#মন_প্রাঙ্গনে_এলে_যখন
#লেখনীতেঃ #আলফি_শাহরিন_অর্পা
#পর্ব_২৮
রুদ্ধ নিজ চিন্তায় মগ্ন ছিলো তখনি তাদের বাসার একজন সার্ভেন্ট এসে বলে গেল জয় এসেছে জয়াকে নিতে। রুদ্ধ কথাটা শুনে রেগে গেলেও পরশি তাকে চোখের ইশারায় রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে বললো আর সার্ভেন্টকে বললো তার জন্য খাদ্য-পানীয় এর ব্যবস্থা করতে। রুদ্ধ যথাসম্ভব নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করছে কিন্তু সে এটা বুঝছে না পরশি কেনো ওর এত আদর-যত্ন করছে। পরশি ওর ভাইয়ের মনে কী চলছে তা বুঝতে পেরেছে।
–ভাই আমি জানি তোমার মনে কী চলছে? অনেক তো হলো ভাই আর কতকাল ঘৃণা পোষণ করে বাঁচবো। হ্যাঁ আমি জানি জয়ের ভুল ক্ষমার যোগ্য নয় কিন্তু ভুল তো মানুষের দ্বারাই হয়। জানো যখন শুনেছিলাম মন ভাঙা মসজিদ ভাঙার সমান তখন মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম তাকে আর কখনো ক্ষমা করবো না। সে আমার সাথে যা করেছে তার শাস্তি সে এপারেও পাবে এবং ওপারেও। যখন সে নিজের করা কৃতিত্বের জন্য আমার কাছে ক্ষমা চেত তখন একটা আলাদা সুখ অনুভব করতাম। মাঝে মাঝে মনে হত এবার ক্ষমা করে দেই কিন্তু তখনি স্মৃতিপটে ভেসে উঠতো এনগেজমেন্টের দৃশ্য গুলো। নিজের রাগকে প্রতিহিংসায় পরিণত করেছিলাম। কিন্তু জানো ভাইয়া যখন হাসপাতালে জীবন আর মৃ”ত্যুর মাঝে ল’ড়া’ই করছিলাম তখন বার বার একটা কথাই স্মৃতিচারণ হচ্ছিল জীবনটা ক্ষণস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে অন্যের প্রতি হিং’সা পুষে কী লাভ? তাছাড়া সে আমার জীবন বাঁচিয়েছে এর চেয়ে বড় আর কোনো কারণ দরকার আছে তাকে ক্ষমা করার। যত যাই মুখে বলি না কেন জীবনের আগে সব কিছুই তুচ্ছ। এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলো পরশি। অনেকদিন পর নিজের মনের ঘরের তালাটা খুলে নিজের সমস্ত কথার পিটারা কাউকে শুনালো। মনটা আজ বেশ হালকা লাগছে। এখন মনে হচ্ছে এসব কথা কাউকে আরও আগে বলা উচিত ছিলো।
রুদ্ধ এতক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো নিজের ছোট বোনটার দিকে। তার বোনটা যে এতবড় হয়ে গেছে তা সে খেয়ালই করেনি। যে বোনটাকে সে কয়েকবছর আগেও নিজ হাতে চুল বেণী করে দিয়েছে সেই বোনটাই আজ নিজের বুলি দিয়ে তাকে শান্ত করে ফেললো। বোনের মুখে এমন কথা শুনে গর্বে বুকটা ফুলে উঠলো। এসব ভেবেই তার মুখে এক গাঢ় হাসির রেখা দেখা গেলো।
–তোর কাছ থেকে আমি একটা কথা লুকিয়েছি?
