দোস্ত তুই যেই মেয়েটাকে ভালোবাসিস সে একটা ছেলের হাত ধরে শহীদ মিনারের দিকে গেলো
কথাটা শুনে রবির মাথা গরম হয়ে গেলো। পাশে পরে থাকা একটা লাঠী নিয়ে শহীদ মিনারের দিকে গেলো। আজকে ছেলেটাকে এমন মার মারবো যে হাসপাতালে যাওয়ার সময় ও পাবে না
রবি শহীদ মিনারের কাছে গিয়ে দেখলো মেঘা রিয়ানের সাথে বসে আছে। তা দেখে রবির মাথা আরও গরম হয়ে গেলে।
রবি মেঘাকে অনেকবার নিষেধ করেছে রিয়ানের সাথে না মিশতে। রিয়ানের সাথে এমনিতেই রবির শত্রুতা আছে আর আজকে মেঘার সাথে দেখার পর রবির রাগ আরও বেড়ে গেলো। রিহানের ভাই কলেজের ভিপির কাছের লোক এই জন্য ওর এত ক্ষমতা
ও যেই হোক না কেনো সেটা দেখার সময় এখন আর নেই। মেঘাকে অনেকবার বলেছি ওর সাথে কথা না বলতে কিন্তু ও আমার কথা শুনলো না। আগে রিয়ানকে দেখবো তারপর ওকে।
রবি মেঘার হাত ধরে নিয়ে আসতে লাগলো। মেঘা রবিকে বললো, আমার হাত ছাড়েন? কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে? আপনি আমার সাথে এমন কেনো করেন?
— কেনো করি তুই বুঝিস না। তোকে আর কতবার বলবো আমি তোকে ভালোবাসি তারপরও তুই অন্য ছেলেদের সাথে কথা বলিস
— আমি তো আপনাকে ভালোবাসি না তাহলে আপনার কথা কেনো শুনবো? আপনি আমাকে এতো টর্চার করছেন কেনো?
— টর্চার কাকে বলে তা আজ তুই দেখতে পাবি। তোকে আমাকেই ভালোবাসতে হবে। ও ক্ষমতা আছে বলে তুই ওর সাথে মিশবি,কথা বলবি তাই না। তোর সাথে যা করার দরকার তাই করবো তারপরও তোকে আমাকে ভালোবাসতে হবে
রবি মেঘাকে নিয়ে যেতে লাগলো কিন্তু রিয়ান ওদের সামনে এসে পরলো। রবির রাগ ক্রমশো বৃদ্ধি পাচ্ছে। রিয়ান রবিকে বললো, ওর হাত ছাড়
— সামনে থেকে যা তা না হলে খুব খারাপ হবে। তখন কিন্তু ভুলে যাবো তুই কার ছোট ভাই।
— ওই কি করবি তুই? আমি চাইলে তোর এমন অবস্থা করতে পারি যা তুই কল্পনাও করতে পারবি না। মেঘার হাত ছেড়ে এখান থেকে যা
এটা বলার সাথে সাথেই রবি লাঠী দিয়ে রিয়ানের মাথায় মারতে লাগলো। লাগাতার ওর মাথায় আঘাত করলো। রিয়ানের মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে রবি তাও থামছে না। রবি লাঠী দিয়ে মারছে আর বলছে, ওই তোকে বলেছিলাম সামনে থেকে যা তারপরও শুনিস নি। তুই যার ভাই হস তাতে আমার কোন বা**
তোকে বলেছিলাম আমাকে রাগাস না কিন্তু তুই শুনিসনি। তোর কত বড় সাহস মেঘার হাত ধরিস। আজকে তোকে মেরেই ফেলবো। দেখি তোকে তোর কোন ভাই বাঁচায়।
রবি রিয়ানকে মারছে আর বলছে, ডাক তোর ভাইকে দেখি কে আসে তোকে বাঁচাতে। মেঘা রিয়ানকে ছাড়াতে গেলে রবি রাগীভাবে বললো, চুপ,একদম চুপ আর একটা কথাও বলবি না তুই।
