রঙ বেরঙের জীবন পর্ব ৮

0
325

#রঙ_বেরঙের_জীবন
পর্ব (৮)
#নুশরাত_জাহান_মিষ্টি

সময় বয়ে চলেছে তার নিজস্ব গতিতে। আগামীকাল পিংকির গায়ে হলুদ। সবাই কোন না কোন কাজ নিয়ে ব্যস্ত। মামা, মামী এসে কাজে লেগে পড়লো। বাড়ি-ঘর সাজানোর দায়িত্বটা শান্ত এবং সাথী নিলো। সাথী সাথে করে রাত্রীকেও নিয়ে নিলো। গ্রামের বাড়ি, তাই নিজেরা নিজেদের মতো করেই সাজালো। শান্ত একটি কেদারার(চেয়ার) উপর দাঁড়িয়ে উঁচুতে হলুদ রঙের ফুল লাগাচ্ছিলো। হঠাৎ ভারসম্য রাখতে না পেরে শান্ত কেদারা থেকে নিচে পড়ে গেলো। কয়েক মূহুর্তের জন্য সব নিস্তব্ধতায় ঘুরে গেলো। পরক্ষনেই যখন সবাই বুঝতে পারলো এখানে কি হচ্ছে, তৎক্ষনাৎ সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। সবার হাঁসি দেখে শান্ত বেশ লজ্জায় পড়ে গেলো। মামী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বলে উঠলো,” সবাই কাজে যাও, ছেলেডার পিছনে পইরো না তো”?
সবাই চুপ করে গেলো। মামী শান্ত কাছে গিয়ে তাকে উঠতে সাহায্য করলো।
” তোমার লাগে নাই তো বাবা”?
” না আন্টি। আমি ঠি……”
কথাটি শেষ করার পূর্বেই রাত্রীর হাঁসির শব্দ পেয়ে সেদিকে দৃষ্টি দিলো শান্ত। অপরুপ সুন্দর মুখশ্রীতে এক চিলতে হাঁসি জানো মুখশ্রীকে জীবন্ত করে তুললো। শান্ত অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো রাত্রীর মুখশ্রীতে। মামী রাত্রীকে ধমক দিলো,” কি হইতেছে রাত”?
রাত্রী হাঁসি থামানোর চেষ্টা করে বললো,” না কিছু না। আমি হাঁসি থামাতে পারছি না”।
” তুই এমনে হাঁসতাছো ছেলেডা কি ভাবছে ক তো”?
রাত্রী স্বাভাবিক হয়ে বললো,” আমি তার কথা ভেবে হাঁসিনি”।
” সে যাই হউক কাজে মন দে”?
রাত্রী আচ্ছা বলে কাজে মন দিচ্ছিলো। রাত্রী সত্যি শান্তর কথা ভেবে হাঁসছিলো না। রাত্রী তো রুপমের কথা ভেবে হাঁসছিলো। যখন রুপমের সাথে প্রথম দেখা হয় তখন বর্ষাকাল ছিলো। চারদিকে কাদাঁমাটি চিকচিক করছিলো। কাঁদামাটি পেরিয়ে সাঁকো পেরিয়ে স্কুলের পথে যখন এগিয়ে যাবে তখন সামনে থেকে আসা একটি ছেলে কাঁদামাটিতে পিছলে পড়লো। সেদিন রুপমের পড়ে যাওয়া দেখে তমা এবং রাত্রী খুব হেঁসেছিলো। হাঁসির শব্দ রুপমের বেশ খারাপ লাগছিলো, কে হাঁসছে দেখার জন্য যখন ঘুরে তাকায়। তখন সেই হাঁসিতেই ফেঁসে যায় রুপ! রাত্রী সেদিনের কথায় মনে পড়ায় হাঁসি আটকাতে পারেনি।

সবাই নিজ নিজ কাজে মন দিলো। সাথী এসে শান্তকে হালকা ধাক্কা দিলো। শান্ত চমকে সাথীর দিকে ঘুরে তাকালো। বিরক্তি নিয়ে বললো,” কি হয়েছে”?
” চোখ সংযত কর। তোর চোখের পানে তাকিয়ে মনে হলো চোখ দিয়েই গিলে খাবি রাতকে”।
শান্ত রেগেমেগে চলে গেলো।

বাড়িটা লাল, নীল আলোতে ঝলমলে হয়ে উঠলো। পলাশ শহর থেকে লাল,নীল আলোর (ঝারবাতি) লাইট গুলো নিয়ে এসেছিলো। সেগুলো সাথে কিছু ফুল দিয়ে বাড়িটাকে সাজিয়ে তুললো সবাই৷ বাড়িটি দেখে এখন মনে হচ্ছে এটা বিয়ে বাড়ি।
লাল, নীল আলোতে ঝলমলে করা বাড়িটির সৌন্দর্য রাত্রীর মন কাড়তে পারলো না। তার মনে তো বাসা বেঁধে আছে রুপ, রুপের মুখশ্রী, রুপের কন্ঠধ্বনি। রাত্রীর মন খারাপকে দূর করতে তমা চলে এলো। বিয়ে শেষ হওয়া অব্দি তমা রাত্রীদের বাসায় থাকবো। তমাকে দেখে রাত্রী খুশি হয়ে গেলো। রাত্রীকে খুশি হতে দেখে তমা বললো,” লাভ নাই, চিঠি নাই”।
রাত্রীর মনে বিষন্নতা ছেয়ে গেলো। রাত্রীর মুখের অবস্থা দেখে তমা বললো,” সন্ধ্যা আরো একটু গড়ালে তোদের বাড়ির বাগানে যাস, তোর মুখের হাঁসির দেখা সেখানেই মেলবো”।
রাত্রী প্রথমে খুশি হলেও পরক্ষনে এত মানুষের চোখের আড়াল হয়ে বাগানে যাবে কিভাবে এটা ভাবতেই চোখেমুখে ভয় ফুটে উঠলো। তমা রাত্রীকে আশ্বস্ত করে বললো,” চিন্তা করিস না, আমি ব্যবস্থা করবো”।

তমার আশ্বাস পেয়ে রাত্রীর ভয়টা কেটে গেলো। হঠাৎ রাত্রী তমাকে জিজ্ঞেস করে উঠলো,” আচ্ছা তোর আম্মা তোর আমাদের বাড়িতে আসা মেনে নিলো কেন”?
তমা হাঁসি মুখ নিয়ে বললো,” সময় হইলে কমু”।
” এখন বল”।
” না না। এখন বললে পরে মজা পাবো না”।
তমা বাক্যটি বলে রাত্রীর থেকে পালালো। তমাকে চলে যেতে দেখে রাত্রী পিছন থেকে বললো,” কই যাস”?
” তোর কাছে থাকলে জ্বালিয়ে মারবি তাই বাড়ি-ঘর সাজানোটা ঘুরে ঘুরে দেখবো”।
তমা আর দেড়ি না করে উঠানে চলে গেলো। রাত্রী বেশ ভাবনায় পড়ে গেলো। ভাবনাগুলোকে পিছনে ফেলে একটুপর বাগানে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিচ্ছে।

তমা উঠানে দৌড়ে আসতে গিয়ে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলো। তমার এই একটি দোষ ছটফটানি বেশি। স্বাভাবিকভাবে হাঁটা জানো তমার ধাঁচে নেই। হাঁটার থেকে দৌড়াদৌড়ি ভালো পারে। যাই হোক ধাক্কা খেয়ে পিছনে ঘুরে তাকাতেই তমার চোখেমুখে খুশির ঝিলিক বয়ে গেলো। ধাক্কা খাওয়াটাকে স্বার্থক ভেবে মনেমনে বললো,” এত সুন্দর পোলা। এমন পোলার লগে আমি রোজ ধাক্কা খাইতে পারি”।
মনের কথা মনে রেখে তমা হাত বাড়িয়ে দিলো শান্তর দিকে নিচ থেকে ওঠার জন্য। হ্যাঁ লোকটি শান্ত। শান্ত পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। শান্তর চলে যাওয়ার দিকে দৃষ্টি দিয়ে তমা বিড়বিড় করলো,” লোকটি কি আমার হাত বাড়াইয়া দেওয়ার মানে বুঝে নাই নাকি আমারে চোহে দেহে নাই? কোনটা ঘটলো এহানে”?

