রক্তের_বন্ধন
Part_07+08
– মিস কথা চৌধুরি, আপনিই সে নষ্টা মেয়ে। যার জন্য রাজ ভাইয়া এখনো বিয়ে করেনি। যাকে আপনি আপনার বিয়ের রাতে কুকুরের মতো মারতে মারতে বের করে দিয়েছেন। আপনিই সেই মা যে কুলের সাতমাসের বাচ্চাকে রেখে বিয়ের পিড়িতে বসে ছিলেন! সাত মাসের মেয়েকে নিয়ে যে বাবা পথে পথে ঘুরে বেরিয়েছে। সে রাজ ভাইয়া । আপনি সে মা যে মেয়েকে ফুলের মতো নিষ্পাপ মেয়েকে থাপ্পর মেয়ে ঠোঁট কেটে ফেলেন! আপনার দিলে আল্লাহর রহম নেই।
– সাথি চুপ করবে কি বলছো এসব!
– রাজ ভাইয়া আপনি চুপ করেন। বলতে দেন আমায়। যে মেয়ে বড়লোক স্বামী পাবার আশায় নিজের সন্তানকে গর্ভপাত করতে, নার্সকে যে টাকা দেয়, অনাগত সন্তান হওয়ার সাথে সাথেই গলা টিপে মারতে। সে মেয়ে পৃথিবীর সকল মেয়ে জাতির কলঙ্ক!
– সাথির মুখে, ‘রাইসা ‘তার মেয়ে, কথাটা শুনে ডাস! করে ফ্লরে বসে পড়লো কথা। কথার চোখ দিয়ে অনবরত পানি আসতে লাগল! রাইসা তাহলে আমার মেয়ে! কিন্তু বাবা তো বলেছে, আমার মৃত বাচ্চা হয়েছে। তাহলে বাবা কি মিথ্যা বলেছে।
– কি হলো কাঁদছেন কেন ম্যাডাম?
আপনার চোখে জল মানায় না। এতো সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চাকে যে মারতে চাই সে মা নামে কলঙ্ক! আর যে মানুষটা নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতো তার হৃদয়টা আপনি ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলেছেন! রাজ ভাইয়ার কি এমন অপরাধ ছিল যার জন্য তাকে এতটা কষ্ট দিলেন। একটা কুকুরকেও হয়তো এভাবে তাড়িয়ে দেয় না! যেভাবে রাজ ভাইয়াকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
– চুপ করেন মিস সাথি! অনেক হয়েছে আর না । কার হয়ে আপনি কথা বলেন? একজন চরিএহীনের জন্য! যে কিনা,অন্তসত্ত্বা বউকে রেখে পতিতালয়ে রাত কাটায়। তার বউ গর্ভের সন্তানকে নিয়ে তার প্রতিক্ষায় সারা রাত না ঘুমিয়ে পার করে দেয়। জানেন বড্ড বেশি ভালোবাসতাম রাজকে! যার জন্য বাবার অবাধ্য হয়ে; বাবার অর্থবিত্ত রেখে রাজের হাতটি ধরে ছোট্ট কুটিরে বাসা বাধি। কিন্তু সেটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।
– এদিকে কথার মুখে পতিতালয়ে রাত কাটানোর কথা শুনে গা টা শিউরে উঠল! ম্যাডাম আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন।
– ভুল! না আমি আপনাকে কেন ভুল বুঝবো। ভুল বুঝেছিলাম তো বাবাকে। যেদিন বাবা প্রথম আমায় বললো, মারে তোর স্বামীর চরিএ ভালো না। সেদিন বাবার মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু যেদিন, বাবা আমাকে ডেকে নিয়ে তোমাকে দেখালো যে তুমি পতিতালয়ে ঢুকছো। সেদিন আমার পায়ের নিচে মাটি সরে গেয়েছিল। বুকের ভেতরটা ধুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল।
– কথা তোমার দেখার মাঝেও হয়তো ভুল আছে!