মেঘা রবির এমন ভয়ংকর রুপ দেখে অনেক ভয় পেয়ে গেলো। কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলো আর ওর চোখের সামনে রবি রিয়ানকে মারতে লাগলো
রবির বন্ধু্রা ওকে থামালো। রবিকে ওখান থেকে নিয়ে যেতে লাগলো
— দোস্ত এখান থেকে চল তা না হলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে
— আমি কাউকে ভয় পাই না। যার আসার হয় আসুক আজকে তো এর শেষ দেখে ছাড়বো
— ভয় পাওয়ার কোন কথা হচ্ছে না। আর কোন কিছু হয়ে গেলে কি তুই মেঘাকে পাবি। সব পরে দেখা যাবে এখন চল
– যাকে আসার আসতে দে। ওর বড় ভাইকে আমি ভয় পাইনা। ওর কত বড় সাহস মেঘার হাত ধরে। ওকে এখনও বাঁচিয়ে রেখেছি এটাই ওর সৌভাগ্য
ও ভালো করেই জানে আমি মেঘাকে ভালোবাসি এটা জানার পরও ও মেঘার সাথে কথা বলে
– আয়ান ভাইদের সাথে মেহেদী ভাইয়ের শত্রুতা ভুলে যাসনা। মেহেদী ভাই যদি জানে এরকম একটা ঘটনা ঘটে গেছে তাহলে অনেক রাগারাগি করবে
– করুক। সে ভালো করেই জানে রাগ হলে আমি কি করতে পারি। আমার ভালোবাসার মানুষের সাথে এরকম করবে আর আমি ছেড়ে দেবো নাকি। ওর হাত- পা ভেঙে ফেলা উচিত
রবি মেঘাকে বলল, এর পর যদি আর কোন ছেলের সাথে তুই মিশিশ তাহলে এর ফল ভালো হবেনা। তুই শুধু আমাকে ভালোবাসবি, আমার সাথেই কথা বলবি। আর কারও সাথে না
সবাই শুনে রাখ আজকের পর কেও যদি মেঘার সাথে প্রেম করার চেষ্টা করিস তাহলে তার ফলও রিয়ানের থেকেও খারাপ হবে
মেঘা কিছু বলছে না শুধু কাঁদতেছে। রবি ওর জিবনটা নরক বানিয়ে দিলো। ও রবিকে ভালোবাসেনা তারপরও রবি ওর সাথে জোর করে এমন করছে
রবিকে ওর বন্ধুরা নিয়ে গেলো
এর ভিতরে আয়ান জানতে পেরে গেছে রবি ওর ভাইকে মেরেছে। আয়ান তাড়াতাড়ি আসলো। রিয়ানকে হাসপাতালে পাঠালো
সবাইকে বলল, তোরা এতগুলো ছেলে এখানে থাকতে রবি আমার ভাইকে কিভাবে মারতে পারলো? রবি আমার ভাইকে মারছিলো আর তোরা দাঁড়িয়ে তা দেখছিলি। ওই রবিকেও সবার সামনে এর থেকেও ভয়ংকর ভাবে মারবো
রবির সাথে আমার ভাইয়ের কি হয়েছিলো?
– ভাই রবি এই মেয়েটার জন্য আপনার ভাইকে মেরেছে
আয়ান মেয়েটাকে বলল, তোমার জন্য রবি আমার ভাইকে কেন মেরেছে?
– আমি আর রিয়ান কথা বলছিলাম তখন হঠাৎ রবি এসে রিয়ানকে মারতে লাগলো। আমি থামানোর অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু আমার কথা শুনেনি রবি
রবি আমার জিবনটাকে নরক বানিয়ে দিয়েছে। ও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু আমি ওকে ভালোবাসিনা। তারপরও ও জোর করে আমার উপর অধিকার খাটাতে চায়। সবসময় আমার পিছু নেয়। আমি কখন কি করি সবকিছু ও নজর রাখে
চলবে–
#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ১