#অ্যাসিড
নাফীছাহ ইফফাত
পর্ব ১০
রাফসানের ডাকে সম্বিৎ ফিরে পায় আরিশা। ওড়নার আড়ালে খামটা লুকিয়ে কৃষ্ণচূড়ার গুচ্ছটা রাফসানের হাতে দিয়ে বলে,
‘এটা এখানে পেয়েছি। অনেক সুন্দর ঘ্রাণ, দেখো!’
রাফসান সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায় আরিশার দিকে। থমথমে গলায় বলে,
‘এখানে তো কোনো কৃষ্ণচূড়া গাছই নেই। পাহাড়ের চূড়ায় একটা গাছ আছে মাত্র। কই পেলি এগুলো?’
আরিশা তৎক্ষনাৎ কি বলবে ভেবে পেলো না। মিথ্যা বলায় অভ্যস্ত না ও। তাও আমতা আমতা করে বললো,
‘হয়তো দমকা হাওয়ায় উড়ে এসেছে। আচ্ছা চাচ্চু, এসব ছাড়ো না এখন। বৃষ্টি শুরু হয়েছে, ঘরে চলো।’
আরিশা রাফসানের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। রাফসান বললো,
‘দাঁড়া।’
আরিশা মাথা নিচু করে দাঁড়ালো বটে, কিন্তু রাফসানের দিকে ফিরে তাকালো না। রাফসান ওর পেছনেই দাঁড়িয়ে আছে।
‘আমি জানি তুই কিছু একটা লুকোচ্ছিস। কেন লুকোচ্ছিস তা জানি না।’
‘আমি কিচ্ছু…’ আরিশাকে থামিয়ে রাফসান আবার বলে,
‘তোকে আজ পর্যন্ত কোনোকাজে যদি কেউ কখনো বাঁধা না দিয়ে থাকে সেটা হলাম আমি। আর তুই আমার কাছেই লুকোচ্ছিস?’
আরিশার খুব অসহায় লাগছে। ও কাঁদোকাঁদো গলায় বললো,
‘চাচ্চু, আমি তোমাকে সব বলবো। আমি নিজেই এখনো দ্বিধায় ভুগছি।’
‘কিসের দ্বিধা? আমাকে বল, আমি দূর করে দিবো।’
‘আমি যে এখনই তোমাকে কিছু বলতে পারবো না চাচ্চু। আমি নিজেও তো কিছু জানি না এখনও। সময় হলে সব বলবো।’
বড় বড় ফোটায় বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে। বাতাসের বেগ আরও বাড়ছে। রাফসান একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বললো,
‘বাড়ি চল, বৃষ্টি হচ্ছে।’
আরিশা চুপচাপ বাধ্য মেয়ের মতো রাফসানের পিছু নিলো।
সানজু দুপুর থেকে নির্ভীকের বাড়িতে এসে বসে আছে। একে-ওকে বারবার জিজ্ঞেস করছে নির্ভীক কোথায়? সানজুর মন বলছে, নির্ভীক নিশ্চয়ই ঐ মেয়েটার কাছে গেছে। সানজু নির্ভীকের মা, দাদু-দাদু ভাইয়া সবাইকে নির্ভীকের নামে উল্টাপাল্টা কথা বলতে থাকে। হোসাইনুল আলম এখনো অফিসে বলে তাকে কিছু জানাতে পারছে না সে। তার উল্টাপাল্টা কথাগুলো একমাত্র হোসাইনুল আলমই বিশ্বাস করেন।
পাশের মসজিদে মাগরিবের আজান হচ্ছে। ড্রইংরুমে বসে আছে সানজু। ঝড়ো হাওয়ায় খোলা জানালা দিয়ে কোথা থেকে যেন একগাদা ধুলো উড়ে এলো। সানজু চোখমুখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে হাওয়ার উদ্দেশ্যে একটা বিশ্রী গালি দিয়ে জানালা বন্ধ করলো। তখনই হোসাইনুল আলম ড্রইংরুমে পা রাখেন। হোসাইনুল আলমকে দেখেই খুশিতে ডগমগ হয়ে সানজু বললো,
‘আঙ্কেল, ভালো আছো?’
হোসাইনুল আলম জবাব দেয়ার আগে ওখানে আহমদুল হক আসলেন৷ তিনি মসজিদে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সানজুর ভাব-ভঙ্গী দেখে তিনি বিড়বিড় করে বললেন,
‘শিক্ষার বালাই নেই এই মেয়ের মধ্যে। সালাম দিতেও যেন জানে না।’
হোসাইনুল আলম বললেন, ‘হ্যাঁ মা, ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?’
‘আমার আর থাকা!’ ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস নেয় সানজু।
‘কেন? কি হয়েছে?’
‘সেই কবে থেকে নির্ভীকের জন্য ওয়েট করছি। ওর আসার নামই নেই।’
‘কেন? ও কোথায়?’
‘কোথায় আবার? ওর নতুন গার্লফ্রেন্ড হয়েছে না?’
আহমদুল হকের ভীষন রাগ হচ্ছে। এই মেয়ে আদব কায়দা তো জানেই না, কোথায় কি বলতে হয় সেটাও জানে না। আস্ত বেয়াদব একটা মেয়ে।
হোসাইনুল আলম অবাক হয়ে বলেন,
‘গার্লফ্রেন্ড?’
‘হুম। তুমি তো জানো না। আজকাল ও মেয়েদের ছবি তুলে ব্যবসা করছে।’
হোসাইনুল আলম এমন কথায় থতমত খেয়ে গেলেন। পাশেই তার বৃদ্ধ বাবা দাঁড়িয়ে আছেন। তারমধ্যে মেয়েটা এমনভাবে কথা বলছে, তিনি বেশ লজ্জায় পড়ে গেলেন। আহমদুল হক তেড়ে আসেন সানজুর দিকে। হুংকার দিয়ে বলেন,
“আমার দাদু ভাইয়ের নামে আর একটা অশ্লীল কথা বললে খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু। এই ছাতা দিয়ে তোমার মাথা ফুটো করে দিবো।”
‘লিসেন বুড়ো দাদু, বুড়ো হয়েছেন বুড়োর মতো থাকুন। সব কথায় নাক গলাবেন না।’ দাঁতে দাঁত চেপে বলে সানজু।
আহমদুল হক রক্তবর্ণ চোখে হোসাইনুল আলমের দিকে তাকালেন। রাগে, ক্ষোভে, লজ্জায়, অপমানে তাঁর মুখ দিয়ে কথা আসছে না। তিনি হাতের ছাতাটা জোরে ফ্লোরে ঠুকে বলেন,
‘এই মেয়ে যদি আর কোনদিন আমার বাড়িতে আসে আমি কিন্তু তোকেও বাড়ি থেকে বের করে দিবো, হোসাইন।’
হোসাইনুল আলম মাথা নিচু করে রইলেন। সানজু চোখ বড় বড় করে বললো,
‘এটা আপনার বাড়ি? আঙ্কেলের নামে করে দেননি? আর নির্ভীক? ওর ভাগের অংশ ওকে লিখে দেননি?’