– আমার নিজের চোখকে তো অবিশ্বাস করতে পারি না। আমি নিজের চোখে দেখেছি, ফার্মেসি থেকে মেডিসিন নিয়ে পতিতালয়ে ঢুকেছো তুমি। সেদিন রাতে সুসাইড করতে গিয়েও পারিনি,গর্ভের সন্তানের কথা চিন্তা করে। তুমি না আমায় ভালবাসতে। এই ছিল তোমার ভালবাসা। তোমাকে বলতে চেয়েছিলাম আমায় কি তোমায় ভালো লাগে না! এই জন্য তুমি পতিতালয়ে রাত কাটাতে যাও! কিন্তু পারিনি। বুকের কষ্ট বুকে চাঁপা দিয়ে বাবার হাত ধরে চলে আসি। ভেবেছিলাম বাকিটা জীবন গর্ভের সন্তানকে অবলম্বন করেই পার করে দিবো। কিন্তু গর্ভের সন্তানটাও মারা যায়।
– কথা প্লিজজ চুপ করো, আমি আর এসব সহ্য করতে পারছি না। তোমাকে কিভাবে বুঝাবো, আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কোন মেয়েকে স্পর্শ পর্যন্ত করিনি।
– আচ্ছা তাহলে বলো পতিতালয়ে তুমি যাওনি?
– হ্যাঁ আমি গিয়েছিলাম। তবে,
– প্লিজ বাকিটা শুনতে চাই না! তোমার মুখে পতিতালয়ের ভেতরে কি হয়েছে, সেটা শোনার আগে যেন আমার মরণ হয়। তোমার নোংরামির কথা আর শুনতে মন চাচ্ছে না। কেন করলে এমন। আমি কি তোমার চাহিদা পূরণ করতে পারি নি।
– কথা আর বলো না!
– কেন, সত্যিটা জেনে গিয়েছি বলে? আর একটা কথা আমার জীবনটা নষ্ট করেছো ঠিক আছে, কিন্তু সাথির জীবনটা নষ্ট করো না।
মিস সাথি দেখেছেন তো কেন কুকুরের মতো তাড়িয়ে দিয়েছি। সত্যি বলতে যার চরিএ কুকুরের মতো তার সাথে সেরকম ব্যবহারই করতে হয়!
– কথা রাইসার কসম করে বলছি পতিতালয়ে অনৈতিক কাজ করতে যায়নি আমি!
-ঠাস লজ্জা করে না! ফেরেশতার মতো শিশুর কসম কাটতে। আচ্ছা বুঝলাম অনৈতিক কাজ করেননি। তাহলে বলে অশ্লীল কাজ করার জন্য, ফার্মেসি থেকে ট্যাবলেট নিয়ে পতিতালয়ে কি করেছেন?
– আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। যার জন্য এতোটা গোপন ভাবে পতিতালয়ে যেতাম। যেন কেউ কোনদিন বুঝতে না পারে। কিন্তু সত্যিটা প্রকাশ পেলো। সত্যি সত্য একদিন না একদিন প্রকাশ পায়। আমার আর বলার কিছু নেই! মাথাটা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি।
– কি হলো! মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলছেন। জানেন আমিও আমার মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম! আপনাকে যতটা ভালোবাসি ঠিক ততটাই আপনাকে হেট করি!
– কথা প্লিজ, বিশ্বাস করো, আমার জীবনে তুমি ছাড়া দ্বিতীয় কোন মেয়ে নেই! কথাটা বলে যখনি হাতটা ধরতে যাবো তখনি গালে থাপ্পর বসিয়ে দিল!
– তোর পাপি হাতে আমাকে ছুঁবি না!
– এই আপনি বাবাইকে মারলেন কেন?
