মেঘ বৃষ্টি রোদ, পর্ব:৯

0
486

❤#মেঘ_বৃষ্টি_রোদ
#নবম_পর্ব ❤
তৃণার এরকম কঠিন কন্ঠস্বরটা শুনে প্রথমে খানিকটা হকচকিয়ে গেল সৌমাভ। মেয়েটা যে কোনো কারণে রাগ করেছে, তা তো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু কারণটা কী, সেটাই তো বুঝতে পারছেনা। মৌলির ফোনটা কি? ঐ ছবিটা, দেখে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে?
ওটা দেখার পরেই, এরকম ব্যবহার করা শুরু করেছে তৃণা! তাই হবে, নাহলে তার আগে এতক্ষণ দিব্যি তো হাসিখুশি ভাবে কথা বলছিল ও। সৌমাভর মাথায় কোনো বুদ্ধি এলোনা সেইসময়। ব্যাপারটা যে আসলেই কী হচ্ছে, আর হতে চলেছে সেটা বোঝার চেষ্টা করতে করতেই ওর মাথা খারাপের জোগাড় হল। তৃণা নাহয়, ছেলেমানুষ…. এই বয়সে মানুষ বিভিন্ন রকম ভুল পদক্ষেপ, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। কিন্তু সে? সৌমাভ নিজে তো তৃণার থেকে বয়সে অনেকটাই বড়ো, অন্তত ছয়-সাত বছরের বয়সের পার্থক্য তো থাকবেই। তাহলে?? সে কী করে পারছে, বিনা বাধায় এই চোরাবালিতে ডুবে যেতে?

আর ভাবতে পারলনা সৌমাভ। স্নান করে বেরিয়ে ওর মাথাটাও ভালো করে মোছা হয়নি এখনো। টপ টপ করে চুলের ডগা থেকে অল্প জল পড়ছে। হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে,সে মিনমিন করে তৃণার দিকে তাকিয়ে বলল,

-” দেখো সেটা তোমার ইচ্ছে, কিন্তু তুমি যেরকম পিছিয়ে আছো, তাতে একদিনে কমপ্লিট করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এবার তুমি ভাবো, আসবে কি আসবে না”

-“আপনি কি চান যে আমি আসি?”

-” এতে চাওয়া না চাওয়ার কী আছে? তোমার দরকার তাই তুমি এসেছ, আমি তোমাকে সাহায্য করছি মাত্র। আর তুমি হঠাৎ করে, এরকম মেজাজ দেখিয়ে আমার সাথে কথা বলছ কেন,সেটাই তো বুঝতে পারছি না”

কারণটা জানা সত্ত্বেও ইচ্ছে করে, কথাটা বলল সৌমাভ। তৃণার মুখের দিকে আগ্রহ ভরে তাকিয়ে রইল উত্তরের আশায়। কিন্তু খুব স্বাভাবিকভাবেই মনের মতো কোনো উত্তর পেলনা। ওরা দুজনেই যেন একে অপরের সাথে একটা অদৃশ্য ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা খেলে যাচ্ছে তখন থেকে…..যেখানে কেউই আগে থেকে ধরা দিতে চায়না। তৃণা কথাটা শুনে একটু সময় নিয়ে, তারপর খানিকটা হেঁয়ালির সুরে বলল,

-” একটু ব্যক্তিগত কারণে, সরি সেটা আপনাকে বলা যাবেনা। আর যদি আপনার একান্তই ধৈর্য থাকে, আমার কথাটা শোনার জন্য….তাহলে পরের পরের সপ্তাহ, মানের পরশু সপ্তাহ অবধি অপেক্ষা করবেন। সতেরোই জুন আমার জন্মদিন, যদি আমার ইচ্ছা হয়, সেদিন বলব কারণটা।”

-” এত কিছু? মাই গড! ওকে ওকে, নাও এবার বইয়ের পাতাটা খোলো,আসার পর থেকে একঘন্টা কাটিয়ে দিয়েছ অলরেডি”

