শিমুল ফুল পর্ব ৩৮

0
233

#শিমুল_ফুল
#৩৮
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর

সাপ্তাহ খানেক হয় সুইটি ঢাকা থেকে এসেছে।সেবার শিমুলের ত্যাড়া কথায় মা মেয়ে চলে গিয়েছিলো।পেশকারা নাতনীকে নিয়ে পুষ্পকে জব্দ করার উপায় খুঁজে।পুষ্প কলেজে যাওয়ার পরে পেশকারা আর সুইটি পুষ্পর রুমে যায়।তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখে পুষ্পকে শিমুল কি এনে দেয়।ওয়ারড্রোবে তিন রকমের বিস্কুট,চানাচুর,চকলেট আরো হাবিজাবি খাবার জিনিস পায়।এসব দেখে তো পেশকারার গায়ে আ/গুন জ্ব/লে উঠে,বউকে লুকিয়ে খাবার এনে খাওয়ায়!পেশকারা রা/গে গজগজ করতে করতে অপেক্ষা করে পুষ্প কলেজ থেকে বাড়ি আসার।কি তা/বিজ করলো যে শিমুল এমন হয়ে গেলো?যেনো পুতুল!

পুষ্প বাড়ি আসে।একা নয় শিমুলও সাথে আসে।ড্রয়িংরুমে নিজের রাত্রিসঙ্গি খাবাবের ডিবিগুলো দেখে থমকে দাঁড়ায়।মাথা ঘুরিয়ে শিমুলের দিকে তাকায়।শিমুলের স্থির চাহনী ডিবিগুলোর উপরে।এগুলো তো ওয়্যারড্রোবে থাকার কথা এখানে কেনো?বিয়ের পরেই সে খেয়াল করে রাত্রে পুষ্পর ক্ষুধা লাগে।শরীরের টানে পবিত্র মিলনের কারনেই কিনা মেয়েটার ক্ষুধা লেগে যায়,উশখুশ করে,ছটফট করে খালি পানি খায়।শুধু পুষ্পরই না শিমুলেরও একি অবস্থা।তাই এগুলা কিনে এনে রেখেছে,পুষ্প গভীর রাতেই বসে বসে এগুলো খায়।বউটা যেহেতু তার,যত্নটাও তো তাকেই নিতে হবে!কিন্তু পেশকারার সামনে এগুলো কিভাবে এলো?শিমুল কিছু বলার আগেই পেশকারা রাবেয়াকে ডাকে।রাবেয়া এসে এগুলো দেখে বিরক্ত হয়।এগুলো কি তার জানা আছে,পুষ্প বিস্কুট নেয়ার জন্য এই ডিবিগুলো নিয়েছিলো।বিরক্তভরা চোখে পেশকারাকে দেখে।পেশকারা বলে,
“এগুলো কি দেখেছো?তোমার পোলা বউকে লুকাইয়া খাওয়ায়।”

রাবেয়ার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য পেশকারা তাকিয়ে থাকে।রাবেয়া গলা ঝেড়ে বললো,
“আম্মা আমিই এনে দিয়েছিলাম।”

শিমুল বললো,
“আমার আর পুষ্পর ব্যাপারে তোমার আর তোমার নাতনীর এতো ইন্টারেস্ট কেন?কি সমস্যা?”

“তুই লুকাইয়া কেন খাবার আনিস?”

শিমুল তার আম্মার দিকে তাকায়।তারপর রয়েসয়ে বললো,
“আমার বউয়ের রাতে খেতে ইচ্ছা করে তাই এনেছি।কিন্তু তুমি আমার রুমে কেন ঢুকেছো?কি মতলব!”

পেশকারা থমথম খেয়ে যায়।তারপরও গম্ভীর গলায় বললো,
“এমনি ঢুকেছি।আর তুই বহুত সেয়ানা হয়ে গেছিস,রাতের খাবার খাওয়ার পরে আবার কিসের ক্ষুধা?বাপের বাড়িতে খাইতে পায়নি তো তাই এমন নাদানিপানা করে।”

রাবেয়া সরে পড়ে।এই মহিলার উপরে সে বিরক্ত।সবাইকে তার মতো চালাতে চায়,আগের কালে পেরেছে কিন্তু এখনের ছেলে মেয়ে স্বাধীনচেতা নিজের জীবনে অন্যকারো হস্তক্ষেপ পছন্দ না।রাবেয়া চলে গেলে শিমুল এগিয়ে যায় পেশকারার কাছে গিয়ে বলে,
“রাতে কিসের ক্ষুধা লাগে বুঝনা?ক্ষুধার কাজ করে তাই ক্ষুধা লাগে।কেন দাদার সাথে তুমি কিছু করো না?নাকি আমার সাথে করার ইচ্ছা?ইচ্ছা থাকলে বলো আমিও তোমাকে রাতে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেই।”

পেশকারা আগুন চোখে শিমুলকে দেখে।সুইটি দৌড়ে চলে যায়।শিমুল পেশকারার গালে হাত ভুলিয়ে বললো,
“খাবে বিস্কুট?খেলে রুমে আসো,ক্ষুধা লাগিয়ে দেই!”

পেশকারা অগ্নিচোখে পুষ্পকে দেখে চলে যায়।পুষ্প মুচকি হেসে ডিবিগুলো হাতে নিয়ে রুমে যায়।শিমুলটা এতো লাগামছাড়া কথা বলে!যেমন বুবু তেমনি নাতী।

পলাশ আর নিধির জীবন খুবই সুন্দর করে যাচ্ছে।দুজনের মিষ্টি খুনসুটি,একসাথে রান্না সব মিলিয়ে সুখী পরিবার।দুজনে একসাথে রান্না করে খাবার খায় একসাথে কলেজে যায়।নিধি পলাশের খুব ছোট ছোট ব্যাপারগুলো খেয়াল রাখে তেমনি পলাশ।মাঝে মাঝে নিধি রাতে ফুপিয়ে উঠে।পলাশ ব্যস্ত হয়ে জানতে চায়,
“কি হয়েছে।”

“আব্বা আম্মাকে মনে পড়ছে।”

পলাশ ভরসার হাত বাড়িয়ে দেয়।শক্ত করে বুকে জড়িয়ে বুঝায় আমি আছি আল্লাহ চাইলে থাকবো ভয় পেওনা।
মুখে বলে,
“কেঁদো না।”

পলাশের সান্ত্বনা শুনে নিধি চুপ করে।ফিসফিস করে বলে,
“তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না পলাশ।”

“ছাড়বো না।তুমি ঘুমাও।”

“ভালোবাসি।”

“আমিও।”

পরিবার ছেড়ে এই কপোত-কপোতীরা নিজেদের ছোট্ট সংসার সাজিয়ে নিয়েছে।যেখানে সুখের ছড়াছড়ি।আজকাল নিধির মনে হয় এখন ম/রে গেলেও শান্তি।

