যখন_তুমি_এলে পর্ব: ৩৫।

0
613

#যখন_তুমি_এলে
লেখা: জাহান লিমু।
পর্ব: ৩৫।

যেখান থেকে সমস্যার উদ্ভব হয়, সেখান থেকেই সমাধান করতে হয়। তবে ওদের জীবনের সমস্যা শুরু হয়েছিলো ভার্সিটি থেকে,যার ফলশ্রুতিতে আজকে সবাই সেখানে উপস্থিত। একটা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কেউ কোন কথা বলছেনা। সবার মধ্যে অদ্ভুত জড়তা কাজ করছে। কারন একজন আরেকজনের চোখে অপরাধী। রোহানী আরাদের কাছে অপরাধী, আরাদ ওদের দুজনের কাছে আর ওরা দুজন ওদের দুজনের কাছে। সাচী এখানে এসে তুহিনকে দেখতে পেয়েই তৎক্ষনাৎ চলে যেতে নিয়েছিলো। আরাদ কি কারনে যেন ভার্সিটি আসতে বলেছিলো। সবাইকে একসাথে দেখে সাচী চোখ-মুখ কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। কি ঘটতে চলেছে এখানে?
একটা পিনপতন নীরবতা পালন করছে সবাই। যেন এখন চুপ থাকাটাই যুক্তিযুক্ত। নীরবতা ভেঙে একসময় তুহিনই কথা বলে উঠলো।
” সরি!”
সাচী বিস্ময়ে তুহিনের দিকে তাকালো। কাকে সরি বলছে তুহিন?
তুহিন আবার নিজের মত করে বলতে লাগলো,
ঐদিন আমার সাথে যে মেয়েটা ছিলো,সে আমার কাজিন। ওর বিয়ের শপিং করতেই গিয়েছিলাম। সেখানে গাড়িতে তোমাদের দুজনকে একসাথে দেখে, আমার জেলাস ফিল হচ্ছিলো। হ্যাঁ,যদিও আমাদের ব্রেকআপ হয়েছে একবছর আগেই। কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম,আমি এখনো সাচীতেই আঁটকে আছি। তুহিনের কথাটা শুনে সাচীর শিরদাঁড়া বেয়ে একটা শীতল রক্তস্রোত বয়ে গেলো। মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো। এতোদিন পর এখন এসব কি বলছে তুহিন?
আর যদি এসব বলারই ছিলো,তাহলে এসেই কেন বলেনি? সাচীর অসহ্য লাগছে এসব শুনতে। মনে হচ্ছে সব মেকি।

