#প্রতিদান
পর্ব:8
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ
আমি ব্রেকফাস্ট করে মেডিক্যাল চলে গেলাম। ক্লাস এ গিয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে কথা বলছিলাম হঠাৎই প্রফেসর কাদের স্যার রুমে প্রবেশ করলেন।তারপর ক্লাস করালেন।আর একটা ক্লাস করেই ইন্টারনি করতে যাব।মালিহা ম্যাম এর ডিউটি আজকে বিকাল বেলা।তাই এখন আমাদের সবার কিছু কাজ আছে।স্যার ক্লাস করিয়ে যেতেই রিদ স্যার এর আগমন ।এর উপর আবার আমাদের সব বান্ধবীদের নজর আছে।আমাদের ওয়ান এন্ড ওনলি সুন্দর ডাক্তার এই স্যার। তবে উনি ম্যারীড।ডাক্তার রিক্ত মিটফুট মেডিক্যাল এর ডাক্তার। উনি তার ওয়াইফ। সে দেখতে তেমন সুন্দর না কিন্ত এত্ত ভাল যা বলার বাইরে।তার ওয়াইফ কে দেখলে আমার ফ্রেন্ড গুলো কপাল চাপড়ায়।আমিও এক সময়ে চাপড়িয়েছি। এখন আর আকর্ষণ ফিল করিনা।ওনার ক্লাসে সবাই ওনাকে এমন ভাবে দেখে কি আর বলব।ক্লাস করিয়ে স্যার যেতেই আমরা ইন্টারনি করাতে গেলাম। হঠাৎই দাড়োয়ান আমাকে চার তালার 403 নাম্বার রুমে যেতে বললেন। কালকের ঐ পেসেন্ট কে দেখতে যেতে বলল।মালিহা ম্যাম ফোন করেছিল।তাই আমি ও চলে গেলাম। গিয়ে দেখি আসফি বাবুটাকে কোলে নিয়ে বসে আছে।বাবুর আম্মু ঘুমায় আর আসফি বাবুর আব্বুর সাথে কথা বলছে।এইরে এত্ত এখানে কি করে। আমি ক্যাবিন এ ঘুকতে গিয়ে ও বের হয়ে আসতে নিব এমনি সময় আসফি ডাক দিল।(মুনতাহা)
মুনতাহা দাড়াও।কোথাও যাও পেসেন্ট না দেখেই।(আসফি)
হ্যা আমি কি যাচ্ছি নাকি। আমিতো মাত্র আসলাম।
কিযে প্যারা এই আসফি আজকে আমাকে কাচা চাবায় খাবে।সারারাত কল করছে ধরি নাই।পেসেন্ট এর চেকাপ করে বের হতে যাব আসিফি হাত ধরে বসল।
কিহলো হাত ধরলা কেন(মুনতাহা)
চুপচাপ চলো আমার সাথে।
বলেই ওকে নিয়ে হাটা দিলাম। ও হসপিটাল দেখে তেমন চিৎকার চেঁচামেচি করছেনা।ওকে নিয়ে বাইরে আসতেই জিদ করে বসল ও যাবেনা।আমি ওকে এক প্রকার জোর করেই আমার বাসায় নিয়ে আসলাম। আমি আজকে হসপিটাল গেলেও কোন ক্লাস করাইনি।সারারাত আমি না ঘুমিয়ে ওকে কল করছি আর ও পরে পরে ঘুমাইছে।(আসফি)
রাস্তার মধ্যে কোন সিনক্রেট করতে চাইনি তারমানে এইনা আমি এখানেও চুপ থাকব।অনেক সহ্য করছি আরনা।এভাবে টেনে আনছো কেন তুমি আমাকে?আমার ক্লাস ছিল আরো।অপমান করছিলা না যেন চলে যাই চলে গেছি আবার আনলা কেন?আমার মত বেইমান লোভী সার্থপর মেয়ে যে তোমার পেছন পরে আছে তাকে আবার টেনে নিয়ে আসলা কেন?(মুনতাহা)
ওর কোন কথার উত্তর না দিয়ে ওকে টেনে রুমে নিয়ে গেলাম গেট লাগাতেই চিৎকার করতে লাগল। ওকে খাটে বসাতেই ও উঠে চলে যেতে চাইছিল।তাই আমি ওকে টেনে কোলে বসিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
তুমি সারারাত ঘুমাইছো আমি সারারাত এ কত্ত গুলো কল করছি দেখো নাই তুমি?আমি বলেছিলাম কালকে জদি সন্ধার মধ্যেই বাসায় না আস তোমার খবর আছে।তুমি আসো নাই তার উপর আমার কল ও ধরো নাই।এখন ও জিদ করছ।আমি তোমার স্বামী আমার কোন কথাই তুমি শুনতে চাইছোনা।আমার অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করছ।(আসফি)
কিসের অধিকার এর কথা বলছ তুমি বিয়ের পরের দিন দুপুর বেলায় তুমি আমাকে এই অধিকার এর নামে রে_করেছ।দুইটা মাস তোমার হাজবেন্ড এর অধিকার তুমি ঠিক আদায় করেছ।যেদিন আমি তোমাকে দেখি আমি অবাক হয়ে যাই।যে একজন অপরিচিত মানুষের সাহায্য করতে পারে যেমন আমার করেছিলা তার প্রতিদান দিতেই তোমাকে বিয়ে করেছিলাম। তোমার সামনে আসতেই এই দেখ কামড় দিয়ে রক্ত বের করে ফেলছিলা।যদিও তোমার সেন্স ছিল না।আমি বিয়ের দিন পালাতে চেয়েও পারি নাই তোমাকে দেখে।দুইমাস তুমি তোমার হাজবেন্ড এর অধিকার ভালোবাসা আর রাগ সবকিছুই আমার উপর প্রয়োগ করেছ।কিন্ত সুস্থ হতেই তুমি আমাকে বলো যেন তোমাকে ভাইয়া বলে ডাকি,তোমার যত্ন তুমি নিতে পারবে আমার দরকার নেই আর তুমি তোমার এক্স গার্লফ্রেন্ড এর কাছে যাবে তার ব্যাবস্থা আমাকেই করতে হবে।সেইখানে গিয়ে তুমি আমাকে থাপ্পর মারলে খারাপ ব্যবহার ও করলে ।হোটেল এ গিয়ে রাগে বশিভুত হয়ে আমাকে কামর ও দিলা।যাইহোক সব ঠিক মেনে নিলেও তোমার পরশুর রাতের কথায় আমি শকড ছিলাম। টাকার বিনিময়ে আনছ দেখে আমার উপর তোমার অধিকার আছে সেই অধিকার থেকেই তুমি সব করতে পারো।কেন আমাকে তোমার মানুষ মনে হয়না।এত্ত কিছু সহ্য করেও কেন তোমার কাছে পড়ে থাকব?জাস্ট বিকজ আমি টাকার কেনা তোমার পাগল লাইফের দুই মাসের বউ বলে।না আমি এভাবে থাকব না।তোমার টাকা আমি দিয়ে দিব আর তোমার লাইফের ঐ দুইমাস এর এক্সসিডেনট এর বউ তুমি চাইলেই মুক্তি দিয়ে দেব।তারপর নাহয় ভালো মতো জীবন যাপন করো।
দাড়িয়েই(মুনতাহা)
হয়েছে আর কিছু বাকি আছে?আবার মুনতাহাকে কোলে বসিয়ে
(আসফি)
আমি কি তোমার সাথে মশকরা করছি?আমাকে ছাড় আমি এখনি চলে যাব। আসফি ছাড়তে বলছি কিন্ত।চিৎকার করে(মুনতাহা)
অনেক বলছ আরনা।পাগল লাইফের বউ হোও আর এমনেই বউ হোও তুমি আমার বিয়ে করা বউ । আর তোমার উপর আমার অধিকার ছিল আছে থাকবে।আর খবরদার আমাকে রেখে যাওয়ার কথা বলবে ঠেং ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখব।প্রতিদান দিতে বিয়ে করছ না ?এখন ও ভালোবাসার জন্ম হয়নি?আমি সেই ভালোবাসার জন্ম দিয়েই ছাড়ব।ততদিন তুমি আমার সাথে থাকলেও কোন অধিকার খাটাব না।তবে তোমার এই বাড়িতেই থাকতে হবে।আমার পারমিশন ছাড়া কোথাও যেতে পারবেনা।এখন আমি ঘুমাব তুমি এই খানেই থাকবে।বিকেল বেলা গিয়ে তোমার জিনিস পত্র নিয়ে আসব।
বলেই ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওকে নিয়েই শুয়ে পড়লাম। ও বারবার উঠার চেষ্টা করছে।
খবরদার আর একবার উঠার চেষ্টা করবে তোমার খবর আছে।বলেই চোখ বন্ধ করে নিলাম। (আসফি)
মেজাজ পুরাই গরম আছে।কি খারাপ মানুষ। ওকে বকতে বকতে আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি উঠেই হাত পায়ের আঙ্গুল ফুটাতে লাগলাম। তারপর ফোন হাতে নিয়ে দেখি তিনটা বাজে।ও হঠাৎই এসে আমার কপালে চুমু খেয়ে উঠে ওয়াশরুম চলে গেল।এইতো সুযোগ আমি তাড়াতাড়ি উঠে আমার ব্যাগ আর এপ্রোন নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েই দৌড়ে নিচে চলে আসলাম। কিন্ত মেন গেট এর সামনে গিয়ে হতাশ হলাম। (মুনতাহা)
আমি জানতাম তুমি আবার পালাতে পারো তাই এই ব্যাবস্থা। (আসফি)
খাটাশ লম্বু অসহ্য কর লোক একটা।দূর ভাল লাগেনা।(মুনতাহা)
আসো লাঞ্চ করব।
বলেই ওকে নিয়ে ডাইনিং রুমে চলে গেলাম (আসফি)
***************(চলবে)***************