তোকে চাই❤part:16/17/18/

0
11429

#তোকে চাই❤part:16/17/18/
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤



উনি আমাকে কোলে নিয়ে হেঁটে চলেছেন,,,,একটাবারও আমার দিকে তাকাচ্ছেন না আর আমি??আমি একদৃষ্টিতে শুধু উনাকেই দেখছি।।।আমার হার্ট খুবই স্পিডলি বিট করছে।।যে জিনিস টা পাবো না জেনেও আমরা চাই,,,সে জিনিসটা হঠাৎই পেয়ে গেলে কি রিয়েকশন দেওয়া যেতে পারে বা কিভাবে নিজের খুশিটা দেখানো যেতে পারে তাই আমরা ভুলে যাই,,,আমার অবস্থাও এখন ঠিক তাই,,,মারাত্মক খুশিতে এই মুহূর্তে যেনো অনুভূতি শূন্য হয়ে পড়েছি ।।।উনাকে এতোটা কাছ থেকে অনুভব করতে পারবো ভাবি নি কখনো।।।ইসসস কি কিউট লাগছে উনাকে,,ফারসা মুখটায় রাগের আভা থাকায় কেমন লালচে হয়ে আছে,,,সিল্ক চুল গুলো হালকা উড়ে এসে কপালে পড়ছে,,,ইচ্ছা করছে নজর ফোঁটা দিয়ে দিই,,যদি কারো নজর লেগে যায় তখন??আমার ভাবনাগুলোর মাঝপথে উনি বলে উঠলেন,,,

এভাবে তাকিয়ে আছো কেন??অন্যদিকে তাকাও,,আমার অস্বস্তি লাগছে,,,

কেনো??অস্বস্তি লাগার কি আছে??চাইলে আপনিও আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন,,আমি মাইন্ড করবো না(ভাব নিয়ে)

একদম বেশি কথা বলবা না,,,,তোমার মধ্যে দেখার মতো কিছু আছে নাকি,,যত্তোসব।।।

আপনি আমাকে অপমান করছেন??(ভ্রু কুঁচকে)

না,,তোমাকে সত্যটা বলছি,,,শুধুমাত্র মার কথা ভেবে তোমাকে কোলে নিয়েছি,,নয়তো এই খানেই ফেলে যেতাম হুহ,,,

তাও তো নিয়েছেন তাতেই আমি খুশি,,(বলেই উনার গালে দিলাম একটা কিস,,,টাইট কিস যাকে বলে)

কিন্তু এরপর যা হলো তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।। উনার গালে ঠোঁট ছোঁয়াতে আমার দেরি হলেও হতে পারে বাট উনার আমাকে ছেড়ে দিতে এক সেকেন্ড দেরীও হলো না।।।আস্ত খাটাস একটা,,,এভাবে কেউ ছেড়ে দেয়??আহহ,,আমার কোমর,,অসভ্য,, ফাজিল,,,পাগলা গন্টী একটা।।

এভাবে ছেড়ে দিলেন কেন??এ্যা এ্যা আমার কোমর(কোমরে হাত বুলাতে বুলাতে)

তুমি যা করছো তার জন্য এটা তোমার প্রাপ্য,,হুহ।।

এএহহ তোমার প্রাপ্য,,(মুখ ভেঙিয়ে)আপনি এতো আনরোমান্টিক কেন শুনি,,,রিভেঞ্জ নিবেন ঠিক আছে,,আমি আপনাকে গালে কিস করছি,,আপনি আমার ঠোঁটে দিয়ে দিতেন,,,তাহলেই হতো।।মুভিতে দেখেন না??নায়ক রাগ পেয়ে নায়িকার ঠোঁটে কিস করে দেই,,হুহ(মুখ উল্টিয়ে)

ঠাডায় একটা চড় বসাবো,,বেয়াদব মেয়ে,,মাথায় কি সমস্যা আছে নাকি??এটা কোনো ফিল্ম না,,,আর তুমিও কোনো হিরোইন না।।।এনিওয়ে আমি তোমাকে কিস করতে যাবো কোন দুঃখে??? পিচ্চি মেয়ে একটা তবু মাথায় যত্তসব বাজে চিন্তা,,,,আর কোনোদিন এসব কথা শুনলে,,,দাঁত একটাও মুখে থাকবে না,,,,থাপড়াইয়া সব ফেলে দিবো।।

দেখুন একদম পিচ্চি পিচ্চি করবেন না বলে দিলাম,,,,আমি মোটেও পিচ্চি না,,,(মুখ গোমড়া করে)

মামার বাড়ির আবদার,,

বলতে বলতেই উনি নিচের দিকে ঝুকে হাত বাড়ালেন,,,আমিও খুশি খুশি মনে হাত বাড়ালাম,,উনার হাত ধরে উঠে দাড়াবো কিন্তু ওই যে,,, খাটাশ তো খাটাশই,,,শালা বান্দর একটা,,আমার হাত না ধরে,,উনি নিচু হয়ে জুতোর ফিতা ঠিক করে,,আমাকে ডিঙিয়ে হাটা দিলেন।।।আমি তো হা করে তাকিয়ে আছি,,,এটা কি হলো??বজ্জাত কোথাকার,,তোর চুল আমি সবকটা টেনে টেনে ছিঁড়বো,,,রাগে শরীর ফেটে যাচ্ছে,,,কিন্তু রাগ দেখাতেও পারছি না,,,আমি এখন অবলা নারী,,মাঝ রাস্তায় ভাঙা কোমর নিয়ে পড়ে আছি।।।আচ্ছা?উনি আমাকে রেখে চলে যাচ্ছেন না তো??হায় আল্লাহ্,,,আমার কি হবে??

