#মিশে_আছো_মুগ্ধতায়
#লেখিকাঃতানিশা_আহিয়াদ_তিশা
#পর্বঃ3
মায়ার একটা কল আসায় ‘ও’ ফোনটা নিয়ে সোজা ছাদে চলে আসে।তারপর কল ব্যাক করে কিছুক্ষন কথা বলে পিছনে ঘুড়ে নিচে যাওয়ার জন্যে পা বাড়ায়।কিন্তু ছাদের দরজা দিয়ে নিচে নামতে যাবে তখনই কয়েকটা ছেলে-মেয়ের হাসাহাসির শব্দ ওর কানে ভেষে আসে।শব্দটা শুনে ‘ও’ দাড়িয়ে যায়।
মায়া মাথা তুলে সামনে তাকাতেই দেখতে পায় ছাদের দরজা দিয়ে ছোট ছোট কতোগুলো বাচ্চারা ভিতরে প্রবেশ করছে।বাচ্চাগুলোর পিছনে পিছনে দুটো মেয়েও ভিতরে আসছে।মায়া ভ্রু কুচকে মেয়ে দুটোর দিকে তাকালো।ওর মনে হচ্ছে এদের আগে কোথাও একটা দেখেছে।মায়ার ভাবনার মধ্যেই মেয়ে দুটো ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।কিছুক্ষন ওভাবেই তাকিয়ে থাকার পর মেয়ে দুটো মায়ার দিকে এগিয়ে আসলো।মায়ার কাছাকাছি এসেই ওদের মধ্যে থেকে একটা মেয়ে বললো
“হাই!আমি সাড়িকা!চিনতে পেরেছো আমাকে?”
সাড়িকা নামটা শুনে মায়ার মনে পড়লো এটা সেই মেয়েটা যার ফোন আহির ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে ভেঙে ফেলেছিলো।মায়া একটা মুচকি হাসি দিয়ে উপর নিচ করে হ্যা সূচক ঘাড় নাড়লো।সাড়িকা ওর পাশে থাকা মেয়েটাকে দেখিয়ে বললো
“ওর নাম সাঈফা।আমার টুইনজ সিস্টার।”
মায়া অবাক হয়ে সাঈফার দিকে তাকালো।কারন সাড়িকা আর সাঈফার চেহারার মধ্যে তেমন একটা মিল নেই।সাধারনত টুইনজ বেবিদের চেহারা একদম একরকম হয়।খুবই অল্প সংখ্যক টুইনজদের চেহারা একে অপরের থেকে আলাদা দেখতে হয়।মায়াকে এভাবে তাকাতে দেখে সাঈফা হেসে দিলো।তারপর মায়ার দিকে হাত বাড়িয়ে বললো
“হাই মায়া আপি!”
সাঈফার মুখে নিজের নাম শুনে মায়া আরো অবাক হয়ে গেলো। মায়া সাঈফার সাথে হ্যান্ডশেক করে অবাক কন্ঠে বললো
“তুমি আমার নাম জানলে কিভাবে?”
সাঈফা হালকা হেসে বললো
“ভার্ষিটিতে যা যা হয়েছে সাড়িকা আমাকে সবটা বাসায় এসে বলেছে।আর ওর ফোনে সেদিনের ভিডিও টাও দেখেছি।তাই তোমাকে দেখেই চিনে ফেলেছি।”
মায়া সাঈফার থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ছোট্ট করে “ওহ আচ্ছা” বললো।সাড়িকা মায়াকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“তুমি এই বাসায় কিভাবে এলে আপি?এখানে কি তোমার কোনো রিলেটিভ থাকে নাকি?”
মায়া বললো
“নাহ এখানে আমার কোনো রিলেটিভ থাকে না।আসলে আমরা নিউ ভাড়াটে।আমি আর আমার কয়েকজন ফ্রেন্ড মিলে এই বাসায় ফ্লাট ভাড়া নিয়েছি।কিন্তু তোমরা এখানে কি করছো?তোমরা কি এখানেই থাকো?”
