স্যার I Love You পর্ব ৯

0
915

#গল্প_স্যার_i_love_you
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা (লেখিকা)
#পর্ব_09

মুন্নী আবারও রুবেলকে জড়িয়ে ধরলো
মুন্নী– সরি তখন তোমাকে ওইভাবে বলার জন্য
রুবেল– ইট’স ওকে বাবু তুমি না বললে আর কে বলবে এখন চলো গাড়িতে উঠো মুন্নী গাড়িতে উঠে পড়ে তারপর রুবেল মুন্নী ওর বাড়ির সামনে ড্রপ করে চলে যায়! (গত পর্বে)

ইতি রুমের মধ্যে পায়চারী করছে!
কিছুক্ষণ পর দরজায় কেউ নক করছে ইতির আর বুঝতে বাকি রইল না ওর স্যার এসে পরেছে!
ইতি দরজা খুলে দেয়!
স্যার প্রতিদিনের মতই আজও ইতিকে পড়াচ্ছে কিন্তু আজ ইতি কে অনেক ডিস্টার্ব মনে হচ্ছে!
স্যার– ইতি আর ইউ ওকে?
ইতি– স্যার! (অনেকটা গাবরিয়ে বলছে)
স্যার– কি হলো ভয় পাচ্ছো কেনো কোনো সমস্যা থাকলে বলো! (এত দিনে স্যারও ইতির সাথে ফ্রি হয়ে গেছে আর ইতিও)
ইতি– স্যার আমি আপনাকে একটা রিকুয়েষ্ট করতে চাই প্লিজ না করবেন না প্লিজ প্লিজ প্লিজ…!
স্যার– আচ্ছা কি কথা বলো!
ইতি– স্যারআপনিকালআমারসাথেএকটুবাহিরেযেতেপারবেনপ্লিজ! (এক নিশ্বাসে বললো) ? এখন হাঁপাচ্ছে ?
স্যার– কি বললা!? এক গ্লাস পানি ইতির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো পানি খাও…! ইতি ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো!
স্যার– হুম এখন তোমার এক হাত দিয়ে তোমার একপাশে নাক চেপে ধরো আর অন্য পাশ দিয়ে নিশ্বাস নাও।
ইতি– হুম (একহাত দিয়ে নাক চেপে ধরে)
স্যার– নিশ্বাস নাও এবার উপর পাশে চাপ দিয়ে ধরে এই দিক দিয়ে নিশ্বাস ছাড়ো!
হুম করো!
ইতি– হু..!
স্যার– ভেরি গুড! এখন কিছুক্ষণ এমন ভাবেই শ্বাস নেও আর বের করো!
দীর্ঘ ৫মিনিট পর—-!!!
স্যার– হুম এখন হাত সড়াও!
ইতি– জি।
স্যার– এখন কেমন লাগছে?
ইতি– ভালো আগের থেকে বেটার!
স্যার– এখন বলো এত হাইপার কেনো হয়েছিল?
আর কালক কি করবো সেটা আবার বলো এবার শান্ত হয়ে সুন্দর করে বলো!

ইতি– স্যার! কাল আমরা সব বন্ধু আর বান্ধবী টা মিলে এক সাথে লাঞ্চ আর ঘুরবো!
সবাই ওদের বিএফ এর সাথে যাবে আর যার বিএফ নাই সে যেতে পারবে না কিন্তু আমি যেতে চাই তাই আমি বলেছিলাম আমি আপনাকে আমার সাথে নিয়ে যাবো তাতে ওরা বিমত করেনি! আর সরি আপনাকে না জিজ্ঞেস করেই ওদের বলে দিয়েছিলাম প্লিজ রাগ করবেন না আর আপনি না যেতে চাইলে আমি ওদের বলে দিবো! (মাথা নিচু করে করুণ কন্ঠে বললো)
এমন ভাবেই বললো স্যারের আর না করার সাধ্য নেই।
স্যার– কিন্তু ওখানে তো সবাই যার যার বয়ফ্রেন্ড এর সাথে যাবে আর আমি তোমার স্যার বয়ফ্রেন্ড নই!
ইতি– তাতে কোনো সমস্যা নাই।
আপনি শুধু….. (আর কিছু বললো না মাথা নিচু করে ফেললো)
স্যার– পড়ায় মন দেও।
ইতি মুড অফ করে পড়তে লাগে!
স্যার এখনি চলে যাবেন!
ইতি মুড অফ করে বাচ্চা বাচ্চা ফেস করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্যারের উত্তরের আশায়!
স্যার চেয়ার থেকে উঠে ইতির সামনে দাঁড়িয়ে —
স্যার– কাল আমি রেডি হয়ে থাকবো! তুমি আমাকে পিক করে নিও! ওকে (একটা হাসি দিয়ে)

