#শ্রেয়সী
#পর্ব_১৮
#লেখমীতে_নাদিয়া_সিনহা
তীব্র আলোর ঝলক চোখ পরতেই চোখ বন্ধ হয়ে আসে। আস্তেধীরে চোখ খোলার প্রয়াস চালাচ্ছি। চোখের সম্মুখে সব কিছু কেমন ঝাপসা দেখাচ্ছে। বার বার চোখ বন্ধ করছি আর খুলছি। পিটপিট করে তাকিয়ে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করি। মস্তিষ্কে নাড়া দিয়ে উঠতেই কিয়ৎ পূর্বের সেই ঘটনা মনে পরে। কিয়ৎ পর আশেপাশে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই দেখি বাবা-মা, ভাবি, দাদাভাই আমার পাশে বসে আছে আর তনুফ ভাইয়া শান ভাইয়া দাঁড়িয়ে। আমার জ্ঞান ফেরা দেখে সবাই উত্তেজিত হয়ে আমার সম্মুখে খানিক ঝুঁকে পরে। সবার দৃষ্টিতে একটাই উৎসুকভাব আমি কেমন আছি? তাদের পানে তাকিয়ে আমার দৃষ্টি পানিতে ঝাপসা হয়ে উঠলো। চোখের কোনে জল চিকচিক করছে। বাবা আমার মাথায় হাত রেখে আদুরে কন্ঠে বলে,
-“কি হয়েছে আম্মু? নিজের যত্ন নেও না? দিন দিন না খেয়ে অনিয়ম করে এভাবে শরীরের এই অবস্থা করে ফেললে। বাবা কে কষ্ট দিতে খুব ভালো লাগে তাই না?”
বাবার কথায় আমার কন্ঠ ধরে আসে। কান্না দমানোর দরুন কন্ঠে কেমন বোধ হচ্ছে। কথা বলতে পারছি না। অবশ্য ইচ্ছেও নেই কথা বলার। কারণ বাবা আমার সাথে এমনটা না করলেও পারতো। অশ্রুসিক্ত নয়নে মা বাবার পানে তাকিয়ে বলে,
-“বলেছিলাম আমি! আমার মেয়ে কে আমার থেকে দূরে পাঠিও না। ভালো থাকবে না ও। দেখো কি হাল বানিয়ে ফিরেছে। মাথা ঘুরিয়ে পরে গেছিলো। যদি ও না ধরতো তাহলে কি থেকে কি হয়ে যেতো?”
তনুফ ভাইয়া বিরক্ত হয়ে বলে,
-“আহ্! মা দেখছো শ্রেয়ুর শরীরটা ভালো নেই। তার উপর কাঁদছে সে। তুমি এমনটা বললে ও আরও ভেঙে পরবে।”
-“হ্যাঁ হ্যাঁ তোরা সব আমাকেই চুপ করিয়ে রাখ।”
কথাটা বলেই মা উঠে চলে যায় ঘর থেকে। মায়ের পিছু পিছু ভাবিও চলে যায়। আমি সেদিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠি। বাবা অস্থীর হয়ে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর জিজ্ঞেস করছে,
-“কি হয়েছে আম্মু? বাবা কে বলবে না? বাবা তোমাকে দূরে পাঠিয়েছে বলে?”
আমি আর নিজে কে সংযত রাখতে না পেরে অস্পষ্ট স্বরে বাবা কে বলেই দেই,
-“দূরে পাঠিয়েছো বলে রাগ করিনি বাবা। কিন্তু তুমি তো আমাকে বোজা মনে করো।”
আমার কথায় বাবা বেশ চমকেছে তা তার মুখশ্রী দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আমার একবার আমার দিকে তো এবার ভাইয়াদের দিকে তাকাচ্ছেন। আমার কথা খানিক অস্পষ্ট থাকায় বাবা আমার দুগালে হাত রেখে পূর্বের ভঙ্গিতে বলে,
-“কি বলছো আম্মু? আমি বোধ হয় ভুল শুনেছি। তাই না বলো?”
