রৌদ্দুরে প্রেমের বৃষ্টি পর্ব ২১+২২

0
688

রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#পার্টঃ২১_২২
রুবাইদা_হৃদি(sheikh ridy rahman)

বাগানে রাঁতের আঁধার! বাগানের লাইট গুলো থেকে মৃদু আলো এসে পড়ছে৷ সবাই মুখ নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে ৷ কাব্য ভাইয়া ক্লান্ত মুখে লাগেজের উপর বসে আছেন৷ আমার কান্নার মূল কারণ হচ্ছে তার মাথায় ব্যা”ন্ডেজ করা,,সাথে হাতেও! উনি আমার কান্না দেখে ধীরপায়ে এগিয়ে এসে আমায় হালকা হাতে জড়িয়ে ধরলেন৷ আমি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম৷ সিনান, রাহুল আর মোস্তাকিম ভাইয়া ঠিক আছেন ৷ তাহলে উনি ব্য’থা পেয়েছেন কি করে? ঠোঁট কেটে র”ক্ত বের হয়ে শুকিয়ে গেছে৷ ফুঁপি উপর থেকে দৌড়ে আসলেন সাথে বাকিরা৷ সবার চোখ-মুখ শুকনো লাগছে৷ ফুঁপি এসেই কেঁদে উঠলেন৷ কাব্য ভাইয়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছেন৷ ফুঁপ্পা তার হাত ধরে বললেন,
–‘ এইসব কি করে হলো,গাছের সাথে গাড়ির ধা”ক্কা লাগলো কি করে কাব্য? ড্রাইভ কে করছিলো? ‘
সবাই কাঁচুমাচু করছেন৷ ফুঁপি নিজেকে স্বাভাবিক করে কাব্য ভাইয়ার হাত ধরে বলল,
–‘ ছেলেটা ব্যা’থা পেয়েছে! এখন এইসব কথা না বললে হয় না তোমার? ‘
ফুঁপা কাব্য ভাইয়ার দিকে অ”গ্নি চোখে তাকিয়ে রইলেন৷ সেই চোখের ভাষা আমরা না বুঝতে পারলেও বাকি চারজন ঠিক বুঝতে পেরেছে৷
–‘ হিমানী তোমার ছেলেকে বাসায় ডুকতে বলো৷ আজ সে যেটা করেছে এর বি’হিত করতেই হবে৷ বাসার বাইরে আমি কোনো সিন’ক্রি’য়েট করতে চাই না৷ ‘
ফুঁপা কথাটা বলেই দ্রুত বাসায় ঢুকে গেলেন৷ সবাই তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে৷ ফুঁপি আর আমি প্রশ্নসূচক চোখে তাকাতেই কাব্য ভাইয়া ব্যা’থা’তুর কন্ঠে বললেন,
–‘ আ’ম টা”য়ার্ড..! তার উপর মাথা ব্যা’থা করছে আম্মু! আমি কোনো কথা শুনতে চাচ্ছি না এখন৷ ‘
ফুঁপি আর কোনো প্রশ্ন না করেই সিনান ভাই সহ সবাইকে বাসায় ঢুকতে বলল৷ আমায় বলল, কাব্য ভাইয়াকে রুমে নিয়ে যেতে৷ ফুঁপি চোখ মুছে পা বাড়ানোর আগে কাব্য ভাইয়া পিছনে থেকে ডেকে ধীর কন্ঠে বললেন,
–‘ আম্মু, ড্রা’ইভ আমি করছিলাম৷ ‘
ফুঁপি ঘুরে তাকিয়ে অবিশ্বাসের সুরে বললেন,
–‘ তাহলে এ’ক্সি”ডেন্ট হলো কি করে? সিনান বা রাহুল ওদের ড্রাইভিং ভালো না৷ কিন্তু তোমার? তুমি তো সুন্দর ভাবেই ড্রাইভ করো৷ ‘
তিনি আর কিছু বললেন না৷ রাহুল ভাইয়া রে’গে তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললেন,
–‘ ইচ্ছা করে গাছের সাথে ধা”ক্কা লাগিয়েছে৷ মোস্তাকিমকে ড্রাইভিং সিটে থেকে উঠিয়ে নিজে ড্রাইভ করছিলো৷ তুমিই বলো আন্টি, এই কাজ করার কোনো দরকার ছিলো? বাই এনি চান্স ব্লা”স্ট হলে আমাদের কি হতো? ‘
–‘ আম্মু, ‘
রাহুল ভাইয়ার কথার মাঝেই কাব্য ভাইয়া ডেকে উঠলেন ফুঁপিকে৷ ফুঁপি তার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর ভাবে বলল,
