঠ কন্ঠে বলে উঠল,
‘ আমি ফিরে যাবো প্রিয়ু। এভাবে কতদিন বন্ধ করবো কোচিং সেন্টার? তোর সামনের সপ্তাহে বিয়ে। হাতে আরও তিনটে দিন।এতদিন এখানে থাকলে আমার বাকি জীবনটা কিভাবে কাটাব আমি?তুই তো শশুড় বাড়ি চলে যাবি কিন্তু আমার জীবনটা আমার নিজের হাতে সামলাতে হবে। আমার কোনো নিড়,আপনজন নেই। আমার ভরসা,আশ্রয়স্থল সবকিছুই আমি। একদম আটকাবি না আমাকে। তোর বিয়ের দিন আমাকে পাবি চোখের সামনে। আজ আমাকে আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে দে। ‘
প্রিয়ু সোজাসাপ্টা প্রশ্ন করলো,
‘ শশুড় বাড়ি থাকতে,স্বামী থাকতে তুই আপনজন নেই বলে অস্বীকার করছিস?’
‘ আপনজন থাকলেই কি সবাই আপন হয়ে যায়?’
আলতো হেসে পাল্টা প্রশ্ন করে শ্রেয়া। প্রিয়ুর উত্তরের ধৈর্য্য না ধরে পুনরায় বলে উঠল,
‘ ফুপু,খালারা এই শহরের বাসিন্দা। তাদের রক্ত আমার দেহে বহমান। তবুও কি তারা আপনজন হতে পেরেছে? আর তূর্য স্যার তো জানেই না আমি ওনার বউ। কোন ভিত্তিতে খুঁটি গাড়ব আমি?যেখানে ভিটেমাটি-ই নরম। আসি। তিন দিন পর ফিরে আসব। তবে এতদিন এখানে দম হাতে নিয়ে এক সেকেন্ডও থাকা সম্ভব না আমার পক্ষে। মন খারাপ করিস না৷ আমার তরফ হতে আয়ুশ ভাইয়াকে এত বছর আড়ালে সাহায্য করার জন্য ছোটখাটো একটা ধন্যবাদ জানিয়ে দিস। বিশাল,বড় আকারের দিতে পারলাম না৷ কেননা সুখের ন্যায় আমার শব্দভাণ্ডারেও শব্দের অভাব। ‘
দিনের আলো ফুরিয়ে প্রকৃতিতে সাঁঝ নেমে এসেছে। অন্তরিক্ষে থোকা থোকা কৃষ্ণচূড়ার ন্যায় লাল রক্ত জমাট বেঁধেছে যেন। জানান দিচ্ছে ঘরে ঘরে রোশনাই জ্বালানোর সময় হয়েছে। রাশেদা,প্রিয়ুর দাদি,প্রিয়ুর বাবা সবার কাছ থেকে এক প্রকার জোর করে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এসেছে শ্রেয়া। কারণস্বরূপ দেখিয়েছে আগামীকাল খুব জরুরি একটা কাজ আছে কোচিং সেন্টারে। না গেলে চাকরি টা আর টিকবে না। প্রিয়ুর বাবা তো বলেই বসলেন আমার মেয়েকে আমি পালব,তোর কেন চাকরি করতে হবে?এত একরোখা, জেদি কেন তুই? নিষ্ঠুর ভূমিতে এত ভালো মানুষগুলোর নাগাল পেলে শ্রেয়ার ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরে বলতে-‘ আমার বাবা মা’র জীবনটা কেন এত অগোছালো ছিল?কেন সুন্দর পথের পথিক আমি হতে পারলাম না?আটকাবেন না আমাকে স্বাবলম্বী হতে। পরনির্ভরশীল হওয়া মানে যে নিজের হাতে নিজেকে খু*ন করার বন্দোবস্ত। ‘
প্রিয়ুসহ আসার জন্য জেদ ধরল,কিন্তু বিয়ে নামক নিয়মনীতিতে কড়া বাঁধনে বাঁধা পড়ল সে। তবুও সকল বাঁধা অতিক্রম করে আসতে উদ্যত হয়। শ্রেয়া কোনোরকমে বুঝিয়ে, মিনতি করে মেয়েটাকে রেখে আসে। ও চায় না ওর মতোন করে প্রিয়ুও চৌধুরী পরিবারের সদস্যদের চোখে তিক্ত হয়ে উঠুক। বলে তো গিয়েছে প্রিয়ুকে আবারও আসবে কিন্তু এই চেনা শহরে ফিরে আসার ইচ্ছেটা শ্রেয়ার প্রায় নিভু নিভু।
