#হৃদহরিনী
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৭
অর্ণ হায়াতিকে বললো, আমার কি ঠ্যাকা পড়ছে তোর স্কুটির তার কাঁটতে। তুই যে ডা’ইনি তোর স্কুটি আমি ছুয়েও দেখিনা৷ অযথা আমার নামে দোষ দিবিনা। তুই কোথায় গিয়ে নষ্ট করেছিস এখন আমার দোষ দিচ্ছিস
” থা’প্প’ড় মে’রে তোর সব দাঁত ফে’লে দিবো৷ গতকাল তো আমার ঘুরতে গিয়েছিলাম৷ তার আগে রেস্টুরেন্ট থেকে আসছি৷ যা হওয়ার আজকে হয়েছে। বাসায় থাকা অবস্থায় স্কুটি নষ্ট হয় কিভাবে?
‘ পারবি তো শুধু আমার মত নিরীহ ছেলের সাথেই। তোর স্কুটি আমি ছুয়েও দেখলাম না আর তুই আমায় দোষ দিচ্ছিস। ডা’ইনি একটা।
‘ আমি নিশ্চিত তুই আমার স্কুটির কিছু করেছিস। একবার শুধু প্রমান করতে পারি তখন দেখবি আমি কি করি
‘ আমি কিছু করলে তো প্রমান করবি। এখন চুপচাপ থাক। আমায় শান্তিমত ড্রাইভ করতে দে।
হায়াতি আর কিছু বললো না। অর্ণ ভাবছে, ডা’ইনিটা যদি প্রমান করতে পারে আমি ওর স্কুটির তার কেঁটেছি তখন তো আমি শেষ। এত সকালে তার কেঁটেছি যে কারও দেখার কথা না। ও কোনদিনও প্রমান করতে পারবেনা।
কিছুখন পর ভার্সিটিতে চলে আসলাম। কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি৷ সামনেই রুহাশা পরলো। রুহাশা আমাদের দুজনরে একসাথে বাইকে দেখে ফেললো। ডা’ইনিটা রুহাশাকে দেখে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি বোকা হয়ে গেলাম। বাইক থেকে নেমে ডা’ইনিটাকে বললাম, ওই তুই আমায় জড়িয়ে ধরলি কেন? রুহাশা এটা দেখে কি ভাববে?
হায়াতি হাসতে লাগলো। অর্ণকে বললো, তোর এখনও মনে হয় রুহাশা তোকে বিশ্বাস করবে। রেস্টুরেন্টে যা হলো তারপর আবার বিকালে ঘুরার সময় যা বলেছি রুহাশা ভেবেছি আমরা রিলেশনে আছি। রুহাশা তো বললো তোর সাথে ব্রেকআপ করে নিতে।
‘ তাই কর! রুহাশাও চায় আমি ওর সাথে রিলেশনে থাকি
‘ ওরে কনফিডেন্স রে৷ তোকে একটা উপদেশ দেই শোন, রুহাশার সামনে গেলে দু’গালে হাত দিয়ে রাখবি সবসময়।
‘ কেন?
‘ যাতে রুহাশা তোর গালে থা’প্প’ড় মা’রতে না পারে
‘ কপাল আমার! সুযোগ পাই একবার। তখন দেখবি আমি কি করি
‘ এর জন্য তো তোকে আমার পিছু পড়ে থাকতে হবে। সবসময় আমাকে ফলো করতে হবে। কিন্তু আমি তো জানি তুই এরকমটা করতে পারবিনা।
কপাল! ডা’ইনিটা ঠিকই বলেছে৷ সবসময় ওর পিছু পড়ে থাকার ধৈর্য বা সময় কোনটাই আমার নেই। ডা’ইনিটা এটা ভালো করেই জানে।
‘ আর শোন, তুই যদি ক্লাস না করিস তাহলে কিন্তু বড় আব্বুকে বলে দিবো৷
এই রে! প্ল্যান তো করেছি আজকেই ক্লাস করবো না। এখন কি হবে? ক্লাস না করলে তো ডা’ইনিটা আব্বুকে বলে দিবে। ” হায়াতি ”
‘ আবার কোনো মতলব করেছিস
‘ ধুরো মনটাই ভেঙে দিলি৷ তুই সবসময় আমার ব্যাপারে নেগেটিভ ভাবোস কেন?
‘ কারন তুই মানুষটাই তো নেগেটিভ। আমি শত চেষ্টা করেও তোর ব্যাপারে পজিটিভ ভাবতে পারিনা৷ এই যে এখন এত সুন্দর করে ” হায়াতি ” বলে ডাক দিলি এর পিছনেও তোর কোনো মতলব লুকিয়ে আছে৷ কি মতলব তাড়াতাড়ি বলে ফেল আমাকে ক্লাসে যেতে হবে
‘ হায়াতি বলছিলাম কি, আমি না আজকে ক্লাস করতে পারবো না৷ আমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ আছে। ওখানে যেতে হবে।
‘ কি এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ যার জন্য আপনি ক্লাস করতে পারবেন না শুনি?
‘ আছে গুরুত্বপূর্ণ কাজ
‘ কি কাজ সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি!
