যখন তুমি এলে
লেখা- জাহান লিমু।
পর্ব – ৩১
একটা শীতল রক্তস্রোত শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে গেলো। মনে হচ্ছে আকাশের মেঘগুলোর উড়াউড়ি থেমে গেছে,বায়ু বইছেনা, প্রকৃতি বোধহয় বিস্ময়ে স্তব্দ হয়ে গেছে! বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত অবস্থা হলো সাচীর। ওর এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট পাচ্ছে। নিঃশ্বাস নিতেও বোধহয় ভুলে গেছে সে। কি হলো এটা?
মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে। চোখে সর্ষে ফুল দেখছে সে।
পা অবশ হয়ে আসছে ধীরে ধীরে। চোখ তুলে তাকাতে পর্যন্ত পারছেনা সে।
ঐদিকে এ দৃশ্য দেখে বাদলের হেঁচকি উঠে গেছে। নিজেকে কত কষ্ট করে বুঝাচ্ছিলো, সেই উল্টোটাই হলো!
এতো ইনোসেন্ট একটা মেয়েরও বয়ফ্রেন্ড আছে?
এটা দেখার আগে,বাদল বিয়ে করে ফেললোনা কেন?
এখন কি তবে সিংগেল মেয়ে খুঁজার জন্য, বাল্যবিবাহ করতে হবে তার!
না, না, পুলিশ কেইস খেতে হবে তাহলে। এটা বলেই,একঢোক গিললো সে।
বাদল, সাচী দুজনেই যখন ঘোর থেকে বের হতে পারছিলোনা,তখন পুনরায় আরো এক লেবেল উপরের ঘোরে পড়তে হলো তাদের। পেছন থেকে আলতো করে সাচীকে জড়িয়ে ধরলো সে। তারপর একটা লাল গোলাপের বুকে সাচীর সামনে মেলে ধরলো৷ বাদলের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। মেয়েদের মত দুঃখে তার কান্না করতে মন চাইছে। পছন্দ করার সাথে সাথে, ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হতে হলো তাকে!
সাচীর চোখে বিস্ময়,মুখ বাকরুদ্ধ!
বুকেটা কোনক্রমে হাতে নিলো সে। তবে ধরতে গিয়ে ফেলে দিচ্ছিলো। তখন সেই সুদর্শন তাড়াতাড়ি ধরে নিলো। আর কোমল কন্ঠে বললো,
” একটু সাবধানে ধরবে তো বাবু।”
বাবু! কথাটা যেন আকাশে-বাতাসে চারদিকে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো। সাচীর চোখগুলো রসগোল্লার মত বড় বড় হয়ে গেল। সে অস্ফুট স্বরে উচ্চারণ করলো,বাবু!
সাচীর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে শুরু করেছে। একঢোক গিললো সে। প্রথম ঝঁটকাটাই এখনো সামলে উঠতে পারেনি সে। কি হচ্ছে এখানে?
সাচী কি ঘুমের মধ্যে কোন দুঃস্বপ্ন দেখছো?
না,এখনতো দিন। সাচী নিজে এখানে এসেছে। আর তাছাড়া সাচীর দিনে ঘুমানোর অভ্যাস নেই। তার মানে যা ঘটছে,সব সত্য। কিন্তু সত্যটা হজম করতে গিয়ে সাচীর শরীর থেকে ঘাম ছুটছে।
মুহুর্তেই বাদলের কথায় সাচী আরেকদফা বিষম খেলো। সাচী কিছু বলতে যাবে,তার আগেই সে বলে উঠলো,
” ইয়েস,উই আর ইন অ্যা রিলেশনশিপ।”
কথাটা শুনে বাদল,সাচী একইসাথে দুজন বিষম খেলো। বাদল সাচীর দিকে পানি এগিয়ে দিতে গেলে,আরাদ সে পানি ছোঁ মেরে নিয়ে,নিজে সাচীর মুখের সামনে ধরলো। সাচী চোখ মুখ কুঁচকে তাকিয়ে আছে। বাদল তখন ভাবনায় বিভোর। সাচীর চোখে তাকিয়ে আরাদ কিছু একটা ইশারা করলো। সাচী সেটা ঠিক বুঝতে পারলোনা। আরাদ সাচীর হাতে পানির গ্লাসটা দিয়ে ওর ফোন হাতে নিলো৷ দ্রুত একটা মেসেজ টাইপ করলো। সাচীর ফোনে মেসেজ টোন বেজে উঠলো। আরাদ সাচীকে মেসেজ চেক করার জন্য ইশারা করলো। সাচী আরাদের কথামত সেটা করলো। মেসেজটা পড়ে ভ্রু কুঁচকে আরাদের দিকে তাকিয়ে রইলো। আরাদ নিজের চোখের পাপড়ি বন্ধ করে সাচীকে আশ্বস্ত করলো,সব ঠিক হবে। শুধু আরাদের উপর ভরসা রাখার জন্য।