আপনি এতো পঁচা কেন। আপনাকে বলেছিলাম না আমার বাবাইকে না মারতে, তবুও বাবাইকে মেরেছেন। জানেন না আমার বাবাই ছাড়া কেউ নেই! বাবাই তুমি কেঁদো না।
– কথা রাইসার দিকে চেয়ে আছে। অজস্র স্মৃতি ভেসে উঠছে কথার চোখে! মুখের দিকে তাকাতেই বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো। ঠোঁট কাটার দাগটা এখনো স্পর্ষ্ট দেখা যাচ্ছে! মনে হচ্ছে দাগটা তার কলিজাতে দেখা যাচ্ছে।
– কি হলো, আপনি ওমন করে চেয়ে আছেন কেন আমার দিকে। আপনি এখান থেকে চলে যান! আপনাকে দেখতে মন চায় না আমার! আপনি একটা খারাপ মেয়ে। যে কিনা বাবাই কে কষ্ট দিয়েছে।
– হাটুগেড়ে বসে রাইসাকে নিয়ে গালে মুখে চুমু দিয়ে, কুলে তুলে নিলাম!
মারে ওটা তোমার মম। মমকে পঁচা বলে না। তুমি না বলেছে, সবার মম আছে আমার মম কোথায়? এটাই তোমার মম।
– বাবা মিথ্যা বলছো উনি আমার মম হতে পারে না।
– নারে মা উনিই তোমার মম।
– বাবা তোমাকে কেন মারলো! তোমার গালে কিসের দাগ এগুলো বাবা?
– মারে কিছু না!
– রাইসা আমার দু’গালে চুমু দিয়ে বললো’ বাবা তুমি মিথ্যা বলেছো। ওই পঁচা মহিলা আমার মম হলেও আমি ডাকবো না! যে আমার বাবাইকে বকা দেয়, মারে।
– কথা রাইসাকে কুলে নিতে গেলেই, রাইসা চিৎকার দিয়ে বলে উঠে ছুঁবে না আমায়! তুমি জানো, বাবাই প্রতিরাতে তোমার ছবি বুকে নিয়েই কাঁদে! তারপরও তুমি বাবাইকে মেরেছ। তুমি আমার বাবাইকে একটুও ভালোবাসোনি। আমি যখন বাবাইকে মমের কথা বলতাম বাবা আমাকে বুকে নিয়ে কাঁদতো। আমার মম তুমি না আমার মম যদি হয় তাহলে উনি! সাথিকে দেখিয়ে দিয়ে।
– কথা অপলক দৃষ্টিতে আমার আর রাইসার দিকে তাকিয়ে আছে। এমন সময় রাইসা সাথিকে ডেকে বললো’ মম বাবাইকে পঁচা মহিলাটা মেরেছে, তুমি বকা দাওতো!
– সাথি কি বলবে বুঝতে পারছে না! রাইসার মুখে মম ডাকটা সাথির হৃদয়ে গিয়ে লাগে। মনটা আনন্দে ভরে ওঠে!
– কথা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তার রুমে চলে গেল!
.
রাজ সত্যিই কি তুমি পতিতালয়ে গিয়েছিলে?( সাথি)
.
আমি অসহায়ের দৃষ্টিতে সাথির দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিলাম!
– তোমার অসহায় দৃষ্টিই বলে দিচ্ছে তুমি সেখানে গিয়েছিলে।
– হুম, তবে একটা সত্যি জেনে নাও আমি সেখানে কেন গিয়েছিলাম সেটা কোনদিনই বলতে পারবো না। তবে আমি কথাকে ছাড়া কাউকে স্পর্শ করিনি কখনো।
– হুমম আমার বিশ্বাস তুমি এমন না। অনেকসময় আমাদের দেখার আড়ালেও অনেক সত্য লুকিয়ে থাকে। সাথি খুব ভালো করেই চিনে রাজকে। কারণ সাথি যে রাজের প্রতি দুর্বল তা রাজ ভালো করেই জানে। সাথি নিজেই রাজকে সুযোগ দিয়েছিল। লাভ হয়নি কারণ রাজ এখনো যে কথাকেই ভালবাসে। সাথি মনে মনে স্থির করে নিলো তার ভালবাসা দিয়ে রাজকে জয় করে নিবে।
– বিকেল বেলা সাগর পাড়ে আমি রাইসা, সাথি, আরও অফিসের কয়েকজন মিলে চোখে কাপড় বেঁধে কানামাছি খেলছি!