সামান্য একটু হেসে কথাটা বলেই, মাথাটা মুছতে মুছতে তৃণার সামনের সোফায় বসে পড়ল সৌমাভ। আর এই দৃশ্যটা দেখে আরো একবার মনে বড়োসড়ো রকমের ধাক্কা খেল তৃণা। কলেজের ফর্মাল পোশাকের বাইরে এই প্রথম সে দেখছেনা সৌমাভকে। তা সত্ত্বেও এইরকম দু’জন সম্পূর্ণ একা অবস্থায় এই পরিস্থিতি প্রথমবার ঘটল ওর চোখের সামনে। আকাশি রঙের একটা টি-শার্ট আর হাঁটু অবধি গোটানো একটা জিন্স পরে ওর সামনে বসে আছে সৌমাভ। এমনি তেই ওর ঘাড় অবধি লম্বা চুল, তারমধ্যে ভিজে চুল গুলো এলোমেলো অবস্থায় কপালে পড়ে আছে। মুখটাও বোধহয় ভালো করে মোছেনি। ভিজে অবস্থায় হালকা চাপদাড়ি যুক্ত,ফর্সামুখটা সদ্য স্নান করার পর যেন আরো বেশি সুন্দর লাগছে। তৃণা একটু আগের তিক্ত ঘটনার কথা ভুলে গেল একনিমেষে। সমস্ত বাধানিষেধ ভুলে গিয়ে একদৃষ্টে ও তাকিয়ে রইল সৌমাভর মুখের দিকে। সৌমাভ তখন ঐদিকে বইয়ের পড়াশোনা সংক্রান্ত নিজের মনেই কত কথা বলে যাচ্ছে, তার একটাও কান অবধি পৌঁছাচ্ছেনা তৃণার। ওর মন স্পষ্ট বুঝতে পারছে যে, যেটুকু পড়াও তার বাড়ি বসে হয়, এখানে আসলে তার সিকিভাগও হবেনা কোনোমতেই।

-” এই যে, হ্যালো! তৃণা! মন কোনদিকে তোমার? এতক্ষণ ধরে বকে যাচ্ছি আমি। শুনেছো কিছু?”

-” হ্যাঁ? হুমম শুনছি তো, বলুন” চমকে উঠে তাড়াতাড়ি করে বলে উঠল তৃণা। চোখের দৃষ্টি নামিয়ে, বইয়ের দিকে তাকিয়ে পড়া বোঝার বৃথা চেষ্টা করতে লাগল সে।

-” শুনেছো ? ওকে তাহলে, এটা বলো…এই প্যাথো-ফিজিওলজি টা বলো আমাকে এখুনি”

-” এটা? এটা তো ….”

তৃণাকে আমতা আমতা করতে দেখে, সৌমাভ বুঝতেই পারল সবটা। অন্যসময় হলে, এইরকম ঘটনা দেখে প্রচন্ড রেগে গিয়ে, বকাঝকা করে, নানা কান্ড বাঁধিয়ে বসত ।কিন্তু এই মুহূর্তে কোনো একটা অজানা কারণে, তৃণার দিকে তাকিয়ে সে রাগ বা প্রচন্ড বকাঝকা করা….এর কোনোটাই করা সম্ভব হচ্ছে না। সৌমাভ বুঝল, এভাবে হবেনা….এই কাজটা করতে হবে অন্যভাবে। নিজেকে একটু গুছিয়ে নিল সে। তারপর তৃণার চোখের দিকে তাকিয়ে, বেশ শান্ত গলায়, তৃণার মতই হেঁয়ালির সুরে বলল-