–থামো ভাইয়া! আমি জানি তুমি আমার থেকে যদি কিছু লুকিয়ে থাকো এতে অবশ্যই আমার জন্য চিন্তা আর ভালোবাসার থেকেই করেছ। আর আমার তোমার উপর পূর্ণ বিশ্বাস আছে তুমি কারণ ছাড়া আমার থেকে কিছু লুকাবে না। হয়ত ভেবেছিলে এটাই আমার জন্য ভালো।
–তারপরও তোর এটা জানার অধিকার আছে। তুই চলে যাওয়ার কিছুদিন পর জয় এসেছিল বাসায়। ও ভেবেছিল ওকে এখানে দেখে আমি হয়ত অবাক হবো কিন্তু আমাকে বিন্দুমাত্র অবাক না হতে দেখে সে বিস্মিত হয়েছিল। তখন আমি মনে মনে তাচ্ছিল্য হাসি হেঁসেছিলাম কেননা আমি জানতাম ও আসবে। আচ্ছা পরশি তুই কী সেদিন বিন্দুমাত্র অবাক হসনি যখন জয় তোকে এত মানুষের সামনে অপমান করছিলো আর আমি চুপ ছিলাম। আসলে আমি জানতে চেয়েছিলাম নিজের ভুল ধারণার জন্য সে কতটুকু নিচে নামতে পারে। কিন্তু এটা জানতাম না যে এত নিচে নামবে যে পুনরায় কারো সামনে দাঁড়ানোর মুখ ওর থাকবে না।
জানিস ও যখন সেদিন এ বাসায় এসেছিলো ওর চেহারায় আত্মগ্লানির ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো। যখন বারবার আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছিলো তখন ওর চেহারায় অসহায়ত্ব স্পষ্ট ফুটে উঠেছিলো আর যখন ওর নয়ন দুটো তোকে খুঁজছিল তখন ওর চেহারায় আমি স্পষ্ট বিরহ যন্ত্রণা দেখতে পেয়েছি।
–ভাই! তুমি কি বলছো আমি কিছু বুঝতে পারছি না? আর উনিই বা বাড়িতে কেনো এসে ছিলেন? উনি তো নিজেই সব সম্পর্ক শেষ করে দিয়ে গিয়েছিলেন? তুমি কী আমাকে কোনো ধাঁধা জিজ্ঞেস করছো ভাইয়া? খানিকটা বিরক্তি নিয়ে কথাগুলো বললো পরশি। সে যে তার ভাইয়ের উপর বিরক্ত তা যে কেউ ওর চেহারা দেখল স্পষ্ট বলতে পারবে।
রুদ্ধ পরশি কথা শুনে খানিকটা হাসলো কিন্তু তার এই হাসি পরশি খেয়াল করেনি। এবার সে বলতে শুরু করলো-
–জানিস যেদিন জয় আর তোর সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলাম তখনি আমার মনে সন্দেহ বাসা বাঁধে। সেই কয়েক বছরে জয়কে আমি যতটুকু চিনেছি সে এক কথার মানুষ আর হাসি ঠাট্টা বা নিজের ভালোবাসাকে পরীক্ষা করার মানুষ জয় না। তাই আমার কাছে তখন ব্যাপারটা বড়োই অদ্ভুত লেগেছিল। তাই আমি তখনি লোক লাগিয়ে দেই ওর পিছে আর সেই লোকেরাই ওর কীর্তিকলাপ আমাকে জানিয়েছে। আমার দরকার ছিলো শুধু কিছু প্রমাণের আর তা আমি পেয়েও গিয়েছিলাম কিন্তু কিছু করার আগেই জয় এসব করে বসলো। আর রইলো মেঘা সে কখনো জয়কে ভালোবাসেনি, সে একবার আমাকে ভালোবাসার জন্য প্রপোজ করেছিলো কিন্তু আমি তা প্রত্যাখান করে দেই সে থেকে তার রাগ ছিলো আমার উপর। এই ঘটনার কিছু দিন পর জয় ওকে প্রপোজ করে দেয় আর জয়ের অবস্থাও বেশ স্বচ্ছল ছিলো তাই সে ওকে হ্যাঁ বলে দেয়। কিন্তু যখন মেঘা জানতে পারে তুই জয়কে ভালোবাসিস সে এটার সুযোগ নেয় তোর থেকে আমার থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আর ও সফলও হয়। তুই একটা কথা ভেবেছিস এনগেজমেন্টের দিন তোর সাথে এত বড় দূর্ঘটনা ঘটার পরও কেউ তোকে কিছু বলেনি কেন যেখানে আমাদের সমাজে মেয়ের নামে একটা কটুক্তি যথেষ্ট তাকে বদনাম করার জন্য। আসলে তারা কেউ আমাদের আত্মীয় ছিলো না সবই ছিলো ভাড়া করা মানুষ। আর তাছাড়া আমাদের আত্মীয় বা আসবে কোথা থেকে, সেটা কেউ জানুক বা নাই জানুক তুই আর আমি ভালো করেই জানি আমাদের মা-বাবা অনাথ ছিলো।
__________________
বর্ষাকাল। বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্র্যদের মধ্যে এর তুলনা অনন্য। কবি সাহিত্যিকের বর্ণনা থেকে শুরু করে প্রেম প্রণয়ের জন্য এই ঋতু শ্রেয়। দেখতে দেখতে কে/টে গেল অনেক সময়। রুদ্ধ ও জয়কে আরেকবার সুযোগ দিয়েছে। প্রথম প্রথম রুদ্ধের সাথে কথা বলতে জয় সহজবোধ্য না করলেও সময়ের সাথে সাথে তা ঠিক আছে। তাছাড়া জয়ের সাথে পরশির সম্পর্ক এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। এখন একজন আরেকজনকে দেখলে দুরছাই করে না। আর জয়ের মনে তোহ আনন্দের লাড্ডু ফুটছে এই ভেবে যে পরশি তাকে আরেকটা সুযোগ দিয়েছে। এসবের মধ্যে জয়া আর স্নিগ্ধার বন্ধুত্ব বেশ গাঢ় হয়ে গেছে। তারা এখন একে অপরের সাথে নিজের সমস্ত কথা শেয়ার করতে পারে। আগের মত অস্বস্তিবোধ এখন কাজ করে না। জয়ার ব্যবহারেও বেশ পরিবর্তন এসেছে এখন সে ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু ভেদাভেদ করে না আর আহনাফকেও যথাযোগ্য সম্মান করে।
রুদ্ধ আর স্নিগ্ধাও একে অপরের খুব কাছাকাছি এসে পড়েছে। স্নিগ্ধাকে ছাড়া যেমন রুদ্ধের চলে না তেমনি স্নিগ্ধার ও একই অবস্থা। এই সম্পর্কের এখনো কোনো নাম হয়নি। সকালের চা থেকে শুরু করে নিজের নিত্যদিনকার কাজের জন্য তার স্নিগ্ধাকে চাই৷ আগে তার সব কাজ বাসার সার্ভেন্টরা করলেও এখন স্নিগ্ধা ব্যতীত কেউ তোর জিনিস ধরলে তার রাগ উঠে যায়। আর সেই রাগ সে স্নিগ্ধার উপরেই ঝাড়ে কেননা সে থাকতে অন্য কেউ কেনো তার জিনিসপত্রে হাত দিবে। এই কিছুদিন আগের ঘটনা জয়া তখন কিছু কাজের জন্য ওদের বাসায় এসেছিল। স্নিগ্ধা তখন বাগান পরিষ্কার করছিলো এমন সময় রুদ্ধের ডাক আসে সে চা খাবে কিন্তু স্নিগ্ধা পুরো কাদামাটিতে লিপ্ত তাই সে উঠে যেতে পারছে না তখন জয়া বললো সে বানিয়ে সার্ভেন্টের হাতে পাঠিয়ে দিবে এবং স্নিগ্ধাও তাতে সম্মতি প্রকাশ করলো। কিন্তু বিপত্তি ঘটলো তখন যখন রুদ্ধ চায়ের কাপটি ছুড়ে ফেলো দিলো। ইদানিং পার্টি অফিসে প্রচুর কাজ আর তার সাথে আছে টেনশন ফ্রি। শুধুমাত্র স্নিগ্ধার হাতের চা তাকে একটু আরাম দেয় কিন্তু সেটা যখন সে পেলো না আচ্ছামত স্নিগ্ধার ক্লাস নিয়েছে। সেই থেকে স্নিগ্ধাও যত ব্যস্ত থাকুক না কেনো রুদ্ধের কাজ নিজে করে। এসব ছোট ছোট কেয়ার, একে অপরকে ছাড়া থাকতে না পারা, নিজের জীবনে শুধু একমাত্র তারই আধিপত্য মানা হয়ত এসবই ভালোবাসা। এভাবেই হাসি-খুশি কা’ট’ছি’লো সকলের দিনকাল।
আজ শুক্রবার। ব্যস্ততায় ঘেরা শহরে আজই মনে হয় মানুষদের অত ব্যস্ত দেখা যায় না। আজকের দিনটা থাকে কোলাহল মুক্ত। পাখির কিচিরমিচির শব্দটা কী নিদারুণ স্পষ্ট শোনা যায়। যে প্রকৃতির রূপ বুঝে সেই বুঝতে পারবে তাদের সুরেলা কণ্ঠ।
আজ অনেকদিন পর বাসা থেকে বাড়িয়েছে স্নিগ্ধা। উদ্দেশ্য তার বান্ধবীদের সাথে দেখা করা। যার মধ্যে জয়া আর রুশমিও অন্তর্ভুক্ত। বান্ধবীদের সাথে যখন বেড়াতে যাবে সে কথা সে পরশিকে বলেছিলো আর পরশিও রাজি হয়েছিল। কিন্তু সে একবার রুদ্ধকেও বলে যেতে বলে। কিন্তু বিপত্তি ঘটলো এখানেই রুদ্ধ এক কথায় মানা করে দিয়েছে। তার মতে বাহুিরে যাওয়ার কী আছে যা আড্ডা দেওয়ার বন্ধুদের বাসায় এনে দাও। সে কিছুতেই স্নিগ্ধাকে একা যেতে দিবে না। অতঃপর অনেক চেষ্টা করে পরশি এসে তাকে বুঝালো অবশেষে সে মানলো।
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে তার মনটা ফুরফুরে হয়ে গেলো। আজ অনেকদিন পর বাহিরের হাওয়া-বাতাস পেয়ে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। কিছুদিন আগে পরীক্ষার জন্য কি পরিমাণ ধকল তার উপর দিয়ে গেছে সে বলে বুঝাতে পারবে না। আজকের দিন তার চিরস্মরণীয় থাকবে কেননা সে কখনো ভাবতে পারেনি সেও একটা সাধারণ জীবন পাবে। আনন্দ শেষে এখন বাসায় ফিরার পালা। জয়া গাড়ি করে আসেনি তাই স্নিগ্ধা তাকে তার বাসায় দিয়ে নিজে নিজের ঠিকানায় পৌছে যাবে। প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে একটু পর সম্পূর্ণ জায়গা আঁধারে তলিয়ে যাবে আর রাস্তাটাও কেমন ফাঁকা ও নিরব। এতে করে স্নিগ্ধার একটু ভয় করছে, গাড়িও আসছে না। হঠাৎ করে একটা বড় মাইক্রো এসে তাদের সামনে থামলো আর তাদের ভিতর থেকে নামলো মুখোশধারী কিছু লোক। এসব দেখে স্নিগ্ধা আর জয়া প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেল। কোনোকিছু না ভেবে তারা দিলো এক দৌড় কিন্তু বেশি দুর যেতে পারলো না তার আগেই লোকগুলো তাদের দু’জনকে ধরে ফেললো।
রাত এখন ৮টা। পরশি ড্রয়িং রুম জুড়ে পায়চারি করছে একবার ঘড়ির দিকে আরেকবার দরজা দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু এখনো স্নিগ্ধা বাড়ি ফেরেনি। তখনি গাড়ির হর্নের শব্দ শোনা গেলও সে ভেবেছে স্নিগ্ধা এসেছে তাই তার মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। কিন্তু তার এই হাসি বেশিক্ষণ টিকলো না যখন দেখলো রুদ্ধ বাসায় প্রবেশ করছে। এখন তার প্রাণ বেড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম। রুদ্ধ যদি একবার জানতে পারে পরশি এখনো আসেনি তাহলে বাসায় এখন তুফান আসবে। কিন্তু তার হাতে এখন কিছু নেই। তাই সে দৌড়ে গিয়ে রুদ্ধকে সব বলে দিলো।
রুদ্ধ পরশির কথা শুনে হতবাক। নিজেকে যথাসম্ভব চেষ্টা করেও সে নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না অগত্যা চেচিয়ে বলে উঠলো-
–তোর ধারণা আছে তুই কী বলছিস? যেহেতু ওর আসতে এত দেড়ি হচ্ছে তোর এই কথা আমাকে একবারও মনে হয়নি?
–আসলে ভাই আমি মনে করেছিলাম বন্ধুদের সাথে গিয়েছে তাই হয়ত সময়ের দিকে লক্ষ রাখেনি তআর ভেবেছি সে এসে পড়বে তাই তোমাকে আর বিষয়টা জানাইনি।
–বাহ! উত্তম কাজ করেছো! তোর কী মাথার সব ঘিলু সব নষ্ট হয়ে গেছে? তুই কি জানিস না স্নিগ্ধা অন্তর্মুখী মানুষ। সে মানুষের সাথে অতটা মিশে না। ও আর যাই করুক না কেনো বাসা থেকে এত রাত করে বাহিরে থাকবে না। তাছাড়া ও এই শহরের কিছু চিনে না যদি ওর কিছু হয়ে যায়।
পরশি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। আসলেই এখানে দোষটা তো তারই। স্নিগ্ধার আসতে দেড়ি হচ্ছে এটা যদি সে আগেই জানিয়ে দিত তাহলে এত সমস্যা হতো না।
–স্নিগ্ধার কী একা আসার কথা ছিলো নাকি গাড়ি দিয়ে আসবে বলেছিলো ?
–গাড়ি দিয়ে!
–ড্রাইভারকে ফোন দিয়েছিলি?
–না..নাহ।
“না” এই শব্দটি শোনার পর রুদ্ধ তড়িঘড়ি করে ড্রাইভারকে ফোন দিলো।
–হ্যালো রফিক!
–জী স্যার!
–স্নিগ্ধা কী তোমার সাথে আছে?
–ইয়ে..মানে..
— যা বলছি এর উত্তর দাও? এসব ইয়ে টিয়ে বন্ধ করো?
–নাই স্যার। আমার আসতে দেড়ি হয়েছিল। এখানে এসে দেখি আপামনি নাই, তাকেই আমি খুজতাসি।
–তোমার আসতে লেট কেনো হয়েছে?
–স্যার রাস্তার মাঝখানে রাস্তা বন্ধ এর ব্যানার লাগানো তাই আমাকে ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে আসতে হয়েছে। কিন্তু স্যার সে রাস্তা দিয়ে আজ সকালেও আমি এসেছি তাই হঠাৎ করে কেনো বন্ধ করে দিয়েছে তা আমি জানি না।
ব্যাস এইটুকু শুনেই রুদ্ধের দম বন্ধকর অনুভূতি হচ্ছে। তারা মাথা খানিকক্ষণের জন্য কাজ করা বন্ধ করে দিলো। সে বুঝতে পারছে সে কী করবে? বলে না মানুষ অতি শোকে পাথর হয়ে যায় তার সাথেও এমন হচ্ছে। তখনি পরশি এসে তার হাত ঝাকিয়ে তাকে ডাকতে লাগলো। ফলে রুদ্ধের ধ্যান ভাঙলো, তার সবকিছু বুঝতে একটু সময় লাগলো। অতঃপর বিরবির করে বলতে লাগলো-
–আমার স্নিগ্ধাকে খুঁজতে হবে? আমার স্নিগ্ধাকে খুঁজতে হবে?
চলবে…
বিঃদ্রঃ নেক্সট পার্টে সমাপ্তি।