ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-১৩

0
808

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#Writer_Nusrat_Jahan
#Part_13

খান বাড়ি-

কথাঃ সোনা বাবা কোথায় তুমি।প্লিজ মাফ করে দেও নাহ।।আচ্ছা ঠিকাছে তোমার এখন বিয়ে করতে হবে নাহ।।আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলবো।।কিন্তু বাড়িতে তো চলে আসো

নীড়ঃ নাহ মামনি আগে তুমি বাবাই কে বলো।।বাবাই আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে অথচ আমাকে না জানিয়ে।। দেটস নট ফেয়ার।।আমি কিছুতেই বাড়ি ফিরবো নাহ।

কথাঃ আরে বিয়ে ঠিক করেনি তো।।যাস্ট কথা বলেছে।।তোমার দেখে পছন্দ হলেই বিয়ে দিবে

নীড়ঃ ওই একই মামনি।।বাট পছন্দের কথা কেন আসছে।।৷ আমি এতো তাড়াতাড়ি বিয়েই করবো নাহ।

কথাঃ আচ্ছা ঠিকাছে।। তোমার কথাই হবে।।কিন্তু এখন বাড়ি তো আসো।আগামী ১০ বছরে তোমার বিয়ের কথা এই বাড়িতে কেউ তুলবে নাহ।।হেপি

নীড়ঃ হুম।।আসছি আমি।।

নীড় ফোন রেখে দিলো।
(এখন পরিচয়টা দিয়ে দেই।।এতোক্ষণ যে বিয়ে করবে নাহ বলে আন্দোলন করলো সে হলো নীড় খান।।খান বাড়ির ছেলে।বিজন্যাস ম্যান।।কথা আর কবিরের ছেলে।।তার একটা বোন ও আছে।। নাম ইশা।।আপাদত এতোটুকুই। পরে না হয় আরো জানা যাবে)

এইদিকে-

ইশানের দরজার সামনে দাড়িয়ে
নেশাঃ আসবো

ইশানঃ কেন এসেছো তুমি

নেশা ভিতরে ঢুকে গেল

নেশাঃ পরিবর্তন আমার হওয়ার কথা ছিলো

ইশান নেশার দিকে তাকিয়ে হাসি দিলো

নেশাঃ আমার কথার জবাব এটা নাহ

ইশানঃ পরিবর্তন তো তুমি ও হয়েছো।।না হলে আমার কাছে এসে সরাসরি জবাব চাইতে নাহ।।আর না আমার সাথে ওই ঘটনার পর কথা বলতে।।তারমানে মামনি তোমায় বলছে কিংবা জোর করেছে

নেশাঃ আসলে….

ইশানঃ আমি ওই ব্যাপারে আর কথা বলতে চাইনাহ।।যা হয়ে গেছে তা বদলাতে পারবে নাহ তুমি

নেশাঃ কিন্তু কেন এমন হলো।। আপনি তো ওকে ভালোবাসতেন

ইশানঃ যাকে সত্যিকারের ভালোবেসেছিলাম সে দুরে যাওয়ার পর তা বুঝতে পেরেছি।।(বাঁকা চোখে নেশার দিকে তাকালো)

নেশা বুঝলো ইশান তার কথা বলছে।প্রসঙ্গ পাল্টাতে

নেশাঃ আপনি খেয়েছেন

ইশানঃ কথা ঘুরাচ্ছো

নেশাঃ নাহ মানে….

ইশানঃ চলে যাও নেশা।।

নেশাঃ কিন্তু আমি যে সব জানতে চাই

ইশানঃ কেন জানতে চাও কোন অধিকারে জানতে চাও বলো।।কোন অধিকার (নেশাকে ঝাকিয়ে)

নেশাঃ…….

ইশানঃ কি হলো জবাব দাও।নেই জবাব তাই নাহ(নেশাকে ছেড়ে দিয়ে)আমি জানি তোমার মনে আমার জন্য একটু ভালোবাসাও অবশিষ্ট নেই।।তাহলে কেন আবার আমাকে মায়ায় জড়াচ্ছো।।কেন আমাকে করুনা করছো। অভিনয় করতে করতে কখন তোমার ভালোবাসার মায়ায় পরে গেছি তা নিজেই বুঝতে পারিনি।।হ্যা পেরেছি যখন তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেছিলে।।কেন এতো বড় শাস্তি দিলে আমায় নেশা।।সেইদিন তুমি বলেছিলে যে তোমার সাথে ভালোবাসার নাটক না করে তোমার জীবন টা চেয়ে নিলে হয়তো ভালো হতো,আজ আমি তোমায় বলছি তুমি যদি আমায় ছেড়ে না গিয়ে আমার জীবন টা শাস্তি সরূপ চাইতে তাহলে আমি হাসতে হাসতে দিয়ে দিতাম।।কি করে পারলে নেশা আমায় এতো টা কষ্ট দিতে।।আমি না হয় আমার ভালোবাসাটা বুঝতে পারিনি কিন্তু তুমি তুমি তো আমায় ভালোবাসতে।।তাহলে কেন ছেড়ে গেছিলে নেশা কেন??