_______
বাড়ির চারপাশে লোকজন ঘুরঘুর করছে। সকলের দৃষ্টি আড়াল করে তমা রাত্রীকে বাগান অব্দি এগিয়ে দিলো। রাত্রী বাগানের ভিতরে যেতেই তমা সেখান থেকে চলে গেলো।
রাত্রী বাগানের ভিতরে প্রবেশ করতেই রুপমকে চোখ বন্ধ অবস্থায় গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো। রাত্রীর উপস্থিতি অনুভব করে রুপ বললো,” কেমন আছো”?
রাত্রী ধীর কন্ঠে বললো,” ভালো, তুমি”?
” এইতো বেশ”।
রাত্রী মজার ছলে বললো,” বিরহ দহনে পুড়ে খাঁটি হওয়া শেষ”?
রুপম এবার চোখ মেলে তাকালো। রাত্রীর দিকে দৃষ্টি দিলো। রাত্রী পুনরায় বললো,” বিরহ দহন সহ্য করা এত সহজ নয়। তা বুঝতে পেরে চলে এলে দেখা করতে”।
রুপম মুচকি হেঁসে বললো,” উহু। আমি বিরহ দহন সহ্য করতে পারতাম কিন্তু অন্যকেউ পারতো না”।
একটু থেমে পুনরায় বললো,” তার কোমল হৃদয়ে আঘাত করতে চাইনাই বইলা চইলা আইলাম”।
রাত্রী বেশ চমকালো। সে স্বীকার না করলে এটাই সত্যি এখন রুপমকে না দেখলে তার বাসায় থাকাটা বড্ড কষ্টকর হয়ে উঠতো। ভালোবাসাটা এমনি। যেখানে বিরহ কেউ নিতে চায় না! রাত্রী একটু ভয় নিয়ে বললো,” আমাদের এখানে বেশিক্ষন থাকা ঠিক হইবো না। কেউ দেখে নিলে কেলেঙ্কারি বেঁধে যাবে”।

” কলংঙ্কের ভয় পাও এহনো”।
রাত্রী কিছু বলতে নিলে রুপম তাকে থামিয়ে বললো,” কলংঙ্কের ভয় থাকলে আমার ডাকে সাড়া দিতা না”।
রাত্রী এবার মুচকি হেঁসে বললো,” ভালোবাসা যখন মনের দরজায় কড়া নাড়ে ভয় তখন সেই কড়া নাড়ার শব্দে পালিয়ে যায়”।
রুপম হাঁসলো। নিরব হাঁসি। দু’জনের মাঝে বেশ কিছুক্ষন নিরবতায় কাটলো। নিরবতা কাটিয়ে রাত্রী বললো,” আমি এখন যাই”।
” যাইবা তো যাও”।
রাত্রী পুনরায় বললো,” যাই”?
রুপম ভুবন ভোলানো হাঁসি দিয়ে বললো,

” রাত নিশিতি আইয়ো বন্ধু
ভালোবাসা নিতে।
ভালোবাসায় ভেলায় আমি ভাসাইবো তোমায়।
আইয়ো বন্ধু আইয়ো তুমি
ভাসতে প্রেমের ভেলায়।
ভালোবাসার জলকলিতে জড়াইবো তোমায় বন্ধু
জড়াইবো তোমায়”।
রাত্রী মুচকি হেঁসে ছুটে পালালো। রুপম রাত্রীর যাওয়ার পানে দৃষ্টি দিয়ে মুচকি হাঁসলো। দু’লাইনের গান শুনেই পালালো। রাত্রী বাগান থেকে বাড়ির মধ্যে আসতেই বুকে হাত দিয়ে কিছুক্ষন হাঁপালো। রুপম কি করে যে মনের কথা বুঝতে পারে! রাত্রীর এখন মনে হচ্ছে রুপ মনের কথা না বুঝলেই বোধহয় ভালো হইতো! প্রথম যেদিন রুপের মুখে গান শুনেছিলো সেদিন থেকেই তার গান রাত্রীকে আরো বেশি আকৃষ্ট করলো। রাত্রীর মন চাইছিলো রুপ আজ একটি গান শোনাক তাকে। কিন্তু রুপ কি করলো, বানিয়ে দু’লাইনের কি বললো ওটা! কিছু একটা ছিলো শব্দগুলোয়! যেটা রাত্রীর মনে উতাথ-পাথাল শুরু করে দিয়েছে।
” তুমি কি বাগানে গিয়েছিলে”?
রাত্রী চমকে সামনে তাকালো। রাত্রীর সামনে শান্ত কানে ফোন ধরে তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাত্রী কোনরকমের বললো,” আমি বাগানে কেন যাবো”?
” তাহলে এখানে কি করছো”?
” এমনি। ভালো লাগছিলো না তাই বাড়ির চারপাশ ঘুরছিলাম”।
শান্ত কথাটি বিশ্বাস করেছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না! শান্ত বেশ স্বাভাবিক ভাবে বললো,” রাতের বেলা এভাবে একা ঘোরা ঠিক না”?
” হ্যাঁ। আমি আসছি”।
রাত্রী যাওয়ার জন্য এগোলেই শান্ত সামনে এসে পথ আটকালো। কান থেকে ফোনটি পকেটি নিলো তারপর বললো,” এখন থাকো। আমি আছি তো”।

রাত্রীর মুখশ্রীতে পলকহীনভাবে তাকিয়ে আছে শান্ত। রাত্রীর বেশ অস্বস্তি হচ্ছে। তবুও কিছু বলতে পারছে না। কি বলতে কি হয়ে যায় তাই একটু ভয় পাচ্ছে রাত্রী! হঠাৎ শান্ত আস্তে করে বলে উঠলো,” আমার বন্ধু হবে রাত”?
রাত্রী চমকে উঠলো। শান্তর বলাটা স্বাভাবিক হলেও বলার ধরনটা অস্বাভাবিক লাগলো রাত্রীর। রাত্রী আস্তে করে বললো,” না”।
রাত্রী আর এক মূহুর্ত না দাঁড়িয়ে চলে গেলো।

সকাল থেকেই গায়ে হলুদের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়ে গেলো। পিংকিও বেশ স্বাভাবিক। পিংকিকে দেখে মনে হচ্ছে না এই বিয়েতে তার দ্বিমত আছে।

গায়ে হলুদ ভালোভাবে কেটে গেলো। রাতের বেলা সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলো। শান্তর ভাষ্যমতে আজ কেউ ঘুমাবে না সবাই গল্প করে কাটিয়ে দিবে। সবাই সেই কথা মেনে নিয়ে আড্ডায় এসে বসলো। আড্ডা জমে উঠছিলো। রাত্রী আড্ডা থাকলেও তার মন পড়ে আছে রুপমের কাছে। রুপমকে সারাদিন বেশ মিস করেছে রাত্রী। রাত্রীকে চমকে দিয়ে পলাশের সাথে রুপম এসে বসলো আড্ডায়। রাত্রী অবাক নয়নে রুপমের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। রুপম রাত্রীর দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাঁসলো। পলাশ রুপমকে তার বন্ধু হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আড্ডা শুরু করতে বললো। শান্ত সবার উদ্দেশ্য বললো,” দেখো আজ আমরা প্রথমে একটি বিষয় নিয়ে সবার মতামত জানতে চাইবো। অর্থাৎ একটি বিষয় উল্লেখ করবো সবাই তার নিজস্ব মতামত দিয়ে বলবে তার কাছে বিষয়টি কেমন”!
সাথী বললো,” কোন বিষয় নিয়ে কথা বলবো”?
শান্ত হাঁসি মুখে বললো,” ভালোবাসা। আমরা সবার কাছ থেকে জানতে চাই, কার কাছে ভালোবাসা কেমন”!
রাত্রীর আব্বা, আম্মা, মামা, মামী একটু দ্বিমত প্রশন করলেন। তাদের মতো এসব ছোটদের আলোচনা তাদের থাকা ঠিক হবে না। তাদের থাকা ঠিক হবে না বলে তারা অন্যন্যা কাজে চলে গেলেন। তাদের রাখার চেষ্টা করেও রাখতে পারলো না কেউ! তো কি করার! এবার শান্ত সবার উদ্দেশ্য বললো,” তারা যখন চলে গেছে তখন আমরা নিজেদের মতো করে মত প্রকাশ করি”।
সবাই শান্তর কথা তাল মেলালো। শান্ত প্রথম ধাপেই সাথীকে ফাঁসিয়ে দিলো। সাথীকে উদ্দেশ্য করে বললো,” প্রথমে তুই বল তোর কাছে ভালোবাসা কি”?
” প্রথমেই আমি। না এটা আমি মানবো না”।
সাথীর কথার প্রতিত্তোরে পলাশ বললো,” এক সময় তো বলতেই হবে প্রথমে বললে সমস্যা কি”?
পলাশের সম্মতি পেয়ে সাথী বললো,” আচ্ছা আমিই প্রথমে বলছি”।

সাথী পলাশের দিকে দৃষ্টি রেখে বললো,” ভালোবাসা হলো প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি নিজের কাছে নিজের। নিজের ভালোবাসাটা প্রকাশ না করেও সারাজীবন মনের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি। সে না চাইলেও তার পাশে ছায়া হয়ে থাকতে চাওয়ার নামই ভালোবাসা”।
সবাই করতালি দিলো। পিংকি মজার ছলে বললো,” তার নাম আমাগো কওয়া যাইবোনি”?
সাথী কথা এড়াতে বললো,” এবার শান্ত বলবে”?
সাথীর কথায় সবাই তাল মেলালো। শান্ত হাঁসি মুখে রাত্রীর দিকে দৃষ্টি দিয়ে বললো,” ভালোবাসা হলো হারিয়ে যাওয়া। আমি যাকে ভালোবাসবো তার মায়াবী রুপের হারিয়ে যেতে চাইবো। বারবার তার হরিণী চোখের মাঝে ডুব দিতে ইচ্ছে করবে। তার ঘনকালো কেশ আমার বুকের ভিতর ধুকপুকানির সৃষ্টি করে। তারে পাওয়ার আকাঙ্খা আমারে বারবার তার কাছে নিয়ে যাবে”

শান্ত রাত্রীর দিকে দৃষ্টি রেখে সম্পূর্ণ কথাটি বললো এটা লক্ষ্য করে রুপম মুচকি হাঁসলো। শান্তর মায়াবী রুপ, হরিণী চোখ যে রাত্রীর প্রশংসায় নিমজ্জিত তা বুঝতে সময় লাগলো না রুপমের। রুপম মুচকি হেঁসে বললো,” ভালোবাসা মানে হারাইয়া যাওয়া এইডা ঠিক কিন্তু আপনার হারানোর ব্যাখাডা ঠিক নয়”।
” মানে”?
শান্ত জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকালো রুপের দিকে। রুপ শান্তভাবে বললো,” ভালোবাসার দৃষ্টি মায়াবী রুপ, হরিণী চোখ দেখে হারায় না। ভালোবাসা হারায় প্রিয় মানুষের মন গহীনে। ভালোবাসা হারায় মন গহীনের সুপ্ত অনুভূতিতে। যে অনুভূতির প্রতিটি স্পন্দন শুধু প্রিয় মানুষের নাম ঝপ করে।
ভালোবাসা আলাদা কোন দৃষ্টি হয় না। ভালোবাসার দৃষ্টি একটাই সেই দৃষ্টিতে প্রিয় মানুষটি সবসময় সুন্দর। অপরুপ সুন্দর। তার বাহ্যিকতা যেমনি হউক না ক্যান সে সুন্দর, মেলা সুন্দর”।

সবাই করতালি দিয়ে রুপমকে সমর্থন করলো। শান্ত মুগ্ধ দৃষ্টিতে রুপমের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। পরক্ষণেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো,” বন্ধু”?
রুপম খুশিমনে হাত মিলিয়ে শান্তর বন্ধুত্বকে সমর্থন করলো।

চলবে,
[ভুলক্রুটি ক্ষমা করবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here