শ্যামাঙ্গণা-১২
————-
কলেজে এসে এরকম একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে ভাবতে পারেনি ঝুমুর। এই যাবৎকালে এমন অদ্ভুত ভুতুড়ে কান্ড কখনও ঘটেনি তার সঙ্গে। সে আশপাশে নজর বুলিয়ে দেখলো যারা উপস্থিত তারা সকলেই হা করে তাকিয়ে আছে। ঝুমুর নিজেও এরকম একটা ঘটনা দেখলে হুশ হারাতো।
ঝুমুর একবার নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেকে পরখ করে নিলো। একি আসলেই সে ? নাহলে তার মতো শ্যামলা দেহী একটা মেয়েকে কোনো ছেলে কি করে প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারে ? চূড়ান্ত বিস্ময়ের রেশ কাটিয়ে নিজেকে সামলে নিলো ঝুমুর। এতক্ষণে সামনে নিল ডাউন করে বসে থাকা ছেলেটার চোখে চোখ রাখলো। অত্যন্ত গম্ভীর গলায় বলল ‘ আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে জনাব। আপনি যাকে প্রস্তাব দিতে চাচ্ছেন আমি সে নই। প্রথমবার তাই কিছু মনে করিনি কিন্তু ভবিষ্যতে এরকম কিছু করার আগে দেখে শুনে নিবেন। ‘
কথাগুলো এক নিশ্বাসে বলে ক্লাসের দিকে পা বাড়ালো। সে বর্তমানে কলেজের চত্বরে দাড়িয়ে আছে। রোজ এই চত্বর পেরিয়েই সে ক্লাসে ঢুকে। কোনওদিন এরকম অস্বাভাবিক কিছু হয়না। কিন্তু আজ যে কলেজ ঢুকতেই এরকম অসস্তিকর ঘটনার সাক্ষী হবে কে জানত ? নিজেকে সামলে নিয়ে ঝুমুর ক্লাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু তখনই প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া ছেলেটির গলা পেলো।
‘ আমার কোনো ভুল হয়নি। আমি জানি আমি কাকে প্রস্তাব দিয়েছি। আমার যাকে দেওয়ার ছিল সে তুমিই। ‘
এবার একটু বিরক্তই হলো ঝুমুর। পিছন ফিরে এখন ও সেই হাঁটু মুড়ে বসে থাকা ছেলেটাকে দেখলো। পরনে আউট ড্রেস। তারমানে ছেলেটা অনার্সের স্টুডেন্ট। কিন্তু অনার্সের ক্লাস তো এখন হয়না। সেটা তো হয় ইন্টার কলেজ টাইমের পরে। তাহলে ছেলেটা ওকে এমন ধারার প্রস্তাব দিচ্ছে কেন ?
ব্যাপারটা ভালো করে বোঝার জন্য ছেলেটাকে পূর্ণ দৃষ্টিতে দেখলো ঝুমুর। ছেলেটার পরনে কালো রংয়ের প্লেইন শার্ট আর ব্লু জিন্স। কাধে কফি কালারের ব্যাগ আর বাম হাতে কালো পাথর দেওয়া জেন্টস ব্রেসলেট। চুলগুলো পরিপাটি করে আঁচড়ানো আর চেহারায়ও খানিকটা স্বভাবসুলভ গম্ভীর ভঙ্গিমা। সুরত আহামরি কিছু নয়। আর পাঁচজন সাধারণ মানুষদের মতোই। দেখে বখাটে কিংবা নেতা গোছের মানুষও মনে হচ্ছে না। তাহলে এই ছেলে ওর পিছনে পড়েছে কেন ?
