#Senior_life_partner
পর্ব——38
Afrin Ayoni
এই যে Miss.?
শুনেন প্লিজ………..
Single আছেন কী?
বলতে চাই,,,,একটা কথা
আপনি রাখবেন কী?
আমার মনের রাজপ্রাসাদের রাণী হইবেন কী?
আর ভালবাসার একটা গোলাপ আপনি রাখবেন কী?
Hey…. আপনার পিছে ঘুরে ঘুরে আমি
রোদে পুইড়া ছাই!!
বুঝতে গিয়াও এই আমারে বুইঝাও বুঝেন নাই??
আরে আপনার পিছে ঘুরে ঘুরে আমি
রোদে পুইড়া ছাই!!
বুঝতে গিয়া ও এই আমারে বুইঝাও বুঝেন নাই??
রিদীমা জগিং করতে বেরিয়েছে।পাশেই এই গানের টোন টা পেয়ে ফিরে তাকালো।রীতিমতো বিরক্ত সে।
রিদীমা– তুই আবার পিছনে লেগেছিস????
আবার মানে!আমি কি তোমার পিছু কখনো ছেড়েছি??
রিদীমা– always ফলো করিস আমাকে? এই তোর লজ্জা করে না????
রিদীমা তারপরের টুকু বলতে যাবে তার আগেই পাশের ব্যক্তিটি বলে উঠলো,,, “জুনিয়র হয়ে বন্ধুর বোনকে লাইন মারতে চাস।তোর মত নির্লজ্জ এই দুনিয়াতে খুব কম আছে।সেই ছোট থেকে পিছু পড়ে আছিস,এখনো চেন্জ হওয়ার নাম গন্ধ নেই।”
কি এগুলোই তো বলবে ?? একেবারে common কথাবার্তা।
রিদীমা ভ্রু কুঁচকে– দেখ শুভ!এসব একদম ঠিক করছিস না। আমি চাইলেই কিন্তু ………?
শুভ — চাইলেই কি?চাইলেই স্বাদ ভাইয়াকে দিয়ে মার খাওয়াতে পারো? শাহেদ ভাইয়াকে দিয়ে শাসাতে পারো…… but I don’t care,,,, অনেক শাসিয়েছো,,, মাইর খাইয়েছো তোমার best friend দের হাতে।তারপর ও যখন পাল্টাইনি,আর পাল্টাবোও না।
রিদীমা– চাস টা কি তুই??
শুভ — সেই ল্যাংটা কাল থেকে বলে আসতেছি, আমি একটা সিনিয়র আপুর সঙ্গে সারাজীবন কাটাতে চাই।এইটুকুই ব্যাস …….
রিদীমা– দেখ তুই বেশি বাড়াবাড়ি করলে এইবার তোর বিষয়টা আমি রবিনকে বলতে বাধ্য হব।
শুভ হেসে — কি বলবে শুনি??তোমার ভাই ও তো ….
রিদীমা– তোকে বলতে হবে না।??
শুভ রিদীমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে– ভাবছি রবিনকে এবার তোমার কথাটা বলেই দিই।
রিদীমা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে– এই কি বলবি?রবিন আমার ছোট ভাই,আমি ওর বড় বোন হই।তুই নিজে তো একটা shameless আমাকেও লজ্জায় ফেলবি।
শুভ — আজ না হলেও কাল তো সবাই জানতেই পারবে।
রিদীমা– কি জানবে সবাই?আমার তোর সাথে কোনো connection নেই।
শুভ — কে বলেছে নেই,আছে তো।
রিদীমা– Shut up…..??
শুভ — আমাকে বলে কোনো লাভ হবে না। এসব চিৎকার চেঁচামেচি চৌধুরী মেনশনে গিয়ে করো।
রিদীমা– কুত্তার লেজ কখনো সোজা হবার নয়।
শুভ — যা ভাবার ভেবে নাও।বউ তো তুমি আমার ই হচ্ছো।
রিদীমা– থাপ্পড় খাওয়ার খুব শখ!!??
শুভ — এই দাও না, তারপর ও তো তোমার ছোঁয়া পাব।
রিদীমা– Stupid কোথাকার।
শুভ — Stupid বল আর যাই বল।আমি কিন্তু তোমার ব্যাপারে বাড়িতে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি।আম্মু তো সেই প্রথম দিন থেকেই জানে।
রিদীমা– তুই কি পাগল??
