লাভ_ গেম পর্ব 20

0
1535

#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন

২০.

“আমার বাচ্চা চাই না।” রুশা খুব সহজ আর স্বাভাবিকভাবেই কথাটা বলল। কিন্তু ওর এই কথা আদ্রিশ ঠিক হজম করতে পারল না। রুশা ঠান্ডা মাথায় এই ছোট কথা দ্বারা বড় একটা খুন করে ফেলল। আদ্রিশের চোখ মুখে যে খুশির আভা ফুটে উঠেছিল নিমিষেই
তা মুছে গেল। ওর চোখ মুখ শক্ত আকার ধারণ করল।

দু পা এগিয়ে ওর কাছে গিয়ে বলল,
“বাচ্চা চাই না মানে কী?”

“মানেটা খুব সহজ। আমি বাচ্চা চাই না।”

“কেন চাও না হাহ?”

“কেন চাইব? আমি এই বাচ্চা জন্ম দিতে পারব?”

“কেন পারবে না? সমস্যাটা কোথায়?”

“বাচ্চা জন্ম দেওয়ার জন্য আমি বেঁচে থাকব তো? তোমার শত্রুরা আমাকে বাঁচতে দেবে? বিশেষ করে জারিফ?”

আদ্রিশ সাথে সাথে বলল,
“জারিফকে আমি মেরে ফেলেছি। তুমি এখন সেফ।”

রুশা মৃদু হাসল। আদ্রিশ তাহলে ওকে এতদিন জারিফের ব্যাপারে মিথ্যে বলেছে।
“জারিফ নাহয় মরে গেছে। তোমার কি শত্রুর অভাব? আমার জীবনের গ্যারান্টি আছে?”

আদ্রিশ রুশার দুহাত ধরে নরম কন্ঠে বলল,
“রুশা, কেউ তোমার ছায়াও ছুতে পারবে না। আমি আমার সমস্ত এফোর্ট লাগিয়ে দেব। তুমি সুস্থ ভাবেই ওকে পৃথিবীতে আনতে পারবে। বাচ্চাটা আমাদের প্রথম সন্তান। ওর আসাটা খুব জরুরি। আমাদের দুজনের জন্যই জরুরি।”

রুশা আদ্রিশের হাত ছাড়িয়ে নিল। আদ্রিশ ওর দিকে চেয়ে আছে। রুশা আদ্রিশের চোখে চোখ রেখে বলল,
“জন্ম দিতে পারলেও সুস্থ একটা জীবন দিতে পারব? কোন পরিচয়ে বাঁঁচবে? কার পরিচয়ে বাঁঁচবে?”

“আমার সন্তান অবশ্যই আমার পরিচয়ে বাঁঁচবে।”

রুশা তাচ্ছিল্য করে বলল,
“তোমার আবার পরিচয় আছে? ওহ হ্যা, আছে তো। একজন মাফিয়া, ক্রিমিনাল, খুনি, সাইকো। খুবই সম্মানের পরিচয়। এই পরিচয়ে বড় হবে?”

আদ্রিশ চিৎকার করে বলল,
“রুশা! একদম বাজে কথা বলবে না। আমি সাইকো নই। আমি সুস্থ স্বাভাবিক একজন মানুষ। এই শব্দটা তোমার মুখে আরেকবার শুনলে….

” কী করবে? কী করবে তুমি?”

“তোমার জিভ টেনে ছিড়ে ফেলব।”

“তুমি এমনই একজন মানুষ নিজের সন্তানকেও হত্যা করতে দু’বার ভাববে না। দেখা গেল জন্ম দেওয়ার আগে তুমিই খুন করে ফেললে অথবা জন্ম দেওয়ার পরে।”

আদ্রিশ নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারছে না। নিজের সন্তানকে খুন করবে এটা রুশা ভাবলো কী করে?
আদ্রিশ ঠাটিয়ে এক চড় মারল রুশাকে। রুশা ছিটকে খাটের কোনায় পড়ে গেল। রুশা ঘাড় ঘুরিয়ে মৃদু হাসল। তারপর বলল,
“সাথে সাথে প্রমাণ করে দিলে তো? যদি পেটে আঘাত পেতাম? তাহলে কী বাচ্চাটা বাঁচত? তুমি ওর খুনি হতে না?”
রুশার কথা শুনে আদ্রিশের হুশ এলো। রুশা তো ঠিকই বলেছে। বেকায়দায় আঘাত পেলে বাচ্চাটার কী হতো?

রুশা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“তুমি আমাকে যে পরিমাণ টর্চার করো তাতে আমার জীবনের গ্যারান্টি নেই। একদিন আমিই মরে যাব। সেখানে বাচ্চা কী করে জন্ম দেব? তুমি নিজের উপর কন্ট্রোল করতে পারো না। রাগের বশে আমাকে বারবার আঘাত করবে। আর এই আঘাতে কোনো একদিন আমি বাচ্চাটাকে হারিয়ে ফেলব। আমি সেটা সহ্য করতে পারব না। আর হ্যা তোমার মতো মানুষের বাবা হওয়ার যোগ্যতা নেই। একটা খুনি, ক্রিমিনাল নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বুঝে না। সন্তান, সংসার তাদের জন্য নয়। তাই আমি ওকে পৃথিবীতে আনব না। তোমার মতো মানুষ ওকে মানুষ হওয়ার না অমানুষ হওয়ার শিক্ষা দিবে।”

আদ্রিশ রাগে ফেটে যাচ্ছে কিন্তু রুশাকে কিছু বলতে পারছে না। আর না আঘাত করতে পারছে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“এই বাচ্চাটা আমার চাই। যেকোনো মূল্যে চাই। ওর সাথে কিছু করলে তোকে আমি ছাড়ব না। মনে রাখিস।”
আদ্রিশ হনহন করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। রুশা ধপ করে বসে পড়ল। বসে বসে কাঁদতে লাগল।

.

আদ্রিশ যথারীতি চেষ্টা করছে রুশাকে মানাতে। রুশার প্রয়োজনের কমতি রাখছে না। নিজে ওর টেক কেয়ার করছে। ও মনে প্রাণে চাইছে বাচ্চাটা আসুক। একটা বাচ্চা ওদের দূরত্ব ঘোচাতে পারে। সম্পর্ক আরো গভীর করবে। রুশা তাহলে সব সময় আদ্রিশের সাথে থাকবে। ওকে ছাড়ার কথা ভাবতে পারবে না। উলটা পালটা কিছু করার কথাও ভাববে না। বাচ্চার জন্য হয়তো নিজেকে বদলে নিবে। ওদের জীবনে আনন্দ ফিরে আসবে। হাসিখুশি একটা জীবন হবে।
আদ্রিশ রুশার সামনে ওর মোবাইলটা রাখল। রুশা একবার মোবাইলের দিকে চেয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল।

আদ্রিশ ধীরে ধীরে বলল,
“তোমার মোবাইল ফেরত দিলাম। অন করে নিও।”

রুশা কিছু বলল না। মোবাইলটা হাতে নিল না। আদ্রিশকে যথারীতি ইগ্নোর করছে। আদ্রিশ চাইছে না রুশার উপর রাগ করতে। নিজেকে যথেষ্ট ঠান্ডা রাখছে।

দুদিন পর। রুশা ওয়াশরুমে গিয়ে শানকে কল করল। শান কল রিসিভ করে চুপ করে রইল। বোঝার চেষ্টা করছে আদ্রিশ না রুশা।
“ভাইয়া!”

“পিউ, বোন আমার কেমন আছিস? তুই ঠিক আছিস তো? আমি কত টেনশন করছি তোর জন্য।”

“আমি ঠিক নেই ভাইয়া। অনেক সমস্যায় আছি। কি করব বুঝতে পারছি না।”

“কী হয়েছে? আদ্রিশ কিছু করেছে?”

“না।”

“তাহলে?”

রুশা চুপ করে আছে। শানের টেনশন বাড়ছে। রুশা নতুন করে কি গণ্ডগোল বাঁধাল তাই ভাবছে।
“পিউ! কথা বল। আমার টেনশন হচ্ছে।”

রুশা নিচুস্বরে বলল,
“ভাইয়া, আমি প্রেগন্যান্ট।”

শানের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল বোনের কথা শুনে। স্তব্ধ হয়ে আছে। ওর বোন প্রেগন্যান্ট! যে কিনা শত্রু নিধন করতে গেছে সে এখন শত্রুর বংশধর নিজের পেটে বহন করছে?

শান তোতলাতে তোতলাতে বলল,
“কী বলছিস পিউ?”

“হ্যা ভাইয়া।”

শান গর্জে উঠে চিৎকার করে বলল,
“তুই এইজন্য গিয়েছিস? আদ্রিশের সন্তানের মা? ছিহ! তোকে আমি বারবার সাবধান করেছি। শুনিস নি আমার কথা। ওই খুনিটার সন্তানের মা হয়ে ওই বাড়িতে থাকবি? ওর সাথে সংসার কর, ওর সন্তান লালন পালন কর। আমাকে ভাই বলে পরিচয় দিবি না। আমি মরে গেছি তোর জন্য। এটাই মনে করবি। আমার তোর মতো বোনের দরকার নেই।”

রুশা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল।
“ভাইয়া, এভাবে বলো না। তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই। আমি কাকে বলব নিজের কষ্টের কথা, সমস্যার কথা?”
রুশা লজ্জায়, অনুতাপে, কষ্টে কাঁদতে লাগল।

শান নিজেকে শান্ত করে বলল,
“তোকে চলে আসতেও বলতে পারছি না। কারণ তুই তোর লক্ষ্যের পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিস, এতদিন এত কষ্ট করেছিস। আমার পরামর্শ বাচ্চাটা নষ্ট করে ফেল। তারপর নিজের কাজ শেষ করে চলে আয়। আমি সব ম্যানেজ করে নেব।”

রুশার নিজেকে অসহায় লাগছে। কি করবে বুঝতে পারছে না।
“বাচ্চা নষ্ট করে ফেলব? আমার বাচ্চা।”

শান আবারও চিৎকার করে উঠল।
“ভুলে গেছিস তুই সব? ভুলে গেছিস ও আমাদের সাথে কি করেছে? আমাদের পরিবারটা ধ্বংস করে দিয়েছে। সেসব দিন ভুলে গেছিস? কতটা ছটফট করেছি আমরা। কত কেঁদেছি, চিৎকার করে কেঁদেছি, আর্তনাদ করেছি। কত অসহায় ছিলাম। এখনো আমি কিছুই ভুলিনি অথচ তুই সব ভুলে বসে আছিস। তোর ভাইয়ের সাথে, ভাবীর সাথে তার অনাগত সন্তানের সাথে কি করেছে সব ভুলে গেছিস? একটা বাচ্চা আমাদের বাড়ি মাতিয়ে রাখার কথা ছিল। কিন্তু সে এখন তার মায়ের সঙ্গে কবর বাসী হয়ে গেছে। ভাই-ভাবীকে তো বাবা-মায়ের মতো মানতিস, তাদের কথা ভুলে গেলি? কত তপস্যার পরে একটা বাচ্চা দিয়েছিল আল্লাহ সেটাও কেড়ে নিয়েছে ওই আদ্রিশ। মৃত মানুষের মতো বেঁচে আছি। হাসতে ভুলে গেছি পিউ। কতটা অসহায় হয়ে গেছি। তুই সেদিন চিৎকার করে কী বলেছিলি? কী প্রতিজ্ঞা করেছিলি? সব ভুলে গেছিস পিউ? এত তাড়াতাড়ি?”
শান কাঁদছে। রুশাও ওর সাথে কাঁদছে। সেসব দিনের কথা ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে। নিজেকে সামলাতে পারছে না রুশা। মেঝেতে বসে পড়ল। ভয়ানক, লোমহর্ষক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এতগুলো দিন পাড় করে গেছে।

“না ভাইয়া, কিছুই ভুলিনি। আমি প্রতিশোধ নেব। সবকিছুর প্রতিশোধ নেব। আমি আমার প্রতিজ্ঞা পূরণ করব। আমার ভাই-ভাবী, তাদের অনাগত সন্তানের সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নেব।”

” ও যেদিন ওর বাচ্চার জন্য ছটফট করবে সেদিন আমি শান্তি পাব। এখন কি করবি তা তুই ভালো জানিস।”

“আদ্রিশ বলেছে যেকোনো মূল্যে ওর বাচ্চা চাই। বাচ্চার কিছু হলে আমাকে ছাড়বে না। আমি কী করব?”

“ওর যন্ত্রণা তাহলে শুরু হয়ে গেছে? তুই এমন কিছু কর যাতে দায়ভার তোর উপর না পড়ে।”

“ঠিক আছে। আমি কিছু ভাবছি।”

রুশা কল কেটে থম মেরে বসে রইল। ওর মাথা কাজ করছে না। গ্যালারি থেকে ভাই ভাবীর একটা পিক বের করল। দুইজনকে এক সাথে কত সুন্দর লাগছে। কত সুখী ছিল ওরা। ওদের কত ভালোবাসা, স্বপ্ন ছিল। বিয়ের পর পর ওর ভাইয়া ওর ভাবীর কাছে বাচ্চা নেওয়ার কথা বলে। বাচ্চা হচ্ছিলো না দেখে ওর ভাবীর মনমরা হয়ে থাকত। মনে মনে অনেক কষ্ট পেত। আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করত, কত কি মানত করেছে। রুশাকে কল করেও অনেক কান্নাকাটি করত। ওর ভাই অনেক বুঝাতো কিন্তু তার মনে হতো সে হয়তো কোন দিন মা হতে পারবে না। তারপর তিন বছরের মাথায় আল্লাহ মুখ তুলে তাকায়। সেদিন ওদের বাড়িতে যেন ঈদ উৎসব। রুশাকে ভিডিও কল করে যখন ভাই-ভাবী এক সাথে খবর দিয়েছিল তখন রুশা ওদের মুখের দিকে চেয়ে ছিল। কত খুশি ছিল তারা। কল কেটে নিজেও কেঁদেছিল খুশিতে। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে ভাইয়ের বাচ্চার জন্য সুন্দর একটা নাম খুঁজতো।

“ভাইয়া, আমি এত স্বার্থপর কিভাবে হয়ে গেলাম? কী করে সব ভুলে গেলাম? তুমি আমার বাবা, আমার মা ছিলে। তুমি ছোট থেকে আগলে রেখেছো। এতটা ভালোবেসেছো। বিয়ে পর্যন্ত করতে চাওনি। তোমার সাথে কী হয়েছিল কী করে ভুলে গেলাম। আমার ভাবীর সাথে কী হয়েছিল কী করে ভুলে গেলাম? তোমাদের বাচ্চার সাথে যা হয়েছে তা কী করে ভুলে গেলাম? আমাদের সাজানো সংসারের সাথে কী হয়েছিল তাও ভুলে গেলাম? এত স্বার্থপর কিভাবে হতে পারলি পিউ? নিজের প্রতিজ্ঞার কথা ভুলে গেলি? আমি আদ্রিশকে ছাড়ব না। সবকিছুর বরাবর হিসাব নেব। ও আমাদের কাছ থেকে যা যা কেড়ে নিয়েছে তা সব কেড়ে নেব। ওর বাচ্চাকেও কেড়ে নেব। আমি ওকে ছাড়ব না ভাইয়া। আমি ওকে ছাড়ব না ভাবী। প্রতিটি মৃত্যুর প্রতিশোধ নেব। ভয়ানক প্রতিশোধ।”
রুশা পাগলের মতো আচরণ করছে। চিৎকার করে কাঁদছে। হাত দুটো দিয়ে মেঝেতে আঘাত করছে। হাতে রক্ত জমে গেছে৷

.
.
.

রুশা আদ্রিশের সাথে স্বাভাবিক ব্যবহার করছে। আদ্রিশ এতে বেশ খুশি। ওরা দুজন এক সাথে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। বেবির কন্ডিশন নিয়ে কথা বলেছে। কীভাবে চলতে হবে সব পরামর্শ নিয়েছে। বেবির বয়স দুই মাসের অধিক। আর আট মাস পরে বেবিকে ছুতে পারবে। আদ্রিশ সেই সময়টার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ওরা দু’জন মিলে বেবির জন্য খেলনা, জামাকাপড় কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছে। আদ্রিশ ওকে কেনাকাটার বাহানায় বাইরে নিয়ে যায় যাতে ওর মন ভালো থাকে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যায়, রাতে লং ড্রাইভে যায়। ওর মন সব সময় ফুরফুরে রাখার চেষ্টা করে কারণ ডাক্তার স্ট্রেস ফ্রি থাকতে বলেছে৷

রুশার মাথায় একেক সময় একেক প্লান ঘুরতে থাকে কিন্তু কোন প্লান কাজে দিচ্ছে না। সব প্লান ফ্লপ হয়। আদ্রিশ শাওয়ার নিয়ে এসে রেডি হচ্ছে। জামাকাপড় এটা সেটা ঘরে ছড়িয়ে রেখেছে। রুশা শুয়ে শুয়ে দেখছে এসব।
“আদ্রিশ তোমাকে না কতদিন বলেছি এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখবে না? এগুলো আমার পছন্দ না। আর নিচে এসব কি রেখেছো? যদি আমি পড়ে যাই? তোমাকে আর কতবার বলব?”

আদ্রিশ সরি বলে টুল, কাউচ জায়গা মতো রাখল। কার্পেটের উপর থেকে হ্যান্ডার তুলল।
রুশা বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুমে গেল। আদ্রিশ শ্যাম্পুর বোতল ফেলে রেখেছে। মেঝেটা পুরো ভেজা। রুশা বেশ বিরক্ত হলো। শ্যাম্পুর বোতলটা তুলে ছিপি লাগাতে গিয়ে থেমে গেল। কিছু একটা ভাবল। তারপর কিছু শ্যাম্পু মেঝেতে ফেলে দিল। পা দিয়ে সেই শ্যাম্পু ছড়াচ্ছে।

আদ্রিশ টাই বাঁধার জন্য টাইটা হাতে নিতেই রুশার চিৎকারের শব্দ কানে ভেসে আসে। আদ্রিশের হাত থেকে টাই পড়ে গেল। বুকটা ধুক করে উঠল৷ আদ্রিশ দৌড়ে দরজার সামনে গেল। দরজা ভেতরে থেকে বন্ধ। রুশার আর্তনাদ কানে আসছে। আদ্রিশ দরজা ভেঙে ফেলে। রুশা মেঝেতে পেটে হাত দিয়ে কাঁদছে। পায়ের কাছে রক্তের মতো কিছু দেখা যাচ্ছে। আদ্রিশ দ্রুত ওকে ধরতেই রুশা জ্ঞান হারালো।

.

হাসপাতালের বেডে রুশা ঘুমিয়ে আছে। আদ্রিশ ওর সামনে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। ওর ঘুমন্ত মুখটা যেন বলছে,
“তুমি খুনি। আমার নিষ্পাপ বাচ্চার খুনি।”
আদ্রিশের চোখ ফেটে যেন কান্না হয়ে রক্ত ঝড়ছে। এর আগে শেষ কবে এত কষ্ট পেয়েছে, চোখে পানি এসেছে মনে নেই। ডাক্তার কিছুক্ষণ আগেই বলেছে ওর মিসক্যারেজ হয়ে গেছে।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here