You_are_mine season_2 Poly_Anan part_9

0
1789

You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_9

“কি রে ঈশা হঠাৎ ক্ষেপে গেল কেন তুই কিছু বলেছিস?(রাসেল)
ঈশান এখনো স্তব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কোথা থেকে কি হয়ে গেলো সে সব কিছুর সমীকরন মেলাচ্ছে। কিন্তু না মিলছেনা তখন ঈশার বিয়ে করার বিষয়টা শুনে ঈশান ধমক দিতে পারতো কিন্তু মারলো কেন এটা তো ঠিক করেনি সে।
” কিরে কথা বলছিস না কেন তুই?আমি কিছু জানতে চেয়েছি।
“রাগের মাথা ঈশার হাতে বেত্রাঘাত করেছি(শান্ত কন্ঠে)
” কি..?পাগল হয়ে গেছিস তুই।
“মেরেছি বেশ করেছি, কি বলেছে যানিস পড়া লেখা করবেনা, বাবাকে গিয়ে বলবে তাকে যেন বিয়ে দেওয়া হয়।বিয়ে করবে ঠিক তবে আমাকে করবেনা। আমার থেকেও পার্ফেক্ট ছেলে খুযে তিনি বিয়ের পিরিতে বসবেন!
” আরে ও বলবেই তাতে তুই ওকে মারবি।পাগল হয়ে গেছিস তুই।তোদের দুজনের বিয়ে হয়ে গেছে আর কোন ভয় নেই ঈশান।
“কিন্তু ঈশাতো যানেনা আমাদের বিয়ের কথা..!
” ঈশাকে এই মূহুর্তে বিয়ের কথাটা বলিস না।যা হয়েছে তা শুধু আমাদের দুজনের মাঝেই রাখ।
“আমি আগেই বলেছি,ঈশাকে এই মূহুর্তে আমি যে তাকে ভালোবাসি সেই কথা বলবো না চার বছর দৈর্য্য ধরেছি দরকার পরলে আরো কয়েক মাস দৈর্য্য ধরবো।তবুও তার পড়াশোনাটা যেন ঠিক ঠাক ভাবে চলে কারন এই সময়টাতে পাগলামি করা চলবেনা।

” কিন্তু তুই নিজেই তো বলে দিলি দোষ কার এবার তুই নিজেই বল?
” যানিনা আমার সেদিন কি হয়েছিল,কেন আমি তার মাঝে নিজেকে নিজের অজান্তেই জড়িয়ে নিয়েছি, কেন তার বৃষ্টি ভেজা সেই চোখ দুটোর উপর আরেক বার প্রেমে পড়েছি। সেই বৃষ্টিটা আমার জীবনের ছন্দ ফিরিয়ে আনলেও ঈশার জন্য বিষয়টি খারাপ হয়েছে কারন সে এখনা আর আমাকে একটুও ভয় পায় না। বিশ্বাস কর ভাই আগে আমার কথায় উঠতে বললে উঠতো বসতে বললে বসতো এখন সে আমার কথা কানেই নেয় না।
“এখন কি করবি রাগ ভাঙ্গাতে যাবি না?
” কি হচ্ছে হতে দে। এক্সামের কারনে বেচে গেছে না হলে বুঝিয়ে দিতাম এই ঈশান শাহরিয়ার কি..!

বাসায় এসে ঈশা চুপ চাপ গম্ভীর হয়ে গেছে।ঈশানের উপর তার ভীষন অভিমান হয়েছে। কি করে পারলো ঈশান তাকে আঘাত দিতে।একটুও ভালোবাসেনা তাকে,একটু ও না। যা দেখায় সব তার অভিনয়।ঈশা দ্রুত পার্স থেকে ফোন বের করে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য হাতে নেয়। কিন্তু তখনি একটি ঝটকা খায় ২০০+মিস কল।৫০+মেসেজ। ঈশা মনে মনে সিধান্ত নিয়ে নিয়েছে ঈশানের সাথে সে এই এক মাস কথা বলবেনা।মন দিয়ে পড়াশোনা করে ঈশানকে দেখিয়ে দেবে সে কেমন ছাত্রী। তাই দ্রুত ফোন অফ করে নেয়।