________________
আজ বাস ছাড়তে দুই ঘন্টা দেরি হলো। কোনো একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল বাসে। শ্রেয়া আলসেমি করে আর অন্য বাস স্ট্যান্ডে যায় নি। এখন বাস ছেড়ে দেবার পালা। ঘাড়’ত্যাড়া একটা অভ্যেস আছে ওর। যেই অভ্যেস কে অনভ্যাসে পরিণত করতে গিয়ে শ্রেয়া প্রতিবারই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই একে ঘাড়/ত্যাড়া বললে ভুল হবে না এবং তা হলো বাসে উঠলেই মাথা ব্যাথার যন্ত্রণা। সেই কারণবশত শ্রেয়া বাস যখন ছেড়ে দেওয়ার পালা তখনই উঠলো। বসল জানালার ধারের সিটে। দৃষ্টি বাহিরে নিবদ্ধ করতেই পাশের সিটে কারো উপস্থিতি টের পায়। চোখ ফিরিয়ে পাশে ফেলতেই চোখ ছানাবড়া ওর। দৃষ্টি স্থবির মানুষ টার চেহারার দিকে। বাসের অল্প স্বল্প আলোতে স্পষ্ট চেহারায় গম্ভীর ভাব টুকু। শ্রেয়ার মুখ থেকে অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে এলো,
‘ স্যার আপনি?’
তূর্য মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে গম্ভীর স্বরে বললো,
‘ কেন বাসে থাকা নিষিদ্ধ? ‘
‘ না। মানে আপনি?চট্টগ্রাম যাবেন?’
‘ জানিনা। তুমি ঠিক করে দাও আমার গন্তব্য। ‘
তূর্যর কন্ঠে বিরক্তভাব। শ্রেয়ার মনে হচ্ছে সে কথা বলতে ইচ্ছুক না। কিন্তু তূর্য এখানে কেন?নিজেদের গাড়ি থাকতে বাসে?হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে চলেছে শ্রেয়ার। চমক চেপে বসে রইল সিটে। পারে না মেয়েটা বাস ভেঙে বাহিরে চলে যায়। তূর্যর দেহ হতে ভেসে আসা পারফিউমের ঘ্রাণ ওকে ক্রমে ক্রমে মাতাল করে তুলছে। কেমন নেশা ধরানো। মাথার যন্ত্রণার চেয়ে হৃদয়ের যন্ত্রণা দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। স্পন্দন ক্রিয়া অস্বাভাবিক , নিয়ন্ত্রণহীন। আগে তো এমন হতো না! তূর্যর এক হাত কিছু সময় পর পর ওর এক হাত ছুঁয়ে দিচ্ছে। আচ্ছা বাসের সিট কি ছোট বানালো?নয়ত না চাইতেও কেন স্পর্শ লাগছে বারংবার!এভাবে চলতে থাকলে হয়ত হার্ট অ্যাটাক হতে দেরি নেই শ্রেয়ার।
তূর্য মোবাইল টা পকেটে পুরে সিটে মাথা এলিয়ে দিল। সেই অবস্থায় ঘাড় বাঁকিয়ে শ্রেয়ার পানে তাকালো সে। নিমিষেই থতমত খেয়ে গেল শ্রেয়া। ও তূর্যর দিকেই চেয়েছিল পলকহীন। কি সুন্দর বাহিরের আলো এসে ঠিকরে পড়ছিল লোকটার ফর্সা চেহারায়। খোঁচা খোঁচা দাঁড়িগুলো একটুখানি ছুঁয়ে দিতে পারলে শান্তি মিলত। যদি পারত তবে বলত,’আপনার আর আমার সম্পর্কটা পবিত্র তবুও মাঝে বিশাল দূরত্ব। ‘
শ্রেয়া চোখ সরিয়ে নিতেই তূর্য ফিচেল হাসে। লহু স্বরে বললো,
‘ দেখার পালা চুকিয়ে ফেলেছ?’
