শত_ঘৃণার_মাঝেও_ভালোবাসি Part.1

0
4091

খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে, বৈশাখ মাস বলে কথা। এই প্রবল বৃষ্টিতে হাতে লাগেজ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দিয়া। প্রথমে বৃষ্টিটা ভালো লাগলেও এখন ঠান্ডার প্রকোপ বেড়েছে। এখন বৃষ্টিটা সত্যি অসহ্যকর লাগছে। এখনো রাত হতে অনেক দেড়ি, তাও বৃষ্টিতে অন্ধকার হয়ে গেছে।

একা হেঁটে যাচ্ছি, ঠিক কোথায় গিয়ে পৌঁছাবো জানি না। আজ যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেয় আমার। না হাতে টাকা আছে। বৃষ্টিতে ভিজে শরীর নিস্থর হয়ে গেছে, কিন্তু এই বৃষ্টি থামার নাম নিচ্ছে না। আমার পা আর চলছে না।

একটু থেমে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছি। শুনেছি বৃষ্টি নাকি আল্লাহর রহমত,আর এই বৃষ্টিতে ভিজে দোয়াটা পড়ে কিছু চাইলে নাকি সত্যি হয়। আমি এখন একটা নিরাপদ আশ্রয় চাই৷

তখনি অনুভব করলাম আমার গায়ে আর বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে না, কিন্তু বৃষ্টি পড়ার আওয়াজ এখনো আছে। চোখ খুলে উপরে তাকালাম। কেও একজন আমার উপরে ছাতা ধরে আছে। হুহহ আমার এমন আপনজন আবার কোথা থেকে এলো।

পিছনে ফিরে তাকানোর সাথে সাথে আমার ভয়ে শরীর কেঁপে উঠলো। হাত থেকে লাগেজটা নিমিষে পড়ে গেলো। আমি কি ঠিক দেখছি তো। আমার সামনে আহান ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এটা বিশ্বাস করা আমার পক্ষে যতোটা কঠিন ঠিক ততোটাই ভয়ের।

দিয়া,,,,,,,,,, আ আ আপনি।

আহান,,,,,,,, গাড়িতে গিয়ে বস।

দিয়া,,,,,,,, কি কি কিন্তু আপনি।

আহান,,,,,,,,,, চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসে পড়৷

দিয়া,,,,,,,,,, কোথায় নিয়ে যাবেন।

আহান,,,,,,,, আমার বাড়িতে।

দিয়া,,,,,,, আমি যাবো না।

আহান লাগেজটা উঠায়। উঠিয়ে গাড়িতে রেখে দিলো। তারপর গাড়ির সামনের দরজাটা খুলে দাঁড়িয়ে আছে। আমিও চুপচাপ দাঁড়িয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। আসছি না দেখে আহান আমার দিকে চোখ তুলে তাকায়। ওনার তাকানো ভঙ্গি বলে দিচ্ছে, আমি যদি গাড়িতে না উঠি তাহলে আমার সাথে ঠিক কি হতে পাড়ে।

আমি আর দাঁড়িয়ে না থেকে চুপচাপ গাড়িতে বসে পড়লাম। আহান এসে গাড়ি ড্রাইভ করছে। আমার চোখ বার বার ওনার দিকেই যাচ্ছে। কিন্তু আহান একবারো আমার দিকে তাকাচ্ছে না।

তিন বছর পর দেখছি মানুষটাকে। এখনো আগের মতোই রাগ আছে। চেহেরায় সেই মায়াটা এখনো আছে। আগের থেকে অনেক হেন্সাম হয়ে গেছে। কিন্তু এই চেহেরায় আমার জন্য কোনো ভালোবাসা দেখতে পারছি না। শুধু ঘৃণা দেখতে পারছি।

আমার মতো মেয়েকে ঘৃণা করারি কথা৷ তবে ওনি আমাকে ওনার বাসায় কেনো নিয়ে যাচ্ছে। হয়তো আমার ভুলের শাস্তি দেওয়ার জন্য। ওনার সব শাস্তি আমি মাথা পেতে নিবো। আহান বললো ওনার বাসায় নিয়ে যাচ্ছে তার মানে কি খালামনি, খালু ওনাকে মাফ করে দিয়েছে৷

এমন হলে আমার থেকে খুশি আর কেও হবে না। কারন ওনার লাইফে যা কিছু হয়েছে সব কিছুর জন্য শুধু আমি দায়ী। কিছু ক্ষন পর একটা গেইট এর সামনে এসে গাড়ি থামে।

