ভ্রমর (পর্ব – ৮)
সুমাইয়া আক্তার
__________________
আষাড় মাসের ঊনিশতম দিন। আকাশ বৃষ্টি নামাবে, নামাবে করে গুমোট মেরে আছে সেই দুপুর থেকে। দুই সেকেণ্ডের জন্য রোদের মুখ দেখা গেলেও পরক্ষণে এক ঘণ্টার জন্য মেঘের আড়ালে লুকিয়ে পড়ছে—সে কি লজ্জা পাচ্ছে? পরিবেশও আকাশের সাথে সন্ধি করে নীরব। এসবের সাথে স্নিগ্ধার মনও খারাপ। সে বাকহারা হয়ে জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আষাড় মাসের প্রথম কয়েক দিন তার জীবনে আনন্দের বারিধারা নিয়ে এলেও ঊনিশতম দিন সব আনন্দের মাঝে দেওয়াল তুলে দিয়েছে। শরিফের কয়েকটা কথা তাকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে। বুকটা আনচান করছে মিন্টুকে একবার দেখার জন্য। বলার জন্য, স্নিগ্ধাকে না জানিয়েই পরিবার যে যুদ্ধ সাজিয়েছে তার কথা।
নাক চনচন করে চোখ ভরে অশ্রু এলো স্নিগ্ধার। এই তো দুই দিন আগের কথা। নৌকায় পাশাপাশি বসে ছিল মিন্টু-স্নিগ্ধা। উপভোগ করছিল প্রকৃতির স্নেহভরা ছোঁয়া, অবিরাম অন্তহীন মধুর দৃশ্য।
সহসা মিন্টু বলে উঠেছিল, ‘তোমাকে মাথায় ঘোমটা দিলেই বেশি সুন্দর লাগে।’
গ্রামে ঘোমটা ছাড়া মেয়ে পাওয়া কঠিন। তাদের মাঝে স্নিগ্ধার খোলা চুল, অনাবৃত মাথা একটু বেখাপ্পা।
সঙ্গে সঙ্গে মাথায় ঘোমটা তুলে দিল স্নিগ্ধা। বলল, ‘আমাকে কিসে সুন্দর লাগে আর কিসে অসুন্দর—দেখ তাহলে?’
স্নিগ্ধার উল্টোপাশে মুখ ফিরিয়ে আড়ালে মুচকি হাসল মিন্টু। উত্তর দিল না কিছুই।
‘আমার একটা ইচ্ছে আছে।’ পুরোপুরি মিন্টুর দিকে তাকাল স্নিগ্ধা, ‘কোনো এক রাতে আমার প্রিয় মানুষটির সাথে আমি নৌকায় ঘুরব। আকাশে থাকবে উজ্জ্বল চাঁদ, আশেপাশে হাজারও নক্ষত্র। চাঁদের স্নিগ্ধ আলোর ঝর্ণায় ভিজব দু’জন। ওই সময়টুকু সে হবে মাঝি, আর আমি তার কপিলা।’
‘নিজেকে কত চরিত্রে বসাতে চাও তুমি?’
‘এতগুলো চরিত্রে’ বলে দু’হাত প্রসারিত করল স্নিগ্ধা। ‘বিষাদ সিন্ধু’র সখিনা থেকে লাইলি, জুলিয়েট, রাধা পর্যন্ত।’
‘তাহলে তো তোমার প্রিয় তোমাকে পেলেই সবাইকে পেয়ে যাবে। তোমার মাঝে মোহনীয় নারী নীলাঞ্জনা, সুরঞ্জনা, বেলা বোসকে পাওয়া যাবে তো?’