আমি সাচীকে দেখানোর জন্যই এমনটা করেছিলাম। তোমাকে তো আর আমি চিনিনা। আরাদকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলেন তুহিন। আরো বলতে লাগলো,
হ্যাঁ,তোমাদের একসাথে দেখেই যে জেলাস ফিল করতে হবে,তেমনটা ভাবার অবকাশ নেই। সেটা আমিও জানি। দুটো ছেলেমেয়েকে একবার একসাথে দেখলেই অন্যকিছু ভাবার অবকাশ নেই। কিন্তু আমিতো তোমাদের বেশ কয়েকদিন একসাথে দেখেছি। কখনো বাইকে,কখনো গাড়িতে,কখনোবা সাচীদের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ফুঁচকা খেতে।
তুহিনের কথা শুনে আরাদ,সাচী দুজনই স্তব্দ হয়ে গেলো পুরো। তার মানে তুহিন ওদের ফলো করতো?
কিন্তু কেন?
তুহিনই সে প্রশ্নের উত্তর দিতে লাগলো এক এক করে। তুহিন দেশে আসার দিনই গাড়ি থেকে সাচী আর আরাদকে একসাথে বাইকে দেখে। সাচী আরাদের কাঁধ ধরে বসেছিলো। দুজনই হাসছিলো কোন কারনে। দেখেই মনে হবে,একটা হ্যাপী কাপোল।
সেই দৃশ্য দেখে মুহুর্তেই আমার মন বদলে যায়। কারন আমি এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি সাচীর বাসায় গিয়ে ওকে সারপ্রাইজ দিতে আর সরি বলতে চেয়েছিলাম। কারন আমি ওকে ভুলতে পারছিলাম না। কিন্তু দেশে এসে আমিই বড় সারপ্রাইজ পেয়ে গেলাম। তারপর তোমাদের উপর নজর রাখছিলাম। সাচীর বাসায় তোমার প্রতিনিয়ত যাতায়াত, সব দেখছিলাম আমি। তোমাদের হেসে হেসে কথা বলা,সব আমার মনকে বিষিয়ে দিচ্ছিলো। আমি ভেবেছিলাম, সাচীও হয়তো আমার মত কষ্টেই দিনগুলো কাঁটিয়েছে। কিন্তু আমি তো ভুল। সে তো সামনে এগিয়ে গিয়েছে। তখন আমার দিশেহারা লাগছিলো। আমি বুঝতে পারলাম,সরি বলার জন্য
আমি অনেক দেরি করে ফেলেছি। যদিও ব্রেকআপের দোষটা
আমার ছিলো না। তথাপি একহাতে তো আর তালি বাজেনা। হ্যাঁ,আমি সাচীকে সব বুঝাতে পারতাম। কিন্তু তখন আমার মেজাজ অসম্ভব খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। দিকবিদিকশুন্য হয়ে ব্রেকআপ করে একেবারে দেশ ত্যাগ করে চলে যায়। হয়তো ভাবছো,এটার জন্য দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কি আছে?
হ্যাঁ,বলছি সব। সাচী আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা নয়। কথাটা যেন বাজ পড়ার মত উপস্থিত সবার কানে আঘাত হানলো।
তুহিনের কথাটা সাচীর কানে বারবার প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো। পাথরের ন্যায় স্থির বসে রইলো সে। তুহিনের কথা শুনে সে চুপ হয়ে গেছে পুরো। নিজে কথা বলার শক্তি যোগাড় করতে পারছেনা।

তুহিন ওর মতো বলে চলেছে। আমার প্রথম প্রেম হয়,যখন কলেজে পড়ি। ইন্টার পরীক্ষার আগে আগেই। হুঁট করে ঐ মেয়েটাই আমাকে প্রপোজ করে বসে। আমি অতটা পাত্তা দেয় নি। কারন অনেক মেয়েই স্কুল লাইফ থেকেই আমাকে প্রপোজ করে আসছে। কিন্তু এই মেয়েটা অন্যরকম ছিলো। ভীষণ পাগলামি করতে শুরু করলো। ওর কারনে আমি কোচিং পরিবর্তন করলাম। সেও পরিবর্তন করলো। তখন পরীক্ষা সামনে। তাই আমি এসব নিয়ে একদম ভাবছিলাম না। কিন্তু ঐ মেয়ের কাছে একসময় আমি পরাজিত হয়ে গেলাম। হ্যাঁ,আমিও তার প্রেমে পড়ে গেলাম। একেবারে সিরিয়াস প্রেম। যদিও ঐটা আবেগের বয়সই ছিলো। বেশ ভালোই চলছিলো সবকিছু। আমরা পরীক্ষা দিলাম,একসাথে এডমিশন কোচিং করতে লাগলাম। সেখানেই সমস্যাটার উদ্ভব হলো। সে আমার ব্যাপারে অতিরিক্ত পজেসিভ ছিলো। সেখানে আরেক মেয়ে আমাকে প্রপোজ করে বসে। আর সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরে। তিথি সেদিন কোচিং-এ আসেনি। তাই আমি হাঁফ ছেড়ে বেঁচে ছিলাম। কিন্তু ঐ যে একটা কথা আছে না,যেখানে বাঘের ভয়,সেখানেই সন্ধ্যাে হয়। আমার সাথেও সেটাই হয়েছিলো। কে যেন ছবি তুলে তিথির কাছে পাঠিয়েছিলো। সেটা দেখে তিথি সুইসাইড পর্যন্ত করতে যায়। আমি তিথিকে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করি। কিন্তু সে আমাকে বিশ্বাস করে না। অবশেষে আমার সাথে ব্রেকআপ করে। তখন এডমিশন পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু আমি একেবারে ভেঙে পড়লাম। ফলে কোথাও চান্স হলো না আমার। অথচ আমি ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া ছাত্র।এরপর রাগে বাইরে চলে যায় পড়াশোনা করতে। তিথির সাথে আর কোনদিন যোগাযোগ করার চেষ্টা করিনি। না নতুন করে আর কোন মেয়েকে ভালোবেসেছিলাম। তবে তিথির বিয়ে হয়ে গেছে,সেটা শুনেছি বন্ধুদের মাধ্যমে। তবে তার জন্য আমার আর কোন অনুভূতি ছিলো না তখন। এখনও নেই।

