মিশে আছো মুগ্ধতায় -5

0
1032

#মিশে_আছো_মুগ্ধতায়
#লেখিকাঃতানিশা_আহিয়াদ_তিশা
#পর্বঃ5

ক্লাসের এক কোনের বেঞ্চে বসে আছে মায়া।চুপচাপ বসে বসে বইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। ‘ও’ আর দিশা এখানে অর্নাস থার্ড ইয়ারে এসে ভর্তি হয়েছে।কিন্তু ক্লাসে এতোজন শিক্ষার্থী থাকার পরেও এখন পযর্ন্ত ওদের কোনো ফ্রেন্ড হয়নি।ফ্রেন্ড হওয়া তো দূরের কথা অন‍্যান‍্য শিক্ষার্থীরা কেউ মায়া আর দিশার সাথে ঠিক ভাবে কথাও বলে না।কারন আহির আর মিহির সবাইকে বলে দিয়েছে যাতে কেউ ওদের সাথে কথা না বলে।তাই আহির আর মিহিরের কথার অমান‍্য করার সাহস কেউই পায়নি।

এখন অফ পিরিয়ড তাই মায়া বইটা বন্ধ করে ক্লাসের বাইরে যাওয়ার জন‍্যে পা বাড়ালো।দিশা অনেক আগেই ক‍্যান্টিনে চলে গেছে।মায়া ক্লাস থেকে বের হতে যাবে ঠিক তখনই প্রিন্সিপাল সহ কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক হুরমুর করে ক্লাস রুমে প্রবেশ করলো।ওদের দেখে মায়া রুম থেকে বের না হয়ে এক সাইডে দাড়ালো।আচমকা প্রিন্সিপাল মায়ার সামনে এসে ওনার হাতে থাকা কাগজ গুলো ওর মুখের উপর ছুড়ে মেরে রাগি কন্ঠে বললো

“এসব কি মায়া?তোমাকে দেখে তো যথেষ্ট ভদ্র একটা মেয়ে ভেবেছিলাম।কিন্তু এগুলো কোন ধরনের অসভ‍্যতা?”

মায়া হতবম্ভ হয়ে প্রিন্সিপালের দিকে তাকিয়ে আছে।মায়াকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে প্রিন্সিপাল আবারও ধমক দিয়ে বললো

“লজ্জা করেনা নিজের বাবার বয়সি একজন টিচারকে এই ধরনের বাজে কথা বলতে?”

মায়া এখনো বোকার মতো প্রিন্সিপালের দিকেই তাকিয়ে আছে।ক্লাসের বাইরে অনেক ছেলে মেয়েরা এসে ভিড় করেছে।সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে মায়া আর প্রিন্সিপাল স‍্যারের দিকে তাকিয়ে আছে।মায়া এক পলক সবার দিকে তাকিয়ে প্রিন্সিপাল যেই কাগজ গুলো ওর মুখে ছুড়ে মেরেছিলো সেই কাগজ গুলো নিচ থেকে তুললো।এগুলো ওর এ‍্যাসাইনমেন্টের পেপার।গতকালই ক্লাস টিচারের কাছে এগুলো জমা দিয়েছে।

কৌতুহল নিয়ে মায়া পেপার গুলো উল্টেপাল্টে দেখতেই ওর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। এ‍্যাসাইনমেন্ট পেপারের প্রত‍্যেকটা পৃষ্ঠায় ওর লেখা গুলোর নিচে যে ফাকা জায়গাটা আছে তাতে উল্টোপাল্টা কথা লেখা। যেমন:: আই লাভ ইউ স‍্যার, আই ওয়ান্ট টু হাগ ইউ স‍্যার,আই ওয়ান্ট টু কিস ইউ স‍্য‍ার,ইউ আর মাই ফাস্ট লাভ,আর সবার লাস্ট পিষ্ঠায় ওর ফোন নম্বর দেওয়া।মায়া লেখা গুলো দেখে দু-কদম পিছিয়ে গেলো। ওর চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ে যাচ্ছে। মায়া কোনো রকম নিজেকে সামলে নিয়ে কান্নাভেজা কন্ঠে বললো

