#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৩
রবির বন্ধুরা ওকে বলল,তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? গতকাল আয়ানের ছোট ভাইকে তুই মেরেছিস আর আজকে তুই তার সামনে গিয়ে বলবি তুই তার ভাইকে মেরেছিস
এটা পাগলামি ছাড়া আর কিছুই না। নিজের পায়ে নিজে কেনো কুড়াল মারতে চাস? চল কলেজ থেকে। আমরা ঘুরতে যাবো
– আমি কোথাও যাবো না। মেঘা আমাকে চ্যালেন্স করেছে আমাকে এটা করতেই হবে তা না হলে ওর সামনে ছোট হয়ে যাবে আমার ভালোবাসা
আমাকে আমার ভালোবাসার প্রমান দিতে এটা করতেই হবে। আমি মেঘাকে দেখিয়ে দিবো আমি ওর জন্য সবকিছু করতে পারি
– ওই মেয়েটা কি জাদু করেছে তোকে বলতো? ও তোকে জেনে শুনে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চাইছে আর তুই তা হাসিমুখে মেনে নিচ্ছিস। ও তোকে ভালোবাসেনা তাইতো এমনটা করতে বলছে তোকে। তুই কেনো বুঝছিস না?
– আমি সবকিছুই বুঝি। আমি জানি ও আমাকে ভালোবাসেনা তাই এসব বলেছে কিন্তু আমি তো ওকে মন থেকেই ভালোবাসি। তাই ওর জন্য এটা করবো
– এক তরফা ভালোবাসায় কি লাভ? ও তোকে কখনই ভালোবাসবেনা। তাহলে ওর জন্য নিজের জিবনের ঝুঁকি কেনো নিবি?
– কারন আমি ওকে অনেক বেশি ভালোবাসি
– তুই এটা করবি আর ও হাসবে। আর তোকে বোকা ভাববে। প্লিজ দোস্ত এমনটা করিস না। বুঝার চেষ্টা কর একটু। ওই ঘটনার পর মেহেদী ভাই আমাদের রাগারাগি করেছে। এখন তুই এটা করলে আমাদের তার কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তাছাড়া আমরা তোর বন্ধু হয়ে তোকে কিভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারি
– আমি এটা না করলে তখন ও বুঝবে আমি ওকে ভালোবাসি না। আমি আমার ভালোবাসাকে ওর কাছে ছোট হতে দিতে পারবো না। ও আমাকে ভালোবাসুক আর না বাসুক আমি ওকে ভালোবেসে যাবো।
ও আমাকে চ্যালেন্স করেছে। আমি কাউকে ভয় পাইনা। আমার ভালোবাসার পরিক্ষা দিতে হবে ওর কাছে
রবির বন্ধুরা নিষেধ করা সত্যেও ও আয়ানের কাছে গিয়ে বলবে, আমি আপনার ভাইকে মেরেছি
অন্যদিকে মেঘাকে ওর বন্ধুরা বলতেছে, তুই কি চাস ক্যাম্পাসে আবার ঝামেলা হউক? রবি আয়ান ভাইয়ের কাছে গিয়ে এসব বললে আয়ান ভাই ওকে অনেক মারবে।
– তোরা আমার বান্ধুবি হয়ে রবির জন্য এত চিন্তা করছিস কেনো? এমন ভাবে বলছিস যেনো রবি কোনো মহান ব্যাক্তি। ভুলে যাসনা ও কতটা খারাপ।ক্যাম্পাসে সবার সামনে রিয়ানকে মেরেছে আমার পিছু ছাড়ছে না। সবসময় মারামারি করে আর এমন একটা ছেলের পক্ষ নিচ্ছিস তোরা। এটা ভাবতেই আমি অবাক হচ্ছি।
– আমরা বাইরে থেকে যা দেখি তা অনেকসময় সত্যি হয়না। তুই যা করছিস খুবই ভুল করছিস
– রবির জন্য যদি তোদের এত মায়া হয় তাহলে তোরা গিয়ে রবির সাথে প্রেম করনা। ও আমার পিছু ছাড়লে আমি বাঁচি
মেঘার বন্ধুরা চুপ করে আছে। ওদের আর কিছু বলার নাই। ওরা মেঘাকে অনেক বুঝিয়েছে কিন্তু মেঘা ওদের কোনো কথা শুনছে না। ওরা ভাবতেছে আজকে আবার বড় ধরনের কোনো ঝামেলা হবে
মেঘা আয়ানের কাছে এসে বলল, রবি যদি আপনার কাছে এসে বলে ও আপনার ভাইকে মেরেছে তাহলে আপনি কি করবেন?
