শ্রাবন সন্ধ্যা পর্ব:-১৭ ও ১৮
#আমিনা আফরোজ
সেদিনের পর থেকে প্রায় কেটে গেছে বেশ কিছু দিন।নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ভেলায় চড়ে প্রকৃতিও বদলিয়েছে নিজস্ব রূপ। শরৎকে বিদায় জানিয়ে আগমন ঘটেছে হেমন্তের। প্রকৃতির রং বদলায় তার নিজস্ব নিয়মেই। প্রকৃতির পরতে পরতে কত যে বিচিত্র রঙ মিশে আছে তা ভাবনার কল্পনাতীত।বারবার প্রকৃতি তাই বিশ্ব চরাচরে এক রহস্যের নাম হয়ে রয়েছে।
হেমন্ত ঋতুতে প্রকৃতি ও মানুষের রূপ বদল বড় অপূর্ব। হেমন্ত ঋতুতে দেখা যায় দিগন্তবিস্তৃত মাঠে কেবল হলুদ রঙের ধান আর ধান। দলে দলে মানুষ সেসব ধান কাটে,আটি বাঁধে আর সেসব ধানের আঁটি বাগের দু’পাশে দাঁড়িপাল্লার মতো ঝুলিয়ে বাগ কাধে বাড়ি ফেরে। কোথাও বা সেসব ধানের আঁটিবোঝাই করা গরুর গাড়ি মেঠো পথে ক্যাচর ক্যাচর শব্দ তুলে গেহস্তের বাড়ি বা ধানখোলার পথে চলে।
ভোরে আজানের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেছে সন্ধ্যার।চোখ মেলে ওঠে বসে ও।এই সময় রাতের শেষ প্রহরে একটু ঠান্ডা লাগে সন্ধ্যার।পাশে ঘুমিয়ে থাকা রোদকে ডেকে পাতলা চাদর গায়ে দিয়ে ওযু করতে চলে যায় ও।আজ সন্ধ্যা ওর জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছে।আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।আজকেই সন্ধ্যা আর শ্রাবণের বিয়ে। যদিও বিয়েটা ঘরোয়ভাবেই হচ্ছে।ওযু করে এসে নামাজ আদায় করে নেয় ও। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে নতুন জীবনের জন্য দোয়াও করে । তারপর চলে যায় বারান্দার দিকে।আপাতত কিছুক্ষণ প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকবে ও।
সময় তখন সকাল সাতটা।বিয়ে উপলক্ষে রশিদ সাহেবের বাড়িতে তখন লোক সমাগমের উপস্থিতি বাড়ছে।বিয়েটা ঘরোয়াভাবে হলেও কাছে-পিঠর বেশ কিছু আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দিয়েছিলেন তিনি।তাদের কোলাহলের শব্দেই মুখরিত হয়ে উঠেছে রশিদ সাহেবের নির্জন বাড়িটি। এদিকে মিসেস রাবেয়া বেগম আজ বোধ হয় একটু বেশিই ব্যস্ত ।একা হাতেই সব দিক সামলাচ্ছেন তিনি। একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা। ঘরোয়াভাবে বিয়ের কথা হলেও কোন কিছুর কমতি রাখতে চান না তিনি।
শ্রাবণের বিয়ে উপলক্ষে গ্রাম থেকে ওর ফুপু মনোয়ারা বেগম এসেছেন শ্রাবনদের বাড়িতে। মনোয়ারা বেগম বেশ গম্ভীর মানুষ।ওনার স্বামী গত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে।সন্ধ্যাকে ওনার মোটেও পছন্দ নয়।এর কারন ও অবশ্য আছে।ওনার একমাত্র মেয়ে তুলিকে ওনি শ্রাবনের সাথে বিয়ে দিবেন বলে ভেবেছিলেন কিন্তু ওনার এই আশায় পানি ঢেলে দিলেন রশিদ সাহেব। এ নিয়ে মনে মনে রশিদ সাহেবের প্রতি রেগে আছেন তিনি।ওনার মতে সন্ধ্যা আহামরি রূপবতি না তবুও সন্ধ্যার প্রতি রশিদ সাহেবের এমন আহ্লাদ ওনার কাছে বিরক্তিকর লাগছে।তবে যে করেই হোক তুলিকে তিনি শ্রাবনের বউ করবেনই করবেন।প্রয়োজন পড়লে ঐ মেয়েকে ওনি শ্রাবনের জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দিবেন। এজন্য শুধু মুক্ষম সময়ের অপেক্ষায় আছেন ওনি।
সকাল দশটায় শ্রাবণকে গায়ে হলুদের জন্য ডাকতে এলো রোদ। সকাল থেকে ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে বেশ ব্যস্ত ও।কাজ থেকে কোন ক্রমেই ফুসরত পাচ্ছে না ।এদিক-সেদিক তদারকি করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছে রোদ।তাই শ্রাবণের ঘরে এসে ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়ল ও। এতক্ষণে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল রোদ। এদিকে শ্রাবণ রোদকে এভাবে শুয়ে পড়তে দেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করল,
–“কিরে এভাবে শুয়ে পড়লি কেন?”