খিলখিল করে হেসে উঠল স্নিগ্ধা। বলল, ‘সেনোরিতাকেও পাওয়া যাবে।’
ফোনের স্ক্রিনে এক ফোঁটা জল পড়ার সুক্ষ্ম শব্দে ভাবনা ভাঙতেই চমকে উঠল স্নিগ্ধা। স্মৃতিচারণ ছেড়ে তাকাতেই তাওহিদাকে সামনে আবিষ্কার করল সে। চোখ মুছে, মাথা নিচু করে সাবধান হলো স্নিগ্ধা। তাওহিদা তার মেয়ের চোখে জল দেখে কষ্ট পেল, বিস্মিত হলো। স্নিগ্ধাকে সেই চার বছর বয়সের পর থেকে কাঁদতে দেখেননি তিনি। পাশে বসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী হয়েছে মা? কাঁদছিস কেন?’
‘আসলে…’ কথা বলতে গিয়েও চুপ করে গেল স্নিগ্ধা। কান্নার দমকে তার গলাটা অল্প ভেঙে গেছে। এ স্বরে কেমন করে উত্তর দেবে সে? তিনি তো মা—সব বুঝে ফেলবেন।
তাওহিদা জড়িয়ে ধরলেন স্নিগ্ধাকে। আদুরে গলায় বললেন, ‘তোর মায়ের থেকে লুকোবি?’
তাওহিদাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল স্নিগ্ধা, ‘আতিক আংকেলের ছেলের সাথে নাকি আমার বিয়ে? আমাকে না জানিয়ে? কেন মা? আমার তো পড়াশোনাও শেষ হয়নি।’
‘এইজন্যে তোর মন খারাপ? শাওন তো খুব ভালো ছেলে। তোর দাদু যখন ঠিক করেছেন, নিশ্চয় কিছু ভালো ভেবে ঠিক করেছেন। আর পড়াশোনা? বিয়ের পর অনার্স শেষ করবি। ক্ষতি কী?’
‘বাবা কী বলেছে?’
‘একটু রেগে আছেন। তবে আমার মনে হয় তিনিও রাজি হয়ে যাবেন।’
‘তুমি তাহলে বাবাকে চিনতে পারোনি মা।’
তাওহিদা উদাস দৃষ্টিতে দরজায় তাকালেন। হাড়ভাঙা দীর্ঘশ্বাস এলো হৃদয় ফুঁড়ে। স্নিগ্ধাকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন তিনি। তাওহিদা নিজেও জানেন সিকিন্দার এত সহজে এই বিষয় মেনে নেওয়ার মানুষ নন। কিন্তু তাতে কী? জমিদার শরিফও নাছোড়বান্দা। এই দুই বাবা-ছেলের মাঝে থেকে তাওহিদা নিঃস্ব! আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাদের মেয়েও নিঃস্ব না হয়ে যায়!
তাওহিদা স্নিগ্ধার চোখের জল মুছে দিয়ে বললেন, ‘শাওন আজ রাতে গ্রামে ফিরবে। বিয়েটা হয়তো আগামী সপ্তাহে হয়ে যাবে।’
দ্বিগুণ বিস্মিত হয়ে তাওহিদার দিকে তাকালো স্নিগ্ধা। সেই তাকানোর মাঝে কী ছিল তাওহিদা জানেন না; তবে সেই দৃষ্টির বোঝা খুব ভারী।
তাওহিদা দরজার দিকে যেতেই স্নিগ্ধার মনে হলো, সে বলে দিক মিন্টুকে ভালোবাসে। তার হৃদয়ে এক রাখালের বাস। স্নিগ্ধার শহরের প্রতিটি পোস্টারে মিন্টুর প্রতি তার ভালোবাসার বৃহত্তম ছবি ছড়িয়ে আছে। সে বলে দিক, বলে দিক!