অনেক বছর পর সেই অনুভূতিহীন হৃদয় চরাচরে কেউ ভালোবাসার বৃষ্টি নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু হায়!
সেও আবার একই কাজ করলো। সেও সন্দেহের বীজ বুনে চলে গেলো।
আমি জানতাম সব মিথ্যে। কারন টিপের সাথে আমার কোনরকম সম্পর্ক ছিলো না। আর ছবিগুলোও সব ফেইক। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে,তাহলে সেটার ব্যাখ্যা সাচীর কাছে কেন দেই নি। বলছি।
কারন একটাই,সাচী আমাকে সন্দেহ করেছে। আমি ঠিক এই জিনিসটাই আমার জীবনে সবচেয়ে ঘৃণা করতাম। আর সাচী সেটাই করলো। তাই কোনরুপ ব্যাখ্যা প্রদান ব্যতীতই আমি ব্রেকআপ করে দেই। আর সাচী যেন আমার নাগাল না পাই,সে জন্য নিজেকে আড়াল করে ফেলি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সবার থেকে। কারন আমি জানতাম,তিথি তার ভুল বুঝতে না পারলেও,সাচী একসময় ঠিকই বুঝবে। এমনটা ভাবার কারন হলো, সাচী ম্যাচিউর একটা মেয়ে। আর তিথি ছিলো ইমম্যাচিউর। আর আমি সাচীকে সে সুযোগটাই দিতে চাই নি। সেটা হয়তো আমার ক্রোধের কারনেই।
কিন্তু আমি অনেক চেষ্টা করেও,ওকে ভুলতে পারিনি। প্রতিদিন ওর ছবিগুলো দেখে ঘুমাতে যেতাম। ফেইক আইডি দিয়ে ওর সব আপডেট চেক করতাম। যেহেতু এতোদিনেও নতুন কোন রিলেশানে জড়ায়নি,তাই আমি আমার রাগ,ইগো ভুলে আবার ফিরে আসলাম। কিন্তু এখানে এসে আমি অন্যকিছুই দেখতে পেলাম। আমার বুকে যে টুকু আশা ছিলো,সেটাও দপ করে নিভে গেলো তোমাদের একসাথে দেখে। এতে আমার কি দোষ বলো?
তোমরাও তো আমার কাজিনের সাথে আমাকে দেখে, একই জিনিসটা ভেবেছো। তাহলে আমার ভাবনাটা কি ভিত্তিহীন ছিলো?
তুহিনের বক্তব্য শুনে সবাই স্তব্দ হয়ে আছে। আরাদ রোহানীর মুখের দিকে তাকাচ্ছে,রোহানী আরাদের দিকে। কেবল এখানে উপস্থিত বাকী দুটো মানুষ নির্লিপ্ত হয়ে বসে আছে। সাচীর দৃষ্টি শূণ্যে। সে কি ভাবছে,তা নিজেও বোধহয় জানে না। আরাদ একবার সাচীর দিকে তাকালো। কিন্তু সাচী ভাবলেষহীনভাবেই বসে আছে। দুটো বিপরীত বসার জায়গাতে ওরা বসেছে। ক্যাম্পাসের ভেতরে গেইটের পাশেই এভাবে বসার ব্যবস্থা আছে। রোহানী আর সাচী একপাশে আর তুহিন, আরাদ অন্যপাশে।