আমার চোখ বাঁধা। রাইসা পিছনে ঢুঁ মারছে, হঠাৎ একজনকে ধরে ফেললাম। সে আর নড়াচড়া করছে না। রাইসা হাত তালি দিচ্ছে। আমি চোখে বাধা কাপড় টা খুলতেই চমকে উঠলাম। সাথি আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আমি সাথিকে ছাড়িয়ে পিছন দিকে তাকাতেই দেখি কথা দাঁড়িয়ে আছে।
#রক্তের বন্ধন
Part_8
– বিকেল বেলা সাগর পাড়ে আমি, রাইসা, সাথি,ও আরও অফিসের কয়েকজন মিলে চোখে কাপড় বেঁধে কানামাছি খেলছি!
আমার চোখ বাঁধা। রাইসা পিছনে ঢুঁ মারছে, হঠাৎ একজনকে ধরে ফেললাম। সে আর নড়াচড়া করছে না। রাইসা হাত তালি দিচ্ছে। আমি চোখে বাঁধা কাপড় টা খুলতেই চমকে উঠলাম। সাথি আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আমি সাথিকে ছাড়িয়ে পিছন দিকে তাকাতেই দেখি কথা দাঁড়িয়ে আছে। মায়াবী চোখ জোড়া যেন অগ্নিমূর্তি হয়ে আছে।
.
মূর্হুতের মাঝেই সবাইকে অবাক করে বলল’ আমিও খেলবো তোমাদের সাথে।
.
অফিসের স্টাফদের মাঝে মিঃ রাফসান বলল, ম্যাডাম আপনি খেললে খুব ভালো হবে।
.
আমি আমার চোখের বাঁধনটা খুলে সাথিকে পরিয়ে দিলাম। পর্যায়ক্রমে খেলতে খেলতে কথার চোখ বাঁধা হলো।
.
আজ রাইসাকে অনেক খুশি মনে হচ্ছে। এদিকে মিঃ রাফসান আমাকে ধাক্কা দিতেই কথার উপরে গিয়ে পড়লাম। মনের ভেতরটা কেমন যেন ছ্যাঁত করে উঠল। মনে হচ্ছে মনের মাঝে জমানে কষ্ট গুলো বরফের মতো গলছে।
.
কথার কাছে মনে হচ্ছে বহুদিন পরে তার বুকের মাঝে প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ সবাই হাত তালি দিয়ে বলল’ চুর ধরা পড়েছে ‘।
কথা তার চোখের উপর থেকে কাপড় টা খুলেই অবাক হয়ে যায়। তার বুকে রাজকে দেখবে সে ভাবতে পারেনি। খুব করে মন চাচ্ছে চরিএহীনটাকে একটা থাপ্পর দিতে। কিন্তু কেন জানি হাত তুলতে গিয়েও হাতটা ফিরে আসছে। বুকের ভেতরটা কেমন কেমন করছে। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কথা।
.এমন সময় রাইসা এসে বলল বাবাই এই পচা মহিলার সাথে কি করো? বাবাই উঠো। আমার না পেট ব্যাথা করছে! কথা বলতে বলতেই রাইসা মাটিতে পড়ে গেল। এমন সময় সাথি দৌড়ে এসে রাইসাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো। আমি কথাকে সরিয়ে রাইসাকে কুলে তুলে নিয়ে হোটেল রুমে চলে গেলাম। রাইসার মাথাটা সাথী বুকের সাথে জড়িয়ে রেখেছে। হঠাৎ দরজার দিকে চোখ যেতেই দেখি কথা দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে আসার সাহস পাচ্ছে না। কথার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে।
.
নিজের অজান্তেই কথাকে ভেতরে আসতে বললাম।
সাথি আপনি একটু সরবেন। সাথি কথাকে দেখে বিছানা ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেল।
.