–‘ এমনটা করার কারণ? ‘
–‘ আমি বুঝে উঠতে পারি নি৷ ডে”স্পা’রে’ট হয়ে গিয়েছিলাম৷ আমি জানি না, বাট যাওয়ার ইচ্ছা হচ্ছিলো না৷ ‘
আমি তাদের কথার মানে বুঝতে পারছি না একদম৷ সাহস জুগিয়ে বললাম,
–‘ আপনার ফ্লাইট, আপনার সপ্ন সব ন’ষ্ট করার মানে কি কাব্য ভাইয়া? কিসের জন্য ডে’স্পা’রে’ট আপনি? ‘
–‘ তোর জন্য! ‘
আমি শি’উরে উঠলাম তার কথা শুনে৷
–‘ যাওয়ার আগেই বারণ করতে পারতি কাব্য..! তোর জন্য আমাদের জীবন ঝুঁ”কিতে ছিলো৷ তুই পা”গল হয়ে গেছিস৷ পুরো উ’ন্মা’দ৷ ‘
কাব্য ভাইয়া সিনান ভাইয়ার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকালেন৷ বললেন,
–‘ ব্যা’থা পেয়েছিস? ‘
হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে থতমত খেয়ে গেলেন সিনান ভাইয়া৷ মাথা দুলিয়ে বললেন, ‘ না! ‘
কাব্য ভাইয়া ফুঁপির দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে বলল,
–‘ তুমি আব্বুকে বুঝাও..! আমি উনাদের ইমেইল পাঠিয়ে দিয়েছি৷ তারা ফিডব্যাক দিয়েছে,,টাইম দিয়েছে আমায় সুস্থ হওয়ার৷ ‘
ফুঁপিও আর কথা বললেন না৷ রে’গে বাসায় ঢুকে গেলেন৷ আমি উনার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি৷ মোস্তাকিম ভাইয়া আমাদের সামনে এসে বলল,
–‘ শা”লা..! তোর জন্য আজ জী’বন অর্ধেক নাই হয়ে যাচ্ছিলো৷ হুট করে এমন একটা প্ল্যা”ন কি করে করলি তুই? ‘
–‘ রি’জন ছাড়া ফ্লা’ইট ক্যান্সেল করতে পারতাম না!’
সিনান ভাইয়া তার হাতের ব্যা”ন্ডেজের উপর থা”প্পর মে’রে বললেন,
–‘ তুই পা”গল,,বদ্ধ উ”ন্মা’দ.. হুট করে এতোটা উ”ন্মা’দনা কে নিজের ভেতর পু’ষলি কি করে? আজ একটু হে’র’ফের হলে ম’রতেও পারতি তুই৷ ‘
কাব্য ভাইয়া মাথা দুলিয়ে হাসলেন৷ আমার দিকে স্নিগ্ধ চোখে তাকিয়ে বললেন,
–‘ হঠাৎ করে উ’ন্মা’দ হয়ে গেছি৷ দুনিয়া ক্ষ’নিকের৷ এই ক্ষ’নিকের যতটুকু সময় আমার কাছে আছে সেটা আমি আমার আমিকে নিয়ে পার করতে চাই৷ যেন ম’রলেও আফসোস না থাকে৷ লাইফ,ক্যারিয়ার সব হবে, কিন্তু ফেলে যাওয়া সময়.. সেটা কখনো ফিরে পাবো না৷ আমি আমার জন্য ধা’র্য্য করা সময়টুকু শান্তি মতো বাঁচতে চাই৷ আর সেই চাওয়াটুকুর মাঝে এমন একজন হুট করেই আমার সাথে জড়িয়ে গিয়েছে৷ সেই মানুষটাকে নিয়েই আমার ছোট দুনিয়া সাজাতে চাই৷ এই সাজানোর সময়টুকু তে তাকে যদি পাশে না পাই তাহলে ম’রে গেলেও যে আফসোস থেকে যাবে৷ ‘
সবাই উনার বলা কথায় মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে৷ আর উনি আমার দিকে৷ সেই মানুষটা আমি! ভাবতেই ভালোলাগার একরাশ ছোঁয়া দোল খেয়ে গেলো মনের মাঝে৷ আজ চলে যাওয়াটা যে ভাবেই হোক আটকে গিয়েছে সেটা নিয়ে আফসোস করবো না ফিরে আসাটা নিয়ে খুশি হবো বুঝতেই সে আমার হাত ধরলো৷ চমকে উঠে তার দিকে তাকাতেই সে ম্লান হেসে বললেন,
–‘ আমি জানি না কোনটা ঠিক বা ভুল,,আমি তোর মোহে পড়েছি৷ সেটা আমি কাটাতে চাই না৷ আমি তোকে পাশে চাই সব সময়৷ দূরে থেকে পাশে থাকা গেলেও আমি কাছে থেকে পাশে থাকতে চাই৷ এতে আমার ক্যারিয়ার কি হবে সেটা ই’স্যু করে না আমার কাছে৷ ‘
আমি কি বলবো খুজে পেলাম না৷ এতোটা কম সময়ে এতোটা গভীর ভাবে উপলব্ধি বুঝি প্রেমিক পুরুষ দের হয়? আচ্ছা উনি কি সত্যিকারের প্রেমিক পুরুষ, ‘ যার বাইরের কাঠফাটা রৌদ্দুর, ভেতরে প্রেমের বৃষ্টি! ‘
যে বৃষ্টি শুধুই তার প্রেয়সীর জন্য…! প্রমের বৃষ্টি৷
_________________________
আমি উনার একদম মুখের সামনে বসে আছি৷ আর সে আমার দিকে গভীর চোখে তাকিয়ে আছে৷ তার ঠোঁটের কোণে কে’টে যাওয়া জায়গাটা আমি পরিষ্কার করছি৷ উনি ব্য’থা পাবেন বলে ধীরে ধীরে ক’টন দিয়ে আলতো চা’প দিচ্ছি৷ উনার চেয়ে ব্যা’থা বোধহয় আমার লাগছে৷ আমি নিজে থেকে তার এতোটা কাছে আসি নি কখনো৷ আমি তো তার ব্যা’থা কমানোর জন্য এসেছি এতোটা কাছে তাও নিজের অজান্তে৷ আমার মাথায় শুধু ঘুরছে তার ব্যা’থা কিভাবে কমাবো৷ তার নিশ্বাসের হাতছানি গুলো আজও বিরক্ত করছে আমায়৷অবাধ্য ছোট চুল গুলো তার নিশ্বাসের তালে তালে উনার চোখে মুখে আছড়ে পড়ছে৷ আমার সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই৷ উনি আজও ইচ্ছা করেই ফুঁ দিচ্ছেন৷
–‘ গোঁলাপি মিষ্টি,, খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা হয়! ‘
আমি উনার কথার মানে বুঝতে না পেরে বললাম,
–‘ গোঁলাপি মিষ্টি তো বাসায় নেই! কাল সকালে ফুঁপিকে এনে দিতে বলবো৷ ‘
–‘ তোর ফুঁপি কোথায় পাবে? ‘
আমি মে’ডিসিন লাগাতে লাগাতে বললাম,
–‘ কেন! ফুঁপাকে বলবে আর ফুঁপা বাজার থেকে এনে দিবে৷ ‘
উনি রহ’স্যজনক ভাবে হাসছেন৷ আমি সেদিকে পাত্তা দিলাম না৷ আগে মে’ডিসিন লাগিয়ে ফুঁপির আদেশ মতো উনায় খাবার দেওয়ার পরেই আমার শান্তি৷ লোকটার হে’য়ালির জন্য আজ কতো বড় একটা এ”ক্সি”ডেন্ট হয়ে যেত..! ভাবলেই আমি শিউরে উঠছি৷
— ‘ তোর ফুঁপা বাজারে সেই মিষ্টি পাবে না৷ ‘
আমি শেষ করে উঠতে নিলেই উনি আমার কোমরের পিছনে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন৷ তার এহেন কাজে ভেবাচেকা খেয়ে যাই আমি৷ আমি থেমে গেলাম৷ কারণ নড়াচড়া করলে উনার অন্যহাতে ব্যা’থা পাবেন৷ ভণিতা না করে বললাম,
–‘ ছাড়ুন তো..! আপনার খাবার আনতে যাবো৷ আর ওই মিষ্টি ইমপোর্টেড নাকি? যে বাজারে পাবে না৷ ‘
উনি হাসলেন৷ আমি ভ্রু কুটি করে তার দিকে তাকিয়ে আছি উত্তরের আশায়৷ উনি নিজের ঠোঁটের উপর আঙুল দিয়ে ঘষ”লেন৷
–‘ বড় হবি কবে পিচ্চি? ‘
পা”গল টা”গল হয়ে গেছেন নিশ্চয়ই৷ তাই উল্টাপাল্টা বকছেন৷ শেষে কিনা পা”গল? এইছিলো আমার কঁপালে৷ আমার কঁপালে চিন্তার ভাজ দেখে উনি আমায় টান দিলেন৷ টাল সামলাতে না পেরে তার উপর পড়তেই ব্যাথায় শব্দ করে উঠে উনি৷ আমি ভ’ড়কে যাই৷ তড়িঘড়ি করে উঠতে গেলে ব্যা’থা নিয়েই সে আঁকড়ে রাখে৷ আমি চিন্তিত স্বরে বললাম,
