সকল নিউজ চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজ হচ্ছে রিয়াজ চৌধুরীর সুইসাইড প্রতিটা খবর চ্যানেলে একই খবর প্রচার হচ্ছে ও হেডলাইন এটাই। কোটি কোটি সম্পত্তির একমাত্র মালিক নিজের স্ত্রী মারা যাওয়ার ছয় মাস পর নিজে কেনো সুইসাইড করলেন। রহস্যে ঘেরা এই টপিক পুলিশও উদ্ধার করতে পারছে না। রিয়াজ নিজের জীবন দিয়ে দিবে সেরকম ছেলে রিয়াজ চৌধুরী নয়। তাহলে কি তাকে খুন করা হয়েছে? পাবলিকের সামনে সেটা সুইসাইড বলে চালানো হচ্ছে।
আজ থেকে ছয়মাস আগে একই খবর চ্যানেল গুলোতে ব্রেকিং নিউজে ছিল এই কোটি কোটি সম্পত্তির একমাত্র ও আসল মালকিন।
নিজের ফার্ম হাউসে আগুন লেগে সে আগুনে পুরে মারা যান, ‘ হুমাইরা বিনতে আরোহী ‘ মারা যাওয়ার পর উনার সব সয় সম্পত্তি উনার স্বামীর নামে টান্সফার করা হয়। আর আজ বর্তমানে ছয় মাস পর রিয়াজ চৌধুরী নিজে সুইসাইড করেন।
সাংবাদিক দের একটাই প্রশ্ন ‘ সুইসাইড কেনো ও কি কারণে করেছেন। মারা যাওয়ার আগে উনি কি ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলেন নাকি অন্য কোনো কারণ আছে? পুলিশ কি পারবে এর আসল রহস্যের জড় পর্যন্ত যেতে, রহস্য উদ্ঘাট করতে কি পারবেন? জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
______________________
১বার কল বাজার পর আরোহী ফোনটা ব্যাগ থেকে বের করে কল রিসিভ করলো!
আরোহী: হ্যালো! কে বলছেন? (আননোন নাম্বার)
অচেনা কেউ– হেইই বেব্বি! কেমন আছো সোনা? আমাকে চিনতে পারছো বাবু। আমি তো তোমার একমাত্র জান!
(ফোনের ওপাশ থেকে বললো একটা ছেলে সাথে একটা শয়তানী হাসি দিয়ে)
আরোহী– অসভ্য ছেলে! আর একবার কল দিয়ে ডিস্টার্ব করলে পুলিশে ধরিয়ে দেবো! (বলেই কল কেটে দিলো)
প্রচুর রাগ হচ্ছে ওর না জানি কোন না কোন ছেলে যতসব আজেবাজে কথা বলছে..
আর সবচাইতে অবাক করা বিষয় হলো ওর নাম্বার কোথা থেকে পেলো ওর তো সাধারণ নাম্বার নয় ভিআইপি নাম্বার…
কে এই অসভ্য ছেলেটা আর নাম্বার পেলো কোথায়? উফফ উফফ নিজেই একা একা বকবক করছে!
নিপা– কিরে কি হয়েছে কি ভাবছিস আর কি এত বকবক করছিস? (নিপা আরোহীকে জিজ্ঞেস করলো)
মিতা– কিরে তুই কি কিছু বলবি না-কি চুপ করেই থাকবি?
নিপা আর মিতা দু’জনেই আরোহীর বেস্ট ফ্রেন্ড!
বন্ধু বলতে জান প্রাণ…
মিতা দেখতে সুন্দর তবে একটা খুদ আছে সেটা হলো মিতা দেখতে স্যামলা আর ফ্যামিলি অবস্থা মধ্যবিত্ত.!
আমাদের সমাজে মেয়ে হাজারও ফেস কাটিং সুন্দর হলেও শরীর ফর্সা না হলে মেয়ের দাম নেই! ঠিক তেমনটাই মিতার অবস্থা কিন্তু আরোহী আর নিপা কখনো মিতাকে ওদের থেকে ছোটো মনে করেনি তিনজন বেস্ট ফ্রেন্ড নয় যেমন আপন বোন!
