হঠাৎ এক বৃষ্টির দিনে,পর্ব:১৩

0
567

#গল্পের_নাম #হটাৎ_এক_বৃষ্টির_দিনে
#পর্বঃ১৩ #অনুভুতি
#নবনী_নীলা
“দরজার দিকে তাকিয়ে আছো কেন? দরজা বন্ধ, ওদিকে তাকিয়ে লাভ নেই। So better আমার দিকে তাকাও।”অভির কথায় নওরীন দরজার দিকে থেকে চোখ সরিয়ে অন্য দিকে তাকালো কিন্তু অভির দিকে তাকালো না।

অভির ব্যাপারটায় ভীষণ রাগ হচ্ছে। আজ সারাদিন নওরীন একই কাজ করেছে। হয় তাকে দেখলে দৌড়ে পালাচ্ছে নয়তো ইগনোর করছে। তাই যাতে পালাতে না তাই রুমে আসার সাথে সাথে অভি দরজা লাগিয়ে দিয়েছে।

নওরীন দেওয়ালের সাথে আতিসাটি মেরে দাড়িয়ে আছে। অভি নওরীনের সামনে হাত দুটো ভাজ করে দাড়িয়ে আছে। নওরীন ভেবেছিলো সুযোগ বুঝে রুমে এসে ঘুমের ভান করে শুয়ে পড়বে কিন্তু সে ফেঁসে গেছে।

” এই রকম weird behave করছো কেন তুমি?”, অভির প্রশ্নে নওরীন একটা ঢোক গিলে বললো,”আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।”বলেই নওরীন চলে যাচ্ছিলো অভি নওরীনের ধরে আগের জায়গায় নিয়ে আসে। নওরীনের দুই পাশের দেওয়ালে হাত রেখে দাড়ায়।

” আমার কথা শেষ হয়নি আর যতক্ষণ পর্যন্ত না শেষ হচ্ছে তুমি এখানে থাকবে। কালকে রাতের পর থেকে তুমি এমন weird behave করে যাচ্ছে। কি হয়েছে কাল রাতে আমাকে বলো।”

নওরীন অভির দিকে তাকাচ্ছে না কিন্তু অভির কণ্ঠের গাম্ভীর্যতা বলে দিচ্ছে সে রেগে আছে। নওরীন কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছেনা। আজ মনে হচ্ছে কথা বের করেই ছাড়বে অভি।

” কিছু না”, নিচু স্বরে বললো নওরীন।

” কিছু না হলে এমন ইদুরের মতন করছো কেনো? সত্যি করে বলো।”, অভি নওরীনের কাছে ঝুঁকে দাড়ালো।

” বললাম তো তেমন কিছু হয় নি।”, ইদুর বলায় নওরীন রাগে জোরে বললো।

এখন ফেঁসে গেছে বলে, নইলে নওরীনকে ইদুর বলেছে আর সে ছেড়ে দিবে এতক্ষণে লংক্কা কান্ড লেগে যেতো। নওরীন রাগী চোখে জানালার দিকে তাকিয়ে আছে।

” তেমন কিছুটা কি সেটাই জানতে চাচ্ছি, যার জন্য এমন ভিজে বিড়াল হয়ে আছো।”, অভি মজা নিয়ে বললো।

নওরীন গাল ফুলিয়ে জানালার দিকে অগ্নী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অভি আরো বললো,” কাল তেমন কিছু হয়নি, আজ অনেক কিছু হতে পারে তাই না।”অভি একটু কাছে এসে বললো।

নওরীন অভির দিকে মুখ ঘুরিয়ে চোখ বন্ধ করে বললো,” ওইসব ফালতু জিনিস খেয়েছেন আপনি উল্টা পাল্টা কাজ করেছেন আপনি আর আমাকে বলছেন বলতে? আমি কেনো বলবো? আপনি খেয়েছেন কেনো।” চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায় এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলল নওরীন। নওরীনের কথা শুনে অভি হেসে ফেললো।

