মন শহরে তোর আগমন পর্ব-৩

0
1346

#মন_শহরে_তোর_আগমন
#লেখনীতে – #Kazi_Meherin_Nesa
#বোনাস_পর্ব

জাফরানের বাবার রুমে সবাই উপস্থিত, আমার মা বাবাও এসেছে। তারা সবাই আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেহেতু বিয়েটা হয়ে গেছে তাই অগত্যা আমার পরিবারও মেনে নিয়েছে সবটা। জাফরানের বাবা ছেলের হয়ে আমার মা বাবার কাছে অব্দি ক্ষমা চেয়েছেন, জাফরান চুপ করে তখন তার বাবার পাশেই দাড়িয়ে ছিলো, আমি আমার মা বাবার পাশে দাড়িয়ে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে। বাবাকে একটু বেশিই ভালোবাসেন উনি, তাইতো একটা মুহূর্ত কাছ ছাড়া হতে চান না। আলোচনার এই পর্যায়ে জাফরানের বাবা বললেন

“আমি নিজের ছেলের দোষের কথা অকপটে স্বীকার করলাম, ছেলে আমার আবেগী হয়ে কাজটা করে ফেলেছে শুধু আমার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ করতে। এবার আপনারাই বলুন মেয়েকে কি নিয়ে যেতে চান?”

তখন আমার বাবা বললেন

“দেখুন, আপনার ছেলে অন্যায় করেছে কিন্তু এটাও সত্যি বিয়েটা হয়েছে। দুজনেই তাতে সামিল হয়েছে, হিসাবমতে আমাদের মেয়ে এখন আপনার ছেলের স্ত্রী। ওকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া কি শোভা পাবে এখন? তাছাড়া গতকালকেই আমাদের এলাকায় রটে গেছে অনেককিছু। জানেনই তো এখনকার দিনকাল কেমন”

বাবার কথা শুনে জাফরান আমার দিকে তাকালেন, গত রাতে তো এই ভয়েই বিয়ের জন্যেই রাজি হয়েছিলাম আমি। আমার মা কিছুটা আফসোস করে বললেন

“মেয়ের বিয়ে নিয়ে সব মা বাবার স্বপ্ন থাকে, কিন্তু আমরা যে ওর বিয়েতে কিছু করতে পারলাম না, আমাদেরও তো আত্মীয় স্বজন আছে। তাদের অজান্তেই হুট করে সব হয়ে গেলো, এই সমস্যাগুলোর সামনা করতে হবে আমাদের”

“সমস্যা নেই, আপনাদের হাতে তো সময়ের অভাব নেই। আপনারা না হয় পরে ধুমধাম করে ওদের বিয়ের অনুষ্ঠানটা করিয়ে দেবেন, নিজেদের অপূরণীয় ইচ্ছেগুলো পূরণ করে নেবেন”

জাফরানের বাবার কথায় মা বাবা চুপ হয়ে গেলো, এদিকে জাফরান নীরবে সব কথা শুনে যাচ্ছেন। একটা টু শব্দ অব্দি করছেন না। আমি ভেবেছিলাম উনি হয়তো কিছু বলবেন, এখানে সবাই ওনাকে অনেক দোষ দিয়েছে কিন্তু উনি কোনো মন্তব্য করেননি। নিরব থেকে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। আলোচনা শেষে জাফরানের বাবা বললেন

“যাক! বেয়াই বেয়াইন ও তো সব মেনেই নিয়েছেন। শোন জেনি, এবার জাফরান আর সুরভীর রিসিপশনের ব্যবস্থা কর তোরা সবাই”

ওনার কথা শুনে সবার মুখ কালো হয়ে গেলো, জাফরান শান্ত কণ্ঠে বললেন

“বাবা, এসবের কোনো প্রয়োজন নেই। সুরভীর সাথে আমার বিয়েটা হয়ে গেছে, এখন আর রিসিপশনের দরকার আছে বলে মনে হয় না”

“দরকার আছে জাফরান, তোর বিয়ের কথা কেউ জানবে না নাকি? বিয়ের প্রস্তুতি করতে গেলে অনেক সময় লাগবে তাই আমি শুধু তোদের রিসিপশনটা দেখতে চাই। আপনাদের কোনো আপত্তি নেই তো?”

