#স্যার_I_Love_You
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা (লেখিকা)
#পর্ব_০৭
মুন্নী রুবেল আব্রু মিম নাঈম— কুছ কুছ হোতা হে ইয়ার..
তারপর রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে ওদেরকে ওদের বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে নিজের বাড়ি চলে এলাম!
রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম–
আম্মু– আয় মা খেয়ে নে এত লেইট করলি যে আজ?
আমি– আমি আর আমরা সব ফ্রেন্ডস রা বাহির থেকে খেয়ে আসছি!
আম্মু– বাহির থেকে খেতে গেলি কেনো আমাকে একটা কল দিয়ে বলতে পারতি মা আমি সব রান্না করে রাখতাম বাড়িতে নিয়ে আসতি ওদের সাথে আমিও একটু গল্প করতাম!
আমি– আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম আরে আমার লক্ষী আম্মু নেক্সট টাইম নিয়ে আসবো ওকে.!
আম্মু চলে গেলো!
আর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্যারের আসার সময় হয়ে যাবে!
স্যার কি আসবে নাকি আসবে না!
স্যারের আসার সময় হয়ে গেছে কিন্তু স্যার এখনো আসছে না আমার তো খুব ভয় করছে যদি আর না আসে ভাবতে ভাবতে বারান্দায় গেলাম!
ধুর এখনো কেনো আসছে না!
আবার রুমে এসে পড়ার জন্য বই খুলে বইয়ের সামনে বসে পড়লাম! কিছুতেই মন লাগছে না শুধু কালকের স্যারের বলা কথা গুলো মনে পরছে!
উফফ ভাল্লাগে না
বইটা বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালাম পিছনে ঘুরতেই দেখি.
স্যার দরজা দিয়ে ডুকছেন!
(আমি তো অভাক আমি কোই ভাবছিলাম উনি আসবেন না কিন্তু উনি তো আমার সামনেই)
স্যার– মিস ইতি! কোথায় হারিয়ে গেছেন?
আমি– ও জি স্যার! (স্যারের ডাকে ধ্যান ভাঙলো)
স্যার– চেয়ারে বসুন! দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?
আমি– ওও জি স্যার!
স্যার– আইএম সরি!
আমি– স্যার আপনি সরি কেনো বলছেন?
স্যার– আমার আসতে ৩০মিনিট লেইট হয়ে গেলো তাই!
আমি– ওওও ইট’স ওকে! ( এবার আমার সরি বলার পালা উফফ) কেমনে যে বলি!
আমি– Sir! I’m Really very Sorry for Everything!
স্যার– ইট’স ওকে! আমি আসার সময় আপনার পূর্বের স্যারদের সাথে রাস্তায় হঠাৎ করেই দেখা হয়েছিল,, আর সবাই বললো আপনি তাদের কাছে তাদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন! তারা খুবই খুশি হয়েছে আপনার এই ব্যবহার! কখনো কাউকে ছোটো করবেন না বা কষ্ট দিবেন না আপনার অন্যের সাথে যেমন ব্যবহার করবেন তেমন ব্যবহার প্রকৃতি আপনাকে ফিরিয়ে দিবে! তাই চেষ্টা করবেন সবাইকে সবার প্রাপ্প সম্মান টুকু দেওয়ার সে যেমনই হোক ধনি গরিব ছোটো বড়… আই হোপ আপনি বুঝতে পেরেছেন!
আমি হা করে তাকিয়ে আছি…
বাহ কি সুন্দর করে বুঝিয়ে বললো পুরাই ফিদা!
স্যার– মিস ইতি! বুঝতে পেরেছেন?
আমি– জি জি জি স্যার!
স্যার– ওকে তো পড়া শুরু করা যাক!
স্যার পড়াচ্ছে আর আমি স্যারকে দেখছি
স্যার– আমার দিকে না তাকিয়ে থেকে বইয়ের কলম আর খাতার দিকে তাকান তাহলেই পড়া বুঝবেন!
আমি– উনি কি করে বুঝলেন যে আমি উনার দিকে তাকিয়ে দিলাম চোখ কি আরও চার পাঁচটা আছে নাকি.
কোই না তো চোখ তো দুইটাই তাও আবার সামনেই তাহলে! (মনে মনে বললাম আর কি)
স্যার– মিস ইতি! (একটু রেগে গেলেন)
আমি– জ..জ.. জি স্যার! (একটু তোতলাতে তোতলাতে বললাম)
স্যার– আপনি তোতলাতেও পারেন! ( বলে হাহাহা করে হাসছে)
আমি– মোটেও আমি তোতলাইনি! (বলে রাগি লুকে ওনার দিকে তাকালাম) ফুল ক্রাস
(হাসলে কত কিউট লাগে)
(আব বাসবি কার পাগলে আব মেরি জান লোগে
কেয়া)
খালেদা আন্টি স্যারের জন্য কফি নিয়ে আসছে!!
খালেদা আন্টি– আসবো স্যার?
স্যার– হ্যা হ্যা আসুন না প্লিজ!
খালেদা আন্টি– স্যার আপনার কফি! (কফির মগটা দিয়ে খালেদা আন্টি চলে গেলো)
স্যার কফির মগে চুমুক দিচ্ছে আর শব্দ হচ্ছে!
আমি তো শব্দ শুনে কয়েকবার উনার দিকে আড় চোখে তাকালাম
স্যার তা লক্ষ্য করে বললো–
স্যার– কি কফি খাবে? (কফির মগটা আমার দিকে একটু এগিয়ে দিয়ে)
আমি– শয়তান কুত্তা হারামি ফাজিল আফ্রিকান বান্দর উগান্ডার ভূত মনে মনে ১০০ গালি দিলাম!
আমি– না স্যার আপনিই খান আমি কারো মুখের টা খাইনা!
স্যার– তো তাকিয়ে ছিলেন কেনো? নজর লাগলে আমার পেট খারাপ হবে না বুজি! (একটা শয়তান মার্কা হাসি দিয়ে)
আমি– এ হালায় বলে কি ইচ্ছা তো করতাছে একটা ঘুসি দিয়া নাকটা চেপ্টা করে দেই বেশি লম্বা হইয়া গেছে শুধু ভালো হইয়া গেছি বলে কিছু বললাম না। আগের আমি থাকলে এতক্ষণে দাঁত একটাও থাকতো না গুন্ডি নাম্বার ওয়ান মনে মনে বললাম!
আমি আর স্যারকে উদ্দেশ্য করে কিছু বললাম না!
এইভাবেই কেটে গেলো কয়েকদিন!
সবাই তো অভাক একদিন রাতে!
আব্বু– ইতি আগের থেকে অনেক পাল্টে গেছে!
আম্মু– হ্যা যা বলেছো সব হয়েছে ওই শাওন ছেলেটার জন্য ওও আসার পর থেকে ইতিকে পুরাই পাল্টে ফেলছে! ভাড়ি মিষ্টি ছেলে!
আব্বু– তুমি ঠিক বলেছো! এখন আসো ঘুমাই সকালে অফিস যেতে হবে!
পরেরদিন কলেজের মাঠে বসে আছি সবাই—
মুন্নী মিম আব্রু– কি ব্যাপার জানু কি চলছে?
আমি– কি চলছে মানে?
নাঈম রুবেল– কি চলছে মানে বুঝিস না! না নেকা!
সবগুলা একসাথে চিৎকার দিয়ে– তোর আর স্যারের সাথে কি চলছে?
আমি– উফফ কানটা আমার ঝালাপালা করে দিলি তো তোরা!
মুন্নী– এখন বল!!
আমি কি বলবো?
মিম– আমার মাথায় একটা টোকা দিলো!বুঝিস না তুই আমরা কি বলছি নাকি ইচ্ছে করে এমন করছিস?
আমি— মাথায় হাত দিয়ে উফফ এত জোরে কেউ টোকা দেয়! ডাইনী
নাঈম রুবেল– কেউ আমারে একটা বাঁশ আইনা দে ওরে পিটাই..
আমি আবার কি করলাম…
আব্রু– উফ তোরা কথা ঘোরাচ্ছিস কেনো সোজা সোজা বললেই পারিস!
সবাই তুই বল আব্রু কে বললো.
আব্রু ওকে বলছি..
আব্রু– সত্যি করে বলবি কিন্তু ইতি তোর আর স্যারের মধ্যে কি কিছু চলছে নাকি? মানে প্রেম টেম ভালোবাসা এমন কিছু…
আমি যেনো আকাশ থেকা পড়লাম…
কি বললি এমন কিছুই নেই..
রুবেল নাঈম– কিছুই নাই মানে কও আমরা না তোর বেস্ট ফ্রেন্ড আর আমাদের কাছে মিথ্যা বলছিস তুই ইতি…
মুন্নী– ওই তোরা রেগে যাচ্ছিস কেনো?
মিম– কিছু নাই বললে কিভাবে হবে ইতি তুই কি একবারও ভাবছিস? তুই এখনকার তুই আর ৭ দিন আগের তুই এর মধ্যে কত পার্থক্য আর এটা শুধু হয়ে তোর স্যার আসার পর থেকে আর এই ৭ দিনে তুই অন্য কোনো কথা বলিসনি শুধু স্যারের কথা ছাড়া অন্য কথা বললেও তুই ১বার হলেও স্যারের কথা বলিস একটা ১বার হলেও স্যারের কথা বলিস একটা বারও কি ভাবছিস?
আমি আব্রুর ফোন দিয়ে গেমস খেলছিলাম!
ওর কথা শুনে ওর দিকে অভাক হয়ে রইলাম কারণ ওর কথা গুলো একদম সত্যি!
আব্রু– আরে বুঝিস না ইতি প্রেমে পরেছে আমাদের ইতি স্যারের প্রেমে পরেছে!
আমি– একদমই না এই গুলা ভুয়া কথা.
রুবেল– ভুয়া কথা না,, কোই তোর চোখ তো অন্য কথা বলছে!
নাঈম– ইতি তুই যখন স্যারের কথা বলিস তখন তোর মুখে এক বালতি ভর্তি হাসি ফুটে উঠে আর দুই চোখ ভরে স্যারের প্রতি ভালোবাসা সম্মান আর তুই বলছিস ভুয়া কথা!
মিম,, মুন্নী– ইতি তুই কি বুঝতে পারছিস না তুই স্যারকে ভালোবেসে ফেলেছিস!
আব্রু– আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে আমাদের ইতি প্রেমে পরেছে
আমি– ওই ডাইনি তুই প্রেমের কি বুঝিস হ্যা একটাও তো প্রেম করতে পারিস নি এখনে আবার বড় বড় কথা
আব্রু– প্রেম করি নাই তো কি হইছে সব জানি আমি হুহহ সব (চোখ টিপ দিয়ে বললো)
সবাই ওর কথা শুনে হেসো দিলো–
ওদের হাসতে দেখে আমার ম্যাজাজ বিগড়ে গেলো
ওই তোরা যাবি এখান থেকা যা বলছি আর নয়তো পিটাই ভূত বানাই ফেলমু (হেবি রেগে গেছি)
আমাকে রাগতে দেখে ওরা যার যার মতো উঠে চলে যায়! আমি আর দেখিনি ওরা শয়তান গুলা কোনদিক গেছে আব্রুর ফোনটা আমার হাতেই!
ফোনটা হাতে নিয়ে গাছের সাথে হেলান দিয়ে ভাবছি (আমাদের কলেজের মাঠে একটা বড় কৃষ্ণচুড়া ফুল গাছ আছে)
ভাবছি আর বলছি (আশেপাশে কেউ আছে কি না খেয়াল করিনি)
আমি– ওই শয়তান গুলা যা বললো সব কি সত্যি?
মানে কি আমি সত্যি স্যারকে ভালোবেসে ফেলেছি.
গাছের পেছন থেকা সব গুলা বাহির হয়ে আসলো আর চিৎকার করে বললো!!
২টা শয়তান ৩টা ডাইনি– হ্যা রে তুই সত্যিই স্যারকে ভালোবেসে ফেলেছিস ( বলছে আর ফিক ফিক করে হাসছে)
আমি– তোরা যাস নাই গাছের পিছনে লুকাই ছিলো.
সবগুলা– তুই প্রেমে পড়েছিস ইতি
আমি– দাঁড়া তোদের হচ্ছে…
(বলে সবগুলার পিছনে ছুটতে লাগলাম ওরা পাঁচজন পাঁচ দিকে ছুটে বেড়াচ্ছে আর আমি একা কতক্ষণ দৌঁড়ানো যায় উফফ হাঁপাই গেছি রে মাঠের মাঝখানে বসে পড়লাম! আর সব গুলা দৌড়াতে দৌড়াতে কলেজের ভেতরে ডুকে গেছে)
আমি– তোদেরকে তো পরে দেখে নিব শয়তান গুলান..
বসা থেকে উঠতে যাব আর তখনি আর্জিনার ফোনে একটা মেসেজ আসলো মেসেজ টা সিন করতেই যেনো আমার মাথায় পাহাড় ভেঙে পড়লো.
বিশ্বাসই হচ্ছে না! আমাদের সামনে এত সাধু সেজে থাকে আর তলে তলে এত দূর দাঁড়া দেখাচ্ছি তোকে এবার আমার পালা আমাকে এতক্ষণ অনেক কিছু বলছো এবার তোমাকে কে বাঁচাবে বেইবি ডাইনী বুড়ি আসছি আমি রেডি থাকো!(একটা শয়তান মার্কা হাসি দিলাম)
তারপর উঠে ক্লাস রুমে গেলাম
আমাকে মুচকি হাসতে দেখে সব গুলা অভাক হলো!
আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে আসবে তখনই ক্লাসে স্যার চলে আসলো তাই কিছু বললো না!
আর্জিনা তো ভুলেই গেছে ওর ফোন আমার কাছে
সবগুলা ক্লাস শেষ সবাই মিলা ফুচকা খেতে আসলাম!
ওর এখনও মনে নাই ফোন যে আমার কাছে ওও ভাবছে ওর ফোন ওর কাছেই!
হঠাৎ করেই ফোন খুঁজতে শুরু করলো!
আব্রু– আমার ফোন? আমার ফোন কোথায় অনেক বার বললো আর খুঁজছে তো খুঁজছেই সব ফুচকা খাওয়া বাধ দিয়া ওর দিকে তাকিয়ে আছে!
আমি আজকে আইসক্রিম খাচ্ছি আর ওর কান্ড দেখছি! মুচকি মুচকি হাসছ ইচ্ছা করছে জোরে জোরে হাসতে কিন্তু তা করা যাবে না!
বাকিগুলা– দেখ তোর ব্যাগে আছে কি না!.
আব্রু– নাই কোথাও নাই আমি দেখছি তো..
(ওর মনেই নাই ওর ফোন যে সকালে আমারে দিছিলো যাইহোক এবার আমাকে বলতেই হবে আর নয়তো ডাইনী এখন কান্না করার মতো অবস্থা)
.
.
.
চলবে????
“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ” ❌