সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব ২

0
1149

#সীমাহিন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২

আদ্রি ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে দেখে মিথিলা সোফায় বসে কান্না করছে। স্ট্রেট করা চুল গুলো পাখির বাসার মতো হয়ে আছে কান্না করার কারনে কাজল লেপ্টে আছে কিন্তু এই অবস্থাতেও যেনো সৌন্দর্য তার দ্বিগুন হয়ে গেছে। মিথিলা কে জরায় ধরে বসে আছে আদ্রিয়ান। পাশের সোফাতেই নাহিদ খান গম্ভির মুখে চেয়ে আছেন আর নওরিন খান নাহিদ খান কে উদ্দেশ্য করে হাজারো বিলাপ করে যাচ্ছেন
আদ্রি আর সেদিকে খেয়াল না দিয়ে বাড়ির বাহিরের দিকে হাটা ধরলো কিন্তু বাধ সাজলো আদ্রিয়ান

আদ্রিয়ানঃনা খেয়ে কই যাচ্ছিস। (গম্ভির গলায়)
আদ্রিঃক্ষুদা নাই এমনিতেও এই বাসায় আমার জন্য কোন খাবার থাকেনা ব্যাপারটা হয়তো আপনি ভুলে গেছেন মিস্টার খান
আদ্রিয়ানঃবস আমি স্টাফ কে বলচ্ছি কিছু তৈরি করে দিতে
আদ্রিঃকোন দরকার নাই আপনার এতো উদারতার আপনি আপনার বোন কে সামলান আমাকে দেখার প্রয়োজন নাই কারো

নওরিনঃএই মেয়ে তোর সা্হস হয় কি করে আমার ছেলেকে এই ভাবে বলার তোর মতো ছোট লোক মেয়ের পেটে আদৌও এই সব বড়লোক এর খাওয়ার পচবে নাকি মা তো ছিলো নর্দমার কিট মেয়েও ওই নর্দমার ই চিহ্ন
(তেজী গলায়)

আদ্রির রাগে সারা শরীর রি রি করচ্ছে সে চাইলেও দিতে পারে এর উত্তর কিন্তু কেন দিবে যেখানে তার আম্মুর স্বামি মুখ বুজে আছে।

আদ্রিঃএই জন্য বিয়ে করে আনেছিলেন আমার আম্মু কে তাই না সিনিয়ার খান যাতে প্রতিনিয়ত আমার মৃত আম্মুকে নিয়ে গালিগালাজ করা হয় প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন আপনারা তাই না কই গেছে এখন সে ভালোবাসা নাকি মানুষ মরলে ভালোবাসাও মরে যায়

নাহিদ খান মাথা নিচু করে ফেলেন কি বা উত্তর দিবেন তিনি তার মেয়ের কথায় ৯ টা বছর হয়ে গেলো মেয়ের মুখে আর বাবা ডাকটা শুনে না আসলেই তো সে দোষী সে জানে সে তার বউকে কতোটা ভালোবাসতো কিন্তু তার বউ যাওয়ার পর থেকে নওরিন বেগম ই যে তার সব তিনি চান না আদ্রির আম্মুর মতো নওরিন ও উনাকে ছেড়ে যাক তাই তো নওরিন এর কোন কথার প্রতিউওর তিনি করেন না

আদ্রিঃএন্ড ইউ মিসেস খান আমার আম্মু যদি নর্দমার কিট হয় না তাহলে আপনি কি আমাকে একটু বলবেন ছোট বোনের ভালোবাসার মানুষের সাথে রাত কাটানোকে কি বলে আই থিংক আপনাকে বলে দিতে হবেনা রাই,,,,,,

আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদ্রিয়ান ঠাস করে একটা চড় মেরে দেয় আদ্রিকে। চড় এর প্রোক্ষরতা এতোটাই ছিলো যে আদ্রির মাথা টা বাম দিকে হেলে যায় নাহিদ খান এর বুকটা ধোক করে উঠে নওরিন বেগম ও চমকে যান।সবাই মুখে আদ্রিকে যা তা বললেও আদ্রিকে আজ পর্যন্ত ফুলের টোকাও কেউ দেয়নি আর সে মানুষ টা যদি আদ্রিয়ান হয় তাহলে তো কথায় নাই

আদ্রি তাচ্ছিল্যে একটা হাসি দেয় চোখে তার পানি টলমল করচ্ছে
আদ্রিঃকি মিস্টার খান সহ্য হয়নি তো নিজের মায়ের বিরুদ্ধে কোন কথা তাহলে ভাবেন যখন এই মহিলা দিনের পর দিন রাতের পরে রাত আমার মায়ের চরিত্র নিয়ে কথা বলে তখন আমার কেমন লাগে হা আপনাদের কিছু বলার রুচি আমি ৯ বছর আগেই হারায় ফেলেছি

আদ্রিয়ানঃব,,(কিছু বলতে পারেনা আদ্রিয়ান তার হাত কাপচ্ছে সে নিজেও জানেনা আজকে কতোটা আঘাত সে তার বোন কে দিয়েছে। কিন্তু কি করবে যতই মায়ের বিরুদ্ধে কথা বলুক সে তো ওর মা কি করে শুনবে ওর মায়ের বিরুদ্ধে অপবাদ)

আদ্রিয়ান এর ধ্যান ভাংগে নওরিন বেগমের চিৎকারে আদ্রিয়ান পিছনে ঘুড়ে দেখে মিথিলা অজ্ঞান হয়ে সোফায় পরে আছে। আদ্রিয়ান দৌড়ে যায় বোনের কাছে বোনকে পাজা কোলে তুলে নেয় নাহিদ খান ও ডক্টর কে ফোন করেন।।।।।।।

_________

মিটিং রুমে বসে আছে নির চোখ মুখে ক্রোধ স্পষ্ট ফুটে আছে রুমের বাহিরে সব স্টাফ ভয়ে তটস্থ হয়ে দাঁড়ায় আছে আর নির এর ঠিক সামনেই মাথা নিচু করে দাঁড়ায় আছে
আহাদ নির এর পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট।

নিরঃতো আহাদ শেখ তুমি আমার জন্য কাজ করচ্ছো কই বছর হলো
আহাদঃস্যার আই এম সরি আমার ভুল হয়ে গেছে আর এমন হবে না স্যার আমি ভয় পায়ে গেছিলাম
নিরঃজাস্ট এন্সার কাই কুয়েশ্চন ড্যাম এট(টেবিলে সোজড়ে একটা থাবা মারে। বেচারা আরেকটু হলে প্যান্ট নষ্ট করে বসে থাকতো
আহাদঃস্যার ৪ বছর
নিরঃক্যারেক্ট ৪ বছর সো এই ৪ বছরে এই টুকু তো তোমার জানা রাইট যে নির আর যাই করুক ধোকাবাজ দের সহ্য করতে পারেনা আমার ডিক্সেনারিতে সরি বলে কোন ওয়ার্ড নাই
আহাদঃস্যার প্লিজ মাফ করে দেন স্যার(নির এর পা জরায় ধরে)
নিরঃকেন এমন করলা তুমি জানতা না যে নির জানলে কি করতে পারে তোমার সাথে বলো ভয় লাগে নি নির এর(আহাদ এর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
আহাদঃস্যার সত্যি বলচ্ছি তারা আমাকে জানে মারে ফেলার ভয় দেখায়েছিলো আই এম সরি স্যার
নিরঃসরি মাই বয় বাট আমার ডিক্সারিতে সরি বলে কোন শব্দ নাই(পকেট থেকে গান বের করে আহাদ এর মাথার মাঝখানে শুট করে দেয় গুলির আওয়াজে বাহিরে দাঁড়ায় থাকা সব স্টাফ ভয়ে কাপে উঠে

তখনি ৩ টা গার্ড সব স্টাফ দের সরায়ে ভিতরে ঢুকে লাশ নিয়ে চলে যায় আর আরেকজন আসে ফ্লোরে পরে থাকা রক্ত পরিষ্কার করে দেয়,

(কি হলো বুঝলেন না তো আহাদ শেখ নির এর পিএ ৪ বছর যাবত সে নির এর সাথে কাজ করে। আর কাজের প্রতি খুব ভালোও ছিলো কিন্তু কিছু সপ্তাহ হলো সে টাকার লোভে পরে নির এর রাইভাল কাম্পানির সাথে হাত মিলায়ে নির এর কম্পানির তথ্য ওদের কাছে প্রাচার করতো আর নির সেটা জানে যায় ব্যাস খেল খাতাম)

______

কবরস্থানে বসে আছে আদ্রি হ্যাচকি তুলে কান্না করে যাচ্ছে ১ ঘন্টা যাবৎ।। কেউ জানে না আদ্রি নাহিদ খান এর মেয়ে। সে নিজের খরচ নিজেই চালাই জব করে কিন্তু নাহিদ খান সেটা মানতে নারাজ তাই আদ্রি এতোদিন যেখানে কাজ করতো সেখানকার ম্যনেজার কে ভয় দেখায়ে আদ্রি কে কাজ থেকে বের করে দিয়েছে আর কোন কম্পানি তাকে জব দিতে ইচ্ছুক না কারন একটাই নাহিদ খান এর নিষেধাজ্ঞা।।।

আদ্রিঃকেন আম্মু কেন গেলা আমাকে ছাড়ে এরা কেউ ভালো না কেউ না এরা সবাই শুধু তোমার রাজ কন্যাকে কষ্ট দেয় আব্বু ভাইয়া বড় আম্মু মিথু কেউ আমাকে ভালোবাসে না কিন্তু কেনো জানো আজকে না ভাইয়া আমাকে মারেছে হ্যা আমি জানি আমি বেশি বলে ফেলেছি ওই ভাবে বড় আম্মুকে বলা আমার উচিৎ হয়নি কিন্তু কি করতাম আম্মু বড় আম্মু৷ কথায় কথায় তোমাক অপমান করে কিন্তু কেন সে না তোমার নিজের বড় বোন তাহলে আমি আর পারচ্ছিনা আম্মু আমাকে নিয়ে যাও (কবরের উপর শুয়ে পরে)

______
পাঞ্চিং ব্যাগে একটার পর একটা পাঞ্চ করেই যাচ্ছে নির যার কারনে নির এর পেশিগুলা ফুলে উঠচ্ছে প্রায় অনেকক্ষন বক্সিং করার পরে শান্ত হয়ে বসে নির। ড্রিংক করার উদ্দেশ্য বেয়ার হাতে নিতেই দরজায় কেউ কড়া নারে

নির বেয়ার টা থুয়ে দরজা টা খুলে দিয়ে বিছানায় আসে বসে টাওয়াল দিয়ে ঘাম গুলা মুছতে লাগে মিসেস রেজওয়ান উর্ফে নিহারিকা রেজওয়ান নির এর নানীমা আসে বসে নির এর পাশে নির ছোট বাচ্চার মতো নানির কোলে মাথা রাখে

নিহারিকাঃকি হয়েছে আমার জামাই টার হুম আজকে আমার জামাইটার রাগ কই গেলো
নিরঃআজকে ওকে আবার দেখেছি ডার্লিং
নিহারিকাঃতুই এখনো ওদের পিছা কেন করিস নানু ভাই
নিরঃতো কি করবো ডার্লিং ওরা আমার কাছ থেকে আমার সব কিছু কারে নিয়েছে আমার বাবা মা দাদা দাদী সব কিছু কি করে ছাড়ে দি তাদের
নিহারিকাঃকিন্তু নানু ভাই
নিরঃনো ডার্লিং তাদের শেষ না করা পর্যন্ত আমি শান্ত হবো না। একটা বার ভাবেছো যদি তুমি না থাকতা তাহলে আমার আর পিচ্চির কি হতো তোমারা না থাকলে আমরা কই যাইতাম এই চৌধুরী এম্পায়ার টাকা পয়সা যা আছে সব তোমার আর নানুর জন্য
নিহারিকাঃব্যাস অনেক হয়েছে এবার যা ফ্রেশ হয়ে আয় খায়ে নিবি তোর নানু তোর সাথে কি নিয়ে যেনো আলোচনা করতে চায়
নিরঃহুম যাও তুমি আমি আসচ্ছি

নিহারিকা রেজওয়ান যাইতেই নির ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,,,

চলবে!!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here