“স‍্যার এই লেখা গুলো আমার না বিশ্বাস করুন। আমি এগুলো লেখিনি।”

মায়ার কথা শুনে প্রিন্সিপাল হুংকার দিয়ে বললো

“অসভ‍্য মেয়ে একে তো ভুল করেছো তার উপর মিথ‍্যা কথা বলছো? তোমার এ‍্যাসাইনমেন্ট পেপারের উপর তুমি লেখনি তো ভুতে এসে লিখে দিয়ে গেছে? ফাজলামি করার আর জায়গা পাও না?”

মায়া এবার আর সহ‍্য করতে না পেরে ফুপিয়ে কেদে উঠলো। প্রিন্সিপাল কড়া কন্ঠে আবারও বললেন

“আমি লাস্ট ওয়ানিং দিচ্ছি মায়া।ভবিষ্যতে যদি কখনো কোনো টিচারের সাথে এই ধরনের বেয়াদবি করো তাহলে তোমাকে টিসি দিয়ে ভার্সিটি থেকে বের করে দিবো। ভালো চাও তো নিজেকে সুধরে নাও। নাহলে তোমার মতো নোংরা স্টুডেন্টের আমার ভার্সিটিতে কোনো জায়গা নেই।”

কথাটা বলে প্রিন্সিপাল হনহন করে ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে গেলো। ওনার পিছনে পিছনে বাকি টিচারেরাও বের হয়ে গেলো।মায়া এখনো মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলে যাচ্ছে। ‘ও’ বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে সবাই ওকে নিয়েই কানাঘুষা করছে। ‘ও’ আর এক মূহুর্তও ওখানে না দাড়িয়ে হাতে থাকা কাগজ গুলো নিয়ে দৌড়ে ক্লাস রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।
___________________

আহির,মিহির আর ওর বন্ধুরা ভার্সিটি ক‍্যাম্পাসের এক পাশের গাছের নিচে দাড়িয়ে দাড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো। কোথা থেকে মায়া দূরে এসে একদম মিহিরের মুখোমুখি দাড়ালো। আচৎমকা এভাবে দৌড়ে আসায় মিহির,আহির সহ ওদের সব বন্ধুরা বেশ অবাক হলো। মায়া গিয়ে মিহিরের এক হাত ধরে ওর হাতের উপর এ‍্যাসাইনমেন্টের কাগজ গুলো দিয়ে কান্নারতো স্বরে বললো

“এইবার খুশী হয়েছেন তো আপনারা? আমাকে সবার সামনে এতোটা খারাপ বানাতে পেরে নিশ্চয়ই আপনাদের ভিষন আনন্দ লাগছে?”

মিহির মায়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ‘ও’ এই প্রথম মায়াকে এভাবে কাদতে দেখছে। মেয়েটা কান্নার জন‍্যে ঠিক ভাবে কথা অবদি বলতে পারছে না। মায়া মিহিরের হাত ছেড়ে দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো

“আমাকে কষ্ট দিয়ে আপনারা ভিষন আনন্দ পান তাইনা? ওকে আপনারা যা খুশী করতে পারেন,আমি আপনাদের কিচ্ছু বলবো না। শুধু একটা কথা মনে রাখবেন, যেদিন সত‍্যিটা সবার সামনে চলে আসবে।সেদিন আমাকে দেওয়া কষ্ট গুলো পাল্টা আঘাত হয়ে আপনাদের কাছে ফিরে আসবে।অনুশোচনার তীরে আপনাদেরকে ক্ষত বিক্ষত করে দিবে। সেদিন পারবেন তো নিজেদের ক্ষমা করতে?”

কথাটা বলে মায়া এক দ‍ৌড়ে সোজা ভার্সিটির গেট থেকে বেড়িয়ে গেলো।মিহির এখনো মায়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।কেনো যেনো ওর চোখের কোনেও পানি জমেছে।এই মেয়েটার চোখে পানি দেখলে মিহিরের ভিষন কষ্ট হয়।কিন্তু মায়ার কথা গুলো ভিষন ভাবে ভাবচ্ছে ওকে। কি বলে গেলো মেয়েটা?কিসের সত‍্যি সবার সামনে আসার কথা বলে গেলো?
_______________________
রাস্তার পাশ দিয়ে চোখের পানি মুচ্ছে আর হাটছে মায়া। হেটে হেটে কোথায় যাচ্ছে সেটা নিজেও জানে না। ভার্সিটি থেকে বের হয়েছে প্রায় এক ঘন্টা হয়ে গেছে। সাথে করে ফোন,টাকা কিছুই আনেনি। সব কিছু ক্লাসেই রয়ে গেছে। তখন ওসব আনার কথা ওর মাথায়ই আসেনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ওগুলো না এনে কতো বড় একটা ভুল করেছে। একে তো এখানের রাস্তা ঘাট কিছুই চিনে না।তার উপরে সাথে টাকা বা ফোন কিছুই নেই। এখন যদি রাস্তা ঘাটে বাজে কিছু একটা হয়ে যায় তখন ওর আর কিছুই করার থাকবে না।

মায়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উল্টো পথে হাটা শুরু করলো। উদ্দ‍্যেশ‍্য আবার ভার্সিটিতে ফিরে যাওয়া। মায়া হেটে কিছুদূর আসতেই হঠাৎ ওর চোখ গেলো একটা কুকুর ছানার উপর। কুকুর ছানাটা রাস্তার মাঝখানে গাড়ির ফাকে ফাকে লাফালাফি করছে। কুকুর ছানাটার গায়ের পাশ দিয়ে গাড়ি গুলো চলে যাচ্ছে। মায়া বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে একটু এদিক ওদিক হলেই কুকুর ছানাটা অ‍্যাক্সিডেন্ট করবে। মায়া আর কোনো কিছু না ভেবেই দ্রুত পায়ে রাস্তার মাঝখানে গিয়ে কুকুর ছানাটাকে কোলে নিলো।কিন্তু ওটাকে বাচাতে গিয়ে নিজেই ফেশে গেলো। ওর চারপাশ দিয়ে এতো স্পিডে গাড়িগুলো চলে যাচ্ছে যে ‘ও’ কোথা থেকে রাস্তার সাইডে আসবে বুঝতেই পারছে না। আসার সময় কোনো রকম আসতে পারলেও যাওয়ার রাস্তা খুজে পাচ্ছে না।

মায়া কিছুক্ষন ওভাবেই সোজা হয়ে দাড়িয়ে থেকে আর কোনো উপায় না পেয়ে রাস্তার মাঝখান থেকে জোড়ে দৌড় মারলো। দৌড়ে রাস্তার সাইডে আসতেই যাচ্ছিলো তখনই হঠাৎ করে হোচট খেয়ে রাস্তার মধ‍্যেই পড়ে গেলো। আর কুকুরের বাচ্চাটা হাত থেকে ছুটে রাস্তার সাইডে গিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেলো। মায়া এখনো উপুর হয়ে রাস্তার মধ‍্যেই পড়ে আছে। উঠার চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না। ওকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখেও কেউ ওকে হেল্প করার জন‍্যে এগিয়ে আসছে না। সবাই যার যার মতো ব‍্যাস্ততা দেখিয়ে নিজেদের গন্তব্যে চলে যাচ্ছে।

আচৎমকা একটা গাড়ি এসে হুট করেই মায়ার সামনে ব্রেক করলো। গাড়িটা এভাবে হঠাৎ করে এসে ব্রেক করায় মায়া চমকে উঠলো। ভেবেছিলো এক্ষুনি এই গাড়িটার নিচে ‘ও’ চাপা পড়বে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বেচে গেছে।মায়া চোখ তুলে সামনে তাকাতেই দেখলো গাড়ির পিছনের সিট থেকে কেউ একটা বের হচ্ছে। ব‍্যাক্তিটা গাড়ি থেকে বের হয়ে একটু সামনে এগিয়ে আসতেই মায়া ব‍্যাক্তিটার চেহারা দেখে ভিষন অবাক হলো। ব‍্যাক্তিটা আর কেউ না আহান।

আহান দ্রুত মায়ার দিকে এগিয়ে এসে হাটু গেরে ওর সামনে বসে ব‍্যাস্ত গলায় বললো

“আপনি এখানে কি করছেন?”