সাচীর সবকিছু হ-য-ব-র-ল লাগছে। তবুও সে আরাদের সাথে সায় দিতে লাগলো। টেবিলগুলো দুজনের,মানে কাপোল টেবিল। তা স্বত্তেও আরাদ পাশের টেবিল থেকে একটা চেয়ার নিয়ে, একদম সাচীর পাশে এসে বসলো। বসেই সাচীর হাতে হাত রাখলো। সাচী কেঁপে উঠলো। কি করছে এই লোক! কিন্তু নিজের সমস্যা সমাধান করার কারনে,সাচী সব মেনে নিচ্ছে। আরাদকে এভাবে সাচীর হাত ধরতে দেখে,বাদল তার বুকের বা-পাশে হাত চেপে ধরলো। এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে সে এদের প্রেম দেখে, নিশ্চিত হার্ট অ্যাটাক করবে। বুকটা কেমন ব্যাথা করছে৷ চোখের সামনে নিজের ক্রাশের প্রেমিককে, তার সাথেই রোমান্স করতে দেখার চেয়ে, এভারেস্ট থেকে লাফ দিয়ে মরে যাওয়া ভালো। একবুক হাহাকার বেরিয়ে এলো বাদলের বুক চিঁড়ে। বাদল আর সইতে পারছেনা। তৎক্ষনাৎ কিছু না বলে, সে এই স্থান ত্যাগ করলো। এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে,সে নির্ঘাত স্ট্রোক,হার্ট অ্যাটাক সব একসাথে করে বসবে। বাদলের বাংলা ঐ গানের লাইনটা খুব মনে পড়ছে।
আমি জ্ঞান হারাবো,মরেই যাবো,বাঁচাতে পারবেনা কেউ। এখানে থাকলে হার্ট অ্যাটাক না করলেও, সে সত্যিই জ্বলে পুড়ে মরে যাবে।
বাদল চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আরাদ ওর হাত সরিয়ে নিলো। পাশ থেকে উঠে গিয়ে, সামনের চেয়ারটাতে বসলো। সাচী এবার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো। আরাদ সে দৃষ্টির মানে জানে৷ তাই সে সাচীকে পুরো বিষয়টা ব্যাখ্যা করতে লাগলো।
কেন সে এমন অদ্ভুত কান্ডগুলো করেছে। সব শুনে সাচী বললো,আপনি আমার বয়ফ্রেন্ড সেটা তাকে সরাসরি বললেই পারতেন। এরকম করাটা কি খুব জরুরি ছিলো।
কেমন করাটা? আরাদ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো৷ চোখেমুখে দুষ্টুমির ছাপ।
সাচী চোখ কটমট করে আরাদের দিকে তাকালো। আরাদ সাথে সাথেই স্বাভাবিক মুডে ফিরে আসলো। কারন থাপ্পড়ের ব্যথাটা এখনও মাঝে মাঝে অনুভূত হয়। আর থাপ্পড় খাওয়ার শখ নেই৷
তাই স্বাভাবিক ভাবে বলতে লাগলো,
” দেখুন,আজকাল মানুষ মুখের কথায় সহজে বিশ্বাস করে না। আর আমিও কথায় নয়,কাজে বিশ্বাসী। তাছাড়া আজকাল সবাই জানে,মেয়ে বিয়েতে রাজি না থাকলে,তার ফ্রেন্ডকে বরের সামনে বয়ফ্রেন্ড সাজিয়ে দেয়। আমি সেই রিস্ক নিতে চায় নি। তাই যা করার চাক্ষুষ করলাম। এরপর আর সন্দেহ করার কোন অবকাশ নেই। সে নিজেই এখন বিয়ে ভেঙে দিবে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। সাচী কেমন যেন সন্দেহের দৃষ্টিতে আরাদের দিকে তাকালো।
আচমকা আরাদ সাচীর দু’হাত আবারও চেপে ধরলো। এবার সাচী বিরক্ত হয়ে গেলো। সাচী হাত ছিঁটকে সরাতে নিলে,আরাদ আরো জোরে চেপে ধরে। সাচী একরাশ বিরক্তি নিয়ে আরাদের দিকে তাকায়৷ আরাদ তখন বেসুরো গলায় ধীরে ধীরে গান গাইতে লাগলো,
ও মুজে ছোরখার,
জো তুম যাওয়াগে,
বড়া পঁচতাওগে,বড়া পঁচতাওগে।
গান শুনে,আর আরাদের মুখের এক্সপ্রেশান দেখে বিরক্তির মধ্যও, সাচীর হাসি পাচ্ছে ভীষণ। তবুও সে নিজেকে সংযত করে নিলো। একদম হাসা যাবে না। কিন্তু সহসা আরাদের এমন করার কোন হেতু খুঁজে পাচ্ছে না সে। সেটা দেখে আরাদ পুনরায় আরেকটা গান গাইতে শুরু করলো। কিন্তু এতেও সাচী কিছু বুঝতে পারছেনা। একপর্যায়ে আরাদ সাচীকে টেনে দাঁড় করালো। এবং আচমকাই সাচীকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে, আলতো করে জড়িয়ে ধরলো। সাচী পুরো রোবটের মতো হয়ে গেলো। আজকে দিনটা ওর জন্য জঘন্য। যখন আরাদকে কিছু বলতে যাবে,তার আগে আরাদই বলে উঠলো,