তাওহিদাকে ডাকল স্নিগ্ধা। গলা প্রচণ্ড কেঁপে উঠল তার, ‘মা…’
তাওহিদা দাঁড়ালেন কিন্তু পিছু ফিরলেন না।
স্নিগ্ধা একটা লম্বা শ্বাস নিল মনের কথাগুলো হড়বড় করে তাওহিদাকে জানানোর জন্য। না, হলো না, হচ্ছে না। স্নিগ্ধা পারছে না জানিয়ে দিতে। মনে হচ্ছে, তার মনের কথাগুলো কেউ মাছ ধরা কলে আটকে দিয়ে টানছে; কেটে-ছিঁড়ে মাঝপথে হারিয়ে যাচ্ছে সব কথা।
‘কিছু বলবি?’ তাওহিদা আশা নিয়ে তাকালেন। স্নিগ্ধার মনে কারো প্রণয় খুঁটি গেঁড়েছে কি না তা নিয়ে সন্দিহান তিনি।
স্নিগ্ধা ব্যর্থ হয়ে কান্না চেপে বলল, ‘কিছু না।’
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। এই সময় বাড়ি থেকে বেরোতে দেবেন না শরিফ। ঘরের মধ্যে স্নিগ্ধার অস্থির দুই পা এপাশ-ওপাশ করছে। তার অবস্থা এখন পানিতে পড়ে ডানা ভেজা ভ্রমরের মতো। না উড়া যাচ্ছে, না পাড়ের দিশা পাচ্ছে। ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে সে। মনে মনে বারবার মিন্টুকে ডাকছে সে। এসব কষ্টদায়ক ঘটনাগুলো একে একে মিন্টুকে জানানোর খুব ইচ্ছে করছে। এসব শুনে মিন্টু যদি হাতে হাত রেখে আশ্বাস দেয় কিছু হবে না; তাহলেই স্নিগ্ধার শান্তি। সে একটু স্থিরতা খুঁজে পাবে। দেয়াল ঘড়ির কাঁটা সাতটা ছুঁই ছুঁই। এখনও বারো ঘণ্টা! বারো ঘণ্টা এভাবে অস্থির মনে থাকতে হবে। এই বারো ঘণ্টা বারো বছর হয়ে, বছরকে জড়িয়ে এক যুগ দেরী করে না ফেলে!
এলার্ম বাজছে খুব জোরে। মনি চোখ মেলে দেখে ভোর পাঁচটা। এলার্ম কেটে দিতেই তড়াক করে লাফিয়ে উঠল স্নিগ্ধা। চোখ রগড়ে বাইরে তাকালো। দিনের আলো ফুটেছে। গতরাতে একটার সময় ঘুমিয়েছে স্নিগ্ধা। তাই চোখের নিচে তার কালি পড়েছে। মুখ এতটুকু হয়ে গেছে চিন্তায়। হাতমুখ ধুঁয়ে জানালার ধারে বসে থাকল সে। মিন্টু গরুগুলো নিতে এলে সেও তার সাথে বেরোবে। সকাল হলো, রোদ উঠল, বেলা হলো—মিন্টুর দেখা নেই। দুপুরে খুব মাথা ব্যথা শুরু হলো স্নিগ্ধার। ঔষধ খেয়ে শুয়ে পড়ল। রাতে কম ঘুম হয়েছে বলে এত চিন্তার মাঝেও ধৈর্যহীন ঘুম দরজায় এসে কড়া নাড়ল। স্নিগ্ধা ঘুমিয়ে পড়ল; মাথার পাশে বসে থাকল মনি। স্নিগ্ধার এমন অবস্থায় নিজেও অস্থির সে। তারউপর মিন্টু আজ গরু চরানোর জন্য মাঠে যায়নি। গ্রামের’ই এক ছোট্ট ছেলের কাঁধে দায়িত্ব দিয়ে লাপাত্তা সে। মিন্টু কী অসুস্থ হয়ে পড়ল?
__________
হালকা হাওয়া জানালা দিয়ে পশ্চিমের গাছাপালার ডগা ছুঁয়ে ঘরে ঢুকছে। সেই হালকা হাওয়ায় কেঁপে কেঁপে উঠছে মিন্টু।
জানালা লাগিয়ে জলপট্টি দিলেন তহমিনা। রাগান্বিত সুরে বলতে লাগলেন, ‘পই পই কইরা কই বাবা সাবধানে চলিস। দিনে-রাইতে বাইরে বাইরে আন্দাজি ঘুইরা বেড়াস না। আমার কথার তো দাম নাই।’
চুপচাপ তহমিনার কখা হজম করতে থাকে মিন্টু। ভাবতে থাকে স্নিগ্ধাকে ঘিরে ভিত্তিহীন ভাবনা। জ্বর তার শরীরকে জব্দ করলেও, স্নিগ্ধাকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনাগুলোকে জব্দ করতে পারেনি। চোখ বন্ধ করল সে। সহসা কিছু মনে পড়তেই ফিক করে হেসে ফেলল।
তহমিনা মিন্টুর কারণ ছাড়া হাসি দেখে অবুঝ স্বরে বললেন, ‘মাথা টাথা কিছু খারাপ হইল না কি?’
মিন্টুর ভাবান্তর হয় না, উত্তরও দেয় না। ঠোঁটের কোণে হাসিরা ছুটোছুটি করে বেড়ায় তার। তহমিনা অকারণে এমন হাসিতে বিরক্ত হোন। কিছু জিজ্ঞাসা করলে মিন্টুর উত্তর পাবেন না ভেবে তিনিও চুপ করেন।
আজ নিশ্চিত স্নিগ্ধার মন উথাল-পাথাল করছে মিন্টুকে দেখতে না পেয়ে। চোখ বন্ধ করে স্নিগ্ধার সেই চিন্তাযুক্ত মুখ ভাবনায় এঁকে ফেলল মিন্টু। চিন্তা, অভিমানে তার মুখ বিষাদে ভরপুর। চোখে চিকচিক করছে অশ্রু, সারা ঠোঁট হাসি বিহীন। চট করে চোখ খুলল মিন্টু। না, স্নিগ্ধাকে ওই মুখে একদম মানায় না। স্নিগ্ধা মানে ঠোঁটের কোণে হাসি, উচ্ছ্বাসে ভরপুর মুখ, লজ্জায় লালচে গাল, কোমল স্পর্শ!
আসরের আজান কানে আসতেই জোর করে উঠে বসল মিন্টু। আজকের দিন স্নিগ্ধাকে না দেখে অস্বস্তিতে ভরপুর ছিল। এখন অল্প ভালো লাগছে। অজু করার জন্য বাইরে বেরোলো সে। কলপাড়ে গিয়ে অযু করতে লাগল। তহমিনা অবাক হলেন। জুম্মার নামাজ ছাড়া মিন্টুকে নামাজ পড়তে দেখেননি তিনি। এত গালিগালাজ করেন তিনি, তবুও কথা শোনে না মিন্টু। আজ হঠাৎ…
মিন্টু অজু সেরে ঘরে এসে শুয়ে পড়ল। ছেলের কাণ্ড দেখে যত না অবাক হলেন, তারচেয়ে বেশি রাগান্বিত হলেন তহমিনা। রাগী কণ্ঠে বলে উঠলেন, ‘এক্কেরে বাপের মতো হইছিস। অজু করে শুইলি আবার কেন?’
মিন্টু শান্ত স্বরে বলল, ‘মসজিদের ইমাম বলেছিল, রাগ হলে আর জ্বর এলে যেন বেশি বেশি অজু করি—রাসূল এটি করত।’
‘ফারজ না মাইনা খালি সুন্নত মানলে হইব?’
‘হয়তো না। কিন্তু দেখ মা, আল্লাহ্ চাইলে সন্ধ্যার আগে সুস্থ হয়ে যাব।’
মিন্টুর কথা সত্যি হলো সন্ধ্যার আঁধার সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে উপুড় করে দেওয়ার কিছু মহূর্ত পূর্বেই জ্বর অনেক কম হলো। তহমিনা এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা করলেন না। ছেলের অজুর জন্য সুস্থতা আসুক কিংবা তার দোয়ায়—মিন্টু সুস্থ হয়েছে এটাই বড় কথা। সুস্থতার ছোঁয়া পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিন্টু গায়ে গেঞ্জি দিয়ে স্নিগ্ধার সাথে দেখা করার জন্য বেরোনোর প্রস্তুতি নিতেই শরিফ কুঁড়েঘরে ঢুকলেন। মুখ তার গম্ভীর, চিন্তিত। তহমিনা ‘শরিফ বাবাজান’ বলে তাড়াহুড়ো করে চৌকির চাদরটা ঠিক করলেন।
শরিফ বসলেন। মিন্টুর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আজ সৈকতকে পাঠিয়েছিলে যে? তোমার কী হয়েছে?’
মিন্টু বলার আগেই তহমিনা বললেন, ‘জ্বর আইছিল বাবাজান।’
‘এখন ঠিক আছ?’
‘জি দাদামশাই।’ মিন্টুর ছোট উত্তর।
মিন্টুর কপালে হাত রাখলেন শরিফ। মিন্টুকে বড্ড ভালোবাসেন তিনি, ‘আমাকে বলিসনি কেন? ঔষধ আনার ব্যবস্থা করতাম।’
হাসল মিন্টু।
শরিফ বললেন, ‘কিছু হলে আমাকে বলবে। তোমার কিছু হলে আমি কি ভালো থাকব?’ মিন্টুর উশখুশ দেখে শরিফ একটু হাসলেন, ‘মিন্টু, কোথাও যাবে নাকি?’
‘জি দাদামশাই। একটু বাইরে যেতাম।’
অনুমতি দিলেন শরিফ।
কুঁড়েঘর থেকে বেরিয়ে দাঁড়াল মিন্টু। শরিফ তাকে এত ভালোবাসেন, ভরসা করেন। স্নিগ্ধার সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রণয় তৈরি করা তো শরিফকে ধোঁকা দেওয়ার সামিল! সত্যিই কী ধোঁকা?
ঘর থেকে শরিফের কণ্ঠ, ‘শোন তাওহিদা, তোমার বাড়িতেই প্রথম এক খুশির খবর শোনাচ্ছি।’
‘খুশির খবর?’ প্রবল আগ্রহ তহমিনার স্বরে।
মাথা থেকে সব চিন্তা দূর করে মাত্র’ই পা বাড়িয়েছে মিন্টু। তখন’ই শরিফের আনন্দিত স্বর কানে এসে বাজল, ‘আগামী সপ্তাহে আমাদের স্নিগ্ধার বিয়ে। সোমবার দিন।’
‘কার সাথে বাবাজান?’
‘আতিকের ছেলে আছে না শাওন? ডাক্টারি পড়ছে ওর সাথে—’ আর কিছু কানে এলো না মিন্টুর। সব শব্দ কেমন আশপাশ দিয়ে তীরের মতো চলে যাচ্ছে কিন্তু কানে আসছে না।
মিন্টুর পা দু’টো প্রচণ্ড ভারী হয়ে গেছে, চলছে না। ভেতরের সব কথা, বাক্য এলোমেলো হয়ে গেছে। তার অন্তরে ভয়ের ডামাডোল। কষ্টের কুয়াশা যেন প্রকৃতির সজীব বৃক্ষকে ঢেকে দিয়েছে, মেরে ফেলছে শৈত্যপ্রবাহে। কেউ যেন টুঁটি চেপে ধরেছে তার। দম বন্ধ হয়ে আসছে। প্রণয় ফুলের প্রতিটি পাপড়ি ঝরে পড়ে যাচ্ছে আর ভ্রমর বারবার এসে ঝরা পাপড়ির সাক্ষী হয়ে ফিরে চলেছে।
(চলবে)
(পর্ব ৪ থেকে ৭ পর্যন্ত স্নিগ্ধার দাদু ‘শরিফ’-এর নাম ভুল করে ‘শফিক’ লেখা হয়েছিল। তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তার সঠিক নাম ‘শরিফ’!)