নিপা দেখতে সুন্দর আর ফর্সাও আর নিপার সমস্যা হচ্ছে নিপা খেতে পছন্দ করে আর খাবার দেখলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে তাই একটু গোলুমোলু আর দিন দিন গোলুমোলু হওয়ার জন্য বয়ফ্রেন্ড ব্রেকআপ করে চলে গেছে! আর ফ্যামিলি অবস্থা বেশ ভালোই!
আমাদের আরোহী ভিআইপি নাম্বার ওয়ান বিজনেস টাইকুন আরমান খান এর একমাত্র মেয়ে আরোহী আরমান খান!
আমাদের আরোহী দেখতে মাশাআল্লাহ ছোটো মোটো একটা পরী!
হরিণীর মতো টানা টানা চোখ লাল লাল টমেটোর মতো গাল গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট সাপের মতো লম্বা লম্বা চুল মানে হাঁঠু সমান লম্বা চুল লম্বা ৫’৫ টোটাল পারফেক্ট.
আরোহীর ডিটেইলস দিতে দিতে আমার একটা গান মনে পরে গেলো গানটা দু’লাইন লিখি কি বলেন সবাই গানটা হলোঃ- পড়ে না চোখের পলক কি তোমার রুপের ঝলক! হিহিহি)
এখন গল্পে ফিরে আসি।
নিপা- ‘ চুপ করে থাকিস না কিছু তো বল তোর এই চুপসি আমার খুব ভয় লাগে! ‘
মিতা- ‘ নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে! মিতা আমি যা ভয় পাচ্ছি সেটা জেনো না হয় আল্লাহ প্লিজ সেটা জেনো না হয় মনে মনে বলছে! ‘ (মনে মনে পার্থ্যনা করছে)
আরোহী- ‘জানি না এই প্রথম একটা অসভ্য ছেলে কল দিয়ে যা তা বলছে! মুড টাই নষ্ট করে দিয়েছে ‘
(দাঁতে দাঁত চেপে)
নিপা- ‘আর ইউ সিওর? তাহলে তো তোর সব আঙ্কেল কে বলা উচিত ছেলেটার গুষ্টি উদ্ধার করে দিবে তারপর এই সব ফালতু ছেলেদের শিক্ষা হবে! ‘ (রাগে গজগজ করছে নিপা)
মিতা- ‘আমি যা বলেছিলাম তাই হলো আল্লাহ এবার কি হবে ওর উফফ আমি তো আরোহীকে কিছু বলতেও পারবো না আরোহী যদি আমাকে মাফ না করে যদি আমার সাথে বন্ধুত্ব নষ্ট করে ফেলে তখন আমি কি করবো আর আরোহী তো আমাকে ভুল বুঝবে! ‘ (মনে মনে)
আরোহী- ‘ আমি বলে দিয়েছি আমাকে আর বিরক্ত করলে আমি ডেডকে বলবো এখন এইসব নিয়ে ভাবছি না আবার কল দিলে ডেডকে বলবো! ‘
মিতা প্রচুর ঘাবরে গেছে!
তিনজন একটা কফি শপে বসে ছিলো! আর কফি শপের বাহিরে আরোহীর বডিগার্ড আরাফ দাঁড়িয়ে আছে!
আরাফ আরোহীকে পছন্দ করে কিন্তু সেরকম ভাবে কখনো আরোহীকে কিছু বলেনি! আরোহী তেমন কোনো ছেলেকে পছন্দ করে না কিন্তু ওর আরাফকে ছেলে হিসাবে ভালো লাগে ভালোবাসে কি না সেটা ও নিজেও জানে না! ওর শুধু ভালো লাগে বান্ধুবীদের সাথে ঘোরাঘুরি করতে পড়াশোনা করতে, আর আরোহীর স্বপ্ন হচ্ছে নিজে কিছু করা। আরোহী ডাক্তার হতে চায় তাই বেশির ভাগ টাইম ও পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে! বাড়ির কাজ করার জন্য কাজের লোকের অভাব নেই!
আরোহীর সামনে পানির গ্লাস টাও এগিড়ে দিতে কাজের লোক আছে।
আরোহী কখনো কষ্ট কি বুঝেইনি ওর মা বাবা কখনো বুঝতেই দেয়নি। বুঝতে দেবেই কি ভাবে রাজার মেয়ের রাজকন্যা বলে কথা,
আরাফ খুবই সাধারণ একটা ছেলে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই!
একমাত্র মা ছিলো সে ও কয়েকমাস আগে ছেলেকে অনাত করে চলে যায় আল্লাহর কাছে! আর বাবা জন্মের আগেই মারা গেছে। অনেক কষ্ট করে আরাফকে ওর মা বড় করে পড়াশোনা করায় কিন্তু বাংলাদেশে পাশ করলেই ভালো জব পাওয়া যায় না আর পাচ্ছিলও না। আরাফের মা ছোটো থাকতে আরমান সাহেবের বাড়িতে কাজ করেন। আর যখন জানতে পারলো আরোহীর জন্য বডিগার্ড দরকার তখন আরাফের মা নিজেই আরোহীর মা বাবা-র কাছে গিয়ে বলে ওনার একটা ছেলে আছে খুবই সভ্য ভদ্র আপনি যদি বলেন তাহলে ওকে একবার বলবো!
আরমান সাহেব অনেক বিশ্বাস করেন আরাফের মা কে আর সে দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে এই বাড়িতে কাজ করছে! তাই কিছু না ভেবে তাকে বলে ছেলেকে নিয়ে আসতে।
আরাফের মা খুশি হয়ে যায় রাতে বাড়িতে গিয়ে ছেলেকে বললে আরাফ সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তাব নাকুচ করে দিয়ে বলে, ‘ মা তুমি আমাকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছো আমি বুঝি কিন্তু আমি চাই একটা জব করতে যাতে পরে আর তোমাকে কষ্ট করতে না হয় আর এত পড়াশোনা করে কি লাভ শেষে যদি একটা মেয়ের বডিগার্ড হয়েই থাকতে হয়? মা আমি নিজের সেল্ফ রেস্পেক্ট একটা মেয়ের হাতে দিতে পারবো না প্লিজ আমি জব পেয়ে যাবো! আর কিছুদিন অপেক্ষা করি। ‘
আমেনা বেগম ছেলের কথায় মনে ভাড়ি দুঃখ পেলেন ছেলের উদ্দেশ্য বললেন, ‘ কোনো কাজই ছোটো বড় নয় বাবাই, আমি যদি আমার এই কাজকে ছোটো চোখে দেখতাম তাহলে তোকে মানুষ করতে পারতাম না। বাবাই আমি বড়বাবু কে বড় মুখ করে তোর কথা বলেছি আর উনারা সবাই আমাক খুব বিশ্বাস করে তাই এক কথায় তোকে নিয়ে যেতে বলেছে, বাবাই কিছুদিন কর তারপর ভালো জব পেলে চলে যাবি মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রাজি হয়ে যা! আর আরোহী মামুনি খুব সভ্য আর শুশিল মেয়ে তোকে একটু জ্বালাবে না। আরোহী মামুনি অন্য সব মেয়েদের মতো নেকামি করে না আর পছন্দ ও করে না। তুই একবার জব টা পেলে আর ছাড়তে চাইবি না! ওনারা সবাই তোকে নিজের ছেলের মতো করে যত্ন করবে ভালোবাসবে তারা সবাই খুব ভালো। ‘
‘ মা তুমি তো জানো তোমার কোনো কথা আমি ফেলতে পারি না। আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাবো কিন্তু পরে যদি আমি ভালো জবের অফার পাই তখন কিন্তু আমি এই বডিগার্ড হয়ে থাকবো না। জবটা ছেড়ে দেবো। ‘ আরাফ বলল।
‘ আচ্ছা ঠিক আছে বাবা এখন খেতে আয় কাল সকাল ১০টায় বড়বাবুর বাড়িতে চলে যাবি!