সাঈফা বললো
“না আমরা এখানে থাকি না।এটা আমার ছোট ফুপির বাসা।বাড়িতে ভালো লাগছিলো না তাই সবাইকে নিয়ে এখানে ঘুড়তে চলে আসলাম।”
মায়া সাড়িকা,সাঈফার সাথে আরো কিছুক্ষন কথা বললো।কথায় কথায় জানতে পারলো,সাড়িকা,সাঈফা হচ্ছে আহানের মামাতো বোন।আহানের মায়েরা হচ্ছে তিন ভাই-বোন।সবার বড় হচ্ছে সাড়িকার বাবা হাসান চৌধুরী।হাসান চৌধুরীর এক ছেলে,দুই মেয়ে।বড় ছেলের নাম হিয়ান চৌধুরী।পেশায় একজন ল-ইয়ার।আর ছোট দুই মেয়ে হলো সাড়িকা,সাঈফা।দুজনেই অর্নাস ফাষ্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট।
সাড়িকার মেজ ফুপির নাম ছিলো মোনা খান।তিনি অনেক বছর আগেই মারা গেছেন।ওনার দুই ছেলে।বড় ছেলে আহান আর ছোট ছেলে আহির।আহিরের যেদিন জন্ম হয়েছিলো সেদিনই অপারেশন থিয়েটারে মোনা খানের মৃত্যু হয়।স্থী মারা যাওয়ার চার বছর পর আহাদ খানও ব্রেন স্টোক করে মারা যান।চোখের সামনে নিজের স্থী’র মৃত্যু দেখে আস্তে আস্তে নিজেও দূর্বল হয়ে পড়েছিলেন।কিন্তু সেটা কাউকে বুঝতে দেননি।যতোদিন বেচে ছিলেন ততোদিন নিজের হাতে ছেলে দুটোকে মানুষ করেছেন।ছেলেরা যাতে মায়ের অভাব ফিল না করে তাই জন্যে সব কাজ কর্ম ভুলে গিয়ে সারাক্ষন নিজের ছেলেদের আগলে রাখতেন।কিন্তু ভালোবাসার মানুষটা চলে যাওয়াতে ভিতরে ভিতরে এতোটাই ভেঙে চুড়ে গিয়েছিলো যে কাউকে কিছু না বলেই একদিন হুট করেই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়ে ছিলেন।তারপর থেকে আহান,আহির ওর ছোট খালা মনি মিড়া রহমানের সাথেই থাকে।
অনেক বছর আগেই কোনো একটা ঝামেলার কারনে মিড়া রহমান ওনার হাসবেন্টের থেকে আলাদা হয়ে গেছেন।তবে ওনাদের মধ্যে এখনো ডিবোর্স হয়নি।মিড়া রহমানের এক ছেলের নাম মিহির।যে মিড়া রহমানের সাথে এই বাড়িতেই থাকে।আর ছোট মেয়ের নাম মেঘনা।মেঘনা এখন মিড়া রহমানের হাসবেন্ট আজম রহমানের সাথে ইউরোপে আছে।তবে মেঘনা মাঝে মাঝে ওর বাবাকে না জানিয়ে বাংলাদেশে এসে নাকি মিড়া রহমান সহ আহির,মিহির,আহান ওদের সবার সাথে দেখা করে যায়।
________
মায়া সাড়িকা,সাঈফাদের কাছ থেকে এতোক্ষন সব কথা গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনলেও,শেষের কথাটা শুনে ওর ভীষন হাসি পেলো।যেখানে ওর বাবাই একটা সেকেন্ডর জন্যেও ওকে চোখের আড়াল করে না।সেখানে নাকি ‘ও’ ওর বাবাইকে না বলে ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে এসে এখানে সবার সাথে দেখা করে যায়।এটাও ভাবা যায়?তবে মায়া এটা বেশ ভালো করে বুঝতে পারছে এখানে এসে যে দেখা করে যায় সেই মেঘনা টা আসলে কে।মায়া তাছিল্য হেসে মনে মনে বললো