শুভ — সারিয়ে তোলার ঔষধ তোমার কাছে।
রিদীমা– এই তুই জানিস আজ কয় বছর ধরে আমার পিছনে লেগে আছিস তুই????
শুভ — কয় বছর ধরে মানে?আমি তো জন্মের পর থেকেই তোমার পিছু লেগে আছি।মা বলে যে মনে নেই, আমার যখন দুইদিন কি তিনদিন তোমরা পুরো পরিবার মিলে আমাদের বাড়িতে গিয়েছিলে।তখন তোমার বয়স 5 কি 6 বছর!তোমার ঐ গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট দুটো দিয়ে আমার এই নরম hot hot গাল গুলোতে যেই kiss করেছো আমি তোমার চুল টেনে ধরেছি।সেদিন থেকেই তো তোমার পিছু নিয়েছি।??
রিদীমা– জানতাম,তোর মনে ছোট থেকেই লুচ্ছামি।
শুভ — শুধু তোমার ক্ষেত্রে, অন্যদের জন্য না।
রিদীমা– তোকে বারবার ছেড়ে দেই মায়ের বান্ধবীর ছেলে দেখে আর ছোট ভাইয়ের বন্ধু দেখে।
শুভ — ধরে রাখো না,ছাড়তে কে বলেছে??
রিদীমা বিরক্ত হয়ে– শুভ,এইবার কিন্তু উষ্টা খাবি বদমাইশি করার জন্য। ??
শুভ দুষ্টু হেসে — ছিঃ!The great রিদীমা চৌধুরীর মুখের ভাষা এমন??
রিদীমা– তোর সাথে নোয়াখালীর ভাষাও যায় না।
শুভ — ওকে তাহলে বলো না।
রিদীমা এগিয়ে যায়। শুভ পিছন থেকে চেঁচিয়ে বলে– “এতদিন exam এর চাপে& কিছু কাজে busy ছিলাম। তোমার জীবনে আবার back করছে শুভ জোয়াদ্দার miss. রিদীমা চৌধুরী।”
রিদীমা পিছু তাকালো না।বাড়ি যাওয়ার পথে পা বাড়ায় সে।রিদীমা চলে যাওয়ার পর পরই আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো নয়ন।শুভর দিকে তাকিয়ে দুষ্টুমির হাসি দেয়।
শুভ– কিরে ব্যাটকাস কেন????
নয়ন — বন্ধু, রবিন জানলে তোর চব্বিশটা বাজাবে।
শুভ — সেটা জানার পরের কাহিনী।
নয়ন — তোদের কি কপাল! তোরা দুজনে বড় আপুদের পটিয়ে ফেলছিস আর আমি একটা পিচ্চি মামণির ও দেখা পাই না।
শুভ–চল ব্যাটা???
নয়ন — চল।
রিদীমা কপালের ঘাম হাত দিয়ে মুছতে মুছতে ঢুকলো বাড়িতে। দিতী চৌধুরী তখন কাউকে ফোনে দাওয়াত করছিলেন রিসেপশনে। রিদীমা সিড়ি বেয়ে উঠতে যাবে পিছন থেকে দিতী চৌধুরী ঢেকে বলে,,,,
দিতী বেগম– রিদীমা!!
রিদীমা থেমে গিয়ে– হ্যাঁ মম।
দিতী বেগম– এই নে তোর খোঁজ করছিলো,,,তোর সাথে কথা বলবে তোর সিরিন আন্টি।
রিদীমা মনে মনে– Ohh nooo…. রাস্তায় ছেলে জ্বালিয়ে গেল,এখন জ্বালাবে মা।???
দিতী বেগম– কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?ফোনটা ধর।
রিদীমা এগিয়ে গিয়ে ফোনটা হাতে নিলো,”জ্বি কেমন আছেন আন্টি?”
সিরিন বেগম– রিদীমা আম্মু, তুই দেশে এসেছিস আজ কয়েকদিন হল একবার ও এমুখো হলি না।
রিদীমা– সরি আন্টি, সময় পাইনি।
সিরিন বেগম– আমাদের জন্য কী তোর সময় হবে??
রিদীমা– সেরকম কিছু না আন্টি, কাজে ব্যস্ত।
সিরিন বেগম– কত দিন দেখি না তোকে????