এখন আয় আমি নিজ হাতে তোকে খাইয়ে দেই ‘ (ছেলের কপালে চুমু দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে কিচেনে চলে গেলো আমেনা বেগম)
‘ উফফ আমি মেয়েদের সহ্যই করতে পারি না আর এখন সেখানে একটা মেয়ের বডিগার্ড হয়ে থাকতে হবে মেয়েরা সব গায়ে পরা হয় উফফ। আর ছেলেদের তো মানুষই মনে করে না চাকরের মতো একটু পর পর আদেশ করবে আল্লাহ ধৈর্য দিয়েন আমাকে। ‘
পরেরদিন সকাল ১০টায়।-
‘ আসসালামু আলাইকুম! আমি কি ভেতরে আসবো স্যার? ‘
আরমান সাহেব হল রুমে বসে নিউজ পেপার পড়ছিলেন ছেলের ভয়েস শুনে পেপারের উপর থেকে চোখ সরিয়ে আরাফের দিকে তাকালেন, আরমান চৌধুরী আরাফকে ছোটো থাকতে দেখেছে বড় হওয়ার পর আর দেখেনি তাই চিনতে পারছেন না। ভ্রুক্ষেপ করে তাকিয়ে সালামের জবাবে বললেন। – ‘ ওয়ালাইকুম আসসালাম! ‘
আরও বললেন, ‘ তুমি কে? তোমাকে তো ঠিক চিনতে পারছি না৷ ‘
আরাফ মৃদুস্বরে বলল, ‘ মাইসেল্ফ আব্রাহাম হাসান আরাফ ‘
আরমান খানের আরাফকে চিনতে একন আর অসুবিধা হয় না। কারণ সারাদিনই আমেনা বেগম তার ছেলে আরাফের নাম নিয়ে প্রসংশায় ডুবে থাকে। চিনতে পেরে বললেন, ‘ আরে আসো তুমি ওখানে কেনো দাড়িয়ে আছো এদিকে আসো আর এখানে আমার পাশে বসো। ‘
আরাফ আরমানের পাশে গিয়ে সোফায় বসল।
আরমান সাহেব গুরুগম্ভীর দৃষ্টিতে আরাফের দিকে তাকালেন এবং তার অসুবিধা সুবিধা সব কিছু আরাফকে বলে! আরও বলে, ‘ আরাফ আমার মেয়ে আমার কলিজার টুকরা আমি সবসময় ওকে নিয়ে টেনশনে থাকি, না জানি ওর কখন কোনো বিপদ আপদ হয় কি-না। জানোই তো ব্যবসায় এত উন্নতির জন্য আমার আগচড়ে অনেক শত্রু রয়েছে তারা আমার সাথে না পারলেও আমার মেয়ের ক্ষতি করতেই পারে তাই আমি চাই একজন বিশস্ত কাউকে ওর দায়িত্ব দিতে যে ছায়ার মতো ওকে প্রোটেক্ট করবে সব বিপদ আপদ থেকে আমার মেয়েকে রক্ষা করবে। আমার তোমার মা-র উপর বিশ্বাস আছে আর জানি উনি তোমাকে খুব সুন্দর করে আর ভালো শিক্ষা দিয়ে বড় করেছে আশা করি তুমি তোমার ১০০% দিয়ে আমার মেয়েকে রক্ষা করবে আর নিজের মা’র মতো আমাদের বিশ্বাস ভাঙবে না। ‘
‘ ইন শা আল্লাহ স্যার। আমি আমার সবটা দিয়ে চেষ্টা করবো৷ ‘
‘ আঙ্কেল বলো স্যার বলতে হবে না। ‘
‘ ওকে আঙ্কেল, তবে আপনার সাথে আমার একটা কথা ছিলো! ‘
‘ হ্যাঁ বলো! ‘
‘ আঙ্কেল আমার ইচ্ছা আমি খুব ভালো একটা জব করবো আর আমি এখনো জব পাইনি আমি অনেক গুলো ইন্টারভিউ দিয়েছি এখন পর্যন্ত কোনো রেসপন্স পাইনি! আমি জব পেলে এখানে থেকে চলে যাবো! ‘
‘ যা ভালো বুঝো তাই কোরো কিন্তু যাওয়ার আগে তোমার মতোই কাউকে খুঁজে দিয়ে যাবে কথা দাও তাহলেই যেতে দেবো! ‘
‘ জি আঙ্কেল, আচ্ছা আঙ্কেল ‘
‘ কি এত জি আঙ্কেল আচ্ছা আঙ্কেল করছো হুহ? আমি তোমার মতোই রক্ত মাংসের মানুষ। এত নার্ভাস হওয়ার বা এত সংকোচ করার কোনো প্রয়োজন নেই। আজ থেকে তুমি আমাদের ছেলের মতোন৷ ‘
‘ ধন্যবাদ ‘