‘ ফ্রেন্ডরা মিলে যাবো একজায়গায়
‘ নিশ্চয়ই কোনো ঝামেলায় জড়িয়েছিস। কোথাও যেতে হবেনা। ক্লাস শেষে আমাকে বাসায় নিয়ে যাবি
কপাল আমার! হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছিনা৷ ডা’ইনিটা এমন ভাবে বললো যেনো ও আমার গার্ডিয়ান৷ আমাকে ওর কথা শুনতেই হবে। ডা’ইনিটাকে বললাম, তুই কি আমার গার্ডিয়ান নাকি যে তোর কথা শুনতে হবে। ভুলে যাসনা৷ আমি তোর এক দিনের বড়৷ বড়দের সম্মান দিতে শিখতে হবে তোকে।
‘ দিবোনা তোকে সম্মান৷ দেখি তুই কি করতে পারিস। বড় আব্বু কি বলেছে ভুলে গেলি? তুই ভার্সিটিতে কোথায় কি করবি সব কিছু আমাকে খোজ নিতে বলেছে। তোর পড়াশোনার দায়িত্ব আমার৷ কোনো ঝামেলায় জড়ানো যাবেনা৷ নিয়মিত ক্লাস করতে হবে।
আমি এসে চেক করবো তুই ক্লাসে আছিস কিনা। আমার ক্লাস শুরু হয়ে যাবে৷ আমি গেলাম।
ডা’ইনি,শাঁ’ক’চূ’র্ণী, পে’ত্নি থাকবো না আমি ক্লাসে। তুই কর ক্লাস। তুই পড়াশোনা করে Canada,UK,USA যা। আমি এখানেই থাকবো। ভার্সিটিতে এসেও ডা’ইনিটার জন্য শান্তি নাই।
******
ইশান, আয়ান,রাফসান ওরা নিজেদের ভিতর কথা বলছিলো অর্ণকে নিয়ে। ওরা ভাবছে অর্ণ ভার্সিটিতে আসলেই তো ওদেরকে জিজ্ঞেস করবে। তখন তো অর্ণের সব খরচও ওদের দিতে হবে৷ অর্ণ হায়াতির সাথে না পারলেও ওদের ছেড়ে দিবেনা৷ ওরা এসব চিন্তা করছিলো এমন সময় অর্ণ আসলো৷ অর্ণ ওদের বললো, রাতে কি বলেছিলাম মনে আছে?
ইশান বললো, ভাই তুই শুধু শুধুই আমাদের দোষ দিচ্ছিস। আমরাও জানিনা কিভাবে জানলো হায়াতি
রাফসান বললো, হতে পারে হায়াতি তোকে ফলো করছিলো
অর্ণ বললো, তখন হায়াতি ক্লাসে ছিলো। এটা দেখেই আমি রুহাশাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ ওই ডা’ইনিটা চলে আসলো।
আয়ান বললো, হায়াতি যদি তখন ক্লাসে থেকে থাকে তাহলে ও কিভাবে জানতে পারলো?
” আমি ওত কিছু বুঝিনা৷ তোমরা আমার খরচের সব টাকা দিবা৷ কত কষ্ট করে টাকাগুলো জমিয়েছিলাম। ওই ডা’ইনিটা সব শেষ করে দিলো।
ওরা কথা বলতেছিলো তখনই ওদের সামনে দিয়ে রুহাশা গেলো। অর্ণ ওদের চুপ করে থাকতে বললো। রুহাশা অর্নের কাছে আসতে লাগলো। এটা দেখে অর্ণ ওর দু’গালে হাত দিয়ে রেখেছে৷ কোনো রিস্ক নেওয়া যাবেনা। মেয়েদের বিশ্বাস করা যায়না। এরা কখন কি করে বসে তা এরা নিজেরাও জানেনা৷ তারউপর হায়াতির বা’চ্চা ও রুহাশাকে উল্টা- পাল্টা বলে রেখেছে। তাই এটা হতেই পারে রুহাশা আমাকে থা’প্প’ড় মা’রতে মন চাইলো তাই আসলো এখন।
অর্ণকে দু’গালে হাত দিয়ে রাখতে দেখে রুহাশা জিজ্ঞেস করলো, এরকম বোকার মত দু’গালে হাত দিয়ে রেখেছো কেনো?
‘ কপাল আমার! যদি থা’প্প’ড় মা’রো তাই
‘ থা’প্প’ড় মা’রার মত কাজই তো করেছো। যদি হায়াতি আপুর বিএফ না হতে তাহলে অবশ্যই থা’প্প’ড় মা’রতাম।
‘ শুনো হায়াতি আমার জিএফ না। আর হায়াতি কে যে ওর জন্য থা’প্প’ড় মা’রবা না?
‘ এইতো এখন আবার থা’প্প’ড় মা’রার কাজ করেছো। হায়াতি আপুকে বলবো তারপর যা করার সে করবে। তোমাকে তো পি’টিয়ে সোজা করে দিবে।
কপাল আমার! এই হায়াতির বা’চ্চা আমার জীবনটা তেজপাতা করে দিলো৷ রুহাশা চলে যাওয়ার পর আমি ওদের বললাম, হৃদিতার কলেজের সামনে যেতে হবে একবার।
রাফসান বললো, কেন? কি হয়েছে?
‘ হৃদিতাকে কিছু ছেলে নাকি বিরক্ত করে। তাই আমরা গিয়ে ওই ছেলেগুলোকে বিরক্ত করবো!
চলবে….