রিদীমা– কাল চলে এসো,দেখতেই পাবে।রাখছি এখন।
রিদীমা কলটা কেটে দিল।কারণ সিরিন বেগমের কথা শেষ হবে না সারাদিনেও।এটা সে ভালো করেই জানে।
ইসুয়া রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসার সময় রিদীমাকে দেখে মুচকি হাসে।রিদীমা ও হেসেই তার জবাব দেয়।
ইসুয়া– আপু তোমার জন্য একটা dress এনেছি।কাল দিতে মনে নেই।
রিদীমা– আমার জন্য আনতে গেলে কেন?
ইসুয়া– সবার জন্য এনেছি।তোমার জন্য আনবো না তা হয়!!
রিদীমা– আমি কিন্তু শাড়ি পড়তে পারি না।
ইসুয়া– No চিন্তা,তোমার জন্য রয়েল ব্লু কালারের princess dress এনেছি??
রিদীমা– কি দরকার ছিলো এসবের?রিসেপশন তোমার জন্য রাখা হয়েছে, আমার জন্য নয়।
ইসুয়া– তোমার জন্য অনেক বেছে এই গাউনটা আমি নিয়ে এসেছি, এত কিছু জানি না। এটা তুমি কাল পড়বে।
রিদীমা হেসে– আচ্ছা বাবা,পড়বো।??
—————————————————————–
স্বাদ আর রেহানা বেগম breakfast করতে বসেছেন।
স্বাদ– মা,,,, orange juice টা দাও তো।
রেহানা বেগম জুসের গ্লাসটা ছেলের দিকে এগিয়ে দিলো।
স্বাদ– মা ব্যাগ pack করে নাও।কালকের ফ্লাইটে লন্ডনে ফিরছি আমরা।
রেহানা বেগম– মানে?হুট করে ফিরবি !??
স্বাদ– মা এসেছি ও তো হুট করেই।
রেহানা বেগম– তাই বলে……………….
হঠাৎ বাড়ির দরজায় নক পড়ে।রেহানা বেগম এগিয়ে যান দরজার দিকে।
রবিন– আসবো আন্টি।
রেহানা বেগম– আরে রবিন, এসো ভিতরে এসো।
স্বাদ– রবিন যে।??
রবিন– সকাল সকাল চলে এলাম।
রেহানা বেগম– এসে ভালোই করেছো,বসে পড়ো।
স্বাদ– এসো ব্রেকফাস্ট করো।??
রবিন– আরে না না,আমি খেয়েই এসেছি।
রেহানা বেগম– কোনো কথা শুনতে চাই না, বসে পড়।
রবিন কার্ড টা রেহানা বেগমের দিকে এগিয়ে দিলো।
রেহানা বেগম– কি এটা?
রবিন– আপনাদের কাল আমাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ।
স্বাদ– উপলক্ষ কী????
রবিন– রিসেপশন।
স্বাদ– ওহ,,,,
রবিন– আপনাদের আসতেই হবে।
রেহানা বেগম– 100 বার যাব।☺☺
রবিন– তাহলে আজ আসি।
স্বাদ– ব্রেকফাস্ট করে যাও।
রবিন– প্লিজ ভাইয়া জোর করবেন না, সত্যি আমি খেয়েই এসেছি।
স্বাদ– বাড়ির সবাই কেমন আছেন????
রবিন– ভালো।অনেক কাজ,,কাল দেখা হবে।আন্টিকে নিয়ে চলে আসবেন।
স্বাদ– আচ্ছা।
রবিন কার্ড দিয়ে চলে যায়। রেহানা বেগম দরজা আটকে স্বাদের দিকে এগিয়ে এলেন।
রেহানা বেগম– কাল তুই সত্যিই যাবি??
স্বাদ– হ্যাঁ। ??
রেহানা বেগম– তবে যে বললি, কাল আমাদের ফ্লাইট।
স্বাদ– ফ্লাইট সন্ধ্যায়।
রেহানা বেগম আর কিছু বললেন না। স্বাদকে তিনি অনেক জোর করেছেন,ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল অবধি করেছেন। আর না! এবার ছেলেটাকে তার ইচ্ছে মতো থাকতে দেওয়া উচিত।
শাহেদ রবিনের কল পেয়ে পাড়ার মোড়ে এসে দাঁড়ায়। রবিন বাইক নিয়ে এসে দাঁড়ায় ঠিক শাহেদের সামনে।
রবিন কার্ড টা শাহেদের দিকে ধরে।শাহেদ কৌতূহলী হয়ে,,,,
শাহেদ– কি এটা????