আরমান সাহেব আরাফের সাথে কথা শেষ করে চলে গেলেন অফিসের উদ্দেশ্য আর যাবার আগে বলে গেলো, ‘আজ থেকেই তোমার কাজ শুরু করে দাও। আরোহী উপরে রেডি হচ্ছে হয়তো কিছুক্ষণ পর নিচে চলে আসবে আর তোমার সম্পর্কে আমি ওকে সব আগেই বলেছি! ওকে এখন আমি আসি বাবা নিজেদের খেয়াল রেখো। ‘
‘ জি আঙ্কেল! আল্লাহ হাফেজ ‘ আরাফ বলল।
পুরো ৩০মিনিট হয়েগেছে এখনো আসার খবর নেই।
‘ আল্লাহ এতক্ষণ ধরে কি করছে মেয়েটা? না জানি কত মেক-আপ করছে, ‘ আল্লাহ ‘ সব আটা ময়দা আজকেই শেষ করে দেবে। উফফ এই মেয়েরাও পারে যত্তসব ফাউল কাজে সময় নষ্ট করে কখন থেকে বসে আছি পা জিনজিন ধরে গেছে আল্লাহ এই সব আমাকে প্রতিদিন সহ্য করতে হবে। ধৈর্য দিন আল্লাহ আমাকে। ‘
দাঁতে দাঁত চেপে একাই বলতে ছিলো আশেপাশেও আড় চোখে তাকাচ্ছি কারণ অনেক কাজের লোক আছে কেউ শুনতে পারলে ওর খবর ১২টা।
আরও ১০মিনিট পর একটা মেয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসছে! পুরাই সিম্পল ভাবে একটা গোল জামা পরে আছে আর মেকআপ এর ছিটা ফোটাও নাই! একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে আরাফ মনে মনে বলল, ‘ মানে এতক্ষণ মেয়েটা মেক-আপ করছিলো না! আমি শুধু শুধু উল্টা পাল্টা ভাবতে ছিলাম ‘
মেয়েটাকে অপরূপ সুন্দরী লাগছে কাছে এত কিউট সুইট মেয়েকে দেখে নাই আর বড় কথা মেক-আপ করে না সে তো প্রকৃত সুন্দর।
আরাফের চোখ আরোহীর উপর আটকে গেছে!
শুরুতে আরোহীই আগে কথা বলে তারপর দু’জনেই দু’জনের পরিচয় দেয়, আরাফের সমস্ত ভুল ভেঙে যায়!
কারণ আরোহী যেমন দেখতে পরীর মতো তেমনই ওর ব্যবহার মুগ্ধ করার মতো বাকিদের মতোন আরোহী নয়, আরোহী সবার থেকে আলাদা!
দুইদিনের মধ্যে দু’জনের ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়।
আর এইভাবেই চলতে লাগল তাদের জীবন চাকা! আরাফ আরোহীকে সব সময় আগলে রাখে কখনো কোনো ক্ষতি হতে দেয়নি। আরোহীকে বাঁচাতে একবার নিজেই গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছিলো!
যত সময় যাচ্ছে আরাফ আরোহীর প্রতি আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে!
আরোহীর মায়াবী চোখ পাগল করা মতো হাসি লজ্জা পেলে মাথা নিচে করে ফেলা। আরাফ ওটায় গায়েল হয়ে নিজের অজান্তেই আরোহীকে নিজের সবটা দিয়ে ভালো বেসে ফেলেছে কিন্তু ওর সাথে তো আর আরোহী কে মানাবে না আরোহী কোটিপতি বাবার এক মাত্র মেয়ে আর আরাফ সামান্য বডিগার্ড আর আপন বলতে কেউ নেই!
কিছুক্ষণ পর একটা ওয়েটার কফি শপের ভেতর থেকে এসে বললো!
ওয়েটার জিজ্ঞেস করল, ‘ আপনি কি আরাফ? ‘
‘ জি আমিই আরাফ, বলুন কি বলবেন? ‘
‘ এই যে নিন কফি ভেতর থেকে আরোহী ম্যাডাম আপনাকে দিতে বললো! ‘
‘ আরোহী দিতে বলেছে? ‘ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল, ওয়েটার দুইবার উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো৷
ক্যাফের ওয়াল সামনের দিকে সম্পূর্ন সাদা থাই তাই বাহির থেকে ভেতরে কাচ বেধ করলেই দেখা যায় আর ভেতর থেকেও!
আরাফ কফি শপের ভেতরে তাকালো আরোহীর দিকে, আরোহী ও হাত আর চোখ দিয়ে ইশারা করে বললো কফি টা ওয়েটারের কাছ থেকে নিতে আর খেতে!
আরাফ কফি মগ নিয়ে অন্য দিকে ঘুরে কফির মগে চুমুক দিচ্ছে!
নিপা বলল, ‘ আরু তোর বডিগার্ড টা না আমার প্রথম দিন থেকেই ক্রাশ কিন্তু সে তো কোনো মেয়ের দিকে ফিরেও তাকায় না! ‘
মিতা ‘ ঠিক বলেছিস পুরাই কিউটের ডিব্বা! নায়ক ফেইল আহহহ কি কিউট চিনির মতো সুইট ‘
আরোহী বলল, ‘হুম কিন্তু…. ‘
নিপা ক্ষেপে গিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ল, ‘ কিন্তু কি? একমিনিট আরু তুই একটা কাজ করতে পারিস ওই ছেলেটার ডিটেইলস বলতে তার নাম্বার তুই তোর বডিগার্ড কে দিয়ে দে সে আচ্ছা মতো কেলানি দেবে! ‘
মিতা কফির মগেতে মাত্রই চুমুক দিয়েছে আর নিপার কথা শুনে মুখ থেকে কফি বেরিয়ে সোজা নিপার উপরে।
নিপা- ‘ মিতার বাচ্চা ফিতা ছিড়া তেনা কি করলি এটা তুই কফি ফেলার জন্য আমার শরীরটাই পেয়েছিলি নাকি ‘ (রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বলছে আর হাত দিয়ে জামা ধরে আছে)
মিতা- ‘ সরি সরি আসলে ‘
নিপা- ‘ চুপ কর তুই ইচ্ছা করে করছিস তুই এটা। ‘
‘ থাম থাম হইছে আর রাগারাগি করিস না চল সবাই এখন উঠি আর তোরও তো ড্রেস ক্লিন করতে হবে বাড়ি যাই চল! বাড়িতে গিয়ে একেবারে ড্রেস চেঞ্জ করে নিস। ‘ আরোহী মৃদুস্বরে বলল।
‘ হ্যাঁ হ্যাঁ চল চল! ‘ তাড়া দিয়ে মিতা বলল।
‘ আমি এইভাবে যাবো না! লোকে দেখলে হাসবে! ‘ নিপা অভিমানী ও রাগী গলায় বলল।
আরোহী শান্ত গলায় বলল, ‘ তুই কি এখন রাস্তা দিয়ে হাঁটবি নাকি? তুই তো গাড়িতে উঠে বাড়ি যাবি তোকে কি মানুষ গাড়ির মধ্যে ঢুকে দেখবে নাকি কেউ দেখবে না চল এখন! ‘
মিতা আর আরোহী নিপাকে সাত পাঁচ বুঝিয়ে কফির বেল প্রে করে চলে গেলো!
‘ আল্লাহ প্লিজ ও যেনো আর আরোহীকে কল না দেয় প্লিজ আল্লাহ আমার একটা রিকুয়েষ্ট রাখো প্লিজ মাহবুব প্লিজ আরোহীকে কল দিও না। আমার বাড়িতে গিয়ে মাহবুবের সাথে কথা বলতেই হবে!
‘ কি ভাবছিস মিতা? ‘ আরোহী মিতার হাতে গুতো দিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল, অনেকক্ষণ যাবৎ লক্ষ্য করছে অন্য মনস্ক কিছু নিয়ে চিন্তা করছে। তাছাড়া গাড়ির মধ্যে চুপচাপ বসে থাকার মেয়ে মিতা নয়।
‘ আ. আর. আরোহী আমার একটা কথা বলার আছে তোকে! ‘ ( ভয় মিশ্রিত কন্ঠে)
‘ তুই এত ভয় পাচ্ছিস কেনো? যা বলবি ফোঁটা ফাট বলে ফেল। ‘ আরোহী বলল,
মিতা কাঁপা কাঁপা গলায় কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলো।
#আরোহী
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#সূচনা_পর্ব
#চলবে_কি?
(কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ)