সুপ্ত বাসনা পর্ব ১৪ +১৫

0
1132

#সুপ্ত_বাসনা
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ১৪+১৫

– “বুঝতে পারছি সোজা আঙুলে কাজ হবে না,এই….বার আঙুল বাঁকাতে হবে।” তারপর হঠাৎ মিমের ঠোঁটের কোণে এক রহস্যময়ী হাসি ফুটে ওঠে,ইমান বিকেলে ঘুম থেকে উঠে ঢাকার সবচেয়ে নাইটক্লাবে ছোটে,সেখানে গিয়ে দেখে,
অনুষ্ঠানের চিফ গেস্ট হিসেবে মিম’কে ইনভাইট করা হ’য়েছে ক্লাবের পক্ষ থেকে।মিম’কে সবাই জারবেরা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নিচ্ছে হাসি মুখে।মিম আজ একটা রেড ওয়াইন কালারের জামদানী শাড়ি পরে এসেছে নাইটক্লাবে,হাত খোঁপায় গুঁজে দেয়া কিছু তাজা গোলাপ,চোখের নিচে কালো কাজল,কপালে টিপ আর বড় ঝুমকা পরে আছে।সবাই তার সাথে ছবি তুলতে মরিয়া।ইমান কিছু টা দূরেই ওয়াইনের গ্লাস হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।একজন সাংবাদিক হঠাৎ এগিয়ে এসে মিম’কে বললো,
– “ম্যাম,আপনার গানটি অসম্ভব সুন্দর! একদম সবার মন ছুঁয়ে গেছে।মিউজিক ভিডিও রিলিজ হওয়ার দু’দিনের মাথায় একশো মিলিয়ন প্লাস ভিও! ইট’স মিরাকল ম্যাম,সত্যি বলছি ম্যাজিক হয়ে গেছে।” মিম হাসি মুখে সাংবাদিক সাদিক’কে বললো,
– “ধন্যবাদ! ভাইয়া,আপনার দেওয়ার রাখবেন আমাকে আর কিছু মনে করবেননা,আপনি আমার বড় ভাইয়ের বয়সী,তাই ভাইয়া বললে ডাকলাম আপনা’কে।” সাদিক হাসতে হাসতে বলেন,
– “এটা তো অনেক বড় পাওয়া ম্যাম! আপনি এতো টা সম্মান দিলেন আমাকে।” মিম বলল,
– “আমার বাবা বলেন,”যে তোমার থেকে বয়সে এক সেকেন্ডের ও বড়,সে বয়সে বড়ো তোমার থেকে।তুমি সব সময় তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দিয়ে কথা বলবে,অহেতুক ছোটো করার চেষ্টা করবে না তাকে আর একটা কথা সবসময় মনে রাখবে সম্মান দিলেই সম্মান পাবে।কখনো কাও’কে ছোটো করে দেখো না,কারণ মানুষের টাকা-পয়সা না থাকলেও নিজের আত্মসম্মান টা অনেক দামী হয় সবার কাছে।” সাদিক আবারো হাসতে হাসতে মিম’কে বললো,
– “ম্যাম! কথা বলে খুব ভালো লাগলে আপনার সাথে।” মিম মৃদু হেসে বলল,
– “আপনি আমার বড় ভাইয়ের মতো,চাইলে নাম ধরে ডাকতে পারেন আমাকে।” তখন ইমান এসে মিম’কে জিজ্ঞেস করলো,
– “উড ইউ লাইক টু ড্যান্স উইথ মি? মিম বললো,
– “নাঃ ! বাড়ি থেকে আর কেউ আসেনি আপনার সাথে?”
– “নাঃ! তার কেউ পছন্দ করে না।নাইট ক্লাবে যেতে…..সকাল যখন অফিসে দেখা হলো,তখন তুমি আমাকে বলতে পারতে….আমি তোমাকে পিক-আপ করে নিতাম বাসা থেকে।” মিম মনেমনে বলে,
– “হ্যাঁ,তুই পিক-আপ করতে আসতি আর আমি ধরা পরে যেতাম তোর কাছে,খেয়েদেয়ে তো আর কাজ নেই আমার ভাই! পাগল কুত্তায় কামড়ানি আমাকে।” ইমান মিম’কে বললো,
– “তুমি কি সম্পর্কে আছো কারো সাথে?” মিম বলল,
– “সে সব জেনে আপনি কি করবেন? মিঃ! আপনার কি কোনো প্রয়োজন আছে?”
– “না মানে ওই…আর কি?”
– “কেন থাকলে কোনো সমস্যা আছে? নাকি প্রেম- পিরিতি করার আগে আমাকে আপনার কাছ থেকে স্পেশাল পারমিশন নিতে হবে?” ইমান আমতা আমতা করে মিম’কে বললো,
– “বড় ভাই,হিসেবে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কাছে।তুমি এতো চট’ছো কেন মিম? বলো না কেউ কি আছে?”
– “হ্যাঁ আছে,জনেন ইমান ভাইয়া আমার তাকে খুব ভালো লাগে।” ইমান হঠাৎ চোটে গিয়ে বিড়বিড় করে বলে,
– “জানতাম,মেয়ে টা নষ্ট হয়ে গেছে।বাচ্চাকাচ্চা কি দেশে রেখে মানুষ করা যায় নাঃ! আশ্চর্য! বিদেশ কেন নিতে হবে?” মিম ইমানের মুখ খানা দেখে মিটিমিটি হেসে বলে,
– “দেখ,দেখ! লোকটর চেহারা দেখ একদম ঠিক আছে।নিজে যা করুক তাতে কোনো দোষ নেই,ফুলের মতো চরিত্র ওয়ালা পবিত্র বউ খোঁজে।” ইমান হঠাৎ মিম’কে জিজ্ঞেস করে,
– “তুমি কি কিছু বললে আমাকে?” মিম কথা ঘুরিয়ে বললো,
– “কোই না তো ভাইয়া! আপনার কানে বোধহয় সমস্যা আছে।ভালো ডক্টর দেখান গিয়ে নয়তো অচিরেই ‘বয়রা’ রোগ দেখা দেবে।” ইমান বেশ অবাক হয়ে বলল,
– “আচ্ছা কি পার্থক্য আছে? তোমার ও মিহানের মাঝে,দু’জনেই সমান সুযোগ পেলেই কথা শোনাবে আমাকে।” মিম মৃদু হেসে মনেমনে বলে,
– “বাবা জীবন! তুমি কেন সুযোগ করে দাও আমাকে? জানো কি? আমার এবং মিহানের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, কারণ আমি’ই মিহান এবং আমি’ই মিম বোঝা গেছে? এতো ভেবো না ব্রো, নয়তো অল্প বয়সে তোমার ব্রেইন ড্যামেজ হয়ে যাবে আর এই…. মিম যে কি জিনিস? সেটাও তুমি, আস্তে আস্তে টের পাবে।আপাতত বসে ললিপপ খাও নয়তো নিজের আঙুল চুষো।”
– “ঠিক আছে।”
– “কি আশ্চর্য! ইমান ভাইয়া? আমি কি কিছু বলেছি আপনা’কে?” ইমান বললো,
– “না মানে,কিছু না। তুমি ঠিক আছো মিম? তোমার শরীর ঠিক আছে?” মিম ইমান’কে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বেড়িয়ে গেলো নাইটক্লাব থেকে ইমান ও ওর পিছুপিছু এলো,জিজ্ঞেস করলো,
– “ডিম! ফুসকা খাবে?” মিম বললো,
– “কে ডিম? আপনার মাথায় কি সমস্যা আছে? আপনি জানেন না ‘মিম’ একটা আরবি হরফ? কোন সাহসে আপনি ভেঙালেন এই….শব্দ টা কে?” ইমান বলল,
– “তুমি আমায় ভুল বুঝছো মিম!”
– “কোনো ভুল না,একদম ঠিক আছে,” কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না,ওটা বাঁকা….বাঁকাই থাকে।”
সকালে ইমান অফিসে গিয়ে দেখে,মিম খালি পায়ে পায়চারী করছে নরম সবুজ ঘাসে,পরনে তার আকাশী রঙের লং ফ্রক আর বাচ্চাদের মতো দু’পাশে দু’টো ঝুঁটি বাঁধা আছে।ইমা এসে বললো,
– “চল বোন! কিছু খেয়ে নেই।” মিম বললো,
– “খিদে নেই আমার পেটে।” ইমান এগিয়ে এসে মিম’কে জিজ্ঞেস করলো,
– “তুমি কি এখনো রেগে আছো?” মিম তখন ওর পাশ কাটিয়ে চলে গেলো সেখান থেকে।ইমান মনেমনে বেশ কষ্ট পেলো কিন্তু সেটা প্রকাশ করলো না কারো কাছে।মিম দ্বিতীয় দনের ফটোশুটের জন্য লাল বেনারসি পরে তৈরি হয়ে এলো,দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল তাকে।ইমা দুষ্টুমি করে মিম’কে বললো,
– “কবে যে তোকে বিয়ে দেবো? আর আমি খালা হবো? সে ইচ্ছে টা বোধহয় অপূর্ণ থেকে যাবে।” মিম মিটিমিটি হেসে বলে,
– “তা তুই কেন বসে আছিস,ইমা! কে ধরে রেখেছে তোকে? তুই না আমার থেকে বয়সে ছ’মাসের বড়? নিয়ম মোতাবেক বড় বোনের আগে বিয়ে হবে আর তা না হলে ইমান ভাই’কে ধরে বিয়ে করিয়েদে,সে কেন এখনো আইবুড়ো হয়ে আছে?” ইমান বলল,
– “বিকজ অফ ইউ।”
– “সিরিয়াসলি? ভাই? আপনার মাথা ঠিক আছে? আমার রুচি এতো টাও খারাপ না যে আমি বিয়ে বসবো আপনার মতো একটা লোকের সাথে,যার বিছানায় প্রতি রাতে নিত্য-নতুন মেয়ে থাকে।ফাজলামো করছেন ভালো কথা ভাইয়া! আর এমন ফাজলামো করবেননা আমার সাথে।আমি একজন কে পছন্দ করি,আমার বিয়ে টা হলে বোধহয় তার সাথেই হবে।” ইমান চুপ করে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো অস্পষ্ট স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
– “তুমি কি আর ভালোবাসো না আমাকে?”

চলবে,,,,,,

#সুপ্ত_বাসনা
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ১৫

– “তুমি কি আর ভালোবাসো না আমাকে?” মিম যেন শুনেও শুনলো না, বললো,
– “কি? ভাইয়া,আপনি কি কিছু বললেন আমাকে?”
– “কোই না তো? তুমি কি ঘুরতে যেতে পছন্দ করো মিম? একদিন সময় করে ঘুরতে যাবে আমার সাথে?” মিম বললো,
– “ভেবে জানাবো ভাইয়া! আসলে আমার সামনে অনেক কাজ আছে।যদিও ফ্রী হই, তাহলে ঘুরতে যেতে পারি, কারণ আমার সাজেক বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান আছে।” ইলহান সাহেব এসে ভাগ্নী’কে বললেন,
– “নিচে চলো মা! সব সেট-আপ তৈরি হয়ে গেছে।” ক্যামেরা ম্যান নিলয় ইমান’কে অনুরোধ করে বললো,
– “স্যার! আপনি একটু ম্যামের পাশে দাঁড়ান,একটা ছবি তুলে দেই? দু’জন কে খুব ভালো লাগছে একসাথে।” মিম ছবি তুলতে রাজি হলো না বললো,
– “প্লিজ তাড়াতাড়ি করুণ, নিলয় ভাইয়া! আমার অন্য কাজ আছে।” ইমানের মুখ টা কালো হয়ে গেলো,মুখ টা আমাবস্যার মতো অন্ধকার হয়ে গেছে।দুপুরে সে একা একা রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করতে এলো আর দেখতে পেলো মিম খুব হেসে কথা বলছে একটা ছেলের সাথে।ইমানের বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো,খুব জানতে ইচ্ছে করলো মিমের কি সম্পর্ক ওই…..ছেলের সাথে? মিম ইমান’কে দেখে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ছেলেটার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললো,
– “ভাইয়া! ও আমার বন্ধু পল্লব! আমরা কিন্ডারগার্টেনে লেখাপড়া করেছিলাম একসাথে।তারপর হাইস্কুলে উঠলাম আর ওরা বরিশালে চলে গিয়েছিল ঢাকা থেকে।” ইমান মৃদু হাসলো,তারপর বললো,
– “আমি ভেবেছিলাম তোমাদের মাঝে অন্য কোনো সম্পর্ক আছে।” মিম বলল,
– “না ধুরর,কি যে বলো না তুমি ভাইয়া? তোমার মাথায় সত্যি সত্যি গন্ডগোল আছে।” পল্লব কথায় কথায় মিম’কে বললো,
– “হ্যাঁ রে আন্ডা? এটা তোর সেই ভাই টা না? তুই খুব পছন্দ করতি যাকে?” মিম হাসতে হাসতে এই….প্রশ্নের উওরে বলে,
– “আরে ইমান ভাই,আমার এক কালিন ক্রাশ ছিলো এখন আর আমি তেমন একটা ক্রাশ খাই না যাকে তাকে দেখে।”
– “তুই যে বলতি,তুই ইমান ভাই’কে ছাড়া কাও’কে বিয়ে করবি না?”
– “আরে ভাই! তখন একটা ক্রেইজ কাজ করতো মানের মাঝে,ছিলাম বোকা যা দেখতাম তাই ভালো লাগতো এবং উৎকৃষ্ট বলে মনে হতো আমার কাছে….তবে এখন বড় হ’য়েছি না? এখন আর তেমন কাও’কে ভালো লাগে না সেভাবে….।সিঙ্গেল লাইফ অনেক বেটার পল্লব! অন্তত বাপের খেয়ে অন্যের ছেলে পালার থেকে…..।হারাম কোনো জিনিসে সুখ নেই,আসল সুখ পবিত্রতার মাঝে নিহিত আছে।আজ কাল যে ছেলে-মেয়েরা হারাম সম্পর্কের জন্য বাবা-মা কে ছেড়ে চলে যায়,এরা কি ভুলে যায়? বাবা-মা কত কষ্ট করে মানুষ করেছে তাদের কে? আর পল্লব তুই যে লুবনা’কে নিয়ে পালিয়ে যেতে চাইছিস? সেটা কি ঠিক? বল আমাকে? সন্তানের ওপর সবচেয়ে বেশি অধিকার তার বাবা-মায়ের থাকে,তুই কি কখনো ভেবে দেখেছিস কেয়ামতের দিন তুই কি জবাব দিবি আল্লাহ তাআ’লা’কে? আমি শুধু তোকে এতোটুকু বলতে পারি আমি এই….ব্যাপারে,আমি কোনো সাহায্য করতে পারবো না তোকে।তবে তুই যদি বলিস,আমি তোর এবং লুবনার ব্যাপারে কথা বলবো আঙ্কেল-আন্টির সাথে।দেখ ভাই,এভাবে হুট করেই কিছু করা উচিৎ হবে না আগে তোরা কথা বলে দেখ একে অপরের ফ্যা-মলির সাথে….কারণ আমি যতটুকু জাহিদ আঙ্কেল এবং মণি আন্টি’কে চিনি তারা অপছন্দ করবেন না লুবনা’কে আর লুবনা আমাদের প্রচণ্ড লক্ষি মেয়ে,ও খুব সহজেই আঙ্কেল এবং আন্টির মন জিতে নেবে।” পল্লব হাসতে হাসতে বলে,
– “আমি ঠিক এই….কারণেই এসে ছিলাম বান্ধবী তোর কাছে,কারণ আমি জানতাম,অন্য কেউ আমাকে যে বুদ্ধি দিয়ে থাকুক না কেন…তোর দেওয়া সাজেশন টাই বেস্ট হবে আর আজ আমি তোকে কথা দিয়ে যাচ্ছি,আমি আজ রাতেই কথা বলবো বাবা-মায়ের সাথে।বাবা-মা তো লুবনার ব্যাপারে কিছুই জানে না আর মনে হয় না জানলেও রাগ হবে।আচ্ছা এখন আমি উঠি? অফিস যাবো জরুরী কাজ আছে।” ইমান মিটিমিটি হেসে মিম’কে বললো,
– “নিজের বন্ধু’কে এতো সুন্দর একটা সাজেশন দিলে,তা তোমার নিজের কি ফিউচার প্ল্যান আছে?” মিম বললো,
– “আপাতত গাধা পিটিয়ে মানুষ করার করতে চাই,তারপর না হয় আমার ফিউচার প্ল্যান নিয়ে ভাবা যাবে?” ইমান জিজ্ঞেস করলো,
– “কি?”
– “কিছু না ভাইয়া! এখন আমাকে উঠতে হবে।” কিছুক্ষণ পর, ইমান মিম’কে বললো,
– “সেই কখন থেকে মুখে মাস্ক পরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছো? তোমার কি বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে আদৌও আছে?” মিম বলে,
– “হুমম,আপাতত সোডিয়াম লাইটের আলোয় দাঁড়িয়ে ফুসকা খাওয়ার ইচ্ছে আচ্ছে।”
– “চলো যাই?”
– “আশ্চর্য! আপনি কেন জাবেন আমার সাথে? আমি আপনা’কে যেতে বলিনি ভাই! আমার অন্য জায়গায় সেট-আপ আছে।” ইমান মুখ কালো করে আবারো মিমের দিকে তাকিয়ে আছে,মিম গিয়ে সোজা রিকশায় চেপে বসলো, সে আজ রিকশায় ঘুরে ঘুরে দেখবে রাতের ঢাকা শহর টাকে….।ইমানের মন মেজাজ কিছুই ভালো নেই,তার আজকাল সব কিছু অসহ্য লাগে।নিজেই নিজেকে বললো,
– “কি বেহায়া হয়ে গেছি আমি? বারবার ছুটে কেন যাচ্ছি তার কাছে।”
– “কারণ আপনি বলদ,আপনি বুঝতে পারছেননা স্যার,সে একজন খাঁটি মানুষ’কে চায় নিজের পাশে।” ইমান বললো,
– “খোঁচা মারা কথাবার্তা বলো না মিহ! প্লিজ অসহ্য লাগে।” মিম বললো,
– “তাহলে নিজেই নিজের বোনের বিয়ের পাএ খুঁজে দিন স্যার!”