এই,, এই কই যান??আরে আরে আমাকে তো নিয়ে যান,,,যাহ বাবা,, চলে গেলো?খা,,খা বেশি করে খা আইসক্রিম,,,, আইসক্রিমের মধ্যে ডুবে মরে যা তুই রোদ।।।অসভ্য মাইয়া,,সিম্পল সেন্সটা তোর মাঝে নেই??খুব তো আইসক্রিম খেতে এসেছিলি,,,এবার গলে যাওয়া আইসক্রিম আর ভাঙা কোমর নিয়ে তুই ভূতের খাবারে পরিনত হ,,,,,নিজের মনে বিরবির করছিলাম তখনই কেউ একজন আমার সামনে এসে দাঁড়ালো,,,আমি তো খুব খুশি শুভ্র ফিরে এসেছে,,,খুশি খুশি মোড নিয়ে উপরে তাকাতেই দেখি না,,,এতো শুভ্র নয় অন্য একটা ছেলে।।।এবার আমার ভয় করতে লাগলো,,,,এই ছেলে আবার আমার,সাথে কিছু করবে না তো??উফফ,,,যত্ত ঝামেলা শুধু আমার সাথে,,,,আমার ভাবনায় এক বালতি জল ঢেলে দিয়ে উনি বলে উঠলেন,,,

এক্সকিউজ মি আপু??

আমি চোখ তুলে তাকাকাম,,,

কি ব্যাপার???কোনো সমস্যা??এভাবে রাস্তায় বসে আছেন কেন??(অবাক হয়ে)

তোকে কোন দুঃখে বলতে যাবো রে,,,জ্বালায় বাঁচি না,,আরেক আবালে আসছে মরতে(মনে মনে),,কোমর ভেঙে গেছে তাই বসে আছি,,,(বিরক্তি নিয়ে)

হোয়াট???আপনার কোমর ভেঙে গেছে কিন্তু কিভাবে??আর আশেপাশে কাউকে দেখছি না তো।।।আপনি একা নাকি??

লোকটার অতিরিক্ত উৎসাহ আমার চরম বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়াচ্ছে,,,বিরক্ত মুখেই বলে উঠলাম,,,ছিলো একটা খাটাস,,যে আমাকে রেখে হাওয়া খেতে গেছে,,আর কোনো প্রশ্ন??

স্ট্রেঞ্জ,,,আপনার মতো পিচ্চি একটা মেয়েকে ফেলে রেখে,,হাওয়া খেতে গেছে??(অবাক হয়ে)

আবার সেই পিচ্চি,,,এই পিচ্চি পিচ্চি শুনতে শুনতে কান পঁচে গেলো।।।মেজাজটা প্রচুর গরম হচ্ছে,,,আমার ওয়ান পিস জামাই আমাকে পিচ্চি পিচ্চি বলে পাত্তায় দিচ্ছে না,,আর এদিকে ইনি আসছেন,,কাটা গায়ে নুনের ছিটা দিতে হুহ,,,

খবরদার পিচ্চি বলবেন না,,,,আমাকে কোন এংগেল থেকে পিচ্চি মনে হচ্ছে শুনি,,,(ভ্রু কুঁচকে)আপনার কোনো ধারনা আছে আমি কোন ক্লাসে পড়ি??

আরেহ,,বাবা,,রেগে যাচ্ছেন কেন??ওকে ওকে,,আপনি একদম পিচ্চি না,,অনেক বড়,,,এবার হেপি??

হুহ।।

আচ্ছা আপনি এখানে থাকুন,,আমি গাড়ি নিয়ে আসছি,,আপনাকে ড্রপ করে দিবো ওকে???

বলেই মুচকি হেসে দৌড়ে চলে গেলেন,,, আমি কিছু বলার সুযোগই পেলাম না।।আরে ব্যাটা,,আমার তোর গাড়িতে উঠতে হবে কেন??যত্তসব,,কচুক্ষেতে গিয়ে মর,,,হুহ।।।নিজের মনে বিরবির করছিলাম,,,হঠাৎই কেউ আমায় কোলে তোলে নিলো,,,ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে উঠে যেই না চিৎকার দিবো তখনি লোকটির মুখের দিকে তাকিয়ে থেমে গেলাম,,,আরে এ তো আমার খাটাস বরটা।।উনি আমাকে রিকশায় বসিয়ে দিয়ে পাশে বসে পড়লেন।।
দুজন রিকশার দুই বর্ডারে বসে আছি,,,,মাঝে প্রায় এক হাত ফাঁকা।।ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে বিরক্তিকর,,উনি এমনভাবে বসে আছেন যেনো আমার শরীরের সাথে শরীর লাগলে উনার শরীর পুড়ে যাবে,,,

এই যে শুনোন?

কি?

আমাকে একটু ধরুন প্লিজ,,,আমার মনে হচ্ছে আমি পড়ে যাবো,,(ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে)

উনি দু’মিনিট ভ্রু কুচঁকে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন,,,’পারবো না”।।এবার মেজাজটা আরো খারাপ হচ্ছে,,ব্যাটা বলিস কি??পারবি না মানে?তুই পারবি,,, তোর বাপ সহ পারবে হুহ।।।মুখে বললাম,,”ওকে,,”।।আমি ক্রমাগত উনার শরীর ঘেষে বসছি আর উনি সরে যাচ্ছেন।।সড়ার মতো তিল জায়গা অবশিষ্ট না থাকায় আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললেন,,,

কি সমস্যা?? কোলে বসার ইচ্ছা জাগছে নাকি?

