#টুয়েন্টি_মিনিটস (চ্যাপ্টার-০১)
পর্ব-৯
লেখা: ShoheL Rana শামী
কয়েকদিন কেটে গেল এখানে। রিহান এবার চলে যাবে জাফর মাস্টারদের বাসা থেকে। সেদিনের ব্যাপারটা নিয়ে সুফিয়া বেশ রেগে গিয়েছিল। এই কয়দিন ভালো করে কথাও বলেনি রিহানের সাথে। সামান্য কথায় এত রেগে গেল সে? খারাপ কিছুও তো রিহান বলেনি। শুধু বলেছিল, গুলিটা রস গ্রেগরির বুকেও লাগতে পারতো। রিহান অবশ্য তার রাগ ভাঙিয়ে ক্ষমা পেয়েছে যাওয়ার আগে। সুফিয়া ক্ষমা করে বললো, ‘এবারের মতো ক্ষমা করলাম। পরেরবার কিন্তু ক্ষমা করবো না।’
রিহান হাসলো। হেসে বললো, ‘আপনি মানুষটাকে আমি বুঝতে পারি না। এত রহস্য কেন রাখেন নিজের মাঝে?’
‘মোটেও রহস্য নেই। আমি এমনই।’
‘একটা প্রশ্ন করবো, রেগে যাবেন না তো?’
‘আগে শুনি। রাগার মতো হলে রাগবো।’
‘না, আগে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে রাগবেন না। গ্রেগরি সাহেবকে নিয়ে প্রশ্ন।’
‘বলুন বলছি?’
‘ধরুন, সামনাসামনি দেখা হলো উনার সাথে। উনিও আপনাকে পছন্দ করলেন। বিয়ের প্রস্তাব দিলেন। কী করবেন?’
‘এটা কখনও সম্ভব না। উনি কখনও আমার সামনে আসবেন না।’
‘মনে করতে বলছি। যদি আসে?’
‘আমি রাজি হবো না। আমি উনাকে ভালোবাসি। এটা চাওয়া পাওয়ার ভালোবাসা না। রেসপেক্টের ভালোবাসা। কাজী নজরুলকেও আমি ভালোবাসি। এই দুইজন মানুষকে আমি খুব খুব ভালোবাসি। রেসপেক্ট করি। কেন জানি এঁদের খারাপ সংবাদ নিতে পারি না।’
সেই মুহূর্তে হঠাৎ কিছুটা দূরে চিৎকার চেঁচামেচি শোনা গেল। কী হয়েছে দেখার জন্য দুজনেই গেল ওদিকে। ইতোমধ্যে জটলা বেঁধে গেছে ওখানে। চারদিক থেকে উৎসুক জনতা এসে ভিড় করতে লাগলো। খেলার মাঠে খেলা থামিয়ে ছুটে আসতে লাগলো ছেলেরা। বাচ্চারা প্রতিযোগিতা দিয়ে ছুটছে কার আগে কে পৌঁছে ঐ জটলায়। ভিড়ের কারণে ঘটনা কী অনুমান করা গেল না। একটা লোকের আর্তনাদ শোনা গেল ভিড়ের ভেতর থেকে। তাকে ধরে উত্তম-মধ্যম দেয়া হচ্ছে হয়তো। একটা লোক তখন চিৎকার করে অন্য একজনকে জিজ্ঞেস করলো, ‘ঐ মনু, কী হয়ছে রে ওইহানে? চোর নাহি রে?’