রোদ বিরক্তি মাখা মুখ নিয়ে বলল,
–“তোমার বিয়েতে খাটতে খাটতে আমি শেষ, তাই বিশ্রাম নিচ্ছি।”
–“তাই বলে এভাবে ধপাস করে শুয়ে পড়বি? তোর মত আটার বস্তার ভারে আমার খাটটা যদি ভেঙে যেতো তখন কি হতো বল?”
রোদ ভাইয়ের এমন কথা শুনে চোখ ছোট ছোট করে বলল,
–“আমার থেকে তোমার কাছে তোমার বিছানাই বড় হয়ে গেলো ভাইয়া?”
শ্রাবণ ভাবলেশহীনভাবে বলল,
–“অবশ্যই।”
–“আমি যদি কোনদিন সুযোগ পাই ভাইয়া তবে এর শোধ আমি তুলবই ।”
–“সে না হয় পরে দেখা যাবে।তার আগে বল তুই আমার ঘরে কি করছিস?”
–“তোমাকে গায়ে হলুদের জন্য ডাকতে এসেছিলাম।তোমার পর তো আবার ভাবির গায়ে হলুদ হবে।সময় তো খুব কম। তাড়াতাড়ি চলো।”
–“হুম চল তবে।”
যথারিতি সব নিয়মকানুন মেনেই গায়ে হলুদের পর্ব শেষ হয়ে গেল ওদের।গায়ে হলুদ শেষ করে সন্ধ্যাকে আবারো ওর ঘরে নিয়ে এলো রোদ।এখন সন্ধ্যাকে কনে সাজানো হবে।সন্ধ্যার পাশেই বসে আছে রোদ।তবে রোদ ছাড়াও আরো অনেকে আছে এ ঘরে।সবাই যখন সন্ধ্যার সাথে খোশগল্পে ব্যস্ত ঠিক তখনি দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো রোদের সমবয়সী একটি মেয়ে। লম্বায় রোদের মতো হলেও সৌন্দর্যের দিক থেকে রোদের থেকে এগিয়ে। কেমন যেন পুতুলের মতো লাগে এ মেয়েটিকে।মেয়েটি গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এলো সন্ধ্যাদের দিকে।মেয়েটিকে এগিয়ে আসতে দেখে রোদ বলল,
–“ও আমার মনোয়ারা ফুপির মেয়ে তুলি।আমারা একই ক্লাসে পড়ি।”
রোদের কথা বলা শেষ হলে সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে তুলি নিজেই বলে ওঠল,
–“তুমিই বুঝি আমাদের সন্ধ্যা ভাবি?”
রোদের মুখে গত একমাস যাবত ভাবি ডাক শুনে অভ্যস্ত হয়ে গেছে সন্ধ্যা তবে অপরিচিত কারো মুখে ভাবি ডাক শুনলে এখনো বেশ লজ্জা পায় ও। তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বলল,
–“হুম।”
–“ভাবি তুমি কি আমাকে দেখে লজ্জা পাচ্ছ নাকি ভাইয়ার কথা ভেবে লজ্জা পাচ্ছ বলো তো?”