দিয়া,,,,,,,,, ক কোথায় এ এসেছি আমরা।

আহান,,,,,,,,, আমার বাসায়।

দিয়া,,,,,,,,, এটা তো খালামনির বাসা না, আপনি কি খালামনির বাসায় যাবেন না।

এটা শুনার পরে আহান আমার দিকে তাকায়, তাকিয়ে কোনো জবাব না দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে যায়। নেমে আমার সাইডের গাড়ির দরজা খুলে, আমি ও বেরিয়ে আসি।

বাড়িটা বেশ বড় আর সুন্দর। আহান ভাইয়া আমার লাগেজটা নিয়ে ভিতরে যাচ্ছে আর আমি তার পিছনে পিছনে। বাহিরের দরজায় ফিঙ্গার পিন্ড মেশিন লাগানো, যেটাতে আহান আঙুল রাখতেই দরজা খুলে যায়।

বাহিরে থেকে ভিতরটা আরো বড়। এতো বড়ো বাড়িতে আহান ভাইয়া একা থাকে নাকি আবার বিয়ে করছে। না না বিয়ে করেনি, বিয়ে করলে ওনি আমাকে এখানে নিয়ে আসতো কেনো। কিন্তু আহান ভাইয়ার যেটা খুশি সেটাই করেন কারো কথা মানে নাকি।

আমি এসব ভাবতে থাকি আর নিচে তাকিয়ে চলতে থাকি। হঠাৎ করে আহান ভাইয়া দাঁড়িয়ে যায় আর আমি ওনার পিঠের সাথে ধাক্কা খায়। তাড়াতাড়ি সরে গিয়ে সরি বলি। কিন্তু তখনো আহান ভাইয়া বেশ শান্ত ছিলো। আর অন্য দিকে তাকিয়ে বললো।

,,,,,,,,, এটা তোর রুম, এখানে তুই থাকবি। চেঞ্জ করে নে, আমি উপরের রুমে থাকি কিছু লাগলে বলিস।

আমি শুরু মাথা নাড়ায়, আহান ভাইয়া এটা বলে চলে যায়। আমি লাগেজটা খুলি, খুলে দেখি বেশির ভাগ জিনিস ভাবে ভিজে গেছে।আমার বই গুলো ভিজে গেছে।

দিয়া,,,,,,,,, আয় আল্লাহ আমার বই গুলো ভিজে গেছে,এখন এগুলো যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে নতুন কিনার জন্য আমি আবার টাকা পাবো কিভাবে। দূরর।

তাড়াতাড়ি বই গুলো আশেপাশে মেলিয়ে দিয়। আর একটা শুকনো কাপড় পড়ে বাকি ভিজা কাপড় গুলো বারান্দায় মেলাতে দিয়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি বৃষ্টি এখনি থামেনি। আমার পুরানো দিন গুলোর কথা মনে পড়ছে।

আমি দিয়া, এখন বয়স ২১ বছর। আমি ডক্টর লাইনে পড়াশোনা করছি। এখনো আমার ডক্টর হতে দু বছর বাকি আছে। আহান আমার খালার ছেলে, বর্তমান বয়স ২৬। আমার বয়স যখন দশ বছর তখন থেকে আমি আহান ভাইয়াদের বাসায় থাকতাম।

আমার মা মারা যাওয়ার পর সৎ মা আমার উপর অনেক অত্যচার করতো, এটা দেখে খালামনি আমাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে। খালুর অনেক বড়ো বিসনেজ ছিলো। আর আহান ছিলো বড় ছেলে। আহানের একটা ছোট বোন আর ভাই আছে।

সবাই আমাকে অনেক আদর করতো, অনেক ভালোবাসতো। ভালোবেসে আমাকে এতো গুলো বছর নিজের কাছে রেখেছে, কিন্তু এর মর্যাদা আমি দিতে পারিনি। আমাকে আশ্রয় দেওয়ার মাশুল এখনো পর্যন্ত খালামনি দিচ্ছে।

গিয়ে বিছানায় একটু শরীরটা লাগাতেই ঘুম চলে আসলো। চোখ খুলে দেখি ৮ টা বাঝে, লাফ দিয়ে উঠি। উঠে একটু ফ্রেশ হয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছি, বাহিরে যাবো কি যাবো না। কিছু ক্ষন পর অনেক ভাবনা চিন্তার পরে বের হয়।

আস্তে আস্তে আগে যায়, গিয়ে দেখি আহান ভাইয়া সোফায় একটা ফাইল নিয়ে বসে আছে। একটু ভালো করে খেয়াল করে দেখি আহান ভাইয়া অন্য দিকে তাকিয়ে কি যেন গভীর মনে ভাবছে।

আবার আমার ভাবনা শুরু, সামনে যাবো কি যাবো না, এটা নিয়ে। কিছু ক্ষন পরে ভাইয়া আমাকে খেয়াল করে সোজা হয়ে বসে। আর গভীর কন্ঠে বলে,,,,,,, বস এসে।

আমিও চুপচাপ সোফায় গিয়ে বসি। অনেক ক্ষন আমাদের মাঝে কোনো কথা হয় না। দু’জনেই চুপচাপ। আহান ভাইয়া ফাইলের দিকে তাকিয়ে আমাকে বলছে

আহান,,,,,,,,,,, আমাদের বাসা থেকে কেনো চলে গেলি, আমি যাওয়ার পর তোকে কি কেও কিছু বলেছে। (গভীর কন্ঠে)

দিয়া,,,,,,,,, না কেও কিছু বলেনি।

আহান,,,,,,,,,,,তাহলে বাসা ছেড়ে হোস্টেলে কেনো চলে গেলি।

,,,,,,, আমার জন্য আপনাকে বাড়ি ছাড়া হতে হয়েছে, সেখানে আমি কি করে থাকবো। দোষ তো সব আমারি ছিলো।

,,,,,,,,,,, কিন্তু সেটা তো কেও জানতো না।

,,,,,,,,,,কিন্তু আমি তো জানতাম। অনেক সত্যিটা বলতে চেয়েছি কিন্তু সাহস হয়নি। তাই বাবার সাথে কথা বলি বাবা বলেছিলো যে মাসে মাসে আমার জন্য টাকা পাঠাবে। তাই চলে আসি সেখান থেকে।

,,,,,,ওও (ফাইলে নজর দিয়ে)

,,,,,,, আচ্ছা এ একটা ক কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো।

,,,,,,,হুমম বল (ফাইলের দিকে নজর দিয়ে)

,,,,,,,,,,,,আপনি যাওয়ার পরে যে ভিডিওটা আমার কাছে আসে, সেটা কি আপনি পাঠিয়েছেন।

,,,,,,,,,,, হুমম।

,,,,,,,,,,,, এর পর থেকে ইয়াসকে আর দেখা যায়নি তার পিছনে কি,,,

,,,,,,,,, চিন্তা করিস না মেরে ফেলেনি,, শুধু পুলিশে দিয়েছি।

,,,,,,,,,,,, ইয়াস জেলে ( অভাক হয়ে)

আহান ফাইল থেকে নজরটা সরিয়ে আমার দিকে দেখে আর রাগী কন্ঠে বলে,,,,,,,, কেনো অনেক কষ্ট হচ্ছে বুঝি ইয়াসের জন্য।

ওনি যেভাবে কথাটা জিজ্ঞেস করলেন আমার মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বের হচ্ছে না। আহান ফাইল বন্ধ করে দাঁড়ায় সাথে সাথে আমিও দাঁড়িয়ে পড়ি ভয়ে।

আহান,,,,,,,,, চুপচাপ খাবার খেয়ে শুয়ে পর।

দিয়া,,,,,,,,, আপনি খাবেন না।

,,,,,,,,,,,, না, আমি খেয়ে নিয়েছি।

বলে যেতে নেয়, আমি আহানকে আবার ডাক দেয়।

,,,,,আহান ভাইয়া।

,,,,,,,,,কি

,,,,,,,,,,, আ আপনি কি আমাকে মাফ করে দিয়েছেন।

আহান শুধু দিয়ার দিকে তাকায়, তাকিয়ে তার চোখ সরিয়ে কিছু না বলে উপরে চলে যায়। দিয়া শুধু আহানের যাওয়া দেখে। আহান চলে গেলে মাথা নিচু করে বসে থাকে।

আহান তার রুমের ভিতরে গিয়ে দেওয়ালে কয়েকটা ঘুষি দেয়। রাগে কি করবে নিজেও বুঝছে না।

আহান,,,,,,,,,,, এতো কিছু হওয়ার পরেও ঐ ইয়াসের জন্য তোর কষ্ট লাগে। ওর জন্য এখনো তোর মনে জায়গা আছে। এখন দেখা যায় আমিই পাগল। আমার প্রতিটা কষ্টের মূল্য তোকে দিতে হবে। আই হেট ইউ।

আহান বারান্দার গ্রিল শক্ত করে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

,,,,,
দিয়া,,,,,,,,,,,, তারমানে এখনো আমাকে মাফ করতে পারেনি। মাফ করবেই বা কিভাবে আমি তো কোনো দিন মাফ চাইওনি। আর ঐ ইয়াসকে শুধু পুলিশে কেনো দিলো ওকে তো ফাঁশি দেওয়া দরকার। আল্লাহ আরেকটা ওয়িশ আছে, পিল্জ কোনো ভাবে আমাকে এখানে রেখে দাও তাহলে যদি আমি আহান ভাইয়ার রাগটা ভাঙাতে পারি।

অনেক ক্ষুধা লেগেছে তাই না ভেবে খেয়ে ফেলি, একা একা বসে আছি, এখন তো ভয় করছে এতো বড় বাড়িতে আমি একা একা মাঝখানে বসে আছি, তাই দৌড়ে রুমে চলে গেলাম।

গিয়ে বই গুলো নিয়ে একটু বসলাম। পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেও পারিনি।

সকালে সূর্যের আলো চোখে মুখে তীব্র ভাবে পড়ায় ঘুমটা ভেঙে যায়। আমি তাড়াতাড়ি উঠি, আমাকে আবার কলেজে যেতে হবে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে ড্রয়িংরুমে যায়।

নিচে যেতেই আহান খাবারের প্লেট নিচে ছুরে ফেলে দিলো। আর জোরে জোরে চিৎকার করে বলতে থাকে,,,,,,,, এটা কোনো খাবার হলো, কে বানিয়েছে এটা কোনো টেস্ট নেয়। এখন কি আমি অফিসে না খেয়ে যাবো।

দিয়া,,,,,,,,,,, আমি কিছু একটা তাড়াতাড়ি বানিয়ে আনছি।

দেখলাম আহান কোনো কথা বললো না, তাই তাড়াতাড়ি গিয়ে পাস্তা তৈরি করে ফেলি, আহান পাস্তা খেতে খুব ভালো বাসে। পাস্তা আহানের সামনে রাখলাম, আহান কিছু ক্ষন তাকিয়ে থেকে পড়ে খেতে থাকে। খেতে খেতে বলে,,,,,,,,,, রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছিস।

,,,,,,,,,,,, কলেজে।

,,,,,,,,,,, কোথায় থাকবি কি চিন্তা ভাবনা করেছিস।

,,,,,,,,,,, বাবা এক মাস ধরে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে, ফোন ও তুলছে না। মনে হয় ছোট মা না করেছে। এখন ভাবছি কোনো পার্ট টাইম কোনো জব পেলে করবো।

,,,,,,,,,, হুমম,তাতে তোর ডক্টরি পড়ালেখার খরচ হবে। তার থেকে ভালো আমার কাছে তোর জন্য একটা জব আছে।

,,,,,,,,,,, কি।

,,,,,,,,, আমি তোর পড়াশোনা আর তোর যাবতীয় খরচ চালাবো, আমার এখানে কাজ করতে হবে।

,,,,,,,,,,কাজটা কি (সন্দেহর নজরে)

,,,,,,,,,, আমার এখানে কাজের লোক হিসাবে থাকতে হবে, বাড়ির সব কাজ করতে হবে, আমার খাবারের খেয়াল রাখতে হবে আর আমার হুকুমের পালন করতে হবে।

,,,,,,,,,,, (প্রথম কথা, আমার কাছে আর কোনো অপশন নেয়, যাওয়ার মতো কোনো জায়গাও নেয়। বাবাও গ্রামে থাকে। আর দ্বিতীয় কথা এখানে থাকলে আমি আহানের রাগ ভাঙাতে পারবো। কিন্তু কাজের লোক হিসেবে,,, থাক কি হবে রাজি হয়ে যায়) ঠিক আছে আমি রাজি।

,,,,,,,,ওকে যা, নিজের মুখ ভালো করে ধুয়ে কলেজে যা।

,,,,,,,,,আমি মুখ ধুয়েই এসেছি।

,,,,,,,,, চুপচাপ মুখ ধুয়ে আয়, কলেজে পড়াশোনা করতে যাস নাকি মডেলিং করতে।

,,,,,,,,,,(আসতে না আসতে শুরু হয়ে গেছে) শুধু একটু লিপস্টিক লাগিয়েছি আর কাজল, এটুকু তো চলে।

আহান রাগে উঠে দাঁড়ায়, দিয়ার আত্মায় পানি নেয়, আহান একটা টিস্যু পেপার নিয়ে দিয়ার মুখ চেপে ধরে ওর লিপস্টিক মুছে দেয়।

