শ্যামাঙ্গণা-১১
————
বারান্দায় দাড়িয়ে আছে হৈমন্তী। তার পরনে এখনও ঝুমুরের পড়িয়ে দেওয়া কালো শাড়িটা। ঝুমুর কিছুক্ষণ আগেই তাকে জানিয়ে বেরিয়ে গেছে। হৈমন্তীর বিয়ের বেশিক্ষণ হয়নি। এইতো ঘণ্টা খানেক আগেই তিন কবুল পড়ে বিয়েটা হয়েছে তার। ঘরে এখনও সকলে বিয়ের খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করছে। হৈমন্তীর মা মিস মারিয়াম পুরো বিল্ডিংয়ে মিষ্টি দিয়েছেন মেয়ের বিয়ের খুশিতে।
বিয়েটা করার কারণে সকলের মনে যে খুশির দমকা হাওয়া লেগেছে তাতে সন্দেহ নেই হৈমন্তীর। এই বিয়ে নিয়ে হৈমন্তীর মনে না আছে কোনো ফ্যান্টাসি না আছে কোনো অভিযোগ। সে বিয়েটা করেছে তার মায়ের খুশির জন্য। আজ পর্যন্ত মিস মারিয়াম তাদের দুই ভাই বোনের কাছে কিছুই চাননি। যতটা সম্ভব নিজের সাধ্যের মধ্যে থেকে দুজনের সব ইচ্ছাই পূরণ করেছেন।
তাই হৈমন্তী মিস মারিয়ামের খুশির জন্যই বিয়েটা করে নিয়েছে। তাছাড়া তার আলাদা কোনো পছন্দও ছিলনা এবং কোনওদিন প্রেমও করেনি। তাহলে আর বিয়েতে আপত্তি করে লাভ কি ? যেই মা তাদের খুশির জন্য এতকিছু করেছে তার জন্য এতটুকু তো করাই যায়। তবে হৈমন্তী এটা বুঝতে পারছে না তাদের কলেজের অতীব মাত্রায় সুদর্শন এই প্রফেসর বেছে বেছে তার মতো অমানিশাকেই কেন বিয়ে করলো ?
হৈমন্তীকে স্কুল জীবনে তার গায়ের রঙের জন্য কালাচাঁদ বলে ডাকতো। যদিও কালাচাঁদ বলে আদৌ কোনো চাঁদ আছে কিনা তার জানা নেই তবে এই ডাক যে তাকে উপহাস করতেই ডাকা হয় সেটা তার অবশ্য জানা। ঝুমুর উজ্জ্বল শ্যামলা হলেও হৈমন্তী পুরোই শ্যামলা। যার কারণে ঝুমুরকে তার গায়ের রঙের জন্য যতটা হেনস্থা হতে হয়েছে হৈমন্তীকে তার থেকে দ্বিগুণ হেনস্থা হতে হয়েছে। এখন এহেন শ্যামলা, কালো মেয়েকে যদি কোনো সুদর্শন ছেলে বিয়ে করে তাহলে ব্যাপারটা কিরকম ধরে নেওয়া উচিত ?
আসিফ কি কোনো চক্রান্ত করে বিয়ে করেছে ওকে ? ও কি বিয়ের পর হৈমন্তীর কিডনি, লিভার সব বিক্রি করে দিবে ? ওর কি তাহলে অঙ্গ পাচারের ব্যবসা আছে ? এই প্রশ্নগুলো হৈমন্তীর মনে এসেও যেন উধাও হয়ে গেলো। ওর মনে হচ্ছে না আসিফ এমন ধরনের লোক। আসিফ ওদের সাবজেক্ট প্রফেসর তাই সেইদিক দিয়ে ও আসিফকে চিনে। এই ধরনের কাজ করার লোক আসিফ না। সে অত্যন্ত সাধারণ গোছের মানুষ। তাহলে সুদর্শন এই আসিফ জোহানের আসল উদ্দেশ্য কি ?