কথা বিছানায় বসেই রাইসার মাথাটা বুকের সাথে জড়িয়ে অঝোর নয়নে কাঁদতে লাগল। একটা সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হলো মায়ের কোল। কথা রাইসার কপালে গালে বারবার ভালবাসার স্পর্শ একেঁ দিচ্ছে।
.
এদিকে আমি বিছানার এক কোণায় বসে মা মেয়ের ভালবাসা দেখছি। এমনটাই তো চেয়েছিলাম আমি। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস এতোটা ভালবাসার পরও প্রিয় মানুষটার নিকট আজ আমি চরিএহীন।
.
কিছুক্ষণ পর রাইসার জ্ঞান ফিরতেই রাইসা কথাকে দেখতে পেয়েই বলল’ আপনি আমায় জড়িয়ে রেখেছেন কেন?’
আমার মম কোথায়। বাবাই তুমি এই পচাঁ মহিলাকে কিছু বলো না কেন। ( কান্না করতে করতে বলল)
.
মামনি, আমিই তোমার মম। কান্না করো না। তোমার মম এর যে কান্না পায়।
.
ছিঃ! তুমি আমার মম হতে পারো না। তুমি আমার মম হলে বাবাইকে কেন মেরেছো।
.
সরি মামনি তোমার বাবাইকে আর মারব না।
.
হুম ঠিকআছে। বাবার কাছে সরি বলো।
.
আচ্ছা, সরি।
.
এইবার তো হয়েছে?
.
না হয়নিতো? তুমি মম হলে বাবাই এর কাছে থাকো না কেন?
.
ওই চরিএহীনের সাথে থাকবো আমি? কখনোই না। মামনি তুমি আর আমি থাকবো। তোমাকে এত্তোগুলো খেলনা কিনে দিবো।
.
তুমি বাবাইকে চরিএহীন বললা কেন? এর আগেও বলেছো। আমি বলেছিলাম বলে তোমাকে, তুমি থাপ্পর মেরে আমার ঠোঁঠ কেটে দিয়েছিলে। আমার মম তুমি না আমার মম সাথী। বাবাই মমকে ডাক দাও এই পচাঁ মহিলা আমাকে তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছে। রাইসা কথার হাত ছাড়িয়ে এক দৌঁড়ে সাথির কাছে চলে গেল।
.
মম তুমি বলো, তুমিই আমার মম।
ওই পঁচা মহিলা যা বলছে সব মিথ্যা বলছে। তুমি চলে যেতে বলো ওই মহিলাকে।
.
সাথি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। চুপ করে আছে।
.
মামনি চুপ করে আছো কেন। পঁচা মহিলাকে বলো তুমি আমার মম। বল না মম বল।
.
সাথি রাইসার কথা শুনে, কথার কাছে গিয়ে বলে ‘ আপনি রাইসাকে আর বলবেন না আপনি তার মম। রাইসার মম হচ্ছি আমি। ( সাথি কথাটা রাইসার জন্য শুধুশুধুই বলেছিল)
.
কিন্তু কথাটা শুনার সাথে সাথেই কথার মাথা রক্ত উঠে পড়ে। কি বললি, রাইসা তোর মেয়ে কথাটা বলেই ‘ সাথির গালে সজোরে চড় বসিয়ে দেয়। সাথি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আবার যখন সাথির গায়ে চড় বসিয়ে দেয় তখনি ‘ কথার হাতটা ধরে ফেলি। এই ছোটলোকের বাচ্চা তোর কীভাবে সাহস হয় আমার হাত ধরার। সাথি কি তোর বউ হয়? যে ওকে মারলে তোর এতো জ্বলে। একটা নষ্টা মেয়ের জন্য তোর এত দরদ কেন। ও দেহের চাহিদা মেটাতে পারিস তো তাই!
.
কথাটা শেষ করার আগেই কথার গালে ঠাস ঠাস করে দুইটা চড় বসিয়ে দিলাম।
.