– রবি এমনটা করবে না
– আমি এমনটা করতে রবিকে বাধ্য করেছি
মেঘার কথা শুনে আয়ান অবাক হয়ে গেলো। মেঘা আয়ানকে বলল, এবার আপনার প্রতিশোধ নেওয়ার পালা
রবি আয়ানের কাছে আসলো। রবির বন্ধুরা দূরে দাঁড়িয়ে আছে। কোনো কিছু হলেই ওরা তাড়াতাড়ি চলে আসবে।
আয়ান রবিকে বলল, নিজে মার খেতে চলে আসলি নাকি। স্যারকে বলেছিলাম ক্যাম্পাসে কোনো ঝামেলা করবো না কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেই কথা রাখতে পারবো না
আমার ভাইয়ের শরীর থেকে যতটা রক্ত ঝড়িয়েছিস তার থেকে অনেক বেশি রক্ত তোর শরীর থেকে বের করবো।
ওদের কথা শুনে রবি হাসলো। আয়ানকে বলল, আমি তোর ভাইকে মেরেছি। ওকে বলেছিলাম মেঘার থেকে দূরে থাকতে কিন্তু ও আমার কথা শুনেনি।
আয়ান রবিকে কিছু বলতে যাবে তার আগে প্রিন্সিপ্যাল চলে আসলো। সবাইকে চলে যেতে বলল
আয়ান রবিকে বলল, আজকে মিস হয়েছে কিন্তু নেক্সট টাইম আর মিস হবেনা। তৈরি থাকিস তুই
মেঘা অনেক রেগে আছে। ও রবিকে শাস্তি দিতে পারলো না। মেঘাকে ওর বন্ধুরা বলল, এত রেগে আছিস কেনো?
– ওই রবির কিছু হলো না। এখন ও আবার আমাকে বিরক্ত করতে চলে আসবে। মাঝে মাঝে মন চায় অন্য কলেজে চলে যাই
– আচ্ছা তুই রবিকে সয্য করতে পারিস না কেনো?
– ও একটা গুন্ডা। আমার চোখের সামনে অনেককে মেরেছে। কলেজ ক্যাম্পাসে বসে সিগারেট খায়। এমন একটা খারাপ ছেলেকে কিভাবে সয্য করবো
তোরা তো জানিস যাকে আমার অপছন্দ তাকে একদমই সয্য করতে পারিনা। তার উপর ও নাকি আবার ভালোবাসে আমাকে। যেখানে আমি ওকে দেখতেই পারিনা সেখানে ভালোবাসা তো দূরের কথা
আয়ানকে ওর বন্ধুরা বলল, এরকম সুযোগ আর পাবো না। আজকে রবি একা ছিলো তারপরও কিছু করতে পারলাম না।
– সময় আরও আসবে। ওকে এত সহজে ছেড়ে দিবোনা
রবি মেঘার কাছে এসে বলল, তুমি খুব কষ্ট পেয়েছো তাইনা জানপাখি? তোমার কষ্ট যে আমার আর সয্য হয়না। তুমি চেয়েছিলে আমাকে মার খেতে দেখতে কিন্তু তা হলো না।
আসলে কি জানো রবির শরীরে হাত দেওয়া এত সহজ না। আমি নিজে না চাইলে কেও আমার শরীরে হাত দিতে পারবেনা
তুমি যদি বল আমি মার খেলে তুমি আমাকে ভালোবাসতে রাজি আছো তাহলে আমি মার খেতে প্রস্তুত। কথা দিচ্ছি আমি কোন প্রতিবাদ করবো না
– আমি কখনও আপনাকে ভালোবাসবো না। একদিন আপনার এই বড় কথা শেষ হবে। এমন দিন আসবে আপনি মার খেয়ে রাস্তায় পরে থাকবেন। কিন্তু কেও আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে না
– তাই নাকি জানপাখি। কেও না আসলে কি হবে তুমি ঠিকই আসবে আমার ভালোবাসার টানে
– কি আমি, আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমি কখনও আসবো না। আমি তো ওইদিন আনন্দ করবো। সেই দিনটার অপেক্ষা করবো আমি
– তোমার সাথে আমিও অপেক্ষা করবো জানপাখি
রবিকে কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ডেকে পাঠালো,
চলবে—