হৈমন্তী তার ভাবনায় মশগুল থেকে লক্ষ্য করলো সন্ধ্যে নেমেছে। প্রকৃতি নিজেকে মুড়িয়েছে অমানিশ ঘুটঘুটে অন্ধকারে। ঘর থেকে কারোর কথাবার্তার আওয়াজও আর আসছে না। হয়তো আসিফের বাবা মা চলে গেছে। উনারা চলে গেছে ভাবতেই হৈমন্তী লজ্জায় পড়ে গেলো। উনারা চলে গেলো আর ও একবারের জন্য গিয়ে দেখার প্রয়োজনও মনে করলো না। এতটাই মশগুল ছিল সে।
হৈমন্তী বারান্দা দিয়ে লক্ষ্য করলো আসিফের বাবা মা দাড়িয়ে আছে। মিস মারিয়ামের সঙ্গে কথা বলছেন তারা। তাদের বিদায় জানানো উচিত মনে করে দ্রুত বারান্দা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো হৈমন্তী। পিছন ফিরতেই হৈমন্তী একটা বড়সড় কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খেল। ধাক্কা খেয়ে সে পড়ে যাচ্ছিল তবে কোনোমতে নিজেকে সামলে নিলো। ধাক্কা খেয়ে মনে হচ্ছে কপালের দিকটাতে লেগেছে।
ব্যথায় হৈমন্তী উফ শব্দ করে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট অন করল। লাইটের আলোয় দেখলো কিয়ৎক্ষণ পূর্বে যার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে সেই আসিফ জোহান তার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। হৈমন্তী খানিকটা পিছিয়ে গেলো। স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই ভ্রু কুচকে বললো ‘ আপনি এখানে ? আপনি না বেরিয়ে গেছিলেন ? ‘
হৈমন্তী আমেনা বেগমের কাছে শুনেছিল বিয়েটা করেই আসিফ বেরিয়ে যাবে কারণ তার কাজ আছে। কিন্তু এখন আসিফকে দেখে সে অবাক। সে তো জানে আসিফ বেরিয়ে গেছে। তাহলে এখানে কি করছে ? হৈমন্তীর কথায় হাসলো আসিফ। বললো ‘ হুম বেরিয়েছিলাম কিন্তু পরে মনে হলো কিছু একটা ফেলে গেছি। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। জিনিসটা না নিলে বাইরে বেরিয়েও যে আমার মন টিকবে না। ‘
আসিফের কথায় হৈমন্তীর কুঞ্চিত ভ্রু সোজা হলো। হৈমন্তী বলল ‘ ফেলে গেছেন ? কি ফেলে গেছেন ? ‘
পরমুহূর্তেই টের পেলো আসিফের উষ্ণ নিশ্বাস ওর চোখে মুখে আছড়ে পড়ছে। আসিফ তার ঠোঁটের নরম স্পর্শ এঁকে দিয়েছে হৈমন্তীর ললাটে। আসিফের কাজে হৈমন্তী অসস্তিতে পড়ে গেলো। আসিফ ফিসফিসিয়ে বললো ‘ আমার হৈমকে। এইযে এখন তাকে ছুয়ে দিলাম, এখন আমার বাড়ি ফিরেও শান্তি। ‘
আসিফের কথায় হৈমন্তীর মনে হলো তার সমস্ত সত্তা জুড়ে ঠান্ডা হাওয়ার স্রোত বয়ে গেছে। শরীরটা হঠাৎ করেই কাটা দিয়ে উঠছে। অথচ তার গলাটা শুকিয়ে কাঠ। মাথাটা কেমন করছে। তবে সেই সঙ্গে সুখ সুখ অনুভূতি হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই সুদর্শন আসিফ জোহানের তাকে বিয়ে করার পিছনের কারণ সে ধরে ফেলেছে।
হৈমন্তীকে ছেড়ে পিছিয়ে গেলো আসিফ। যেভাবে এসেছিল সেভাবেই ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে পা বাড়ালো তবে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বলে গেলো ‘ নিচে আসুন বিবিজান। আম্মাজান তার একমাত্র ছেলের বউকে দেখার ইচ্ছে পোষণ করেছে। ‘
আসিফ বেরিয়ে গেছে। ওর পিছন পিছন হৈমন্তীও বেরিয়েছে। ওরা বর্তমানে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। হৈমন্তীকে নামতে দেখে আমেনা বেগম খুশি হলেন। হৈমন্তীর ললাটে চুমু খেয়ে বললেন ‘ ভালো থেকো মা আর এই মায়ের কথায় কিছু মনে করো না। আসলে আমার নিজের কোনো মেয়ে নেই তো তাই মেয়ে পাওয়ার লোভে এত তাড়াতাড়ি হুট করে অনুষ্ঠানাদি না করেই বিয়ে দিয়ে দিলাম। ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে অনুষ্ঠান করবো। ‘
আমেনা বেগমের কথায় সিরাজ সিকদার হাসলেন। বললেন ‘ আমার মেয়েকে তোমার এরকম মনে হয় নাকি ? ও এরকম কিছু মনেই করেনি বাজি লাগাতে পারি। সন্দেহ হলে হৈমন্তীকে জিজ্ঞেস করো। ‘
সিরাজ সিকদারের কথায় হৈমন্তী হাসলো। মাথা নেড়ে বললো ‘ আব্বা ঠিক কথা বলেছেন আম্মা। আমি আসলেই কিছু মনে করিনি। আপনার মতো মা পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। আপনাদের পেয়ে আমি ধন্য। ‘
হৈমন্তীর কথা শুনে আমেনা বেগম তার চোখের কোণে লুকিয়ে থাকা অশ্রুগুলো মুছলেন। নিজের একটা মেয়ে না থাকার এতকালের হাহাকারের আজ যেন অবসান ঘটেছে। মেয়ের অভাবে খা খা রোদ্দুরে শুকিয়ে যাওয়া বুকে বৃষ্টি নেমেছে। উনি মিস মারিয়ামের দিকে তাকিয়ে হৈমন্তীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন ‘ আমার মেয়েকে দেখে রাখবেন আপা। মেয়ে বেশি জ্বালালে আমার কাছে পাঠিয়ে দিবেন। তারপর আমি আবার ওকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে পাঠিয়ে দিবো। কিন্তু আপনি রাগ করবেন না। আপনি রাগ করলে আমার মা যে অনেক কষ্ট পাবে। ‘
মিস মারিয়াম হাসলেন আমেনা বেগমের কথায়। আমেনা বেগম আরেকবার একমাত্র পুত্রবধূর ললাটে চুমু খেয়ে স্বামী,পুত্র নিয়ে এগিয়ে গেলেন। আমেনা বেগমদের এগিয়ে দিতে মিস মারিয়াম,হৈমন্তী এবং ফাহমানও এগিয়ে এলো। আসিফ গাড়িতে উঠতেই ফাহমান তাকে বিদায় জানিয়ে ফোন নিয়ে বেরিয়ে গেলো। ফোনে ফ্লেক্সিলোড করা দরকার।
আসিফ গাড়িতে উঠে বসেছে। এখন গাড়ি স্টার্ট দিবে সে। গাড়িটা ঘুরিয়ে নিয়ে স্টার্ট দিলো সে। তবে ধুলো উড়িয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে এক পলক হৈমন্তীকে দেখলো। ঠোঁট নাড়িয়ে নিঃশব্দে কিছু একটা বললো। তারপর সন্ধ্যার ঘুটঘুটে অন্ধকারে মস্ত বড় গাড়িটা নিয়ে হারিয়ে গেলো। হৈমন্তী শুধু একমনে চেয়ে রইলো সেদিকে। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এসেছে।
নিজের কাজে নিজেই হতবাক হৈমন্তী। ও কাদঁছে নাকি ? কার জন্য ? যার সঙ্গে মাত্র বিয়ে হলো সেই আসিফ জোহানের জন্য ? এও সম্ভব ? কয়েক মুহূর্তেই সে কিনা ওই অপরিচিত লোকটার প্রেমে পরে গেলো। হৈমন্তীর বিশ্বাস হতে চাইলো না তবে ও বুঝলো এ যে সে প্রেম নয়। কঠিন প্রেম এটা। নাহলে লোকটার প্রস্থানে তার হৃদয় কেন কাদবে ? তার মনটা কেন বলবে যে লোকটা ফিরে আসুক ?
প্রেম বুঝি কয়েক মুহূর্তেও ঘটে যায় ? হ্যাঁ ঘটে তো। প্রেম কখনোই ঘটা করে আয়োজন করে হয় না। প্রেম বরাবরই হুট করে অপ্রত্যাশিতভাবে হয়ে যায়। যেমনটা লাভ এট ফার্স্ট সাইটের ক্ষেত্রে ঘটে। প্রেমের সমস্তটাই লাভ এট ফার্স্ট সাইট। এর কোনো লং কিংবা সেকেন্ড সাইট নেই। প্রেম এমনই ভাবে হুট করেই অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ে কোনো এক মহেন্দ্র ক্ষণে ঘটে যায় সম্পূর্ণ অনাড়ম্বরভাবে।
—-
কলেজের জন্য তৈরি হয়ে সিড়িতে নেমেছে ঝুমুর। রোজকার মতোই ফাহমান তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। ফাহমানকে দেখামাত্র ঝুমুরের চোখে মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়লো। ও কেটস পড়ে বড় রাস্তায় উঠে এলো। বড় রাস্তায় উঠতেই ফাহমান বললো ‘ হৈমন্তীর বরকে তোমার কেমন লেগেছে ? ‘
‘ সোজা কথায় বলতে গেলে আমার ভালই লেগেছে। যদিও ভাইয়ার সাথে আমার তেমন কথা হয়নি কিন্তু যতটুকু কথা হয়েছে আমার তাতেই মনে হলো উনি হয়তো আপুকে ভালোবাসেন। এজ ইউ নো আপু আর আমার গায়ের রং শ্যামলা কাজেই আমাদেরকে কেউই বিয়ে করতে রাজি হবে না। ভাইয়া হয়তো ভালোবাসেন বলেই বিয়ে করেছেন আপুকে। ‘