শুক্রবার।চেয়ারম্যান বাড়িতে গরুর মাংস রান্না হচ্ছে।রাবেয়া নিজ হাতে রান্না করে।বারোটার আগেই রান্না শেষ হয়।শাশুড়ীর অগোচরে একটা বক্সে এক বক্স মাংস তরকারী আলাদা করে ফ্রিজে রেখে দেয়।উনার মনের ভাব শিমুলকে দিয়ে পলাশের বাসায় পাঠাবেন।তিনমাস হতে চললো পলাশের খাওয়া দেখা হয় না যদিও নিধি পলাশের খুব ভালো যত্ন নেয় কিন্তু মা তো মনটা পু/ড়ে।এরমাঝে ডাক্তারের নাম করে এক বিকালে পুষ্পকে বগলদাবা করে পলাশের বাসায় গিয়েছিলেন।নিধি যে কি খুশী হয়েছিলো তা একমাত্র আল্লাহ জানে।পাগল মেয়ে পারেনা রাবেয়াকে কোলে নিয়ে ফেলে একটু পরে পরে কেমন বাচ্চার মতো চুমু খেয়ে মিষ্টি করে হাসে।পুষ্প যে তার ছাত্রী সে কথা ভুলে দুই জা হাসিখুশি তে সময় কাটিয়েছে।রাবেয়া দুই বউয়ের মিল দেখে খুব খুশী।রাবেয়ার মনে হয় শাশুড়ী যদি ভালো হয় তাহলে বউ ভালো হতে বাধ্য।কারণ মেয়েটা তো বাবার ঘরে মাত্র মেয়ে ছিলো উড়ার জন্য পাখা ছিলো এই পারিবারিক চাপ তো সে আগে পায়নি কিন্তু শাশুড়ী তো মেয়ে থেকে বউ হয়েছে শাশুড়ীর সাথে সংসারে থেকেছে তারপর নিজে শাশুড়ী হয়েছে।তাহলে কে বেশী অভিজ্ঞ?অবশ্যই শাশুড়ী।শাশুড়ী বউকে আপন করে নিলেই তো মেয়েটা নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে,আদর দিয়ে বুঝালে,শিখালে,দেখিয়ে দিলে মেয়েটা সব পারবে।একসময় নিজের মেয়ের চেয়েও আপন ওই পরের বাড়ির মেয়েটাই হবে,পরিবারের রীতিমতো নিজেকে তৈরি করে খাঁটিসোনায় পরিণত হবে।কিন্তু শাশুড়ী তা না করে যদি রা;গ দেখায়,কথায় কথায় খোটা দেয়,অপ/মান করে কথা বলে,বউকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে,তার শাশুড়ী যেমন তাকে কষ্ট দিয়েছে সেই প্রতিশোধ নিতে চায়,পরের বউয়ের তুলনা দেয় তাহলে কিভাবে মেয়েটা শশুড় বাড়িতে খুশী থাকবে?কিভাবে শাশুড়ীকে নিজের মায়ের মতো মানবে?মুখে না বলুক মনে যেই কষ্টের পাহাড় জমে তা সারাজীবন থেকে যায় হয়তো কখনো প্রকাশ করা যায় না কিন্তু এই কষ্টটা সারাজীবন খোঁচায়,জ্বা/লায়।যেমনটা পেশকারার প্রতি রাবেয়ার।রাবেয়া পেশকারাকে আম্মা বলে কিন্তু মনের কষ্ট কি কমেছে?কমেনি হয়তো সারাজীবন চাইলেও কমানো সম্ভব না।রাবেয়া তার বউদের সাথে এমন করবে না তার মেয়ে নেই এই দুটো তার মেয়ে।এসব ভাবতে ভাবতে রাবেয়ার চোখে পানি আসে।আহা!যৌবনের সবটা সময় শাশুড়ীকে ভ/য় পেয়েই কাটিয়ে দিলো,নিজের ইচ্ছামতো কিছুই করা হয়নি,বুকচিড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।

দুপুরে খাওয়ার টেবিলে সবাই খেতে বসেছে।রাবেয়া নামায পড়ছে বিধায় আসতে একটু সময় লাগছে।পুষ্প আর ফুলি সব টেবিলে নিয়ে আসে।শিমুলের পাশের চেয়ার খালি পুষ্প মুচকি হাসে।আজকে পাশে বসতে বলবে এটা নিশ্চিত।সবাই খাওয়া শুরু করলে শিমুল চেয়ারে বসতে বলে,পুষ্প বসে।শিমুলের প্লেটে গরুর মাংস তুলে দেয় এই কয়েকমাসের সংসারে পুষ্প বুঝে গেছে শিমুল গরুর মাংস অনেক পছন্দ করে,যেদিন গরুর মাংস রান্না হয় শিমুল একপ্লেট ভাত বেশী খায়।শিমুল খেতে খেতে পুষ্পকে ভাত নিতে ইশারা করে।পুষ্প ভাত নেয় এখন কি নিবে বুঝে উঠতে পারেনা।তার প্লেটের দিকে পেশকারা তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে থাকে,এভাবে কেউ তাকিয়ে থাকলে গলা দিয়ে ভাত নামে না।সে আড়চোখে তার শাশুড়ীকে খুঁজে রাবেয়া মাত্র এসে চেয়ার টেনে বসেছে।সবসময় রাবেয়া পুষ্পকে সব দিয়ে দেয় পেশকারার ভ/য়ে যে পুষ্প ঠিকঠাক খাবার প্লেটে নেয় না এটা রাবেয়া জানে তাইতো নিজ উদ্যোগে বউকে এটা সেটা তুলে দেয়।আজকে পুষ্প কি করবে বুঝতে পারেনা।লবন দিয়ে ভাত মাখিয়ে জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢালে তারপর ঢকঢক করে পানি খায়।সুইটির প্লেটে একগাদা মাংস দিয়ে বললো,
“খা বইন।”