অভির হাসির শব্দে নওরীন চোখ খুললো। অভির দিকে তাকাতেই অভির ঠোঁটের দিকে চোখ গেলো নওরীনের।নওরীন একটা ঢোক গিলে সাথে সাথে দুই হাতে চোখ বন্ধ করে ফেললো।

অভি ব্যাপারটা খেয়াল করলো। অভির ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে নওরীনের লজ্জার কারণটা অভি বুঝতে পেরেছে।অভি মুখে বললো,” হাত সরাও মুখ থেকে।” নওরীন না সূচক মাথা নাড়ল।

অভি নওরীনের দুই হাত দেওয়ালের সাথে লক করে দিল। নওরীন চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায় ভ্রু কুঁচকে ফেললো।
অভি নওরীনকে কিস করলো।নওরীন বুঝতে পেরে চোখ খুলে আবার বন্ধ করে ফেলে।

অভি নওরীনের দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা এখনও চোঁখ বুঝে ঠোঁট কামড়ে দারিয়ে আছে। অভি নওরীনের হাত ছেড়ে দেওয়া মাত্র নওরীন দেওয়ালের দিকে ঘুরে চোখ খুলো। এমন ভাবে দাড়িয়েছে যাতে তার চেহারা দেখা না যায়।

অভি দেওয়ালের দু পাশে হাত রেখে নওরীনের কানের কাছে গিয়ে বলল,” তুমি কি সারারাত এখানে দাড়িয়ে থাকবে?”

নওরীন মুখ ফুলিয়ে হা সূচক মাথা নাড়ল।
” বাহ্ এভাবে তোমাকে চুপ করানো যায় সেটা তো আগে জানা ছিল না। আগে জানলে এতো কষ্ট করতে হতো না আমায়।”

নওরীনের উপায় নেই কারণ তার সাথে কি হচ্ছে সেটা সে নিজেও জানে না। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, হার্ট এমন ভাবে বিট করে যেনো এক্ষুণি বেরিয়ে আসবে। এ কেমন অনুভূতি তার জানা নেই। তবে নওরীন অভির দিকে তাকাতে পারছেনা কারণটা নওরীনের নিজেরও জানা নেই।

অভি নওরীনের হাত ধরে বললো,” অনেক হয়েছে ঘুমাবে এসো।”

নওরীন কোনো কথা না বলে হাত ছাড়িয়ে নিতে ব্যাস্ত হয়ে গেলো।

” তোমার কি মনে হয় তুমি আমার সাথে পারবে। নিজেই ব্যাথা পাবে।”,বলে অভি নওরীনের হাত ছেড়ে দিল।

” আমার ঘুম পাচ্ছে না।”, মুখ ফুলিয়ে বললো নওরীন।

” একটু আগে না খুব ঘুম পাচ্ছিল? তোমার ঘুম না পেলেও তুমি শুয়ে থাকবে। কারন রাত ১টার কাছাকাছি।”,বলে অভি নওরীনকে কোলে করে নিয়ে বিছনায় বসলো।

নওরীন আলুর মতন মুখ ফুলিয়ে রাগী স্বরে বলল,” সব কি আপনার ইচ্ছে মতন হবে?”

অভি ঘরের লাইট বন্ধ করতে করতে বলল,” হুম আমার কথায় হবে।”

নওরীন বিছনায় পা তুলে ঘাপটি মেরে বসে।অভি অপছা আলোর বাতি জ্বালিয়ে বলে,” তোমাকে কি এসে শুইয়ে দিতে হবে?”

” আপনা টাইম আয়গা “, মনে মনে বলে নওরীন আড় চোখে তাকিয়ে গুটিসুটি মেরে শুয়ে পড়ে।

ঘরের পানির জগে পানি নেই দেখে পানি আনতে অভি নিচে যায়। এসে দেখে এর মধ্যেই নওরীন ঘুমিয়ে গেছে বাচ্চাদের মতন ঘুমাচ্ছে।বালিশের নীচে হাত রেখে ঘুমাচ্ছে।অভি আস্তে করে জগটা রেখে নওরীনের দিকে মুখ করে শুয়ে পড়ে।

[চলবে]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here