-” দেখো তৃণা, সবসময় চোখের সামনে প্রথমে যা দেখবে সেটাই যে একদম সত্যি, এরকমটা ভেবে বসবেনা একদম। হতেও পারে ভেতরের গল্পটা পুরোপুরি অন্যরকম। আর তুমি আমার কাছে আলাদা করে পড়তে এসেছ বলেই, বলছি…মন দিয়ে পড়াশোনা করাটা যে আমি প্রচন্ড ভাবে পছন্দ করি, তা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছ তুমি! আর এই সামনের পরীক্ষায় তুমি যদি ভালো রেজাল্ট করো, তাহলে তোমার জন্মদিনে এমন একটা গিফ্ট দেব তোমাকে, যেটার অপেক্ষা হয়তো তুমিও করেছ। এখন বলো সেটা তুমি, চাও কি চাওনা?”

তৃণা প্রথমে কথাটার কিছুই বুঝতে পারলনা। সে খানিকটা অবাক হয়ে বলল,

-‘মানে??”

-” মানেটা জানার আগ্রহটা সতেরোই জুন অবধি নাহয় তুলে রাখো । কেমন?? এখন যেটা পড়াচ্ছি মন দিয়ে শোনো…..”
আর কথা না বাড়িয়ে বইয়ের দিকে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করল তৃণা। এখন কেবল ‘ভালো রেজাল্ট” শব্দটা মাথার মধ্যে ঘুরছে ওর, আর তার সাথে একটা নতুন আশা যেন মনের মধ্যে উঁকি মারার চেষ্টা করে যাচ্ছে অনবরত। আমরা যা চোখের সামনে দেখি, সবসময় তা সত্যি নাও হতে পারে? এমনটাও হয়? কে জানে! হয়তো হলেও হতেও পারে….

***********
রাত এগারোটা বাজে। টেবিল ল্যাম্পের আলোয় বইটা পড়তে পড়তে একটু ঘুম ঘুম ভাব চলে এসেছিল তৃণার চোখে। ঢুলতে ঢুলতে যখন ও মাথাটা নামিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ার কথা ভাবছে, ঠিক তখনই ফোনটা বিকট একটা শব্দ করে বাজতে শুরু করল। ঘুমের ঘোরে এরকম আচমকা শব্দ শুনে আঁতকে উঠল তৃণা। বিরস মুখে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল, সৌমিক ফোন করছে। এর আগেও কয়েকবার করেছিল ফোন, তৃণাই বোধহয় শুনতে পায়নি। পাশে রাখা জলের বোতলটা থেকে অল্প একটু জল খেয়ে, উঠে বসল ও। তারপর সৌমিকের নম্বর টা ডায়াল করল ধীরে ধীরে। ছেলেটা মনে হয় ফোন হাতে করেই বসে ছিল, রিং হওয়ার সাথে সাথেই ফোন রিসিভ করে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে চিৎকার শুরু হয়ে গেল।

-” এইই, আজকাল কি প্রচন্ড ব্যস্ত থাকো নাকি? ফোন করলে ধরো না, অনও হও না। কী ব্যাপার?”

-” আরে না, তেমন কিছু না, সামনে পরীক্ষা তাই, পড়ছিলাম একটু। বলো”

-” তাহলে কালকে মুভি দেখতে যাবেনা? আমি যে এদিকে কবে থেকে প্ল্যান করলাম? ধুরর!”

-” সৌমিক প্লিজ। কালকের দিনটা জাস্ট ছেড়ে দাও, আমার পরীক্ষা শেষ হলেই বেরোবো। প্রমিস, একদম”

-” শিওর?”

-” একদম। শিওর। কিছু মনে করো না প্লিজ”

-” নাহ্, মনে করবনা। কিন্তু একটা কথা বলার ছিল তোমাকে, সেটা আমি কাল বলবো ভেবেছিলাম। তবে সামনা-সামনি বলার থেকে এই ভালো বোধহয়। তুমি- তুমি ফ্রি আছো এখন?”

সৌমিকের কথা বলার ধরন দেখে প্রমাদ গুনল তৃণা। ও বেশ বুঝতে পারছে কথা কোনদিকে এগোতে চাইছে। তবুও একদিন না একদিন এই ব্যাপারটার সমাধান একটা করতেই হত, আজই না হয় সেটা হয়ে যাক। মনে মনে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিল তৃণা। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলল,

-” হ্যাঁ বলো, ফ্রি- ই আছি।”

-” না মানে, আমরা তো প্রায় অনেক ধরেই বন্ধু রয়েছি। তুমিও আমাকে চেনো, আমিও তোমাকে চিনি। তো, আমার ব্যাপারে তোমার কী মতামত তৃণা?”

-“মানে? কী মতামত জানতে চাইছ তুমি?”

-” এই যেমন, আমি কীরকম, আমার ব্যাপারে তুমি কী ভাবো এসবই ”

-” তুমি আমার ভালো বন্ধু, এটাই তো মতামত। আর অবশ্যই তুমি একজন ভালো মানুষ। সেটাও আমি জানি। এসব বাদ দিয়ে আর কী জানতে চাইছ তুমি?”

-” মানে বন্ধু হিসেবে আমি ভালো, মানলাম কিন্তু এই বন্ধুত্বের থেকে বেশীকিছু…..”

-” সৌমিক প্লিজ। তুমি আমার ভালো বন্ধু , এটা তো বললামই আমি। কিন্তু আমি চাই এই বন্ধুত্বটা একটা এরকম ভালো সম্পর্ক হয়েই থাকুক। আশাকরি, এটা নষ্ট হোক, সেটা তুমিও চাও না?”

তৃণা এমন ভালো মুখে মিষ্টি ভাষায়, বারণটা করে দিল….যে আর কিছু বলার সুযোগই পেলনা সৌমিক। ও বেশ বুঝতে পারল তৃণার অসম্মতির কথা। কিন্তু কেন? ওর জীবনে অন্য কেউ আছে বলে তো, মনে হয়না। তাহলে? সামনে পরীক্ষা বা অন্য কিছুর চাপের কারণে, ও কি এরকম করছে? হতেও পারে। এখন বেশি না ঘাঁটানোই ভালো বোধহয়, তাতে হাতে বিপরীত হতে পারে। হয়তো বন্ধুত্ব টুকুও আর থাকবেনা। তার থেকে পরে কখনো আবার চেষ্টা করা যেতে পারে। এই ভেবে, আর কথা না বাড়িয়ে তৃণার কথায় সায় দিয়ে সৌমিকও বলে উঠল,

-” হ্যাঁ নিশ্চয়। আমিও চাইনা, আমাদের ভালো সম্পর্কটা কোনো খারাপ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাক। তাই তুমি যা চাও তাই হবে। তবে আমার একটা রিকোয়েস্ট রাখবে? আশা করি এতে তোমার কোনো আপত্তি নেই?”

-” কী কথা বলো”

-” আমাকে তুই তুই করে ডাকতে কি তোমার খুব বেশী আপত্তি আছে? আমরা সমবয়সী, একে অপরের ভালো বন্ধু । এটুকু তো হতেই পারে, তাই না?”

সৌমিকের এই কথাটা খুব একটা খারাপ লাগলনা তৃণার। হালকা হেসে সম্মতি জানিয়ে ও উত্তর দিল,

-” হ্যাঁ এটা হতেই পারে, নো প্রবলেম। আমার দু’টো পরীক্ষা বাকি আর, তারপর থেকেই তুই বলা প্র্যাকটিস করব, কেমন?”

-” ওকে ডান,আর হ্যাঁ…..জন্মদিনের ডেটটা কিন্তু আমার মাথায় আছে। ওটা ভুলিনি। আমাকে ইনভাইট না করলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে।”

-” হুমমমম। করব, কেন করব না? আমাকে এরকম মনে হয় নাকি তোমার?”

তৃণার কথা শুনে হেসে উঠল সৌমিক। তৃণাও যোগ দিল সেই হাসিতে। দু’জন বন্ধুর প্রাণখোলা হাসিতে চারিদিক যেন মুখরিত উঠল। ব্যাপারটাকে সযত্নে এড়িয়ে যেতে পেরে তৃণা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। যাক একটা ঝামেলা অন্তত এড়ানো গেছে। এখন মন দিয়ে ভালোভাবে পরীক্ষাটুকু দিয়ে দিতে চায় সে। কারণ এটা শুধু তার নিজের ইচ্ছে নয়, একজনকে দেওয়া কথা রাখারও দায়িত্ব বটে….

************
ক্যান্টিনে পর্ণা আর তৃণা মুখোমুখি বসে আছে।সাজ ওদের পরীক্ষা শেষ হল। কিন্তু তা সত্ত্বেও দু’জনের কপালেই চিন্তার ভাঁজ। পর্ণার মুখে সব কথা শুনে তৃণা বুঝে পারছেনা যে,এটা নিয়ে এবার কী করা উচিত! সেদিন সৌমিককে ওভাবে না বলার পরে, সেই ছেলে নাকি তার পরের দিন থেকে আজ অবধি প্রতিদিন পর্ণাকে ফোন করে গেছে, তৃণার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। আর এসব কথা তৃণাকে বলতেও নাকি বারণ করে দিয়েছে। কিন্তু খুব স্বাভাবিকভাবেই পর্ণা সব কথা তৃণাকে খুলে বলেছে। আর তারপর থেকেই চিন্তার ভাঁজ জমছে তৃণার কপালে। অনেকক্ষণ ভাবার পর ও পর্ণার দিকে তাকিয়ে বলল,

-” কী করা যায় বলতো?”

-” কী করবি? প্রেম করে নে না, ছেলে তো ভালোই। কথাবার্তা, ব্যবহার খুবই ভালো। আমার তো বেশ ভালোই লাগল, এবার তুই ভাব”

-” আরেহ, তুই বুঝছিস না, আমার কোনো ফিলিংসই নেই ওর প্রতি। ওকে বন্ধু হিসেবে দেখতেই আমি অভ্যস্ত। তাহলে কী করে প্রেমটা করব?”

-” না ইচ্ছে থাকলে করবি না। ভালো ছেলে এটাই বললাম, মানে পারফেক্ট বয়ফ্রেন্ড হবে, একেবারে”

-” তোর মনে হচ্ছে খুব পছন্দ ওকে? তাহলে যা নিজেই প্রেম করে নে বরং”

কথাটা বলেই, সশব্দে হেসে উঠল তৃণা। ওর দেখাদেখি পর্ণাও হেসে উঠল ঠিকই, কিন্তু তৃণার বলা শেষ কথাটা ওর কানে বাজতে লাগল। সৌমিকের মুখটা মনে পড়তেই, হালকা লাল হয়ে উঠল ওর গালের পাশদুটো। প্রথমদিন সেই বিয়েবাড়িতে দেখেই সৌমিকের কথাবার্তা, ব্যবহার ভীষণ ভালো লেগেছিল পর্ণার। কিন্তু তৃণার প্রতি সৌমিকের দুর্বলতার কথা জেনে নিজেকে এসব থেকে দূরেই রেখেছিল। তবে এই মুহূর্তে তৃণার অসম্মতির কথা শুনে ওর মনে ভালোলাগাটা আবার ক্রমশ যেন বেড়ে উঠতে লাগল। কয়েকদিন কথা বলতে বলতে সৌমিকের প্রতি যে অল্প অল্প সেই পুরোনো ভালোলাগাটা ফিরে আসছে সেটা বুঝতে পেরেও, ভয়ে খানিকটা নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করতে লাগল পর্ণা। কারণ এই একতরফা পছন্দ কষ্ট পাওয়া যে অবধারিত, সেটাও বেশ টের পাচ্ছে সে।
(ক্রমশ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here