আমি মাথা নাড়িয়ে না বলি। বাবার দুচোখ পানিতে টলমল করছে। টলমলে দৃষ্টিতে আমার পানে তাকিয়ে বলে,
-“বাবার রাজকন্যা তুমি। তোমাকে আমি বোঝা নয় আমার ধন মনে করি। তোমাকে কাছ ছাড়ার কথা ভাবনায় আসার আগেই আমি সেই ভাবনা চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলি।”
আমার কান্নার বেগ আরও বেড়ে গেলো। বাবা আমাকে বোঝানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। দাদাভাই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমার পানে। তনুফ আর শান ভাইয়াও বিষ্ময় নিয়ে দাঁড়িয়ে। বাবা আমাকে তার নানা কথা দিয়ে বোঝাতে চাইছে। কিন্তু আমি মানতে নারাজ। দাদাভাই আমার কাছে এসে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছে। দাদাভাই আমাকে ছেড়ে তার মুখোমুখি এনে জিজ্ঞেস করে,
-“কি হয়েছে বাচ্চা? কে কি বলেছে? শান বলেছে? শান তো সব সময় এমন বলে। শানের কথা বিশ্বাস করো না একদম।”
আমি উত্তেজিত হয়ে ঝাড়া মে’রে দাদাভাইয়ের হাত আমার থেকে দূরে সরিয়ে দেই। রাগের পরিমাণ এতটাই বেড়ে গেছিলো যে চিৎকার করে বলি,
-“আর কত ভুলভাল বোঝাবে? তোমরা যখন যা চেয়েছো তাই করেছি। কখনও কথার অবাধ্য হইনি। আর আজ তোমরা আমাকে বোজা মনে করছো। আমাকে না জানিয়ে আমার মত না নিয়ে তোমরা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেললে? কেনো করলে? আমিও তো কাউকে পছ………”
-“তোর বিয়ে মানে?”
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই দাদাভাই বলে উঠে। আমি দাদাভাইয়ের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে। অতঃপর বাবার দিকেও দৃষ্টি আবদ্ধ করতেই দেখি বাবার মুখশ্রীতেও একই বিষ্ময়তা। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে নিম্ন স্বরে জিজ্ঞেস করে,
-“তোমাকে বিয়ে দিচ্ছি কে বললো?”
-“বাড়ি আসার পর যখন সবাই কে জিজ্ঞেস করলাম বাড়িতে এত সাজ সজ্জা কেনো? তখন তনুফ ভাইয়া বললো আমার বিয়ে।”
আমি অবুঝের মতো তাকিয়ে প্রশ্নের উত্তরও দিয়ে দেই। বাবা, দাদাভাই তনুফ ভাইয়ার দিকে তাকাতেই ভাইয়া জোরপূর্বক হেসে বলে,
-“আরে আ…আ…আমি কি জানি? আমি হল রুমে আসছিলাম তখন শান ডেকে বললো শ্রেয়সী কে বলবে তার বিয়ে। আমি ভাবলাম হয়তো শ্রেয়ু সারা বাড়ি মাথায় নিয়ে ঝামেলা পাকাবে ব্যপারটাও বেশ মজার হবে তাই বলেছিলাম। আমি তো জানি না ওও সেন্সলেস হয়ে যাবে।”
তনুফ ভাইয়া আর এক মুহূর্ত দাঁড়ায় না কাজ আছে বলে বেরিয়ে পরে। শান ভাইয়া অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে তনুফ ভাইয়া যাওয়ার পেছনে। শান ভাইয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই গম্ভীর কণ্ঠে বাবা বলে,
-“ছোট বেলা থেকে দুষ্টমি করো। আমি কখনও কিছু বলিনি এই নিয়ে। কিন্তু আজ যেটা করলে তা ঠিক করোনি। পরবর্তীতে যেনো আমি তোমার এমন কান্ড না দেখি।”
শান ভাইয়া মাথা নেড়ে নিজের ঘরে চলে যায়। বাবা বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে আমার মাথায় হাত রেখে বলে,
-“শ্রেয়সী মানে কি জাানো? রাজকন্যা! আমি তোমাকে সেভাবেই রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কতটুকু সফল হতে পেরেছি তা সত্যি আমার জানা নেই। আমি কখনও তোমার খারাপ চাইনি। আমি কেনো পৃথিবীর কোনো বাবা তার সন্তানের খারাপ চায় না। আমার অনুরোধ তোমার কাছে কখনও বাবার প্রতি বিশ্বাস হারাবে না।”
বাবা চলে যায়। আমি শত সহস্র বার বলতে পারি বাবা চোখের পানি মুছতে মুছতে চলে গেছেন। বাবা যাওয়ার পর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে দাদাভাই কে। দাদাভাই আমাকে সযত্নে আগলে নেয় তার বাহু বন্ধনে৷ আমার কান্নার গতি দিগুণ বেরে গেলো যেনো। আজ অজান্তেই বাবার মনে অনেক বড় আঘাত দিয়ে ফেলেছি। কান্না মিশ্রিত স্বরে দাদাভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলি,
-“দাদাভাই আমি স্যরি। আমি সত্যি বুঝতে পারিনি তনুফ ভাইয়া আমার সাথে মজা করবে। কারণ ভাইয়া তো কখনও আমার সাথে ওমন মজা করে না তাই। আমি সত্যি বুঝিনি। বিশ্বাস করো।”
-“চুপ কর বাচ্চা। আমি জানি তুই কিছু করিসনি। আমি আমার শ্রেয়ু বাচ্চা কে চিনি। সে এমন কিছু করবে না যাতে সবাই কষ্ট পায়।”
আবারও শক্ত করে জড়িয়ে ধরি দাদাভাই কে। দাদাভাই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আমি দাদাভাইয়ের বুকে মাথার রেখে বাইরে কৃত্রিম আলোয় দৃষ্টি আবদ্ধ রেখে শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করি,
-“আচ্ছা দাদাভাই বাইরে এত আলো কেনো? এত সাজগোজ কেনো? কার বিয়ে?”
-“তনুফের!”
বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছি দাদাভাইয়ের পানে। বিষ্ময়তা কাটিয়ে উঠার আগেই জিজ্ঞেস করি,
-“সত্যি তনুফ ভাইয়ার বিয়ে?”
দাদাভাই মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। অজান্তে আমার মুখশ্রীতে উৎসুক আভার বিচরণ আরম্ভ হয়। ওষ্ঠদ্বয় প্রসারিত হচ্ছে বারংবার। বক্ষস্থল থেকে প্রশান্তির নিশ্বাস বেরিয়ে আসে। দাদাভাইয়ের সাথে কথা শুরু করার আগেই মা ঘরে এসে হানা দেয়। সাথে নিয়ে এসেছে এক প্লেট ভর্তি খাবার। ঘরে প্রবেশ করেই মা বলতে শুরু করে,
-“এই প্লেটের সব খাবার তোকে খেতে হবে।”
আমি অসহায় দৃষ্টিতে দাদাভাইয়ের দিকে তাকাই। দাদাভাইও আমার মতো অসহায় মুখ কতে বসে থাকে। মা আমাকে খাওয়াতে শুরু করে দেয়। ইচ্ছে মতো খাওয়াচ্ছে আর বলছে,
-“এবার বেশি করে খাইয়ে দিব যেনো কলেজে গিয়ে না খেলেও শরীর ঠিক থাকে। একদম মোটা বানিয়ে ছাড়ব হ্যাঁ!”
-“আম্মু প্লিজ মাফ চাই আর না।”
-“চুপচাপ খাওয়া শেষ কর।”
ভাবি এসে আমার পাশে বসে। ভাবির পেট আগের তুলনায় খানিক ফুলে উঠেছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার শরীরে ছোট একটা প্রান বেরে উঠছে। দাদাভাই আমাদের রেখে চলে যায়। আমি খাবার চিবোতে চিবোতে মা কে প্রশ্ন করি,
-“এত তাড়াতাড়ি ভাইয়া বিয়ে ঠিক করলে যে। আমাকে আগে বলতে আমি ঢাকা থেকে শপিং করে নিয়ে আসতাম সব কিছু।”
মা মুখ বাঁকিয়ে বলে,
-“পন্ডিত! সব কিছু তোর ভাবি করে নিয়েছে।”
-“ওহ আচ্ছা। তা ভাবি আমার জন্য কি কিনেছো?”
দুই গালে হাত রেখে ভাবির সম্মুখে ঝুকে প্রশ্ন করি। ভাবি আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে,
-“যা যা আমার শ্রেয়ু পছন্দের সব নিয়েছি।”
আমি খুশীতে ভাবিকে জড়িয়ে ধরি ওমনি ভাবি মৃদু চিৎকার করে উঠে। আমি সাথে সাথে ভাবিকে ছেড়ে দূরে সরে আসি৷ মা আমার পিঠে জোরে চ’ড় মেরে ভাবিকে জিজ্ঞেস করছে ঠিক আছে কি না। আমিও স্যরি বলছি। ভাবি স্বাভাবিক হয়ে বলে ঠিক আছে। স্বস্তির নিশ্বাস ত্যাগ করে মা। কথা ঘুরারনের জন্য ভাবি বলে,
-“শ্রেয়ু তুই জানিস কনে কে?”
-“এই দেখেলে আমি এখনও জিজ্ঞেসই করিনি কনে কে? বলো না গো কে? কে সেই সৌভাগ্যবতী যে আমার ভাইয়ের বউ হয়ে আসছে।”
ভাবি জোরে জোরে হাসছে। মাও দেখলাম ঠোঁট টিপে হাসছে। আমি ভ্রু কুঁচকে বার বার প্রশ্ন করছি। ভাবি হাসি থামিয়ে বলে,
-“তা তোমার ভাইয়ের বিয়ে রোদ্দু কে দাওয়াত দিবে না?”
-“তা আর বলতে আমার এক মাত্র বেস্টফ্রেন্ড বলে কথা। ওকে ছাড়া বিয়েতে মজাই হবে না।”
মা এবার উচ্চস্বরে হেসে বলে,
-“রোদ্দু কে কল দিয়ে দাওয়াত দে।”
-“হ্যাঁ হ্যাঁ! এখনি দিচ্ছি।”
আমি দ্রুত রোদ্দু কে কল দেই। দুই তিনবার কল দেওয়ার পর কল রিসিভ করে রোদ্দু। রোদ্দু বলার পূর্বে আমি উত্তেজিত হয়ে বলি,
-“রোদ্দু জানিস তনুফ ভাইয়া বিয়ে৷ তোকে আসতেই হবে। তুই এক কাজ কর তুই না এখনই চলে আয়। আর শোন ড্রেস আনতে হবে না আমরা নতুন ড্রেস কিনে আনব।”
ওপাশ থেকে রোদ্দু আমাকে ধমক দিয়ে বলে,
-“ফা’জি’ল, ব’দের হাড্ডি সামনে আয় তোকে এক চ’ড়ে জামাইর নাম ভুলিয়ে দিব।”
আমি হতভম্ব হয়ে মায়ের দিকে তাকাই। মা আমার দিকে তাকিয়েই হাসছে। আমি নিজেকে যথা সম্ভব তটস্থ রেখে বলি,
-“কি বলছিস এসব? দেখ আমি আগে জানতাম না ভাইয়ার বিয়ে তাই তোকেও বলতে পারিনি। এখন তো জেনেছি। তুই এখন চলে আয়। না থাক তোকে আমি গিয়ে নিয়ে আসব।”
এবারও রোদ্দু রেগেমেগে বলে,
-“তোকে আমি সামনে পেলে সত্যি খু’ন করতাম। নিজের গাধারাম ভাই কে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে বলছিস বিয়ের দাওয়াত খেতে। ফোন রাখ বে’য়া’দ’ব মহিলা। আর কল দিবি তো তোকে আমি খু’ন করব।”
বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছি ফোনে স্ক্রিনে। কি বললো রোদ্দু। আমাকে বকলো কেনো? কিছু কি খারাপ বলেছি। আর এদিকে আমার ভাবি হাসতে হাসতে দম শেষ করে ফেলছে। আমি ভাবিকেও জিজ্ঞেস করছি হাসছে কেনো? সে আমার প্রশ্নে বলে দেয়,
-“রোদ্দু কি বললো তা আগে বল।”
-“কি জানি কি আবোলতাবোল বকলো কতক্ষণ। আমাকে বকা দিয়ে ধমকে ফোন রেখে দিলো।”
ভাবি হাসতে হাসতে মায়ের উপর ঢলে পরছে যেনো। মা ভাবিকে সামলে আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
-“রোদ্দুরও বিয়ে তাই বোধ হয় আসতে পারবে না।”
এবার তো আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরার উপক্রম। আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করি,
-“রোদ্দু বিয়ে? কার সাথে?”
মা আর ভাবি ঘর থেকে চলে যেতে যেতে বলে,
-“তোর ভাই তনুফের সাথে তোর বেস্টফ্রেন্ড রোদ্দু দ্যা রৌদ্রসীর শুভ বিবাহ।”
কথাটা কর্ণ গহ্বরে প্রবেশ করতেই আমি বরফের ন্যায় জমে যাই। আমার বেস্টফ্রেন্ড আর আমার ভাইয়ের বিয়ে? কিভাবে সম্ভব? মাথায় আপাতত কোনো কথাই ঢুকছে না। খুশি হবো নাকি হতভম্ব হয়ে পুরো বিয়ে দেখবো। যে রোদ্দু কে ভাইয়া কথায় কথায় ধমকে উঠে সেই রোদ্দু কে ভাইয়া বিয়ে করছে। তা তো কল্পনাতীত। এবার রোদ্দুর কি হবে? সবার সাথে ঝগড়া করতে পারলেও সবাইকে কথা শোনাতে পারলেও ভাইয়ার সামনে তো কোনো কথা বলতে পারে না। ভাইয়া ধমকে উঠে ওকে। রোদ্দুর জন্য শত সহস্রাধিক বার দোয়া করছি। মেয়েটা যেনো সুখে থাকে ভালো থাকে। কিন্তু আমার মনে বারংবার একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তা বিয়েটা কিভাবে ঠিক হলো?
আমার ভাবনার মাঝেই কেউ আমার ঘরে দরজায় ঠকঠক করে শব্দ করে উঠে। আমি সেদিকে তাকাতেই দেখি সুঠাম দেহি পূর্ণাঙ্গ পুরুষ দাঁড়িয়ে। গাল ভর্তি চাপ দাঁড়ি। চোখের নীচটা হাল্কা রক্তবর্ণ। চোখের দিকে তাকালে মনে হয় যেনো চোখ দিয়েই সব কিছু ধ্বং’স করে দিবে। তাকে দেখে আমার কপালে তিনটা ভাজ পরে যায়। কে এই লোক? আর আমার ঘরেই বা কি করছে? তার উপস্তিতিতে আমার কোনো ভাবান্তর না দেখে আগন্তুক গলা পরিষ্কার করে নিজেই বলে,
-“আপনার খোঁজ নিতে এলাম। কেমন ফিল করছেন এখন?”
তার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে আমার জানা প্রয়োজন সে কে? তাই তার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উল্টো তাকে প্রশ্ন করি,
-“কে আপনি? আর আমার ঘরেই বা কি করছেন?”
আগন্তুক ভ্রু কুঁচকে ছোট ছোট চোখ করে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে,
-“হাই! আ’ম ওয়ালিদ তাজওয়ার। ইউ কে’ন কল মি ওয়ালিদ।”
~চলবে…….