হুমম,,ব্যাপক।।কিন্তু আপাতত সেই ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না

তাহলে গায়ের সাথে লেগে বসছো কেন??(ভ্রু কুঁচকে)

তো কি করবো??যদি রিকশা থেকে পরে যাই,,,,,ভয় লাগছে তো

আমি কিছু জানি না,,,তুমি সরে বসো,,,আই সেইড,,,সরো বসো(রাগী চোখে)

আপনি আমাকে না ধরলে আমার পক্ষে সরা সম্ভব নয়,,,,যা করার করেন(আরেকটু চেপে বসে)

ওকে ফাইন,,,(দাঁতে দাঁত চেপে)ধরছি,,তবু সরে বসো নয়তো আমি নিজেই পড়ে যাবো।।

আমি খুশি মনে সরে বসলাম,,,উনি আলতো হাতে আমার কোমর চেপে ধরলেন।।।বাহ,,,কী অনুভূতি।। এবার আমি উনার কাঁধে মাথা রাখলাম,,,

হেয়াট দ্যা হেল??মাথা সড়াও?কাঁধে মাথা রাখছো কেন??(রাগী চোখে)

এহহহহহ,,,আপনিই তো ফেলে দিয়ে কোমরে ব্যাথা দিলেন,, আবার জিজ্ঞেস করা হচ্ছে,,,”কাঁধে মাথা রাখছো কেন??”হুহ

ব্যাথাটা তোমার কোমরে মাথায় না,,,মাথা সড়াও(দাঁতে দাঁত চেপে)

আরে কোমর নিয়ে টেনশন করতে করতে মাথা ব্যাথা হয়ে গেছে।।।বুঝেন না কেন???

উনি আর কিছু বলেন নি,,হয়তো বুঝে গিয়েছিলেন আমার সাথে পেড়ে উঠবেন না।।।


গত দুইদিন,,, আমি কোমর ব্যাথায় না পেড়েছি ঠিকমতো ঘুমাতে না পেড়েছি ঠিকমতো পড়তে।।।তবে একটা জিনিস খুব করে করেছি তা হলো উনাকে বকা দেওয়া।।পৃথিবীর এমন কোনো গালি হয়তো বাকি নেই,,,যেখানে আমি উনাকে ম্যানশন করি নি।।

কি হলো উঠো,,

না(মুখ গোমরা করে)

না মানে?(অবাক হয়ে)

আজ গাড়িতে না,,বাইকে যাবো

অসম্ভব,, আমার বাইকে তোমায় আমি কখনোই নিবো না,,,ওই সিটটা শুধু………(মাঝপথে থেমে গেলেন)

যারই হোক না কেন,,,আমি বাইকেই যাবো ব্যাস।।

আর আমি তোমাকে নিবো না ব্যস।।

ওকে,,,,আমি মামানিকে বলছি,,,আমার কোমরের ১২ বাজার পেছনে ওনলি এন্ড ওনলি আপনার হাত,,আমি মোটেও পিছলে পড়ি নি,,আপনি আমাকে ফেলেছেন।।

ইউউউ,,,,(রাগী চোখে)

আপনার মাথা

বলেই মুখ ভেঙিয়ে যেই না বাড়ির দিকে হাঁটা দিবো,, তখনি উনি বলে উঠলেন,,,”ওকে ফাইন।।চলো।।”আমি উনার পেছনে বসে আছি,,,,দুজনেই চুপচাপ।।।আমিও কোনো কথা বলছি না,,,উনি হয়তো নীলি আপুকে অনুভব করছেন,,,করুক না,,,সবারই একটা পার্সোনাল স্পেস থাকা উচিত।।হঠাৎই উনি বাইক দাড় করালেন।।ভাবনার প্রহর কাটিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখলাম উনার বন্ধুরা দাড়িয়ে আছেন,,,এর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে আমি চিনি,,,সবচেয়ে ভালো চিনি সাব্বির ভাই আর রোহান ভাই কে(শুভ্রর বেস্ট ফ্রেন্ড)।।উনার ফ্রেন্ড সার্কেলে উনারা দু’জনই শুধু আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা জানে।।উনাদের মধ্যে একজনকে দেখে আমি অবাক হলাম,,,এ তো সেই রাস্তায় দেখা হওয়া ছেলেটা,,যে আমার জন্য গাড়ি আনতে গিয়েছিলো।।উনিও যে আমাকে দেখে যথেষ্ট অবাক হয়েছেন,,, তা উনার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।।।

আরে শুভ্র এটা কে??জিএফ??(আমাকে দেখিয়ে)

আরে নাহ,,,ও রোদেলা,,আমার ফুপ্পির মেয়ে।।

কথাটা শুনে সামনের মানুষটা মনে হলো বেশ স্বস্তি পেলেন বাট আমি তিল পরিমান স্বস্তি পেলাম না।।।রাগী চোখে উনার দিকে তাকালাম।।এসবের মানে কি??আমাকে নিজের বউ হিসেবে পরিচয় দিতেও উনার ইগোতে লাগে নাকি??সাব্বির ভাইয়া আর রোহন ভাইয়াও দেখলাম অবাক চোখে তাকিয়ে আছে,,,