নেশাঃ কিন্তু আপনি তো নিহাকে…….

ইশানঃ আর কতোটা ছোট করবে নেশা।।তখন ভেবেছিলাম নিহাকেই ভালোবাসি।।কিন্তু বিয়েরদিন সকালে যখন জানতে পারি যে তুমি চলে গেছো তখন জানো আমি কি রিয়েকশন দিবো বুঝতে পারিনি।অথচ আমার খুশি হওয়ার কথা ছিল।।কারন আমি যে তোমায় সহ্য করতে পারতাম নাহ।।কিন্তু আমি ভুল ছিলাম।।তুমি আমার অভ্যাস হয়ে গেছিলে।।আর আমার ভা….

নেশাঃ নিহাকে ডিবোর্স দিলেন কেন

ইশানঃ কথা ঘুরাচ্ছো

নেশাঃ নাহ মানে

ইশানঃ ওর আরেকটা ছেলের সাথে রিলেশন ছিলো।।কেন জানো কারন আমি ওকে ওর অধিকার দিতে পারিনি।।তাই সে আরেকজনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে।।তাই ওকে মুক্তি দিয়ে দেই।।আচ্ছা ওকে কিভাবে অধিকার দিবো বলো, তুমি যে আমার সব জায়গা জুড়ে ছিলে।।সেই জায়গায় অন্য কাউকে কিভাবে বসাবো

নেশাঃ কিন্তু যাই হয়ে যাক আবার নতুন করে কি সব শুরু করা যায় নাহ।।খালামনির কথা ভেবে অন্তত

ইশানঃ ??

নেশাঃ হাসার মতো কি বললাম

ইশানঃ নাহ কিছু নাহ।।আচ্ছা তুমি বলছো আমার নতুন করে সব শুরু করা উচিত তাই তো

নেশাঃ হুম

ইশানঃ ওকে তাহলে তুমি আমার কাছে ফিরে আসো।
সব নতুন করে শুরু করবো

নেশাঃ মমানেহ

ইশানঃ মানে তুমি আমার হয়ে যাও।।আমরা আবার নতুন করে সব শুরু করি।।কথা দিচ্ছি কখনো কষ্ট দিব নাহ।।শুধু ভালোবাসবো।।।আগের সব কিছু ভুলে নতুন করে সব সাজাবো দুইজন মিলে।।হাজারো স্বপ্ন দেখবো আর তা সত্যি করবো।।কি হলো দেখবে আমায় নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন।। বলো দেখবে(নেশার দুইগালে দুই হাত দিয়ে)

নেশা চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছো
ইশান টেনে মুখটা উপরে করলো।

ইশানঃ যেখানে নিজে সব ভুলতে পারছো নাহ সেখানে আমাকে সব শুরু করতে কিভাবে বলছো নেশা।।চলে যাও। আর আমার সামনে এসো নাহ নেশা।।আমি পারবো নাহ তোমায় বার বার ফিরিয়ে দিতে।।তোমায় দেখলে যে খুব লোভ হয় নতুন করে বাচার।।খুব লোভ হয় নেশা??

নেশা একটু দুরে গিয়ে দাড়ালো।।ইশান নিজের চোখ গুলো মুছে নিলো।

ইশানঃ সত্যিই তুমি বদলে গেছো। অনেক বদলে গেছো।ওইদিন বলেছিলে তোমার শেষ কান্না দেখে নিতে।।সত্যিই ওইটাই তোমার শেষ কান্না ছিলো।।তুমি তোমার কথা রেখেছো।।আজ আমি হেরে গেছি।।আর দেখ আজ আমি কাদছি

নেশা কিছু বললো নাহ বেরিয়ে গেল রুম থেকে।।সত্যি আজ সে কাঁদেনি।।ইশান এতো কিছু বললো তবুও নেশা কাদেনি।।কিন্তু তার তো কষ্ট হওয়ার কথা।।ইশান যে তাকে ভালোবাসে তা সে বলছে।।তবুও নেশার কিছুই ফিল হয়নি।।তার কারন তো নেশা নিজেও জানে নাহ।হয়তো ফিলিংস গুলোই মরে গেছে নেশার।।

গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে চুপচাপ বেরিয়ে গেল নেশা।।বাড়ির সবাই এখন গভীর ঘুমে।।ইশান সজাগ তা নেশা জানে। কিন্তু আপাদত তা নিয়ে নেশা ভাবতে চায় নাহ।।হাতে কয়েকটা বিয়ারের ক্যান নিয়ে গাড়ির উপর বসে খাচ্ছে আর পাশ দিয়ে গাড়ি যাওয়া দেখছে।।হন বাজিয়ে বাজিয়ে মানুষ নেশার কানের পোকা মেরে ফেলছে।।কিন্তু তাতে কি।।সে না এখান থেকে গাড়ি সরাবে আর নাহ মানুষের কথায় কান দেবে।।

হঠাৎ পিছন থেকে কেউ খুব জোরে গাড়িতে ধাক্কা মারলো

নেশাঃ এই কোন শালারে আমার গাড়িতে ধাক্কা মারলি।বের হো গাড়ি থেকে।

নীড়ঃ দেখুন ম্যাডাম আমি ইচ্ছা করে করিনি।।একে তো রাত।।আর আপনি ব্যাক সাইডের লাইট অফ রেখেছেন।। আমি বুঝতে পারিনি।

