রক্তের বন্ধন, পর্ব– 03+04

0
1632

#গল্প– রক্তের বন্ধন,
পর্ব– 03+04

– – – – “ছিঃ তুতি এতো পঁতা কেন আমাত বাবাই কে মেরেছ। তুতি দেত না বাবাই কাঁততে। তুতি জানো বাবাই কাঁততে আমাত খুত কস্ত হয়। আল্লাত তোমার পাঁত দিবে! সরি বতো বাবাই কে!, তুতাকে কোতায় যেন দেখিছি!হ্যাঁ মনে পড়ছে! জানো তুতার ছবি বাবাই বুকে নিয়ে কাঁতে। প্রতিরাতে কাঁতে!
-রাইসার মুখে এমন কথা শুনবে কথা কখনো ভাবেনি। কথা করুণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাঁকালো।

– এই রাইসা মা আমার কি সব বলছিস। ওকে কেন বকা দিচ্ছে তুমি?

-মামনি,বাবাই আরো কি কি করে বলো তো?

– মনে মনে বলছি আজ আমার কপালে কি যে আছে আল্লাই জানে। কারণ রাইসা তো সব জানে। কারণ আমি যে কথাকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারিনি।

– তুমি পঁতা তোমায় কেন বলমো? তুতি আমাত বাবাই কে মেরেত। আমাত বাবাই কাঁততে। তোমাত সাতে কোন কতা নেই।

– আর তোমার বাবাইকে বকা দিবো না। এই যে রাজ সরি আপনার গায়ে হাত তোলার জন্য! এখন বলো তোমার বাবাই রাতে আরো কি কি করে?

– তুতার সাতে কতা নাই। তোতাতে মম মাইর দিবে। বাবাই মমকে অনেত ভালোবাতে। কতো আদত করে।

– রাইসার মুখে, রাইসার মায়ের কথা শুনে কথা অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে।

– এই যে আপতি বাবার দিতে ডিপতল এর মতো তাতাই রয়েছেন কেন?

– রাইসার কথা শুনে কথা হেসে দিল। রাগকে আর কন্টোল করতে পারছে না। রাইসাকে হাত বাড়িয়ে কাছে টেনে নিতেই। রাইসা বললো” ছুঁতে না আমাত, তুতি বাবাত কে কষ্ত দিয়েত! চলো তো বাবাই এথান থেতে চতে যাই! ”

– কথা মৃদু হেসে বললো” মিঃ রাজ সত্যি আপনার মেয়েটা, ভারী মিষ্টি কথা বলে।”

– হুমম ঠিক ওর মায়ের মতো। ওর মা’টাও এমন ভারী মিষ্টি কথা বলে। আমাকে হাসায় কাঁদায়! বড্ড বেশি ভালবাসি তার মা’টাকে। চোখের পানি লুকিয়ে মুখে হাসির রেখা, রেখে কথাগুলো বললাম।

– ওহ্! আচ্ছা! একদিন রাইসার মমটাকে নিয়ে আসবেন।

-মনে মনে বললাম তুমিই তো রাইসার জন্মদাত্রী। আচ্ছা! সে যদি রাজি থাকে নিয়ে আসবো কেমন।

– আচ্ছা এবার তাহলে আসুন। আর রাইসাকে আমার কাছে রেখে যান।

– আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলাম। মনে মনে বললাম আমি তো চাই রাইসা সারাজীবন তোমার কাছে থাকুক।

– আমি ডেস্কে এসে বসতেই। সাথি কাছে এসে বললো ” আজকে রাইসা আর আপনার জন্য, রান্না করে নিয়ে এসেছি, আজকে কিন্তু না করবেন না। লাঞ্চটা একসাথে করবো “।

– আচ্ছা ঠিক আছে বলে কাজে মন দিলাম।

– আপনাতে কি বতে ডাকব?

– রাইসার কথা শুনে কথা ক্ষানিকটা অবাক হলো। হঠাৎ কথার মনে পড়লো রাজের সে কথা” জানো কথা আমি স্বপ্নে দেখেছি, আমাদের একটা রাজকন্যা হবে, রাজকন্যাটা তোতা পাখির মতো কথা বলবে! আচ্ছা বলোতে নাম কী রাখা যায়? ”

– কি হলে বলতো না কেন। কি ডাতবো তোমায়?

– কথা ভাবছে, আমার সন্তানটা যদি আজ বেঁচে থাকতো আজ রাইসার মতোই হতো। চোখ থেকে টপ করে একফোঁটা পানি রাইসার মুখে পড়লো।

– তুতি কাঁততো কেন? আমাত কুতে নিবা?

– কথা রাইসাকে কুলে নিলে, রাইসা কথার চোখের পানি মুঁছে দেয়। কথার কাছে মনে হচ্ছে তাঁর সবচেয়ে আপন কেউ চোখের পানি পরম আদরে মুছে দিল। বুকটা প্রশান্তিতে ভরে গেল। বুঝতেছে না, একটা চরিএহীন লোকের ঘরে আল্লাহ্ তায়ালা এতো মায়াবতী মেয়ে দেয় কেমনে! কথা রাইসাকে নিজের অজান্তেই বুকে সাথের চেপে ধরে বললো ” আমাকে তোমার মম ডাকবে বুঝেছো মামনী?

– ছিঃ আমাত মম আতে, সে রাগ করবে তো। আমি তোমাত কেন মম ডাকবো। আচ্ছা! তোমাত নাম তী?

– কথা চালাকি করে বললো, আমার নাম মম। তুমি আমাকে নাম ধরে ডাকবে।

– বাবাই বলেতে বতদের সম্মাত করতে, তাই তোমাতে মম আত্তি বতে ডাকবো। মম আত্তি তুতি কিন্তু বাবাতে মারতে পাতবে না।

– আচ্ছা তুমি বাবাইকে খুব ভালোবাসো?

– হুমমম খুত ভালোবাতি! বাবাই কিতু হয়ে গেতে আমি মতে যামু।

– রাইসার কথাটা কেন জানি কথার কলিজায় গিয়ে বিঁধলো। কেন এতো মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে, কথা বুঝতে পারছে না! কথা নিজের অজান্তেই রাইসার মুখটা ধরে বললো” মারে এমন কথা বলিস না!

– আচ্তা আমি আতি, বাবাই কাতে যাবো।

– রাইসা চলে গেলে, রাজের সাথে কাটানো স্মৃতিগুলে কথার চোখে দিনের আলোর মতো ভেসে উঠলো। এখনো মাঝে মাঝে, রাজের কথাগুলো মনে পড়লে কথা সেন্সলেন্স হয়ে যায়। একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে কীভাবে এতোটা ঠকাতে পারে কথা কোনদিন নিজে চোখে না দেখলে ভাবতে পারতো না। রাজ কথাকে বিয়ে করেছিল শুধু তার বাবার টাকার লোভে। সত্যি আমি কি দেখতে খারাপ ছিলাম যার জন্য রাজ অন্য মেয়েদের সাথে গোপনে অশ্লীল কাজ করতো।
রাজের প্রতি, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই কথা রাজকে বিশ হাজারের জায়গায় ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরিতে রেখেছে। কিন্তু এখন রাজকে দেখলেই পুরোনো স্মৃতিগুলো স্মৃতিপটে ভেসে উঠে। কথার চোখ গুলো জলে ভরে উঠল। চোখের পানি মুছে ভাবল, তার সাথে প্রতারণার বিচার সে নিজে করবে। রাজকে অপমান করে তার শরীরের জ্বালা নিভাবে।

– একটু পর পিয়ন এসে বললো” ম্যাম লাঞ্চ করবেন না?”

-পিয়নের কথা শুনে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো, ২টা বেজে গেছে। পিয়নকে খাবার আনতে বললো। পিয়ন খাবার আনতে গেলে কথা ভাবলো, রাইসাকে নিয়ে
আজ খাই। প্রতিদিন তো একাই খাই।

.

এদিকে সাথি এসে রাজকে আর রাইসাকে ক্যান্টিনে নিয়ে যায়। এক প্রকার জোর করেই।

-মম তুতি বাবাইকে এত্তো ভালোবাতো, বাবাত জন্য রান্না কতে নিয়ে আততো?

– রাইসার কথা শুনে আমি আর সাথি দুজনের বিস্মিত হয়ে গেলাম। সাথির দিকে চেয়ে দেখি, লজ্জায় সাথির মুখটা লাল হয়ে গেছে! সাথি নিচের দিকে চেয়ে প্লেটে খাবার বেড়ে দিচ্ছে। রাইসা এটা সেটা বলেই যাচ্ছে।

– মিস সাথি, রাইসার কথায় কিছু মনে করবেন না। রাইসা ছোট মানুষ তো তাই।

– নাহ্ আমি কিছু মনে করিনি, তবে কথাটা বেশ ভালোই লেগেছে। মনে হলো একদম তোতা পাখি কথা বলছে।

– মানে কী বলছেন আপনি?

– আরে কিছু না খাবার রেখে কথা বলতে হয় না শুরু করেন।
– আমি সাথির কথার আগা মাথা কিছুই বুঝতেছি না।

– হঠাৎ রাইসা বললো” জাতো মম, আত তোমাতে না পেলে, বাবাইকে নিয়ে মম কিনতে বাজারে যেতাম। বাজারে নাতি সব কিততে পাওয়া যায়। আর মম তো পাওয়াই যেত তাই না। কিন্তু দেত কপাত কতো ভালা অফিতে তোতায় পেয়ে গেলাম। তুতি অনেক ভাতো মম। তুতি আমাত ততলেট দিতো। বাবাইকে রান্না করে দিতো। মম তোতায় হাত টা দাওতো এতটু।

– সাথি হাতটা দিতেই, রাইসা হাতটা তার মাথায় রেখে বললো ” বলো মম আমাত কখনো ছেততে যাবে না। জানো মম সবাত মম আতে আমাত মম নেই,তাব্যর মম কতো আদত করে, ওকে তুতে খাইয়ে দেয়। কুলে নিয়ে বেড়ায়। আমাত না দেতে এই বুকে কেমত কেমত লাগে! বতো মম আমাত মাতায় হাত রেতে তুমি ছেড়ে যাবে না আমাত! আতি না রাতে খুত কান্না করি। বাবাইকে বলি আমাতত মম লাগবে। বাবাই শুধু আমাত বুতে নিয়ে কাতে। জাতো মম ততন আমিও কাঁতি। খুত কাঁতি আমি। আমি বাবাকে যে অনেক ভালোবাতি তাই কাঁতি তাইনা মম। এথন থেতে বাবাইকে আর কাঁততে দিবো না। তুতি এতে গেছ যে।

– এই রাইসা মা আমার কি সব পাগলামী করছো। চুপ কর।

– আপনি চুপ করেন মি রাজ , নারে মা তুকে ছেড়ে কোথা যাবো না। তোর মতো মায়াবতীকে ছেড়ে যেতে পারি? তুই আমার মেয়ে। আর মিঃ রাজ আপনি কিছু না মনে করলে রাইসাকে আমি নিজের মেয়ের মতোই বুকে আগলে রাখতে চাই। কয়েক বছর পর বড় হলে এমনিতেই বুঝতে পারবে। ছোট বাচ্চাতো তাদের কষ্ট দিতে নেই। এবার খাওয়া শুয়ে করো।

– সাথি রাইসাকে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে।
– আমি যখনি খাবার খেতে যাবো তখনি রাইসা আমার হাতটা ধরে ফেলল।

– বাবাই তুতি কি করতো? জাতো না সিনেমাই বাবাই মমকে খাইয়ে দেয়। তুতি মম কে খাইয়ে দাও। কথা বলেই কান্না করতে লাগলো।

