শ্যামাঙ্গণা-১০
————
সুই সুতা এবং বেলি ফুলের কুঁড়ি নিয়ে বসেছে ঝুমুর। এখন সে মালা গাঁথবে। তারপর মালাটা পড়িয়ে দিবে প্রাণপ্রিয় সখীর চুলে। কি সুন্দরই না লাগবে তার সখীকে। ঝুমুর ভাবতে ভাবতে একটা একটা করে কুড়ি গাঁথলো সুতোয়। একসময় মালা বানানো শেষ হলে সুতা ফিক্স করে উঠে পড়ল জায়গা ছেড়ে। মালাটা নিয়ে মনোয়ারা বেগমকে জানিয়ে তিন তলায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো সে।
এখন মধ্য দুপুর। দোতলায় সকলেই ঘুমোচ্ছে। মনোয়ারা বেগম কোরআন শরীফ পড়ছেন। দোতলা ঘুমিয়ে থাকলেও তিন তলায় ফাহমানদের বাড়ি সম্পূর্ণ রূপে জাগ্রত। মিস মারিয়াম একা হাতে পেস্ট্রি থেকে শুরু করে অনেক ধরনের নাস্তার আইটেম তৈরি করেছেন। কাজের ফাঁকে হৈমন্তীও উনাকে সাহায্য করলেন। তবে মেয়েকে তিনি বেশি কাজ করতে দেননি কারণ মেয়েকে তো একটু পর ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে।
ফাহমান ঘরেই ছিলো তাই কলিং বেল বাজার শব্দে দরজা খুলতে বেরিয়ে এলো। দরজা খুলে দেখলো এলোকেশে ঝুমুর দাড়িয়ে আছে। ভর দুপুরে ঝুমুরকে দেখলে একটু ধাক্কাই খেলো। দ্রুত নিজেকে সামলে জিজ্ঞেস করলো ‘ তুমি এখানে ?না…মানে হঠাৎ ? তুমি তো এই সময় আসো না। ‘
ঝুমুর হাসলো ফাহমানের কথায়। মানুষটা এখনও সেদিনের কথা মনে করে বসে আছে। ঝুমুর বললো ‘ আজকে হৈমন্তী আপুকে ছেলে দেখতে আসবে। তাই ভাবলাম ওকে সাজিয়ে দেই। ‘
ঝুমুরের কথা শুনে হতবাক ফাহমান। ওর বোনকে দেখতে আসবে আর ওই জানেনা। ঝুমুরকে ঘরে ঢুকিয়ে গেলো মিস মারিয়ামের ঘরে। মাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলো হুট করেই আজ পাত্রপক্ষ দেখতে আসার ব্যাপারটা কাল রাতেই ঠিক হয়েছে তাই সুযোগের অভাবে আর জানাতে পারেননি।
—-
হৈমন্তীর শাড়ির কুচি ধরে দিচ্ছে ঝুমুর। কুচি ধরে দেওয়াতে তার জুড়ি মেলা ভার। হৈমন্তীর পরনে কালোর মধ্যে নীল রংয়ের হালকা কাজ করা শাড়ি। শাড়ির আঁচল ঘেঁষে টার্সেলগুলোতে লেগে থাকা মিররগুলোতে বিকেলের ডুবন্ত সূর্যের আলো আছড়ে পরে ঘরের মধ্যে আলো আঁধারির খেলা জুড়েছে।
হৈমন্তীর কাধের কাছে শাড়ির আঁচলটা তুলে ধরে কুচি করে সিফটিপিন লাগিয়ে দিল ঝুমুর। এবার সে হৈমন্তীর চুলে বেণী করবে। তার নিজের চুল ঝরতে ঝরতে কমে গেলেও এই দূষণ যুক্ত বাংলাদেশে হৈমন্তীর লম্বা কালচে চুলগুলো যে এখনও কিভাবে টিকে আছে সেটাই ভাববার বিষয়। ঝুমুর ধরতে পারছে না তার প্রিয় সখীর চুল এখনও কি করে টিকে আছে। তবে হৈমন্তীর এই চুলগুলো তার খুব পছন্দ।
হৈমন্তীর ঘন চুলে বেণী পাকিয়ে পিন দিয়ে বেলি ফুলের মালা লাগিয়ে দিল ঝুমুর। বাম হাতে এক গুচ্ছ কালো কাচের চুড়ি পড়িয়ে দিলো। কানে ছোট পাথরের ঝুমকা পড়িয়ে দিলো ঝুমুর। ঝুমুর লিপস্টিক দিয়ে দিতে চাইছিল কিন্তু বাধ সাধলো হৈমন্তী। বললো ‘ উহু লিপস্টিক দিস না। এই শ্যামলা চেহারায় পুরো শেওড়া গাছের পেত্নী লাগবে। তার থেকে যেমন আছি তেমনই ভালো। ‘
হৈমন্তীর কথার অবাধ্য হলো না ঝুমুর। হৈমন্তীর লম্বা বেণীটা ওর পিঠের উপর ছেড়ে দিল। হাতের আঙুলে কাজল লাগিয়ে হৈমন্তীর কানের নিচে লাগিয়ে দিয়ে বলল ‘ নজর লাগুক আমার সখীকে। ‘ ঝুমুরের কথায় হাসলো হৈমন্তী। বললো ‘ তুই তৈরি হলি না যে ? ‘
হৈমন্তীর কথার উত্তরে ঝুমুর বললো ‘ পাত্রপক্ষ আমাকে না তোমাকে দেখতে আসছে কাজেই তুমিই সেজেগুজে বসে থাকো। ‘
হৈমন্তী আর কিছু বললো না। তবে সঙ্গে সঙ্গে মিস মারিয়াম হাজির হলেন ঘরে। উনি জানালেন পাত্রপক্ষ এসে গেছে। পাত্রপক্ষ এসে গেছে খবর পেয়ে ঝুমুর হৈমন্তীকে সঙ্গে করে বসার ঘরে নিয়ে গেল। পাত্রপক্ষ তখন সোফায় বসে।
—-
হৈমন্তীকে পাত্রের মা বাবার মুখোমুখি বসিয়ে দিল ঝুমুর। হৈমন্তী তখনও মুখ নত করে রেখেছে। সত্যি বলতে তার মোটেও ইচ্ছা করছে না মুখ তুলে লোকটাকে দেখতে। কে জানে দেখতে হয়তো বুড়ো টাকলাদের মত হবে। এরকমটাই তো হয় নাটক সিনেমায়। বাবা মা মেয়ের সুখের জন্য বুড়ো টাকলা ধনী লোকের কাছে বিয়ে দিয়ে দেয়। অবশ্য বাবা মাকেও দোষ দিয়ে লাভ নেই। দেশে জোয়ান,তাগড়া ধনী যুবক আর কোথায় ?বর্তমান তরুণদের ধনী হতে হতেই বয়স পার হয়ে যায়।
পাত্রের মা আমেনা বেগম হৈমন্তীর পাশে বসলেন। ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কিছুই জিজ্ঞেস করলেন হৈমন্তীকে তিনি। সেই সঙ্গে হৈমন্তী এও জানলো পাত্র নাকি এখনও এসে পৌঁছয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে চলে আসবে। পাত্রের মায়ের মুখ থেকে কথাটা শুনে হৈমন্তী সস্তির নিশ্বাস ফেললো। যাক তার অন্তত মাথা নামিয়ে রাখতে হবে না।
হৈমন্তী মাথা তুলতেই পাত্রের বাবা সিরাজ সিকদার বললেন ‘ চিন্তা করো না মা। আসিফ একটু পরেই চলে আসবে। ততক্ষণ তোমার হবু শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারো। এই যে তোমার শাশুড়ি মাকে দেখছো। উনার কিন্তু একটা মেয়ের খুব শখ ছিল। কিন্তু আল্লাহর দরবারে তার এই ইচ্ছা গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে তার মেয়ে নেই। সেই আফসোস এখন তোমাকে দিয়ে মিটিয়ে নিবে সে। ঠিক করে রেখেছে বিয়ের পরে ছেলের বউকে নিয়ে শপিং করবে,রান্না করবে আরও অনেক কিছু। ‘
হৈমন্তী একবার আমেনা বেগমকে দেখলো আরেকবার সিরাজ সিকদারকে দেখলো। এই দুই কপোত কপোতীকে দেখে সে হতবাক। বুড়ো টাকলা লোকের বাবা মা আবার এত অল্প বয়সী কেন দেখতে ? তার কি চোখটা নষ্ট হয়ে গেছে নাকি ?