তুহিন উদাস চোখে সাচীর দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু সাচী এখন পর্যন্ত একবারও তুহিনের দিকে তাকায়নি। যেটা তুহিনের হৃদয়ের যন্ত্রণাটা তীব্র করে দিচ্ছে। কতদিন পর স্বশরীরে দেখছে। দুইফুটের দূরত্ব,অথচ মনে হচ্ছে এ যেন শতসহস্র দূরত্বের দেয়াল গড়ে উঠেছে ওদের মাঝে। যে দেয়াল ভাঙ্গা সহজ নয়। কারন দূরত্বটা যে তুহিন নিজেই গড়েছে। তাই ভাঙতেও হবে তাকেই।
গতকাল আরাদের মুখে সব শুনে তুহিনের বিশ্বাস হতে চায় নি। আরাদ জানে তুহিন বিশ্বাস করবেনা। তাই রোহানীকেও সাথে নিয়ে গিয়েছিলো। দুজন মানুষের কথা বিশ্বাস হতে বাধ্য। আর এমন মিথ্যা বলে আরাদেরই বা কি লাভ? কেউ অপরাধ করে,তা আবার স্বীকার করতে যাওয়ার মত বোকামি নিশ্চয়ই করবেনা। সেখানে আরাদ নিজে সব স্বীকার করছে। সব শুনে তুহিন সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হলো ওর কলিগ টিপের প্রতি। সে কি করে এমন জঘন্য একটা কাজ করতে পারলো। তুহিন নরমালি ওকে হাগ করেছিলো জাস্ট। আর সে এটার সদ্ব্যবহার করলো। মনে হচ্ছিলো ওকে খুন করে ফেলতে। কিন্তু আরাদই তুহিনকে শান্ত করলো। আরাদ সব দোষ ওর নিজের কাঁধে নিলো। আর এটাও বললো যে,সাচী তুহিনের ছিলো,এখনো তুহিনেরই আছে। এখনো প্রতিনিয়ত তুহিনের নামই জপে চলেছে। তুহিনের ফেরার অপেক্ষায় সে সময় গুনে চলেছে। এখন হয়তো অভিমান করেছে।
আর আরাদ যে সাচীর শর্টফিল্মে কাজ করছে,আর সে কারনেই সাচীদের বাড়িতে যায়,সেটাও বুঝিয়ে বললো। তুহিন জানতো সাচী শর্টফিল্ম বানায়। তাই অবশেষে বিশ্বাস করলো। আর সাচীকে সন্দেহ করার কারনে,নিজের প্রতি ঘৃণাবোধ হতে লাগলো। ভালোবাসলে সেখানে সন্দেহ বাসা বাঁধতে পারেনা এতো অল্পতেই। সাচী যে ভুলটা করেছিলো,তুহিনও সেই একই ভুল করতে চলেছিলো। ভাগ্যিস আরাদ ছিলো।
নয়তো এই ভুল বুঝাবুঝি শেষ হওয়ার কোন সুযোগ ছিলো না। তুহিন হয়তো কোন উল্টাপাল্টা ডিসিশন নিয়ে ফেলতো।

সাচী তখনো গম্ভীর হয়ে বসে আছে। আরাদই সাচীকে প্রশ্ন করলো,
” আমার ভুল কি আমি শোধরাতে পেরেছি?”
সাচী কেমন দৃষ্টি নিয়ে যেন তাকালো আরাদের দিকে। যে দৃষ্টির মানে আরাদের জানা নেই। সাচীর চোখ জলে টলমল করছে। মুখটা লাল হয়ে আছে। সাচীর সেই মুখটা আরাদের ভেতরটা কাঁপিয়ে দিলো। একটা মানুষ কাউকে কতটা ভালোবাসলে এভাবে অপেক্ষা করতে পারে? তুহিন আসলেই একজন সৌভাগ্যবান পুরুষ। যে এমন একটা মেয়েকে নিজের করে পারে। যার ভালোবাসায় কোন খাঁদ নেই।

