#শ্রেয়সী
#পর্ব_৩
#লেখনীতে_নাদিয়া_সিনহা
সেদিন শ্রেয়সীর রাগের কারণটা আরাবীর বোধগম্য হয়নি। আরাবীর বারংবার একটা কথাই ভাবছিলো শ্রেয়সী রেগে গেলো কেনো? আর তার ডায়েরিতে কি এমন আছে। সেদিনের পর প্রায় এক সপ্তাহ শ্রেয়সী কলেজে যায়নি। আর না হল থেকে বেরিয়েছে। এমন কি শ্রেয়সী আরাবীর ফোন কিংবা মেসেজ কোনোটারই উত্তর দেয়নি। শ্রেয়সীর সাথে রৌদ্রসীও উধাও। দুজনের একজনেরও খবর নেই। আরাবী সকল ধৈর্য্যের বাধ ভেঙ্গে গেছে এক প্রকার। শ্রেয়সী ঠিক আছে তো? এমন হাজার খানেক প্রশ্নে সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে বারংবার। তবে উত্তর শূন্যের কোঠায়। রৌদ্রসীর থেকেও শ্রেয়সী সম্পর্কে কোনো তথ্য পায়নি আরাবী। প্রায় একটা সপ্তাহ পার হয়ে গেছে মেয়েটার দেখা নেই। কি করছে না করছে ভালো আছে কি না কে জানে? এদিকে আরাবী দিন কে দিন অস্থির চিত্তে কখনো কলেজে তো কখনো শ্রেয়সীর হলে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মেয়েদের হল হওয়াতে পুরুষ প্রবেশ নিষেধ তাই আরাবীও ভিতরে প্রবেশ করতে পারছিলো না। তবুও সে রোজ নিয়ম করে শ্রেয়সীর হলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে প্রেয়সীর একটু দেখা পাওয়ার আশায়।
কাঠফাটা রোদ্দুরে শ্রেয়সীর হলের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে আরাবী। আজ হলের সামনে আসতে বেশ দেরি হয়ে গেছে তার। যখন তার ঘুম ভাঙ্গে তখন বেলা বারোটার কোঠায়। আরাবী দ্রুত রওয়ানা দেয় শ্রেয়সীর হলে উদ্দেশ্যে। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারও শ্রেয়সীর দেখা নেই। শ্রেয়সীর এমন করার পেছনে কারণটা খুঁজে পায় না। মেয়েটার হঠাৎ কি হয়েছে এমন যে দেখা দিচ্ছে না।
একই ভাবে প্রায় ঘন্টাদেড়েক হলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে আরাবী। বিরক্ত হয়ে আশেপাশে তাকাতেই দেখতে পায় শ্রেয়সী আর রৌদ্রসী খুব গভীর কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে করতে হলের দিকেই আসছে। শ্রেয়সী কে দেখে আরাবী যাতটা না খুশি হয় তার থেকে বেশি রাগ হয়। সে দৌড়ে শ্রেয়সীর সম্মুখে দাঁড়ায়। অতঃপর প্রশ্ন করে,
-“এতদিন হল থেকে বের হওনি কেনো?”
আরাবী কে দেখে শ্রেয়সী খানিক ঘাবড়ে যায়। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,
-“একটু অসুস্থ ছিলাম তাই।”
-“তুমি অসুস্থ ছিলে বলে কি ফোনও অসুস্থ ছিলো?”
খানিকটা চিৎকার করে বলে কথাটা। যার দরুন শ্রেয়সী কিঞ্চিৎ কেঁপে উঠে।
-“হয়েছে কি…..”
-“শ্রেয়সীর থেকে উত্তর চাইছি তোমার থেকে নয়৷”
রৌদ্রসী বলতে গিয়েও ভয়ে থেমে যায়। আরাবী অক্ষিদ্বয় রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শ্রেয়সীর মুখশ্রী পানে। শ্রেয়সী চুপ থাকায় আরাবীর রাগ আরও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আরাবী সংযতচিত্তে দীর্ঘশ্বাস টানে। অতঃপর শ্রেয়সীর হাত ধরে টানতে টানতে হাঁটা শুরু করে। আতংকে শ্রেয়সীর মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না। রৌদ্রসী পিছু আসায় আরাবী তাকেও থামিয়ে দেয়। রৌদ্রসীও বেশ ভয় পায় যার দরুন আরাবীর সম্মুখে কথা বলার সাহস পায়নি। শ্রেয়সীর রৌদ্রসীর দিকে তাকিয়ে ইশারায় বুঝায় “বেঁচে থাকলে আমার দেখা হবে। আলবিদা!”
আরাবীর হাঁটার গতির সাথে শ্রেয়সী তাল মিলিয়ে হাঁটতে পারছে না। যার দরুন বার বার শ্রেয়সীর হাতে টান দিচ্ছে আরাবী। উপায়ান্তর না পেয়ে আরাবী আচমকা শ্রেয়সী কে কোলে তুলে নেয়। শ্রেয়সীর চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। পিছন থেকে রৌদ্রসী বড় বড় চোখ করে মুখশ্রী গোলাকৃতি করে তাকিয়ে আছে আরাবী-শ্রেয়সীর পানে। আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন ভূত দেখার মতো চমকে তাদের পানেই তাকিয়ে। সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই আরাবীর। সে তার মতো নিজ গন্তব্যে মনোযোগ দিয়ে হাঁটছে। শ্রেয়সী বিষ্ময়কর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে আছে আরাবীর মুখশ্রী পানে। হুস ফিরতেই চিৎকার করে আরাবীর গায়ে সজোরে আঘাত করতে থাকে। শ্রেয়সী চিৎকার করে বলছে,”নামিয়ে দিন না হয় খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।” কে শোনে কার কথা। বিরক্তিতে আরাবী একবার শ্রেয়সী মুখশ্রী পরখ করে সম্মুখে দৃষ্টি স্থাপন করে হাঁটতে থাকে।
আরাবী জোর করে শ্রেয়সী কে এনে গাড়িতে বসিয়ে দেয়। দরজা লক করে উল্টোদিকে গিয়ে নিজেও বসে পরে। শ্রেয়সী লাগাতার চিৎকার করছে আর আরাবী কে হুমকি দিচ্ছে,”কেনো সে শ্রেয়সী কে কোলে তুলেছে? কেনো সে গাড়িয়ে এসে বসিয়ে দিলো? কেনো সে গাড়ির দরজা লক করলো? কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? কেনো করছে এসব? এসব করে তার কি লাভ?” এমন হাজার খানে প্রশ্ন করে যাচ্ছে। আরাবীর আর সহ্য হচ্ছে না পুচকি একটা মেয়ে কি না তাকে ধমকাচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে। সহ্য করতে না পেরে জোড়ে চিৎকার করে গাড়ির হ্যান্ডেলে সজোরে একটা ঘুষি মেরে দেয়। আরাবীর আচমকা গর্জনে শ্রেয়সী ভয়ে চুসে যায়। সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠে তার। রাগ সংযোত করতে আরাবী বিস্তীর্ণ এক শ্বাস টানে। আচমকাই ভুল সময়ে ভুল বাক্য উচ্চারণ করে ফেলে শ্রেয়সী,
-“আপনি আমাকে মেরে ফেলার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন না তো?”
অবিশ্বাস্য চাহনি নিক্ষেপ করে শ্রেয়সী মুখশ্রীতে। অক্ষি দ্বয় রক্ত বর্ণ ধারন করেছে আরাবীর। রাগ যেনো কয়েকশ গুন বেড়ে গেছে। মস্তিষ্ক চিৎকার করে বলছে শ্রেয়সী কে মারবে আরাবী এটা শ্রেয়সী ভাবলো কি করে? শ্রেয়সী কে সে উম্মাদের ন্যায় ভালোবাসে। শ্রেয়সী তার দূর্বলতা তাকে ঘিরে তার বাঁচার প্রয়াস। বিবর্ণময় জীবনে এক চিলতে রংধনু শ্রেয়সী। আরাবী আর একটা বারও তাকায় না শ্রেয়সীর পানে।
____________________
নির্জন নিস্তব্ধ নদীর পারে গাড়ি দাঁড় করায় আরাবী। গাড়ি থেকে নেমে নদীর কাছে এগিয়ে যায়। ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গাড়িতে বসে আছে শ্রেয়সী। আরাবী কে গাড়ি থেকে নামতে দেখে শ্রেয়সীও গুটি গুটি পায়ে আরাবীর পিছু পিছু যায়। আচমরা হাঁটু মুড়ে বসে চিৎকার করে গর্জে উঠে আরাবী। আচমকা এমন গর্জনে কেঁপে উঠে শ্রেয়সী। কিয়ৎক্ষন পর আরাবী সটান হয়ে ওঠে দাঁড়ায়। কন্ধ বাঁকিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে শ্রেয়সীর মুখশ্রীতে। দ্রুত পায়ে শ্রেয়সীর ঠিক সম্মুখে দাঁড়ায়। শ্রেয়সীর সমগ্র মুখশ্রীতে আতংক। ভয়ে তার মুখশ্রী থেকে বিন্দু বিন্দু ঘামের শিশি টপটপ করে বেরিয়ে আসছে। শ্রেয়সীর সম্মুখে প্রায় অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকে আরাবী।
ভয়ে দু-হাত মুঠে করে ধরে কচলাচ্ছে শ্রেয়সী। বলিষ্ঠ হাতে কান্ধ খাবলে ধরে শ্রেয়সীর। কান্ধ ঝাঁকিয়ে প্রশ্ন করে,
-“সমস্যা কি? এত দিন উধাও ছিলে কেনো?”
শ্রেয়সী ভয়ে কথা বলতে ভুলে গেছে যেনো। তার গলা দিয়ে একটা টু শব্দও বের হচ্ছে না। আরাবী ভ্রু কুঁচকে বারংবার শুধু এই প্রশ্নই করছে। শ্রেয়সী শুকনো ঢোক গিলে নিজের মন কে প্রস্তুত করে উত্তর দেওয়ার জন্য। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,
-“শরীর ভালো ছিলো না তাই।”
-“একদম লেম এক্সকিউজ দিবে না আমাকে। তুমি অসুস্থ ছিলে মানলাম তাহলে আমার ফোন তুলতে না কেনো? আমি মেসেজ দেওয়ার সাথে সাথে অনলাইন থেকে চলে যেতে কেনো? আমাকে এভাবে এরিয়ে চলার মানে কি? সব প্রশ্নের উত্তর না দিলে আজ আমি কিছু একটা করে বসবো শ্রেয়সী।”
গর্জে উঠে আরাবী। শ্রেয়সীর সর্বাঙ্গ বার বার কেঁপে উঠেছে। ভয় পেয়ে তাৎক্ষণিক উত্তর দেয় শ্রেয়সী,
-“আমার অনুমতি ছাড়া আমার ডায়েরিতে হাত দিয়েছিলেন তাই।”
অবাক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে শ্রেয়সীর পানে।
-“হোয়াট? লাইক সিরিয়াসলি? এই ছোট একটা কারণে তুমি এত গুলো দিন আমাকে এরিয়ে চলেছো।”