মায়া কোনো রকম নাক মুখ কুচকে বললো

“একটা কুকুরের ছানা রাস্তার মাঝখানে দৌড়াদৌড়ি করছিলো।তাই ওটাকে বাচাতে এসেছিলাম। কিন্তু…..”

মায়াকে পুরো কথাটা শেষ করতে না দিয়ে আহান দাতে দাত চেপে বললো

“কিন্ত ওটাকে বাচাতে এসে আপনি নিজেই উল্টি খেয়ে পড়ে গেলেন তাইতো?”

মায়া কিছু না বলে অসহায় দৃষ্টিতে আহানের দিকে তাকিয়ে আছে। আহান কিছুক্ষন রাগি দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে হুট করে ওকে পাজা কোলে তুলে নিলো। তারপর চোখ দিয়ে ঈশারা করে ড্রাইবারকে গাড়ির দরজাটা খুলে দিতে বললো। ড্রাইবার দরজাটা খুলে দিতেই আহান মায়াকে গাড়ির মধ‍্যে বসিয়ে দিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে পড়লো।ওরা গাড়িতে উঠে বসতেই ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ড দিলো।
________________________
আহানের কেবিনের সোফার উপর বসে আছে মায়া। মায়ার এক হাতের কুনুই আর পায়ের গোড়ালির কাছ থেকে অনেকটা ছিলে গিয়ে ব্লিডিং হচ্ছে। পায়ের,হাতের অন‍্য জায়গা গুলোতে হালকা আঘাত লাগলেও তেমন একটা কেটে চিরে যায়নি।

আহান তখন রাস্তা থেকে মায়াকে সোজা ওর অফিসে নিয়ে এসেছে। অফিসে এসে আহান কোলে করে নিজের কেবিনে নিয়ে এসে সোফার উপর বসিয়ে দিয়ে তারপর কেবিনের বাইরে কোথাও একটা চলে গেছে।

মায়া তাকিয়ে তাকিয়ে ওর কাটা জায়গা গুলো দেখছে। ওর হাতে পায়ে অসম্ভব জ্বালা করছে। মাথার মধ‍্যেও কেমন ঝিমঝিম করছে। মায়া সোফার সাথে হেলান দিয়ে চোখ জোড়া বন্ধ করে রইলো। ভিষন দূর্বল লাগছে ওর। মনে হচ্ছে এখনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবে।

দরজা খোলার শব্দে মায়া চোখ খুলে সামনে তাকালো।দেখলো আহান ফাষ্ট এইড বক্স হাতে নিয়ে কেবিনের ভিতরে ঢুকছে। আহানকে দেখে মায়া খানিকটা নড়েচড়ে বসলো। আহান এসে মায়ার পাশে বসে ওর হাতের ছিলে যাওয়া যায়গাটা ব‍্যান্ডেজ করে দিতে দিতে গম্ভীর কন্ঠে জিঙ্গেস করলো

“ক্লাস না করে দুপুরের সময়ে রাস্তায় কি করছিলেন?”

মায়া কিছু না বলে চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে। আহান আবারও বললো

“আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করেছি মিস মায়া। প্রশ্নের অ‍্যান্সার না দিয়ে চুপ করে বসে আছেন কেনো?”

