You_are_mine season_2 Poly_Anan part_22

0
1887

You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_22

ঈশা ঈশানের দিকে একপলক তাকিয়ে বলতে শুরু করে সাড়ে তিন বছর আগের ঘটনা।

“সেদিন নদীতে ঈশাকে ঠিকি পাওয়া যায় তবে সবার চক্ষু আড়ালে ঈশাকে সরিয়ে দেয় নাজিম আর সাইফ।লিপি, আবিদ,সাইফ,নাজিম চারজন মিলে সু কৌশল আটেঁ।লিপি আর আবিদের প্লানিং ছিল ঈশাকে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া।তারপর লিপির বড় মেয়ের সাথে দ্রুত বিয়ের কাজ সেরে ফেলা। কিন্তু সাইফ আর নাজিমের পূর্ব শত্রুতার কারনে ঈশানকে সহ সেইদিন ভোরে ট্রাক এক্সিডেন্টে মারতে চেয়েছিল।ঈশান যখন রাসেলের সাথে কথা বলছিল ফোনে তখনি সাইফ আর নাজিম ঈশানের লোকেশান যেনে যায়।তখনি সুযোগ বুঝে তাদের প্রতিশোধ তারা নেয়।

কিন্তু ঈশাকে পাওয়ার পর লিপি ঈশার বাবা মাকে বলে ঈশাকে সেদিন ফিরিয়ে দেবে যদি তারা ঈশাকে ঈশানের কাছ থেকে আড়াল করে নেয়।সবাই যানবে ঈশা মৃত। শুধু তারাই যানবে ঈশা জিবিত ।এই সব কিছু মুজাহিদ আর মাহমুদা মেনে নেয়।ঈশার পরিবর্তে অন্য মেয়ের লাশ এনে পুলিশের সাহায্য সবটা কাহিনী সাজায় নাজিম আর সাইফ।তারপর সবাই যানে ঈশা মৃত। সত্যটা একমাত্র ঈশার মা বাবা জানতো।এদিকে ঈশার শারিরীক অবস্থা দিন দিন আরো অবনতি হতে থাকে।এক্সিডেন্টে তার বাম হাত ভেঙ্গে যায়,এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় ঈশার।এদিকে ঈশাকে রাখা হয় ঈশার বাবার অফিসের একজন বিশস্ত কর্মকর্তার বাড়িতে।তারা ঈশার যথা সাধ্য যত্ন নিলেও প্রায় পনেরো দিন যেতেই তারা বিরক্ত হয়ে উঠে।

ঈশার বাবা বুঝতে পারে ঈশাকে তারা বোঝা হিসেবেই দেখছে। মানসিক দিক দিয়ে সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পরে ঈশার বাবা মা।এদিকে শুরু হয়ে যায় অনুর পাগলামো।তার সুইসাইড করার বিষয়টি সবাইকে ভয় পাইয়ে দেয়।ঈশার বাবা পরর্বতীতে সত্যটা জানিয়ে দেয় অনুকে। অনু সিধান্ত নেয় সে ঈশার কাছে যাবে।কিন্তু যাওয়ার মতো পরিচিত জায়গা তাদের নেয়।অবশেষে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেয় অনুর বাবা। তার বন্ধু জামিলকে সবটা খুলে বললে তিনি সাহায্য করতে রাজি হয়।কিন্তু অনু হুট করেই গায়েব হয়ে গেলে এলাকার সবাই সন্দেহ করবে। তাই জামিলের ছেলে জারিফের সাথে বিয়ের নাটক করে অনুকে আর ঈশাকে সিলেট নিয়ে যায় তারা। তারপর থেকে তাদের অন্যরকম জীবন শুরু।

ঈশা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর সে চেয়েছিল ফিরে আসবে ঈশানের কাছে অনন্ত একটি বার ঈশানকে দেখবে। ঈশান কোমায় আছে কথাটি জেনেই ঈশার কাছে সব কিছু তিক্ত লাগে। নিজের জীবনকে কেন যেন নিজের ঘৃনা লাগে।রাসেলের সাথে অনেক বার যোগাযোগ করতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি।
প্রায় একবছর পর ঈশা ফিরে আসে ঢাকায়।খবরটা পেয়ে যায় নাজিম আর সাইফ তারা দ্রুত আবিদের সাথে যোগাযোগ করলে ঈশাকে ঠেকাতে আরেকটি পদক্ষেপ নেয় লিপি।ঈশার ছোট মামাকে তুলে এনে প্রায় অর্ধ লাশ বানিয়ে ছাড়ে। ঈশার মা বিষয়টি যেনে দিশেহারা হয়ে যান। সেইদিন ঈশাকে ঈশার মা রুমে টেনে এনে দুটো চড় দিয়ে বলতে থাকেন,