রাতের দশটা, হাতে কফির মগ নিয়ে বইয়ে মুখ গুজে বেশ মনো্যোগ দিয়ে ঈশা পড়ছে তখনি তার রুমে ডুকে অনু,
“ঈশা…!
” কি সমস্যা তোর পড়ালেখা নাই?এখানে কি তোর..?
“আরে ছাদে যাবি চলনা প্লিজ আজ যানিস কি সুন্দর বাতাস বইছে পরিবেশ টা আজ শীতল.. আমার পড়ায় মন বসছেনা মুড সুইং হচ্ছে চল না ছাদে যাই।
” বাবা বকবে আমায় আমি যাবো না তুই যা।
“এমন একটা ভাব করছিস যেন আগে কখনো এত রাতে আমরা ছাদে যাই নি।এর আগেও অনেক বার একা দুজনে মিলে গিয়েছে। বেশ রাত করে আড্ডা দিয়েছি তাহলে…?
” অনু তখন পূর্ণিমা ছিল আজ কি পূর্ণিমা?(বিরক্ত হয়ে)
“পূর্ণিমা না হলে কি হয়েছে আজ আকাশে চাদঁ তো উঠেছে। চিকন সরু একটা চাঁদ উঠেছে দেখতে বেশ মায়াবী চল না প্লিজ..!
” আমি যাবো না আমায় বিরক্ত করিস না প্লিজ..!
“তুই আমার কথা রাখবি না এতটা পালটে গেলি তুই?(কান্নার অভিনয় করে)
” উফফ চলতো.. ভাল্লাগেনা তোর এইসব ছাই পাস আবদার।

ঈশা অনু দুজনেই ছাদের দিকে পা বাড়ায়।পুরো ছাদের কোনায় রেলিংএ নিয়ন বাতি জ্বল জ্বল করছে। কোনায় কোনায় ফ্লাটের অনন্য সদস্যদের কিছু ফুলের টবে ফুল গাছ লাগানো।কিছু গাছে ফুল ফুটেছে। মস্তবড় খোলা আকাশের উপর মিষ্টি করে হেসে আছে চাঁদটি।হালকা বাতাসে ঈশার কানের সামনের চুল গুলো উড়ছে। কাঠি দিয়ে খোপা করা চুল গুলো তার ইচ্ছে করছে খুলে দিতে।কিন্তু সেই ইচ্ছা অপূর্ণ রাখে সে।তাদের ফ্লাটের পাশেই আরো বেশ কিছু ফ্লাট। ঈশা অনু দুজনেই রেলিং ঘেসে দাঁড়ায়।

“কিরে কেমন লাগছে..? (অনু)
” হুম ভীষন ভালো, বলতে পারিস যেন অন্যরকম প্রশান্তি।
“তোর প্রশান্তিটাকে যদি আর দিগুন করে দি..
” মানে?
“না কিছু না চোখ বন্ধ করে মূহুর্তটা ইঞ্জয় কর।দেখ কি সুন্দর শীতল বাতাস চারিদিকে।

ঈশা সত্যি সত্যি চোখ বন্ধ করে নেয়।সত্যি মন মেজাজ খুব ভালো হয়ে গেছে। প্রশান্তি ছেয়ে গেছে হৃদয় জুড়ে।
কিছুক্ষন পর ঈশা অনুভব করে তাকে পেছন থেকে কেউ আলতো জড়িয়ে ধরেছে।মানুষটির শ্বাস প্রশ্বাস ঈশার ঘাড়ে গিয়ে ঠেকছে। কান আসছে মানুষটির বা পাশের ধুক ধুক করা শব্দটি। তখনি কানে আসে মানুষটির বলা কিছু কথা

যত দূর যাই যানি না,তো কবে…
জেনে রেখো শুধু ফের দেখা হবে….!(গান)

ঈশা সাথে সাথে চোখ খুলে পাশে তাকায় অনু নেই…!তাকে কে জড়িয়ে ধরেছে?পেছনের মানুষটি ঈশার চুলের কাঠি খুলে দেয়,রেশমি চুল গুলো তখনি হাওয়ায় দোল খেতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে ঈশা পেছনে ঘুরতে নিলেই মানুষটির সাথে বেশ জোরেই ধাক্কা লাগে।
“এত ছটফট করছো কেন ওয়াইফি(ঈশার কানের সামনে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে)
ঈশা পুরো জমে গেছে। তার মুখ থেকে অস্পষ্ট স্বরে বেরিয়ে আসে,
” আয়ায়া..প..নি?
“হুম আমি, কেন তোমার আশে পাশে আমি ছাড়া আর কাকে আশা করছো?
” আপনি এখানে কেন?
“তুমি যেখানে আমি ও সেখানে এই কথা আর কত দিন বুঝাবো তোমায়।

ঈশা এবার ঝটকা দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।
” ভালোয় ভালোয় বলছি এখান থেকে চলে যান..?
“যাবো না কি করবে..?
” আমি কি সিকিউরিটি ডাকবো?
“এতে তোমারি লস সবার কাছে তোমার বদনাম উঠে যাবে বলবে একা একটা মেয়ে এত রাতে ছাদে কি করছে?
ঈশা চারিপাশে তাকিয়ে অনুকে খুজতে থাকে।কিন্তু অনুর চিহ্ন ও পাওয়া যাচ্ছেনা।
” শালিক পাখিকে খুজছো? লাভ নেই, তাকে আগেই আউট করে দিয়েছি।
“মানে?
” বুঝবেনা তুমি এসো দেখি সামনে এসে দাঁড়াও এতো দূরে কেন তুমি (ঈশার সামনে এগিয়ে)

“খবরদার কাছে আসবেন না। আপনাকে এখানে ডুকতে দিলো কে…?
” তোমার ঈশানকে কি তুমি যেনো তেনো লোক ভাবো! দূর এইসব কথা বাদ আগে আমার কথা শুনো।তোমার হাতের কোথায় ব্যথা লেগেছে দেখি!
ঈশা তার হাত পেছনে আড়াল করে বলে,

“দেখতে হবেনা।এখানে কি এসেছেন আগের মতো ভাব জমাতে..(মুখ ভেংচে)
” উহু বেশ বক বক করলে আরেক হাত একদম ভেঙ্গে দেবো ফাজিল মেয়ে।
ঈশা অন্যদিকে মুখ সরিয়ে নেয়।ঈশান ঈশার হাত টেনে তার সামনে দাড় করিয়ে বলে,
“শোন ঈশা যে ভালোবাসবে সে বকবে মারবে, আবার আদর করে তা পুষিয়ে দেবে।যার ভালোবাসার অধিকার আছে তার নিশ্চই শাসন করার অধিকার আছে।আমি আর আসবো না প্রমিস। তোমার সাথে আর দেখা করার জন্য পাগলামো করবো না।এই কয়েক দিন তোমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ আমি চাই এই মূহুর্ত গুলোকে তুমি কাজে লাগাবে।

ঈশা এবার ঈশানের দিকে একপলক তাকায়।কত সুন্দর করে বুঝিয়ে কথা বলে লোকটা। তার কথার প্রেমে ঈশা যে কয়বার পরেছে তার হিসেব নেই।কিন্তু রাগটা যদি কন্ট্রোল হতে তবে খুব ভালোই হতো।কিন্তু না মহারাজার রাগ থাকবে আকাশচুম্মুক।
“এই আমি তোমাকে বলছি কথা গুলো তুমি কোন ভাবনায় পরলে(ধমক দিয়ে)
” ন..না কিছু না।
“হুম। যা বলেছি মন দিয়ে মানবে কথা গুলো ,এসো আমার আদর পট্টি টা দিয়ে যাই।
” মানে..? (প্রশ্নবিদ্ধ চোখে)
ঈশান ঈশার হাত টেনে ঈশার কপালে ভালোবাসার পরশ একে দেয়।যে হাতে আঘাত করেছে সেই হাতে একবার আলতো করে ছুয়ে দেয়।
“এবার যাও….!
ঈশার যেতে মন চাইছে না। অদৃশ্য ছায়া যেন তাকে আটকে রেখেছে।
ঈশা কিছুদূর গিয়ে আবারো ছুটে এসে ঈশানকে জড়িয়ে ধরে,
” আমি আপনাকে মিস করবো খুব মিস করবো(ছল ছল চোখে)
“আমিও করবো ঈশু পাখি..!তবে আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন বুঝলে পাখি।
” আপনার সাথে আমার হয়তো ফোনেও কন্ট্রাক কম হবে কারন বাবা প্রত্যক এক্সামের আগে মোবাইল নিয়ে যায়।
“গুড আমার শশুর মশাই এই কাজটা খুব ভালো করেন।এতটা মিস করতে নেই ওয়াইফি যদি আল্লাহ আমাকে তোমার আগেই নিয়ে যায়…!