এতদিনে আজ প্রথম স্যার হাসলেন আর যেতেও রাজি হয়ে গেলেন!
ইতি এত খুশি হয়েছে যে চেয়ার থেকে লাফ দিয়ে উঠে স্যারকে জরিয়ে ধরে
স্যার তো থো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ইতি বুঝতে পারলো ও ওর স্যারকে জরিয়ে ধরেছে সাথে সাথে স্যার ছেড়ে দিয়ে একটু পিছিয়ে আসে!
ইতি– সরি স্যার! আমি একটু এক্সাইটেড হয়ে গেছিলাম তাই বুঝতে পারিনি! (মাথা নিচু করে) ইতি– লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে! ইসসস কি করলাম স্যার কি ভাবছে।☹
স্যার কিছু না বলেই মুচকি হেসে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো!
ইতি অবাক হয়ে আছে স্যার কিছু বললো না কেনো?
তার মানে কি স্যার ও আমাকে ইয়াহহহহুু
বিছানার উপর উঠে নাচতে লাগলো…!
ইতি খুশির ঠেলায় ভুলেই গেছে ওযে বলেছিল কাল ওদের সাথে যেতে পারলেই কল দিবে আর না পারলে কল দিবে না!
রাতে খেয়ে তারাতাড়ি শুয়ে পরে স্যারের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরে।
ওদিকে ওরা ইতির কল না আসায় ভেবে নেয় ওরা ইতি কাল যাবে না,, স্যার রাজি হয়নি।
সবার মুড অফ হয়ে যায় ইতি যাবে না ভেবে।
পরেরদিন—
আজ প্রথম স্যারের সাথে বাহিরে যাবে।
তাই ইতি ওর আম্মুর থেকে একটা শাড়ি নিয়ে আসে আর সেটা পরবে ভাবে।
দীর্ঘ ৩০মিনিট ঘাটাঘাটি করেও কোনো শাড়ি পছন্দ হয়নি,,, এখন মুড অফ করে বিছানায় বসে পরলো।
ইতি মা আলমারি থেকে শপিং ব্যাগ এনে ইতির হাতে দেয় আর বলে এটা তোর নিশ্চয়ই পছন্দ হবে
ইতি শপিং ব্যাগ খুলতেই অভাক খুব সুন্দর একটা পিংক কালারের সিল্ক শাড়ি!
ইতি ওর আম্মুকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু দিয়ে থ্যাংকস বলে নিজের রুমে চলে আসে!
এখন পুরো ১ঘন্টা ধরেও একটা শাড়ি পরতে পারছে না! উফফ
ইতির আম্মু– কিরে হলো তোর?
রুমে ডুকে দেখে ইতি কোনো রকমে শাড়ি পেচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ইতির আম্মু মেয়ের এই অবস্থা দেখে হেসে দিলো!

ইতি– আম্মু! (বিরক্ত হয়ে)
ইতির মা– দে আমি পরিয়ে দেই!
তারপর সুন্দর করে কুঁচি দিয়ে মেয়েকে শাড়ি পরিয়ে দেয় এবং নিজের হাতেই সাজিয়ে দেয় কি আর সাজ চোখে গাঢ় করে কাজল আর ঠোঁটে হালকা করে লিপস্টিক আর চুল গুলো চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে ছেড়ে দেয় কিছু চুল ভাগ করে সামনের দিকে দিয়ে আর বাকি গুলো পেছনে ছেড়ে দিছেন তাতেই ইতিকে দেখতে পরীর মতো লাগছে!

মেয়েকে শাড়িতে এত সুন্দর লাগছে দেখে ইতির মা নিজের চোখের আর্নিশ থেকে এক আঙুল দিয়ে কাজল নিয়ে মেয়ের কানের পেছনে লাগিয়ে দেয় আর বলে!
ইতির মা– আমার পরীর মত মেয়ের যেনে কারো নজর না লাগে। (কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে চলে গেলেন)
ইতি নিজেকে খুব ভালো করে আয়নাতে দেখছে!
ইতি– শাড়িতে তো আমাকে বেশ লাগে নিজেই ক্রাশ খাচ্ছি।
মাঝেমধ্যে শাড়ি পরলে খারাপ হয় না!
২মিনিট পর!
ইতি– এখন আমি হাঁটবো কিভাবে আল্লাহ গো যদি পরে যাই।
শাড়ি পরে হাঁটা যায় আজিব মানুষ যে কিভাবে পরে আল্লাহ এই এই খুলে গেলো মনে হচ্ছে শাড়িটা!
ইতি– ও আম্মু গো শাড়ি খুলে গেলো গো।
ইতির মা কিচেন থেকে দৌঁড়িয়ে আসে এসে দেখে সব ঠিক আছে ইতি নিজেই শাড়ির কুঁচি ধরে দাঁড়িয়ে আছে!
ইতির মা– তুই এভাবে কুঁচি ধরে রাখলে সত্যিই খুলে যাবে ছাড়! মেয়েকে ধমক দিয়ে।
তারপর নিজেই হেঁটে দেখাচ্ছে শাড়ি পরে কিভাবে হাঁটতে হয়!
ইতি ওর আম্মুর দেখানো অনুযায়ী হেঁটে চলে গেলো এখন আর শাড়ির কুঁচি ধরেনি!
(মেয়ে বন্ধু বান্ধবীর সাথে ঘুরতে যাচ্ছে আর মা শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছে বাহ ভাবা যায় শুরুতে বিমত করেছিলেন ইতির আম্মুর বাহিরে খাওয়া পছন্দ না তাই কিন্তু পরে যখন জানলো শাওন ও যাচ্ছে তো আর কোনো কিছু বলেনি! মেয়েকে নিজের হাতেই সাজিয়ে দেয় আসলে উনারও শাওনকে ভালো লাগে চর লাগবেই না কেনো নম্র ভদ্র শিক্ষিত ছেলে বড়দের সম্মান করে!)
ইতি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ওয়েট করছে স্যারের জন্য।
স্যারের আসতে লেট হচ্ছে দেখে ইতি গাড়ি থেকে নেমে যায় আর গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
স্যার আসছে।স্যারই বলেছিল ইতিকে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে।উনি এখান থেকেই ওর সাথে যাবে।
কিছুটা সামনে আসার পর স্যার লক্ষ্য করলেন একটা মেয়ে গোলাপী কালারের শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে চুলগুলো মুখের সামনে এসে পরে আছে তাই চেহারা দেখা যাচ্ছে না!
কিন্তু স্যার এগিয়ে আসছেন!
হটাৎ ইতি মাথা উঠিয়ে ওর বাম পাশের রাস্তার দিকে তাকালো!
ইতি তাকানোর সাথে সাথেই স্যার দাঁড়িয়ে গেলেন!
কারণ উনারা দু’জন দু’জনের থেকে আর মাত্র ১০কদম দূরে দাঁড়িয়ে আছে আর এখন তো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ওই শাড়ি পরা মেয়েটাই ইতি…!
স্যার– ইতি আজ শাড়ি পরেছে! কি সুন্দর লাগছে ওকে দেখছে! এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!
কিন্তু ওও শাড়ি কেনো পরলো? (মনে মনে)
ইতি– অবাক কিভাবে সম্ভব এটা কি ভাবে?
স্যারও পিংক কালারের একটা শার্ট পরে আসছেন!
দু’জন দু’জনের দিকে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল!
স্যার নিজের চোখ নামিয়ে নিল আর ইতিও অন্য দিকে ঘুরে তাকালো!
দু’জনেই চুপ করে গাড়ি উঠে পরলো! পুরো রাস্তা কেউ কিছু বলেনি! কিন্তু দুজনেই দু’জনের দিকে তাকাতে গেলেই দুজনের চোখে চোখ পরে গেছে আর দুজনেই লজ্জায় লাল টমেটো হয়ে যায়।

ওই দিকে রেস্টুরেন্টে বসে আছে মুন্নী, রুবেল মিম নাঈম আর আব্রু কিন্তু শ্রাবন এখনো এসে পৌঁছায়নি!
মুন্নী– ধ্যাত ইতি টা আসতে পারলো না কিছু ভাল্লাগছে না ধুর.! (বিরক্তির সুরে)

মিম– সব এই আব্রুর বাচ্চির জন্য হইছে ওওই তো বলছে স্যারকে নিয়ে আসবে হবে আর নয়তো আসা যাবে না। (আব্রুর মাথায় টোকা দিয়ে)
আব্রু– উফফ! আস্তে আমি কি জানতাম না-কি যে ওর স্যার রাজি হবে না। আমি তোভাবছিলাম রাজি হবে আর ওর স্যারকে দেখার সুযোগ পাবো যার প্রেমে আমাদের ইতি পরেছে।

রুবেল– কিন্তু তোর ভাবনায় পানি ঢেলে দিছে স্যার আর ইতির আসা বন্ধ হইছে। (রাগী কন্ঠে)

আব্রু– সরি। (মাথা নিচু করে)

নাঈম– কিন্তু এই শ্রাবন কেনো আসছে না এখনো? ওও কি রাস্তা হারিয়ে ফেলছে নাকি?