কথা গালে হাত দিয়ে বলল ‘ তুমি আমাকে মারতে পারলে?
.
হুম মারলাম। তুমি আমার স্ত্রী হয়ে আমার গায়ে হাত তুলতে পারলে আমি কেন পারব না। ওহ! সরি, আপনি তো ডির্ভোস দিয়ে দিয়েছেন। আপনার চোখে ছিল রঙিন স্বপ্ন। সেদিন আমার চোখের জলগুলো আপনার সুখের কাছে অর্থহীন ছিল। আর আপনি না বললেন সাথি নষ্টা মেয়ে। সত্যিই সাথী নষ্টা মেয়ে যে কিনা আপনার সন্তানকে মায়ের স্নেহ দিয়েছে। আর আপনি যাকে নষ্টা বললেন সে ফুলের মতো পবিএ। আর আপনি, নিজের বাচ্চাকে হত্যার মতো জঘন্য কাজ করে অন্যের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেওওয়ার জন্য বিয়ের পিড়িতে বসেন।
.
চুপ একদাম চুপ ভুলে যেয়ো না আমি তোমার অফিসের বস। আমার টাকার তোমার অন্ন জুটে। ইচ্ছা করলেই তোমার মতো চরিএহীনকে লাথি মেরে বের করে দিতে পারি। যে মেয়ে যুবতী একটা মেয়েকে নিয়ে একই বাসায় থাকে। যে স্বামী তার স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা রেখে নিজের শরীরের চাহিদা মিটাবার জন্য পতিতালয়ে যায়।
.
চুপ একদম চুপ আর একটা কথাও বলো না। হ্যাঁ, হ্যাঁ আমি চরিএহীন। আমার অপরাধ আমি পতিতালয়ে গিয়েছিলাম। আর সাথি আমার হবু বউ। ওকেই বিয়ে করব।
.
কথা রাজের মুখের কথাটা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল। খুব কষ্ট হচ্ছে রাজের মুখে সাথি নামটা শুনে। চোখের পানি মুছে, বলতে লাগল আমাকে। রাজ আমি আমার মেয়েকে কোন চরিএহীনের কাছে রাখবো না। আমি আমার মেয়েকে আমার সাথে নিয়ে নিবো। কথা তার চেক বই বের করে আমার দিকে ছুড়ে দিয়ে বললো’ কতটাকা চাই এমাউন্ট বসিয়ে দিয়ে আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।
.
মিসেস কথা আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন, রাইসা আপনার মেয়ে নয়। রাইসা আমার মেয়ে। আমিই তার বাবা আমিই তার মা।
.
আমি তোকে দেখে নিবো। কেমন করে পারিস রাইসা কে তোর কাছে রাখতে।
.
কথা চলে গেলে। সাথিকে বললাম’ সাথি তুমি কিছু মনে করো না! আমি কথাকে রাগানোর জন্য বলেছি তুমি আমার হবু বউ।
.
সাথি লজ্জা মাখা মুখে মাটির দিকে তাকিয়ে মুঁচকি হেসে বলল’ না আমি কিছু মনে করিনি! তবে আপনার কাছে একটা অনুরোধ রাখবেন?
.
হ্যাঁ বলো কি অনুরোধ?
.
আমি তো কোনদিন মা হতে পারব না। আমার এতে কোন আফসোস ও নেই। তবে তোমার কাছে আমি রাইসাকে ভিক্ষা চাই। আমি তোমার কাছে স্বামীর অধিকার চাই না। শুধু রাইসার মা হওয়ার অধিকারটুকু চাই। দিবে তো?
.
সাথির কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। জানো সাথি আমার হৃদয়টা যে কথার স্মৃতিতে পূর্ন। অামার হৃদয়ের আসনটাতে চাইলেই অন্য কাউকে বসাতে পারব না।
.
হঠাৎ রাইসা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আবারো সেন্সলেস হয়ে যায়। মাথার পিছন থেকে অনবরত ব্লাড বের হচ্ছে।
চলবে”””””’