#চলবে,,,,

(কয়েকজন আপু ইনবক্সে রিকুয়েষ্ট করেছে যেনো আমি রাইটারের নামে আমার পুরো নামটা লিখি।।ওদের কথা রাখতেই গল্পের লিখিকার পুরো নাম দেওয়া হলো,,,কেউ কনফিউজড হবেন না প্লিজ ❤❤)

#তোকে চাই❤
#writer:রোদেলা❤
#part:17


আমি উনার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছি,,কিন্তু উনি আমাকে পাত্তায় দিলেন না।।।নিজেকে আজ খুব ছোটো ছোটো লাগছে,,আচ্ছা আমি কি উনার ওয়াইফ হওয়ার যোগ্য নই??এটা কি আমাকে অপমান করা হলো না??আজ আমি যদি উনাকে কোনো ছেলের কাছে ভাই হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতাম উনি কি মেনে নিতেন???তখন সাথে সাথেই আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠতো।।নিজের কাছেই আজ আমি লজ্জিত।।হঠাৎ ছেলেটি বলে উঠলো,,

হাই রোদেলা,,আমি সাহেল,,,শুভ্রর ছোট্ট বেলার বন্ধু।।গ্রামের ভাষায় বলতে গেলে ন্যাংটা কালের বন্ধু।।হা হা হা

আমি শুধু একটা শুকনো হাসি দিলাম,,,উনি আবার বলে উঠলেন,,

রোদেলা??আমি কি তোমাকে রোদ বলে ডাকতে পারি??,রোদেলা নামটা বেশি বড় হয়ে যায়,,প্লিজ??

ইয়াহ,,,অবশ্যই।।(জোর করে একটা হাসি দিয়ে)

উনার পাশের ভাইয়াটা হালকা কাশি দিয়ে সাহেল ভাইয়াকে কনুই দিয়ে গুতো দিয়ে বলে উঠলেন,,,

মাম্মা??কি চলে?(দাঁত কেলিয়ে)

হোয়াট কি চলে??স্যাট আপ।।শুভ্র তোরা কই যাচ্ছিলি??

রোদকে ড্রপ করে দেন অফিস যাবো।।রোদ এবার এডমিশন দিবে,, মাহির ভাইয়ের কোচিং এ এডমিট করে দিছি।।

ওহ,,আচ্ছা।।

আমার আর ওদের কথাবার্তা ভালো লাগছে না।।রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে,,,জানি না এ রাগ কার উপর নিজের উপর,,নাকি শুভ্রর উপর।।এদের সবার চুল টেনে টেনে ছিঁড়তে পারলে রাগটা কমতো বলে মনে হচ্ছে।।কি মনে করে শুভ্র নিজেকে??আমি কি ফেলনা নাকি??আমার পরিচয় যদি ওর কাছে শুধুই ফুপ্পির মেয়ে হয়,,তাহলে আমার কাছেও ওর পরিচয় শুধু আমার মামুর ছেলেই হওয়া উচিত।।আর কিছু ভাবতে ইচ্ছা করছে না,,,আর না ওদের দাঁত কেলানো দেখতে ইচ্ছা করছে,,মনে হচ্ছে পুরো দুনিয়া যেনো আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে,,,

ভাইয়া??শুভ্র ভাইয়া??

আমার ভাইয়া ডাক হয়তো উনার হজম হয় নি,,, বা উনি হয়তো এক্সপেক্ট করে নি এমন কিছু,,,যার কারনে উনি অবাক চোখে আমার দিকে তাকালেন,,,

কি হলো ভাইয়া??এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো??চলুন প্লিজ আমার ক্লাসে লেট হচ্ছে,,,,

উনি কোনোরকম মাথা নেড়ে উনাদের থেকে বিদায় নিয়ে বাইট স্টার্ট দিলেন।।আমিও চুপচাপ বসে আছি।।।আমি বুঝতে পারছি না,, আমার ঠিক কেমন রিয়েকশন দেওয়া উচিত।।।উনি আমাকে কোচিং এর সামনে নামিয়ে দিলেন,,,

ভাইয়া,,ছুটির সময় আপনাকে আসতে হবে না,,আই উইল মেনেজ।।

বলেই চলে এলাম,,না তাকিয়েই বুঝতে পারছি উনি অবাক চোখে তাকিয়ে আছেন,,,,থাকুক তাকিয়ে,,,শুধু অবাক কেন??পারলে “হা” করে তাকিয়ে থাকুক,,,সাথে দুই তিনটা মশাও খেয়ে নিক,,,তাতে আমার কি??হো কেয়ারস্?????