বাবা মা আমার দিকে একনজর তাকিয়ে বললেন

“আপনি যখন নিজের ছেলে বৌমার রিসিপশন করাতে চাইছেন করুন, আমাদের আপত্তি নেই”

“জাফরানের আর জেনির মা ওদের বড় হওয়াটা দেখতে পারেনি, সেখানে আমি ওদের বড় হওয়া, বিয়ে সবটা দেখতে পারছি। এই ঢের পাওয়া”

এইটুকুতেই জাফরানের বাবা অনেক খুশি হয়ে গেলেন..ওনার বাবার সাথে কথা বলার সময় জেনেছিলাম ওনারা যখন ক্লাস টুতে পড়তেন তখন তাদের মা মারা গেছিলেন।সবকিছু যখনই ভাবছি তখনই কেমন শরীর শিউরে উঠছে আমার, যে সময়টা মা বাবাকে বেশি প্রয়োজন তখন তাদের ছাড়া বেচে থাকাটা কতটা কষ্টসাধ্য হতে পারে! জাফরানের জায়গায় নিজেকে ভাবার দুঃসাহসটাও করতে পারিনি আমি। জাফরানের ছোটো ফুপি বললেন

“কিন্তু ভাইজান, এতো তাড়াতাড়ি সবকিছু কিভাবে সম্ভব হবে? কতো আত্মীয় স্বজন আছে আমাদের, সবাই তো এতো কম সময়ে আসতে পারবে না”

“সমস্যা নেই ফুপি, আমরা সবাইকেই বলবো। যারা আসতে পারবে আসবে। বাবা যখন চাইছে তখন রিসিপশনের অনুষ্ঠান হবে”

“বেশি মানুষদের ইনভাইট করার দরকার নেই, আমাদের ক্লোজ রিলেটিভদের বলিস। আসার হলে আসবে, এতো আয়োজনের দরকার নেই”

জাফরানের কথায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এসবে অংশ নেবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই ওনার, শুধু বাবার জন্যে করছেন। তখন ওনার বাবা দুটো ধমক দিলেন, বাবার ধমক শুনে বাচ্চা ছেলের মতো চুপ হয়ে গেলেন উনি। এরপর আর একটা কথা বলেননি। উপস্থিত সবার সম্মতিতে ঠিক হলো আগামীকাল আমাদের রিসিপশনের অনুষ্ঠান হবে। সবকিছু এতো দ্রুত ঘটে যাচ্ছে যে কিছু বোঝার সময়ই যেনো পাচ্ছি না। কিন্তু এই তাড়াহুড়োর পেছনের কারণ কিছুক্ষণ আগেই জেনেছি আমি, জাফরানের বাবার হাতে বেশি সময় নেই বিধায় উনি যতো দ্রুত সম্ভব নিজের মনের খায়েশ পূরণ করে নিতে চাইছেন। আমার শ্বশুরের কড়া আদেশ অনুসারে আমার মা বাবাকে বেশ খাতির করা হলো, আমি অবাক হয়ে দেখছিলাম সবটা। জাফরানের বাবা আমাকে এতোটা আপন করে নিলেন কিভাবে? কি এমন দেখেছেন উনি আমার মাঝে যার জন্যে নিজের ছেলের সাথে বিয়েটা দেবার জন্যে এতো উৎসুক ছিলেন? বাবা মার সাথে বাড়ির বড়রাও খাচ্ছিলেন, জিনিয়া সবাইকে সার্ভ করছে। সবাই উপস্থিত শুধু জাফরান নেই, কি একটা ভেবে আমি জাফরানের বাবার রুমের দিকে এগিয়ে আসলাম। দেখলাম জাফরান তার বাবার হাত থেকে স্যালাইন খুলে দিচ্ছেন, তারপর তার বাবাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন, গল্প করছেন বাবার সাথে। বাবা – ছেলের এমন মুহূর্ত দেখে চোখদুটো ভিজে উঠলো আমার
_________________________________

আগামীকাল রিসিপশন হবে, মোটামুটি আয়োজন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কুড়ি – পঁচিশ মানুষ আসবে শুনলাম, এর বেশি কাওকে ইনভাইট করতে জাফরান মানা করেছে। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে উনি চাননা ওনার বাবার এই অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ভর্তি মেহমান দাওয়াত করতে, তাতেই সবাই সম্মতি দিয়েছেন। মা বাবা বিকেলের দিকে বাড়িতে গেছেন, অবশ্য এ বাড়ির সবাই থেকে যেতে বলেছিলেন কিন্তু তারা থাকেননি। ড্রইং রুমে বসে জাফরানের ফুপীদের সাথে টুকটাক কথা বলছিলাম, জিনিয়া ও ওখানে উপস্থিত। তখন জাফরানের ছোটো ফুপু আমার দিকে একটা জামদানি শাড়ি এগিয়ে দিলেন

“সুরভী, দেখো তো। এই শাড়িটা আপা আর আমি মিলে তোমার জন্যে পছন্দ করেছেন, ভালো লেগেছে তোমার?”

“সুন্দর হয়েছে ফুপু কিন্তু শাড়িটা ক্যারি করা একটু কষ্ট হয়ে যায় আমার জন্যে”

তখন বড় ফুপু গম্ভীর স্বরে বলে উঠলেন

“বিয়ের পর শাড়ি পড়াটাই ভালো, পারো না তো কি হয়েছে? পড়তে পড়তে শিখে যাবে। অভ্যাস তো করতে হবে নাকি?”

বড় ফুপুর কথা শুনে চুপ হয়ে গেলাম আমি, ওনার কথার ছন্দেই বোঝা যায় কিছুটা রগচটা মেজাজের মহিলা উনি। তখন পাশ থেকে জিনিয়া বললো

“আহা, ফুপি সবাই সবকিছু পারে নাকি? জোর করার কি দরকার? সুরভী, শুধু কালকের দিনটা একটু কষ্ট করে শাড়িটা ক্যারি করো। তারপর আর শাড়ি পড়তে হবেনা। তোমার যা ইচ্ছে পড়তে পারো”

আমি আর আপত্তি করলাম না, একটা দিনেরই তো ব্যাপার। সন্ধ্যার পর জাফরানের বাবার সাথে কিছুটা সময় কাটালাম, ওনার কথার বেশিরভাগ বিষয় ছিলো জাফরানের মা, জাফরান সম্পর্কে! মনে হচ্ছিলো যেনো উনি সবকিছু আমাকে জানিয়ে দিচ্ছেন যা ভবিষ্যতে আমার দরকার পড়তে পারে। কথার মাঝে হঠাৎ কি নিয়ে যেনো চায়ের প্রসঙ্গ উঠলো

“সুরভী, মা তুমি চা বানাতে পারো?”

“জ্বি পারি, আপনি খাবেন? বানিয়ে এনে দেবো?”

“না না, আজ থাক। আজ কিছু করতে হবে না”

“সমস্যা নেই, আপনি খেতে চাইলে বলুন। বানিয়ে আনছি এখুনি”

“নাহ, আজকে থাক। তুমি বরং পড়ে সময় করে আমাকে একটু চা করে খাইও একদম বেশি করে চিনি দিয়ে, জাফরান আবার আমার চিনি দিয়ে চা খাওয়াটা পছন্দ করেনা”

মুচকি হেসে মাথা নাড়লাম আমি, হঠাৎ আমার বাবার কথা মনে পড়ে গেলো। উনিও আমার মায়ের থেকে লুকিয়ে বেশি বেশি চিনি দিয়ে চা খান। ওখান থেকে রুমে এসে দেখলাম জাফরান কথায় ব্যস্ত, আমাকে দেখে উনি কথা শেষ করে ফোন কাটলেন। কিভাবে ওনার সাথে কথা বলা শুরু করবো বুঝতে পারছিলাম না তখন উনিই বলে উঠলেন

“ডাক্তার দু সপ্তাহ বলেছিলেন, তার মধ্যে এখন আমার বাবার হাতে খুব বেশি হলে সাত থেকে দশদিন মতো সময় বেচে আছে, তাই বাবা সবকিছুর জন্যে এতো তাড়াহুড়ো করছেন। জানি আপনি এসবের জন্যে প্রস্তুত নন বাট, আই অ্যাম সরি”

কথাগুলো জড়িয়ে যাচ্ছিলো বলার সময়, বাবার মৃত্যুর দিনক্ষণ আগে থেকেই জানা একজন সন্তানের কাছে কতোটা যন্ত্রণার হতে পারে সেটা হয়তো আমি পুরোপুরি অনুভব করতে পারবো না তবে ওনাকে দেখে কিছুটা উপলব্ধি করতে পারছি। সবটা নিজের চোখে দেখার পর ওনার ওপর দোষ দেবোই বা কিভাবে। উনিও তো কারো খুশির জন্যে এগুলো করছেন

“আজকে আশা করি একটু হলেও আপনার কাছে সব পরিষ্কার, কেনো ঐভাবে বিয়ে করেছি আমি আপনাকে! আমি কিন্তু নিজের দোষ ও মেনে নিয়েছি। এবার আর কোনো অভিযোগ নেই তো আপনার?”

আমি কিছুটা গম্ভীর স্বরে বললাম

“আপনার মনে হয় এতো সহজে অভিযোগ শেষ হয়ে যাবে? সবটা মেনে নেওয়া এতো সহজ নয় জাফরান”

মলিন হাসলেন জাফরান, টেবিলের ওপর এলোমেলো হয়ে পড়ে থাকা কাগজগুলো ফাইলের মধ্যে গুছিয়ে রাখতে রাখতে বললেন

“আমার প্রতি আপনার অভিযোগ যদি সারাজীবন স্থায়ী থাকে তবুও আফসোস থাকবে না আমার, কারণ বাবার সামনে আপনি কোনো রিয়েক্ট করেননি। আপনার এই স্বাভাবিক আচরণ দেখে বাবা অনেক খুশি হয়েছেন”

আজ ওনার কথায় কৃতজ্ঞতার ছোঁয়া বিদ্যমান, বুঝলাম বাবার খুশিতেই ছেলের খুশি

“আপনি রুমের ভেতরই থাকুন, গত রাতের মতো বারান্দায় থাকার দরকার নেই। আমি বরং আজ বাবার কাছে থেকে যাবো”

অবাক হয়ে গেলাম ওনার কথায়, ভেবেছিলাম অন্য ছেলেদের মতো উনিও জেদ করবেন আমার সাথে একি রুমে থাকার কিন্তু সেটা উনি করলেন না। আমার মাথার মধ্যে অনেককিছু ঘুরপাক খাচ্ছিলো, সেগুলো মুখ ফুটে বলেই ফেললাম

“আপনাকে দেখে ভীষণ অবাক লাগছে আমার, গতকাল অব্দি আমি ভাবতেও পারিনি আপনার জীবনে এতো কঠিন সময় চলছে। আপনি বুঝতেই দেননি। মাত্র একটা দিন হয়েছে আমি এই বাড়িতে এসেছি, সবটা দেখে আমারই কেমন দুর্বল লাগছে। আপনার বাবার সাথে কথা বলতে গেলেই হাত পা কেপে উঠছে বারবার সেখানে এতদিন ধরে নিজেকে কিভাবে সামলে রেখেছেন আপনি?”

“নিজেকে শক্ত রেখেছি, সামলে রেখেছি। বাবার সামনে আমি দুর্বল হয়ে পড়লে তো আমার চলবে না, তবে হ্যা জানিনা বাবা চলে যাওয়ার পর কি হবে। নিজেকে সামলাতে পারবো না তখন আর”

ওনার চোখে পানি টলটল করছে, উজ্জ্বল শ্যামলা বদনখানাও ফ্যাকাশে হয়ে গেলো নিমিষেই। দাড়ালেন না উনি আর আমার সামনে, একরকম ছুটে এলেন ওখান থেকে। বেরোনোর সময় চশমা খুলে চোখ মুছছিলেন উনি যা আমার নজর এড়াতে পারেনি। বড্ড অপরাধবোধ কাজ করছে, কেনো এই প্রশ্ন করতে গেলাম ওনাকে?
_______________________________

বাড়ির সবাই ঘুমাচ্ছে, শুধু আমিই ঘুমাতে পারছি না। রুমে একা থাকার অভ্যাস নেই আমার, সবসময় হয় মা নাহলে ছোটবোন সাথে থাকতো কিন্তু আজ এইরুমে সম্পূর্ন একা আমি তার ওপর অচেনা জায়গা। কেমন ভয় ভয় করছে। উঠে বসে দেখলাম জাফরান সত্যিই আসেনি রুমে, ঘুম আসছে না কিছুতেই। উঠে এক গ্লাস পানি খেয়ে দাড়ালাম বারান্দায়। দুদিন আগে অব্দি এই সময় নিজের বাড়িতে ছিলাম আমি আর আজ কোথায় আছি। সত্যিই সময় মানুষকে কখন কোথায় কিভাবে নিয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না। নিজেকে নিয়েই ভাবনায় ডুবে ছিলাম হঠাৎ কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে পেছনে ফিরেই আতকে উঠলাম আমি, জাফরান বিষয়টা বুঝতে পেরে বলে উঠলেন

“হেই রিলাক্স! ইটস মি”

আমি সস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম, ভুত এসেছে ভেবে বসেছিলাম। বারান্দা থেকে দ্রুত পায়ে এসে দাড়ালাম ওনার সামনে

“আপনি? এভাবে কেউ আসে? এমনিতেই ভয় পাচ্ছিলাম একা একা। এখুনি তো হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতো আমার”

“সরি, কিন্তু আপনি ভয় পাচ্ছিলেন কেনো? এখানে তো ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই”

একা থাকতে ভয় পাই কথাটা বলতে বাঁধছিল আমার, কেমন যেনো বোকা বোকা ব্যাপার হয়ে যাবে তাই কথা ঘুরিয়ে দিলাম

“আগে আপনি বলুন এখন এখানে কি করছেন? আপনি নাকি আসবেন না এই রুমে তাহলে এতো রাতে কি দরকার পড়লো?”

“ল্যাপটপ নিতে এসেছিলাম, কিন্তু আপনি এখনও জেগে থাকবেন সেটা এক্সপেক্ট করিনি। তাহলে আসতাম না এখন”

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাত প্রায় দেড়টা বাজে। ল্যাপটপটা নিয়ে উনি বেরিয়ে আসতেই যাচ্ছিলেন তখন বলে উঠলাম

“দেড়টা বেজে গেছে। এতো রাতে কাজ করবেন? সারাদিন তো আঙ্কেলকে সময় দেন, তারপর শুনেছি অফিসেও যান। আপনার ঠিকমতো বিশ্রাম করা দরকার”

“আপনাকে কি বাবা এসব বলতে বলেছে আমায়?”

“না তো, হঠাৎ এই কথা কেনো?”

“আসলে আপনার বচনভঙ্গিতে চেঞ্জেস নোটিস করছি, গতকাল আপনার টোন আলাদা ছিলো আর আজ আলাদা। সো এই থট বাবা মে বি আপনাকে বলেছে কিছু তাই আপনি কনসার্ন দেখাচ্ছেন”

ভ্রু কুঁচকে ফেললাম আমি

“কারো শেখানো বুলি নয় এগুলো, নিজে থেকেই বলছি। মনে হলো বলা দরকার তাই বললাম”

“বাবা অসুস্থ হবার পর থেকে এভাবেই সব ম্যানেজ করছি। অভ্যাস আছে আমার, আপনি নিশ্চিন্তে শুয়ে পড়ুন। আর ডিস্টার্ব করতে আসবো না”

চলবে….

[ভুলত্রুটি ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন..!!]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here