মায়া মিনমিন করে বললো

“ক্লাস করতে ভালো লাগছিলো না।তাই একটু হাটতে বেড়িয়ে ছিলাম।কিন্তু হাটতে হাটতে কখন যে এতোটা দূরে চলে এসেছি বুঝতেই পাড়িনি।”

মায়ার কথা শুনে আহান ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকালো। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ‘ও’ মায়ার কথাটা একদমই বিশ্বাস করেনি। মায়া চুপচাপ অন‍্যদিকে তাকিয়ে আছে। আহান মায়ার হাতে ব‍্যান্ডেজটা করে উঠে দাড়িয়ে মায়ার সামনে গিয়ে হাটু গেড়ে বসে পড়লো। আহানকে এভাবে পায়ের কাছে বসতে দেখে মায়া চমকে উঠে বললো

“আরে কি করছেন?পায়ের কাছে বসছেন কেনো?”

কথাটা বলে মায়া আহানের সামনে থেকে ওর পা জোড়া খানিকটা দূরে সরিয়ে ফেললো। মায়ার এমন কান্ডে আহান বিরক্তির স্বরে বললো

“চুপচাপ নিজের পা টা এদিকে নিয়ে আসুন মিস মায়া। একদম আমাকে রাগাবেন না। এখন আপনার ন‍্যাকামো দেখার সময় একদম আমার হাতে নেই।”

আহানের কথা শুনে মায়া একটু জোড় গলায় বললো

“আজব,আমি কি এমন বললাম যেটা শুনে আপনার ন‍্যাকামো মনে হলো?”

আহান শক্ত কন্ঠে বললো

“আপনার এই ফালতু প্রশ্নের অ‍্যান্সার দেওয়ার কোনো ইচ্ছেই আমার নেই।তার থেকে ভালোয় ভালোয় আমাকে আমার কাজটা করতে দিন। এমনিতেই অলরেডি আপনার জন‍্যে আমার অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গেছে। তাই বলছি কথা না বাড়িয়ে আমাকে ব‍্যান্ডেজটা করতে দিন।”

আহানের কথা শুনে এবার মায়া ক্ষেপে গেলো। ‘ও’ ঝাঝালো কন্ঠে বললো

“ওকে আই অ‍্যাম সরি।আমার জন‍্যে আপনার মূল‍্যবান সময় নষ্ট হয়েছে। তার জন‍্যে আমি সত‍্যিই দুঃখিত। আপনি এতোক্ষন আমার জন‍্যে অনেক কিছু করেছেন। এখন আপনার হেল্পের আমার আর কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি আমার জন‍্যে যতোটুকু করেছেন তার জন‍্যে আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। এবার আমি আসি। এন্ড থ‍্যাংকস ফর হেল্প।”

কথাটা বলে মায়া বসা থেকে দাড়িয়ে চলে যেতে যাবে ঠিক তখনই আহান ওভাবে বসে থাকা অবস্থায়ই মায়ার হাত ধরে টান দিয়ে ওকে আবার সোফার উপরে বসিয়ে দিলো। তারপর মায়ার হাত চেপে ধরে ওর দিকে একটু ঝুকে দাতে দাত চেপে বললো

“একদম বেশি পাকনামি করতে আসবে না।তাহলে এক চড়ে মুখের মধ‍্যে যতোগুলো দাত আছে সব গুলো ফেলে দিবো। এইটুকু পুচকে একটা মেয়ে তুমি আমাকে এ‍্যাটিটিউট দেখাতে আসো? তোমাকে যদি মাথায় তুলে একটা আছাড় মারি তাহলে তো তোমার বাবার পুরো পল্টন লাগবে তোমার হড্ডি মাংস খুজে বের করতে।”

আহানের কথা শুনে ভয়ে চুপচাপ বসে রইলো। আহান মায়ার হাত ছেড়ে দিয়ে ওর পা ব‍্যান্ডেজ করায় মনোযোগ দিলো। মায়া আহানের দিকে ভিতু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আহান খুব যত্ন করে মায়ার পা টা ব‍্যান্ডেজ করে দিচ্ছে। আহানকে দেখে মনে হচ্ছে ব‍্যাথাটা মায়া পায়নি ‘ও’ নিজেই পেয়েছে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here