–‘ ইশ! কোথায় ব্যা’থা পেয়েছেন? আপনার বুদ্ধি দিনে দিনে নাই হয়ে যাচ্ছে কাব্য ভাই..! টান দিলেন কেন এইভাবে৷ ব্যা’থা তো আপনি’ই পেলেন৷ ‘
–‘ ব্যা’থা আমার চেয়ে বেশি তুই পেয়েছিস তা কি জানিস? ‘ স্নিগ্ধ কন্ঠে বললেন উনি৷
আমি উঠে যেতে নিলেই আবার বললেন,
–‘ আমার গোঁলাপি মিষ্টি খেতে বড্ড ইচ্ছা হচ্ছে৷ ‘
–‘ আরে ভাই..! উঠতে তো দিন আগে৷ ধরে রেখেছেন এইভাবে৷ না উঠলে আনবো কি করে? ‘
আমার কথায় উনি হো হো করে হেসে উঠলেন৷ হাসি থামিয়ে আমার চুল গুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে সি’রিয়াস ভাবে বললেন,
–‘ তোর আনতে হবে না..! আমি’ই নিয়ে নিচ্ছি৷ ‘
–‘ দয়া করে আনুন আর আমাকে ছাড়ুন৷ ‘ আমি উনার থেকে ছাড়া পাবার জন্য বললাম৷ উনি নিজের ভ্রু কুচকে বললেন,
–‘ সত্যি নিবো? ‘
–‘ হ্যাঁ,,নিন! ‘ আমি বলতেই উনি তার ভালো হাত দিয়ে আমার মাথার পিছে হাত দিতেই চমকে উঠি আমি৷ তার গোঁলাপি মিষ্টি..! আমার ঠোঁট গোঁলাপি৷ মনে পড়ার আগেই সে আঁকড়ে ধরে৷ হা”র্ট বি’ট ক্রমেই বেড়ে চলেছে সাথে আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে৷ ধু’ক’পু’কের মাএা বেড়েই চলেছে সেই সাথে তার ছোঁয়া৷
উনি ছেড়ে দিতেই আমি কান্না করে দিলাম৷ এতো খারাপ কেন উনি? আমার কান্না দেখে নিজে উঠে বসলেন৷
–‘ এই নীতু,’
–‘ আপনি পঁ”চা..! বড্ড খা”রাপ..! ‘ কাঁদতে কাঁদতেই বললাম৷ উনার চোখে মুখে অপ”রা’ধীর ছাঁ”প৷ চুপ করে বসে আছেন৷ আমি আড়চোখে তাকালাম তার দিকে৷ ঠোঁটের কোণা দিয়ে আবার র”ক্ত গড়িয়ে পড়ছে৷ কান্না ভুলে আমি উঠে দাঁড়াতেই উনি আমার হাত ধরেন৷ আমি পিছু ঘুরতেই উনি বললেন,
–‘ নিজের অ”স্তিত্ব হারিয়ে ফেলি কেন তোর মাঝে? আমি যে বড্ড আস’ক্ত হয়ে যাচ্ছি৷ আই প্রমিস তোর অনুমতি বিহীন আর কাজ করবো না৷ ‘
আমি উনার থেকে হাত ছাড়িয়ে নিলাম৷ উনি তাকিয়ে রইলেন৷ আমি আবার ফাস্টএইড বক্স হাতে উনার সামনে দাঁড়ালাম৷ উনি চোখ তুলে তাকালেন না৷ আমি উনার থুতনিতে হাত রেখে মুখ উঁচু করতেই আমার বুকের মাঝে ধ’ক করে উঠে৷ চোখ গুলোতে কেমন অ’নুতাপের ছাঁ’প৷ আমি এইবার নিজের কাছে নিজের কাছে অপ”রা’ধী হয়ে গেলাম৷’ সে আমার! আমি তার..! ‘ তার অধিকার আছে আনার উপর৷ আমি মুচকি হাসলাম৷ আমার হাসি দেখে মনে হচ্ছে উনি প্রাণ ফিরে পেলেন৷ আবার আমার সাথে দু”ষ্টমি করা শুরু করলেন৷ আমার বিরক্ত কাজ করছে না একদম৷ ভালো লাগছে৷ তাকে আগলে রাখতে ইচ্ছা হচ্ছে৷ তাকে ছাড়া নিজেকে শূন্য মনে হয়৷ এতোটা কাছের আগে তো মনে হয় নি৷’ কিছু কিছু জিনিসে শূন্যতা অনুভব করা ভালো কারণ শূন্যতার ভালোবাসায় আবেদন থাকে, একে অপরকে হারানোর ভয় থাকে, একসাথে পথ চলার অনুপ্রেরণা থাকে৷ ‘

~” রাতের আঁধার ঘুচে যাবে, তোমার কাছে এসে! ‘
এই আমি’তে তোমায় খুজে বেড়াবো
ভালোবাসার ঘরে..!
~ ” যে আমিতে থাকবে তুমি, আমায় জড়িয়ে! ‘
রাতের আঁধার ঘুচে যাবে,তোমার কাছে এসে..! ‘
______________________________
সকালের আলো তার সাথে ঘড়ির কাঁটা নিজস্ব গতিতে ঘুরে চলেছে৷ সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অস্বস্তির পরিমাণ৷ ফুঁপা সোফায় বসে কাব্য ভাইয়ার দিকেই তাকাতেই সে ফুঁপার পাশে বসে পড়ে৷ মোস্তাকিম ভাইয়ার সবাই উপরে৷ আমি, ফুঁপি আর ফুঁপা ছাড়া এখানে কেও নেই৷ ফুঁপা তার দিকে কাগজ বাড়িয়ে দিয়ে বললেন,
–‘ কাল যা করেছিস.. তাতে তোকে থা”প্পড় মা’রলেও কম হবে৷ দিনে দিনে নিজের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিস৷ একমাএ তোর মা’র জন্য এতো বড় একটা ঘটানাতেও আমি চুপ৷ তোর মামা নেহাৎ সিলেটের বাইরে গেছে কাজে৷ আর এইটা ফ্লাইটের টিকিট আমি নতুন করে আজকের ডেট বলে ম্যানেজ করেছি৷ ‘
–‘ নীতুর যাওয়ার ব্যবস্থা করো৷ ‘ উনি শান্ত ভাবে উত্তর দিলেন৷ আমি চমকে উঠলাম সাথে ফুঁপিও৷ ফুঁপা রেগে গেলেন৷ বললেন,
–‘ নি”র্ল’জ্জদের মতো কথা বলছিস কেন? তোকে বলা হয়েছিলো, নিজের ক্যারিয়ারের দিকে ফো’কাস করতে৷ আর নীতু কেন যাবে? ওর পড়াশোনা আছে৷ ‘
উনি চোখ তুলে তাকালেন না৷ ফুঁপি শান্ত ভাবে বলল,
–‘ কাব্য, রুমে যাও! তোমার অ’ন্যায় আবদার মেনে নেওয়া সব সময় পসিবল না৷ ‘
তিনি গেলেন না৷ আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
–‘ নীতুর যাওয়ার ব্যাবস্থা করেই আমি যাবো৷ তার আগে না৷ ‘
ফুঁপা রেগে উঠে দাঁড়ালেন৷ দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
–‘ ও যাবে না তোমার সাথে৷ সব কিছুর একটা নিয়ম থাকে কাব্য৷ আর বিয়েটা ঝা’মেলার মধ্যে হয়েছিলো তাই মেনে নিয়েছি আমরা৷ এখন পা”গলামী করে লাভ নেই৷ ‘
উনি কারো কথার উত্তর না দিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন৷ স্থির কন্ঠে বললেন,
–‘ তোর যাওয়ার ব্যাবস্থা করলে তুই যাবি আমার সাথে?’
উনার কথা শুনে সবার মুখের দিকে তাকালাম৷ মাথা নীচু করে বললাম,
–‘ আপনার যাওয়াটা দরকার৷ কারণ আপনার সপ্ন ওইটা৷ ‘

আমায় আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে উনি ফাইল উঠিয়ে বললেন, ‘ ওকে ফাইন! ‘
আ”হত শরীর নিয়েই বাইরের দিকে পাঁ বাড়ালেন৷ কালকের প্যাক করা লাগেজ নিচেই ছিলো৷ ওই গুলা একহাতে দ্রুত টেনে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়৷ ফুঁপি আর আমি উনার পিছু পিছু গিয়েও আটকাতে পারলাম না উনি গাড়িতে উঠেই গাড়ি স্টার্ট দিলেন৷ সত্যি চলে যাবেন? একহাতে ড্রাইভ করবে কি ভাবে? ফুঁপি কাঁদছে আর ফুঁপার সাথে ত’র্ক করছেন৷ আমি দৌড়ে মোস্তাকিম ভাইয়াদের রুমে গিয়ে সব বলতে তারা বের হয়৷ কান্না পাচ্ছে..! এতো অবুঝ কেন উনি?
চলবে……

( কেমন হয়েছে জানাবেন৷ অনুপ্রেরণা সবচেয়ে বড় জিনিস সব কিছুর ক্ষেত্রে,,ভুল গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন..!)

রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#পার্টঃ২২
রুবাইদা_হৃদি(sheikh ridy)

জানালার পর্দা ফাঁকে একটুকরো রোদ গলে রুমের মাঝে পড়ছে৷ রোদের আলো তী’র্যক৷ অন্ধকার ঘরে হাঁটু মুড়ে মুখ গুজে বসে আছি৷ রোদটুকরো আমার উপরে পড়তেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠি আবার৷ আজ দুইদিন হয়ে গেছে কাব্য ভাইয়ার কোনো খোজ খবর কেও পায় নি৷ দূ’র্বল শরীর নিয়ে আমাকে যখন বলেছিলো, ‘ যাবি আমার সাথে? ‘সেই টুকু কথা মনে পড়তেই চাঁ’পা কান্নার মাএা সারা ঘর ময় তীব্র শব্দে পরিণত হলো৷ কোথায় উনি? কোনো খোজ নেই কেন৷ পাশে থাকা মোবাইলে সময় দেখলাম আটটা বেজে পঁচিশ মিনিট৷ আবার ফোন দিলাম তার মোবাইলে৷ কিন্তু..! কিন্তু..! সেই এক কথা ভেসে আসছে.. মোবাইল অফ৷ অস্থির লাগছে৷ মোস্তাকিম ভাইয়ারা সাথে সাথে গেলেও তার গাড়ি আর পায় নি৷ বারবার ফোন দেওয়া সত্বেও ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না৷ অজানা এক ভয়ে মনের মাঝে ধু’ক’পু’ক করছে৷ কিছু হয়ে নি তো? আর চলে গেলে? যদি গিয়েও থাকেন ফোন তো করবেন৷ আমি অস্থির পায়ে উঠে দাঁড়ালাম৷ চুল এলোমেলো..! এক ড্রেস৷ সেদিনের পর থেকে না খাওয়া৷ ফুঁপিও অ’সুস্থ হয়ে পড়েছে৷ আব্বু এসেছে..! আমায় হাজার বার ডাকলেও সাড়া দেই নি৷ না খাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই মাথা ঘুরে উঠলো৷ টাল সামলাতে না পেরে পড়তেই বেডের কোণায় মাথা লাগতেই তীব্র ব্যা’থায় আ”র্তনাদ করে উঠলাম৷ মাথা ঘুরছে..! চোখ ঝাঁ”পসা হয়ে উঠছে৷ আমার চিৎকারে বাইরে রাহুল ভাইয়া, জিনিয়া ছুটে এসেছে৷ দরজা ধাক্কাচ্ছে৷ উঠে খুলে দেওয়ার বা মুখে বলার শক্তি যোগাতে পারলাম না৷ মুখ থেকে অস্ফুটস্বরে শুধু বললাম, ‘ আমি আপনার সাথে যাবো..! কোথায় আপনি? আপনাকে ছাড়া যে নিজেকে হারিয়ে ফেলছি৷ আমি কথা শুনবো, প্লিজ আমার কাছে ফিরে আসুন৷ ‘
________________________
— ‘ নীতু, এই নীতু..! ‘
ক্ষীণ স্বরে কেও একজন ডাকছে৷ আমি ঘুমের ঘোরেই, ‘ হু ‘ বলতে কঁপালে উ’ষ্ণ ছোঁয়া পেলাম৷ শান্তির বাতাস বয়ে গেলো৷ এ যে তার ছোঁয়া..! কাব্য ভাই৷ চোখ খুলতে চেয়েও পারলাম না৷ চোখ বন্ধ করেই শুয়ে আছি৷ আবারও সেই স্নিগ্ধ আওয়াজ,
–‘ এতোটা অবুঝ কেন তুই? আমি কি চাই বুঝিস না? ‘
উত্তর দিলাম না৷ হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁতে চাইলাম৷ তার হাতের উপর হাত পড়তেই আলতো ভাবে আঁকড়ে ধরেন৷ আবার থমথমে গলার আওয়াজ,
–‘ আমি যে তোর মাঝেই থাকতে চাই৷ বি স্ট্রং..!’
আমি ফুঁপিয়ে উঠলাম৷ থেমে থেমে দূ”র্বল গলায় বললাম,
–‘ আপনি আমায় কেন বুঝেন না? আপনাকে ছাড়া আমার থাকতে কেন ক’ষ্ট হয় বলতে পারবেন? আপনার মাঝে এতোটা ডুবে কি করে গিয়েছি? আপনি জানেন..! আমি দুটো দিন চোখের পাতা এক করতে পারি নি৷ এতো ক’ষ্ট কেন হচ্ছিলো আপনার খোজ না পেয়ে? ‘
উনি বোধহয় সেই মন মাতানো হাসি হাসলেন৷ আমি চোখ বন্ধ করেই সেই হাসি যেন দেখতে পাচ্ছি৷
–‘ তোকে ছাড়া আমি কি করে যেতে পারি বল তো? তুই ছাড়া আমি অচল যে..! ‘
আমি অনুরোধের গলায় বললাম,
–‘ আমি যাবো আপনার সাথে৷ আমায় ফেলে যাবেন না..! আপনাকে না দেখলে যে আমার বুকের মাঝে ক’ষ্ট হয়৷ শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে৷ মনে হয় ম”রেই যাবো৷ ‘
আমার ঠোঁটের উপর তার হাতের ছোঁয়া পেলাম৷ উনি রা”গমিশ্রিত গলায় বলল,
–‘ আমার মাঝে এতো টা বি’ভোর হলি কবে? আমার চেয়ে তুই বেশি বিভোর তা কি জানিস? তুই তো আমার ভালোবাসার চেয়ে আমাকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছিস৷ ‘
আমি উনায় আবার আঁকড়ে ধরতে চাইলাম৷ পাশে জিনিয়ার কথা শুনেই চোখ খুলে তাকালাম৷ জিনিয়া আমায় বলছে,
–‘ আপু..! ঠিক আছিস তুই? ‘
চোখ খুলতেই একঝাক ব্যা’থা আমার মাথা সহ চোখেমুখে আছড়ে পড়লো৷ আমি মাথায় হাত দিতেই ও হাত সরিয়ে দিয়ে বলল,
–‘ মাথায় হাত দিস না..! ব্যা”ন্ডেজ করা৷ আর ওইভাবে পড়লি কি করে আপু? জানিস আমরা কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম৷ ‘
আমি চারদিকে চোখ বুলিয়ে বললাম,
–‘ উনি কই? জিনিয়া উনি কই? আমি উনাকে দেখবো৷ মাএ আমার কাছে ছিলেন৷ কোথায় গেলেন উনি? আমার কাছে আসতে বল৷ আমি যাবো উনার সাথে৷ ‘
–‘ মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না এখনো৷ ও যায় নি কোথাও৷ কারণ ওর নাম নেই ফ্লাইটের৷ তোর ফুঁপা আর মোস্তাকিম ওরা খুজছে৷ ‘
ফুঁপি আমার পাশে এসে বসে বলল৷ আমি আবার কেঁদে ফুঁপির হাত ধরে বললাম,
–‘ ফুঁপি..! আমি যাবো৷ প্লিজ তুমি আব্বু আর ফুঁপাকে বুঝাও৷ আমার যে ক’ষ্ট হচ্ছে৷ ‘
ফুঁপি নিজের চোখের পানি মুছে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
–‘ হ্যাঁ, কাব্য আসুক ওকে মা”রবো তারপরে তোকে আর ওকে একবারে বেঁধে দিবো৷ নিজের দিকে তাকিয়ে দেখ,কি হাল বানিয়েছিস৷ স্যা”লাইন আরো একটা দেওয়া লাগবে এতোটা দূ”র্বল হয়ে গেছিস৷ ‘
সপ্নে এসেছিলো সে৷ তাকে অনুভব করছি সব সময়৷ আর ফিরিয়ে দিবো না আপনাকে৷ কিন্তু আপনাকে লাগবে আমার৷ কোথায় পাবো আপনাকে?

মাথা ব্যা’থা হালকা হয়েছে৷ এখন নিজেকে আরো পা”গল পা”গল লাগছে৷ বাইরে তাকিয়ে দেখি সন্ধ্যা নেমেছে৷ পাখিরা নীড়ে ফিরছে৷ এই পাখিদের মতোই উড়ে চলে আসুন না কাব্য ভাই৷ আমার যে আপনাকে দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে৷ শুয়ে শুয়ে কাঁদছি৷ হঠাৎ সামনের ড্রেসিং টেবিলের উপর যত্ন করে রাখা ডায়েরি নজরে পড়তেই কিজন্য যেন মনে হয়, হয়তো কোথায় গিয়েছে সেটা পাবো৷ আমি ধীর পায়ে উঠে দাঁড়াই৷ ডায়েরি হাতে নিতেই বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে৷ সে জার্মান এখনো যায় নি৷ তারমানে তাকে পাবো৷ আমি ডায়েরিটা নিয়ে বেডে বসে পড়লাম৷ প্রথম পাতা উল্টতেই তার সুন্দর হাতের লিখা গান,
~ ” ভালোবাসার মোহনায়, ভালোবাসার মোহনায়,
অনুভূতির যাতনায়, তুমি আছো প্রিয় আমার মোহনায়..! ”
~” অকারণের ভালোবাসায়.. বেঁধেছি তোমায়..!
এই অবেলায়..! ”
এসেছিলে কোনো এক বেলায়…
ভালোবাসার মোহনায়….! ”
~ ” ভালোবাসি প্রিয়,ভালোবাসি প্রিয়,
তোমার মাঝের ভালোবাসায়…! ”
তার লিখা হাত বুলিয়ে দেখলাম৷ তার ছোঁয়া আছে এতে৷ কান্না পাচ্ছে৷ চোখ মুছে নতুন পাতা উল্টাতেই আমার পাঁচ বছর আগের ঘুমন্ত একটা ছবি }পেলাম৷ তার নীচে লেখা,
সপ্নের মতো বাস্তব তুই নীতু..! তোর প্রতি অন্যধরণের ফিলিংস কাজ করে কেন আমার? তবে তুই তো পিচ্চি৷ আমার হঠাৎ করে ভালোলেগে যাওয়া প্রেম তুই৷ তোর মাঝে আমি রৌদ্দুরে প্রেমের বৃষ্টি খুজে পাই৷ এই জানিস তুই? আমি প্রেম খুজে বেড়াই তোর মাঝে৷
আমি সুপ্ত হাসলাম৷
” প্রেম হয় ধীরে ধীরে, তবে ভালোবাসা সেটা তো সারাজীবন বেঁধে রাখার সম্পদ৷ ”
হ্যাঁ,তার লিখা কথাটা বাস্তব৷ প্রেম হয় ধীরে ধীরে৷ সেই প্রেমে সুপ্ত বাসনা থাকে৷ আঁকড়ে রাখার প্রেরণা থাকে৷ এই জন্যই তার মনে আমার জন্য উঁপচে পড়া প্রেম আছে৷ সেটা অনেক আগের থেকেই তার মাঝে সে পুষে রেখেছে৷
ডায়েরি হাতে নিয়ে উঠতেই একটা কাগজ উড়ে যায়৷ আমি ডায়েরি রেখে সেটা হাতে নিয়ে খুলে দেখি,
” এই জানিস? তোকে কেন ডায়েরি দিয়েছি?আমি কখনো হুট করে হারিয়ে গেলে আমায় যেন খুজে পাস৷ আমি তো তোর কাছে, তোর পাশে থাকতে চাই৷ হারিয়ে গেলে খুজবি অচেনা শহরে৷ তোর মনের অচেনা শহরে৷ সেখানে আমায় পাবি৷ হাত বাড়িয়ে তোর জন্য দাঁড়িয়ে থাকবো৷ তুই বো”কা..! বড্ড বো”কা৷ আমি হারিয়ে গেলে কেঁদে কেটে সমু”দ্র বানাবি৷ ইশ! তুই পা”গল৷ আমি যে তোকে ছাড়া থাকতেই পারি না৷ সে আবার হারিয়ে যাবে এইটা কখনো হয়? ”
আমার মনের মাঝে হাজার প্রজাতি ডানা মেলে উঁড়ে গেলো৷ ইশ! সত্যি আমি বড্ড বো”কা৷ সে আছে৷ আমার মনের অচেনা শহরে৷ আমি কাগজ হাতেই দৌড়ে বের হয়ে এলাম ঘর ছেড়ে৷ এখন মাথা ব্যা”থা করছে না একদম৷ সে আছে..! আমি তাকে দেখতে পাবো৷ আমাকে দৌঁড়ে বের হয়ে আসতে দেখেই ফুঁপি আর জিনিয়া এগিয়ে এসে আমায় ধরে শা”সনের সুরে বলল,
–‘ কোথায় যাচ্ছিস? তোকে রেস্ট নিতে বলেছে৷ ‘
–‘ তোমার অ”বাধ্য ছেলেকে খুজতে৷ প্লিজ বারণ করো না৷ আজ তাকে নিয়েই ফিরবো৷ ‘
আমার হাসি মুখ দেখে ফুঁপি মনে হয় ভরসা পেলো৷ আমাকে ছেড়ে দিতেই আমি আবার দৌড়ে আবার বেরিয়ে যাই৷ তার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা৷ ভার্সিটির পাশের রিসো”র্ট৷ আমি সিউর সেখানেই উনি আছেন৷ এইটা কি করে ভুলে গেলাম আমরা৷ সে রা’গ করে ওইখানেই চলে যায়৷ আমি রিক্সা নিতে চেয়েও নিলাম না৷ তাড়াহুড়োতে টাকা আনি নি৷ কাব্য ভাইয়াদের বাসা থেকে ভার্সিটি যেতে কতক্ষণ লাগে আমি জানি না৷ আমি শুধু হাটছি৷ মাঝে মাঝে মাথা চেঁ’পে দৌড়ে যাচ্ছি৷
রিসো”র্টের সামনে এসে হাঁফ ছাড়লাম৷ মাথা আর পাঁ ব্যা’থায় টনটন করছে৷ আমি গেইট দিয়ে ঢুকলাম৷ রিসেপশন থেকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ কাব্য মেহেরাজ এসেছে কি না৷ ‘ উনারা জবাব দিলেন না৷ বুকের মাঝের শূন্যতা আবার ছাঁ”পিয়ে পড়লো৷ তার মানে আমি কি ভুল? একজন আমার পাশে এসে বলল,
–‘ বাগানের সাইডে কেও একজন আপনার অপেক্ষায় আছে৷ ‘
আমার মুখে হাসি ফুঁটে উঠলো৷ তারমানে সে আছে৷ আমি মুচকি হেসে পাঁ বাড়ালাম৷ আমি নিজে থেকে তাকে বলবো আজ,
–‘ আমায় কি আপনার প্রেমের বৃষ্টি বানাবেন? শুধুই প্রেমের বৃষ্টি৷ যেখানে রোদ থাকলেও স্নিগ্ধতা থাকবে৷ ‘
বাগানের দিকে যেতেই সব লাইট গুলো হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেলো৷ আমি ভয় পেলেও এগিয়ে গেলাম৷ হুট করেই আবার একঝাক আলো জ্বেলে উঠলো৷ আমি চোখমুখ খিঁ”চে বন্ধ করে নিলাম৷ পিটপিট করে চোখ খুলতেই এতো বড় একটা সারপ্রাইজ পাবো সত্যিই ভাবতে পারি নি…!
চলবে..!
( ভালো হয়েছে কিনা অবশ্যই জানাবেন..!, ভুল গুলো ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন৷)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here