‘না, জলিল ভাই। ব্রিটিশ ধরা পড়ছে, ব্রিটিশ। তুমিও আহো, কয়েকডা লাথি-ঘুষি চালাও।’
জাফর মাস্টার এলেন ঘটনাস্থলে। বাবাকে দেখে এগিয়ে গেলেন সুফিয়া। সুফিয়া ঘটনাটা জানালো বাবাকে। তখন মাস্টার সাহেব জনতার উদ্দেশ্যে বললো, ‘থামো, থামো… কী হচ্ছে এখানে।’
এলাকার সবার কাছে জাফর মাস্টারের আলাদা একটা সম্মান আছে। তাই মাস্টার সাহেবের কণ্ঠ শুনেই ভিড়টা সরে গিয়ে জায়গা করে দিলো উনাকে। ভিড় সরতেই দেখা গেল একজন ব্রিটিশ রক্তাক্ত অবস্থায় আহত হয়ে পড়ে আছে। ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে তার। ঘনঘন হাঁপাচ্ছে। নড়াচড়া করারও শক্তি নেই।
জাফর মাস্টার লোকটার পাশে গিয়ে বসলেন। লোকটাকে কিছুক্ষণ খুঁটিয়ে দেখলেন। তারপর জনতার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘লোকটাকে এভাবে মারলে তো মারা যাবে।’
‘মাস্টার সাব, লোকডারে বাঁচায় রাইখা কী হয়বো। আমাগোরে বহুত জ্বালায় আসছে এরা। এই ব্রিটিশরা।’ জনতার কণ্ঠে ক্রোধ প্রকাশ পেল।
জাফর মাস্টার এবার দাঁড়িয়ে বললেন, ‘লোকটা বিপদগ্রস্ত। বিপদগ্রস্ত কোনো লোককে এভাবে মারাটা কাপুরুষদের কাজ। লোকটাকে মেরে ফেললে তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য আর কী থাকলো?’
জনতার ক্রোধ কিছুটা কমলো এবার। জাফর মাস্টার ব্রিটিশ লোকটাকে তুলে বসালেন। লোকটা ইশারায় পানি চাইলো। মাস্টার সাহেব তার জন্য পানির ব্যবস্থা করলেন। একপাশে দাঁড়িয়ে রিহান মুগ্ধ হয়ে দেখলো মাস্টার সাহেবের মহানুভবতা। যে ব্রিটিশরা তাঁর বোনের পুরো পরিবারকে নির্দ্বিধায় মেরে ফেলেছিল, সেই ব্রিটিশদের একজনকে পেয়ে এভাবে যত্ন করছেন। রাগ বা ক্রোধ কিছুই নেই উনার মাঝে। স্নেহের চোখদুটো বেয়ে তার দরদ উগলে পড়ছে ব্রিটিশ লোকটার জন্য। লোকটার গায়ের ছেড়া জামা খুলতে খুলতে তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘এভাবে কেউ কাউকে মারে? লোকটার জামা পর্যন্ত ছিড়ে কী অবস্থা হয়েছে দেখো।’
‘মাস্টার সাব, লোকডার জামা আগে থেইকা ওরহম ছেড়া আছিলো।’ জবাব দিলো একজন।
‘তারমানে লোকটা আগে থেকেই অসহায় ছিল। আর সবাই মিলে তোমরা একটা অসহায় লোকের সাথে এরকমটা কীভাবে করতে পারলে?’