আহমদুল হকের বুঝতে বাকি রইলো না সানজু কেন নির্ভীককে বিয়ে করতে চায়।
“আমার বাড়ির অংশ আমি কাকে লিখে দিবো না দিবো সেসব বাইরের মানুষকে কেন বলতে যাবো? বললেও তোমার মতো অসভ্যকে বলার চেয়ে রাস্তার কুকুরকে বলাও ঢের ভালো। কুকুরও গুরুজনকে সম্মান করতে জানে।”
আহমদুল হক ঘর কাঁপানো হুংকার ছেড়ে বললেন,
‘হোসাইন, ওকে এক্ষুনি বের কর। আমার চোখের সামনে থেকে…’ বাকি কথা আর বলতে পারলেন না আহমদুল হক। তার আগেই বুকে হাত চেপে ফ্লোরে গড়িয়ে পড়লেন।
সন্ধ্যার পর আরিশা নিজের রুমে এসে নির্ভীকের দেয়া কৃষ্ণচূড়ার গুচ্ছটা বিছানায় রাখে। ওর পড়ার টেবিলে হারিকেন জ্বলছে। হারিকেনটা বিছানার ওপর এনে রাখে। আলো খানিক বাড়িয়ে দিয়ে খামটা খোলে। খাম খুলতেই নিজের ছবিতে চোখ আটকে যায় আরিশার। তাড়াতাড়ি ছবিগুলো বের করে ও। খানিকক্ষণ পলকহীন তাকিয়ে থাকে নিজের ছবির দিকে। কোনো ছবি এত সুন্দর হতে পারে? আরিশা যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
বেশ কিছুক্ষণ ছবি দেখার পর আরিশার হঠাৎ মনে পড়ে নির্ভীক ছবিগুলো তুললো কবে? প্রথমদিনই? বারণ করা সত্ত্বেও তুললো? আরিশার ভয় হয়, যদি ছবিগুলো দিয়ে নির্ভীক খারাপ কিছু করে ফেলে? অবশ্য আরিশার কোনো ধারণা নেই ছবি দিয়ে কতকিছু করে ফেলা যায়৷ বস্তুত, বাইরের জগত সম্পর্কে ওর কোনো ধারণা-ই নেই।
আরিশা নির্ভীকের দেয়া খামটা খুলে। গোটা গোটা হরফে শুদ্ধ বাংলায় লেখা একটা চিঠি। শুরুতে ওকে ‘হুরপরী’ দিয়ে সম্বোধন করেছে। আরিশার মনটা অজানা এক ভালো লাগায় ছেয়ে গেল। নির্ভীক যখন ওকে ‘হুরপরী’ ডাকে তখন ওর সত্যি সত্যি নিজেকে পরী মনে হয়। আরিশা ভাবনা বাদ দিয়ে চিঠি পড়ায় মন দেয়।
‘হুরপরী!
কিভাবে শুরু করবো বুঝতে পারছি না। পরীক্ষার জন্য বাংলা ২য় পত্রের চিঠি লেখা শিখেছিলাম ছোটবেলায়। কিন্তু কখনো তার প্রয়োগ করা হয়নি কোথাও। শুধু পরীক্ষার খাতার মধ্যেই লেখালেখি সীমাবদ্ধ ছিল। আজ প্রথম তোমায় চিঠি লিখতে বসেছি৷ জানি না কেমন হবে। না লিখেও তো উপায় নেই। আধুনিক যুগে কেউ চিঠি লিখে না। সব আলাপ আমরা চ্যাটেই সেরে নিই। তাছাড়া অডিও, ভিডিও কল তো আছেই।
কিন্তু তুমি হচ্ছো হুরপরী। জঙ্গলের পরী। তোমাকে তো এসব ফোন-টোনে মানায় না। তোমাকে চিঠি লিখাটাই তাই শ্রেয় মনে হলো।
অনেক বকবক করে ফেলেছি। এবার আসি মূল কথায়। তোমাকে যেদিন প্রথম দেখি সেদিনই খেই হারিয়ে ফেলেছি আমি৷ বানর কাঁধে গহীন জঙ্গলে রূপসী এক পরী। আমি সত্যিই সেদিন ভেবেছিলাম তুমি বুঝি আকাশ থেকে নেমে আসা কোনো পরী। আকষ্মিক পরীর দেখা পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম। আমার ভেতরে কেমন অন্যরকম একটা শিহরণ বয়ে গিয়েছিল সেদিন। আমার ছোট্ট জীবনে এমন অনুভূতির সাক্ষাৎ সেদিনই প্রথম পেয়েছি।’
এটুকু পড়েই আরিশার ভীষণ লজ্জা লাগতে শুরু করে। কিভাবে ওর রূপের প্রশংসা করছে নির্ভীক। আরিশা দু’হাতে মুখ ঢেকে ফেলে।
তখনই রাফসান আরিশার রুমে এসে বলে,
‘খাবি না?’