– এদিকে একটা মহা সমস্যা রাইসা বেশি কাঁদলে, কথার মতোই সেন্সলেন্স হয়ে যায়। উপায় না পেয়ে, মন চাচ্ছিল না, তাও যখন সাথির মুখে খাবার তুলে দিতে যায় তখনি কথা এসে দেখে ফেলে।

– কথার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। দেখে বুঝা যাচ্ছে, শরীরটা রাগে ফেঁটে যাচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে, কেন এতো কষ্ট হচ্ছে। কথা ইচ্ছে করেই প্লেটটা ফেলে দিয়ে এতোগুলা মানুষের সামনে যা করলো তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। সাথি ভয় পেয়ে গেল।

চতুর্থ অধ্যায়- – – – – – – – 4

– – – – এদিকে একটা মহা সমস্যা রাইসা বেশি কাঁদলে, কথার মতোই সেন্সলেন্স হয়ে যায়। উপায় না পেয়ে, মন চাচ্ছিল না, তাও যখন সাথির মুখে খাবার তুলে দিতে যায় তখনি কথা এসে দেখে ফেলে।

– কথার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। দেখে বুঝা যাচ্ছে, শরীরটা রাগে ফেঁটে যাচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে, কেন এতো কষ্ট হচ্ছে। কথা ইচ্ছে করেই প্লেটটা ফেলে দিয়ে এতোগুলা মানুষের সামনে যা করলো তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। সাথি ভয় পেয়ে গেল। কারণ কথা সাথিকে ডেকে নিয়ে গেল তার কাছে।

– আমি মনে মনে ভাবছি একটা থাপ্পর তো অন্তত খাবেই সাথি। আমার জন্য মেয়েটা ফেসে গেল!

– কথা সাথিকে ডেকে নিয়ে বললো” আজ তোমাদের সাথে আমিও খাবো। ( কথাটা বলে হেসে দিল)

– কথার দিকে তাকাতেই চমকে গেলাম। হাসিমাখা মুখটার পিছনেও কালো ছায়া দেখতে পেলাম। ক্ষানিক করুনার দৃষ্টিতে কথা আমার দিকে চেয়ে থেকে চলে গেল।

-খাওয়া শেষ করে, ডিস্কে বসে অফিসের একটা জরুরি ফাইলের কাজ করছি। এমন সময় পিয়ন বললো ‘ স্যার আপনাকে মাডাম ডাকছে!

– পিয়নের কথা শুনে ম্যাডামের রুমে গিয়ে, দরজা নর্ক করতেই বললো আসেন।

– আমি রুমে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ম্যাডাম আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

– মিঃ রাজ আপনাকে যে রুপপুর প্রজেক্টের ফাইলটা দেওয়া হয়েছে। সেটা কি কমপ্লিট করছেন?

– ম্যাডাম আরো তিনদিন লাগবে, কাজগুলো ঠিকভাবে শেষ করতে।
– what! কি বলছেন আপনি? এই জন্য আপনাকে ওতো টাকা বেতন দেওয়া হয়?

– ম্যাডাম দুইদিনে কোন মানুষের পক্ষেই এতোবড় প্রজেক্ট এর কাছ করা সম্ভব নয়।

– ঠাস! ঠাস! লজ্জা করে না? মুখে মুখে তক্ক করতে। আমি কিছুই শুনতে চাইনা। আমি কাজ চাই। লাঞ্চের সময় তো ভালোই দেখলাম। একদম রেস্টুরেন্ট বানিয়ে ফেলছিলেন।

– ম্যাডামের কথা শুনে আর বুঝতে বাকি রইলো না দুপুরে সাথির সাথে লাঞ্চ করার জন্যই কথা আমার গায়ে হাত তুলল।

– কি হলে, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন কেন? আপনার নষ্টামির কথা শুনে আপনার একটুয়ো লজ্জা লাগছে না। আমার জীবন তো আপনি নষ্ট করেছেন। এখন সে মেয়েটার জীবনও নষ্ট করতে চাচ্ছেন? এরপর যদি এমন কিছু দেখি তাহলে আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে বাধ্য হবো।

-ম্যাডাম আমার দু’লাখ টাকা লাগবে। যদি দিতেন উপকার হতো।

– কি যেন ভেবে দু’লাখ টাকার একটা চেক লিখে দিল!

– আমি ম্যাডামের রুম থেকে বের হয়ে, ডেস্কে বসে আছি। চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। রাইসা আমার কুলে চড়ে চোখের পানি মুছে দিচ্ছে। আর বলছে ” বাবাই তুমি কাঁদতেছো কেন? কে বকা দিয়েছো?বলো আমি তাকে বকা দিয়ে আসবো। কেঁদোনা বাবাই তুমি কাঁদলে যে আমার খুব কষ্ট হয়।

– মেয়েটাকে কিভাবে বলি, আর কেউ নয় আমাকে মেরেছে তোর জন্মদাত্রী মা।

-বাবা বলো না কেন, কে তোমায় বকা দিয়েছে। বাবাই ওই মম আন্টি কি তোমায় বকা দিয়েছে?
– না মা, আর মম আন্টি কে কখনো মম ডাকবে না। শুধু আন্টি ডাকবে।

– বাবাই আমি বুঝেছি, ওই পঁচা আন্টি তোমাকে বকা দিয়েছে। দাঁড়াও আমি আসছি।

– রাইসা দৌড়ে কথা ম্যাডামের ডেস্কে চলে গেল।

– রাইসা গিয়ে দেখে, কথা কার যেন সাথে কথা বলছে। তাই লোকটাকে বললো” আপনি চলে যান, আমি আন্টির সাথে একা কথা বলবো।

– এদিকে কথা বিদেশী ভাইয়ারের সাথে কথা বলছে। পিয়ন ডেকে রাইসাকে সরিয়ে নিতে বললো। পিয়ন রাইসাকে নিয়ে এটা সেটা বলছে। পিয়ন চাচ্চু বলো তো, তোমার বাবাই কে কেউ যদি মারে। তুমি তাকে কি বকা দিবে না?

– হুমম বকা দিবো তো? আচ্ছা করে বকা দিবো!

– কেউ যদি তোমায় আকটে রাখে তুমি কি করবা?
– তার কাছ থেকে পালিয়ে গিয়ে আচ্ছা করে বকা দিয়ে আসবো যে আমার বাবাইকে বকা দিয়েছে।

– তাহলে চাচ্চু তোমার সাথে আমি খেলি কেমন?

– কেমন খেলা মামনি?

– আপনি চোখ বন্ধ করেন, আমি এই রুমে লুকাবো। আর আপনি যদি চোখ বন্ধ না করেন, আল্লাহ্ আপনাকে পাপ দিবে।

– আচ্ছা মামনি চোখ বন্ধ করলাম।

– পিয়ন চোখ বন্ধ করতেই রাইসা এক দৌড়ে ম্যাডামের রুমে এসে পড়ে। রুমে এসেই দেখে যে কথা ম্যাডাম তার ডেস্কে বসে আছে। লোকটা চলে গেছে। কথা ম্যাডডামের মন খারাপ। কারণ তিন কোটি টাকার প্রজেক্টটা হাত ছাড়া হয়ে গেল। তারই অসাবধানতার জন্য। রাইসা কথা বললো ” এই যে আন্টি তুমি নাকি বাবাই কে মেরেছ? আমার বাবাইকে কেন মেরেছ?

-কথা প্রজেক্টটা হাত ছাড়া হওয়ার জন্য রাগে শরীরটা গিজগিজ করছে। এমন সময় পিচ্চিটা আসছে জ্বালাতে। তাই রাগ করে বলে, ” মারছি তো বেশ করেছি, ওইরকম চরিএহীন লোকটাকে মারতেই হয়। প্রয়োজন পড়লে খুন ও করতে পারি। ”

– তুমি পঁচা, আল্লাহ্ তোমাকে পাপ দিবো, তোমার সাথে কথা নাই। তুমিও ও একটা চরিএহীন।

– কথা এমন কথা শুনে রাগ চেক না দিতে পেয়ে, রাইসার গালে চড় বসিয়ে দেয়। চড়টা এতোই জোরে ছিল রাইসা টাস করে ফ্ললে পড়ে যায়। রাইসার কান্না শুনে, দৌড়ে ম্যাডামের রুমে এসে দেখি, কলিজার টুকরাটা মাটিতে পড়ে আছে। ঠোঁট কেটে রক্ত পরছে। কথা অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাইসাকে তাড়াতাড়ি কুলে নিতেই রক্তমাখা মুখ নিয়ে রাইসা বলে” বাবাই তোমায় না ওই মহিলামহিলাটা মেরেছে। তাই আমিও বকা দিয়েছি, জানো বাবাই তোমাকে চরিএহীন বলেছে। আমিও বলে দিয়েছি আপনি একটা চরিএহীন। এই জন্য আমাকে চড় মেরেছে। এই দেখ বাবাই আমার রক্ত বের হচ্ছে। আমি কষ্ট পায়নি বাবাই, কিন্তু তোমাকে যখন কাঁদতে দেখেছি তখন না অনেক কষ্ট পেয়েছি। আচ্ছা! বাবাই চরিএহীন কী?

– না মা চরিএহীন মানে খুব ভালো। রাইসার মুখে যে রক্ত দেখা যাচ্ছে, সেটা কোন রক্ত না সেটা আমার কলিজা ফাঁটা রক্ত। কলিজাটা ফেঁটে যাচ্ছে। মা হয়ে নিজের সন্তানকে মারলো তার একটা বার হাত ও কাঁপলো না।

– ম্যাডাম আজ যদি, আপনার মেয়ে থাকতো রাইসার জায়গায়। পারতেন এমন ভাবে চড় মারতে? আমি কাকে কি বলছি, মেয়ের আদর আপনি কি বুঝবেন। আপনি তো সন্তান জন্ম দেওয়ার আগেই তাকে মেরে ফেলেছেন।
আচ্ছা ম্যাডাম আপনার গর্ভেই সন্তানটাই যদি আজকের রাইসা হয়?

– তুতুমি কি বলছো? রাইসা আমার মেয়ে? কান্না করে দিয়ে।

– রাইসা আপনার নয় রাইসা আমার মেয়ে। রাইসার মা জানতে পারলে আর কখনো অফিসে আনতে দিবেনা কথা কে।

– বাবা আমার না খুব পেট ব্যথা করছে। রাইসার কথা শুনে বুকটা ধর্ক করে ওঠলো।

– রাইসাকে নিয়ে সরাসরি হসপিটালে চলে গেলাম।

– ম্যাডাম আপনি মাসুম বাচ্চাটাকে মারতে পারলেন? ( সাথি)

– কথা কিছু না বলে অফিস থেকে সরাসরি বাড়িতে চলে আসলো!

– বাড়িতে আসতেই কেন জানি বারবার রাইসার রক্তমাথা মুখটা ভেসে উঠতে লাগল। নাহ্ কাজটা একদম ঠিক করিনি! আচ্ছা রাজ যে বললো, রাইসা আমার মেয়ে! এমনই কিছু একটা বলেছে। হঠাৎ কথার মনে হলো যখন কথা গর্ভবতী রাজ কথার মাথাটা বুকে নিয়ে বললো ” জানো কথা, আমাদের মেয়ে হলে নাম রাখবো, রাইসা!

– কথাটা মনে পড়তেই কথা চমকে উঠলো! তাহলে কি রাইসা আমার মেয়ে।

চলবে “”””””””””

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here