কোচিং শেষে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি রিকশার জন্য,,কিন্তু আশেপাশে রিকশার টিকি টা পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি না।।সব রিকশাওয়ালা কি রোদের বিপক্ষে জোট গঠন করেছে নাকি??যে রোদ কে তারা কেউ রিকশায় তুলবে না??আমার ভাবনা-চিন্তাকে দুমড়ে মোচড়ে দিয়ে একটা গাড়ি চরম স্পিডে আমার সামনে এসে থামকে দাঁড়ালো।।ভয়ে আমি রীতিমতো লাফিয়ে উঠলাম।।।মনে হচ্ছে,,আমার প্রানিপাখি উড়ে গিয়ে আশেপাশে ডানা ঝাপটিয়ে আবার ফিরে এসেছে।।মেজাজটা চরম গরম হচ্ছে,,,ব্যাটা গাড়ি আছে তাই বলে কি উড়ে যেতে হবে নাকি??এদের উড়াউড়িতে কারো জীবন উড়ে গেলে কি হবে শুনি??যত্তোসব আজাইরা পাবলিক,,হুহ।।নিজের মনে বিরবির করছিলাম ঠিক তখনই গাড়ি থেকে একটা কচুরিপানা নেমে আমার সামনে দাঁড়ালো,,, এই লোকটার জন্য কচুরিপানা নামটা আপাতত আমার কাছে পার্ফেক্ট বলেই মনে হচ্ছে,,,কড়া সবুজ ব্লেজার আর কুচুরিপানার ফুলের কালারের শার্ট পড়েছে লোকটা।।তবে দেখতে তেমন খারাপ লাগছে না।।ভালো করে মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম,,ওহ এটা তো সাহেল ভাইয়া।।।এই ব্যাটায় এইখানে কি করে??

হাই রোদ??এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন??

মাছ মারার জন্য দাঁড়িয়ে আছি,,,আবে তোরে কোন দুঃখে বলতে যামু??একটু আগেই তো প্রায় হার্ট আট্যাক করে ফেলছিলাম,,(মনে মনে)….জী রিকশার জন্য ওয়েট করছি।।(একটা হাসি দিয়ে)

ওহ,,চলো আমি তোমাকে পৌছে দিই।।

নো থেংক্স।।আই উইল মেনেজ।।

বলেই হাটা দিলাম,,হয়তো সামনে রিকশা পেয়ে যাবো।।এখানে দাঁড়িয়ে এই আবালের বকবকানি শোনার কোনো মানেই হয় না।।কিন্তু মসিবত কি এতো সহজে পিছু ছাড়ে??উনিও দৌড়ে আমার পাশে এসে আমার সাথে পা মিলিয়ে হাঁটতে লাগলেন,,,আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই উনি বলে উঠলেন,,,

তুমি যতোক্ষণ রিকশা না পাও,,আমিও তোমার সাথে হাটি,,

আপনার গাড়ি থাকতে আপনি হাঁটবেন কোন দুঃখে??(ভ্রু কুচকে)

দুঃখে হাটঁবো কে বললো??হাটবো তো সুখে,,,

মানে??

এতোদিন কানাডায় ছিলাম প্রায় ৬ বছর,,,এতোদিন পর দেশে আসছি,, একটু হেঁটে হেঁটে পরিবেশটা উপভোগ করি,,,এই কদিন পারি নি কজ সঙ্গী ছিলো না,,কিন্তু আজ তো তুমি আছো।।

এক্সকিউজ মি??আমি আপনাকে সঙ্গ দিতে যাবো কেন??আপনি যান তো এখান থেকে,,,,একদম বিরক্ত করবেন না(বিরক্তি নিয়ে)

আরে,,এভাবে বলছো কেনো??ফ্রেন্ডের বোন হিসেবে এইটুকু সার্ভিস তো দিতেই পারো,,তাই না??

ওহ,,,হ্যালো,,,ফ্রেন্ডের বোনদের কি আপনার ফ্রি সার্ভিস মনে হয় নাকি??(রাগী গলায়)

আরে তা কেনো হবে??ওকে যাও,,আই উইল পে ফর ইট।।

তাই নাকি??তাহলে অন্যকাউকে অপয়েন্ট করেন আম নট অ্যাবলএবল।।।

প্লিজ,,তোমাকে আমি আইসক্রিম খাওয়াবো,,,যদি তোমার সাথে হাটার পারমিশন দাও তো,,,(বাঁকা হাসি দিয়ে)

ওই মিষ্টার??আপনার কি আমাকে বাচ্চা মনে হয়??যে আইসক্রিমের লোভ দেখাবেন আর রাজি হয়ে যাবো৷,,,,,আর পারমিশন পারমিশন যে করছেন,,,পারমিশন না নিয়েই তো দশ মিনিট ধরে আমার সাথে হাটঁছেন,,সেটা??

ডাবল পে করবো,,,আইসক্রিম প্লাস ফুচকা??মেয়েরা আর কি খায় জানি না(মাথা চুলকে)

উনার দিকে কিছুক্ষণ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থেকে হেসে দিলাম,,,উনিও হেসে দিয়ে বললেন,,

সো পারমিশন গ্রেনটেড??তাহলে আইসক্রিম খাই??

আমিও রাজি হলাম,,,পাশের দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে যেই না মুখে দিবো,,একটা বাইক তুফানের গতিতে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো,,, আমি ভয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছি,,,ভেবেছিলাম,,আজ আমার ইন্নাননিল্লাহ্ হলো বলে কিন্তু লাস্ট পর্যায়ে বেঁচে গেছি।।আজ সব সিডর,,আইলা আমার সাথেই কেনো হচ্ছে বুঝতে পারছি না।।চোখটা হালকা খুললাম বাইকে থাকা মানুষটাকে দেখার আশায়,,,,

#চলবে,,,,,

#তোকে চাই❤
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:18


শুভ্র ভাইয়া বাইকে বসে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,এই দৃষ্টির কোনো অর্থ আমি খুজে পেলাম না।।তবে মনের ভিতর বাসা বেধে থাকা ভয়টা যে নড়েচড়ে উঠলো তা বেশ,বুঝতে পারলাম

ভ,,ভ,,ভাইয়া,,আপনি এখানে??

হ্যা তো??(রাগী চোখে)

না,, আপনাকে তো বলেছিলাম যে,,,আসতে হবে না।।আমি ম্যানেজ করে নিবো।।

আমি তোমাকে নিতে আসি নি।।কাজ ছিলে তাই আসছি,,

কথাটা আমার লাগলো,,,ব্যাটা বজ্জাত কথায় কথায় আমাকে অপমান না করলে কি তোর পেটের ভাত হজম হয় না???তোর বউ মরে যাবে শালা।।।আল্লাহ আমাকে আবার তুলে নিও না,,,আমি কিন্তু উনার বউ নই আপাতত ফুপ্পির মেয়ে,,হুহ,,,এই কথাটা মাইন্ডে রেখো কেমন??এই ব্যাটার সামনে দাঁড়ায় থেকে কোনো লাভ নেই,,,খাটাশ টা কাজ করতে করতে শহীদ হয়ে যাক,,,ঢং!!!

ওহ,,,ওকে,,,আচ্ছা সাহেল ভাইয়া,,তো চলুন যাওয়া যাক??(মুচকি হেসে)

হ্যা রোদ চলো,,,বাই শুভ্র তোর সাথে পরে কথা হবে,,,আপাতত তোর বোনকে সঙ্গ দেই(চোখ টিপে)

সাহেল ভাইয়ার কথাটা শুনে যেনো উনার চোখ আরো লাল হয়ে গেলো।।কারনটা বুঝতে না পারলেও ভয়ে ঢোক গিলছি বারবার।।এখান থেকে কেটে পড়ায় আমার জন্য মঙ্গল।।

আব,,সাহেল ভাইয়া,,,চলুন,,এখানে দাঁড়িয়ে অযথা কথা বলার ইচ্ছা থাকলে আপনি থাকেন,,আমি গেলাম।।(নিজে বাচঁলে বাপের নাম,,,বিরবির করে)

আরে,,না না,,,আম কামিং।

আমি বাইকটা পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই উনি শক্ত করে আমার হাত চেপে ধরলেন,,,আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকালাম।।।সাহেল ভাইয়াকে দেখে মনে হচ্ছে,, তিনি অবাকের দিক দিয়ে আমার থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছেন।।।”হা” করে শুধু দেখেই যাচ্ছেন।।।

ক,,,কি হইছে ভাইয়া??এভাবে ধরে আছেন কেন ভাইয়া??আমার লাগছে ভাইয়া,,,,ছাড়ুন ভাই,,,,

চুপপপপ,,,এক লাইনে কয়বার ভাইয়া ডাকো??ভাইয়া ভাইয়া করতে করতে কানের পোকা মেরে ফেললা।।।এখন চুপচাপ বাইকে উঠো।।

কিন্তু ভাই,,,,

আই সেইড স্টপ,,,,উঠো,,

আমি সাহেল ভাইয়ার সাথে যাবো,,আপনি চলে যান,,(মুখ গোমরা করে)

হ্যা,,,শুভ্র তুই যা,,আমি ওকে পৌঁছে দিবো,,নো টেনশন।।

আমি বাইকে উঠতে বলছি রোদ(দাঁতে দাঁত চেপে)

আমি মাথা হেলিয়ে আইসক্রিম টা মুখে দিতে যাবো তখনই উনি আইসক্রিমটা টেনে নিয়ে নিলেন,,,

আরেহ,,,ওটা আমার আইসক্রিম ছিলো,,আপনার খেতে ইচ্ছে করলে আপনি কিনে নেন না,,,,আমারটা নিচ্ছেন কেনো??(ভ্রু কুচঁকে)

তুমি বাচ্চা নাকি যে আইসক্রিম খাবা?আইসক্রিম ইজ নট গুড ফর হেল্থ।।।

সো হোয়াট??তাতে আপনার কি??আমার আইসক্রিম দেন???

বলে হাত বাড়াতেই উনি আইসক্রিম টা মাটিতে ফেলে দিলেন,,,”এবার খাও'”,,,এবার রাগটা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেল,,,শালা জীবনটা তো ত্যানাত্যানা বানিয়ে দিছিসই এখন কি খেতেও দিবি না??

সাহেল ভাইয়া?? আমাকে আরেকটা আইসক্রিম কিনে দেন তো??(মুখ ফুলিয়ে)