আহান,,,,,,,,,, এবার ঠিক আছে।

দিয়া,,,,,,,,,(আমার মুখ মাখিয়ে ঠিক আছে) আমি মুখ ধুয়ে আসছি।

দিয়া তাড়াতাড়ি গিয়ে মুখ ধুয়ে আসে। আহান দিয়াকে গাড়িতে বসতে বলে।

দিয়া,,,,,,,,,, আমি যেতে পারবো।

আহান,,,,,,,,,,, বসতে বলেছি। (দিয়ার দিকে তীক্ষ নজরে তাকিয়ে)

দিয়া তাড়াতাড়ি গিয়ে বসে।

আহান,,,,,,,,,সিট বেল লাগা।

দিয়া সিট বেল নিয়ে গুতাগুতি করছে কিন্তু লাগাতে পারছে না। আহান বিরক্ত হয়ে দিয়ার হাত থেকে সিট বেলটা নিয়ে লাগাতে থাকে। হঠাৎ করেই আহানের এতো কাছে এসে পড়ায়,দিয়ার নিশ্বাস ভাড়ি হয়ে যায়। হার্ট বির্ড বেড়ে যায়, মুশকি হেঁসে দিয়া আহানের দিকে তাকিয়ে আছে।

আহান দিয়ার দিকে তাকায় আর শক্ত গলায় বলে,,,,,,,এতো হাসির কিছু হয়নি এখানে, এসব কিছু আমি ভালোবেসে করছি না,,, একটা কথা মাথায় রাখিস ঘৃণা করি তোকে।

বলে সোজা হয়ে বসে।

দিয়া,,,,,,,এতো ঘৃণা করেন তাহলে আমাকে আশ্রয় দিলেন কেনো। যেতে দিলেই পারেন।

আহান,,,,,,,,,, এতো সহজে তোকে যেতে দিবো ভাবলি কি করে,, তুই যেটা করেছিস তার জন্য শাস্তি তো পেতেই হবে।

দিয়া,,,,,,,,,ও তাহলে আপনি আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য রেখেছেন।

আহান,,,,,,,,,, একটু একটু করে শাস্তি দিবো তোকে। যতোদিন না তোর শাস্তি পূরণ হচ্ছে ততোদিন কোথাও যেতে দিবো না। তোর জীবন এখন থেকে আমার নিয়মে চলবে।

দিয়া,,,,,,,,যদি চলে যায়, আমি আপনার কাছ থেকে।

আহান,,,,,,,,,, (হালকা হেঁসে) তোর কি মনে হয় এতো সহজে যেতে পারবি আমার কাছ থেকে। না চাইলে তুই কোথাও যেতে পারবি না, আহানকে ভুলে গেছিস। আমি কি সেই আগের আহানি আছি। সো আমাকে আগের মতো হতে বাধ্য করিস না। তোকে আমি কলেজে দিয়ে আসবো আর আমিই নিয়ে আসবো, অন্য কারো সাথে আসার কথা ভাববিও না।

বলে জোরে গাড়ি চালাতে থাকে। দিয়া চুপচাপ বসে আছে। মন খারাপ করে মাথা নিচু করে বসে আছে। আহান দিয়াকে কলেজের সামনে নামিয়ে দেয়। দিয়া সোজা ভিতরে চলে যায়। তখন আহান একজনকে ফোন করে।

আহান,,,,,,,,,,তোমরা সবাই কোথায়।

,,,,,,,,,,,স্যার আমরা আপনার আশেপাশেই আছি।

আহান,,,,,,,,,, এখানেই থাকবে, দিয়ার উপর নজর রাখবে। ওর আশেপাশে কাওকে যদি সন্দেহ হয় তাহলে আমাকে জানাবে। আর দিয়ার পুরো খেয়াল রাখবে যাতে ওর কোনো ক্ষতি করতে কেও না পারে। দিয়ার কিছু হলে কিন্তু আমি আপনাদের ছাড়বো না।

,,,,,,,,,, চিন্তা করবেন না স্যার আমরা দিয়া মেম এর আশেপাশেই থাকবো, আর কেও ওনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

,,,,,,,,,হুমম গুড।

আহান ফোন রেখে অফিসে চলে যায়।

[ আপনাদের জন্য নতুন গল্প নিয়ে এসেছি, আশা করি ভালো লাগবে। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করুন, যাতে আমি পরের পর্ব দিতে পারি]

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,

#শত_ঘৃণার_মাঝেও_ভালোবাসি
Part.1
#Maishara_Jahan.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here