একটা সময় আরাদ বললো,
” আমাদের দুজনের দায়িত্ব শেষ। এবার আপনাদের মান-অভিমান আপনারা মিটিয়ে নিন। আমাদের এখানে থাকার আর কোন প্রয়োজন দেখছিনা। আর শেষ বারের মত দুজনের কাছে ক্ষমা চাইছি। ভালো থাকবেন। এটা বলেই আরাদ আর একমুহূর্তও সেখানে দাঁড়ালো না। সাচীর দিকে একনজর তাকিয়ে দু’হাত এক করে সব মিটমাট করে নেওয়ার অনুরোধ করলো। এতেই আরাদের অপরাধবোধ ঘুচবে। সাচী একদৃষ্টিতে আরাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। যে দৃষ্টিতে তুহিন অন্যকিছুই দেখতে পেলো। তবে নিজের মনের ভাবনাটা সে সরিয়ে নিলো তৎক্ষনাৎ। সব জানার পর সন্দেহ করার কোন মানেই হয় না। এখন বরং সাচীকে স্বাভাবিক করা জরুরী। যেভাবে কালো মেঘ জমিয়ে রেখেছে,কখন যে বর্ষণ শুরু হয় কে জানে। তার আগেই মেঘ সরিয়ে দিতে হবে।
আরাদ, রোহানী অনেকটা দূর চলে গেল। রোহানীর ফোন বেজে উঠায় সে একটু দূরে গিয়ে কথা বলতে লাগলো। আরাদ তখন একটু সামনে এগিয়ে এসে, একটা গাছের আড়ালে দাঁড়ালো। এখান থেকে ওদের দুজনকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তুহিন অনেকভাবে সাচীকে মানানোর চেষ্টা করছে। কানে ধরছে,উঠবোস করছে। আশেপাশে অনেকে দেখে মুখ টিপে হাসছে। তুহিনের সেদিকে পাত্তা নেই। সে ওর কাজ করে যাচ্ছে। প্রিয় মানুষের মান ভাঙাতে,লজ্জা ভুলে যেতে হয়। পরিস্থিতি উপেক্ষা করতে হয়। আরাদ দূর থেকে হাসলো সেই দৃশ্য দেখে। একসময় দেখলো,সাচী উঠে দাঁড়িয়েছে। আর সাথে সাথেই তুহিনের গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। থাপ্পড় পড়লো তুহিনের গালে,এদিকে আরাদ ওর গাল চেপে ধরলো হাত দিয়ে। পাশ থেকে সে দৃশ্য দেখে,রোহানী হেসে খুন। আরাদ দ্রুত হাত সরিয়ে নিলো। রোহানী তখনো হাসছে। তার বন্ধুটা এতটুকু মেয়ের থাপ্পড়গুলো ভুলতে পারছেনা।
আরাদ বিরক্ত হয়ে চলে যেতে নিলে,মুহুর্তেই ওর চোখ দুটো স্থির হয়ে যায় সামনে। তুহিন আচমকা সাচীকে জড়িয়ে ধরেছে, এখানেই সবার সামনে! আরাদতো এটাই চেয়েছিলো। ওর সব অপরাধবোধের সমাপ্তি ঘটলো তবে। সব ঠিক আছে এখন। তবে আরাদের মুখটা দেখে রোহানী বেশ চিন্তিত হয়ে গেল। সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে,সে নিজে তো পা পিছলে পড়ে যায় নি? অনেকটা কলার খোসা রাস্তা থেকে সরিয়ে মানুষের ভালো করতে গিয়ে,নিজেই পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মতন।
রোহানী সবসময় এটাই চাইতো। কোনদিন কেউ এসে ওর বন্ধুর উপর প্রেমের বিমান নিয়ে,ক্রেশ করুক। ভালোবাসায় অঙ্গার করে দিক দেহমন। কিন্তু সেটা এভাবে নয়। যেটা ভাবছে,সেটা সত্য হলে যে ওর বন্ধু জীবন্ত লাশ হয়ে যাবে!

#চলবে…

সাইলেন্ট পাঠকরা এবার তো একটু সাড়া দিন। সবার গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। গল্প আর বেশি বাকী নেই। পাঁচ-সাত পর্ব হবে। কারন পর্ব বড় করে দিচ্ছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here