রবিন– খুলে দেখুন।
শাহেদ কার্ডটা খুলে পড়লো।তারপর মুখে হাসি ঝুলিয়ে বললো– যাবো,অবশ্যই যাবো।
রবিন– যেতে তো হবেই।??
শাহেদ– অনেক বড় কাজ আছে যে।
রবিন– কাজ কি বলছেন!মিশন বলুন।
শাহেদ হা হা করে হেসে উঠে– হ্যাঁ মিশন,বিরাট মিশন।
রবিন– আচ্ছা এখন যাই,হাতে অনেক কাজ পড়ে আছে।
শাহেদ– ওকে।
রবিন– শিলাকে নিয়ে আসতে ভুলবেন না।
শাহেদ–???
রবিন তার বাইক স্টার্ট দেয়।শাহেদকে রেখে রবিনের বাইক ছুটে চলেছে সামনের রাস্তায়।
…………………………………………………………
নিশুয়া সারা আলমারি তছনছ করে বসে আছে। বিরক্ত হয়ে চিল্লাতে থাকে,,”আম্মু আম্মু আম্মু!!”???
ঝুমা বেগম মেয়ের চেঁচামেচিতে তার রুমে এসে — কি হল!এইভাবে চিল্লাপাল্লা করোস কেন??
নিশুয়া– আমার green গাউনটা কই??
ঝুমা বেগম– তোর ড্রেস তুই জানিস কোথায় রেখেছিস।
নিশুয়া অসহায় মুখ করে বললো– পাচ্ছি না তো।
ঝুমা বেগম– খুঁজে দেখ।
নিশুয়া– কিছু টাকা দাও।
ঝুমা বেগম– কেন???
নিশুয়া– একটা dress নিব।
ঝুমা বেগম– খুন্তির বারি খাস না,তোর জামার অভাব নেই। নতুন কিনতে যাবি কেন?
নিশুয়া মুখ মলিন করে– যাওয়া লাগবে না, যাব না।
ঝুমা বেগম– যাস না। আমার সঙ্গে ন্যাকামি করে কোনো লাভ হবে না।
নিশুয়া– আব্বুকে বলছি আমাকে জামা কিনে দিতে।
ঝুমা বেগম– মার খাবি,,,,,কিন্তু।??
নিশুয়া অন্য রুমে চলে গেল।নিশুয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ঝুমা বেগম মুচকি হাসলেন।কারণ,তিনি জানেন এই মেয়েকে কিছু বলে লাভ নেই। বাবার কাছ থেকে নতুন জামা সে ঠিকই আদায় করে ছাড়বে।
ভার্সিটির ক্যান্টিনে বসে কয়েকজন বান্ধবীকে কার্ড দিলো সিনথিয়া। সবাই হাসিমুখে ইনভাইটেশন রক্ষা করবে বলে সম্মতি দিল।
তুলি সিনথিয়ার দিকে তাকিয়ে– তাহলে ওদের husband wife এর পরিচয়টা সবাইকে জানানোর ব্যবস্থা করছে।
সিনথিয়া– হুম।
তুলি — তোর কি হবে?
সিনথিয়া– আমার কি হবে মানে????
তুলি — তুই তো রবিনকে………
সিনথিয়া– ধ্যাৎ ,,, পাপার কথায় অভিনয় করেছি কেবল।আমার মনে তো অন্য কেউ বাস করে।
তুলি excited হয়ে — এই কে কে,বল না।???
সিনথিয়া– সময় হলে জানতে পারবি।
তুলি — ??okkkkk
সিনথিয়া কাঁধে ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়ায়– ওকে কাল তোরা চলে আসিস কিন্তু।
সবাই একসঙ্গে– Done??????
————————————————-
বিকেল বেলা:::
আজ সারাদিন বউটাকে খুব miss করেছি আমি।?
ইসুয়া ভেঙ্গচিয়ে– কচু করেছেন মিস।
রবিন ইসুয়ার গালে ঠোঁট চেপে ধরে– সত্যি Miss. অধ্যাপিকা আমি আজ সারাদিন কাজের ফাঁকে আপনাকে খুব খুব খুবই মিস করেছি।???
ইসুয়া– গালে দাগ পড়বে,আপনার বাজে বখাটে ঠোঁট দুটোকে সরান বলছি।
রবিন– আমার ঠোঁট দুটো বখাটে?????
ইসুয়া– তা নয়তো কী??যখন তখন যেখানে সেখানে attack করে বসে।
রবিন– ????
ইসুয়া–????????
_____________________________(চলবে)