অচেনা এই ছেলের এমন করার কারণ খুঁজে না পেয়ে চিরচেনা নরম, কোমলমতি ঝুমুর রাগে,দুঃখে চোয়াল শক্ত করে ফেললো। ঠোঁটের কোণে ক্রুর হাসি ফুটিয়ে তুলে বললো ‘ আপনি তাহলে আমাকেই প্রস্তাব দিচ্ছেন তাইতো ? তা আমার কি দেখে আমাকে মনে ধরলো ? মেয়ে দেখলেই মন গলে যায় নাকি ? ‘
ঝুমুরের কথায় তার পরিচিত ক্লাসমেট যারা উপস্থিত ছিল তারা সকলেই হতবাক। ঝুমুরকে এরকম ভাষার ব্যবহার করতে কখনোই দেখেনি তারা। এমনকি ঝুমুরের সামনে দাড়িয়ে থাকা জাকিরও অবাক। যেই মেয়েটাকে সে রোজ নিয়ম করে দ্বিপ্রহরে দেখে আজ তার সঙ্গে কোনো মিলই খুঁজে পাচ্ছে না এই ঝুমুরের। কোথায় সেই হাস্যরত, কোমলমতি,আপন খেয়ালে ব্যস্ত থাকা ঝুমুর আর কোথায় এই আত্ম গরিমায় চেয়ে থাকা ঝুমুর।
তবে জাকির নিজেকে সামলে নিলো। স্বাভাবিক গলায় বললো ‘ আর পাঁচটা ছেলে যা দেখে প্রেমে পড়ে আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। আমি তোমার মায়ায় পড়েছি। প্রবাদ শুনেছ তো ? পুরুষ মানুষ রুপে না মায়ায় আটকায়। ‘
জাকিরের কথায় ঝুমুরের হাসিতে চিড় ধরলো না। বরং সময়ের সাথে সাথে তা আরও বিস্তৃত হলো। ঝুমুর বললো ‘ আপনি আমার মায়ায় পড়েছেন ? কথাটা বিশ্বাস হলো না। যেখানে আর পাঁচজন ছেলে মানুষ এমনকী আমার ক্লাসমেটরাও আমার গায়ের রঙের জন্য আমাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে সেখানে বাইরের একজন মানুষ হুট করে আমার মায়ায় পড়বে সেটা আদৌ বিশ্বাস যোগ্য তো জনাব ? মায়ায় পড়ার হলে আমার ক্লাসমেটরাই পড়তো। ‘
আত্ম বিশ্বাসী ঝুমুরের কথা শুনে জাকির হোচট খেলো। এতটা অহংকারী এবং দেমাগী মেয়ে সে কখনও দেখেনি। কিন্তু ঝুমুরের এই দেমাগই তার ভালো লাগার অন্যতম কারণ। প্রচন্ড আত্ম বিশ্বাসে ঝুমুরের চোখে মুখে যেই দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে তা দেখে যেন জাকির আরও খানিকটা বিবশ হলো। নিজেকে সামলে বললো ‘ আর পাঁচজন ছেলে এবং আমার মধ্যে তফাৎ আছে। আমি, জাকারিয়া জাকির, আমাকে তুমি বাকিদের সাথে তুলনা করলে সেটা তোমার সবথেকে বড় ভুল হবে। আমাকে বাকিদের মতো ভেবো না। ‘
ঝুমুর রাগে ফোঁস করে উঠলো। এই ছেলেকে যতই কথার জালে পেঁচাতে চাচ্ছে ততই নিজে পেঁচিয়ে যাচ্ছে। তার এখন ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙছে। ঝুমুর গম্ভীর মুখে বললো ‘ আপনি হয়তো খুবই আনপ্রেডিকটেবল মানুষ কিন্তু এই ধরনের উইয়ার্ড মানুষজন আমি পছন্দ করিনা। আমি সাধারন মানুষ, সমাজে বাস করি কাজেই আমিও বাকিদের মতো সমাজের নিয়ম কানুন মেনে চলি। আমার লাইফ পার্টনার বা লাভ পার্টনার যাই বলুন না কেন, সে একদমই সাধারণ মানুষ হবে। আপনার মতো এক্সট্রাওর্ডিনারি মানুষজন আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য নয়। ইউ ডিজার্ভস সামওয়ান বেটার। ‘
কথাগুলো বলে ক্লাসে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে গেলো ঝুমুর। আর জাকির!! সে তো হতবাক হয়ে দাড়িয়ে রইলো ঝুমুরের ধুলো উড়িয়ে চলে যাওয়া পথে। একটা কথাই মনে হলো তার। ঝুমুর কি ইন্ডিরেক্টলি তাকে রিজেক্ট করলো ? যদিও ঘটনাটা খুবই হৃদয় বিদারক কারণ আগে কখনো এরকম প্রত্যাখ্যানের অভিজ্ঞতা তার হয়নি কারণ সে বরাবরই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকা মানুষ। প্রেম,ভালোবাসা সামাজিক এসব ব্যাপার স্যাপার সে আমলে নেয় না।