ঝুমুরের কথা শুনে ফাহমানের ভ্রু কুচকে গেলো। ও বিরক্তি গলায় বললো ‘ গায়ের রং শ্যামলা বলে বিয়ে হয়না কে বলেছে তোমাকে ? তাহলে আমি কিসের জন্য রোজ তোমার সঙ্গে টাইম পাস করি ? তোমার কি আমাকে ওইসব ফাউল ছেলে মনে হয় যারা ফুর্তি করতে মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটায় ? ‘
ফাহমানের কথায় ঝুমুর প্রথমে থমকে গেলো, পরমুহূর্তে চমকে গেলো এবং সবশেষে অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়লো। হাসতে হাসতে বললো ‘ ডাক্তার সাহেব দেখি রেগে যাচ্ছেন। আমি কখন বললাম আমি আপনাকে ওই ধরনের মানুষ মনে করি ? আরে বাবা আপনার ব্যাপার তো আলাদা। আপনি আর অন্য ছেলেরা কি এক ? ‘
ঝুমুরের কথায় শান্ত হলো ফাহমান। এতক্ষণ তার ভিতরে বিরক্তির যে উদ্রেগ ছিল তা কমে এসেছে। ও শান্ত ও ধীর কণ্ঠে অপরাধী গলায় বললো ‘ দুঃখিত, তোমার সাথে ওভাবে আমার কথা বলা ঠিক হয়নি। ‘
ঝুমুর হাসলো ফাহমানের কথায়। বললো ‘ আপনি একটু স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়ান, নড়বেন না। ‘
ঝুমুরের কথায় হতবাক হলেও ফাহমান সটান দাড়িয়ে রইলো। ঝুমুর ফাহমানের চোখের নিচ থেকে ঝরে যাওয়া পাপড়ি হাতের মুঠোয় তুলে নিলো। তারপর সেই পাপড়ির দিকে তাকিয়ে বললো ‘ এই চোখের পাপড়ি আপনার হলেও এটা বাতাসে উড়িয়ে আমি আমার ইচ্ছা পূরণ করব। আপনার আপত্তি আছে ? থাকলেও কিছু করার নেই। যা আপনার তাই আমার আর যা আমার তাও আপনার। ‘
ফাহমান হাসলো ঝুমুরের কথায়। প্রতি উত্তর করলো না তবে নীরবে ঝুমুরের কান্ড দেখছে সে। ঝুমুর চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে কিছু একটা বললো তারপর ফুঁ দিয়ে পাঁপড়ি উড়িয়ে দিল। পাপড়ি উড়িয়ে ঝুমুর আবারও পথ চলতে শুরু করল। ফাহমান বললো ‘ তোমার উইশ কি বললে না যে ? ‘
‘ যদিও নিজের উইশ কাউকে বলতে নেই তবুও বলছি। আমার ইচ্ছা আপনি চিরকাল এমনই থাকুন। সবসময় মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবেন তারপর হুট করে রেগে আমাকে বকাবকি করবেন। আপনি কিন্তু টক ঝাল মিষ্টি ধরনের মানুষ ডাক্তার সাহেব। আমি আবার বুঝদার মানুষ তাই আপনার কথায় রাগ করিনা। ‘
ঝুমুরের কথায় ফাহমানের হাসি চওড়া হলো। সে বলল ‘ হ্যাঁ এতই বুঝদার যে ওইদিন ছাদে না আসাতে রাগে কেঁদে ফেলেছিলে। ‘
ঝুমুর অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল ফাহমানের দিকে। বিস্ময় ঝরা কণ্ঠে বলল ‘ ও মা আপনি এখনও ঐদিনের কথা নিয়ে বসে আছেন ? আপনি কি আমাকে কথায় কথায় কান্না করা মেয়ে বুঝাতে চাচ্ছেন ? ‘
শেষের কথাটা গম্ভীর মুখে বললো ঝুমুর। ঝুমুরের মুখভঙ্গি দেখে হাসলো ফাহমান। বললো ‘ মোটেই না। তুমি ওরকম মানুষ না। তুমি তো ছিচকাদুনে। আমি তোমাকে ওরকম পিচ্ছি মেয়ে ভাবি। ‘
কথাটা বলেই ফাহমান দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে গেলো কারণ এখন যেরকম পরিস্থিতি তাতে ঝুমুর তাকে মারতেও পারে। ঝুমুর রাগে, দুঃখে পা দিয়ে জোরে আঘাত করলো পিচঢালা রাস্তায়। ভাগ্যিস ঝুমুর তার কলেজের গলিতে এসে গেছে নাহলে ফাহমানকে দেখিয়ে দিত ও। ঝুমুর রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে গলিতে ঢুকে গেলো আর ফাহমান ঝুমুরের হাত পা ছোড়াছুড়ি দেখে হাসতে হাসতে তার গন্তব্যের পথে এগিয়ে গেলো।
চলবে….
মিফতা তিমু