” ঐ মালটা এখনো যায় নি। আপনার সোজা একটা গাছের দিকে তাকিয়ে দেখুন,সে লুকিয়ে আমাদের অনুসরণ করছে। তার মানে এতো কিছুর পরও,তার মনে সন্দেহ থেকে গেছে। আর আপনি বলছিলেন,জাস্ট মুখে বলে দেওয়ার জন্য। আমি বলেছি না,এই মক্কেল জবর মাল।
সাচী আরাদের কথা অনুযায়ী সোজা গাছের দিকে তাকালো। আসলেই ঐখানে একটা কাউকে দেখা যাচ্ছে। তবে এখন মুখ দেখা যাচ্ছে না। তার মানে সে সরে গেছে এখান থেকে। কারন গাছের পাতাগুলো নড়ছে এখনো।
আরাদ সাচীকে বললো,
” এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে,ধরা পড়ার সম্ভাবনা আছে। এই মালটা বেজায় প্রবলেম করবে মনে হচ্ছে।”
সাচী একসময় বিরক্ত হয়ে বললো,
“কি তখন থেকে মাল মাল করছেন?”
আরাদের এতক্ষণে হুঁশ আসলো যে,সে সাচীর সামনে মাল মাল করছে। ওপস!
বড্ড ভুল হয়ে গেছে। এখন সামাল দিতে হবে। আরাদ এবার সর্বোচ্চ বিস্ময়ের কাজটাই করলো। কোনকিছু না বলেই, সাচীকে কোলে তুলে নিলো। নিয়েই সাচীকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আগেই বললো,
” এখন এমন একটিং করবেন,যেন আপনি পায়ে ব্যথা পেয়েছেন। সাচী রাগে নেমে যেতে চাইলে,আরাদ তৎক্ষনাৎ কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করে।”
সাচী অসহায় চোখে আরাদের দিকে তাকিয়ে রইলো। নিজেকে পুতুল মনে হচ্ছে। আরাদের হাতের পুতুল। আরাদ যেভাবে পারে,ওকে নাচাচ্ছে আজকে। সে কিছু বলতেও পারছেনা। মুখ বুজে সহ্য করছে সব। সহ্য করতে হচ্ছে।
একসময় আরাদ ঐ গাছটার পাশ দিয়েই যাচ্ছিলো। বাদল এবার হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়। আরাদ স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
” আরে বাদল সাহেব যে। গার্লফ্রেন্ডের অভাবে গাছের সাথেই কথা বলছিলেন নাকি?”
বাদল আমতা আমতা করতে লাগলো। সাচী এবার বুঝতে পারলো, আরাদের এমন করার হেতু। ছেলেটার ব্রেইন,চোখ এতো শার্প। সবদিকে তার নজর। সাচীকে কোলে দেখে বাদল প্রশ্ন করলো,
” কি হয়েছে উনার? বাদলের চোখেমুখে উৎকন্ঠা। বউ হয়নি তো কি হয়েছে,ক্রাশ তো। ক্রাশের খোঁজ নেয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ। অতীব গুরুত্বপূর্ণ।”
আরাদ বললো,
আর বলবেন না। মানা করি, এসব হিল না পরার জন্য। বলি যে, বাবু তুমি যথেষ্ট লম্বা আছো। হিল পরার কি দরকার? এইযে, এখন পা মঁচকে গেলো। আরাদ দুঃখী দুঃখী ভাব করে কথাটা বললো। বাদল ভীষণ ইমোশনাল হয়ে গেলো আরাদের সাচীর প্রতি ভালোবাসা দেখে। মনে মনে ভাবলো,না এরাই পার্ফেক্ট কাপোল৷
আরাদ বাদলকে বললো,
আপনি আমার বাবুর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে, একটু গাড়ির কাছ পর্যন্ত দিয়ে আসতে পারবেন প্লিজ? পায়ের ব্যথায় ব্যাগটা নিতে হয়তো কষ্ট হচ্ছে।
বাদল সাথে সাথেই বললো,নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই । কেন নয়। চলুন,চলুন।
সাচীর প্রতি আরাদের এত কেয়ার দেখে,বাদলের চোখে বাদল এসে গেলো। মানে জল।
ওদেরকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে,বাদল যতক্ষণ ওদের দেখা যায়, ততক্ষণই তাকিয়ে রইলো। মনে মনে ভাবলো,ওদের মাঝখানে এসে সে ভীষণ অন্যায় করে ফেলছিলো।
গাড়িতে বসে আরাদ অট্রহাসিতে ফেটে পড়লো। সাচী অবশ্য জড়তা নিয়ে বসে আছে। একটু আগের ঘটনাগুলো তার মস্তিষ্কে আলোড়ন তুলছে। ঝড় বয়ে যাচ্ছে মনে। এতগুলো ঘটনা কি আরাদ কেবল বাদলের সন্দেহ দূর করার জন্যই করলো?