নেশাঃ বুঝতে পারিনি মানে কি হ্যা।।ওকে ওয়েট।।

নেশা গাড়িতে ঢুকে নীড়ের গাড়িটাকে দিলো ধাক্কা।
গাড়ির সামনে দিয়ে একদম ভেঙে গেছে।।

নীড়ঃ ইউ ব্লাডি পিপল?।।আমার ফেবারিট গাড়ি ছিলো এইটা।

নেশাঃ সো হোয়াট।।আমি ও খেয়াল করিনি।আপনার গাড়ি আমার গাড়িকে ধাক্কা মেরেছে আর আমার টা আপনাকে।।এখন কিছু বলার হলে গাড়িকে বলুন।।আমার কি দোষ

নীড়ঃ লাইক সিরিয়াসলি মাঝরাতে একটা মেয়ে মাতাল হয়ে পাগলামি করতে লজ্জা লাগছে নাহ

নেশাঃ নাহ লাগছে নাহ।।।আর আমি মাতাল হই আর যাই হই।।নিজের টাকায় হয়েছি।।।আপনার কি

নীড়ঃ কি থেকে কোথায় নিয়ে যায়।।পাগল একটা।

নেশাঃ এই যে মি.। বাবা মা লেখাপড়া শিখায়নি আপনাকে

নীড়ঃ ও হ্যালো লেখাপড়া শিখার কথা এখানে আসলো কেন

নেশাঃ আসবেই তো। মেয়েরা যে পাগল হয় নাহ তা কি আপনি জানেন নাহ।লজ্জার কথা।

নীড়ঃ আরে এখানে লজ্জার কি হলো।।আর মেয়েরা পাগল হয় নাহ কে বললো

নেশাঃ মেয়েরা পাগল হয়নাহ মেয়েরা হয় পাগলি।।ঠিকাছে।।এতো বড় একটা ধামড়া গরু হয়েও এইসব জানেন নাহ।

নীড়ঃ হোয়াট দা?????

(আসলে নেশা পাল্টালেও ড্রিংক করলে পুরো মাতাল হয়ে আগের নেশায় ফিরে যায়)

নেশা ডেম কেয়ের ভাব নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো

নীড়ের সামনে গিয়ে

নেশাঃ একটা কথা বলবো

নীড়ঃ কি!??

নেশাঃ আপনি নাহ অনেক সুন্দর

নীড়ঃ ?????

নেশাঃ একদম চাঁদের মতো সুন্দর।। কিন্তু রাগলে পুরো টমেটো হয়ে যান

নীড়ঃ এই মেয়ে তুমি কিসব বলছো হ্যা??(নীড় যে কখন আপনি থেকে তুমি করে বলছে তা তার খেয়ালই নেই)

নেশাঃ আরে আগে আমার কথা শুনুন।।আপনি দেখতে তো চাঁদের মতোই।।কিন্তু চাঁদের কি দাড়ি হয়??

নীড়ঃ ???(নীড় কি বলবে ও তো নেশার হাসিতেই ফিদা?)

নেশাঃ ওকে সে যাই হোক।।টাটা।।নাইস টু মিট ইউদ ইউ দাড়ি ওয়ালা চাঁদ?

নেশা চলে গেল।

।নীড় গাড়ির নাম্বার টা দেখে নিলো ভালো করে।।কেন করলো তা নিজেও জানে নাহ।।কেন জানি তার এই মেয়েটার সব তথ্য জানতে ইচ্ছা হচ্ছে।।
গিয়ে নিজের গাড়িতে বসলো।একটু আগের ঘটনা গুলো মনে করেই নিজের অজান্তেই হাসি দিলো


চলবে

❤❤❤❤সবাই প্লিজ কথা গুলো পড়বেন❤❤❤❤
( আপনাদের গল্প গুলা পড়তে পাচ মিনিট লাগলেও আমাদের গল্প গুলা লিখতে পাচ মিনিট লাগে নাহ।।কমপক্ষে ১ ঘন্টার বেশি সময় লাগে।।তবুও আপনাদের বিনোদন দেয়ার জন্য আমরা গল্প লিখি।।এতে আমাদের কি লাভ বলতে পারবেন।।শুধু আপনাদের আনন্দ দেয়া।।আর কিছুই নাহ।।তবুও যদি পারিবারিক ব্যস্ততার কারনে একটু ছোট করে দেই তাহলে আপনারা কথা শুনাতে ছাড়েন নাহ।।অথচ আপনাদের মধ্যে কয়েকজন এতোই বিজি যে Next কথাটাও শুধু n লিখে চলে যান।।বিজি তো আমরা ও থাকি।।আপনারা যদি এইভাবে কথা বলেন তাহলে আমাদের তো খারাপ লাগে।।
# কাউকে দুঃখ দেয়ার জন্য কথা গুলো বলিনি।।ভুল ত্রুটি হলে মাফ করবেন?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here