ঈশা আরো শক্ত করে ঈশানকে জড়িয়ে ধরে।
” না আমি মানবো না আমার আপনাকে চাই,যেকোন মূল্যে,.
“তুমি আমাকে ছেড়ে গেলেও আমি তোমায় ছেড়ে যাবো না ঈশা, এটা মাথায় রেখো। যাও বেশি রাত হয়ে যাচ্ছে।

ঈশা মাথা তুলে ঈশানের দিকে তাকায়।আর দ্রুত ছাদ থেকে চলে যায়।

কেটে গেছে বেশ কয়েকটি দিন ঈশা নিজের পড়াশোনায় একদম ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কিন্তু এই ব্যস্ততার মাঝে ঈশান যেন কিছুতেই তার ভাবনা থেকে যাচ্ছে না।তিন চারদিনে একবার তাও ঈশানের সাথে ঈশার কথা হয়।
রাতের দুইটা, পরিক্ষার বাকি আরো নয়দিন।তাই ঈশা এতো রাত জেগেও পড়া শেষ করছে। মনের মাঝে এক ঘেয়েমি চলে আসায় হাত দুটোকে উপরে উঠিয়ে হাই তুলে বারান্দার দিকে পা বাড়ায়।
চারিদিকের স্তব্দ পরিবেশটা পরখ করে তার চোখে পরে নিচে কেউ একজন গাড়ির উপর বসে ঈশার বারান্দার দিকে তাকিয়ে আছে।রাস্তা থেকে ঈশার বারান্দা স্পষ্ট দেখা যায়।ঈশা ভালো করে পরখ করলে অবয়টি চিনতে তার মোটেও দেরি হয় নি।সাথে সাথে ঈশার বুকের ভেতরটায় ধুক করে উঠে।
” এতো রাতে উনি কি করছেন এখানে..?
দ্রুত বিছানার পাশ থেকে ফোন নিয়ে ঈশান কে ফোন করে,
“হ্যা বলো পড়া শেষ তোমার?
” আপনি এত রাতে আমার বাসার নিচে কি করছেন?
“আমার ভালো লাগছে না ঈশা।ঘুম ও আসছে না তুমি কত রাত জেগে পড় একা একা তাই তোমাকে সঙ্গ দিতে চলে এলাম।
” আজব..!কিসের সঙ্গ আপনি যান।
“চলে যাবো, তুমি ঘুমাতে গেলেই চলে যাবো।
” আচ্ছা আপনি এমন করছেন কেন বলুন তো এলাকার মানুষ আমায় খারাপ ভাববে।
“দূর তোমার এলাকার মানুষকে তোমার থেকেও আমি রগে রগে চিনি যারা নাক গলাবে তাদের টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেবো যেমনটা করেছি তোমাদের সিকিউরিটির সাথে।

” এইভাবে এখানে বসে থেকে আপনার কি লাভ?
“যানি না আমি।তবে এর আগেও তিন দিন এসেছি তোমার রুমের লাইট অফ হলেই চলে যাই।

ঈশা এবার বড় করে একটা শ্বাস নেয়। আর কিছু বলার নেই তার।সে যানে সে একজন পাগলের প্রেমে পরেছে।
” আমি ঘুমতে গেলাম। আশা করি আপনিও যাবেন।
“গুড নাইট ঈশু পাখি
” হুম গুড নাইট…

ঈশা অনু দুজনেরি পরিক্ষা শেষ।এর মাঝে ঈশানের সাথে তাদের আর দেখা হয় নি।পরিক্ষা শেষ হয়েছে দুইদিন হতে চললো ঈশান আর রাসেল কয়েক দিনের জন্য ইউএস তাদের বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে যায়।আজ তাদের ফেরার কথা।তাই ঈশার মাঝে তীব্র উত্তেজনা হচ্ছে। ঈশান আসবে তাদের আবারো দেখা হবে।ভোরের দিকেই ঈশানের পৌছে যাওয়ার কথা কিন্তু ঈশা এখনো ঈশানের কোন খোজ পায় নি এখন দুপুর দুইটা।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তৈরি হচ্ছে ঈশান তখনি তার রুমে ডুকে সাইফ আর নাজিম।

“হেই ব্রো কি অবস্থা..?(সাইফ)
” ভালো তোদের কি অবস্থা?
“হুম বেশ ভালো।কই যাচ্ছো?চলো আজকে আড্ডা দেবো।
” না একটু কাজ আছে রাতে ফিরে এসে আড্ডা দেবো।
“কই যাচ্ছো তুমি আই মিন ঈশার সাথে দেখা করতে?
” হুম…(আয়নার দিকে তাকিয়ে)
কথা শুনেই নাজিম আর সাইফ ঘর কাপিয়ে হেসে উঠে।তাদের হাসি দেখে ঈশান কিছুটা অবাক ভঙ্গিতে তাকায়।
“কোন সমস্যা তোদের.?(ভ্রু কুচকে ঈশান)
” পুরাই সমস্যা, আমরা বললে তো বিশ্বাস হবে না তোর তাই কিছু বললাম না।
“কি হয়েছে?
” না কিছু না..!
“তোরা বলবি, আমার কিন্তু এখন মাথা গরম হচ্ছে।
সাইফ পকেট থেকে ফোন বের করে ঈশানের দিকে ধরে।ঈশান ভ্রু কুচকে তাকানোর কিছুক্ষন পরেই ঈশানের মুখের ভাব পালটে যায়।ঈশান কে দেখে বেশ বুঝা যাচ্ছে সে রেগে গেছে।

” এইসব ছবি তোরা কোথায় পেয়েছিস..?
“কাল শহর থেকে একটু দূরে নদীর পারে গেছিলাম হাওয়া খেতে তারপর এইসব দেখি। তখন আমরা দ্রুত ছবি তুলে নিয়েছিলাম।ছবি তে তুই দেখতেই পাচ্ছিস তোর ঈশা কি করে অন্য ছেলেকে জড়িয়ে আছে,, থাক আমি আর কিছু বলবো না…..(সাইফ)

ঈশান চুপ চাপ দাড়িয়ে কি যেন ভাবছে তবে চেহারা জুড়ে এখনো রাগের ছাপ বিদ্যমান।
” শোন ঈশান আমাদের কথা তো তোর কানে নিস না। এইসব মেয়ের ডান হাতে একজন আর বাম হাতে একজন থাকে।তাই বলি কি পচাঁ শামুকে তুই আর পা কাটিস না। সময় আছে এই পথ থেকে বেরিয়ে আয়। সাইফ চল.. কাজ আছে আমাদের।
সাইফ নাজিম দুজনেই বেরিয়ে যায় ।কিছুক্ষন পর ঈশান গাড়ির চাবি নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায়।
(গল্পটি লেখনীতেঃপলি আনান)

“ঈশা পাচঁ মিনিটের মধ্যে নিচে এসো..?(ঈশান)
” এখন..!বাবা ঘরে আমি এখন বের হতে পারবো না।
“তোমাকে আমি পাচঁ মিনিট সময় দিলাম তুমি আসবে না হলে আমি তোমাদের ঘর থেকে তোমাকে নিয়ে আসবো।

কথাটি শুনেই ঈশা আত্নৎকে উঠে।কি বলছে এইসব।
” আপনি এমন করছেন কেন বিকেলে আমরা বের হবো এখন পারবো না আপনি যান প্লিজ।
“তুমি আসবে নাকি আমি উপরে আসবো।
” আমি একা আসবো?
“হুম একা অনুকে আসার প্রয়োজন নেই।
” ওকে।
ঈশা দ্রুত রেডি হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। কিছুটা পথ গেলেই ঈশানের গাড়ি দেখতে পায় আর দ্রুত ঈশানের পাশে বসে পরে।
ঈশা খেয়াল করে ঈশানের ভাব আবেগ গম্ভীর।
“কেমন আছেন আপনি?
” যেমনটা রেখেছো (শান্ত কন্ঠে)
“মানে?
” কিছু না।
ঈশান তার বাড়িতে পৌছে যায়।সঙ্গে সঙ্গে ঈশার ভ্রু কুচকে যায়। ঈশান তাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছে?

ঈশান ঈশার হাত টেনে দ্রুত তার রুমে নিয়ে যায় আর ঠাস করে দরজা আটকে দেয় বেলকনির দরকাটাও আটকে দেয়।এবার ঈশার মনে একটা খটকা লাগে ঈশান কি করছে এইসব।

“আপনি কি করছেন আমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন?
ঈশান চুপ চাপ ঈশার সামনের সোফায় বসে আর তাকে বিছানার উপর বসার জন্য ঈশারা করে।
” তোমার বর্তমানে কয় জনের সাথে রিলেশন চলছে ঈশা?
“কি বলছেন আপনি এইসব (অবাক হয়ে)
” যা যানতে চাইছি তাই বল?(আঙুল দিয়ে কপাল ঘসে)
“আজব আপনি ছাড়া আমার জীবনে আর কেউ নেই.. কি সব প্রশ্ন করছেন আপনি!
এবার ঈশান রাগান্বিত হয়ে দাঁড়িয়ে পরে। হাতে একটি শোপিস নিয়ে ঈশার পায়ের সামনে ছুড়ে ফেলে সঙ্গে সঙ্গে তা ভেঙ্গে চুর মার হয়ে যায়।

“সত্যটা যানতে চাই আমি। তুই কার সাথে এমন জড়িয়ে আছিস…! বল আমি সত্যটা যানতে চাই(ধমক দিয়ে)
“ব..বিশ্বাস করুন আপনি ছাড়া আমার জীবনে আর কেউ নেই। (ভয়ে ঢোক গিলে)
” আবারো মিথ্যা..
এবার ঈশান রুমে থাকা সব কিছু ভাঙ্গতে শুরু করে, ঈশানের রুম থেকে ভাঙ্গাচুরার শব্দ শুনে সার্ভেন্ট রা দরজার সামনে এগিয়ে আসে।এদিকে ঈশা কানে হাত দিয়ে বিছানার উপর সমান তালে কেঁদেই যাচ্ছে।
“সত্যটা বল ঈশা কে ছেলেটি।
” আয়ায়া মি যানি না কি বলছেন আপনি এইসব(অস্পষ্ট স্বরে কাদতে কাদতে)

ঈশান ঈশার দিকে মাথা তুলে তাকায় ঈশানের দৃষ্টি দেখেই ঈশার ভয়ে আত্তা কেপেঁ উঠে।সে দ্রুত নিজের মুখে হাত চেপে কাদতে শুরু করে।তখন রুম কাপিয়ে একটি শব্দ হয় ঈশা চোখ খুলে দেখে ঈশান টেলিভিশন টাকে আছাড় মেরে ভেঙ্গে দিয়েছে। রুম জুড়ে সোফা আর বিছানা ছাড়া কিছু অবশিষ্ট নেই। সব ভেঙ্গে চুর মার।ঈশা যে দৌড়ে পালাবে সেই সুযোগটাও বন্ধ কারন রুম জুড়ে ছড়িয়ে আছে অসংখ্যা কাচ।এসির মাঝেও ঈশানের শরীর ঘামে ভিজে গেছে। ঈশান আবারো সোফায় বসে ঈশার দীকে সুক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে…।কিন্তু ঈশা ঈশানের চোখে কিছুতেই চোখ রাখতে পারছেনা।কাদতেঁ কাদতেঁ তার চোখ নাক মুখ লাল আভা ছড়িয়ে গেছে।