শ্রেয়সী মূর্তি ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে। আরাবী কয়েক কদম সামনে এগিয়ে গিয়ে একটি বৃহৎ আকৃতির বৃক্ষে গায়ে সজোরে এক ঘুষি মেরে দেয়। আরাবীর করা এহেন কান্ডে শ্রেয়সী হতচেতন হয়ে যায়। আরাবী তীব্র বেগে ছুটে এসে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে শ্রেয়সী কে। আজ যেনো শ্রেয়সীর অবাক থেকে অবাকের চূড়ায় পৌঁছাবার দিন। একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। শ্রেয়সীর মস্তিষ্ক ঠিক বোধগম্যহীন। আরাবী শক্ত করে জড়িয়ে আছে শ্রেয়সীকে। যেনো ছেড়ে দিলেই হারিয়ে যাবে। সে পারছে না নিজের সাথে মিশিয়ে নিতে। শ্রেয়সী চোখ দিয়ে টপটপ করে অশ্রু গড়াচ্ছে। কেউ তাকে এত ভালোবাসতে পারে তা তার কল্পনাতীত।
আচমকা শ্রেয়সী কে ছেড়ে শক্ত করে চুল খামচে ধরে আরাবী। চিৎকার করে সামনে এগিয়ে গিয়ে আবারও সেই বৃক্ষের গায়ে সজোরে আঘাত করে। শ্রেয়সীর আর সহ্য হয় না। নোনাজলের স্রোতে তার সম্মুখে সমস্ত কিছু ঘোলাটে দেখাচ্ছে। দিকবিদিক না দেখে আচমকা পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আরাবীকে। অনাকাঙ্ক্ষিত আক্রমণে অপ্রস্তুত হয়ে পরে আরাবী। সম্মুখে ঝুঁকে নিজেকে সামলে নেয়। কান্না করার দরুন হেঁচকি উঠে গেছে শ্রেয়সীর। অস্পষ্ট স্বরে বলে,
-“প্লিজ আপনি শান্ত হন। আমার সহ্য হচ্ছে না আপনা কে এভাবে দেখে। কষ্ট হচ্ছে খুব।”
আরাবী অত্যন্ত শান্ত এবং গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
-“কেনো সহ্য হচ্ছে না? আর কে বললো তোমার কষ্ট হচ্ছে? একটা সপ্তাহ কিভাবে পারলে আমাকে কষ্ট দিতে? তখন কি করে সহ্য হয়েছে? একটা সপ্তাহ শ্রেয়সী একবার ভাবো। যেখানে আমি তোমাকে একদিন না দেখে পাগল প্রায় হয়ে যাই সেখানে এক সপ্তাহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছো এমনকি সামনেও আসোনি।”
শ্রেয়সী নাক টেনে অস্পষ্ট কন্টে বলে,
-“আর কখনও ওমন করবো না প্রমিস।”
-“ডায়েরিতে কি এমন আছে? যার জন্য এত বড় শাস্তি দিলে আমায়?”
শ্রেয়সী কে নিজের সম্মুখে এনে দাঁড় করায় আরাবী। থতমত খেয়ে যায় শ্রেয়সী। মুখশ্রীতে লাজুক আভা স্পষ্ট।
-“লজ্জা পাচ্ছো কেনো? বলো কি আছে?”
শ্রেয়সী খানিকক্ষণ চুপ থেকে মৃদু কন্ঠে বলে,
-“আমার ভালো লাগা ভালোবাসা সকল অনুভূতি ডায়েরিটা। যদি কেউ ডায়েরি পড়ে আমার খুব লজ্জা লাগবে।”
-“ভালোবাসা নিয়েও লেখা আছে নাকি?”
-“হ্যাঁ।”
-“তার মানে আমার নিয়েও লেখা আছে ডায়েরিতে?”
শ্রেয়সী লজ্জায় মাথা নত করে ‘হ্যাঁ’ সম্মতি প্রদান করে।
-“আমায় নিয়ে কি লিখেছো বলো? ডায়েরি পড়ে নয় আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই।”
কোনো কথা না বলে শ্রেয়সী হাঁটা দেয় গাড়ির উদ্দেশ্যে। আরাবী পিছু ডাকলেও শোনে না। আরাবী আর কোনো কথার উত্তর দেয়নি শ্রেয়সী।
.
.
.
.
.
ডায়েরির পাতা উল্টানোর শব্দে অতীতের ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে আরাবী। শ্রেয়সী তাকে ভালোবাসি বলুক বা না বলুক তবে তাকেও শ্রেয়সী অসম্ভব ভালোবাসতো তা সে বেশ বুঝতে পারতো। আরাবী টলমল দৃষ্টিতে তাকায় ডায়েরির পানে। বেশ অনেকটা শুকিয়ে গেছে। ডায়েরি পাতা গুলো হাওয়ায় উল্টেপাল্টে যাচ্ছে। স্বযত্নে হাত রাখে ডায়েরির পাতায়। কতই না লজ্জা পেতো শ্রেয়সী। তার ডায়েরি কেউ পড়ে ফেললো এই নিয়ে সর্বদা ভয়ে ভয়ে থাকতো সে। শ্রেয়সীর রাগ করার পর আর কোনো দিন ডায়েরিতে হাত দেয়নি আরাবী। আর না কখনও ডায়েরি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আজ সেই ডায়েরি আরাবীর হাতে। আরাবী জানে শ্রেয়সী হয়তো কখনও জানবে না হয়তো তার সকল অনূভুতির ভান্ডারটা প্রিয়তম পুরুষের কাছে।
ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে ডায়েরি প্রথম পাতা মেলে আরাবী। সেখানে একটা খাম আঠা দিয়ে লাগানো। খামটার মুখ যেদিকে সেখানটায় আঠা লাগানো। খামের উপরে কিছু লেখা যা নষ্ট প্রায়। তবুও আরাবী তা পড়ার চেষ্টা করে,”সৃষ্টিকর্তা প্রতি কৃতজ্ঞ! তার নিঃস্বার্থ অসীম অম্বর ন্যায়, অতল গভীর সমুদ্রর ন্যায় ভালোবাসা দেওয়া জন্য।” বক্ষস্থল মুচড়ে উঠে আরাবীর। সতর্কতার সাথে খামটা আস্তে আস্তে খুলে। খামের ভিতরে কয়েকটা চিরকুট আর পুরোনো হলুদরঙ রঙ্গের কাগজের একটি চিঠি। চিরকুট আর চিঠি গুলো এখনও ভেজা। আরাবী একটা চিরকুট মেলে ধরে। সেখানে লেখা,”ভালোবাসা সত্যি সুন্দর। এর অনুভূতিতে কোনো ত্রুটি নেই। কেবল আপনাকে ভালোবেসে ত্রুটিহীন অনুভূতিতে আমি আজ পরিপূর্ণ। ভালোবসি আপনাকে!”
ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি ফুটে উঠে আরাবীর। পরের চিরকুটে লেখা,”আপনাকে নিয়ে কত শত অনুভূতি আমার তা যদি জানতেন। ইশ! আর ভাবতে পারছি না।”
“মি.গম্ভীর ম্যান সব সময় এত গম্ভীর থাকেন কেনো? একটু হাসি খুশি তাকলে কি হয়? গোমড়ামুখ একটা।”
“শত চেষ্টা করেও আপনার থেকে দূরে থাকতে পারছি না আমি। কেনো? জানা নেই আমার।”
“আমার মন টাকে এভাবে জাদু না করলেও পারতেন।”
“ভালোবাসা বুঝি এমন বিষাদময় হয়? এত যন্ত্রণার হয়? তবুও বলবো আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
এমন শতশত অনুভূতি নিয়ে লেখা সব গুলো চিরকুট। লেপ্টে থাকা শুকনো হলদে রাঙ্গা কাগজটা হাতে তুলে নেয় আরাবী। চোখের সামনে মেলে ধরে চিঠিটা। আচমকা তার চোখ থেকে টপটপ করে জল গড়িয়ে পরে।
~চলবে……