মন পিঞ্জর পর্ব ১৮

0
961

#মন_পিঞ্জর
#লেখিকা_আরোহী_নুর
#পর্ব_১৮

একটা বেশ বড়সড় বাংলোতে একা একটা ইজি চেয়ারে বসে আছে এক রমনী,হাতে কারো একখানা ছবি নিয়ে,বার বার ছবির কাঁচে হাত বুলাতে ব্যাস্ত রমনী,কারন সে কাচের ভিতর যে লুকিয়ে আছে সে যে তার জন্য বর্তমানে পৃথিবীর সব থেকে বেশি মুল্যবান কেউ একজন, হয়তো তাকে সশরীরে পাওয়ার কোনো অধিকার রয়ে যায় নি সে রমনীর তবুও তাকে ফিরে পাওয়ার একটা নেশা যেনো আকঁড়ে ধরেছে ওই রমনীকে,কখনো কি পারবে সে রমনী তাকে ফিরে পেতে, আছে কি সাহস তার সামনে যাওয়ার,পারবে কি বলতে তাকে ভালোবাসি,বুঝাতে কি সক্ষম হবে যে এই রমনীর শুন্য মন পিঞ্জরে এখন শুধু ওরই বসবাস,নিজের জীবনটা যে এখন এই রমনী তার সত্য ভালোবাসার রঙে রাঙাতে বড্ড মাতোহারা হয়ে পড়েছে।কথাগুলো তার আনমনে খেলা করতে গিয়ে ব্যাথা ভরা কিছু অনুভুতির সৃষ্টি করে রমনীর মনে যা জলরূপে ধরা দেয় তার চোখে।

আজ শুক্রবার আঁখির আজ ভার্সিটি নেই এমনকি কাজও নেই,তাই সবার সাথে সুন্দর সময় কাটাচ্ছে আজ ও,বসাররুমে দিদু, সায়েদা, ইশা চৌধুরী আর আঁখি মিলে সুন্দর একটা আড্ডার আসর জমিয়েছিলো,হটাৎ কোনো একটা প্রয়োজনে আঁখিকে রুমে আসতে হয়েছিলো তখনি আদৃতও রুমের বাইরে যাচ্ছিলো সেই ক্ষনেই ঠিক দরজার সামনেই দুজনের ধাক্কা লাগে,আদৃতের বাজুতে ধাক্কার বেগ বেশি পড়লো যাতে আদৃত ব্যাথায় একটু কুঁকড়ে উঠে,যা আঁখিকে না বুঝতে দেওয়ার সমস্ত চেষ্টা করে আদৃত তবে আঁখির চোখকে ফাঁকি দিতে ব্যার্থ হয়,আঁখি লক্ষ্য করে আদৃতের বাজু থেকে খনিক রক্তক্ষরণ হতে শুরু হয়েছে অল্পতেই,সাদা শার্টের উপর দিয়ে তা স্পষ্ট ভেসে উঠছে,তৎক্ষনাৎ আঁখির মনে পড়লো কাল বিকেলের ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা তখন আদৃত আঁখিকে বাঁচাতে গিয়ে যে ওর অংশের পীড়াটা যে নিজের ভাগে নিয়ে গেছিলো।ভাবনাটা খনিক খারাপ লাগা সৃষ্টি করে আঁখি মনে।

আপনার তো রক্ত ঝরছে, আপনি শার্ট খুলে বসেন আমি দেখছি।

আই এম ওকে মিস আঁখি,আপনাকে আমাকে নিয়ে এতো চিন্তা করতে হবে না।
আঁখি এবার অনেক বিরক্তি ভাব নিয়ে বললো।

হুম আপনি তো আয়রন ম্যান,গতকালকে এতো বড় ইটের সামনে এসে ইচ্ছে করে খাঁড়া হলেন ,আর এবার ওটার ছেড়ে যাওয়া ক্ষত লুকিয়ে যাচ্ছেন,এমনটা করে আপনি কোনো এওয়ার্ড পাবেন না বুঝেছেন,আপনি কোনো সুপার হিরো না আপনি মানুষ।

আমি জানি আমি মানুষ,আর একজন ডক্টরও তাই নিজের খেয়াল নিজে করতে জানি।

হুম তাই তো দেখছি ক্ষত লুকিয়ে পালাচ্ছেন,চুপ করে গিয়ে বিছানা বসেন আমি ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে আসছি।

দেখেন মিস আঁখি আমি নিজে করে নেবো।

আঁখি এবার ঠ্যালতে ঠ্যালতে আদৃতকে বিছানার পাশে নিয়ে আসে তারপর ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে।

এটা কি অসভ্যতা করছেন আপনি,আমি বলেছি তো আমি করে নিবো।

অসভ্যতার আপনি দেখেছেন কি,আপনি যদি এখন নিজের শার্ট না খুলেন তবে আমি তা ছিঁড়তে বাদ্য হবো।

হোয়াট!

ইয়েস নাও জলদি খুলেন।

আপনি এতোটা জেদি কেনো বলেনতো,কখনো কখনো আমার অসহ্য লাগে।

তাতে আমার কোনো কিছু করার নেই,আমি আপনাকে আগেই বলেছি আমি জন্ম থেকেই এতোটাজেদি তাই আপনাকে আমার সাথে কো-অপারেট করতে হবে,জলদি শার্ট খুলেন এবার।আদৃত আর কোনো উপায় না পেয়ে নিজের শার্ট খুলতে বাধ্য হলো,আঁখি এবার পরম যত্নে ওর ক্ষতের চিকিৎসা করা শুরু করলো,ইটের টুকরোটা যে সে জায়গাটা গভীরভাবে নিজের দাগ ছেঁড়ে গেছে,জায়গাটা দেখে আঁখির মনে অনেক খারাপ পরিমাণটা আরও বেড়ে গেলো,আঁখির তো ভেবেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে সেই আঘাতের সম্মুখীন তো আঁখির হওয়ার কথা ছিলো যা আদৃত নিজের উপর নিয়ে নিয়েছে,আঁখির সাথে কোনো সম্পর্ক থাকা না সত্ত্বেও আদৃত এমনটা করতে দুবার ভাবলো না,কোনো কারন, কোনো সম্পর্ক,কোনো টান ছাড়াই আদৃত সবসময় ওর সামনে ঢালরুপে খাঁড়া থাকছে ওপরদিকে আয়ানের সাথে সব রকম সম্পর্ক,ওর কাছ থেকে সব রকম চাওয়া পাওয়ার আশা থাকলেও আয়ান তাতে উত্তির্ন হতে পারে নি কখনো,কখনো আঁখির সামনে ওর ঢালরূপে আসে নি আয়ান,জীবনে যে এই সংগ্রামগুলো নতুন না আঁখির জন্য আরও সংগ্রাম করেছে আঁখি তবে আয়ান কখনো সেগুলোতে সাথে থাকে নি, না গতকাল থাকলো তখনও তো আয়ান আঁখির পাশেই ছিলো তবে কি একবারও প্রয়োজন মনে করলো না আঁখির পাশে দাঁড়ানোর,যা কখনো হয়নি তা আবার নতুন করে কোথা থেকে হওয়ার আশা করা যায়,সেটা ভেবেই আঁখি আনমনে তাচ্ছিল্য হাসি হাসলো।

এদিকে আদৃত একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আঁখির পানে,কতো খেয়ালের সহিত আদৃতের ক্ষততে ওষুধ লাগাচ্ছে আঁখি,হয়তো মনুষ্যত্বের খাতিরে।তবে নিজের জন্য এতোটা খেয়াল ভালোবাসার খাতিরে কখনো আরোহীর কাছে আশা করতো আদৃত, আরোহীও তাতে ১০০ ভাগ উত্তির্ন হতো তবে সে সুখের ভাগ্যটা যে বেশিদিন টিকলো না আদৃতের,হয়তো সে সুখটা ওর জন্য ছিলো না,কয়েকদিনের মিছেমিছি সুখ পাখিকে মন পিঞ্জরে আবদ্ধ করে রাখতে চাইছিলো যে সারাজীবন তবে যে তা অসম্ভবের সমতুল্য ছিলো ভেবেই দীর্ঘনিশ্বাস বেড়িয়ে এলো আদৃতের ব্যাথার্থ হৃদয় থেকে।
____________________

আয়েশা ওর একটা ফ্রেন্ডের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলো আজ সেখান থেকেই রিক্সা করে বাড়ি ফিরছিলো তখনি রিকশাওয়ালা চাচা নিয়ন্ত্রণ হারালে একটা গাড়ির সাথে রিকশাটার ধাক্কা লাগে,গাড়িটা সাথে সাথে ব্রেক কষায় খুব বড় কোনো ঘটনার সুচনা হয় না তবে রিক্সা থেকে পড়ে যায় আয়েশা যাতে ওর হাত কনুই খনিক ছিঁলে যায়,রিক্সাওয়ালার কিছুই হয় না,তবে রিক্সার সামনের দিকটা খনিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়,মুহুর্তের বেগ টা আন্দাজ করতে পেরে গাড়ি থেকে নেমে আসে গাড়ির লোকটা,সে আর কেউ নয় নোমান,নোমান ছুঁটে এসে আয়েশাকে উঠায়।

আরে আপনার কিছু হয় নি তো?ইশ কতোটা ছিঁলে গেছে,দাঁড়ান আমি দেখছি।

কথাটা বলে নোমান গাড়ি থেকে ফাস্ট এইড বক্স এনে আয়েশার হাতটায় ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়,সেই ক্ষনে আয়েশা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নোমানের পানে,ওর ভিতর আলাদা এক ভালোলাগা কাজ করতে শুরু করছিলো তখন।আচমকা এক অনুভুতি মন দোলিয়ে দিয়ে যাচ্ছিলো ওর সে ক্ষনে,কিন্তু সে অনুভুতির মানে বুঝতে যে সম্পূর্ণ ব্যার্থ হয় আয়েশা,নোমান ওর হাত ব্যান্ডেজ করে রিকশাওয়ালাকে কিছু টাকা দিয়ে দেয় নিজের রিকশার মেরামতের জন্য,এমনকি ভুলটা রিকশার ড্রাইবারের হলেও দুঃখীত ভাবটা নোমানই ফুঁটিয়ে তুলে তারপর রিকশাওয়ালাও মানতে নারাজ হয় না ভুলটা উনার নিজের ছিলো।

রিকশাওয়ালাকে রিকশা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে এনে এবার নোমান আয়েশাকে বললো।

আসলে আমি দুঃখীত আমার জন্য আপনার সাথে এমনটা হয়ে গেলো।

আরে না না এখানে আপনার কোনো দোষ নেই,এটা শুধুই একটা এক্সিডেন্ট মাত্র।

তা আপনি সেদিনের ওই মেয়েটা না যে আমার প্রাণ বাঁচিয়েছিলো।

হুম আমি।

অহ,যাক আবারও আমাদের দেখা হয়ে গেলো,তা চলেন আমার সাথে আমি আপনাকে বাড়ি পৌঁছে দিবো।

আরে না না আমি যেতে পারবো।

দেখেন আপনি আমার প্রাণ বাঁচিয়েছেন,হয়তো তার প্রতিদান চাই না আপনার তবে আমি তা দেওয়ার ছোট্ট একটু চেষ্টা করতে চাই,প্লিজ চলেন।

প্রতিদান আমার ঠিক চাই না,তবে আপনি যখন এতো করে বলছেন তবে আমি যেতেই পারি।

তারপর আয়েশা নোমানের সাথে গাড়িতে উঠে পরে,আয়েশার নির্দেশনা অনুযায়ী নোমান ওকে ওর বাড়ির সামনে নিয়ে আসে,আয়েশা এবার গাড়ি থেকে বাই বলে চলে যেতে নেয় তখনি নোমান ওকে পিছু ডাক দেয় এতে আয়েশা থমকে দাঁড়ায়, তারপর পিছন মুড়ে তাকায় নোমানের পানে।

কিছু বলবেন আপনি।

বলবো তো কিন্তু কি নামে বলবো সেটা ভেবে পাচ্ছি না।

কেনো?

আরে আপনার নাম না জানলে কি নামে কিছু বলা যাবে বলেন আপনাকে?যে আমার প্রাণ বাঁচালো তার নামটাও আমার এখন অব্দি জানা হলো না।তাই আপাতত নামটাই জানতে ইচ্ছুক আমি।

দুজনই এতে মৃদু হাসলো তারপর আয়েশা বললো।

আমার নাম আয়েশা রাহমান,আর আপনার?

আমি ড.নোমান চৌধুরী।

আরে আপনি তাহলে ড.নোমান?আমি খবরের কাগজে আপনার কথা অনেক পড়েছি,আপনি তো অনেক খ্যাতিসম্পন্ন ডাক্তার।

দোয়া করবেন আমার জন্য।

অবশ্যই।

তবে আসি।

ঘরে আসবেন না।

আজকে তাড়া আছে অন্যদিন আসার চেষ্টা করবো,আশা করি দেখা হবে আবারও, আজকে না হয় আসি।

নোমান চলো গেলো,তারপর আয়েশা লজ্জাভরা একটা হাসি দিয়ে ঘরের পানে পদার্পণ করলো।

এদিকে হাসপাতালে আয়ান একজন রোগীকে দেখছে আর আদৃত একটু পরেই উনার সার্জারী করবে, সেহেতু আয়ান রোগীটার কিছু রিপোর্ট আদৃতের কাছে নিয়ে গেলো।

মে আই কাম ইন ড.আদৃত।

ওহ ড.আয়ান,প্লিজ কাম,তা আপনি?

কেন আই সিট?

ইয়া সিওর।

এই যে সানজিদা আজমের জরুরি রিপোর্টগুলো আপনি তো একটু পর উনার সার্জারী করবেন সো।

হুম, তা রিপোর্টগুলো আপনি অন্যকে দিয়েও পাঠাতে পারতেন ড.আয়ান,নিজে কষ্ট করে আসার মানে জানতে পারি?

হতবাক দৃষ্টিতে আদৃতের দিকে তাকিয়ে আয়ান বুঝতে সক্ষম হলো যে আয়ান ওর মনোভাবটা অনেকাংশে বুঝে নিতে পেরে গেছে ,এবার আয়ানকে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আদৃত আবার বলে উঠলো।

এতো ভাবার কিছু নেই ড.আয়ান,আপনার মতো লোক যে নিজের স্বার্থ ছাড়া কোনো দিকেই পা বাড়ায় না,আপনি ডাক্তার হয়েও এতো কষ্ট করে রিপোর্টগুলো আমার কেবিনে নিয়ে এলেন যেখানে এসব কাজ নার্সদের,আর আপনার এটিটিউড অনুযায়ী যে কাজ আপনাকে মানায় না সে কাজ আপনি কখনো নিজের স্বার্থ ছাড়া করতেও ইচ্ছুক হবেন না।সো বলেন আমি কি হেল্প করতে পারি আপনাকে?

আপনি যখন জিনিসটা বুঝতেই পেরেছেন তবে আমি সোজা পয়েন্টে আসি।দেখেন আমি জানি না আঁখিকে আপনি কি বলে নিজের সাথে রেখেছেন,তবে আমি যতোটুকু জানি ওকে আপনি নিশ্চয়ই কোনোরকম ব্লেকমেইল করে নিজের সাথে রেখেছেন,নইলে আঁখি এভাবে অপরিচিত কারো সাথে থাকার মেয়ে না,বিশেষ করে কোনো ছেলের সাথে।

কথাটা শুনে আদৃত তাচ্ছিল্য হাসলো খনিক তারপর বললো।

আসলে আপনি আঁখিকে ভালোভাবে কখনো জানতে সক্ষম হলেন না ড.আয়ান,আফসোস হয় একটা মানুষের সাথে ৮ বছর থেকেও তাকে ভালো করে জানতে পারলেন না আপনি,যাকে না কি এই কয়েকদিনের ব্যবধানে বেশি না হলেও আপনার থেকে বেশি ভালো করে বুঝতে আমি সক্ষম হয়েছি।

আপনি কি বলতে চাইছেন ড.আদৃত,ক্লিয়ারলি বলেন।

তবে শুনেন,হ্যাঁ আপনি ঠিক বলেছেন আঁখি কোনো অপরিচিত লোকের সাথে কখনোই কোনো কারন ছাড়া থাকবে না বিশেষ করে সে ছেলে হলে,কিন্তু আঁখির আরো অনেক স্পেশালিটি আছে ড.আয়ান এর মধ্যে একটা স্পেশালিটি হলো যে আঁখিকে কেউ কখনো ব্লেকমেইল করতে পারবে না,আঁখি তো আঁখিই,ও যা চায় তাই করবে, কখনো ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটা ছোট কিট মারতেও তাকে বাধ্য কেউ কখনো করতে পারবে না।

আপনার মনে হয় না আপনি আঁখিকে নিয়ে একটু বেশিই কৌতুহল দেখাচ্ছেন।

আমি কৌতুহল দেখালে তা মোটেও মন্দ হবে না ড.আয়ান।বরং আমার তো মনে হচ্ছে আঁখিকে নিয়ে আপনার কৌতুহলটাই বেশি যে জায়গাতে সেটা আপনাকে এখন আর শোভা দেবে না।

আমি কাকে নিয়ে কৌতুহল দেখাবো সেটা একান্ত আমার ব্যাপার ড.আদৃত, সেখানে আপনি নাক না গলালেই খুশি হবো।

হুম গুড,তবে আপনি আপনার কৌতুহল নিয়েই পড়ে থাকুন, আমাকে জ্ঞান দিতে আসবেন না আমি জানি আমি কি করছি আর আগামীতে কি করবো।

আমিও এখন আর বেশি কিছু বলতে চাই না ড.আদৃত,জাস্ট এটা বলতে চাই আঁখি থেকে দূরে থাকবেন,নয়তো পরিনাম ভালো নাও হতে পারে আপনার জন্য।

রেগে মেখে উঠে চেয়ারটা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে কেবিন থেকে প্রস্থান করলো আয়ান,আদৃত স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায়ই বসে রইলো তবে মনে মনে বলে গেলো কিছু কথা।

আপনি যাই করেন না কেনো ড.আয়ান আঁখিকে আর দ্বিতীয় বার দূর্বল করতে সক্ষম হবেন না আপনি,আমি বেঁচে থাকতে তা কখনোই আপনার দ্বারা সম্ভব হতে দিবো না।
________________

রাত তখন ১২ টা,আয়ান মাত্র ঘরে প্রবেশ করছিলো তখনি চিৎকারের শব্দ ভেসে এলো মাহির রুম থেকে,মাহি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে,আয়ান ছুঁটে গেলো রুমের পানে তখনি আয়েশা আর মিরা রাহমানও ছুঁটে এলেন সেখানে,ঘরটা অন্ধকার থাকলে আয়ান ঝটফট লাইট ঝালিয়ে দেয়,তখন আয়ান দেখতে পায় মাহির উপর একটা ছেলে ওর সাথে জোর জবরদস্তি করতে চাইছে,মাহি চিৎকার করছে আর ছেলেটা বলছে।

কি হয়েছে আয়েশা বেবি এমন করছো কেনো?
তখনি লাইট অন হলে ছেলেটা মাহিকে দেখে হতবাকময় প্রতিক্রিয়া দেয়।এদিকে আয়ান নিজের রাগ আর দমিয়ে রাখতে পারলো না তেঁড়ে গিয়ে ছেলেটাকে অনেক মারলো আর মাহি তো ন্যাকাকান্না করতে ব্যাস্ত,আয়ান ছেলেটাকে মারতে মারতে আধমরা করে ফেললো,তারপর জিজ্ঞেস করলো।

কে তুই,আমার মাহির সাথে এমন কিছু করার সাহস তোর কোথা থেকে এলো?

সরি ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করবেন আমি আয়েশার প্রেমিক ও আজ রাতে আমাকে দেখা করতে আসার কথা বলেছিলো আমি ওর সাথেই দেখা করতে এসেছিলাম আর অন্ধকারে আমি ওর রুম মনে করে এই রুমে ঢুকে গিয়েছিলাম,আর উনাকেও আমি আয়েশা মনে করেছি।

এই পাগল ছেলে তুমি কি বলছো এসব? আমি তোমাকে চিনি না কে তুমি?ভাইয়া বিশ্বাস করো আমি ওকে চিনি না।

দেখেছো বেবি তোমার বোন কিনা শেষমেষ ছেলেদের বাড়িতে ডাকিয়ে নোংরামি করছে,আজ ওর জন্য আমার কি সর্বনাশই না হতে যাচ্ছিলো।
কথাটা বলে মাহি ন্যাকা কান্না করতে শুরু করলো আবার।এবার আয়েশা রাগে ওর দিকে এগিয়ে গেলো।

আজ শাঁকচুন্নি তোকে ছারবো না,এসব তুই করিয়েছিস না? কথাগুলো বলে আয়েশা মাহির দিকে তেঁড়ে গেলে মাহি আয়ানের পিছন লুকিয়ে পড়ে আর বলতে লাগে।

দেখো বেবি তোমার বোন আমায় মারতে আসছে,এখন নিজের দোষ আমার ঘাড়ে দিচ্ছে।

এদিকে আয়েশা মাহিকে ধরতে নিলে আয়ান আয়েশার হাত ধরে নেয়,আয়েশা লক্ষ্য করতে পারে আয়ানের চোখ দুটি রক্তবর্ন আকার ধারন করে আছে।

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here