তবে এই প্রথম কোনো এক অজানা, অচেনা মেয়ের মায়ায় পড়ল সে। আর তার মায়ায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সে টের পেলো এই মায়ার বাঁধন যেই সেই বাঁধন নয়। একে বলে নিজের পায়ে কুড়াল মেরে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনা। সে ছিল আর পাঁচজন মানুষের মতোই পড়ালেখা, ক্যারিয়ারের যাঁতাকলে পিষে যাওয়া মানুষ। অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়ুয়া জাকারিয়া জাকির বরাবরই নিজের পড়াশোনা, ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন।এসবের বাইরে বিন্দু মাত্র নজর দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে যেদিন এসবের বাইরে একটু বাইরের দুনিয়ায় নজর বুলালো সেদিনই কাজল কালো সেই চোখে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনলো। শ্যাম দেহী এই ঝুমুরের মায়ায় পড়ে তার বহু আকাঙ্ক্ষিত রাতের ঘুমটা যেন হারামই হয়ে গেছে।
জাকারিয়া জাকির হলো মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী আশরাফ আলীর একমাত্র ছেলে। তার আর কোনো ভাই বোন নেই। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে হওয়ায় জাকিরের কোনো কিছুরই অভাব নেই। মধ্যবিত্ত পরিবারে সে বেশ আড়ম্বরেই বেড়ে উঠেছে। একমাত্র ছেলে হওয়ায় আশরাফ আলী এবং মজিদা খানম নিজেদের সাধ্যের ভিতরে থেকে ছেলের সব চাওয়াই পূরণ করেছেন যার কারণে এই জীবনে অন্তত এতকাল জাকিরের অন্য কোনো চাওয়া ছিল না।
তবে যেদিন থেকে এই শ্যামাঙ্গিণী ঝুমুরকে এক পলক দেখেছে সেদিন থেকেই প্রতি মুহূর্তে প্রেম বিমুখ এই জাকারিয়া জাকিরের মনে হচ্ছে তার চাওয়া পাওয়াহীন এই জীবনে একমাত্র চাওয়া ওই ঝুমুর। শ্যামলা দেহী এই ঝুমুরকে না পেলে যে তার বেচেঁ থাকাটাই ব্যর্থ।
যদিও জাকিরের কাছে তার রাতের ঘুম খুবই সর্বাধিক প্রিয় ও আকাঙ্ক্ষিত বস্তু কিন্তু প্রেমে পড়ে ঘুমের প্রতি এই প্রেম সে বিসর্জন দিয়েছে। তার এখন একমাত্র চাওয়া শ্যামা দেহী ঝুমুর। ঝুমুরকে পেতে সে নিরন্তর চেষ্টা করবে এবং একসময় তার মন ঠিকই জয় করে নেবে। প্রয়োজন পড়লে অপেক্ষা করবে বহু জনম তবুও মায়ামোহিনীকে তার এই জীবনে চাই।
—-
ক্লাসে বসে খাতায় লিখছে ঝুমুর। হোয়াইট বোর্ডে আনিস স্যার হায়ার ম্যাথের অঙ্ক করাচ্ছেন। সেগুলোই তুলছে ঝুমুর। কিন্তু আজ অন্যদিনের মতো ক্লাসে মন নেই তার। সকালের কলেজ ইয়ার্ডে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনায় তার মনটা খারাপ। এমন আগে কখনো হয়নি তার সাথে। সে শ্যামলা দেহী, ফাহমানের ভাষায় শ্যামাঙ্গণা কাজেই তার এই শ্যাম দেহী রূপের জন্য কখনও সে প্রেমের প্রস্তাব পায়নি।
কোনওদিন এরকম প্রস্তাব না পাওয়ায় এসব নিয়ে ঝুমুরের কোনো অনুভূতিও ছিল না। ফাহমানই তার প্রথম প্রেম এবং অনুভূতি। অথচ ভাগ্যের ফেরে আজ কেমন অসস্তিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সকালের ওই ঘটনার কথা ভাবলেই মনটা বিষিয়ে উঠে, ক্লাস করতে ইচ্ছা করেনা। তবুও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ক্লাস করছে সে। নিজের জ্ঞানত ঝুমুর কখনও ক্লাস বাঙ্ক করে পড়াশুনায় ক্ষতি করেনি। পড়াশোনা নিয়ে সে বরাবরই সচেতন। কোনোকিছুর বিনিময়ে সে তার সেরা ছাত্রীর খেতাব হারাতে রাজি নয়।
হায়ার ম্যাথের মতো এহেন গুরুত্বপূর্ণ একটা ক্লাসে ঝুমুরকে অমনযোগী দেখে অবাক হলেন আনিস সাহেব। ভরাট গলায় ডাক দিলেন ঝুমুর বলে। আনিস সাহেবের ডাকে হকচকিয়ে উঠলো ঝুমুর। দ্রুত দাড়িয়ে বললো ‘ জি…জি স্যার। ‘
‘ এত আনমাইন্ডফুল কেন ? ব্যাপার কি ? ‘