শিমুল পুষ্পর প্লেটের দিকে তাকিয়ে বললো,
“কি হলো?মাংস নাও।”

পুষ্প কিছু বলার আগে পেশকারা বাসি তরকারীর বাটি এগিয়ে বললো,
“বাসি তরকারী আগে খেয়ে শেষ করুক।কতোখানি তরকারি ফালাবে নাকি?”

শিমুল গম্ভীর গলায় বললো,
“বাসি তরকারী রাতে খাবে।এখন মাংস নাও।”

পুষ্প কি করবে বুঝে না।সে কিছু বুঝে উঠার আগেই পেশকারা নিজ হাতে বাসি তরকারীর অর্ধেক পুষ্পর প্লেটে দিয়ে বললো,
“জামাইর বাড়িতে এসে নতুন নতুন তরকারী খাওয়ার অভ্যাস প্লাটাও।আগে পুরাতনগুলো শেষ করতে হবে,এটাই নিয়ম।”

না চাইতেও পুষ্পর চোখে পানি চলে আসে।এমন না সে বাসী তরকারি খায় না কিন্তু আজকে সবার সামনে এমন ব্যবহারে পুষ্পর ঠোঁট মৃদু কেঁপে চোখে পানি টলটল করে উঠে।এই ভগ্নদশা শিমুলের সামনে আনতে চায় না।তাই নিজেকে লুকাতে বাসী টমেটো তরকারী দিয়ে এক লোকমা ভাত মুখে দেয়।শিমুল পুষ্পর মতিগতি সবটাই লক্ষ করে,তার খাওয়া থেমে যায়,বারবার বুউয়ের নত মুখের দিকে তাকাচ্ছে।পেশকারা থেমে নেই নিজ গলায় কড়কড়িয়ে বললো,
“আমাদের কালে আমাদের শাশুড়ী যা দিতো তাই চুপচাপ খেতাম। এখনের বউদের মতো লজ্জাহীন ছিলাম না এখনের বউয়েরা তো শশুড় মানে না শাশুড়ী মানে না একসাথে খেতে বসে যায় তাও জামাইর সাথে কি বেলাজ লজ্জাহীনের যুগ আসলো।”
থেমে পুষ্পকে বললো,
“খাও না কেন?নাকি গরুর মাংস দেখে বাসি পেটে ঢুকে না!বাপের বাড়িতে কি এর চেয়ে ভালো খেতে নাকি?কোন বাড়ি থেকে এসেছো জানা আছে।যত্তঢং।”

পুষ্পর চোখ দিয়ে ভাতের প্লেটে টপটপ পানি পড়ে।মাথা নিচু করেও পুষ্প বুঝতে পারছে সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে।সবার সামনে এগুলা বলাতে লজ্জায় তার ইচ্ছে করছে ম/রে যেতে।খেতে বসে এতো অপ/মান!রাবেয়া ছেলের চোখের ক্রো/ধ ঠিক বুঝে গেলো ব্যস্ত গলায় বললো,
“আম্মা থামেন তো।যার যেটা ইচ্ছা খাক।”

পেশকারা খেকিয়ে বললো,
“কেনো বাসি তরকারী কি খা/রাপ নাকি?তোমরা যেভাবে ননীর পুতুলের মতো তোলামেশা করো মনে হয় খুকী।এতো খুঁকী হলে জামাইর…”

পেশকারার কথা শেষ হবার আগেই শিমুল তার কাচের প্লেট সশব্দে ফ্লোরে ছুড়ে মারে।ঝনঝন করে প্লেট টুকরো টুকরো হয়ে যায় ভাত মাংস এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। সে চেয়ার ঢেলে উঠে দাঁড়ায়।শিমুলের এমন কাজে সবাই হতভম্ব।পুষ্প মুখে এটো হাত চেপে ধরে।শিমুল ফোসফোস করে পুষ্পর দিকে হাত উঁচিয়ে বললো,
“এটা কি কুত্তা ধরে এনেছি?হ্যাঁ!হাতে বিস্কুট নিয়ে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই নাচাবে।তোমরা ওর সাথে কি করো আমি দেখিনা?পাগল পেয়েছো?”