সবাই এবার লজ্জায় মুখ নিচু করে ফেললো। গায়ের ছেড়া জামাটা খুলতেই দেখা গেল লোকটার পেটের চামড়া আর পিঠের চামড়া এক হয়ে আছে। কতদিন যে অভুক্ত ছিল আন্দাজ করা কঠিন। জাফর মাস্টার মেয়ের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘সুফিয়া, যা তো মা, লোকটার জন্য খাবার নিয়ে আয়। আর পরনের কাপড় নিয়ে আসিস।’
সুফিয়া দৌড় দিলো খাবার আর কাপড়ের জন্য। জাফর মাস্টার এবার লোকটার গোসলের ব্যবস্থা করলেন। নিজ হাতেই গোসল করালেন তিনি তাকে। কতদিন যে গোসল করেনি সে বলা যায় না। চুল-দাড়িগুলো লম্বা হয়ে কেমন যেন হয়ে আছে। হঠাৎ এমন যত্ন পেয়ে লোকটা কেঁদে ওঠলো হু হু করে। তবে এ কান্না ব্যথার নয়।
খাবার খেয়ে লোকটা কিছুটা যেন শক্তি পেল গায়ে। তারপর এক লোমহর্ষক কাহিনি বর্ণনা করলো ইংরেজিতে। জাফর মাস্টার পরে বাংলায় বুঝিয়ে দিলেন সেটা সবাইকে।
ব্রিটিশ সেনাটার নাম সেলিকোস। আগের বছর বার্মা-থাইল্যান্ড সীমান্তে যুদ্ধরত অবস্থায় জাপানি সেনাদের হাতে বন্দী হয়েছিল সে। থাইল্যান্ডে তাকে কারাবন্দী হিসেবে রাখা হয়। ওখানে হাজার হাজার কারাবন্দীদের সাথে কাটতে থাকে সেলিকোসের বন্দীজীবন। বন্দীদের সাথে জাপানি সেনারা মোটেও ভালো ব্যবহার করে না। সকল বন্দীদের দিয়ে ওরা অনেক কঠিন কাজ করায়। থাইল্যান্ড থেকে বার্মা পর্যন্ত একটা রেললাইন নির্মাণ করতে ওরা বন্দীদের বাধ্য করে। এই রেলওয়ের নাম রাখে ওরা ‘ডেথ রেলওয়ে।’ পাহাড় কেটে, জঙ্গল সাফ করে এটির নির্মাণ কাজ চলে। ঠিকমতো বন্দীদের খাবারও দেয় না ওরা। অনাহার, অর্ধাহারে থেকে বন্দীরা রেললাইন নির্মাণে পরিশ্রম করে যায়। বন্দীরা বেশিরভাগ ব্রিটিশ ভারতীয়, অস্ট্রেলিয়ান, চীন এবং ইংল্যান্ডের। যুক্তরাষ্ট্রেরও আছে কিছু কিছু বন্দী। ঝড়-বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়াতেও চালিয়ে যেতে হয় তাদের পরিশ্রম। রোগ-বালাই হলে কেউ দেখার মতো নেই ওখানে। চোখের সামনে সেলিকোস দেখেছে হাজার হাজার মৃত্যু। বন্দীরা দুর্বল হয়ে যখন কাজ থামিয়ে ফেলে, তখন তাদের গায়ের জামা খুলে অত্যাচার করা হয়। অনেকে এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা যায়। তারপর মৃতদের দেয়া হয় গণকবর। একবছর বন্দী হিসেবে ওখানে জীবন কাটিয়ে গতমাসে সেলিকোসের পালানোর সুযোগ হয়। প্রথমে সে পালিয়ে বার্মায় আসে। এখানে ওখানে রাত কাটিয়ে, ফেলা দেয়া খাবার খেয়ে সে আজ এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে।
পুরো ঘটনা শুনে সকলের মনে এবার সেলিকোসের জন্য দয়া হতে লাগলো। কেউ কেউ এই অবস্থায় মারার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলো ওর কাছে। ওরা সবাই মিলে ওর থাকার ব্যবস্থা করবে এখানে। পরে সেলিকোস ফিরে যাবে নিজ গন্তব্যে।
রিহান এবং সুফিয়া পাশাপাশি দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনা শুনছিল। শুনে সবার মতো তাদের ভেতরটাও কেমন যেন কোমল হয়ে ওঠলো। সুফিয়া অস্ফুটে বলে ওঠলো, ‘এমন বন্দীজীবন যেন কারও না হয়।’ তারপর রিহানের দিকে ঘুরে বললো, ‘আপনি একটু সাবধানে থাকবেন, প্রায় ওদিকে ব্রিটিশদের আনাগোনা হবে। জাপান-জার্মান সেনা হোক বা ব্রিটিশ সেনা হোক, সবাই কিন্তু একই। এরা নিজেদের স্বার্থটাই আগে দেখে।’
‘আসি তবে আমি। হুমম?’ কৃত্রিম হাসলো রিহান।
‘সাবধানে যাবেন। আর একবেলা খাবার না পেলে কী করবেন মনে আছে তো?’
‘হুমম…’
‘এই নিন পাঁচ পয়সা, এটা রাখুন। গাড়ি ভাড়া।’ আঁচলের গিট খুলে পয়সা দিলো সুফিয়া। রিহান জাফর মাস্টার এবং সুফিয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলো জাকারিয়া সাহেবদের বাসায়। জাকারিয়া সাহেব অবশ্য রিহানের ব্যাপারের জানতে চেয়েছিল এতদিন সে কোথায় গিয়েছিল। তবে তার ব্যাপারে কেউ এতটা ভেবেছে বলে মনে হলো না। রিহান বুঝলো, তার পূর্বপুরুষদে মাঝে আন্তরিকতার বড্ড ঘাটতি ছিল।
আরও কিছুদিন কেটে গেল। রিহান ঐদিনের পর সুফিয়াদের ওদিকে যায়নি। একবেলা খাবার না পেলেও যায়নি। কয়েকদিন ওদের বাসায় থেকে এসেছে, এরই-মাঝে আবার গেলে ব্যাপারটা খারাপ দেখায়। সুফিয়াকে দেখার ইচ্ছে হলেও মনকে সামলিয়ে রেখেছে সে। মেয়েটার সাথে বড্ড মিশে গেছে। যেটা অনুচিত। সুফিয়ার সাথে এক হওয়া কখনও সম্ভব নয়, বয়সের দিক দিয়েও সুফিয়া তার চেয়ে কয়েক যুগ বড়ো। তাছাড়া রিহানের বিয়ে অলরেডি ঠিক হয়ে আছে। আচ্ছা, রিহান যে এতদিন এখানে আটকে আছে, ঐ মেয়েটার কী হলো পরে, যার সাথে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল? এনগেজমেন্টে তাকে না পেয়ে হয়তো মেয়েটা প্রতারক ভেবেছে, রিহানের পরিবারকে নানা কথা শুনিয়েছে। তারপর হয়তো অন্য জায়গায় বিয়ে করে নিয়েছে এতদিনে। অনেকদিন তো হয়ে গেল রিহান এই পরিস্থিতিতে আটকে আছে। আচ্ছা, সে কি তার যুগে ফিরতে পারবে কখনও?
বাইরে একটা গাছের ডালে হেলান দিয়ে আনমনে ভেবে চলেছে রিহান। পরিবারের কথা খুব মনে পড়ছে তার। এখানে পূর্বপুরুষদের পেয়েছে, তাই হয়তো কষ্ট কিছুটা কম হচ্ছে। তবুও এটা তো তার জীবন নয়। নিজের জীবন থেকে কতটা পিছিয়ে এসেছে সে! চোখ বেয়ে আনমনে জল বেরিয়ে এলো তার। এখানে সে এই পরিবেশের সাথে নিজেকে মানাতে চেষ্টা করে, কিন্তু যখনই একা হয়, আবার মনে পড়ে যায় তার সময়ের কথা, তার সুন্দর একটা জীবনের কথা।
চোখ মুছে তাকালো রিহান জাকারিয়া সাহেবদের বাড়ির দিকে। ওখানে সবাই মিলে একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। জাকারিয়া সাহেবের মৃত এক ভাইয়ের ছেলে রিহানের বয়সী। নাম কমল। কয়েকদিন আগে যখন ব্রিটিশরা এখানে যুবকদের প্রশিক্ষণ দিতে এসেছিল, সেই সময় কমল তাদের নজরে পড়ে। শক্ত-সামর্থ্য গায়ের গঠন দেখে তারা তাকে পছন্দ করে। একজন ব্রিটিশ সেনা কমলকে ডাক দিলে, কমল সেই ব্রিটিশ সেনাকে একটা পাথরের টুকরো ছুড়ে মেরে পালিয়ে যায়। পাথরটা ঐ সেনার কপালে লেগে অনেকাংশ কেটে যায়। সেই থেকে ব্রিটিশ সেনারা কমলকে ধরার জন্য বেশ কয়েকবার এখানে এসেছে। কমল প্রতিবারই পালিয়ে বেঁচেছে। এখন কমলকে কীভাবে ব্রিটিশদের হাত থেকে রক্ষা করা যায়, সবাই মিলে সেই আলোচনা করছে উঠোনে বসে। ওই আলোচনায় রিহানের কাজ নেই। পুরো আলোচনাটাই অর্থহীন হয়তো। কারণ রিহান তার দাদির কাছে শুনেছিল, কমল নামে দাদির এক চাচাকে ব্রিটিশরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তার জন্মের মাসখানেক পর। সেই চাচাকে পরে কখনও আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। রিহান তথ্যটা গোপন রাখলো নিজের কাছে। তথ্যটা ফাঁস করলে পরবর্তী ঘটনার জন্য জাকারিয়া সাহেব আবারও তাকেই দায়ী করবেন। যেমনটা দায়ী করেছেন ঐ সময় মেয়ে সন্তান জন্ম হওয়ার জন্য।
আকাশে জোরে গর্জন শোনা গেল। মেঘের গর্জন নয়। দুটো যুদ্ধ বিমান একটা আরেকটাকে তাড়া করছে। কয়েকমুহূর্ত পরপর পেছনের বিমান থেকে আগুনের গোলার মতো কী একটা ছুটে যাচ্ছে। প্রায়সময় আকাশে এরকম যুদ্ধ বিমান দেখা যায়। তখন কেউ বাইরে থাকে না। বাচ্চারা বাইরে খেলাধুলা করলে খোঁজ করে তাদের ঘরে নিয়ে যায় পরিবারের বড়োরা। এবারও তাই হলো। বাইরের সবাই সকল কাজ ফেলে ভেতরে দৌড় দিলো। জাকারিয়া সাহেবরাও আলোচনা শেষ করে দ্রুত ঘরের ভেতর ঢুকে গেলেন। রিহান ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকলো ওখানে গাছে হেলান দিয়ে। মনটা তার ভীষণ খারাপ আজ। আকাশের ঐ আগুনের একটা গোলা যদি এই মুহূর্তে তার উপর এসে পড়ে, তবে কি সে মারা যাবে? আচ্ছা, কোনোভাবে যদি সে এইখানে মারা যায়, তবে কী হবে? ১৯৯০ সালে যার জন্ম, সে ১৯৪২ সালে মারা যাবে? কেউ হয়তো ব্যাপারটা এমনভাবে ভাববে না। আচ্ছা, পোস্টমর্টেমে কি জানা যাবে এসব? যদি জানা যায়, তবে সে একটা ইতিহাস হয়ে রবে।
যুদ্ধ-বিমানদুটো এখনও চক্রাকারে তাড়া করছে আকাশে, ঠিক রিহানের মাথার উপরে। রিহান ভয় পাচ্ছে না। সে চাইছে, তার উপর কিছু একটা এসে পড়ুক। এতে অন্তত সবকিছুর অবসান হতে পারে। হতে পারে সে আবারও তার যুগে ফিরে যাবে। অথবা ফিরতে না পারলে এখানেই তার মৃত্যু হবে। অন্তত নিজের কাছে সে ইতিহাস হয়ে মরবে।
রিহানের ইচ্ছেটা হয়তো বিধাতা শুনেছে। সেই মুহূর্তে বিকট শব্দ হলো আকাশে। পেছনের বিমান থেকে ছুটে গিয়ে সামনের বিমানে লেগেছে একটি আগুনের গোলা। সেই বিমানের একটি অংশ ভেঙে পড়তে লাগলো নিচে, ঠিক যেখানে দাঁড়িয়ে আছে রিহান। গাছের শাখা ভেদ করে ওটা এসে পড়লো রিহানের উপর। মুহূর্তেই ঢলে পড়লো সে। জ্ঞান হারানোর আগে সে মনে করলো সুফিয়ার কথা। সাবধানে থাকতে বলেছিল সুফিয়া। রিহান কথা রাখতে পারেনি।
[[চলবে…]]
(আজ কি গল্প নিয়ে কোনো অভিযোগ আছে?)