– “ঠিক আছে,কি বললে তুমি? কার পাএ? কিসের পাএ?”
– “সে তো নিচে গেলেই জানা যাবে? দেখে এলাম আপনার বাবা ভিডিও কলে কথা বলছে আপনার ফুফার সাথে।” ইমান মিহানের কথা শুনে হন্তদন্ত হয়ে নিচে ছুটে এসে শুনতে পায় ইলহান সাহেব হেসে হেসে কথা বলছেন আমির সাহেবের সাথে।আমির সাহেব কথায় কথায় ইলহান সাহেব’কে বললো,
– “ভাই! আপনার খোঁজে কি ইসলামিক মাইন্ডের কোনো ভালো ছেলে আছে? আপনার আদুরে ভাগ্নী’র আবার একটু ধার্মিক ছেলে পছন্দ সে নিজেই বলেছে আমাকে।যদিও আমি আমার ছোটো মেয়ে টাকে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে চাইনা,তবুও খোঁজ নিতে কি সমস্যা আছে?”
– “কোনো সমস্যা নেই,আমির! আপনি একদম চিন্তা করবেননা,আমার নজরে একটি খুব ভালো ছেলে আছে।ইমা’কে সে ছেলের ব্যাপারে বলেছিলাম,তার পছন্দ হয়নি,তবে আমাদের মিমের ইনশাআল্লাহ্ হয়ে যাবে।” ইমান হঠাৎ ঝড়ের বেগে ছুটে এসে ইলহান সাহেবের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে আমির সাহেব’কে বলে,
– “বাড়িতে বিবাহযোগ্য ছেলে থাকতে আপনাদের বাহিরে কেন খুঁজতে হবে?” আমি সাহেব মিটিমিটি হেসে ইমান’কে বলেন,
– “সে টা কি তুমি? ইমান বাবা,তাহলে মাফ করো আমাকে….কারণ আমি এমন বাবা নই,যে জেনেশুনে আগুনে ঠেলে দেবো নিজের মেয়ে’কে….মেয়ে আমার বড্ড প্রিয় সে হয়তো আমি বুঝিয়ে বলতে পারোনা তোমাকে আর আমি এখানে কোনো ব্যবসা করতে বসিনি,এখানে আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।” ইমান বলল,
– “বিজনেস ইজ প্রফিট এন্ড ম্যারেজ ইজ লাভ,ফুফা আমি যদি বদলে ফেলি নিজেকে?”
– “তুমি মানুষ খারাপ না বাবা! তুমি যদি নিজেকে বদলে ফেলতে পারো,তাহলে আমি আমার মেয়েকে নিজে তুলে দেবো তোমার হাতে। এই…আজ আমি কথা দিলাম তোমাকে।”
– “আমি মুখের কথায় বিশ্বাস করি না,ফুফা! আমাকে কাগজে কলমে লিখে দিতে হবে।” আমির সাহেব বললেন,
– “আমার মুখের কথাই যথেষ্ট বাবা! তবে আমি জোর করে পাঠাবো না আমার মেয়ে’কে তোমার কাছে,সে যদি নিজে থেকে তোমার কাছে আসতে চায়,তবেই আমি তাকে পাঠাবো তোমার কাছে।” ইমান খট করে কল টা কেটে দিলো, তারপর কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো ইলহান সাহেবের দিকে,ইলহান সাহেব ছেলে’কে বললেন,
– “তুমি যেটা নও,সেটা কেন হতে চাইছ ইমান সবার কাছে?” ইমান মৃদু হেসে বললো,
– “ছেড়ে দাও না বাবা! কেউ অন্তত বদলানোর সুযোগ দিলো আমাকে।” মিম বেশ অবাক হলো ইমান’কে হাসিমুখে দেখে,ইমান বললো,
– “মিহ! আজ আমার ঈদের দিন ব্রো,প্লিজ কংগ্রাচুলেশন’স জানাও আমাকে।” মিম মনেমনে বলে,
– “কচু জানাবো,কে জানে কি ঘটিয়ে এসেছে নিচে? লোকটা কে দেখলেই আমার গায়ে জ্বালা ধরে,মেয়েরা কি দেখে পছন্দ করে একে?”

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here