“তোর মতো মেয়ের মুখ না দেখার চেয়ে আমি যদি মা না হতাম আমার আফসোস থাকতো না।কেন ফিরে এসেছিস আমাদের পোড়াতে?জ্বালাতে? আর কত জ্বালাবি।নিজের দিকে তাকিয়ে তোর কি নিজের লজ্জা হচ্ছেনা।তোর কারনে আজ আমাদের সর্বহারা। তোর বাবার দিকে তাকিয়েছিস মানুষটা দিনদিন ভেঙ্গে যাচ্ছে।আর আজ তুই আমার ছোট ভাইটাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলি।কেন? কি এমন ভালোবেসেছিস তুই যার কারনে আমাদের দিকটা ভাবলিনা।তুই ভাগ্য করে এমন একটি বন্ধু পেয়েছিস! অনু কেন যে তোর সাথে পরে আছে আমি বুঝিনা।আজ যদি আমার ভাইয়ের কিছু হয় তাহলে মনে রাখিস আমার সাথে তোর আর কোন সম্পর্ক থাকবেনা।তুই ভেবেনিবি তোর মা মরে গেছে।

সেদিন ঈশা শেষ দেখেছিল ঈশার মাকে। আর বাকি দেড় বছর তাদের মা মেয়ের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।শুধু মা মেয়ে না।ঈশা কারো সাথেই আর যোগাযোগ রাখেনা। মাঝ পথে যখন সবাই ফেলে আবারো চলে যায় তখন অনু আবারো শক্ত করে ঈশার হাত জড়িয়ে ধরে সিলেটের উদ্দেশ্য চলে যায়।আর এভাবেই কাটতে থাকে তার বাকি দিন।
গল্পটি লেখনীতে পলি আনান।

ঈশার কথা রুমের সবার মাঝে পিন পিনে নিরবতা। শুধু ঈশার চোখের মুখেই তাছিল্যের ভাব।রাসেল ঈশার দিকে তাকিয়ে বলে,
” আমি সব মানলাম ঈশা।কিন্তু ঈশানের সাথে যে এত বড় ক্ষতিটা হয়ে গেলো এতে কি আংকেলের একটুও গায়ে লাগেনি বিষয়টা। আইমিন সাইফ আর নাজিমকে কিচ্ছু বলেনি?
“আপনার কি মনে হয় রাসেল ভাই?আংকেল যখন সাইফ আর নাজিমের সাথে এইসব বিষয় নিয়ে গন্ডগোল শুরু করেন তখন নাজিম আর সাইফ লিপির বিরুদ্ধে প্রমান আপনার কাছে বা ঈশানের কাছে দিয়ে দেবে।ঈশাকে ঈশানের কাছ থেকে সরানোর সব প্লানিং যে আবিদ আর লিপির ছিল সেগুলোর প্রমান তাদের কাছে ছিল। তাই তারা দমে যায় আর অপেক্ষা করতে থাকে ঈশানের জ্ঞান ফেরার।

ঈশান স্তব্দ হয়ে বসে আছে কিছু বলার নেই তার কি বলবে?নিজের পরিবার যখন আঘাত দেয় তখন চারিপাশটায় শত মানুষজন থাকা শর্তেও নিজেকে বড্ড একা মনে হয়।রাসেল ঈশাকে বলে,
“সাইফ আর আংকেলের ঝগড়ার বিষয়টা তুমি কি করে জানলে ঈশা..?তোমার তো জানার কথা নয়?
” হাসিন ভাইয়ের কাছ থেকে যেনেছিলাম।
ঈশা হঠাৎ করেই ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে,
“আরো কিছু গোপন সত্য মিথ্যা হয়তো লুকিয়ে আছে।হয়তো আমার আড়ালে নাহয় আপনার আড়ালে।