ওকে,,আমি আনছি,,,,

সাহিল ভাইয়ার কথার মাঝ পথেই উনি বাইক থেকে নেমে এসে আমাকে কোলে তুলে বাইকে বসিয়ে দিলেন,,,,ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যে আমি আর সাহেল ভাইয়া দুজনেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।।।সাহেল ভাইয়ার মুখটা ছোট হয়ে গেলো।আমারও মেজাজ খারাপ হচ্ছে,,,এটা কোন ধরনের অসভ্যতা??যত্তোসব আজাইড়া পাবলিক।।উনি হঠাৎই বাইক থামিয়ে দিলেন।।।ধমকের সুরে বলে উঠলেন নামো।।।আমিও বাধ্য মেয়ের মতো নেমে দাঁড়ালাম,,চারদিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম আমরা কোনো আইসক্রিম পার্লারের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।।উনি বাইক পার্ক করে,, সামনের দিকে হাঁটা দিলেন,,যেতে যেতে বললেন,,,”চলো”,,,আমিও বাধ্য মেয়ের মতো উনার পিছু নিলাম।।ভিতরে গিয়ে আমাকে একটা চেয়ারে বসতে বলেই উনি চলে গেলেন।।আজিব মানুষ,,,একটু আগেই বললো,, আইসক্রিম ইজ নট গুড ফর হেল্থ,,,আর এখন আইসক্রিম পার্লারেই চলে আসছে,,যত্তোসব ফাতরা পোলাপাইন।।। এতোই যদি আইসক্রিম খাওয়ার শখ হয়ে থাকে তো ওখানেই খেতে পারতেন,,এখানে আসার কি দরকার ছিলো শুনি??বসে বসে উনার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করছিলাম,,বেচারা আইসক্রিমটার জন্য খুব মন খারাপ হচ্ছে,,,তখনি উনি এসে সামনে বসে পড়লেন,, উনার চোখে-মুখে রাগ স্পষ্ট।।আমি দুই একটা ঢোক গিলে আসীম সাহস নিয়ে বলে উঠলাম৷৷

ভাইয়া,,,আমরা এখানে কেনো??,আইসক্রিম খাওয়ার হলে তো ওখানেই খেতে পারতেন ভাইয়া,,,

চুপপ,,,একদম চুপপ।।কিসের ভাইয়া হ্যা?আমি তোমার ভাই লাগি??(রাগী চোখে)

হ্যা,,,, মামুর ছেলে তো ভাইয়াই হয়।।তাই না ভাইয়া??(ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে)

আবার ভাইয়া??আরেকবার ভাইয়া ডাকলে চড়াই দাঁত ফেলাই দিবো।।বাবা-মা তোমার মুখে ভাইয়া শুনলে কি ভাববে??

এখানে ভাবাভাবির কি আছে আজিব,,,ভাইকে ভাই বলবো না???(অবাক চোখে)

আচ্ছা??(দাঁতে দাঁত চেপে)আমি তোমার ভাই না??

তা নয়তো কি??

প্রেকটিক্যালি দেখাই আমি তোমার কি??(ভ্রু নাচিয়ে উঠে দাড়ালেন)

উনার দাঁড়ানো দেখেই আমার প্রানপাখি উড়ে যায় যায় অবস্থা।।উনি আমার পাশে বসে পড়লেন,,আমার তো রীতিমতো কাঁপা-কাঁপি অবস্থা,,,উনি আমার কানের কাছে স্লো ভয়েজ এ বলে উঠলেন,,,

পাবলিক প্লেসে বাস,,,

আর কিছু বলার আগেই,,ওয়েটার প্রায় ত্রিশটা আইটেমের আইসক্রিম রেখে গেলো,,,,এগুলো দেখে আমার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম,,,, এসব কি??ভয় টয় ভুলে বলে উঠলাম,,

এসব কি??এতো আইসক্রিম কার জন্য??(অবাক হয়ে)

তোমার জন্য(শয়তানী হাসি দিয়ে)

মানে??(চিৎকার করে)এত্তোগুলো আমার জন্য??পাগল নাকি আপনি??

হুহ,,,খুব আইসক্রিম খাওয়ার,শখ না??এখন আমার সামনে সবকটা খাবা,,,স্টার্ট(দাঁতে দাঁত চেপে)

পাগল নাকি??ইম্পসিবল

পসিবল বেবি,,,এবরিথিং ইজ পসিবল।।।তোমার দাঁত কেলিয়ে আইসক্রিম খাওয়ার শখ আজ মেটাবো।।।শুরু করো,,,(রাগী গলায়)

আমি উনার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে আছি,,,কিন্তু উনি আমাকে পাত্তা না দিয়ে আবার ধমক দিয়ে উঠলেন,,,কি আর করা??বাধ্য মেয়ের মতো খেতে শুরু করলাম।।।আল্লাহ আমাকে একখান জামাই দিছে,,,যে কি না ওলওয়েজ আমাকে মারার প্ল্যান করতে থাকে,,,বেশি দিন বাঁচুম বলে মনে হয় না,,,,বাঁচার আশা ক্ষীণ,,,,

#তোকে চাই❤
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:extra part❤❤


আমি খুব ধীরে সুস্থে একটা আইসক্রিম শেষ করলাম।।আইসক্রিমটা শেষ করে ওয়েটারকে ডাক দিয়ে বললাম,,,”প্লিজ এগুলো প্যাক করে দেন”,,ওয়েটার ইয়েস ম্যাম বলে মাথা নাড়ার সাথে সাথেই,,,উনি হুংকার দিয়ে উঠলেন,,

কিসের প্যাকিং??তুমি এগুলো শেষ করবা এবং সেটা এখনই,,,,(রাগী চোখে)

কেনো??(ভ্রু কুঁচকে)

কেনো মানে??আমি বলছি তাই,,,

আপনি বললেই খেতে হবে কেন??(ভ্রু নাচিয়ে)

বেশি কথা না বলে খাও,,নয়তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না,,,,(দাঁতে দাঁত চেপে)

এমনিতেও আপনার থেকে খারাপ এই পৃথিবীতে আর দুটি নেই,,,ইউ আর দা ওয়ান পিস,,,নতুন করে আর খারাপ কি হবেন??