নাকি অন্যকিছু!
সাচীর মাথা কাজ করছেনা। কি সব ভাবছে সে! আঁড়চোখে আরাদের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আরাদ তখনো হাসছে।
ছেলেটার গায়ের রং বাদামী। মানে কালোও না,শ্যামলাও না। এদের মাঝামাঝি রংটা। মাথার চুলগুলো কপালের সামনে পড়ে থাকে সবসময়। বর্তমানের অধিকাংশ ছেলের মত স্পাইক করা চুল না তার। চেহারায় একটা সাদামাটা ভাব। নিজেকে অন্যের সামনে আকর্ষণীয় করে তোলার বিন্দুমাত্র চেষ্টা তার মধ্যে নেই। নাকটা ভীষণ খাঁড়া। চোখ দুটো ছোট ছোট। ঘন ভ্রুযুগল। হাইট খুব বেশি না হলেও,ততটাও কম না। দেখতে আহামরি নয়,আবার কি যেন বিশেষ আছে চেহারায়। হাসিটা মারাত্মক লাগে। আচ্ছা, কারো হাসি সুন্দর হওয়ার রহস্য কি?
শ্যাম বর্ণের ছেলে মেয়েদের হাসি এমনিতেই মারাত্মক।
আরাদ যখন হাসে,তার চোখ আরো ছোট হয়ে যায়।
একদৃষ্টিতে আরাদকে স্কেন করে নিলো সাচী। যখন নিজেকে সামলে নিবে,তখনি আরাদের কথায় সে পুরো জমে গেল।
আরাদ ওকে বাইকের আয়নায় পর্যবেক্ষণ করছিলো। এভাবে উদাস চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে উঠে,
” ও চোখে তাকিও না,লুটপাট হয়ে যাবে।”
কথাটা শুনে সাচী নড়ে উঠে। প্রায় পড়ে যেতে নেয় বাইক থেকে। আরাদ সাথে সাথেই গাড়ি থামিয়ে ফেলে। তারপর সাথে সাথেই সাচীকে সরি বলে। আসলে কবিতার লাইনটা হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। আরাদ বারবার সরি বলতে লাগলো।
“ইটস ওকে। চলুন। ”
সাচীর কথা শুনে আরাদ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।
আবার গাড়ি ছেড়ে দেয়। সন্ধ্যা হয়ে আসছে প্রায়। আরাদ বাইকের স্পিড আচমকায় বাড়িয়ে দিলো। আতঙ্কিত হয়ে সাচী আরাদের শার্ট আঁকড়ে ধরে। এতে আরাদ আবার সাথে সাথে স্পিড কমিয়ে দেয়। তখন সাচী হাত সরিয়ে বসে।
গাড়ি বাসার সামনে এসে গেছে। সাচী গাড়ি থেকে নেমে সোজা চলে যাচ্ছে। কথা বলার শক্তি যুগাতে পারছেনা সে। রাজ্যের জড়তা কাজ করছে। আরাদ সেটা বুঝতে পারলো। তাই সেই পেছন থেকে বললো,
” আপডেট জানিয়েন আমাকে। আর আজকের কার্যের জন্য আমি দুঃখিত। কখনো কখনো ভালোর জন্যই,আমাদের মন্দ কিছু করতে হয়। আশা করি,আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
সাচী হালকা পেছন ফিরে তাকিয়ে, মাথা উপর নিচ করে গেইটের ভেতর ঢুকে গেলো। আরাদ উদাস দৃষ্টিতে সে পথপানে তাকিয়ে রইলো। মেয়েটা ভারী অদ্ভুত, আর খুব বেশিই ভালো।
রাস্তায় একজোড়া চোখ সাচী, আরাদের গাড়িটাকে অনুসরণ করলো,যেটা বোধহয় ওরা টের পেলো না।
#চলবে…