ঈশার কথা বলা শেষ হতেই চারিদিকে ফজরের আযানের ধ্বনি ভেসে আসে।ঈশান সবাইকে নামায পড়ার জন্য যেতে বলে আর নিজেও চলে যায়।
চারিদিকে আলো ফুটতে শুরু করেছে।ঈশান ভাবতে থাকে কি করা যায়।রাসেল কে রুমে ডেকে এনে পুরো খেলার ছকটা সাজাতে শুরু করে সে।আজ সবটা যানবে সে।আর আজকেই সম্পকের শুরু হবে না হয় শেষ।

” আংকেল ঈ..ঈশান..!(কান্নার অভিনয় করে রাসেল)
“কি হয়েছে ঈশানের(আবিদ)
” ঈশান এক্সিডেন্ট করেছে। আপনারা সবাই মিলে দ্রুত বিডিতে চলে আসুন।
“ও মাই গড কি বলছো তুমি?
” হ্যা আমি ঠিক বলছি আংকেল ঈশানের অবস্থা ক্রিটিকাল সে বলেছে সবাইকে একবার দেখতে চায়। আপনি।লিপি আন্টিকে নিয়ে প্লিজ চলে আসুন।
“আয়ায়া আমি আসছি…!

রাসেল ফোনটা কেটেই খট খট করে হাসতে থাকে
ঈশান তার হাসি দেখে বলে,
” আজব হাসছিস কেন?
“হাসবো না তো কি করবো সবাই মিলে এই কয়েক বছর আমার জীবনটাকে তামা তামা করে ছেড়েছে। তুই জানিস ঈশান এতো দিনে আমি বাচ্চার বাপ হয়ে যেতাম।
রাসেলের কথা অনু চোখ গরম করে তার দিকে তাকায়।ঈশান আড় চোখে একবার ঈশার দিকে তাকিয়ে বলে,
” তো আমি কি হতাম?আমি তো দুই বাচ্চার বাপ হতাম। ধূর এইসব ফালতু কাজের কারনে আমার বউটারে চান্দের দেশে পাঠায় দিসিলো।আল্লাহ আবার ফিরিয়ে দিসে আমি এতেই খুশি!
“হ্যা ম্মামা তুমি তো সিলেট যেতে চাও নাই আমি নিয়া গেসিলাম এবার আমার গ্রিফট দাও!?(মুখ ভেংচে রাসেল)
” ওইযে তোর গিফট আমার শালি(অনুকে উদ্দেশ্য করে)
“ওই এই এটা কোন গিফট না এটা আমার সম্পদ। তুই আবার আমারে কি গিফট দিবি।ফাইজলামি পাইছো মিয়া।
রাসেলের রাগ দেখে হাসতে শুরু করে ঈশান আর সেই হাসি মুগ্ধ নয়নে দেখছে রাসেল।কত বছর পর ঈশান আজ হেসেছে….!

ঈশান শুয়ে আছে তার চোখে ব্যান্ডেজ বাধাঁ।লিপি তার বড় মেয়ে,স্বামী, সুলতানা, আবিদ, কিছুক্ষন আগেই এসে সিলেটের বাড়িতে পৌছে যায়।সুলতানা কাদতে কাদতে প্রায় অচেতন হয়ে যাচ্ছে যখন থেকে যানতে পেরেছে ঈশান আর চোখে দেখবেনা।তারা আসার কিছুক্ষন পর রাসেল ইনিয়ে বিনিয়ে বলে,ঈশান ছাদ থেকে পড়ে যায়।কিন্তু তার চোখে কাচভাঙ্গা ডুকে যায় ফলে সে আর চোখে দেখবেনা।ডাক্তাররা এটাই বলেছে।কথাটি শুনেই সবাই কেঁপে উঠে কি বলছে ঈশান চিরতরে অন্ধ হয়ে যাবে।

ঈশান হাত হাতড়ে হাতড়ে বলে,
” ফুফি এসেছো?
“এএএই তো ঈশান আমি। (ঈশানের হাত ধরে)
” ফুফি আমায় মাফ করে দিও তোমার সাথে বেশ অন্যয় করে ফেলেছি!
“আরে না না কি বলছিস তুই।আমি তোর ব্যবহারে কিছু মনে করিনি।
” ফুফি আমি চাই তোমার শেষ ইচ্ছেটা পূরন করবো!
“আমার শেষ ইচ্ছে(অবাক হয়ে)
” হ্যা ফুফি কেন তোমার মনে নেই তোমার বড় মেয়ে নিসার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করতে চেয়েছিলে।
লিপি এবার বুঝতে পারে কি বলছে ঈশান।তিনি চট করে ঈশানের হাত ছেড়ে বলে,