আরিশা চমকে চিঠিটা বালিশের নিচে লুকিয়ে রাখে। ব্যাপারটা খেয়াল করেও কিছু বললো না রাফসান। আরিশার মুখোমুখি বসে বললো,
‘বড়ভাই আর সেঝভাই এসেছে আধঘন্টা হচ্ছে। একবারও গেলি না তো ওখানে।’
আরিশার চেহারা থমথমে হয়ে যায়। সেই সাথে চেহারায় নেমে আসে বিষন্নতা। ওর সতেরো বছরের ছোট্ট জীবনে আজ পর্যন্ত কোনদিন এই ভুলটা হয়নি। আশফাক আহমেদ ও আরমান দোকান থেকে আসলেই ও ছুটে গিয়ে ওদের হাত থেকে থলেগুলো নিয়ে নেয়। ওরা কখনো খালি হাতে বাড়ি ফেরে না। আরিশার জন্য, বাড়ির জন্য কিছু না কিছু নিয়েই ফেরে। ও খানিক ভয় পেয়ে যায়। নির্ভীকের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে না চাইতেই আরিশার স্বাভাবিক জীবনে ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটে চলেছে। যা আগে কখনো ঘটেনি তেমন ঘটনা ঘটছে। কাজে বারবার ভুল করছে ও। তারমানে নির্ভীক ওর জীবনের ভুল কেউ না তো?’ প্রশ্নটা বুকে বিঁধে রইলো আরিশার।
চিঠি পড়ার মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছে ও। রাফসানকে বললো, ‘আমি জানতাম না আব্বু আর সেঝচাচ্চু এসেছে। জানলে তো ছুটে যেতাম।’
আরিশার ছবিগুলো খতিয়ে খতিয়ে দেখছে রাফসান। এত সুন্দর ছবি আরিশাকে কে তুলে দিল? ওদের চোখের আড়ালে আরিশা কার সাথে থাকছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে, ছবি তুলে বেড়াচ্ছে? মনে প্রশ্নগুলো বারবার ঘুরপাক খায় রাফসানের। রাফসান স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলে,
‘ওরা এসে থেকে তোকে বহুবার ডেকেছে। সাড়া পায়নি।’
আরিশা বিস্ফোরিত চোখে রাফসানের হাতের ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে। এতক্ষণ ও ব্যাপারটা খেয়াল করেনি।
রাফসান হেসে বললো, ‘ছবিগুলো ঢুকিয়ে রেখে খেতে আয়!’
আরিশা আহত সুরে বললো, ‘কে তুলে দিয়েছে জিজ্ঞেস করবে না?’
‘করে কি লাভ? বলবি না তো। সময় আসেনি যে!’ হাসার চেষ্টা করে রাফসান।
আরিশা খানিকক্ষন চুপ থেকে বললো, ‘তোমাদের অজান্তে এমন কিছু করবো না যাতে তোমাদের কোনো কষ্ট হয় বা সম্মানহানি হয়।’
‘আমি জানি। জানি বলেই চুপ করে আছি। তোকে তোর মতো থাকতে দিচ্ছি। নাহয় কত আগেই ভাইয়াদের সব বলে দিতাম।’
‘এখন বলবে না?’
‘কেন বলবো? আমি কি তোর শত্রু? তুই না চাইলে কেন বলবো? এতদিনে এই চিনেছিস তোর ছোটচাচ্চুকে?’
আরিশার চোখ বেয়ে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে। মানুষগুলো ওকে এত ভালোবাসে কেন?