তুলির এমন কথা শুনে আরেক দফা লজ্জা পেল সন্ধ্যা। এদিকে তুলির প্রশ্নের জবাবে রোদ বলল,
–“বিয়ের সময় এরকম আধ একটু লজ্জা না পেলে চলে নাকি”
রোদের কথা শুনে হাসির রোল পড়ে গেল ওদের মাঝে।এরি মধ্যে প্রিয়ন্তি গেয়ে ওঠলো,
–“এখন তো সময় লজ্জা পাওয়ার
এখন তো সময় তার কথা ভাবার।”
প্রিয়ন্তীর গান শুনে আবারো আরেক দফা হেসে উঠল সবাই। প্রিয়ন্তী রোদের বেস্ট ফ্রেন্ড। রোদের মতোই বেশ মিশুক। গানের গলাটাও বেশ ভালো ওর।গল্পের মাঝেই পার্লার থেকে লোক আসলো সন্ধ্যাকে সাজাতে। সন্ধ্যাকে কিভাবে সাজাবে তা ওদের বলে দিয়েই ওই ঘর থেকে বের হলো সবাই।নিজেরাও এই সুযোগে সাজতে গেল।
অন্যদিকে শ্রাবনের বন্ধুরা মিলে শ্রাবনকে তৈরি করছে সাথে অনেক ঠাট্টাও করছে শ্রাবনের সাথে।তবে শ্রাবণ ও কম যায় না। শ্রাবণ ও ওদের সাথে মেতে উঠেছে।তবে বন্ধুদের অনেক কথাই আধ -একটু লজ্জা পাচ্ছে নিজেও। গোন্ডেন কালারের শেরওয়ানি আর লাল রঙের পাগড়ি পড়ে বর বেশে এগিয়ে গেল ড্রয়িং রুমের দিকে। শ্রাবণের বন্ধু রোহান বলল,
–“বন্ধু তোর আর গাড়ি নিয়ে বিয়ে করতে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হইলো না তুই বরং পায়ে হেঁটেই বিয়ে কর বুঝলি। এটাও কিন্তু আলাদা রকমের অভিজ্ঞতা।”
রোহানের কথা শুনে সৌরভ হাসতে হাসতে বলল,
–” হ বন্ধু এইবার পায়ে হেঁটে বিয়ে করতে চল পরের বার না হয় গাড়ি নিয়ে যাস।”
বন্ধুদের কথা শুনে শ্রাবণ বলল,
–” এখন দাঁত কেলাচ্ছিস তো তোদের বেলায় দেখিস কি হয়।”
–“আরে রেগে যাচ্ছিস কেনো?”
–“তো কি করব শুনি?”
–” আমাদের কথা শুনবি আর কি করবি বল।”
–“চুপ থাক তোরা।”
–“ঠিক আছে করলাম চুপ।”
শ্রাবণ ওদের ড্রয়িং রুমে এসে দেখল কাজি ততক্ষণে এসে গেছে সেখানে। সোফায় বসে কাজিকে নাম, ঠিকানা বলতে লাগল ও।লেখার কাজ শেষ হতেই সন্ধ্যার ডাক পড়লো সেখানে। রশিদ সাহেব রোদকে ডেকে বললেন,
–“যাও সন্ধ্যাকে ডেকে নিয়ে এসো।”
রোদ ওর বাবার কথা শুনে সন্ধ্যার ঘরের দিকে চলে গেল।
চলবে
#পর্ব:- ১৮
সন্ধ্যাকে সাজানো ততক্ষণে শেষ হয়েছে।গায়ে লাল রঙের কাজ করা ভারি শাড়ি।তার ওপর গায়ে জরিয়ে দিয়েছে অনেক গহনা। মুখে হালকা মেকাপের প্রলেপ।বধু বেশে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে। ভারি শাড়ি আর গহনায় বেশ অস্বস্তি লাগছে সন্ধ্যায়। তবুও চুপচাপ বসে আছে ও। নতুন বউদের যে বেশি কথা বলতে নেই।
সন্ধ্যা সাজ দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রোদ।রোদ যে রকম ভেবেছিল তার থেকে দ্বিগুণ বেশি সুন্দর লাগছে সন্ধ্যাকে। রোদ সন্ধ্যাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
–“আজ তো ভাইয়া তোমার দিক থেকে চোখ সরাতেই পারবে না ।”
–” যা কি সব বলো তুমি।তবে তোমাকেও কিন্তু দারুণ লাগছে।”
–“তোমার থেকে কম।”
–“আহারে , কে বলেছে ? তোমাকেই বেশি সুন্দর লাগছে।”
এমন সময় প্রিয়ন্তি রোদকে তাড়া দিয়ে বলল,
–“এই গল্প পড়ে করিস এখন তাড়াতাড়ি চল। আঙ্কেল ডাকছে।”
–“চলো ভাবি তোমার জন্য তোমার বরটা সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে।এখন না গেলে হয়ত অঙ্গানই হয়ে যাবে।”
রোদের কথা শুনে প্রিয়ন্তি আবারো গেয়ে ওঠলো,
–“আমি জ্ঞান হারাবো, মরেই যাব
বাঁচাতে পারবে না কেউ”
রোদ আর প্রিয়ন্তীর এমন কান্ডে সন্ধ্যার মুখে আবারো ফুটে উঠল লজ্জার আভা। নতমুখে নিচের দিকে তাকিয়ে রইল ও। সন্ধ্যাকে লজ্জা পেতে দেখে রোদ বলল,
–“থাক তোমাকে আর লজ্জা পেতে হবে না। এখন চলো নিচে যাওয়া যাক।”
বিয়ের কনেকে নিয়ে ড্রয়িং রুমের হাজির হল ওরা রুমের সকলেই সে দিকে তাকিয়ে রইল। বিয়ে উপলক্ষে রোদ, প্রিয়ন্তী আর তুলি তিনজনেই শাড়ি পরেছে। শাড়ি পড়াতে ওদেরকে একটু বড়ই লাগছে। রোহান আর সৌরভ তো প্রিয়ন্তী আর তুলির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। শ্রাবণের বন্ধু হওয়ার সুবাদে রোদের সাথে আগে থেকেই পরিচয় আছে ওদের তবে প্রিয়ন্তী আর তুলিকে আজ প্রথম দেখছি ওরা।
শ্রাবন ওদের বন্ধুদের অনুসরণ করে সামনের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে রইল।সন্ধ্যার এমন সাজ দেখে সেদিকেই হা করে তাকিয়ে রইল ও।এমনিতেই সন্ধ্যার দিকে তাকালে নিজের মধ্যে থাকে না ও তার ওপর এমন রূপে আরো বেশি ঘায়েল হয়ে গেছে ও। বিড়বিড় করে বলল,
–“এ মেয়ে আজ আমাকে পাগল করে ছাড়বে।কি দরকার ছিল এমন করে সাজার।সবাই কেমন করে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে সেদিকে কোন খেয়াল আছে মহারানীর?”
রোদ সন্ধ্যাকে শ্রাবনের পাশে বসিয়ে দিয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে রইল।যথারিতি বিয়ের কাজ সম্পন্ন হতে হতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল।আজ থেকে এক সুতোয় বাঁধা পড়ল সন্ধ্যা আর শ্রাবণ।
বিয়ের বাদ বাকি নিয়মনীতি শেষ করতে করতে রাত দশটা বেজে গেল। এতক্ষণ ধরে বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেল শ্রাবণ।অতঃপর সন্ধ্যাকে নিয়ে যাওয়া হলো শ্রাবণের ঘরে।সারাদিনের ক্লান্তিতে শরীর অবশ হয়ে আসছে সন্ধ্যার।তার ওপর সারাদিন প্রায় না খাওয়া।খাওয়া বলতে সেই সকালে একটু খেয়েছিল ও।তারপর আর খাবারের সাথে সাক্ষাৎ হয় নি ও।এখন এই ভারী শাড়ি আর গড়নার ভাড়ে আরো বেশি খারাপ লাগছে ওর।রোদ সন্ধ্যাকে বলল,
–“তুমি একটু বিশ্রাম করো ভাবি।”
সন্ধ্যা তৎক্ষণাৎ সম্মতিসূচক মাথা নাড়ালো ও।আসলেই একটু বিশ্রাম প্রয়োজন ওর।তাই ফুল দিয়ে সাজানো বিছানায় বসে পড়ল ও।শ্রাবন ওর ঘরে আসল আরো কিছুক্ষণ পরে।তবে ঘরের দরজা ভেতর থেকে লাগানো দেখে ভ্রু কুঁচকে রোহান কে বলল,
–“ব্যপারটা কি বল তো।”
সৌরভ ও রোহান দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে বলল,
–“আমরাও বুঝতে পারছি না তো।”
শ্রাবণ দরজায় টোকা দিলে রোদ দরজা খুলে দাঁড়ালো।রোদের সাথে অবশ্য আরো দু-তিনজন কে দেখতে পেল শ্রাবণ। ওদের দেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করল,
–“তোরা এখানে কি করছিস?”