__কুকুরের লেজ যেমন সোজা হয় না।তেমনি তোমরাও আর জিবনে নিজেদের সোধরাতে পারলে না।
মায়ার ভাবনার মধ্যেই সাঈফা এসে মায়ার এক হাত ধরে বায়নার স্বরে বললো
“আপি চলো তোমাকে ফুপির সাথে আলাপ করিয়ে দেই।”
মায়া খানিকটা চমকে উঠে বললো
“না, না, এখন আমার অনেক কাজ আছে।এখন আমি বাসায় যাই।পরে সবার সাথে আলাপ করে নিবো।”
কথাটা বলে মায়া যেতে নিলো।কিন্তু সাড়িকা আর সাঈফা ওকে ধরে জোড় করে টানতে টানতে লিফটে উঠিয়ে নিয়ে যেতে লাগলো।
__________________________
লিফট এসে সেভেন ফ্লোরে থামলো।সেভেন ফ্লোর আর এইট ফ্লোর পুরোটা মিড়া রহমানদের।আর বাকি ফ্লোর গুলোতে ফ্লাট করে ভাড়া দেওয়া আছে।মায়া আর দিশারা ছিক্স ফ্লোরের একটা ফ্লাট নিয়েছে।
লিফট থেকে নেমে সাড়িকা গিয়ে দরজার সামনের কলিংবেল বাজালো।কিছুক্ষন পর একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিলো।মায়া মেয়েটার পা থেকে মাথা পযর্ন্ত একবার চোখ বুলিয়ে নিলো।মেয়েটাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা প্রেগনেন্ট।সাঈফা মেয়েটাকে ইশারা করে মায়াকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“আপি ইনি হচ্ছেন আমার একমাএ ভাবিপু আলিশা।দেড় বছর আগে আমার গুনোধর ভাই ভাবিপুকে বিয়ের আসর থেকে কিডন্যাপ করে বাসার কাউকে কিছু না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলেছে।আর তার ফল সরূপ ভাবিপুর বাবার বাড়ির লোকদের সাথে ভাইয়া বা ভাবিপুর কোনো সম্পর্ক নেই।তবে চিন্তার কোনো কারন নেই,আমাদের পুচকু পৃথিবীতে আসলেই সব কিছু একদম ঠিকঠাক হয়ে যাবে।”
সাঈফার কথা শুনে আলিশা অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে গেলো।একটা অচেনা মেয়ের সামনে সাঈফা এভাবে সবকিছু গরগর করে বলে দেওয়ায় আলিশার খানিকটা লজ্জাও লাগছে।তবে সাড়িকা,সাঈফা সেদিকে পাএা না দিয়ে মায়ার হাত ধরে টানতে টানতে বাসার ভিতরে নিয়ে গেলো।ওদের দেখে মনে হচ্ছে মায়াকে ওরা যেনো অনেক আগে থেকেই চিনে।
বাসার ভিতরে ঢুকতেই মায়ার দৃষ্টি গেলো ড্রইংরুমের সোফার উপর।সেখানে সবাই বসে বসে চা আর স্নাক্স খাচ্ছে।সাড়িকা,সাঈফা মায়াকে নিয়ে সোফার দিকে এগিয়ে যেতেই ওখানে উপস্থিত সবার দৃষ্টি ওদের উপর পড়লো।মায়াকে দেখেই মিহির আর আহির বসা থেকে দাড়িয়ে গেলো।আহির মায়ার সামনে এসে কপাল কুচকে বললো
“এই মেয়ে তুমি আমাদের বাড়িতে কি করছো?এবার কি আমাদের নামে আমাদের বাড়িতে কম্পেলেইন করতে এসেছো নাকি?সেদিন হসপিটালে গিয়ে যে তোমাকে সরি বলে আসলাম তাতে মন ভরে নি?এখন আমাদের বাড়ি পযর্ন্ত এসে গেছো?”
আহিরের কথা শুনে মায়া বোকার মতো ওর দিকে তাকিয়ে রইলো।সাড়িকা রাগি কন্ঠে আহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“মুখটা একটু বন্ধ করবে প্লিজ?না জেনে না বুঝে এতো বকবক কেনো করো তুমি?সব সময় বাড়াবাড়ি করা তোমার স্বভাবে পরিনত হয়েছে।”
সাড়িকার কথা শুনে আহির রেগে ওকে কিছু বলতে যাবে, তার আগেই সাড়িকা আহিরকে থামিয়ে দিয়ে বললো
“চুপচাপ দাড়িয়ে থাকো।একদম কোনো কথা বলবে না।”
সাড়িকার কথা শেষ হতেই সাঈফা মায়াকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“মায়া আপি আহির ভাইয়ার কথায় কিছু মনে করো না প্লিজ। ‘ও’ সব সময় উল্টাপাল্টা কথা বলে।আমরা কেউ ওর কথায় পাএা দেই না।তুমিও দিও না।”
সাঈফার কথা শুনে আহির রাগি দৃষ্টিতে সাঈফার দিকে তাকালো।সাঈফা একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আহিরের সাইড কাটিয়ে সবার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বললো
“গাইস এটা হলো মায়া আপি।এই বাসার নিউ ভাড়াটে।আর এনাকেই আহির ভাইয়া,মিহির ভাইয়া চিলি সসের নুডুলস খাইয়েছে।যার জন্যে অবশ্য আহান ভাইয়ার হাতে দুজন দুইটা-দুইটা চারটা চড়ও খেয়েছে।”
আহির আর মিহিরকে আহান চড় মেরেছে শুনে মায়া একটু অবাক হলো।ওর যতোদূর মনে আছে আহান সব সময় আহির,মিহিরকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতো।মাঝে মাঝে শাসন করতো ঠিকই কিন্তু কখনো গায়ে হাত তুলেনি।
মিড়া রহমান,শারমিন চৌধুরী (হিয়ানের মা),মিড়া রহমানের মা-বাবা ওনারা সবাই মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে।মায়ার চোখে গোল মোটা ফ্রেমের একটা চশমা দেওয়া।চেহারার অর্ধেকটা চশমাতেই ঢেকে গেছে।গায়ে একদম সাদা রঙের নরমাল একটা থ্রি পিচ পড়া।চুলগুলো তৈল দিয়ে খোপা করা।মায়াকে দেখে যে কেউ বলে দিবে ‘ও’ একদম নিম্ন মধ্যেবিএ ফ্যামিলির মেয়ে।
মিড়া রহমান গম্ভীর কন্ঠে সাড়িকা,সাঈফাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“তোমাদের দুজনকে আজকে শেষ বারের মতো একটা কথা বলছি ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নিও।চেনো না,জানো না এমন কাউকে কখনো আমার বাসায় নিয়ে আসবে না।কারো সাথে বন্ধুত্ব করা ভালো কথা।তবে এভাবে হুটহাট তাকে বাসায় নিয়ে আসাটা একদম ঠিক না।”
মিড়া রহমানের কথায় সাড়িকা,সাঈফার এতোক্ষনের হাসি খুশী চেহারাটা একদম কালো মেঘে ঢেকে গেলো।মায়া একটা তাছিল্য হাসি দিয়ে কাউকে কিছু না বলে দরজার দিকে পা বাড়ালো।পিছন থেকে মিড়া রহমান জোড় গলায় ডেকে মায়াকে দাড়াতে বললেন।ওনার ডাক শুনে মায়া দাড়িয়ে গেলো কিন্তু পিছনে ঘুড়লো না।মিড়া রহমান বসা থেকে দাড়িয়ে এগিয়ে গিয়ে মায়ার সামনে দাড়ালো।তারপর কাঠ কাঠ কন্ঠে বললো
“ভাড়া থাকতে এসেছো ভাড়াটের মতোই থাকবে।খবরদার আমার ছেলে-মেয়েদের সাথে বেশি ক্লোজ হওয়ার চেষ্টা করবে না।বুঝতে পেরেছো?”
মায়া উপর নিচ করে হ্যা সূচক মাথা নাড়লো।মায়ার অ্যান্সার পেয়ে মিড়া রহমান আবারও বললেন
“গুড।এবার তুমি আসতে পারো।”
মিড়া রহমান কথাটা বলার সাথে সাথে মায়া এক দূরে বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো।
____________________
মায়া ওই বাসা থেকে বের হয়ে দৌড়ে সোজা আবার ছাদে চলে এলো।ছাদে এসে এক কোনায় গিয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠলো।খুব কষ্ট হচ্ছে ওর।নিজের মায়ের মুখ থেকে এমন কথা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না ‘ও’। মায়া কাদতে কাদতে বললো
“এতোগুলো বছর সবাইকে ছাড়া তো ভালোই ছিলাম আল্লাহ।তাহলে কেনো আবার এই নিষ্ঠুর মানুষ গুলোর সামনে এনে আমাকে দাড় করিয়ে দিলে?এই নির্দয় মানুষ গুলোকে আমার চাই না।আর ওই মিড়া রহমানকে তো কিছুতেই চাই না।এরা সবাই খুব খারাপ খুবই খারাপ।”
কথাটা বলে কাদতে কাদতে মায়া ফ্লোরে বসে পড়লো। হঠাৎ মায়ার পাশ থেকে কেউ মৃদ্যু কন্ঠে বলে উঠলো
“হেই আর ইউ ওকে?”
আচৎমকা কোনো পুরুষালি কন্ঠ শুনে মায়া চমকে উঠলো।তারপর ঘাড় ঘুড়িয়ে পাশে তাকাতেই দেখলো, আহান ট্রাউজারের পকেটে দু-হাত ঢুকিয়ে সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছে।মায়া দ্রুত বসা থেকে দাড়িয়ে ওড়না দিয়ে চোখের পানি মুছলো।তারপর চশমাটা ঠিক করে চোখে পড়ে নিয়ে বললো
“ইয়াহ,আই অ্যাম ওকে।”
আহান এতোক্ষন মায়ার চেহারা ভালো করে দেখতে পায়নি। ‘ও’ ছাদে এসেছিলো বাচ্চাদের ব্যাডমিন্টন খেলা দেখতে।কিন্তু এখানে কারো কান্নার আওয়াজ শুনে এদিকে এগিয়ে এলো।এসেই দেখতে পেলো একটা মেয়ে বসে বসে কাদছে।আহান মায়ার চেহারা দেখে অবাক কন্ঠে বললো
“আপনি তো সেই মেয়েটা তাইনা?আপনি আমাদের বাসায় কি করছেন?”
মায়ার কেনো যেনো আহানের প্রশ্নের অ্যান্সার দিতে ইচ্ছে করলো না।তাই ‘ও’ কিছু না বলেই সামনের দিকে হাটা দিলো।মায়াকে এভাবে চুপচাপ চলে যেতে দেখে আহান গিয়ে মায়ার সামনে ওর পথ আটকে দাড়ালো।তারপর ভ্রু কুচকে বললো
“আমার প্রশ্নের অ্যান্সার না দিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?আমাদের বাসায় কি করে আসলেন আপনি?”
মায়া বিরক্তির স্বরে বললো
“আকাশ থেকে উড়ে উড়ে এসেছি।”
আহান কপাল কুচকে বললো
“মানে?”
মায়া দাতে দাত চেপে বললো
“মানে আপনার মাথা আর আমার মুন্ডু।”
মায়ার কথা শুনে আহানও এবার ভিষন বিরক্ত হলো। ‘ও’ খানিকটা শক্ত কন্ঠে বললো
“আজব মেয়ে তো আপনি।সামান্য একটা প্রশ্ন করেছি,সেটার এতো ঘুড়িয়ে পেচিয়ে অ্যান্সার দেওয়ার কি আছে?আপনাকে আগে এখানে দেখিনি তাই জিঙ্গেস করলাম।”
মায়া ঝাঝালো কন্ঠে বললো
“আমি এরকম ঘুড়িয়ে পেচিয়ে অ্যান্সার দিতেই পছন্দ করি।আর চিন্তা করবেন না,এরপর থেকে আমি ‘আপনাদের বাসায় কেনো আছি’ সেই কারনটা একটা সাইনবোর্ডে লিখে আমার গলায় ঝুলিয়ে তারপর বাসা থেকে বের হবো।তাহলে আশা করি আপনার আর আপনার চৌদ্দ গুষ্ঠির আমাকে চিনতে সুবিধা হবে।আর আপনাদের কষ্ট করে আমাকে এই প্রশ্ন বারবার জিঙ্গেসও করতে হবে না।”
কথাটা বলে মায়া হনহন করে সিড়ি বেয়ে ছাদ থেকে নেমে গেলো।আহান ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে মায়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। ‘ও’ এটাই বুঝতে পারছে না যে ‘ও’ কি এমন বলেছে যার জন্যে মেয়েটা এতোটা রেগে গেলো।
#চলবে,,,,