নির্ভীক ঘরে পা রাখতেই দেখে ওর দাদুভাই ফ্লোরে পড়ে আছে। ও ছুটে গিয়ে ‘দাদুভাই, দাদুভাই’ বলে চেঁচাতে থাকে। মিসেস রোকেয়া ও মিসেস শায়লা ছুটে আসেন। আহমদুল হক বুকে হাত চেপে বিড়বিড় করে সানজুকে বেরিয়ে যেতে বলেন।
হোসাইনুল আলম ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলে। সবাই ধরাধরি করে আহমদুল হককে গাড়িতে তোলে। সানজুও সবার পিছু পিছু বাইরে যায়। নির্ভীক গাড়িতে ওঠার আগমুহূর্তে সানজুকে দেখে রাগ সামলাতে পারলো না। কষে একটা চড় মেরে বললো,
‘আর জীবনে যেন আমার বাড়ির আশেপাশে তোকে না দেখি। আমার পেছনে দালালি করাটা এবার বন্ধ কর।’
নির্ভীক গাড়িতে উঠে ড্রাইভিং সিটে বসে। সানজুর সামনে দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়। সানজু গালে হাত দিয়ে মনে মনে শপথ করে বলে,
‘তোমার পিছু তো আমি এত সহজে ছাড়বো না। এর শোধ আমি তুলবোই। আর ঐ মেয়েকেও খুঁজে বের করবো। তারপর দুজনের কি হাল করি দেখবা। সানজুকে তো চেনোনি এখনো।’
সানজু চলে যায় নিজের বাড়ি৷ কলেজে আজ ওর শাস্তির শেষ দিন। কাল থেকে আবার কলেজ জয়েন করবে ও। ইয়াদদের সাথে বসে সাজাবে তার পরবর্তী প্ল্যান। এসব ভেবে খুশিতে সানজুর মন নেচে ওঠে।
এম.এ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এর মালিক মইনুল আহসান আরিশার খোঁজ চালাচ্ছেন বেশ কিছুদিন যাবৎ। এত খুঁজেও কোনো কুল-কিনারা করতে না পেরে অবশেষে নির্ভীককে ফলো করার সিদ্ধান্ত নেন। একমাত্র নির্ভীকই আরিশার খোঁজ জানে। আরিশাকে পেলে ওকেই ফ্যাশন হাউসের মডেল হিসেবে নিয়ে আসবেন। তারপর নির্ভীক কিভাবে ফ্যাশন হাউসে কাজ না করে তা দেখবেন তিনি।
তিনি তার সহকারী এ্যসিস্ট্যান্ট ইমরানকে ডাকেন। ইমরান আসতেই তিনি বলেন,
‘ঐ মেয়েটার কোনো খোঁজ পেলে?’
ইমরান সহসা বুঝে গেল মইনুল আহসান কার কথা বলছে। তিনি বলেন,
‘না স্যার।’
‘আমার মাথায় একটা দারুণ আইডিয়া এসেছে।’
‘কি স্যার?’ উত্তেজিত হয়ে বলেন ইমরান।
‘নির্ভীককে ফলো করলেই ওর খোঁজ পাওয়া যাবে।’
‘তাই তো। কিন্তু স্যার সে কি রোজ দেখা করে মেয়েটার সাথে?’
‘দেখা তো করবেই। এতদিন মেয়েটার পাশাপাশি নির্ভীকের সম্পর্কেও সব খোঁজ খবর নিয়েছি আমি। সে তার ফটোগ্রাফি জীবনে কোনদিন কোনো মানুষের ছবি তার ক্যামেরায় তোলেনি। শুধুমাত্র জঙ্গলের মেয়েটা ছাড়া।’
‘কি বলছেন স্যার?’ অবাক হয় ইমরান।
‘হুম। তাই আমি সন্দেহ করছি যে, মেয়েটাকে ও হয়তো অন্যরকম চোখে দেখছে। নাহয় মেয়েটার ছবিও সে তুলতো না।’
‘একদমই তাই। স্যার, তাহলে নির্ভীককে ফলো করতে হবে তাই তো?’
‘ইয়েস! ওহ হ্যাঁ, আরেকটা কথা। ঐ মেয়েটার খোঁজ পাওয়ার সাথে সাথে ওখানে সাংবাদিক নিয়ে যাবে। মেয়েটার একটা ইন্টারভিউ চাই।’
‘অকে স্যার। খুঁজে পেলেই ব্যবস্থা করবো।’
ইমরান খুশিমনে বেরিয়ে গেল। মইনুল আহসান তার টেবিলে থাকা ছোট্ট পৃথিবীর শো-পিসটা জোরে ঘুরিয়ে দিয়ে হো হো করে হেসে ফেললেন। মনে মনে বললেন,
‘এবার তুমি কি করে আমাদের রিজেক্ট করো আমিও দেখবো নির্ভীক চৌধুরী। তুমি নিজেই ফ্যাশন হাউজে জয়েন হতে আসবে। তখন আমরাই তোমাকে রিজেক্ট করবো। হাহাহা!’
#Be_Continued_In_Sha_Allah