রাবেয়া ছেলেকে মানাতে চাইলে শিমুল শুনে না।পেশকারাও থামে না।পুষ্প উনাকে দেখে ভাবে একটা মহিলা কতোটা নি/লজ্জ আর বেহায়া হলে সবসময় পুষ্পর পিছনেই লেগে থাকে।পেশকারা বললো,
“তুই এভাবে কথা বলতেছিস কেন?মহিলাদের কথায় কান কম দে বউরে শা/সনে রাখ।”

শিমুল দাঁত কিড়মিড়িয়ে বললো,
“তুমি আমাকে এসব শিখাবে?আগে নিজে শিখো কিভাবে মানুষকে মূল্য দিতে হয়।বে/য়াদব মহিলা।”

পেশকারা চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে পুষ্পর প্লেটে মাংসের বাটি ঢেলে দেয়।উনার কাজে পুষ্প হতভম্ব হয়ে যায়।গালে স্পষ্ট পানির রেখা।
“খা।ইচ্ছামতো খা।তোর জামাই তো পাগল হয়ে গেলো।সবগুলো মাংস খেয়ে উঠবি।খা।”

পুষ্প অবাক হয়ে শিমুলের দিকে তাকায়।শিমুলের চোখ তখন অ/গ্নি/বর্ণ ধারন করেছে।সে রাবেয়ার দিকে ফিরে বললো,
“মা এই মহিলারে থামতে বলো।”

রাবেয়া নিজেও হতভম্ব।
“আম্মা এগুলো কি করছেন?মাথা ঠিক আছে।”

শিমুল পা দিয়ে চেয়ারে লা/থি মে/রে চেয়ার উল্টে ফেলে হনহনিয়ে রুমে চলে যায়।শিমুল না খেয়ে চলে যাওয়াতে পুষ্পর আরো কষ্ট হয়।প্লেটের মাংসের দিকে ঝাপসা চোখে তাকায়।এই মাংস নিয়ে এতো কাহীনি!হঠাৎ করেই পুষ্পের তার আম্মাকে মনে পড়ে যায় মাংসের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে কাঁদে।লজ্জায় মাথাটা নিচু করে রেখেছে,বুকে ব্যথা হচ্ছে।তার সাথে আর কেউ এমন ব্যবহার করেনি।পুষ্প উঠে দাঁড়ায়।পেশকারা সেদিকে তাকিয়ে বললো,
“না খেয়ে উঠলি যে!জনমের মাংস খা।”

শওকত হাওলাদারের মনে হলো এটা একটু বেশীই হয়ে যাচ্ছে।পেশকারার দিকে তাকিয়ে বললো,
“আম্মা চুপ করেন না।কি শুরু করলেন।”

পুষ্প মাথা নিচু করেই রুমে চলে যায়।ইশ!এর থেকে ম/রণ ভালো না?

শিমুল পুষ্পর দিকে তাকায়।পুষ্পর হাত ধরে বললো,
“তোকে আমি সুখী করতে পারছিনা পুষ্প।আমি সরি রে।”

পুষ্প শিমুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।বুকে মাথা রেখে বললো,
“তোমাকে পেয়েই আমি খুব সুখী।তুমি এসব কথায় কান দিও না তো।পরিবারে এমন একটু হয়ই।”

শিমুল কাতর চোখে তাকিয়ে থাকে।পুষ্প ঝামেলা পছন্দ করে না এটা শিমুল জানে,তাইতো শিমুলকে ঝামেলা থেকে বাঁচাতে চায়,চুপচাপ সব সয়ে নিতে চায়।দীর্ঘশ্বাস ফেলে পুষ্পর মাথায় চুমু দেয়।পুষ্প নিঃশব্দে কাঁদে।তার আম্মাকে মনে পড়ছে বিয়ের আগে তার আম্মা রান্না হলেই খাবার খেতে ঘ্যানঘ্যান করতো আর এখন….

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here