“ন..না তোকে কোন ইচ্ছে পূরন করতে হবেনা।
” না ফুফি আমি তোমার শেষ ইচ্ছা পূরন করবো!
লিপি এবার রেগে যায়।
“বললাম তো কোন ইচ্ছে পূরন করতে হবেনা।তোর মতো অন্ধ ছেলের সাথে আমি আমার মেয়ে বিয়ে দেবো না।কি আছে তোর কিচ্ছু নেই। তোর চোখের চিকিৎসা করাতে করাতেই তোর টাকা ফুরিয়ে যাবে।তুই যে মদ খেয়ে শরীরের অবস্থা খারাপ করেছিস তোর চিকিৎসা করাতে করাতে তোর বাপের ব্যাংক ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাবে।তাছাড় তোর বাবা আমাকে ফ্লাট বাড়ি কিনে দেওয়ার জন্য ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ছে।সেই ঋন এখনো শোধ করতে পারেনি।আমার মনে হয় কি যানিস তোরা একমাসের মধ্যেই রাস্তায় নামবি।

” লিপি..!তোর লজ্জা করেনা বিপদের সময় আমাদের একা ফেলে চলে যাচ্ছিস।(অবাক হয়ে আবিদ)
“দেখ ভাই তোদের বিপদ তোরা নিজে হাতে ধরে এনেছিস বাকিটা তোরা সামলা।।
” লিপি..(ধমক দিয়ে)
“একদম আমাকে ধমক দিবিনা!
” তুই কি আমার সেই বোন?গত ৯ বছর থেকে তুই আমার মাথা খেয়ে নিচ্ছিস তোর মেয়ের সাথে যেন আমি ঈশানের বিয়ে দি তাহলে আজ বিয়ের কথা যখন উঠলো তুই এমন করলি কেন?
“ঈশান কি সেই ৯ বছর আগের মতো আছে সে তো এখন অন্ধ এমন অন্ধ ছেলেকে কে বিয়ে করবে।আমি আমার মেয়ের জীবন নষ্ট করতে পারবোনা।
” তুই কি বলছিস এইসব।
“যা বলার তাই বলছি,নিসার বাবা চলো আমরা ইউএসে ফিরে যাবো নিসা মা চল তাড়াতাড়ি…!
গল্পটি লেখনীতে পলি আনান।
লিপি এগিয়ে যেতে নিলেই গাড এসে তাদের বাধা দেয়।ঈশান শোয়া থেকে উঠে বসে চোখের ব্যান্ডেজ খোলে,
” আমি অন্ধ নই ফুফু..!
ঈশানে কথা শুনে চমকে তাকায় সবাই।ঈশান সবার দিকে কিলার লুকে তাকিয়ে হাসছে।

“কি পাপা তোমার বোনের আসল চেহারা পেয়ে গেলে তো?
আবিদ মাথাটা নিচু করে রাখে।ঈশান গাডদের ঈশারা করে সবাইকে নিয়ে যেনো নিচে যায়।