সিরাজ সিকদারের কথায় আমেনা বেগম বললেন ‘ এসব বলছেন কেন ? শুধু শুধু মেয়েটাকে ভয় পাইয়ে দিচ্ছেন। দেখেন আপনার কথায় হৈমন্তী আবার কিছু না ভেবে বসে। ‘
আমেনা বেগমের কথায় হৈমন্তী ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে বললো ‘ আমি কিছু মনে করিনি আন্টি। ‘
হৈমন্তীর কথা শুনে সিরাজ সিকদার বললেন ‘ দেখলে বউমা কিছু মনে করেনি ?বেয়াইন,আর যে যাই বলুক আমার কিন্তু আমার ছেলের বউকে সেই পছন্দ হয়েছে। আমি কিন্তু অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ হলেই তুলে নিবো আমাদের মেয়েকে। ‘
সিরাজ সিকদারের কথায় মারিয়াম হাসলেন। বললেন ‘ তাই করবেন ভাইজান। মেয়েটাকে আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হবো। কিন্তু ওর অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত আমার কাছেই থাকুক। উনাকে পাঁচ বছর আগে হারিয়েছি। এরপর তো ছেলে মেয়েই আমার সব। এখন মেয়েটাকেও বিয়ে দিয়ে দিবো। ‘
মারিয়ামের কথায় আমেনা বেগম বললেন ‘ আপনি চিন্তা করবেন না আপা। হৈমন্তীর অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত ও আপনাদের কাছেই থাকবে। শুধু মাঝে মাঝে ইচ্ছে করলে আমি আর আসিফের বাবা এসে দেখে যাবো। ‘
হৈমন্তীর এই ‘ আসিফ ‘ নামটা কেন জানি খটকা লাগছে। মনে হচ্ছে কোথাও একটা শুনেছে কিন্তু হঠাৎ করেই মনে পড়ছে না। অথচ মনে হচ্ছে নামটা তার বহু চেনা। তবে হৈমন্তী বেশি চিন্তা করার সুযোগ পেলো না। তার আগেই বাসার দরজায় কড়া পড়ল।
মিস মারিয়াম এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললেন। দরজা খুলে সামনে আসিফকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে হাসলেন। বললেন ‘ তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম বাবা। ‘
আসিফকে মারিয়াম ছবিতে দেখেছেন। ঘটকই ছবিটা এনেছিলেন। আসিফের পুরো নাম আসিফ জোহান। তিতুমীর কলেজে সে চাকরিরত। দেখতে খুবই অসম্ভব সুদর্শন এই ছেলেটি উচ্চ মধ্যবিত্ত ঘরের। সামনের কিছু চুল এলো হাওয়ায় কপালে আছড়ে পড়েছে। আসিফ সেই চুলে হাত দিয়ে পিছনে নিয়ে ঠিক করে বললো ‘ ক্ষমা করবেন আন্টি। জরুরী কাজ পড়ে যাওয়াতে পরে আসতে হলো। তবে কাজী সাহেবকে নিয়ে এসেছি সঙ্গে করে। ‘
বেখেয়ালে থাকা হৈমন্তী যেন আসিফের গলা পেয়ে চমকে উঠলো। মুখ তুলে হতবাক চোখে তাকিয়ে রইলো আসিফের দিকে। ওর বিশ্বাস হচ্ছে না এ ও কাকে দেখছে। এই লোকটা তো ওরই কলেজের প্রফেসর আসিফ জোহান। এখন তো তার হবু বর আসিফের আসার কথা। তাহলে তার জায়গায় প্রফেসর আসিফ কোথা থেকে চলে এলো ?
হঠাৎ বিজলী চমকানোর মতো করে হৈমন্তীর মাথায়ও বাজ পড়লো। ও এবার ধরতে পারলো এই প্রফেসর আসিফ জোহানই তাহলে তার হবু বর আসিফ। অথচ এই ব্যাপারটা সে আগে ধরতে পারেনি। ধরতে পারেনি বললে ভুল হবে। মোট কথা সে ধরতে পারলেও তার অবচেতন মন সেটা সায় দেয়নি। কিন্তু সবশেষে কিনা প্রফেসরকে বিয়ে ? বাংলাদেশে কি ছেলেদের এতই অভাব পড়েছে যে সব ছেড়ে ওর প্রফেসরকেই বিয়ে করতে হবে ?