শ্রেয়ার বক্ষস্থল থরথর করে কাঁপল। লজ্জায় নুইয়ে যাওয়ার উপক্রম। নিজের চোখ জোড়া সংযত করতে পারল না কেন ও?স্যার কি ভাবছেন?এমনিতেই লোকটা ওকে কটুবাক্য শোনানোর একটা সুযোগও হাতছাড়া করে না। ভাবনায় মগ্ন হতেই তূর্যর ভরাট কন্ঠস্বর শুনতে পেল। ঘাড় বাঁকিয়ে তাকালো তৎক্ষনাৎ।
‘ মুখ মলিন দেখাচ্ছে কেন?’
জবাবের প্রতীক্ষায় চেয়ে তূর্য। তুখোড় দৃষ্টি তাক করে রেখেছে। চোখের কালো কুচকুচে মণিতে শ্রেয়ার অস্পষ্ট মুখশ্রী ভেসে আছে।
এক এক করে পাঁচ মিনিট পেরিয়ে যায় তবুও উত্তর পায় না। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল,
‘ চুপ থাকার বাজে অভ্যাস ত্যাগ না করলে চিরতরে বোবা বানিয়ে দিব। বেয়া-দব মেয়ে। সবসময় তর্কের বেলায় এক পায়ে খাঁড়া থাকে। ভালো কিছু জিজ্ঞেস করলে মনে হয় কথা বলতে কষ্ট হয়। যত্তসব। ‘
রাগান্বিত কন্ঠে কথাগুলো বলে তূর্য সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। চোখ বুঁজে পুনর্বার বললো,
‘ মাথা ব্যাথা করছে? ‘
এবার মুখ খুলে শ্রেয়া। ছোট্ট একটা শব্দ উচ্চারণ করলো,
‘ জ্বি। ‘
তূর্য সামনে গিয়ে বাস ড্রাইভারের সঙ্গে কি যেন বললো কতক্ষণ। শ্রেয়া মাথা উঁচিয়ে দেখার চেষ্টা করলো। মাঝখানে হওয়ায় কথার আওয়াজ এখান পর্যন্ত আসছে না। তারপর প্রায় আধঘন্টা পরে কোনো এক বাজারে বাস থামাতেই তূর্য নেমে যায়। বিস্মিত হলো শ্রেয়া। সে কি চলে গেল?আবার বাসও ছাড়ছে না। রাত তেমন একটা হয় নি। বাজারের সবগুলো দোকান খোলা। তূর্য ফিরে এলো প্রায় মিনিট চারেক পর। বাস ড্রাইভারের সাথে আবারও সংক্ষিপ্ত কথোপকথন সেড়ে ওর পাশে এসে বসল। একটা পানির বোতল ও ট্যাবলেট বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
‘ খেয়ে নাও। মাথা ব্যাথা কমে যাবে। ‘
শ্রেয়ার পুরো দুনিয়া থমকে গেল মুহুর্তেই। চলন্ত বাসও যেন থেমে গেছে। তূর্য ওর জন্য বাস থামিয়ে ওষুধ এনেছে? কেন?এতো দরদ?এত যত্ন?পরক্ষণেই ওর মনগড়া সমস্ত ভুল প্রশ্নের জবাবটা সোজাসাপ্টা তূর্যই দিয়ে দেয়। নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললো,
‘ পানির তেষ্টা পেয়েছিল। তোমার মাথা ব্যাথা। তাই মানবতার খাতিরে ওষুধও নিয়ে এলাম। ভুল কিছু আবার মনে পুষে রেখো না। আমি স্যার মানুষ একটা মায়া কাজ করেছে ছাত্রীর প্রতি। বুঝলে?’
#চলবে,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এত বড় করে পর্ব দেই তবুও ছোট বলেন আপনারা।? সবসময় ১৫০০ শব্দের উপরে দেই।)