–“তেমন কিছু না ভাইয়া।তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।”
–“আমি তো এখন এসেছি , এখন তোরা যেতে পারিস।”
–“আরে দাঁড়াও ,যাব তো । তবে তার আগে টাকা দাও না হলে ভাবিকে আজ আর পাবে না।”
রোদের কথা শুনে সৌরভ বলল,
–“তোমরা টাকা নিবে কেন রোদ?টাকার আসল হকদার তো আমরা।কতো কষ্ট করে ঘর সাজালাম আমরা আর টাকা চাইছো তোমরা এতো দেখি চোরের ওপর বাটপারি করা হয়ে গেল।”
–“আর আমরা যে ভাবিকে এ ঘরে নিয়ে আসলাম এতে বুঝি কষ্ট হয় নি আমাদের?”
–“আরে ঐখান থেকে এখানে এইটুকু আস্তে কি এমন কষ্ট হয়েছে তোমাদের শুনি?”
এবার রোদকে থামিয়ে দিয়ে প্রিয়ন্তি বলে উঠলো,
–“এত কিছু বলতে পারবো না ।আমরা আমাদের টাকা চাই ব্যস।টাকা না দিলে সারারাত দরজার বাহিরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।”
–“কত টাকা লাগবে তোমাদের?”
শ্রাবণের প্রশ্ন শুনে রোদ হেসে বলল,
–“তিন হাজার হলেই হবে ভাইয়া।”
রোহান বলল,
–“এত টাকা দিয়ে কি করবা তোমরা।এ ধরো পাঁচশ টাকা এখন বের হও ঘর থেকে।পিচ্চি মানুষ তোমরা পাঁচশ টাকাতেই হয়ে যাবে তোমাদের।”
রোদরা রোহানের টাকা না নিয়ে জেদ ধরে দাঁড়িয়ে রইল দরজার ওপাশে।শেষ অব্দি আর কোন উপায় না পেয়ে রোদদের নির্ধারিত টাকা দিয়ে বিদায় করল শ্রাবণ।এ নিয়ে অবশ্য ওদের সঙ্গে বেশ কথা কাটাকাটি হয়েছে সৌরভদের।
সকলে বিদায় দিয়ে ঘরে ঢুকল শ্রাবণ।ঘর ফুলের কড়া গন্ধে পূর্ণ। মোমবাতির আলো দিয়ে ঘর সাজানো হয়েছে।সেই মৃদু আলোতেই সন্ধ্যাকে দেখতে পেল ও। বিছানায় চুপটি করে বসে আছে ।সেদিকেই ধীর পায়ে এগিয়ে গেল শ্রাবণ।
শ্রাবণকে দেখে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো সন্ধ্যা।তারপর শ্রাবণের দাদীরর কথা মতো শ্রাবণকে সালাম করতে গেলে শ্রাবন বাঁধা দেয় ওকে।নরম স্বরে বলল,
–” এই ভারি শাড়ি আর গহনা ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে এসো।”
সন্ধ্যা শ্রাবণের কথা মতো ব্যাগ থেকে আরেকটি লাল রঙের শাড়ি নিয়ে চলে গেল ফ্রেশ হতে।এদিকে শ্রাবন ও ততক্ষনে অন্য একটি পাঞ্জাবি পড়ে সন্ধ্যার জন্য খাবার আনতে গেল।
চলবে
(কেমন হয়েছে জানাবেন আর ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আশা করি আজকের পর্বটা ভালো লাগবে আপনাদের।যারা নীরব পাঠক আছেন তারা দয়া করে সাড়া দিবেন। আপনাদের সাড়া পেলে লেখার আগ্রহ বেড়ে যায়। ভালো থাকবেন সবাই।হ্যাপি রিডিং ??। আগামী পর্বে কিন্তু ধামাকা হবে।)