কি বললা??(রাগী গলায়)

যা বলছি ঠিক বলছি,,তাছাড়া আপনি তো সেইরকম ডোমেনেটিং পার্সোন,,,অন্যের বউকে জোড়াজোড়ি করছেন।।

আমি আবার কার বউকে কি করলাম??(অবাক হয়ে)

কেন??আমাকে কি চোখে পড়ে না??আমার সাথেই তো জোড়াজোড়ি করছেন।।

কিহ,,,তুমি অন্যের বউ??(ভ্রু কুঁচকে)

হ্যা,,বেচারা দুনিয়ার কোন কোনায় আছে কে জানে??আপনি আমাকে একা পেয়ে এভাবে অত্যাচার করছেন।।(মুখ গোমরা করে)

হোয়াট দ্যা হেল??তুমি অন্যের বউ হলে আমার কি হও শুনি??(দাঁতে দাঁত চেপে)

কেনো বোন,,(দাঁত কেলিয়ে)

হোয়াট???(চিৎকার করে)

চেচাচ্ছেন কেন??আপনিই তো তখন আপনার ফ্রেন্ডদের বললেন,, আমি আপনার ফুপ্পির মেয়ে,,এখন আমি ভাইয়া বললে চেচান কেন??আপনি বোন বললে সমস্যা নেই আর আমি ভাইয়া ডাকলেই সমস্যা কেন কেন???

স্যাট আপ স্টুপিড গার্ল।।আমি ওদের কখন বললাম যে তুমি আমার বোন??

ফুপ্পির মেয়ে বলছেন,,,তাতে কি বোন বুঝায় না??

ইডিয়ট,,,আমার সাথে বিয়ে হলেও তুমি যেমন আমার ফুপির মেয়ে,,,ভবিষ্যতে দশ বাচ্চার মা হলেও তুমি আমার ফু্প্পির মেয়েই থাকবা,,,নাকি মা চেঞ্জ হয়ে যাবে???

আজিব মা চেঞ্জ হতে যাবে কেন??কি বোঝাতে চাচ্ছেন আপনি??

আমি বোঝাতে চাচ্ছি,, আমি ভুল কিছু বলি নি কিন্তু তুমি ভুল বলছো,,,

মানে??

ইউ স্টুপিড,,, তুমি কি আমার জিএফ??(আমি মাথা নাড়লাম)তো আমিও মানা করছি যে তুমি আমার জিএফ নও।।।আমি বলেছি,, তুমি আমার ফুপ্পির মেয়ে,,,এটা তো সত্যি তাই না??(আমি আবারও হ্যাবোধক মাথা নাড়লাম)আমি তো এটা একবারও বলি নাই যে তুমি আমার বোন,,,বলছি কি??(আমি আবারো মাথা নাড়লাম,,,না সে বলে নি)তাহলে এখানে আমার ভুলটা কি???সবটা ওদের বোঝার ভুল,,,

এবার আমার রাগ লাগছে,,,শালা এতো পেচায় বললে কে না বুঝতে ভুল করবে??সবার মাথায় তো আর তোর মতো ছিট নাই।।

কেন আপনি সরাসরি বলতে পারলেন না??যে আমি আপনার বউ??(রাগী চোখে)

প্রয়োজনবোধ করি নি।।

শালা তোর প্রয়োজন বোধ দিয়ে তুই জোস বানাই খা,,,প্রয়োজন বোধ করি নি,,হুহ।।(মনে মনে)

খুব ভালো কথা,,আপনি তখন প্রয়োজনবোধ করেন নি,,,এখন আমি প্রয়োজনবোধ করছি না,,,#আমার মামুর ছেলে,,হুহ

বলেই উঠে চলে এলাম।।।সবকিছুর একটা লিমিট আছে।।লাইফটা বিরক্তির একটা ডিব্বাই পরিনত হয়েছে,,,হোয়াট দ্যা হেল ইয়ার।।।”প্রয়োজনবোধ করি নি”,,,,এটার মানে কি??উনার প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে আমার লাইফ চলবে নাকি??উনাকে এখন আর সহ্য হচ্ছে না,,তাই উনাকে বের হতে দেখেই একটা রিকশা নিয়ে চলে এলাম।।কিন্তু খাটাশ বলে কথা,,এতো ইজিলি আমাকে ছাড়বে নাকি??হঠাৎই খুব স্পিডে এসে রিকশার একদম সামনে বাইক দাঁড় করালেন,,বৃদ্ধ রিকশাচালক এমন একটা আনএক্সপেক্টেট বিষয় ঠিক সামলে উঠতে পারলেন না,,আর আমি গিয়ে পড়লাম রাস্তায়।।।হাতের বিভিন্ন জায়গায় হয়তো ছিলে গেছে,,,হাটুতেও বড্ড জ্বালা করছে।।।নিজের অজান্তেই চোখ থেকে পানি বেরিয়ে এলো।।।নিজেকে নিজের কাছেই বোঝা মনে হচ্ছে,,,বিয়ের পর থেকে একটা দিনও শান্তিতে থাকতে দেন নি।।আমি উনার সমস্যাটাই বুঝে উঠতে পারছি না,,,না আমাকে কাছে টেনে নিচ্ছে,,, না আমাকে দূরে যেতে দিচ্ছে,,,কি চান উনি??

#চলবে,,,

(সবার রিকুয়েস্ট এ এক্সট্রা পার্ট দিলাম,,,আর “তুমি আছো তাই” এই গল্পটার জন্য যারা ওয়েট করছেন,,,তাদের বলছি।।ওটা রাতে দিবো।।ওয়েট করার জন্য ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here