কিছুক্ষন পরেই ঈশানের দরজায় অনু আর রাসেল ধাক্কা দিতে থাকে।একজন সার্ভেন্ট রাসেল কে ফোন করে যানিয়েছে বাড়ির পরিস্থির কথা রাসেল অফিসে ছিল তাই অনুকে আগে থেকেই ফোন করে আসতে বলে,
“ঈশান দরজা খোল কি হয়েছে তুই হঠাৎ সব ভাঙ্গছিস কেন…
……..
” ঈশান প্লিজ দরজা খোল..!
“ঈশা তুই ঠিক আছিস(ঘবড়ে গিয়ে অনু)

অনুর কন্ঠ শুনেই ঈশার দেহে যেন প্রান আসে। সে দ্রুত বলে,
” অনু….আমাকে নিয়ে যা প্লিজ…(অস্পষ্ট স্বরে)

ঈশান এখনো ঈশার দিকে তাকিয়ে আছে। ঈশা একপলক ঈশানের দিকে তাকায়।কিন্তু ঈশার দৃষ্টিতে কোন ঘৃণা নেই যা আছে এক ঝাক অভিমান।
ঈশানকে দরজা খুলতে না দেখে শেষে রাসেল দরজাটা ভেঙ্গে দেয়।রুমের ভেতরের পরিস্থিতি দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়।এই সব কিছুর মাঝে ঈশা বিছানার মাঝখানে বসে আছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে রাক্ষস রাজ্য তাকে বন্ধি করা হয়েছে আর সেই রাক্ষস তার সামনে বসে তাকে পাহারা দিচ্ছে।

“রাসেল ভাইয়া আমি বাড়ি যাবো…(হেচঁকি তুলে ঈশা)
ঈশান এখনো তার মুখের দিকে নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে আছে।
রাসেল কয়েক জন সার্ভেন্ট কে দ্রুত ইশারা করে যেন রুমের একপাশ টা পরিষ্কার করে দেয়। পরিষ্কার করা হলে রাসেল ঈশাকে তার সাথে আসার জন্য ইশারা করলে ঈশান তাদের সামনে এসে বাধা দেয়।
” এই সাহস তুই ভুলেও দেখাবিনা রাসেল, ঈশা আমার সাথেই থাকবে।(শান্ত কন্ঠে)
ঈশানের কথায় ঈশা রাসেলের পেছনে গুটিয়ে যায়।রাসেলের শাটের এক কোনায় খামচে ধরে।এই মূহুর্তে রাসেল ছাড়া তার আর যেন বাচার উপায় নেই।

“অবশ্যই আমি এই সাহস করবো তুই কেন এই পাগলামি করছিস আমি যানি না তবে ঈশাকে এই ভাবে হেনস্তা করা ঠিক হচ্ছেনা।(রাসেল)
” আমি কি ঈশার গায়ে হাত তুলেছি তুই ওকে জিজ্ঞেস কর..!
“আমি যানি ঈশান তার কলিজায় আঘাত করবেনা।কিন্তু এই মূহুর্তে ঈশা যদি আর বিশ মিনিটো এখানে থাকে তবে ভয়ে সে এমনিতেই অর্ধ মরা হয়ে যাবে।

ঈশান ঘাড় ঘুরিয়ে ঈশার দিকে তাকায়। আর ঈশা তার দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেয়।
রাসেল ঈশার হাত ধরে গাড়ির সামনে পৌছে দেয়।অনুকে গাড়িতে উঠতে।দুজনে বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে।
আর এদিকে আড়ালে থেকে দুজন মানুষ আনন্দে আত্নহারা হয়ে গেছে। তাদের প্লানিং সফল হয়েছে তবে……!

রাসেল ঈশানের পাশে দাঁড়িয়ে বলে,
” তুই এমনটা করলি কেন ঈশান..?
রাসেলের দিকে তাকিয়ে ঈশান একটি রহস্য ময় হাসি দেয় এই হাসির আসল কারনটা বোঝার সাধ্য রাসেলের নেই।
#চলবে……..

আপনাদের কি মনে হচ্ছে ঈশানের এইভাবে হাসির কারন কি?।
?পর্বটা কেমন হয়েছে যানাবেন….!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here