আনিস সাহেবের কথায় ক্লাসের এক দল ছাত্র ছাত্রী হেসে দিলো আর যারা ঝুমুরের প্রতি সহানুভূতি বরাবরই প্রকাশ করে থাকে তারা মন খারাপ করলো। হাসাহাসি করতে থাকা স্টুডেন্টদের মধ্যে একজন স্টুডেন্ট বললো ‘ ও তো আনমাইন্ডফুল হবেই স্যার। এতকাল পড়াশোনা করে সিঙ্গেল থেকেছে। এখন হুট করে প্রেমের প্রস্তাব পেলে মন তো উড়ু উড়ু করবেই। ‘
ছেলেটার কথায় তাকে কড়া ধমক দিয়ে বসিয়ে দিলেন আনিস সাহেব। ঝুমুর ছেলেটার কথায় মন খারাপ করে মুখ নামিয়ে দাড়িয়ে আছে। ছেলেটার কথায় যারা হাসাহাসি করছিলো আনিস সাহেব তাদেরও সাইলেন্স বলে ধমক দিলেন। তারপর ঝুমুরের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। বললেন ‘ জীবনে সাফল্যের পথে হাঁটতে গেলে এমন অনেক কাটাই তোমার পথ আগলে দাড়িয়ে থাকবে। কিন্তু তাই বলে দমে গেলে হবে না ? নিজের পথ থেকে কাঁটাগুলো উপরে ফেলে হাঁটতে শিখো। ইনশাল্লাহ সুখ হাতে ধরা দিবেই। ‘
আনিস সাহেবের কথায় ঝুমুরের মনের মেঘ মেদুর ভাবটা কেটে গেলো। তার কৃষ্ণ কায়া জড়ানো মুখে হাসি ফুটলো। মাথা নেড়ে আনিস সাহেবের কথায় সায় দিয়ে বুঝলো সে এখন থেকে আর মন খারাপ করে দমে যাবে না। প্রিয় শিক্ষার্থীর মন ভালো করতে পেরে শান্তি পেলেন আনিস সাহেব। তিনি আবারও পড়ানোর কাজে ফিরে গেলেন।
—-
ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরেছে ঝুমুর কিয়ৎক্ষণ আগেই। এখন সে ফ্রেশ হয়ে, খাওয়া দাওয়া করে এয়ারপোর্ট যাওয়ার জন্য রেডি। শুধু ফারুক রেডি হলেই দুজনে বেরিয়ে পড়বে। মন মেজাজ এখন ফুরফুরে ঝুমুরের। যদিও কলেজ থেকে ফিরতে সময় সকালের ওই জাকির নামক ছেলেটার মুখোমুখি হতে হয়েছে কিন্তু আনিস স্যারের কথা মতো তাকে পথের কাঁটা ভেবে বিষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে এড়িয়ে পথ চলেছে সে। তাই এখন তার মন মেজাজ এত ভালো।
ফারুক রেডি হয়ে বেরোতেই ঝুমুর বেরিয়ে পড়লো। প্রথমে রিক্সা দিয়ে হোসেইন মার্কেট নামলো দুজনে। তারপর সেখানে রাস্তা পার হয়ে বাস ধরলো এয়ারপোর্টের। পরিকল্পনা করা আছে ফিরতে সময় উবারে আসবে কারণ শাওমির সঙ্গে তার লাগেজ আছে যা ক্যাবে করে আনলে সুবিধা হবে।
অবশেষে এক ঘণ্টার জ্যাম থেকে রেহাই পেল ঝুমুর। এত গরমে জ্যামে বসে থেকে থেকে তার নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তবে এয়ারপোর্ট এসেও তাদের আরও তিরিশ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। শাওমির ফ্লাইট ল্যান্ড করে গেছে তবে ফর্মালিটিজ মিটিয়ে আসতে আসতে সময় লাগবে।
চৈত্রের দুপুরের ধোঁয়া ওঠা গরমে এয়ারপোর্টে বিরশ মুখে অপেক্ষা করছে ঝুমুর। গরমে তার ঘাম ঝরছে। কৃষ্ণ কালো মুখটা আরও কালো হয়ে গেছে। বারবার হাতে থাকা টিসু দিয়ে মুখ মুছছে সে। আগেও এরকম অপেক্ষা করেছে ঝুমুর। তবুও মনে হচ্ছে আজ যেন অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। কখন আসবে শাওমি ? আর যে তর সইছে না ঝুমুরের।
অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে হাজির হলো শাওমি। তার পরনে থাকা ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেটটা সে ফ্লাইট ল্যান্ড করতেই খুলে হাতে নিয়ে নিয়েছে। কোরিয়ায় যা শীত তার সিকি ভাগের এক ভাগ শীতও বাংলাদেশে নেই। উল্টো গরমে নাভিশ্বাস অবস্থা সবার। বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতেই শাওমির মনে হলো সে মরুভূমিতে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রিয় সখীর খাতিরে এতটুকু কষ্ট করে নিলো সে।
চলবে….
মিফতা তিমু