সবার মাঝে পিন পিনে নিরবতা। ঈশান লিপির দিকে তাকিয়ে বলে,
” ফুফি সব কথা কি তুমি শিকার করবে নাকি..আমি অন্য ব্যবস্থা নেব?
“কি শিকার করবো আমি ঈশান? কি বলছিস তুই?
” দেখো ফুফি আমি যানি তুমি আর বাবা মিলে এইসব করেছো, কেন করেছো তাও যানি।আমি শুধু যানতে চাই, আমার দাদাকে বিষ খাইয়ে কে মেরেছে?
অতীতের কথা হঠাৎ প্রকাশ পাওয়ায় সবার চোখ কপালে উঠে যায়।ঈশান শান্ত কন্ঠে আবারো বলে,
“ফুফু দাদাভাইকে কে মেরেছে?
” বললাম তো আমি যানি না।
ঈশান তার গাডদের ঈশারা। কিছুক্ষন পর গাডরা একটি গরম পানির বোল নিয়ে আসে।পেছন থেকে দুইজন গাড এসে দ্রুত লিপির দুইহাত এক সাথে বেধে দেয়।তারপর লিপির হাত টেনে সেই বোলে ডুবিয়ে দেয়।উত্তপ্ত গরম পানিতে লিপির হাতে ফোসকা পড়ে যায়।তার গগন বিহীন চিৎকারে পুরো বাড়ি থম থমে পরিবেশ হয়ে যায়।কেউ ঈশানের সামনে দাড়িয়ে সাহস করে কিছু বলতে পারছে না।কারন ঈশানের মুখ রাগে লাল হয়ে আছে।
“ফুফি দাদাভাইকে কে মেরেছে?
“তোর মা মেরেছে।
ঈশান এবার একটি রড নিয়ে লিপির হাতে মারতে শুরু করে।লিপির আংগুল গুলো যেন দুমড়ে মুচড়ে গেছে।হাতের যন্ত্রনায় চোখের পানি নাকের পানি এক হয়ে গেছে।
” ফুফি কে মেরেছে দাদাভাইকে?
“ত..তোর মা…!
সুলতানা অবাক হয়ে লিপির দিকে তাকিয়ে আছে এত বড় মিথ্যা অপবাদ তাকে আবারো দেওয়া হচ্ছে।
ঈশান এবার একটি রামদা নিয়ে লিপির সামনে দাঁড়ায়।
” কসম আপনি যদি সত্যিটা না বলেন আমি নিজে আপনার দেহ থেকে হাত আলাদা করবো। কে মেরেছে দাদাভাইকে?
“আমি মেরেছি আমি(জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে)
লিপির কথা শুনে অবাক হয়ে তাকায় আবিদ আর তার স্বামি আর সন্তান।
” কেন মেরেছেন দাদাভাইকে?
“আমি তোর দাদার নিজের মেয়ে না। আমাকে দত্তক আনা হয়েছিল।কিন্তু এই বিষয়টা আমি যানতাম না। যানতো না তোর বাবা।কিন্তু আমি যখন তোর মায়ের উপর অত্যাচার করতাম তখন তোর দাদার সহ্য হতো না।কারন সেই বাড়িতে একমাত্র তোর দাদাই তোর মাকে ভালোবাসতো। আগলে রাখতো। যখন সবার মাঝে যানা যানি হয়ে যায় আমি তার আসল মেয়ে না।তাদের বংশের রক্ত আমার শরীরে না তখন এলাকার সবাই আমার দিকে কানা নজরে তাকাতে শুরু করে।তোর দাদা এটাও বলে সম্পত্তির ভাগ আমি পাবো না।রাগে হিংসায় একদিন রাতের খাওয়ারের সাথে বিষ মিশিয়ে দি।তারপর সবটা সুলতানার ঘাড়ে চাপিয়ে দি।কিন্তু আমার দিল দরদি ভাই আবারো সুলতানাকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনে।
তোর মায়ের কারনে বিয়ে বাড়ির ভরা মজলিশে আমরা অপমানিত হই। সে অপমানের শোধ আমাকে তুলতেই হতো..!

আবিদ চুপ চাপ গম্ভীর মুখ নিয়ে বসে আছে। এই বোনকে সে নিজের জীবনের থেকে ও বেশি ভালোবাসতো।এই বোনের জন্য নিজের সংসার জিবন তছনছ করে আর সেই বোন কিনা একের পর এক আড়ালে তার ক্ষতি করতে থাকে।
ঈশান তার বাবার দিকে তাকিয়ে বলে,

” লিসেন পাপা আমি যানি এইসবে তুমি ও জড়িত। বিশেষ করে আমাকে আর ঈশাকে আলাদা করার বিষয়টায়।
আবিদ বড় করে একটা ঢোক গিলে.
“কিন্তু আমি তোমায় ছেড়ে দেবো না পাপা।আমার মায়ের সাথে যে অন্যয় তুমি করেছো সেই অন্যায়ের মাশুল তোমায় দিতেই হবে।
” দেখ বাবা ঈশা তো নেই তুই….
আবিদের কথা শেষ হওয়ার আগেই ঈশান শব্দ করে হাসতে শুরু করে।
“লাইক সিরিয়াসলি তুমি কি ভেবেছো ঈশার খোজ আমি পাইনি?
ঈশা…..(জোরে ডেকে)

ঈশা পাশের রুম থেকে আস্তে আস্তে গুটি গুটি পা ফেলে বেরিয়ে আসে।সে এখনো ভয়ে কাপছে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে পড়লে অন্তর আত্না কেপে যায়।
গল্পটি লেখনীতে পলি আনান।
ঈশাকে দেখে সবার ভূত দেখার মতো অবস্থা হয়।
ঈশান একটানে ঈশাকে নিজের বুকের সঙ্গে মিশিয়ে বলে,