আসিফ আর কাজীকে নিয়ে বসার ঘরে আসিফের বাবা মায়ের সামনেই বসালেন মিস মারিয়াম। ছেলেকে দেখে আমেনা বেগম বললেন ‘ এত দেরি কেন হলো তোর ? ‘
‘ রাস্তায় জ্যাম ছিল তাই ফিরতে সময় জ্যামে পড়ে গেছিলাম। আধা ঘন্টা বসেছিলাম জ্যামে। ‘ আসিফ উত্তর দিলো।
‘ তাহলে আপা বিয়েটা আজই পড়িয়ে ফেলি। কি বলেন ? আপনার কোনো আপত্তি আছে ? ‘
আমেনা বেগমের কথায় হাসলেন মিস মারিয়াম।বললেন ‘ না না আপা আপত্তি কিসের ?ওদের বিয়েটা হয়ে গেলো আমি নিশ্চিন্ত হতে পারবো। আমার আপত্তি নেই। ‘
মিস মারিয়াম আপত্তি না করলেও হৈমন্তীর ঘোরতর আপত্তি আছে। ও চেয়েছিল পাত্রকে দেখা মাত্রই যাতে বিয়েতে রাজি নাহয় তার জন্য উদ্ভট কান্ড করবে। কিন্তু তার সুযোগ কোথায় ? একটা বাক্য বিনিময়ওতো করতে পারল না। তাই হৈমন্তী ধীর গলায় মারিয়ামকে বললো ‘ মা!! একটু দরকার ছিলো। ‘
মেয়ের ডাক উপেক্ষা করলেন না মিস মারিয়াম। হবু বেয়াই বেয়াইনকে বলে হৈমন্তীকে নিয়ে ভিতরের ঘরের দিকে গেলেন। একান্তে যাওয়া মাত্রই হৈমন্তী বললো ‘ মা তোমার মাথা কি ঠিক আছে ? এ কার সাথে বিয়ে দিচ্ছ আমার ? আরে লোকটা তো আমারই কলেজের প্রফেসর। কলেজে যদি এই বিয়ের ব্যাপারটা জানাজানি হয় তাহলে সবাই হাসাহাসি করবে। ‘
মিস মারিয়াম লক্ষ্য করলেন তার মেয়ের হাত কাপছে। ঠোঁটগুলোও তিরতির করে কাপছে। উনি বুঝলেন মেয়ের দোটানার ব্যাপারটা। তবে তিনি হৈমন্তীর হাতে হাত রেখে বললেন ‘ এই জীবনটা তোমার হৈমন্তী। তোমার পড়াশোনা, সাবজেক্ট চুজিং, কোন কলেজে পড়বে এই ব্যাপারে কোনোদিনই তোমার উপর কোনো ইচ্ছা চাপিয়ে দিইনি আমি। একই কথা তোমার ভাইয়ের ক্ষেত্রেও।
কিন্তু তুমিই বলো তুমি যাদের হাসার কথা বলছো তাদের উপর কি আদৌ তোমার জীবন নির্ভর করে ? তারা হাসলে কি তোমার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে নাকি না হাসলে জীবন ঠিক হয়ে যাবে ? তোমাকে দশ মিনিট দিচ্ছি। আমি বসার ঘরে বসছি। যদি তোমার মনে হয় এই বিয়ে তুমি করবে তাহলে এসো নাহলে আমি সবাইকে জানিয়ে দিবো তুমি বিয়ে করছ না। ‘
—-
বসার ঘরে বসে বসে ফাহমান তার হবু বোন জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলছে। কথা বলছে বললে ভুল হবে। তাদের আলোচনা মূলত তাদের কর্মজীবন নিয়েই। মিস মারিয়াম ঝুমুরকে হৈমন্তীর কাছে রেখে এসেছেন। ঝুমুর এতক্ষণ হৈমন্তীর রুমেই ছিল যাতে পাত্রপক্ষদের সামনে দেখা দিতে না হয়। মিস মারিয়াম এখন বেয়াই বেয়াইনের সঙ্গে কথা বলছে। আলোচনা চলছে হৈমন্তী আর আসিফের বিয়ে নিয়ে।
আসিফ এবং হৈমন্তীর বিয়ে নিয়ে আলোচনা চললেও মিস মারিয়ামের মন পড়ে আছে মেয়ের কাছে। উনার বারবার একই কথা মনে হচ্ছে মেয়ে কি আদৌ তার কথার মান রাখবে ? নাকি বিয়েতে আপত্তি করে বিয়ে নাখচ করবে ? করলেও অবশ্য মিস মারিয়াম জোর করবেন না। উনি কখনোই ছেলে মেয়ের উপর নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দেননি।
ঘর থেকে ত্রস্ত পায়ে বেরিয়ে এলো হৈমন্তী। ওর পিছন পিছন ঝুমুর এগিয়ে আসছে। হৈমন্তী বেরিয়ে আসতেই মিস মারিয়ামসহ সকলের দৃষ্টিই একসঙ্গে তার উপর গিয়ে পড়লো। হৈমন্তীর চোখে মুখে স্মিত হাসি। মেয়ের মুখে হাসি দেখে সস্তির নিশ্বাস ফেললেন মিস মারিয়াম। আলতো হেসে বললেন ‘ কাজী সাহেব বিয়ে শুরু করেন। ‘
চলবে…..
মিফতা তিমু