মিম– হ্যাঁ যার জন্য আসলাম তারই খবর নাই!
মুন্নী– মনে হয় জ্যামে আটকে পরেছে।
রুবেল– প্রায় ৩০মিনিট ধরে ওয়েট করছি। আর কত?
ওই আব্রুর বাচ্চি কল দে!

আব্রু– আমার ফোনে এমবি নাই! আমি তো ওয়াই-ফাই চালাই

নাঈম– কল দিবি এতে এমবি ওয়াই-ফাই করতাছোস কেন?

মুন্নী– তোর মেসেঞ্জারে কল দিতে হবে না এমবি নাই যখন নাম্বারে কল দে!
আব্রু– নাম্বার নাই।
রুবেল– কিহহ?
নাঈম– মাথা খারাপ প্রেম করিস আর নাম্বার নাই!
মিম– ওর আকাশে উড়াইনা কথা শুনে আমরা সব রেস্টুরেন্টে এসে বসে আছি বাহহহ ইচ্ছে করতাছে ওরে (দাঁতে দাঁত চেপে)
মুন্নী– তোর মাথায় কি গোবর ভর্তি না-কি তুই নাম্বার নিবি না!
সবাই আব্রুকে বকছে।
এমন টাইমে আব্রুর পেছনে একটা ছেলে এসে দাঁড়ালো!
ছেলে– এই যে ম্যাডাম মাথায় হাত দিয়ে আছেন কেনো?
আব্রু– ওয়েটার ওই গ্লাসে করে এক গ্লাস পানি দাও তো গলাডা শুকাই গেছে,,,
মুন্নী মিম রুবেল নাঈম এর দিকে তাকিয়ে আছে!
ছেলে– এই যে নিন ম্যাম আপনার এক গ্লাস জল।
(আব্রুর সামনে দিয়ে)
আব্রু ছেলেটাকে ওয়েটার ভাবছে।
রুবেল– এই ছেলেকে দেখে তো মনে হচ্ছে না ও এখান কার ওয়েটার!
নাঈম– ঠিক বলছিস!
মিম– আপনি কে আর এখানে কি চান?
মুন্নী– যান তো ভাই আমরা এমনি একজনের ওয়েট করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছি আর উপর থেকে আপনি।
আব্রু– না জানি আবাল টায় কখন আসবে!আর জানি না আসবে কি না! (মুখ ফুলিয়ে বলল)
ছেলেটা আবাল শুনে কিছু না বলেই আব্রুর পাশের চেয়ার টেনে বসে পড়ল!
আব্রু– এই ওয়েটার আপনার সাহস তো কম না আপনি আমার পাশে বসছেন!
কথা বলতে বলতে উঠে দাঁড়িয়ে ছেলেটার দিকে ঘুরলো দিতে যাবে একখানা ঘুসি হাত আটকে গেলো..

আব্রু— আ. আ.. আপনি?
মুন্নী– তুই উনাকে চিনিস!
ছেলে– হুম আমি এই রেস্টুরেন্টের সামান্য একজন ওয়েটার। (মুখে হাসি দিয়ে)
রুবেল– আপনাকে দেখে তো ওয়েটার মনে হচ্ছে না!

আব্রু– আ’ম সরি।
— আহহ সরি বলছো কেনো?
শ্রাবন- আমি তো আবাল তাই না?
মিম– আব্রু আপনাকে কখন আবাল বললো?
মুন্নী– আব্রু তো শ্রাবন ভাইয়াকে বলছে! হাহ আর কিছু না বলেই সাথে সাথে দুই হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরল!
রুবেল– তার মানে হচ্ছে আপনিই শ্রাবন?
নাঈম– নাইচ টূ মি ইউ! (হাত বাড়িয়ে দিয়ে)

আব্রু– সরি শ্রাবন!

শ্রাবন সবার কাছে মাফ চাইলো!
শ্রাবন– I’m Sorry… Guys!… আর কিছু বলার আগেই মিম শ্রাবন কে থামিয়ে দিয়ে বললো!
মিম– সরি কেনো?
.
.
.
চলবে…..
“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ” ❌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here