” তোরা আমাদের আলাদা করতে চেয়েছিলি না এই দেখ আমরা এখন একসাথে। আর মৃত্যু ছাড়া কেউ আলাদা করতে পারবেনা আমাদের।
এবার আসুন শাস্তির পালা।লিপিকে নিজের হাতে তিলে তিলে মারবো আমি।শুধু লিপিকে না সাথে সাইফ আর নাজিমকে।যানো বাবা আমি না ভালো মানুষ না আমি বড্ড খারাপ ঠিক তোমার মতো।তুমি কি করে পারলে ঈশাকে এত বড় সন্ত্রাসীর সাথে বিয়ে ঠিক করতে।

“ব.বিশ্বাস কর আমি ছেলের বিষয়ে তেমন কিছু যানতাম না সাইফ নাজিম আর লিপি ৪০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ঈশাকে ওই ছেলের কাছে বিয়ে দিতে চেয়েছিল।
রাগে ঈশানের শরির কাপছে এতটা নিম্ন মানের ছিহহ।ঈশান আবারো হাতে রড তুলে নিয়ে লিপির মাথায় আঘাত করে সাথে সাথে লিপির মাথা ফেটে গল গল করে রক্ত ঝরতে শুরু করে।মাটিতে লুটিয়ে পড়ে লিপি।
ঈশান লিপির দিকে তাকিয়ে বলে,
” এটাতো শর্ট ফিল্ম, বাকি ফিল্ম দেখবি আমার আস্তানায় গেলে।
ঈশা আবারো চেয়ারে বসে পরে সবাই ভয়ার্ত দৃষ্টিতে ঈশানের দিকে তাকিয়ে আছে।সুলতানা যেন বোবা হয়ে গেছে।আবিদ ঘামছে। পাশ থেকে লিপির বড় মেয়ে থরথর করে ঘামছে লিপির হাজবেন্ড তাজ্জব বনে দাঁড়িয়ে আছে।
ঈশান লিপির মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
“কিরে নিসা আমার বউ হবি?আসলে কি যানিস তোর মতো রাস্তার মেয়েকে আমি আমার মনে জায়গা দিনা। তুই কয়টা ছেলের সাথে রুম ডেট করেছিস তার হিসাব তোর নিজের কাছেও নেই।

নিসা মাথাটা নিচু করে নেয়। ঈশান এবার লিপির হাজবেন্ডের দিকে তাকিয়ে বলে,
” আপনি তো ইউএসে আরেকটা বিয়ে করেছেন। কি ঠিক বললাম তো ফুফা?
ঈশান যখন সবার সত্যটা সামনে তুলে ধরছিল আবিদ তখন অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।আবিদের দিকে তাকিয়ে ঈশান বলে,
“আপনি আমার বাবা হোন!সেই দিক থেকে শত অন্যায় করলেও আমি আপনার শাস্তি দিতে পারবো না।আপনার শাস্তি বরং আমার মা দিবে।

সুলতানা ছলছল চোখে আবিদের দিকে তাকায়। আবিদ তার দৃষ্টি সরিয়ে নেয় অন্য দিকে।
” তোর বাবাকে মাফ করে দে ঈশান!
“কিসের মাফ মা? আমার কাছে মাফ বলে কোন শব্দ নেই..!আমি আপনার শাস্তি দিচ্ছি, আজকের পর থেকে আপনার যত সম্পত্তি আছে সবটা আমার মায়ের নামে উইল করে দিবেন।তারপর আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এক কাপড়ে আমাদের জীবন থেকে যাবেন।শেষ বয়সটাতে আমি চাই আপনি নিসঙ্গতায় মরুন।নিজের জীবন সঙ্গীর দাম আপনি দেন নি, মূল্য আপনি দেননি আমি দেখিয়ে দিতে চাই শেষ বয়সে জীবন সঙ্গি ছাড়া জীবন কত কষ্টের।
রাসেল উকিলকে ফোন কর…….
#চলবে…

আগামী কাল গল্প দিতে পারবোনা।

প্রিয় পাঠক সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা❤️
ঈদ মোবারক… ?
?পর্বটা কেমন হয়েছে যানাবেন…!
?হ্যাপি রিডিং…!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here